Announcement

Collapse
No announcement yet.

তাগুতী বিচারব্যবস্থা ও আমার অভিজ্ঞতা।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তাগুতী বিচারব্যবস্থা ও আমার অভিজ্ঞতা।

    স্কুলে পরীক্ষা আসন্ন। আমার পড়ায় মন বসছে না। কারণ আজ আব্বুর মামলায় হাজিরার তারিখ। কোর্টের জজ একজন মহিলা, একগুঁয়ে, নির্দয় এবং পাষাণ হৃদয়ের অধিকারী। আপোষ করা মামলায় পর্যন্ত আসামীদেরকে ফাঁসি দিয়ে দেয়। জানা গেছে এই মহিলা নাকি তরুণ বয়সে নির্যাতিত হয়েছিল তাই পুরুষ জাতির প্রতি তার প্রচন্ড ক্ষোভ। সে প্রচুর পড়াশোনা করি বিসিএস দিয়ে জজ হয়েছে। এখন সে তার ক্ষোভের প্রকাশ ঘটাচ্ছে আইনি ক্ষমতার প্রয়োগ করে। পুরুষদের ওপর বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে।
    ******************* ************

    আব্বুসহ অর্ধ শতাধিক লোক এই খুনের মামলার আসামি। এক মিথ্যা মামলা। সামান্য গুরুতর আহত লোকটি হাসপাতালে তার স্ত্রীর কাছে বসা ছিল। তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ডেকে নেওয়া হলো। অতঃপর একটি সেপারেট রুমে তার দলের লোকদের উপস্থিতিতে ডাক্তার একটি ইনজেকশন দিল। তীব্র প্রতিক্রিয়াশীল ইনজেকশন। অতঃপর লোকটা ফিরে এসে তার স্ত্রীর কাছে বসল। হঠাৎ সে বলল আমার বুকে জ্বালাপোড়া করছে। মিনিট খানেকের মধ্যেই সে দুনিয়া থেকে বিদায় হলো। যদিও রিপোর্ট বলছিলো মৃত্যুর কারণ আঘাত, রিপোর্টে এও আসলো নিহতের মুখের ভিতর সাদা রঙের তরল দেখা যাচ্ছিল। যেটা বিষক্রিয়ার লক্ষণ। কিন্তু বিপুল পরিমাণ অর্থের সামনে প্রশাসন সেটি গ্রাহ্য করল না।

    অবশ্য পরবর্তীতে বাদী পক্ষের লোকদের কাছ থেকে সেটা প্রকাশিত হয়েছিল যে ডাক্তার কে ৫০ হাজার টাকা খাইয়ে লোকটাকে হত্যা করা হয়েছিল। প্রশাসনের লোকেরাও সেটা জানে। কিন্তু তারা বলে তারা কিছু করতে পারবে না। কারণ মামলা কোর্টে চলে গেছে। মানবরচিত সংবিধানের আইন অনুযায়ী মামলার বিচার হবে, হোক সেটা মিথ্যা অথবা সত্য। বাদীপক্ষ যদি বিচার চায় এবং সাজানো সাক্ষীরা যদি বাদীর অনুকূলে সাক্ষ্য দেয় তবে এর বিচার হবে সংবিধান অনুযায়ী।
    ************************

    অবশ্য মামলাটি আপোষ হয়েছে* লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে। কিন্তু বাদী আর প্রধান সাক্ষীদের* মধ্যে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শুরু হল তুমুল কলহ। আসামিপক্ষ বাদিপক্ষকে সমর্থন জানালো।* প্রধান সাক্ষীর দল বিগড়ে গেল।* তারা চাইল মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে আসামিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দিতে। অবশ্য এই দলটির মধ্যে ধর্মভীরু লোকেও রয়েছে। তারাও কোর্টে আসতে যেতে কেউ কেউ তসবি টিপে যদিও তারা মিথ্যা সাক্ষী দিতে বদ্ধপরিকর।
    ****************************** ******
    রাত্রে আত্মীয়দের একটি মিটিং বসল। যদিও বাদীর সঙ্গে আপোষ হয়েছে কিন্তু প্রধান সাক্ষীরা বলতে হবে যে কেস আপোষ হয়েছে। এখন বাদীর মুখ গৌণ। বাদী যা বলার তত মামলা করার সময়ই লিখে দিয়েছে। সাক্ষীরা যদি বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয় তাহলে সাজা হয়ে যেতে পারে। অপরদিকে যে মহিলা জজ সে সাজা দিয়েই দিবে।


    তাই প্রধান আসামিদের কাছে প্রতিনিধি পাঠানো হলো, তবে প্রথমেই তারা চেয়ে বসল বিপুল অঙ্কের টাকা। কয়েক লক্ষ টাকা। প্রথমে মিটিং এ সিদ্ধান্ত হল টাকার চেয়ে প্রাণ বড়। কিন্তু প্রধান সাক্ষীরা বিশ্বাসযোগ্য নয়। লুটপাট করাই তাদের কাজ।
    টাকা আগে দেওয়া যাবে না। দিতে হবে সাক্ষ্য দেওয়ার পরে। কিন্তু প্রধান সাক্ষীরা মেনে নিলোনা।
    অমীমাংসিত অবস্থায় মিটিংটি সমাপ্ত হল।

    কিশোর আমার ভিতরও কাঁপছিল। আম্মুকে বললাম, নাহয় কোর্টে কোরআন নিয়ে যাই? জজ সাহেবাকে অনুরোধ করব, সাক্ষীরা যেন কোরআন হাতে নিয়ে তাদের বিবৃতি দেয়। তখন হয়তো জজ সাহেবার অন্তর বিগলিত হতে পারে।

    আম্মু বললেন, এতে কাজ হবে না। পাগল বলে বের করে দেবে।
    ********************** *********

    আজকের দিন টা খুবই উত্তেজনাময়। ভিতরে হৃৎপিণ্ডটা লাফাচ্ছে। আজকে আব্বুকে কোর্টে যেতে হবে হাজিরা দিতে। সবাই দোয়া-দুরুদ পড়ছেন। "হাকিমের মন জয়ের" দোয়া পড়ছেন নানী। মহিলারা একত্রিত হয়ে খতমে ইউনুস পড়ছে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসামিপক্ষ গেলো হাজিরা দিতে।



    দুপুর হতে আব্বুসহ অন্যান্য আসামিরা ফিরে আসলেন। হয়তো কোন আনন্দে সংবাদ নাকি। মহিলা জজটির অন্তরে কি দয়া জেগেছে এতগুলো অসহায় লোকজনকে দেখে? কিন্তু না।

    আব্বু জানালেন হাজিরার উকিলের মাধ্যমে বলে কয়ে তারিখ ৭ দিন পিছানো হয়েছে। জজ সাহেবের পাশে যে সহকারী লোক থাকে সে আশ্বাস দিয়েছে তাকে দেড়লাখ টাকা দিলে জজ সাহেবকে বলে কয়ে আগামী সপ্তাহে হাজিরার তারিখ* কয়েক মাস পিছিয়ে দেবে।

    তিনি বললেন, "বাদীর উকিল জজ সাহেবাকে বলল, মাই লর্ড, বাদীর সঙ্গে আসামিপক্ষের কেসটি আপোষ হয়েছে।

    কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে প্রধান সাক্ষীদের উকিল দাড়িয়ে বলল, মাই লর্ড, একটি কেস শেষ হয়ে যাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রদান ছাড়াই এটাই কি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা?

    জজ সাহেবা বলল, হ্যাঁ অবশ্যই সাক্ষী নেওয়া হবে। আপনারা সাক্ষ্য দিন।

    আমাদের বুক তখন ধুকধুক করে কাঁপতে শুরু করল। আমরা তাড়াতাড়ি আমাদের পক্ষের উকিলকে দিয়ে ডেট ৭দিন ডেট পিছালাম।

    পরে জজের সহকারী লোকটির সাথে যোগাযোগ করে কে দেড়লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, এই শর্তে যে সাতদিন পর পরবর্তী হাজিরায় সে জজ সাহেবকে বলে কয়ে এর পরবর্তী হাজিরার তারিখ কয়েক মাস পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।"

    আব্বু থামলেন।

    এরপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "বাবা বেশি বেশি পড়াশোনা করো। দেখো উচ্চপর্যায়ে যেতে পারো কিনা।"

    আমার ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব। কিন্তু ওই দিনই আমি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম, প্রশাসনিক পর্যায়ে যাব।
    কখনো চিন্তা করতাম, জজ হবো। ইসলামী আইন অনুযায়ী বিচার করব। আমি দায়িত্বশীল থাকা অবস্থায় কেউ অবিচার পাবে না



    কিছুদিন পর আবেগ প্রশমিত হলে একটু ভালো করে চিন্তা করলাম, আসলেই যদি আমি বিসিএস দিয়ে যদি এই পর্যায়ে যেতে পারি তাহলে কি আমি সত্যিই ইসলামী আইন দিয়ে বিচার করতে পারব?

    আমি কি পারব চোর-ডাকাতের হাত কেটে দিতে?

    আমাকে কি সুযোগ দেওয়া হবে কি?

    নাকি দেশের সাংবিধানিক আইনের বিরুদ্ধে যাওয়ার অপরাধে সাসপেন্ড করা হবে?

    উগ্রবাদী আইন প্রয়োগের অপরাধে বরখাস্ত ও গ্রেফতার করা হবে?
    Last edited by হারুন; 06-21-2021, 09:09 PM. Reason: errors

  • #2
    এই তাগুতী বিচারব্যবস্থা সমূলে ধ্বংস করা ছাড়া উম্মাহর মুক্তির আর কোন পথ নেই।
    তাই আসুন ইসলামী বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হই।
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      হে সম্মানিত ভাই, এই তাগুতী শাসন ব্যবস্থার অবসান করে ইসলামী শরীয়াহ বাস্তবায়ন করাই হলো এই উম্মাহর মুক্তির পথ।

      Comment


      • #4
        আপনার পিতা নিরপরাধ হয়ে থাকলে আল্লাহ তাকে হেফাজত করুক এবং এ পরিস্থিতিতে আপনি ইসলামী আইন প্রয়োগ করলে আপনাকে ঘুম করে হত্যা করা হবে।

        Comment

        Working...
        X