Announcement

Collapse
No announcement yet.

"শুল্ক নীতি" আমেরিকার অর্থনীতির বিজয় না কি পরাজয়!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • "শুল্ক নীতি" আমেরিকার অর্থনীতির বিজয় না কি পরাজয়!

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

    সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার যিনি সকল জগতের পালনকর্তা। শান্তি ও দরুদ বর্ষিত হোক সেই নবীর প্রতি, যিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমতরূপে প্রেরিত হয়েছেন—আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার ও সমস্ত সাহাবায়ে কিরামের ওপর।

    "শুল্ক নীতি" আমেরিকার অর্থনীতির বিজয় না কি পরাজয়!

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার ফলে মার্কিন ভোক্তাদের ব্যয় বাড়বে এবং মার্কিন পরিবারের ব্যয় বাড়তে পারে ২৪০০ ডলার!

    ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তামা ও বিদেশি পণ্যে নতুন শুল্ক কার্যকর এবং তা স্থায়ী হলে চলতি বছর মার্কিন পরিবারগুলোকে গড়ে অতিরিক্ত ২ হাজার ৪০০ ডলার ব্যয় করতে হতে পারে। এ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের বিভিন্ন শুল্কের কারণে মার্কিন ভোক্তাদের ক্ষেত্রে গড় কার্যকর শুল্কহার দাঁড়াবে প্রায় ১৮ শতাংশ, যদি ঘোষিত শুল্ক কার্যকর হয় এবং তা বহাল থাকে।

    গবেষকেরা বলছেন, এটি হবে ১৯৩৪ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যকর হওয়া সর্বোচ্চ শুল্কহার। গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী, এসব শুল্কের ফলে স্বল্প মেয়াদে মার্কিন ভোক্তা মূল্যস্ফীতি হতে পারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। যার অর্থ হলো ২০২৫ সালে প্রতিটি মার্কিন পরিবার গড়ে বাড়তি দামে পণ্য কিনতে গিয়ে ২ হাজার ৪০০ ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এ ক্ষতির মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার কমানোর মতো পদক্ষেপ নেবে কি না, তার প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। সুদহার হার কমলে মার্কিন পরিবারের অর্থনীতিতে বাড়তি প্রভাব পড়তে পারে, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।

    গবেষণায় বলা হয়েছে, এই শুল্কনীতির কারণে চলতি বছরে বেকারত্বের হার বাড়তে পারে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। মার্কিন অর্থনীতির মোট উৎপাদন বা জিডিপি শূন্য দশশিক ৭ শতাংশ কমে যেতে পারে। এই শুল্ক দীর্ঘ মেয়াদে বহাল থাকলে জিডিপি প্রতিবছর গড়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমবে। ফলে প্রতিবছর আনুমানিক ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি হতে পারে।

    যদিও নির্মাণ ও কৃষি খাতের ওপর এ শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, মার্কিন উৎপাদন খাতে ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

    ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ট্রাম্পের শুল্ক সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে পারে পোশাক, টেক্সটাইল ও জুতার বাজারে। স্বল্প মেয়াদে এসব পণ্যের দাম ৩৭ থেকে ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। যদিও দীর্ঘ মেয়াদে এ মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা হ্রাস পেয়ে ১৮ শতাংশের আশপাশে স্থির হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার ফলে মার্কিন ভোক্তাদের ব্যয় বাড়বে।

    এ ছাড়া ধাতু, চামড়ার পণ্য ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির দামেও বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। স্বল্প মেয়াদে দাম বেড়ে যেতে পারে যথাক্রমে ৪৩, ৩৯ ও ২৬ শতাংশ পর্যন্ত। মোটরযান, ইলেকট্রনিকস ও রাবার-প্লাস্টিকজাত পণ্যের দামও ১১ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধির চাপ তুলনামূলকভাবে কম হলেও নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে সবজি, ফলমূল ও বাদামজাত পণ্যের দাম গড়ে ৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

    বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হওয়ায় কফি ও কমলার রসের মতো জনপ্রিয় খাদ্যপণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আশঙ্কা।

    আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির জরিপে দেখা গেছে, ৮৩ শতাংশ ব্যবসায়িক নেতা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে আগামী ছয় মাসে পণ্যের দাম বাড়াতে হবে। জরিপে অংশ নেওয়া ৩০০ ব্যবসায়িক নেতা ও করপোরেট নির্বাহীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি জানিয়েছেন, শুল্কের কারণে তাঁদের মুনাফার হার ইতিমধ্যে সংকুচিত হয়েছে। যদিও তাঁরা বলছেন, ভোক্তাদের ওপর এখনো পুরোটা প্রভাব পড়েনি।

    বর্তমানে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে শুল্ক। প্রায় সব দেশের পণ্য আমদানিতে তিনি শুল্ক আরোপ করেছেন। অর্থনীতিবিদদের বড় একটি অংশ শুরু থেকেই সতর্ক করে আসছেন, শুল্কের কারণে মার্কিন বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে। শেষমেশ তা মন্দার দিকেও ধাবিত হতে পারে।

    কোন শক্তিশালী কুকুর যদি অধিক ক্ষুধার্ত থাকে তাহলে সে অন্য কুকুর কে মরা গরুর মাংস খেতে দেয় না, বরং ক্ষিপ্র গতিতে তাড়িয়ে দেয়, সমস্ত মরা গরু একই (একাই) ভক্ষণ করতে চায়, এভাবে তাড়াতে তাড়াতে নিজেই এক সময় দূর্বল হয়ে পড়ে। যা আজ আমেরিকার অর্থনীতির বর্তমান বাস্তবতা!

    উপরোক্ত বিষয়গুলো বিশ্লেষণের পর এ কথা বলা যায় যে, শুল্কনীতি সামনের বছর গুলোতে আমেরিকার অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটাবে যার প্রভাব কমবেশি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। এর মাঝে আমেরিকা যদি কোন যুদ্ধে জরিয়ে (জড়িয়ে) পরে (পড়ে), তাহলে আমেরিকার অর্থনীতির বিপর্যয় আরো ত্বরান্বিত করবে। এভাবেই একদিন আমেরিকা বিশ্ব মড়ালের (মোড়ল) মঞ্চ থেকে ছিটকে পড়বে- ইনশাআল্লাহ।

    মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
    وَمَكَرُوا وَمَكَرَ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
    আর তারা কুটকৌশল করেছে এবং আল্লাহ কৌশল করেছেন। আর আল্লাহ উত্তম কৌশলকারী। (সূরাঃ আলে-ইমরান -৫৪)

    সংগৃহীত:

    Last edited by Rakibul Hassan; 2 days ago.


  • #2
    মাশাআল্লাহ, ভালো হয়েছে
    অনেক ভাইয়ের ভুল ধারণা কাটবে, কারণ অনেকে মনে করেন- এটা বুঝি আমেরিকার বিজয়

    Comment

    Working...
    X