ইতিহাস সাক্ষী—মুসলিম জাতি যখন তাদের নিজস্ব আকিদা, শারঈ কাঠামো, এবং খিলাফতি ঐক্যের উপর ভিত্তি করে দুনিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছে, তখনই তারা সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই আত্মপরিচয় বিসর্জন দিয়ে, পশ্চিমা জাতি-রাষ্ট্রের অনুকরণে গড়া কাঠামোর ভেতরে থেকে আজ মুসলমানরা কেবল নিপীড়িত, পরাধীন, এবং আত্মবিস্মৃত এক সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে। সম্মান তো দূরের কথা, অস্তিত্ব রক্ষাই হয়ে পড়েছে চ্যালেঞ্জ।
জাতি-রাষ্ট্রের কাঠামো মূলত একটি পশ্চিমা আবিষ্কার, যা ফরাসি বিপ্লবের পর ‘সেক্যুলার সার্বভৌমত্ব’ ও ‘মানবকেন্দ্রিক আইন’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। এই কাঠামোতে রাষ্ট্র হলো আইন প্রণেতা, জনগণ হলো সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস, এবং ধর্ম relegated to private life—ব্যক্তিগত অনুশীলনের বিষয়। আর এখানেই আসে বিপরীতমুখী সংঘাত—যেখানে ইসলাম ঘোষণা করে: “الحكم لله”—কেবলমাত্র আল্লাহরই হুকুম চলে। শরিয়াহই চূড়ান্ত আইন। উম্মাহর ঐক্য শুধু ঈমান ও ইসলামি ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে—কোনো ভৌগোলিক রেখা, ভাষা, বা জাতিগোষ্ঠীর ভিত্তিতে নয়।
তাহলে কীভাবে সম্ভব হয়, এই কাঠামোর ভেতরে থেকে মুসলিমদের বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠা?
এটি তো সেই ব্যবস্থার মধ্যেই আত্মপ্রকাশের চেষ্টা, যে ব্যবস্থা মূলত মুসলমানদের শিকড় কাটার জন্যই নির্মিত হয়েছে। মুসলমান যদি এই কাঠামোর ভেতরে থেকে “নতুন শক্তি” হয়ে উঠতে চায়, তাহলে তাকে সেই কাঠামোর শর্তাবলি মানতেই হবে—সেক্যুলারিজম মানতে হবে, শরিয়াহ ত্যাগ করতে হবে, আইন প্রণয়নে কুফরি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। তাহলে প্রশ্ন আসে, মুসলমান কি তার দীনের মৌলিকত্বকে বিসর্জন দিয়ে “শক্তি” হবে? না, সে কেবল ব্যবস্থার পুতুলে পরিণত হবে।
অনেকে বলেন, “চুপ থাকুন, ধৈর্য ধরুন, এই ঝড় কেটে যাবে।”
কিন্তু ইতিহাস বলে, চুপ থেকে কেউই সম্মান পায়নি। মিসরের উলামারা যখন নাসেরের জুলুমের মুখে চুপ করে ছিলেন, তাদের পরিণাম হয়েছিল নির্যাতন, অপমান এবং দ্বীনি কর্তৃত্ব হারানোর মধ্য দিয়ে। উপমহাদেশে মুসলমান যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এক শতাব্দী ধরে আপস করে চললো, তখন তারা শুধু হারাল খিলাফত নয়, হারাল আত্মবিশ্বাস, হারাল রাজনৈতিক নেতৃত্ব। ফলস্বরূপ, আজ আমরা একটি ভয়ানক বাস্তবতায় বসবাস করছি, যেখানে মুসলমান মানেই সন্দেহভাজন, মুসলমান মানেই সন্ত্রাসের ছাপ।
আর এই চুপ থাকাকে অনেকে কৌশল বললেও, প্রকৃতপক্ষে এটি এক প্রকার পরাজয়বাদিতা।
এটি হলো আত্মসমর্পণের দর্শন। বিজাতীর শক্তির সামনে মাথা নত করে বলি—“সময় আসলে কথা বলবো।” অথচ সময় তো চলে যায়, কিন্তু যারা চুপ থাকে, ইতিহাস তাদের নাম মনে রাখে না। উম্মাহর সম্মান এসেছে সেইসব কণ্ঠে যারা সময়ের সত্য উচ্চারণ করেছে, যাকেও তাৎক্ষণিক ব্যথা দিয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতের রক্তে জ্বলে ওঠা আলো দিয়েছে।
বিকল্প শক্তি মানে ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ গঠন। যেখানে শরিয়াহ হবে আইন, উম্মাহ হবে পরিচয়, আর খেলাফত হবে কাঠামো। এই শক্তি সেই শক্তি নয় যা জাতি-রাষ্ট্রে কিছু প্রভাবশালী মুসলমানকে মন্ত্রী বানিয়ে বা ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে শক্তি বলে দাবি করা যায়। বরং এই শক্তি আসে বিশ্বাস, আকিদা ও সংগ্রামের মাধ্যমে। হযরত উমর (রা.) বলেছিলেন—“আমরা ছিলাম সবচেয়ে নিচু জাতি, আল্লাহ ইসলাম দিয়ে আমাদের সম্মান দিয়েছেন। আমরা যদি ইসলামের বাইরে অন্য কিছুতে সম্মান খুঁজতে যাই, আল্লাহ আমাদের আবার অপমানিত করবেন।”
আজ সেই অপমানের বাস্তবতা আমাদের চোখের সামনে। শাহ বানো মামলা, তিন তালাক আইন, সিএএ, এনআরসি, ওয়াক্ফ বিল—সবই সেই ধারাবাহিক অপমানের বহিঃপ্রকাশ। আমাদের মসজিদ, মাদ্রাসা, আস্থা ও চিন্তা—সবকিছু রাষ্ট্রীয় তদারকির অধীনে। আর আমরা ভাবি, নীরবতা বা কৌশল একদিন আমাদের সম্মানের জায়গায় পৌঁছে দেবে!
না ভাই, সম্মান আসে মাথা নত করে নয়—সত্য উচ্চারণ করে, সংগ্রাম করে, ত্যাগ স্বীকার করে।
আর এই সংগ্রাম বিজাতীয় কাঠামোর মধ্যে নয়—বরং ইসলামী কাঠামো নির্মাণের আহ্বান দিয়ে।
এই কাঠামো কেবল বিকল্প নয়—এটাই একমাত্র পথ।
এটি রাজনৈতিক সংগ্রাম নয় কেবল, এটি আত্মপরিচয়ের সংগ্রাম।
আর যদি আমরা এই সংগ্রামে পিছিয়ে পড়ি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।
তারা বলবে—"তোমরা তখন চুপ ছিলে, যখন সত্য বলার ছিল সবচেয়ে প্রয়োজন।"
আজ হয়তো আমরা আবার চুপ করে মেনে নিলাম। যেমনটা আমরা মেনে নিয়েছিলাম বাবরি মসজিদের বেলায়। একবার কেবল নয়—বছরের পর বছর, রায় পর রায়, আঘাতের পর আঘাত। ভাবলাম, “এটুকু সহ্য করি, পরে ঠিক হয়ে যাবে।” কিন্তু দিনশেষে—বাবরি মসজিদ আর আমাদের রইল না। মেনে নেওয়ার ফল ছিল স্থায়ী অপমান, যার ক্ষত শুধু স্থাপত্যে নয়, আত্মপরিচয়ের গভীর গহ্বরে।
এখন আবার প্রশ্ন ওঠে: “এই সময় কি প্রতিবাদের?” “আন্দোলন করলে তো রাষ্ট্র বিপক্ষে যাবে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।”
ঠিক—এই রাষ্ট্র, এই কাঠামো আমাদের পক্ষে কোনোদিন আসবে না। এরা আমাদের শত্রু না-হলেও, আমাদের আদর্শের শত্রু—এটি নিছক বাস্তবতা।
কিন্তু তাই বলে কি আমরা চুপ করবো? না, এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিবাদ, এই ছোট ছোট বিদ্রোহগুলোই তো বড় বিদ্রোহের পথ দেখায়। এগুলোই তো আত্মমর্যাদার বীজ বপন করে। আজ যদি কেউ বলে—এই আওয়াজের ফল শূন্য, তাকে বলি: ফল নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে মাটি চষে ফেলা। কারণ একদিন তো আগাছা উপড়ে ফেলে, খাঁটি ফসল ফলাতে হবে!
আমরা যদি আজ বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে না রাখি, তবে আগামী প্রজন্ম কেবল ধ্বংসস্তূপই পাবে।
তারা জানবেও না যে কেউ একদিন “না” বলেছিল।
এই “না”—এই স্ববিরোধী কাঠামোর বিরুদ্ধে “না”, এই অসম্মতির আহ্বান—এটাই হকপন্থার শুরু।
এটাই সেই বিকল্প শক্তির সূচনা, যা কারও অনুকরণ নয়, বরং নিজের আদর্শে গড়া এক শাশ্বত পথ।
জাতি-রাষ্ট্রের কাঠামো মূলত একটি পশ্চিমা আবিষ্কার, যা ফরাসি বিপ্লবের পর ‘সেক্যুলার সার্বভৌমত্ব’ ও ‘মানবকেন্দ্রিক আইন’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। এই কাঠামোতে রাষ্ট্র হলো আইন প্রণেতা, জনগণ হলো সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস, এবং ধর্ম relegated to private life—ব্যক্তিগত অনুশীলনের বিষয়। আর এখানেই আসে বিপরীতমুখী সংঘাত—যেখানে ইসলাম ঘোষণা করে: “الحكم لله”—কেবলমাত্র আল্লাহরই হুকুম চলে। শরিয়াহই চূড়ান্ত আইন। উম্মাহর ঐক্য শুধু ঈমান ও ইসলামি ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে—কোনো ভৌগোলিক রেখা, ভাষা, বা জাতিগোষ্ঠীর ভিত্তিতে নয়।
তাহলে কীভাবে সম্ভব হয়, এই কাঠামোর ভেতরে থেকে মুসলিমদের বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠা?
এটি তো সেই ব্যবস্থার মধ্যেই আত্মপ্রকাশের চেষ্টা, যে ব্যবস্থা মূলত মুসলমানদের শিকড় কাটার জন্যই নির্মিত হয়েছে। মুসলমান যদি এই কাঠামোর ভেতরে থেকে “নতুন শক্তি” হয়ে উঠতে চায়, তাহলে তাকে সেই কাঠামোর শর্তাবলি মানতেই হবে—সেক্যুলারিজম মানতে হবে, শরিয়াহ ত্যাগ করতে হবে, আইন প্রণয়নে কুফরি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। তাহলে প্রশ্ন আসে, মুসলমান কি তার দীনের মৌলিকত্বকে বিসর্জন দিয়ে “শক্তি” হবে? না, সে কেবল ব্যবস্থার পুতুলে পরিণত হবে।
অনেকে বলেন, “চুপ থাকুন, ধৈর্য ধরুন, এই ঝড় কেটে যাবে।”
কিন্তু ইতিহাস বলে, চুপ থেকে কেউই সম্মান পায়নি। মিসরের উলামারা যখন নাসেরের জুলুমের মুখে চুপ করে ছিলেন, তাদের পরিণাম হয়েছিল নির্যাতন, অপমান এবং দ্বীনি কর্তৃত্ব হারানোর মধ্য দিয়ে। উপমহাদেশে মুসলমান যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এক শতাব্দী ধরে আপস করে চললো, তখন তারা শুধু হারাল খিলাফত নয়, হারাল আত্মবিশ্বাস, হারাল রাজনৈতিক নেতৃত্ব। ফলস্বরূপ, আজ আমরা একটি ভয়ানক বাস্তবতায় বসবাস করছি, যেখানে মুসলমান মানেই সন্দেহভাজন, মুসলমান মানেই সন্ত্রাসের ছাপ।
আর এই চুপ থাকাকে অনেকে কৌশল বললেও, প্রকৃতপক্ষে এটি এক প্রকার পরাজয়বাদিতা।
এটি হলো আত্মসমর্পণের দর্শন। বিজাতীর শক্তির সামনে মাথা নত করে বলি—“সময় আসলে কথা বলবো।” অথচ সময় তো চলে যায়, কিন্তু যারা চুপ থাকে, ইতিহাস তাদের নাম মনে রাখে না। উম্মাহর সম্মান এসেছে সেইসব কণ্ঠে যারা সময়ের সত্য উচ্চারণ করেছে, যাকেও তাৎক্ষণিক ব্যথা দিয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতের রক্তে জ্বলে ওঠা আলো দিয়েছে।
বিকল্প শক্তি মানে ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ গঠন। যেখানে শরিয়াহ হবে আইন, উম্মাহ হবে পরিচয়, আর খেলাফত হবে কাঠামো। এই শক্তি সেই শক্তি নয় যা জাতি-রাষ্ট্রে কিছু প্রভাবশালী মুসলমানকে মন্ত্রী বানিয়ে বা ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে শক্তি বলে দাবি করা যায়। বরং এই শক্তি আসে বিশ্বাস, আকিদা ও সংগ্রামের মাধ্যমে। হযরত উমর (রা.) বলেছিলেন—“আমরা ছিলাম সবচেয়ে নিচু জাতি, আল্লাহ ইসলাম দিয়ে আমাদের সম্মান দিয়েছেন। আমরা যদি ইসলামের বাইরে অন্য কিছুতে সম্মান খুঁজতে যাই, আল্লাহ আমাদের আবার অপমানিত করবেন।”
আজ সেই অপমানের বাস্তবতা আমাদের চোখের সামনে। শাহ বানো মামলা, তিন তালাক আইন, সিএএ, এনআরসি, ওয়াক্ফ বিল—সবই সেই ধারাবাহিক অপমানের বহিঃপ্রকাশ। আমাদের মসজিদ, মাদ্রাসা, আস্থা ও চিন্তা—সবকিছু রাষ্ট্রীয় তদারকির অধীনে। আর আমরা ভাবি, নীরবতা বা কৌশল একদিন আমাদের সম্মানের জায়গায় পৌঁছে দেবে!
না ভাই, সম্মান আসে মাথা নত করে নয়—সত্য উচ্চারণ করে, সংগ্রাম করে, ত্যাগ স্বীকার করে।
আর এই সংগ্রাম বিজাতীয় কাঠামোর মধ্যে নয়—বরং ইসলামী কাঠামো নির্মাণের আহ্বান দিয়ে।
এই কাঠামো কেবল বিকল্প নয়—এটাই একমাত্র পথ।
এটি রাজনৈতিক সংগ্রাম নয় কেবল, এটি আত্মপরিচয়ের সংগ্রাম।
আর যদি আমরা এই সংগ্রামে পিছিয়ে পড়ি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।
তারা বলবে—"তোমরা তখন চুপ ছিলে, যখন সত্য বলার ছিল সবচেয়ে প্রয়োজন।"
আজ হয়তো আমরা আবার চুপ করে মেনে নিলাম। যেমনটা আমরা মেনে নিয়েছিলাম বাবরি মসজিদের বেলায়। একবার কেবল নয়—বছরের পর বছর, রায় পর রায়, আঘাতের পর আঘাত। ভাবলাম, “এটুকু সহ্য করি, পরে ঠিক হয়ে যাবে।” কিন্তু দিনশেষে—বাবরি মসজিদ আর আমাদের রইল না। মেনে নেওয়ার ফল ছিল স্থায়ী অপমান, যার ক্ষত শুধু স্থাপত্যে নয়, আত্মপরিচয়ের গভীর গহ্বরে।
এখন আবার প্রশ্ন ওঠে: “এই সময় কি প্রতিবাদের?” “আন্দোলন করলে তো রাষ্ট্র বিপক্ষে যাবে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।”
ঠিক—এই রাষ্ট্র, এই কাঠামো আমাদের পক্ষে কোনোদিন আসবে না। এরা আমাদের শত্রু না-হলেও, আমাদের আদর্শের শত্রু—এটি নিছক বাস্তবতা।
কিন্তু তাই বলে কি আমরা চুপ করবো? না, এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিবাদ, এই ছোট ছোট বিদ্রোহগুলোই তো বড় বিদ্রোহের পথ দেখায়। এগুলোই তো আত্মমর্যাদার বীজ বপন করে। আজ যদি কেউ বলে—এই আওয়াজের ফল শূন্য, তাকে বলি: ফল নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে মাটি চষে ফেলা। কারণ একদিন তো আগাছা উপড়ে ফেলে, খাঁটি ফসল ফলাতে হবে!
আমরা যদি আজ বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে না রাখি, তবে আগামী প্রজন্ম কেবল ধ্বংসস্তূপই পাবে।
তারা জানবেও না যে কেউ একদিন “না” বলেছিল।
এই “না”—এই স্ববিরোধী কাঠামোর বিরুদ্ধে “না”, এই অসম্মতির আহ্বান—এটাই হকপন্থার শুরু।
এটাই সেই বিকল্প শক্তির সূচনা, যা কারও অনুকরণ নয়, বরং নিজের আদর্শে গড়া এক শাশ্বত পথ।
Comment