Announcement

Collapse
No announcement yet.

"সাইকোলজিক্যাল গেমের ধাঁধায়" অন্ধকারে জাতি!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • "সাইকোলজিক্যাল গেমের ধাঁধায়" অন্ধকারে জাতি!

    "সাইকোলজিক্যাল গেমের ধাঁধায়" অন্ধকারে জাতি!

    সাইকোলজিক্যাল গেম বা মনস্তাত্ত্বিক খেলা এটা খুবই সহজ কিন্তু গভীর! সবারই জানা যে, বছরের পর বছর ধরে ইন্ডিয়া, ওয়েস্টার্ন দালাল মিডিয়া এবং সরকার মিলে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটা ক্যারেক্টার বা মুখ তৈরি করে যা 'Culturally weaponisation বা সাংস্কৃতিকভাবে অস্ত্র' এর মাধ্যমে কিছু ব্যক্তিদের ইয়াং জেনারেশনের কাছে "আইকনিক পার্সন" হিসেবে বানানো হয়।

    এটা খুব সহজ সাইকোলজিক্যাল গেম যে, আমেরিকার লোক যদি বলে “ড্রিংকস কর” আমরা বলব, দূর'হ শয়তান। কিন্তু একই কথা যদি হুমায়ুন আহমেদকে দিয়ে বলানো হতো তাহলে মানুষ বিভ্রান্ত হবে, সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবে। সেই কথা আবারও বলানো হলে একসময় মানুষ গ্রহণ করবে। একই বার্তা বারবার আসতে থাকলে, একসময় সেটাই হয়ে ওঠে ‘নিউ নর্মাল’।

    এই প্রক্রিয়াটিই হলো cultural weaponisation বা সাংস্কৃতিক অস্ত্র —যেখানে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি মুখকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে একটি আদর্শ, একটি মূল্যবোধ, এমনকি একটি গোটা জীবনব্যবস্থাকেও প্রতিষ্ঠিত করা হয়।

    ইন্টারেস্টিং গেমের লাভটা হচ্ছে 'আমি' উপস্থিত হওয়ার আগেই 'আমার' গ্রাউন্ড তৈরী হয়ে যাবে। যখন আমি আসব তখন জনগণ, সরকার, মিডিয়া কেউই 'আমার' বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না।

    বাংলাদেশ এখন এই প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে। জাতীয় ঐকমত্যের নামে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গণহত্যাকারী যালিম হাসিনার পলায়নের পর অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে। অনেকেই তাকে “নিরপেক্ষ”, “জনগ্রাহ্য”, এমনকি “আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত” ব্যক্তি বলে মেনে নিয়েছি।

    কিন্তু এই গ্রহণযোগ্যতার খোলসের আড়ালে কী ঘটছে, সেটা বুঝতে আমাদের অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।

    ড. ইউনূস সেই পরিচিত মুখ, যাকে সামনে রেখে পশ্চিমারা লিবারেল এজেন্ডাগুলো বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া দিচ্ছে। ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি সংবেদনশীল এই দেশের মানুষের চোখের সামনে দিয়ে এমন কিছু নীতি ও সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে—যা ইসলামের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। এই কাজটি সরাসরি করা হলে জনগণের প্রতিরোধ আসত। তাই এখন ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধেই কাজ করা হচ্ছে। ইসলাপন্থী দল ও ব্যক্তিদের সামনে রেখে একটি ঢাল তৈরি করা হচ্ছে, যেন কেউ প্রশ্নও না তোলে।

    এই পুরো পরিকল্পনার গভীরে আছে একটি দীর্ঘমেয়াদি এজেন্ডা, যার মূল উদ্দেশ্য সমাজের মূল্যবোধগত ভিত্তি ভেঙে ফেলা, পরিবারের গঠন নস্যাৎ করা এবং ধর্মকে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া কেবল ব্যক্তিগত আনুষ্ঠানিকতায়।

    মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম ‘সফট পাওয়ার’ হচ্ছে এই লিবারেল হিউম্যান রাইটস ডিসকোর্স বা প্রসঙ্গ -যার ছদ্মবেশে ঢুকে আসছে এলজিবিটিকিউ এজেন্ডা, তথাকথিত “ইনক্লুসিভ সোসাইটি” আর “জেন্ডার সমতা”র মতো বহুস্তরীয় প্রচারণা।

    এখন এই প্রশ্নটা আমাদের ভাবতে হবে, আমরা কি সত্যিই বুঝে এই পথ নিচ্ছি? না কি কোনো এক 'অতিজ্ঞানী’ ‘অভিজাত’, ‘আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য’ ডঃ ইউনুসের মুখের হাসির আড়ালে আমরা অন্ধভাবে একটি বিদেশি সমাজব্যবস্থা গ্রহণ করছি?

    ড. ইউনূস আসলে সেই মুখ, যার আগমন ঘটেছে বহু বছরের প্রস্তুতির পর। তিনি যখন উপস্থিত হলেন, তখন কেউই তার বিরুদ্ধে কথা বলার ‘নৈতিক সাহস’ পাচ্ছিল না। জনগণ, সরকার, মিডিয়া – সবাই একধরনের নিঃশব্দ সম্মতিতে অংশ নিচ্ছে। আর এই চুপচাপ থাকা অবস্থাতেই ঘটে যাচ্ছে ইতিহাসের এক জঘন্য কলঙ্কময় অধ্যায় সবচেয়ে বড় রূপান্তর; যা আমাদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি, ভবিষ্যৎ, এবং সামাজিক মূল্যবোধকে ধীরে ধীরে করছে হাতছাড়া।

    আর জাতিসংঘ? তারা এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ‘মানবাধিকার’ শব্দটির অর্থই করে তুলেছে এই লিবারেল এজেন্ডার সেবা। আজ তারা অফিস খুলেছে, কাল'তারা' আমাদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি, আত্মমর্যাদা এবং সামাজিক মূল্যবোধের উপর করবে হস্তক্ষেপ।

    আমরা কি সজাগ? আমরা কি সত্যিই বুঝে শুনে এই পথ বেছে নিচ্ছি? নাকি আমাদের সন্তানদের রেখে যাচ্ছি এমন এক সমাজে, যেখানে সত্য, মিথ্যা, নারী-পুরুষ, ন্যায়-অন্যায় সবকিছুর সংজ্ঞাই হয়ে যাবে‘নিউট্রাল বা নিরপেক্ষ? ‘নিউট্রাল’ নামে যে নতুন এক নির্বিষ সমাজের দিকে জাতিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যার ভেতরে ঈমান নেই, ঘ্রাণ নেই, নেই প্রতিবাদ। যেখানে থাকবে শুধু লাঞ্ছনা, অপমান আর আত্মমর্যাদাবোধহীন এক নির্জীব অবক্ষয় জাতির উপাখ্যান।

    হে আমাদের পালনকর্তা, এ দেশ, জাতি এবং মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করুন‌-আমীন

    সংগৃহীত ও পরিমার্জিত:

Working...
X