Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমার পা আমার আগে জান্নাতে চলে গেছে

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমার পা আমার আগে জান্নাতে চলে গেছে

    আমার পা আমার আগে জান্নাতে চলে গেছে

    প্রিয় ভাই!
    শিরোনামটা শুনে তোমার শরীরে কেমন যেন হালকা শিহরণ সৃষ্টি হয়েছে তাই তো! হওয়ারই কথা। কারণ তোমার তারুণ্য শক্তিতে এ এক প্রকার অদৃশ্য অনুভূতি। দ্বীনের অনুভূতি দ্বীনের পথে মানসিক পাগলদের স্পর্শ করে না। বিধান পালনের ক্ষেত্রে বৈরাগ্যকারীদেরও ধরা দেয় না।

    তাহলে তুমি যে ইসলামী আদর্শের পতাকাতলে ক্ষণে ক্ষণে অনুভূতি কুঁড়াও তার স্বাদ আস্বাদন করো তার থেকে আবার উম্মাহর মাঝে কিছুটা বিলিয়ে দাও। এগুলো কি তোমাকে আনন্দিত করে না? এ কুঁড়ানো অনুভূতি কি তোমাকে জান্নাতের স্বপ্ন দেখায় না। ঠিক তেমনি তোমার মতই স্বপ্ন যাদের। উম্মাহর এমন আরো কিছু বেশ মানুষ আছে যারা কালিমার পতাকাতলে একত্রিত হতে ভারি মজা পায়। হাস্যোজ্জ্বল চেহারা তাদের ভিতরের মানচিত্রকে প্রস্ফুটিত করে তুলে।

    তুমি তাদের চেহারায় তাঁকালে দেখতে পাবে নূর চমকাচ্ছে। হাসি দিলে দেখতে পাবে ঠোটের কোণে আরেকটু মিষ্টি হাসি লুকিয়ে আছে। এগিয়ে যাও আপন করে নিবে। জিজ্ঞেস করো সব বলে দিবে। ইহুদিদের হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপের গল্প শুনাবে। রকেট লাঞ্চারের আঘাতে কেটে পড়া হাত পায়ের চিত্র দেখাবে।

    এক পাঁ নিয়ে কাটা হাত দিয়ে কত হাজার স্বপ্ন তারা বুকে লালন করছে তা আমাকে তোমাকে নিয়মিত পেরেশান করে দিবে। পঙ্গুত্বের চেয়ারে বসে তাদের আশার বাণী শুনলে হার্ট দুর্বল ব্যক্তিরাও সবল হয়ে যাবে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে তাদের শান্তনার বাক্য শুনলে মুমুর্ষ রোগীরাও ক্ষণিকের সুস্থতা ফিরে পাবে।

    স্মৃতি বিজড়িত কন্ঠে বারবার বলতে চেয়েও বলতে পারে না-ভাই আমার। তুমি আমার দেহের অঙ্গকে খন্ডিত দেখেছো তাই বলে কি আমার ইমানকেও খন্ডিত পেয়েছো? পা আমার কাটা তবে ইমান আমার ঠিকই তরতাজা। হাতের আঙ্গুল হারিয়েছি কিন্তু ইমানের চুল পরিমাণও ক্ষতি হতে দেয়নি।

    ভাই আমার! যার জন্য এত লম্বা ভূমিকা টানা সেটা না শুনে কি করে চলে যাবা! এটা কোন বুদ্ধিমানের কাজ? কক্ষনোই না। আমি না হয় একটু বিরক্ত করি তাই বলে কি আমি আর তুমি এ গল্প শুনা থেকে বিরত থাকতে পারি? চলো ভাই চলো! শুরু করি-

    নাম মোহাম্মাদ সালেহ হুমাইদ। গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তুপই এখন তার বাড়ি। আশপাশের চারচারটি বন্ধু নিরব মনে শত সহস্র স্বপ্ন বুকে নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত। কেউ তাদের কথা বলেও না সালেহ হুমাইদের দুঃখও মুছে না। এমনিতেই সে লালসাদা বর্ণের। তারপর আবার জন্মগত মিশরী। চোখ দিয়ে গাল বেয়ে কান্নার পানি পড়লে মনে হয় যেন আনারের রস নিঙে পড়ছে। দিনগুলো মোটেও ভালো যাচ্ছে না। অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ শান্তি নেই।

    এরই মাঝে একদিন ধ্বংসস্তুপের ঠিক উপরে বসে মিটমিট করে হাসছে কিন্তু আনমনা, মনে হচ্ছে গভীর চিন্তায় বিভোর। আল-জাজিরার এক ফটো সাংবাদিকের তার এগিয়ে যাওয়া সে কিছু আঁচ করতে পারলো। পিকপিক করে কয়েকটা ফটো তুলতে না তুলতেই সে খিলখিলিয়ে এক হাসি দিয়ে হেলেদুলে পড়ে যাচ্ছে। এদিকে সাংবাদিকও মনের মত করে কয়েকটা ফটো তুলে নিলো।

    ভাই আমার! কেন সে হাসছে জানো? এত সুন্দর হাসির পিছনে অবশ্য অজানা এক রহস্য লুকিয়ে আছে! গাজার সর্বশেষ যুদ্ধে কাপুরুষ ইয়াহুদীরা তাদের ওপর বিমান হামলা করে। বোমা তার *ছোট্ট এ কচি দেহটার একেবারে কাছে এসে পড়ে। এতে তার একটি পা উড়ে যায়। কিন্তু সে আল্লাহর অশেষ কৃপায় নিশ্চিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পায়।

    এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর থেকে সে সদা সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল থাকে। তখন থেকে খুব কম সময়ই তাকে বিষণ্ন মনে দেখা যায়। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো- বাবা হুমাইদ! তুমি এত খুশি কেন? এক কথায় চট করে উত্তর দিয়ে দিলো-
    ﻷﻥ ﻗﺪﻣﻲ ﺳﺒﻘﺘﻨﻲ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺠﻨﺔ !
    কারণ আমার পা আমার আগেই জান্নাতে চলে গেছে।

    প্রিয় ভাই!
    এখন তুমিই বলো- তার এ হাসির তুলনা পৃথিবীর অন্য কিছু দিয়ে করা যাবে? ওজনের পাল্লা দিয়ে বা মনের বাটখিরায় অনুমান করে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিটিস্কেন করে? তাও পারবে না। এ তুলনা করাটাই নিছক বোকামী। শুধু হুমাইদ একার না বরং এমন অসংখ্য তরুণ কিশোরদের বীরত্বগাঁথা ঘটনা প্রতিনিয়ত শামের ভূমিতে ঘটে যাচ্ছে।

    মাওলা! তুমি এমন নিষ্পাপ কোমলমতি কিশোরের দিলের মাকসাদ পূরণ করে দিও। তাদের তুমি শুহাদাদের পরিবারভুক্ত করে নিও। মৃত্যুর আজাল আসার আগেই তুমি তোমার মুহিব্বীনদের সঙ্গী বানিয়ে দিও। আর যাদের জন্য অফুরন্ত নেয়ামতসহ নদীর তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ সাঁজিয়ে রেখেছো তাদের সাথে অধমদের হাশর নাশর করিও।

  • #2
    আহ!!!কত হৃদয় বিদারক ঘটনা।

    Comment


    • #3
      তাদের দুঃখ লাঘব করবে কে? মাওলা তুমি তাদের উপর রহমতের পরশের স্পর্শ দাও

      Comment

      Working...
      X