Announcement

Collapse
No announcement yet.

জুলাই গণঅভ্যুত্থান: একিউ-এর উপদেশ কি ছাত্র-জনতা মানবে?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান: একিউ-এর উপদেশ কি ছাত্র-জনতা মানবে?

    জুলাই গণঅভ্যুত্থান: একিউ-এর উপদেশ কি ছাত্র-জনতা মানবে?

    বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক যুগান্তকারী ঘটনা। সাধারণ মানুষ তখন অন্যায় ও জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তবে ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য একিউ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছিল। [১] কিন্তু অভ্যুত্থানকারীরা তা পুরোপুরি অনুসরণ করেনি, ফলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। তাহলে দেখা যাক, একিউ-এর উপদেশগুলো কী ছিল এবং কেন সেগুলো মানা জরুরি ছিল—

    ১. বিপ্লবের প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ

    একিউ স্পষ্টভাবে বলেছে—শুধু সরকার পরিবর্তন করলেই বিপ্লব সফল হয় না। বরং, অন্যায়ের গোড়ার শিকড় উপড়ে ফেলে ইসলামের ন্যায়ভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠা করাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। ❝শুধু কিছু ব্যক্তি ও চেহারার পরিবর্তন এবং দুটি চারটি সংশোধনীর দ্বারা এই জুলুম ও অনাচার পূর্ণ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে না। কারণ এই ব্যবস্থার ভিত্তি অনেক গভীরে এবং সেগুলো অনেক পুরানো।❞ ইতিহাস সাক্ষী, শুধুমাত্র শাসকের পরিবর্তন মুক্তির নিশ্চয়তা দেয় না। কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে না পারলে প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব নয়। যদি বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ইসলামী ন্যায়বিচার ও শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা হতো, তবে তা দীর্ঘস্থায়ী সুফল বয়ে আনত।

    ২. আরব বসন্ত থেকে শিক্ষা

    একিউ আরব বসন্তের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছে—শাসক অপসারণ করলেই বিপ্লব সফল হয় না। বরং, যদি সুসংগঠিত পরিকল্পনা না থাকে, তবে বিপ্লব ব্যর্থ হয়। ❝মিশরে তো ৩০ বছর যাবৎ চেপে বসা সামরিক স্বৈরাচারী শাসক জেলে চলে গিয়েছে। শুধু তাই নয় বরং তারপর ইলেকশন হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা সরকার গঠন করেছে। কিন্তু তারপর কি হয়েছে? কিছুদিন পর ওই জনপ্রতিনিধিদেরকে হয় জেলে পাঠানো হয়েছে অথবা শহীদ করে দেয়া হয়েছে।❞ জুলাই অভ্যুত্থানকারীদের উচিত ছিল এই শিক্ষা গ্রহণ করা। শাসক বদল করলেই জুলুম শেষ হয় না, বরং ব্যবস্থার পরিবর্তনই আসল সমাধান।

    ৩. দীনদার নেতৃত্বের প্রয়োজন

    একিউ উপদেশ দিয়েছিল—আলিম ও ধর্মীয় নেতাদের বিপ্লবের নেতৃত্বে থাকা উচিত। ইসলামী আদর্শ ছাড়া বিপ্লব শুধু রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়। ❝যদি তারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন, ইখলাস একনিষ্ঠতা, সদিচ্ছা, দৃঢ়তা, অবিচলতা ও প্রত্যয়ের সঙ্গে সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দেন, তাহলে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, হাজী শরীয়তুল্লাহ রহিমাহুল্লাহর এই ভূখণ্ড পুনরায় গোটা উম্মাহর জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে। ❞ জুলাই অভ্যুত্থানকারীরা যদি এই নির্দেশনা মানত, তবে ইসলামী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা আরও দৃঢ় হতো।

    ৪. ইসলামী শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতা

    একিউ বলেছিল—ইসলামবিরোধী আইন ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন না করলে বিপ্লব অর্থহীন হয়ে পড়বে। তারা কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে বলেছে:
    ❝ فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى
    (অর্থ: “যে আমার হেদায়েত অনুসরণ করবে, সে বিপথগামী হবে না এবং কষ্ট পাবে না।” [সূরা তোহা, ২০:১২৩]) ❞


    জুলাই অভ্যুত্থানকারীরা যদি শরীয়াহকে মূল কাঠামোর অংশ বানাত, তবে তারা সঠিক পথে থাকত।

    ৫. শত্রুদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্কতা

    একিউ সতর্ক করেছিল—ইসলামের শত্রুরা বিপ্লব ব্যর্থ করার জন্য সবরকম চক্রান্ত করবে। ❝যেহেতু তারা আল্লাহর পছন্দনীয় পথে নিজেদেরকে এবং স্বজাতিকে পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, এজন্য তাদের পক্ষে কিছুতেই জনসাধারণকে উক্ত দুর্দশা, দুর্গতি ও অস্থিতিশীলতা থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব নয়।❞ জুলাই অভ্যুত্থানকারীরা যদি এই সতর্কবাণী গুরুত্বের সাথে নিত, তাহলে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আরও প্রস্তুতি নিতে পারত।

    পরিশেষে বলতে চাই যে—

    জুলাই অভ্যুত্থানকারীরা যদি একিউ-এর উপদেশ মানত, তবে বিপ্লব আরও কার্যকর হতো। তাদের উচিত ছিল:
    • ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার জন্য সুস্পষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
    • ধর্মীয় নেতাদের নেতৃত্বে আনা।
    • আরব বসন্তের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া।
    • শুধু শাসক পরিবর্তনের পরিবর্তে ব্যবস্থাগত পরিবর্তনে মনোযোগ দেওয়া।
    • ইসলামী অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা।
    একিউ-এর উপদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদি পুরোপুরি অনুসরণ করা হতো, তবে বাংলাদেশ ইসলামের দুর্গে পরিণত হতে পারত। ভবিষ্যতে ইসলামী বিপ্লব সফল করতে হলে একিউ-এর এই উপদেশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মানতে হবে। ইসলামী ইতিহাস ও সমসাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে যদি তারা যথাযথ কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করত, তবে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে "ইসলামের বিজয়ের আশাজাগানিয়া ভূখণ্ড" হয়ে উঠতে পারত।
    ২৩ মার্চ ২০২৫ ইংরেজি

    ---------------------------------------
    সংশ্লিষ্ট লিংক
    [১] বাংলাদেশ: ইসলামের বিজয়ের আশা জাগানিয়া ভূখণ্ড-উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ - https://archive.ph/dMVxk
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 1 week ago.
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

  • #2

    إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ ٱتَّبَعَ ٱلذِّكْرَ وَخَشِىَ ٱلرَّحْمَٰنَ بِٱلْغَيْبِۖ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ
    তুমি তো কেবল এমন ব্যক্তিকেই সতর্ক করতে পার, যে উপদেশ অনুযায়ী চলে এবং দয়াময় আল্লাহকে না দেখে ভয় করে। সুতরাং এরূপ ব্যক্তিকে সুসংবাদ শোনাও মাগফিরাত ও সম্মানজনক পুরস্কারের।

    (সুরা ইয়াসিন, 36:11)
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

    Comment


    • #3
      ইসলামী ইতিহাস ও সমসাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে যদি তারা যথাযথ কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করত, তবে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে "ইসলামের বিজয়ের আশাজাগানিয়া ভূখণ্ড" হয়ে উঠতে পারত।​​
      ইনশাআল্লাহ, আসছে বিপ্লবে এমন সব যুবকরা একত্রিত হবে "যারা মারে এবং মরে"। তাদের কেউ ক্ষতি করতে পারবে না। যারা আল্লাহ তা'আলাকে ভালোবাসে আর আল্লাহ তা'আলা তাদের ভালোবাসেন।


      ...


      [আগুনের ফুলকিরা এসো জড়ো হই দাবানল জ্বালবার মন্ত্রে বজ্রের আক্রোশে আঘাত হানি মানুষের মনগড়া তন্ত্রে]
      Last edited by Rakibul Hassan; 1 week ago.

      Comment


      • #4
        তাদের উচিত ছিল:
        • ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার জন্য সুস্পষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
        • ধর্মীয় নেতাদের নেতৃত্বে আনা।
        • আরব বসন্তের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া।
        • শুধু শাসক পরিবর্তনের পরিবর্তে ব্যবস্থাগত পরিবর্তনে মনোযোগ দেওয়া।
        • ইসলামী অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা।
        ​ইনশাআল্লাহ একদিন না একদিন এই হিসেবে আন্দোলন হবে। বিইযনিল্লাহ
        “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

        Comment


        • #5
          মিসবাহুদ্দিন​ ভাই, আপনি অনুগ্রহ করে খুব দ্রুত “একক মাশোয়ারা”তে যোগাযোগ করলে ভাল হয়।
          “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

          Comment

          Working...
          X