লেখালেখির মাধ্যমে দাওয়াহ-র প্রয়োজনীয়তা
মানুষের অনুভূতি, চিন্তা-ভাবনা, নিজস্ব খেয়ালের একটি ভিন্ন জগৎ রয়েছে। মানুষ তার নিজস্ব এই জগতে এমন এক দুনিয়া সাজায় যে দুনিয়াতে শুধু তার খেয়াল, চিন্তারাই প্রভাব বিস্তার করে না; বাইরের প্রতিবেশি, দূর-দূরান্তের মুসাফিররাও এসে মাঝে মাঝে বিশ্রাম নেয়। এর মাঝে কেউ হয়ত দু-একদিন থেকে বিদায় নেয়, কেউ আবার স্থায়ী বাসিন্দা বনে যায়। এ জগতে খুব সহজে যদি কেউ প্রবেশ করতে চায়, তবে ঐ মানুষের অনুভূতি, চিন্তা-ভাবনাকে প্রভাবিত করতে হবে প্রথমে। তার মনের গহীন বনে গিয়ে খাজানাকে বাক্স-বন্দি করে নিয়ে আসতে হবে। আর চাইলে এভাবেই একজন মানুষের উপর কর্তৃত্ব বিস্তার করা সম্ভব। তাহলে কিভাবে তার চিন্তা-চেতনা, অনুভূতিকে প্রভাবিত করা সম্ভব। তাহলে কিভাবে তার চিন্তা-চেতনা, অনুভূতিকে প্রভাবিত করা যায়? প্রশ্নটি হলো ঠিক এখানেই।
মানুষ স্বভাবগতভাবে নিজের Ideology কে ঘিরে সকল অনুভূতি, বাহ্যিক কর্মসাধন করে থাকে। এই Ideology কে প্রভাবিত করতে যুগের পর যুগ নানা মতবাদ, জীবনাদর্শন, lifestyle মানুষের মাঝে আবর্তিত হয়েছে। যেমন: ধরুন সেন্ট লুইস[1] ক্রমাগত ক্রুসেড যুদ্ধগুলোতে পরাজিত হচ্ছিল। এবার সে ভাবতে বাধ্য হয় যে, মুসলিমদেরপরাজিত করতে হলে তাদের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক হামলার ছক আঁকতে হবে। মুসলিমদের ওপর এরই পর থেকে শুরু হলো চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই। তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করলো জ্ঞান-বিজ্ঞান কে; আক্রমণ শুরু করলো মুসলিমদের আকিদা, ঈমান ও মৌলিক Ideology-এর উপর। এরই ধারাবাহিকতায় তারা ধ্বংস করল আমাদের হাজার বছরের খেলাফত। প্রয়োগ করলো সম্রাজ্যবাদ, প্রাচ্যবাদ, প্রজাতন্ত্র, গণতন্ত্র, লিবারেল সোসাইটির ভয়ানক পয়সন (Poison)। আর এগুলো কি Facebook, Twitter দ্বারা হয়েছিল তখন? এগুলো হয়েছিল বিস্তর লেখালিখি, গবেষণা ও তার প্রচারের মাধ্যমে; যা এযুগেও হচ্ছে আধুনিক blogging, social media, posting, leaflet বিতরণ, সেমিনার ইত্যাদি দ্বারা। বুঝাই যাচ্ছে মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে কিভাবে এগুলো প্রভাবিত করছে! তবে এর মূলে আছে কলম ও তার ব্যবহার(অর্থাৎ লেখালিখি ও প্রচার)। আপনি লিখতে না জানলে আপনি কখনোই পরিপূর্ণ মানুষের চিন্তাশক্তি, অনুভূতি, বাহ্যিক চেতনাকে আয়ত্তে আনতে পারবেন না। মৌখিকভাবে শুধু ক্ষণস্থায়ীভাবে মানুষের মনকে প্রভাবিত করা যায়। যার স্থায়ীত্বকাল হয় বেশি থেকে বেশি কয়েক বছর!
এবার দেখা যাক, লেখালিখি মানুষের মনের কোন কোন বিষয়কে প্রভাবিত করে!
লেখালেখি থেকে মানুষের Narrative গ্রহণ:
ধরুন, আপনি বার্তা মানুষের মনের খুব গভীরে খোদাই করতে চাচ্ছেন। আপনি চাচ্ছেন আপনার এই বার্তাটি মানুষ মনে প্রাণে মেনে নিক, এই বার্তাকে focus করে তার lifestyle ঢেলে সাজাক। আপনি সমাজের মানুষের জন্য, তাদেরর প্রভাবিত করতে, একটি গল্পের আড়ালে আপনার সেই বার্তাটি push in করে দিলেন এবার। গল্পের চরিত্রের আড়ালে সাজিয়ে তুললেন আপনার ভাবাদর্শ। মানুষ এবার এবার শুধু ঐ গল্পটি পড়লেই আপনার ভাবাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হবে। একে বলে Narrative Transportation. কাউকে আবেগগতভাবে নিমজ্জিত করা (high transportation)। আর যখন কেউ এভাবে আবেগগতভাবে নিমজ্জিত হবে, তখন তাদের সহানুভূতি (empathy) দৃঢ়ভাবে বৃদ্ধি পায়। আর এই প্রবণতা পরবর্তী এক সপ্তাহ ধরে বজায় থাকে। এবার এমন Narrative Transportation যখন বছরের পর বছর একটি জাতির উপর বলবৎ থাকে তখন তাদের মাঝে নিজস্ব স্বকীয়তা লোপ পায়। তারা ভুগতে থাকে Identity Crisis-এ। এটি তো বললাম গল্পের মাধ্যেমে কিভাবে Ideology Transport করা হয়! এবার এর উৎকৃষ্ট কিছু উদাহরণ দেখুন চারপাশে! যেমন- জাফর ইকবালের লিখে উপন্যাস ও গল্প, হুমায়ুন আহমেদের লিখা হিমু!
জাফর ইকবাল তার উপন্যাসে রাজাকার হিসেবে দাঁড়ি-টুপি পড়া লোককে উপস্থাপন করেছে। অথচ যদি আমরা দেশ স্বাধীনের ঐ সময়ের রাজাকারদের ছবি দেখি তাহলে দেখতে পারব তাদের কারো গায়ে পাঞ্জাবি নেই, নেই টুপি, নেই দাঁড়ি! কিন্তু উপন্যাসের আড়ালে সে এমন এক Narrative দাঁড়া করিয়েছে যে, দাঁড়ি-টুপি মানেই রাজাকার আর এরাই দেশের শত্রু! কি আজব Narrative Transportation! আবার দেখুন হুমায়ুন আহমেদের “হিমু” পড়ে অনেকেই খালি পায়ে, হলুদ পাঞ্জাবি পড়েছে! এটাই তরুণ সমাজের মনকে প্রাভবিত করেছে। অথচ এমন হলুদ পাঞ্জাবি আমাদের মুসলিম বাংলার সংস্কৃতি নয়! এভাবেই লেখা পড়ে মানুষ Narrative গ্রহণ করে।
সভ্যতার ধারা পরিবর্তন:
সভ্যতা একটি অঞ্চলের ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাত্রার মান, ধর্ম ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিত। সভ্যতার ভীত গড়ে ওঠে যখন একটি জাতি নিজেদেরকে জ্ঞানার্জন, নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস চর্চাসহ এর থেকে শিক্ষা সর্বপরি স্রষ্টার দিকে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে। যদি প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা থেকে এক বিংশ শতাব্দি অব্দি এই পুরো বিবর্তন দেখা হয়, পর্যালোচনা করা হয়, তবে দেখা যাবে বিজ্ঞান চর্চা ও বস্তুবাদী মতবাদই শেষমেশ খ্রিষ্টবাদের ভিত্তিতে চলমান সমাজকে ধ্বংস করে ভিন্ন এক সভ্যতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। গ্রিক সভ্যতার বিকাশে মিথ (কল্প-কাহিনী), কবিতা, উপন্যাস, সাধারণ লেখনী, সামাজিক নানা তত্ত্বসহ মতবাদ্গুলো বেশি ভূমিকা রেখেছিল। হোমার-এর ইলিয়াড ও ওডিসি কবিতা ছিল এমনই এক রচনা। সে সময়ে মানুষ কবিতা না জানলে তাদেরকে শিক্ষিত বলা হতো না! এই কবিতাগুলোই তাদের চিন্তা-ভাবনাকে বেশি প্রভাবিত করত। যেমন- হোমারের কবিতা তাদের নীতিশাস্ত্র ও নৈতিকতার উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল।
এমন একটি সভ্যতা যারা কিনা ছিল ইউরোপ এর একচ্ছত্র সভ্য জনগোষ্ঠী, তাদের মননকৌশলকে রেঁনেসা হয়ে আধুনিক একটি ভিন্ন সভ্যতায় convert করার সময়কাল্টা এবার চিনাত করুন। তাদের এই ধর্মতান্ত্রিক সমাকজকে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা, লেখনী, জ্ঞান বিজ্ঞানের দ্বারা বিপ্লব ঘটিয়ে Renaissance এর সময়ে পুরোপুরি ধসিয়ে দেয়া হয়। সৃষ্টি হয় আধুনিক বস্তুবাদী যুগের।
এগুলোর সবকিছুই বর্তমান সময়ের কিছু প্রাচ্যতত্ত্ববিদদের লেখনীর দিকে তাকালেও লক্ষ্য আমরা দেখতে পাবো, তারা লেখনীর দ্বারা ইসলামি সভ্যতাকে পরিবর্তন করে আসছে বহু আগ থেকেই। প্রাচ্যতত্ত্ববিদদের এমন প্রপাগান্ডা যদি আলেমসমাজ দৃঢ় কলমে না রুখতেন, তবে আজ এই সমৃদ্ধ মুসলিম সভ্যতার(মানুষ সৃষ্টির সূচনা হতে কিয়ামত পর্যন্ত এটি থাকবে) ভীত ভেঙ্গে যেত। আল্লাহই এই দ্বীনের হেফাজত করবেন। এর বিপরীতে সকল ষড়যন্ত্রই নস্যাৎ হবে!
লিখনির মাধ্যমে প্রপাগান্ডা বাস্তবায়নের উদাহরণ:
লিখনির মাধ্যমে কিভাবে প্রপাগান্ডা বাস্তবায়ন হয়েছিল আধুনিক বিশ্বে এমন কয়েকজনের সাথে চলুন পরিচয় হয়ে যাক;
জোশেফ গ্যোব্-বেলস- তিনি ছিলেন Nazi Germany’s minister of propaganda। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে বলা হয় দ্য গোল্ডেন এইজ অফ প্রোপাগান্ডা(The golden age of propaganda)। আর এরই মাঝে masterclass হল Nazi propaganda এর মূল হোতা ছিলেন গ্যোব্-বেলস। Anti-semitic এবং Pro-aryan মেসেজ/মতাদর্শ প্রচারে তারা ব্যবহার করেছিল পোস্টার, নিউজ পেপার, সিনেমা, এমনকি শিশুদের জন্য বই। এরই সূত্র ধরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল হলোকাস্ট ও অন্যান্য হত্যাযজ্ঞ। তার বার্তা ছিল আবেগময় ও পুনরাবৃত্তি উপস্থাপনের সাহায্যে গোটা জাতিকে প্রভাবিত করেছিল। ছড়িয়েছিল জাতীয়তাবাদী বার্তা।
চার্লস মাস্টারম্যান-তিনি ছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের War Propaganda Bureau (“Wilington House) এর প্রধান। তিনি H.G. Wells, Aurthur Conan Doyles সহ খ্যাতিমান লেখকদের নিয়ে ৩০০ এরও অধিক বই অপপ্রচারনামূলক পাম্ফলেট ২১ ভাষায় ঝাপিয়ে প্রচার করেছিলেন। এটি ছিল তখনকার সময়ের অন্যতম ব্যাপক সাহিত্যভিত্তিক প্রোপাগান্ডার হস্তক্ষেপ।
রাডইয়ার্ড কিপলিং- তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেঁচে থাকা ভারতীয় সেনাদের চিঠির লিখে ব্রিটিশ জনমত পরিচালনা করেছিলেন। তিনি “The Eye’s of Asia” শিরোনামে বই প্রকাশ করে ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে দমন করার কাছে সতর্কভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
রুশ সাম্রাজ্যের লেখক- Pushkin ও Tyutchev সহ অন্যান্য লেখকরা রুশ সাম্রাজ্যের সময়ে tsarist অবস্থানের পক্ষে সাহিত্য রচনা করে সাম্রাজ্যবাদ ও শাসন প্রচার করতেন।
সিআইএ (CIA) স্ট্রাটেজিক সাহিত্য প্রচারণা (Cold War Context):
Boris Pasternark এর “Doctor Zhivage”,যা Stalin era এর বিপরীতে মূল্যবোধ প্রচারের শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। CIA এ লেখাকে “Strategic (long range) Propaganda” হিসেবে ব্যবহার করে। CIA cold war এর সময় Orwell, Camus, Nabokov, Joyce-এর বইগুলো (উভয়পক্ষের রাষ্ট্রীয় নাকচত্ত্বা সত্ত্বেও) ছড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা চালায়, যা গোপনে সাহিত্য মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা পরিচালনার এক দৃষ্টান্ত।
আব্বাসী আমলে শরয়ি জ্ঞানের উপর হামলা ও এর মোকাবেলা:
আব্বাসী আমলে শরয়ি জ্ঞানের সাথে গ্রিক দর্শনের মিশেল ঘটে। দর্শন ও যুক্তিবিজ্ঞানের হামলা পরিচালিত হয়। খলিফা মামুন দর্শনের রাশি রাশি বইপত্র গ্রীস থেকে বাগদাদ আনান এবং পশুকতায় অনুবাদ করিয়ে প্রচার করেন। এতে মুসলিম আলেমদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভ্রান্তির শিকার হন। শুরু হয় মুতাজিলা নামক নতুন বিভ্রান্তির উদ্ভব।
এর বিপরীতে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহি., ইমাম আবুল হাসান আশআরী রহি. এবং ইমাম গাজ্জালী রহি. দৃঢ় কলমে তা মোকাবেলা করেন। যুগে যুগে এমন লেখনীগুলোই যুগের ভ্রান্তি ও ফেরকা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই আলোচনা থেকে কি বুঝে আসলো তাহলে?
বুদ্ধিভিত্তিক লড়াইয়ে লেখনীর ভূমিকা:
১. মানুষের মনস্তাত্ত্বিক নিয়ন্ত্রণ লেখনীর মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করা যায়।
২. দীর্ঘমিয়াদি প্রোপাগান্ডা বাস্তবায়নে নিয়মতান্ত্রিক লেখনী খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩. মানুষের আবেগ, চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা লেখনীর মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে থাকে।
৪. লেখনীর দ্বারা রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক ক্ষেত্রসমূহ প্রভাবিত হয়।
আমাদেরকরনীয়:
বুদ্ধি ভিত্তিক লড়াইয়ে অংশ নিতে হবে। আধুনিক এই বিশ্বে বুদ্ধি ভিত্তিক লড়াইয়ে যে জাতি যত বেশি এগিয়ে সেই সামগ্রিক দিক থেকে অগ্রগন্য। যুগের বুদ্ধি ভিত্তিক লড়াই চালিয়ে যেতে, শত্রুদের বিভিন্ন প্রপাগান্ডার বিপরীতে আজ আমাদের কলম ধরতে হবে!
যুগের মুতাজিলা, খারিজি সহ সকল ফিরকার বিপরীতে আমাদের লেখনি পারে একমাত্র জাতিকে সতর্ক করতে।
মানুষের অন্তরের মাঝে রবের দেওয়া নির্দেশ পৌছাতে আজ আমাদেরকে কলমের মাথা কালিতে ডুবাতেই হবে, নতুবা সেই স্থান দখলে নিবে এক গাইরুল্লাহ, ভিন্ন কোনো রব। তাওহীদের দাওয়াত মানুষের কাছে এই লেখনির মাধ্যমেই সহজে পৌঁছানো যায়।
মুসলিম জাতির আত্মপরিচয়, ইতিহাস, গৌরব-গর্ব এই কলমের কালিতেই স্থাপত্য হয়ে এসেছে বইয়ের পাতায় পাতায়। তাই নিজের জন্য লিখতে হবে, উম্মাহর জন্য লিখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে এক অদম্য অপ্রতিরোধ্য জাতি, যারা কিনা আল্লাহর জমিয়ে আল্লাহর আইনকে শতভাগ নিশ্চিত করে।
আজ আমাদেরকে যেমন তরবারীতে শান দিতে হবে ঠিক তেমনি কলমও ধরতে হবে। দায়ী ইলাল্লাহ এর ভূমিকায় এই কলম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই কলম ও কালি দ্বারা আল্লাহ সুবাহানাহুওয়া তা’য়ালা সৃষ্টির শুরু লগ্ন হতে কিয়ামত অব্দি সব লিপিবদ্ধ করেছেন। এই কলমের দ্বারাই যুগে যুগে বুদ্ধিভিত্তিক ও লেখনীর যুদ্ধ হয়ে এসেছে আর হতেই থাকবে।
সংগৃহীত:
Comment