Announcement

Collapse
No announcement yet.

রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ- ষড়যন্ত্রের কুশীলব কারা?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ- ষড়যন্ত্রের কুশীলব কারা?

    রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ- ষড়যন্ত্রের কুশীলব কারা?


    গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে একটা বড় ঘটনা ঘটে গেছে। সাহসী ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির রাজনৈতিক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সামাজিক মাধ্যমে এমন একটা পোস্ট দিয়েছেন, যা যেন একটা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তার পোস্টের মূল কথা হলো—

    "রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ" নামে একটি নতুন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে, যা ভারতের পরিকল্পিত। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন ও তাপসকে সামনে রেখে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। ১১ই মার্চ দুপুর ২:৩০-এ ক্যান্টনমেন্টে তাদের কাছে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। তাদের সমর্থন চাইলে, তারা সরাসরি বিরোধিতা করেন।

    এই ষড়যন্ত্রের পরবর্তী ধাপে, এপ্রিল-মে মাস থেকে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে অস্বীকার করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতি দেবে। হাসনাত ও তার সহকর্মীরা এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়— "আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনে বাধা দিলে তারাই সংকটের দায় বহন করবে।"


    হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও জানান— "ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। তাদের যুক্তি হলো— একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের চেয়ে, দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকাই ভালো। এই কারণেই গত কয়েক দিনে মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে অনেক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছেন।" [১]


    হতবাক বাংলাদেশ!

    হাসনাতের এই পোস্ট যেন বিদ্যুতের মতো বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে। কারণ, এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাতে জুলাই আন্দোলনে অন্তত ২ হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। অথচ, তাদের বিচার না করেই, সেনাবাহিনীর ভারতপন্থী অংশ আবারও তাদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করছে। আর এতে তাল মিলাচ্ছে কিছু বিক্রি হয়ে যাওয়া রাজনীতিবিদ।

    এখন প্রশ্ন— এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা? আসুন আমরা বিষয়টি আরও একটু খতিয়ে দেখি এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কেও কিঞ্চিত আলোকপাত করি—

    ১. র-এর নিয়ন্ত্রিত সেনাবাহিনীর ভারতপন্থী অংশটি আবার সক্রিয় হয়েছে। এর মূল চালিকাশক্তি জেনারেল ওয়াকার। এই সেনাবাহিনীই জুলাই আন্দোলনে সরাসরি হামলা চালিয়েছে, র‍্যাব-পুলিশ-বিজিবিকে সহায়তা দিয়েছে।[২] কিন্তু চতুরতার সঙ্গে র‍্যাব-পুলিশ-বিজিবিকে সামনে রেখে নিজেদের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি বজায় রেখেছে।

    ডিবির সাবেক কর্মকর্তা হারুন এক সাক্ষাৎকারে বলেন— জুলাই আন্দোলনে ডিজিএফআই-এর লোকেরাই মূলত সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে যেত। তারা পরে ডিবির কাছে হস্তান্তর করতো, যাতে দোষটা অন্য সংস্থার ঘাড়ে পড়ে। [৩]

    এই আলোচনা থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারছি যে, সেনাবাহিনীর ভারতপন্থী অংশ আবারো দেশকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চাইছে। দুর্বল ইউনুস সরকারও তাদের ঠেকাতে পারছে না। [৪]

    এখন প্রশ্ন হলো— সেনাবাহিনীর ইসলামপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক অংশ কী করবে? আশা করি, তারা নিজ দায়িত্ব বুঝতে পারবে।

    ২. রাজনৈতিক নেতারা আসলে কার পক্ষে?

    হাসনাতের পোস্ট থেকে আরও জানা যায়— "রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক নেতাও ভারতপন্থী সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন।" জুলাই আন্দোলনের পর থেকেই মির্জা ফখরুলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়ে আসছেন।[৫]

    তারা নির্লজ্জভাবে ভারতের এজেন্ট প্রথম আলো গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি, জুলাই আন্দোলনের নেতা মাহফুজ আলমও ইসলামপন্থীদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এ ছাড়া, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের মতো নেতারাও প্রথম আলো গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। [৬]

    এতে স্পষ্ট, বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা এবং এমনকি জুলাই বিপ্লবের অনেক নেতারাও দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা আসলে নিজেদের স্বার্থের জন্য কাজ করছে, জনগণের জন্য নয়।

    এটা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমরা এই বিশ্বাসঘাতকতা দেখে আসছি। এখন সমাধান কী? খালেস ইসলামী শাসনের অধীনে ফিরে আসাই ধর্মপ্রাণ মানুষের একমাত্র চাওয়া হওয়া উচিত।


    ৩. এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় কী?

    এখনই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিকে আরও জোরালো করা দরকার। এ সুযোগ কাজে লাগানো না গেলে ভবিষ্যতে তা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

    সম্ভবত, নতুন কোনো বড় ইস্যু সামনে এনে জনগণের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করা হবে। তাই ফোকাস ঠিক রাখা জরুরি। সবাই লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সোচ্চার হোন। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনের শরিকেরা, ইসলামপন্থী ও ধর্মপ্রাণ গোষ্ঠীকে মাঠে নামতে হবে।


    ৪. আমাদের মনে রাখতে হবে যে, জুলাই আন্দোলন দেশের মানুষকে অনেক স্বস্তি দিয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু যখন এই আন্দোলন বিপ্লবী মঞ্চের বদলে ক্যান্টনমেন্টের দিকে মোড় নিল, তখনই বিপ্লব শেষ হয়ে গেছে।

    আসিফ নজরুলদের মতো সুশীল ও সুবিধাবাদীদের লোভ জুলাই বিপ্লবকে গলা টিপে হত্যা করেছে। ইসলামপন্থী নেতারা বারবার সতর্ক করেছিল— "সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো সম্পূর্ণ ধোঁকা! এখনো না বুঝলে কবে বুঝবে, বোকা?" কিন্তু কেউ শুনলো না। [৭]

    এখন যদি আবারও আওয়ামী লীগ ফিরে আসে, তাহলে জুলাই বিপ্লবের প্রতিটি আন্দোলনকারী ফাঁসির দড়িতে ঝুলবে। এটা যেন কেউ ভুলে না যায়!


    ৫. পরিশেষে সামগ্রিকভাবে আমাদের কি করণীয়, সে সম্পর্কে জুলাই আন্দোলনের পর বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত আল কায়েদা উপমহাদেশের আমীর উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহর একটি নির্দেশনা উল্লেখ করছি। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ বলেছেন—
    "এই পরিবর্তন আনন্দের হলেও, চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। শুধু ব্যক্তি বা সরকার পরিবর্তন যথেষ্ট নয়, বরং পুরো শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবে।"
    "ইতিহাস সাক্ষী, সাময়িক বিজয়ে আত্মতুষ্ট হলে বিপ্লব ব্যর্থ হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও সঠিক পথনির্দেশনার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।"
    "বিপ্লবের চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত— ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতা পাবে তখনই, যখন ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বিজয় নিশ্চিত হবে।" [৮]

    এটিই আমাদের প্রকৃত করণীয়। আমরা যত দ্রুত বুঝবো, তত দ্রুত আমাদের আন্দোলন বিপ্লবে রূপ নেবে, এবং দেশ মুক্তির পথে এগিয়ে যাবে।


    ২১ মার্চ ২০২৫ ইংরেজি

    ---------------------------------------
    সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন লিংক

    [১] হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্ট- https://web.facebook.com/share/p/15wc8sZuMK/

    [২] বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সাধারণ ছাত্র-জনতার দিকে গুলি বর্ষণের এটা সবচাইতে স্পষ্ট ফুটেজ। https://web.facebook.com/share/v/16FUKgQ1bZ/ , জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন - https://archive.ph/9Grg6 , কারফিউর সময় ঢাকার রাস্তায় 'ইউএন' লেখা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান- https://archive.ph/gXU1i , সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত গাজি মো: স্বপনের ইন্টারভিউ থেকে- https://web.facebook.com/share/p/12HFFLhmHKv/

    [৩] হারুনের সাক্ষাৎকারের ভিডিও লিংক-


    Video thumb

    , ভিডিও এর ১১:৫৫ মিনিট - ১৬:১০ মিনিট পর্যন্ত দেখুন।



    [৪] আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই: প্রধান উপদেষ্টা- https://archive.ph/lAiqm

    [৫] রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার আমরা কে, সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ: মির্জা ফখরুল - https://archive.ph/BFqsK

    [৬] ছাত্রনেতা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার "বিপ্লব" নিয়ে লেখা বই 'মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু' প্রকাশিত হলো প্রথম আলো গোষ্ঠীর প্রকাশনা "প্রথমা" থেকে! আসিফ মাহমুদের পোস্ট লিংক- https://web.facebook.com/share/p/1D8sGYR4XJ/

    [৭] মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবির পোস্ট- https://web.facebook.com/share/p/15qS8qp2y4/
    [৮] বাংলাদেশ: ইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড-উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ - https://archive.ph/dMVxk

    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

  • #2
    https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%B0%E0%A6%BE
    জুলাই অভ্যূত্থান নিয়ে মুহতারাম ভায়ের আগের পোস্ট।
    আর এই পোস্টের দু'টি জিনিস করণীয়
    ১. আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের দাবী আরও জোরালো করা। এবং বর্তমান এই পরিস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগানো।
    ২. উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিঃ বলেছেন "বিপ্লবের চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত— ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতা পাবে তখনই, যখন ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বিজয় নিশ্চিত হবে।"
    Last edited by Rakibul Hassan; 1 week ago.

    Comment

    Working...
    X