হাসিনার মেগা উন্নয়ন প্রকল্প: বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের জন্য কেন বেশি সুবিধাজনক?
প্রথম পর্ব
প্রথম পর্ব
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আওতায় বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে একাধিক মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। তবে, অনেক প্রকল্পে মূল সুবিধাভোগী হিসেবে ভারতের কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। বিশেষত, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন এবং তাদের ট্রানজিট সুবিধা বাড়াতে এ প্রকল্পগুলো প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছে। অথচ বাংলাদেশের কিছু অভ্যন্তরীণ অঞ্চল উন্নয়নের বাইরে থেকে গেছে। এখন আমরা দেখবো, কীভাবে এসব প্রকল্প ভারতের জন্য সুবিধাজনক হয়েছে এবং কেন হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের চেয়ে ভারতের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু: দুই দেশের জন্য ভিন্ন উদ্দেশ্য
পদ্মা সেতু প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি প্রধান প্রতীক। এটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রাজধানীর সাথে সংযুক্ত করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে সহজ করেছে।
তবে পদ্মা সেতুর সাথে যুক্ত বেশ কিছু প্রকল্প, যেমন ভাঙ্গা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক এবং রেললাইন, মূলত ভারতের ট্রানজিট সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পিত। ভারত এই করিডোর ব্যবহার করে তার সেভেন সিস্টার রাজ্যগুলোতে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী পণ্য পরিবহন করতে পারবে।
ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে, পদ্মা সেতুর সাথে এই অতিরিক্ত প্রকল্পগুলো তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডোর তৈরি করেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে এ ধরনের প্রকল্পের প্রভাব সীমিত। দেশের অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে যেমন জামালপুর বা চাঁদপুরে সেতু নির্মাণের চেয়ে এই প্রকল্পগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা সরকারের অগ্রাধিকার নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
পেট্রাপোল-আগরতলা করিডর: ভারতের ট্রানজিট সুবিধার একটি মডেল
পেট্রাপোল থেকে আগরতলা পর্যন্ত সংযোগ ব্যবস্থা ভারতের জন্য একটি কৌশলগত করিডোর। এই করিডোরে বাস্তবায়িত আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প ভারতের বাণিজ্যিক পরিবহন খরচ এবং সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিবে।
- আগরতলা থেকে কলকাতার মধ্যে পণ্য পরিবহন সময় ৩৮ ঘণ্টা থেকে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টায় নেমে আসবে।
- ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অর্থনীতি চাঙা হবে।
- ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্যগুলোতে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী পরিবহন নিশ্চিত হবে।
কিন্তু বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যবহারের মাধ্যমে ভারত তার নিজস্ব উন্নয়নের জন্য ব্যাপক সুবিধা অর্জন করেছে, যেখানে বাংলাদেশের সরাসরি লাভ উল্লেখযোগ্য নয়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একাধিক মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে এসব প্রকল্পের মধ্যে কিছু উদ্যোগ ভারতের ট্রানজিট সুবিধা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের তুলনায় ভারতের জন্য বেশি সুবিধাজনক হয়েছে। এসব কথা একটু বেশি মনে হলে একটা বিষয় একটু চিন্তা করতে পারেন, মোদি কেন আগরতলাকে নর্থ ইস্টের ট্রেড হাব হিসেবে তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছিল? অথচ এই রাজ্যই নর্থ ইস্টের সবচেয়ে বেশি ল্যান্ড লক একটা রাজ্য।
.
চলবে ...