Announcement

Collapse
No announcement yet.

জুলাই অভ্যুত্থান বেহাতের কুশীলব কারা?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জুলাই অভ্যুত্থান বেহাতের কুশীলব কারা?

    জুলাই অভ্যুত্থান বেহাতের কুশীলব কারা?



    ৩৬শে জুলাই (৫ আগস্ট), বাংলাদেশ এক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছিল। আপামর মুসলিম জনতা, বুকের তাজা রক্ত ঢেলে, প্রাণ উৎসর্গ করে এক ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটিয়েছিল। তারা স্বপ্ন দেখেছিল—একটি নতুন বাংলাদেশ, যেখানে সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু হায়! সেই স্বপ্ন বেশিদিন টেকেনি। কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী, হয় সচেতনভাবে, নয়তো অজান্তে, এই বিপ্লবকে বেহাত করে ফেলল।

    সেই রাত, যখন ঢাকার রাজপথে লাখো জনতা বিজয়ের স্লোগান দিচ্ছিল, তখন কেউ কেউ নীরবে এই অভ্যুত্থানের লাগাম নিজেদের হাতে নিচ্ছিল। সাধারণ মানুষ জানত না, অভ্যুত্থান কোথায় ও কীভাবে বেহাত হচ্ছিল! অভ্যুত্থানের রাশ কে টেনে ধরছিল! কিন্তু ধীরে ধীরে সব স্পষ্ট হলো—অভ্যুত্থানের গন্তব্য পাল্টে গেছে। আজ আমরা সেই কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করব, যারা এই অভ্যুত্থানকে বিপথে ঠেলে দিল-


    ১. সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর আত্মসমর্পণ

    হাসিনার পতনের পর, সেনাবাহিনী নীরবে এগিয়ে এল। জনতা ভেবেছিল, তারা জনগণের পক্ষেই দাঁড়াবে। কিন্তু যা ঘটল, তা একেবারেই ভিন্ন। রাজনৈতিক দলগুলো, (যাদের মাঝে ইসলামপন্থী দলগুলোও রয়েছে) সেনাবাহিনীর ডাকে সাড়া দিয়ে ক্যান্টনমেন্টের দিকে ছোটে। তাদের সম্মতি ও প্রস্তাবনা নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হল।

    কিন্তু এই সরকার আসলে কাদের জন্য? জনগণের জন্য, না পুরনো শাসকদের রাষ্ট্র-কাঠামো রক্ষা করার জন্য, আশা করি এতো দিনে তা বুঝতে আর বাকি নেই।

    একটি বিপ্লবী সরকার গঠনের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো আত্মসমর্পণ করল। সেনাবাহিনীর ছায়ায় গড়ে উঠল এক নতুন প্রশাসন, যার ভেতর ফ্যাসিবাদী দালালদের পদচারণা আগের মতোই রয়ে গেল। এখান থেকেই অভ্যুত্থান বেহাত হওয়ার সূচনা।


    ২. সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে র-এর প্রভাব এবং ভারতীয় স্বার্থ

    সেনাবাহিনীর সব অংশ বিপ্লবের পক্ষে ছিল না। কিছু অংশ ভারতের দাসত্ব বহাল রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। বিশেষ করে ডিজিএফআই ও কিছু মিডিয়া গোষ্ঠী, যারা প্রথম আলো গোষ্ঠীর ছায়াতলে পরিচালিত হয়, তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ল বিপ্লবের পথ বদলাতে।

    একটি তথ্য কখনো ভুলে যাওয়া যাবে না—হাসিনার পতনের সময় বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ভারতীয় সেনাপ্রধানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছিলেন! তারা হাসিনা ও তার লোকদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। তাদের পালিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করেছে। এমনকি হাসিনার "আয়নাঘর" ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল, যেন জুলুম-নিপীড়নের প্রকৃত চিত্র জনতার সামনে প্রকাশ না হয়ে যায়।

    অনেকে বলে, সেনাবাহিনী গুলি চালাতে অস্বীকার করেছিল, তাই প্রাণহানি কম হয়েছিল। কিন্তু এটি পুরো সত্য নয়! আসলে সেনাবাহিনীর আভ্যন্তরীণ চাপ এবং জাতিসংঘের চাপের কারণেই তারা নির্বিচার গুলি চালাতে পারেনি। নাহলে তারা কি করত? কাদের পক্ষে দাঁড়াত? তা আশা করি কারো বুঝতে আর বাকি নেই। অবশ্য জাতিসংঘের রিপোর্টেও এসেছে যে, সেনাবাহিনীও অনেক জায়গায় জনগণের উপর গুলি করেছে।

    সংশ্লিষ্ট লিংক-

    জুলাই আন্দোলনে সেনাবাহিনীকে ‘সতর্ক’ করেছিলেন ভলকার তুর্ক - https://archive.ph/j3wrQ


    জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন - https://archive.ph/9Grg6


    ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রনেতারা বিপ্লবের বিশ্বাসঘাতক!

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়—যেখানে থেকে অনেক আন্দোলনের জন্ম হয়েছে, সেই একই জায়গা থেকে অভ্যুত্থানকে নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো!

    মাহফুজ আলম ও তার অনুসারীরা অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি—বিপ্লবী তাওহিদি জনতাকে "মব" বলে খাটো করল। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদেরও এরা ছুড়ে ফেললো। তারা জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর বদলে নিজেদের আলাদা করে নিল।

    তাদের লক্ষ্য কী ছিল? ক্ষমতার স্বাদ নেওয়া! তারা পশ্চিমাদের ইশারায় নাচতে শুরু করল। অভ্যুত্থানের শেকড় কেটে দিলো, যেন এটি কখনো সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে না পারে।

    আরও আশ্চর্যের বিষয়—ছাত্রনেতা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার "বিপ্লব" নিয়ে লেখা বই 'মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু' প্রকাশিত হলো প্রথম আলো গোষ্ঠীর প্রকাশনা "প্রথমা" থেকে! সেই গোষ্ঠী থেকেই!

    আসিফ মাহমুদের পোস্ট লিংক- https://web.facebook.com/share/p/1D8sGYR4XJ/


    এর চেয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য কী হতে পারে?

    তাইতো মানুষ বলছে- প্রথম আলো গোষ্ঠী হল সেই নিষ্ঠুর স্বামী, যে প্রতিদিন তার স্ত্রীকে পেটায়, কিন্তু স্ত্রী তাকে ছেড়ে যেতে পারে না!

    প্রথম আলো গোষ্ঠী শাহবাগের উত্থান ঘটাবে, আপনার দাড়ি-টুপি মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়াবে, তারপর আপনাকে ফাঁসিতে ঝুলাবে, ১৫ বছরের ফ্যাসিস্টের দোসর হবে, কিন্তু যখন আপনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখবেন, তখন আপনার কাহিনী লিখেও খাবে!

    কেন? কারণ সে স্বামী! কারণ সে মধু! কারণ আপনি হাসিনার বিচার করতে পারবেন, কিন্তু প্রথম আলোর নয়! কারণ সে দেবতা! দেবতার রোষানলে পড়লে আপনি ভস্ম হয়ে যাবেন!


    অভ্যুত্থানের স্লোগান পরিবর্তন: আরেকটি ষড়যন্ত্র!

    অভ্যুত্থানের প্রথম দিন থেকে জনতা একটি স্লোগান দিত— "মাতৃভূমি অথবা শাহাদাত" এই স্লোগান ছিল চেতনার প্রতীক। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই এটি বদলে গেল! "মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু"। অথচ জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন কোন রেকর্ডেই এই শ্লোগান পাওয়া যাবে না।

    সংশ্লিষ্ট একটি পোস্ট লিংক- https://web.facebook.com/share/p/1AkWYRAY9t/

    যদিও এটি একটি শব্দ বদল, কিন্তু এর অর্থ কী? শাহাদাত হলো এক অনন্ত জীবনের শুরু, আর মৃত্যু? সেটি শুধু একটি সমাপ্তি।

    এই বদল নিছক ভাষাগত নয়, এটি ছিল আদর্শ বদলের প্রচেষ্টা। বিপ্লবের আত্মা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা।



    সত্যিকারের বিপ্লব এখনো বাকি!

    অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি ছিল তাওহিদি জনতা। কিন্তু সেনাবাহিনীর একটি অংশ, র-এর দাস মিডিয়া, ক্ষমতালিপ্সু ছাত্রনেতারা এবং পশ্চিমা স্বার্থান্বেষীরা মিলে এই অভ্যুত্থানের দিক পাল্টে দিয়েছে।

    তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বিপ্লব কখনোই শেষ হয়ে যায় না। বিপ্লব বেঁচে থাকে জনতার হৃদয়ে। বিপ্লব বেঁচে থাকে বিশ্বাসে, আদর্শে। যখন তাওহিদি জনতা আবার সংগঠিত হবে, তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবে, তখন সত্যিকারের পরিবর্তন আসবেই!

    আমরা ভুলে যাব না—
    বিপ্লব কখনো মরে না! তাকে কেবল সাময়িক সময়ের জন্য দাবিয়ে রাখা যায়!


    ***
    ১৬ মার্চ ২০২৫ ইংরেজি


    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 1 week ago.
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

  • #2
    আল্লাহ তায়ালা যেনো আমাদের এই বাংলাদেশকে সত্যিকারের পরিবর্তন আনার জন্য উত্তম ভাবে প্রস্তুতি গ্রহন করার তৌফিক দান করেন, আমিন
    [ গুরাবা হয়ে লড়তে চাই, গুরাবা হয়েই শাহাদাহ চাই ]

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ...
      লেখাটা অসাধারণ লাগলো
      অল্প কথায় মূলভাব প্রকাশ পেয়েছে

      বারাকাল্লাহ ফী ইলমিক
      বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

      Comment


      • #4
        ভাই বিপ্লব হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ফেসিবাদের পতনের জন্য। কুফুর কে পরাজিত করে ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য নয়।

        তাই এ বিপ্লব আসল বিপ্লব না।।

        Comment


        • #5
          যেই সকল ভাইয়েরা নিরাপত্তা বজায় রেখে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে দাওয়াহর কাজ করছেন তাদেরকে এই পোস্টটি ব্যপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইলো ।
          [ গুরাবা হয়ে লড়তে চাই, গুরাবা হয়েই শাহাদাহ চাই ]

          Comment


          • #6
            পৃথিবীর প্রায় সব বিপ্লবেই সুযোগসন্ধানী মুনাফিকগোষ্ঠী বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার আগে আদাজল খেয়ে বিপ্লবের এবং বিপ্লবীদের বিরোধিতা করে; আর যখনই বিপ্লব সংগঠিত হয়ে যায়, সাথে সাথেই ১৮০ ডিগ্রী দিক পরিবর্তন করে বিপ্লবীদের থেকেও বড় বিপ্লবী সেজে বিপ্লবকে নিজেদের বলে দাবী করে বসে;

            এধরনের সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট মেকানিজম থাকতে হবে। তার একটা হল- বিপ্লবীদের আদর্শিক ভিত্তি মজবুত আছে, এমন লোকদের বিপ্লব সংগঠিত করার আগে থেকেই ঐক্যবদ্ধ থাকা, পারস্পারিক বোঝাপড়ার মধ্যে থাকা। বিপ্লবের মাঝে ঢুকে যাওয়া সুযোগসন্ধানীদের চিহ্নিত করে রাখা, যাতে বিপ্লব হওয়ার পর তাদের থেকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ নেয়া যায়, তবে তাদের অতীতকে বিবেচনায় রেখে নেতৃত্বে আসিন না করা।

            একটা কথা আমাদের মাথায় গেঁথে রাখা জরুরী- বিপ্লবীদের আদর্শ মজবুত না থাকলে এবং বিপ্লব সংগঠিত করা এবং তা রক্ষা করার জন্য সশস্ত্র জানবাজ ও নিবেদিত একদল মুজাহিদ না থাকলে সেই বিপ্লব বেহাত হওয়া প্রায় শতভাগ নিশ্চিত।

            এইকারনেই আমাদের অন্যতম একটা স্লোগান হচ্ছে- কোরআন আমাদের পথ প্রদর্শক, আর বন্দুক / তরবারি তার সাহায্যকারী।
            বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

            Comment


            • #7
              খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখা। যাজাকাল্লাহু খাইরান। এই রকম আরো কিছু লেখা মুহতারাম ভাইদের থেকে আশা রাখি।

              Comment


              • #8
                মা শা আল্লাহবারাকাল্লাহু ফিক

                মুহতারাম Munshi Abdur Rahman ভাই! বিপ্লবঅভ্যুত্থান এই দুই শব্দের মিশ্রনে আর্টিকেটি লিখা হয়েছে। ২৪ অন্দোলনকে মোটাদাগে অভ্যুত্থানই বলে (কারণ,পুরাতন রিজিমের কিছু সংস্কার হয়েছে মাত্র আমূল-পরিবর্তন ঘটেনি) । আর বিপ্লব আলাদা কিছু যা পুরাতন রেজিমের সব কিছু পরিবর্তন করে নতুনভাবে বিপ্লবীদের চাওয়া পাওয়া অনুসারে সংবিধান ও নিয়ম কানুন সাজানো।
                অভ্যুত্থান কে বিপ্লব বলে চালিয়ে দিলে একপ্রকার সমস্যা।কারণ, জনগন নতুন করে বিপ্লব করতে শিখবে না।

                Comment


                • #9
                  ২৪ এর গত অভ্যুন্থান....

                  এটা ছিল সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে একটা স্বতঃফূর্ত একটি গণ আন্দোলন
                  তবে এটাকে বিপ্লব বলা যায় না

                  গণ অভ্যুত্থান আর বিপ্লবের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে ।

                  এই গণ অর্ভুন্থানের মাধ্যমে মূলত সিস্টেমর চেন্জ হয়েছে পদের পরিবর্তন হয়েছে তবে আদর্শিক অর্থে কোন পরিবর্তন হয় নি

                  বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

                  Comment

                  Working...
                  X