একবিংশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, ইমামুল মুজাহিদীন শায়েখ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ এর মানহাজ ছিল— সাপকে মারতে হলে তার মাথায় আঘাত করতে হবে। আঘাতটি মাথায় না করে শরীরের অন্য কোথাও করলে হয়তো তাকে সাময়িক দূর্বল করা যাবে, তবে সে পুনরায় জেগে উঠবে। বিশ্বময় জালেমদের আধিপত্য ধ্বংস করতে হলে তাদের কেন্দ্র আমেরিকাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। নতুবা জালেমরা বারবার ফিরে আসবে।
শায়েখ উসামা রাহিমাহুল্লাহ দুনিয়াতে নেই, কিন্তু তাঁর সেই থিওরির বাস্তবতা আজ উম্মাহ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।
গাযার মুসলমানরা তাদের সবকিছু উৎসর্গ করে দিচ্ছে। ত্যাগ তিতিক্ষার হাজারো বিরল উদাহরণ তৈরি করছে। হামাসের মুজাহিদগণ তাদের সাধ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে নাপাক ইয়াহুদিদের প্রতিহত করছে। তা স্বত্বেও তাদের সাময়িক কিছু সফলতা ছাড়া চূড়ান্ত বিজয় আসছে না। এর কারণ কী?
কারণ একটাই। ইসরাইল হচ্ছে সাপের লেজ। আর মাথা হচ্ছে আমেরিকা। যতদিন পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ সাম্রাজ্যবাদী তাগুত আমেরিকাকে পরাস্ত করতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত আল-আকসাকে নাপাক যায়োনিস্টদের দখল থেকে পুরোপুরি মুক্ত করা সম্ভব হবে না।
হামাসের মুজাহিদীনরা হয়তো একদিন ইসরাইলি প্রতিটি হানাদারকে হত্যা করতে সক্ষম হবে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কোনো এক রকেট লঞ্চারের আঘাতে হয়তো প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু তার প্রাসাদসমেত ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু এর পর কি হবে? আদৌ কি ইসরাইল রাষ্ট্রের অবসান ঘটবে?
ভবিষ্যতের জ্ঞান আমাদের নেই। তবে আমরা পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে এটাই অনুমান করতে পারি যে, ইসরাইলের এক কুকুর মরে গেলে আমেরিকা সেখানে নতুন কুকুর নিয়োগ দিবে। অতঃপর নব উদ্যমে মুসলিম নিধনে মেতে উঠবে। এটাই তিক্ত বাস্তবতা।
তাহলে ফিলিস্তিন ইস্যুর চূড়ান্ত সমাধান কী?
সমাধান একটাই। আমাদের আরো কয়েকজন শায়েখ উসামা লাগবে। যাঁরা আবারো কয়েকটি মুবারক নাইন-ইলেভেন ঘটিয়ে সন্ত্রাসী আমেরিকার সমস্ত দম্ভ চুর্ণ করে তাদেরকে রাস্তায় বসিয়ে দিতে পারবে।
আমেরিকা-সহ সম্মিলিত কুফফার জোট যেদিন ইসরাইলকে সাহায্য করতে অক্ষম হয়ে যাবে সেদিনই ফিলিস্তিনিদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।
যেদিন আমরা হোয়াইট হাউসের ছাদের উপর কালিমার পতাকা উড়িয়ে ওয়াশিংটনের রাস্তায় রাস্তায় তাকবির ধ্বনি দিতে পারব সেদিনই আমরা বাইতুল মাকদিসে নিরাপদে নামায পড়তে পারব ইনশাআল্লাহ।
ফিলিস্তিন ইস্যু আমাদের সামনে উম্মাহর শত্রু মিত্র চিনিয়ে দিয়েছে। অল্প কিছুকাল আগেও আমরা যেসব মুনাফিকদের ‘খাদিমুল হারামাইন আশ-শারিফাইন’ বলে মাথায় তুলে নাচতাম, মুসলমানদের আবেগকে পুঁজি করে ভোটে জেতা চাপাবাজ এরদোয়ানকে ‘সুলতান এরদোয়ান’ বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতাম, আজ তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে। প্রমাণিত হয়েছে— মাযলুমানদের পক্ষে তাদের এতোদিনের হুংকার ও বক্তৃতা-বিবৃতি সবই ছিল নিছক অভিনয়।
মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা দিয়ে ধূম্রজাল তৈরি করার দিন শেষ। সবকিছু এখন দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট। তাই উম্মাহকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে— তারা কাদের নেতৃত্বে তাওহিদ ও শিরকের আসন্ন মহা সংঘাত মুকাবিলা করবে।
نصر من الله و ففتح قريب
২১ রামাদ্বান, ১৪৪৬ হি.
২২ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Comment