প্রথমে শুনুন বক্তবটি
এরপর শুনুন ভ্রান্তির জবাব টি
(গাযওয়াতুল হিন্দের হাদীস সম্পর্কে ফেসবুকে একভাই এর পোষ্ট। পড়লে উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ। প্রচার কাম্য।)
🍃গাযওতুল হিন্দের হাদীস কি যয়িফ তথা দুর্বল?
একভাই ডঃ মনজুরে এলাহী কে প্রশ্ন করেছিল,
গাযওয়াতুল হিন্দ কি? গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে জানতে চাই, গাযওয়াতুল হিন্দ কি অতি নিকটে?
জবাবে ডঃ মনজুরে এলাহী বলেন, ‘‘গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে বেশকিছু দুর্বল হাদীসের সমাহার দেখা যায়। এসম্পর্কে বর্তমান যুগের বড় বড় আলেমরা কোন ইতিবাচক রিসার্চ পেশ করেন নি। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে এইযে ধারনাটা পেশ করা হয়েছে দুর্বল হাদীসের আলোকে, এটাকে বিশুদ্ধ কোন তথ্য হিসেবে পরিবেশন করা উচিৎ নয়। অতএব এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই।’’(সমাপ্ত)
# তার প্রথম দাবী হলো,‘‘গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে বেশ কিছু দুর্বল হাদীসের সমাহার দেখা যায়’’
তো চলুন আমরা দেখি গাযওয়াতুল হিন্দের হাদীস দুর্বল কিনা?
হাদীসঃ
ﻋﺼﺎﺑﺘﺎﻥِ ﻣﻦْ ﺃﻣﺘِﻲ ﺃﺣﺮَﺯَﻫﻤَﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣﻦَ ﺍﻟﻨﺎﺭِ، ﻋﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻐﺰﻭ ﺍﻟﻬﻨﺪَ، ﻭ ﻋﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻜﻮﻥُ ﻣﻊَ ﻋﻴﺴﻰ ﺑﻦِ ﻣﺮﻳﻢَ
(রাসুলূল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহ পাক আমার উম্মতদের দু’টি দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন। আর সেই দুটি দল হচ্ছে, এক. যাঁরা হিন্দুস্তান বা ভারতের মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। দুই. আর অপর দলটি হচ্ছেন, যাঁরা হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম-উনার সাথে থাকবেন।)
হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে
📖১★‘‘সুনানুন নাসায়ীর’’ কিতাবুল জিহাদের ‘গাযওয়াতুল হিন্দ পরিচ্ছেদে’ (২/৬৪)।
📖২★‘‘মুসনাদে আহমদ’’(৫/২৭৮)।
📖৩★‘‘আল জামিউস সাগীর’’ (ইমাম সুয়ুতীর) হাদীস: ৫৪১৮। হাদীসের মান: সহীহ
📖৪★‘‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’’ এ আল্লামা হাইসামী রহ. হাদীস সম্পর্কে বলেন,
ﻭﺳﻘﻂ ﺗﺎﺑﻌﻴﻪ ﻭﺍﻟﻈﺎﻫﺮ ﺃﻧﻪ ﺭﺍﺷﺪ ﺑﻦ ﺳﻌﺪ ، ﻭﺑﻘﻴﺔ ﺭﺟﺎﻟﻪ ﺛﻘﺎﺕ
📖৫★‘‘সহীহ আন নাসায়ী’’তে মুহাদ্দিস ইমাম শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন (হাদীসঃ ৩১৭৫)।
📖৬★‘‘সহীহ আল জামে’’তে মুহাদ্দিস ইমাম শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন (হাদীসঃ ৪০১২)
📖৭★‘‘সিলসিলাতু আহাদিসিস সাহীহা’’তে মুহাদ্দিস ইমাম শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. হাদীসটি উল্লেখ করে লিখেন, হাদীসটি নাসায়ী, আহমাদ ও أبو عروبه الحراني তার হাদীসে
عن بقية بن الوليد: ثنا عبدالله بن سالم و أبو بكر بن الوليد الزبيدي عن محمد بن الوليد الزبيدي عن لقمان بن عامر الوصابي عن عبد الأعلى بن عدي البهراني عن ثوبان مولى رسول الله ﷺ عن النبي ﷺ
সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
শায়খ আলবানী বলেন,
قلت: وهذا إسناد جيد، رجاله ثقات غير أبي بكر الزبيدي فهو مجهول الحال، لكنه مقرون هنا مع عبدالله بن سالم وهو الأشعري الحمصي، ثقة من رجال البخاري .
بقية بن الوليد مدلس، ولكنه قد صرح بالتحديث، فأمنا به شر تدليسه على أنه قد توبع، فقال هشام بن عمار: حدثنا الجراح بن مليح البهراني: ثنا محمد بن الوليد الزبيدي به.
📖৮★‘‘যখিরাতুল হুফ্ফায’’ গ্রন্থে ইবনুল কায়সারানী রহ.
ﻋِﺼَﺎﺑﺘﺎﻥِ ﻣﻦ ﺃُﻣَّﺘﻲ ﺣَﺮَﺯَﻫُﻤَﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺭِ : ﻋِﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻐﺰُﻭ ﺍﻟﻬﻨﺪَ ﻭﻋِﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻜﻮﻥُ ﻣﻊ ﻋﻴﺴﻰ ﺑﻦِ ﻣﺮﻳﻢَ
হদীসটি উল্লেখের পর তার সনদ উল্লেখ করেন
رواه الجراح بن مليح البهراني الحمصي: عن محمد بن الوليد الزبيدي عن لقمان بن عامر الوصابي عن عبد الأعلى بن عدي البهراني عن ثوبان مولى رسول الله ﷺ عن النبي ﷺ
এবং বলেন,
وهذا حديث الجراح، وهو صالح.
মুহাদ্দিসিনের উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা হাদীসটি সহীহ প্রমাণিত হয়। এবং মনজুরে এলাহীর বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে আরেকটি হাদীস
হাদীসঃ
ﻭﻋَﺪَﻧﺎ ﺭﺳﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠَّﻢ ﻏﺰﻭﺓَ ﺍﻟﻬﻨﺪِ، ﻓﺈﻥِ ﺍﺳﺘُﺸﻬِﺪْﺕُ ﻛﻨﺖُ ﻣِﻦ ﺧﻴﺮِ ﺍﻟﺸُّﻬﺪﺍﺀِ، ﻭﺇﻥْ ﺭﺟَﻌْﺖُ ﻓﺄﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻫُﺮﻳﺮﺓَ ﺍﻟﻤُﺤﺮَّﺭُ .
[হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বলেন, রাসুলূল্লাহ ﷺ আমাদের থেকে গাযওয়াতুল হিন্দের ওয়াদা নিয়েছেন, সুতরাং যদি আমি তাতে শহীদ হই আমি হবো উত্তম শহীদদের অন্তর্ভুক্ত, আর যদি (যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে) ফিরে আসি, তাহলে আমি হবো (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত আবু হুরায়রা।]
📖★সূত্রঃ মুসনাদে আহমাদ, ১২/৯৭
হাদীসের মানঃ সহীহ
মুহাদ্দিস ও মুহাক্কিক আহমাদ শাকের রহ. হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন।
গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে আরেকটি হাদীস
হাদীসঃ
ﻭﻋﺪﻧﺎ ﺭﺳﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻠﻴْﻪِ ﻭﺳﻠَّﻢَ ﻏﺰﻭﺓَ ﺍﻟْﻬﻨﺪِ ﻓﺈﻥ ﺃﺩﺭَﻛﺘُﻬﺎ ﺃُﻧﻔِﻖُ ﻓﻴﻬﺎ ﻣﺎﻟﻲ ﻭﻧﻔﺴﻲ ﻓﺈﻥِ ﺍﺳﺘﺸْﻬﺪﺕُ ﻛﻨﺖُ ﻣﻦ ﺃﻓﻀﻞِ ﺍﻟﺸُّﻬﺪﺍﺀِ ﻭﺇﻥ ﺭﺟﻌﺖُ ﻓﺄﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻫﺮﻳﺮﺓَ ﺍﻟﻤُﺤﺮِّﺭُ
[ রাসুলূল্লাহ আমাদের থেকে হিন্দুস্তানেরর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতিশ্রুতি নেন। যদি আমি তা পেয়ে যাই, আমি আমার জান-মাল তাতে উৎসর্গ করবো। অতএব যদি আমি তাতে শহীদ হই, তাহলে আমি হবো শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত। আর যদি (যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে) ফিরে আসি, তাহলে আমি হবো (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত আবু হুরায়রা।]
📖★ ‘‘তারিখুল ইসলাম’’ (যাহাবী রহ.)১/৩৭৯
হাদিসের মানঃ গরীব
#ড. মনজুরে এলাহীর দ্বিতীয় দাবী ‘‘এ প্রসঙ্গে বর্তমান যুগের বড় বড় আলেমরা কোন ইতিবাচক রিসার্চ পেশ করেন নি।’’
আসুন একটু ভাবিঃ
কোন যুগের বড় আলেমরা কোন বিশুদ্ধ হাদীস সম্পর্কে নিজের ব্যাক্তিগত মত ও চিন্তা দ্বারা গবেষণা করেন নি অথবা গবেষণা করে উম্মাহর কাছে পেশ করেনি এই কারনে তার উপর আমল করা যাবে না, অথবা তা বাস্তবায়িত হবেনা, এমন কোন উসুল আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি।
ইন্নালিল্লাহ... ! আমার কানকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছে।
#ড. মনজুরে এলাহীর তৃতীয় দাবী ‘‘তাদের(বড়দের) বক্তব্য হচ্ছে, গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে এইযে ধারনাটা পেশ করা হয়েছে দুর্বল হাদীসের আলোকে, এটাকে বিশুদ্ধ কোন তথ্য হিসেবে পরিবেশন করা উচিৎ নয়।’’
জবাবঃ আমরা প্রথমেই গাযওয়াতুল হিন্দের হাদীসকে সহিহ প্রমাণ করে এসেছি। তাই তার এই দাবীটা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবে আমাদের জানার বিষয় হলো, এই বড়রা কারা(?) যারা একটি সহিহ হাদীসকে দুর্বল বানিয়ে তা প্রচার করা থেকে নিষেধ করেছেন। নাকি বড় বলতে তাদের মতো মুস্তাশরিকীন শায়খরা উদ্দেশ্য? যারা কিনা রাসুলূল্লাহ সা. এর হাদীস গুলোকে মিথ্যা প্রমানে রাতদিন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
#ড. মনজুরে এলাহীর চতুর্থ মত হলো ‘‘অতএব এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই।’’
আসুন সাহাবা জীবন দ্বারা একটু চিন্তা করিঃ
দ্বিতীয় নাম্বারে আমরা যে হাদীসটি উল্লেখ করেছি, হাদীসে আবু হরায়রা রাযি. আকাংখা প্রকাশ করছিলেন, ‘‘আমি যদি তাতে শহীদ হই তাহলে শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হবো’’ আর তৃতীয় হাদীসে আছে তিনি বলছেন ‘‘যদি আমি এই যুদ্ধ পেয়ে যাই, আমি আমার জান ও মাল তাতে ব্যায় করবো.....।’’ চিন্তা করুন, ১৪০০ বছর আগে হযরত আবু হুরায়রা রাযি. এর মতো একজন সাহাবী গাযওয়াতুল হিন্দের জন্য আকাংখা প্রকাশ করেছে অথচ আজ ১৪০০ বছর পরে এসে সৌদি তাগুতের পদলেহনকারী দরবারী আলেমরা মানুষকে বুঝাচ্ছে ‘‘এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই।’’
মাআযাল্লাহ! আমরা আল্লাহর কাছে এইসব ধোকাবাজ, প্রতারক, মিথ্যুক, দাজ্জালদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। আল্লাহ এই উম্মাহকে এইসব পবৃত্তিপূজারী, পথভ্রষ্ট আলেমদের অনিষ্টতা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।।
উল্লেখ্যঃ নামধারী আহলে হাদীসের পবৃত্তিপূজারী শায়খরা ইতিপুর্বে বহু সহিহ হাদীসকে যয়িফ প্রমাণের চেষ্টা করে মানুষকে ধোকা দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ! আমাদের আলেমরা বরাবরের মতই প্রতিবার তাদেরকে মিথ্যুক প্রমান করে দিয়েছেন।
এরপর শুনুন ভ্রান্তির জবাব টি
(গাযওয়াতুল হিন্দের হাদীস সম্পর্কে ফেসবুকে একভাই এর পোষ্ট। পড়লে উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ। প্রচার কাম্য।)
🍃গাযওতুল হিন্দের হাদীস কি যয়িফ তথা দুর্বল?
একভাই ডঃ মনজুরে এলাহী কে প্রশ্ন করেছিল,
গাযওয়াতুল হিন্দ কি? গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে জানতে চাই, গাযওয়াতুল হিন্দ কি অতি নিকটে?
জবাবে ডঃ মনজুরে এলাহী বলেন, ‘‘গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে বেশকিছু দুর্বল হাদীসের সমাহার দেখা যায়। এসম্পর্কে বর্তমান যুগের বড় বড় আলেমরা কোন ইতিবাচক রিসার্চ পেশ করেন নি। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে এইযে ধারনাটা পেশ করা হয়েছে দুর্বল হাদীসের আলোকে, এটাকে বিশুদ্ধ কোন তথ্য হিসেবে পরিবেশন করা উচিৎ নয়। অতএব এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই।’’(সমাপ্ত)
# তার প্রথম দাবী হলো,‘‘গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে বেশ কিছু দুর্বল হাদীসের সমাহার দেখা যায়’’
তো চলুন আমরা দেখি গাযওয়াতুল হিন্দের হাদীস দুর্বল কিনা?
হাদীসঃ
ﻋﺼﺎﺑﺘﺎﻥِ ﻣﻦْ ﺃﻣﺘِﻲ ﺃﺣﺮَﺯَﻫﻤَﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣﻦَ ﺍﻟﻨﺎﺭِ، ﻋﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻐﺰﻭ ﺍﻟﻬﻨﺪَ، ﻭ ﻋﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻜﻮﻥُ ﻣﻊَ ﻋﻴﺴﻰ ﺑﻦِ ﻣﺮﻳﻢَ
(রাসুলূল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহ পাক আমার উম্মতদের দু’টি দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন। আর সেই দুটি দল হচ্ছে, এক. যাঁরা হিন্দুস্তান বা ভারতের মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। দুই. আর অপর দলটি হচ্ছেন, যাঁরা হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম-উনার সাথে থাকবেন।)
হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে
📖১★‘‘সুনানুন নাসায়ীর’’ কিতাবুল জিহাদের ‘গাযওয়াতুল হিন্দ পরিচ্ছেদে’ (২/৬৪)।
📖২★‘‘মুসনাদে আহমদ’’(৫/২৭৮)।
📖৩★‘‘আল জামিউস সাগীর’’ (ইমাম সুয়ুতীর) হাদীস: ৫৪১৮। হাদীসের মান: সহীহ
📖৪★‘‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’’ এ আল্লামা হাইসামী রহ. হাদীস সম্পর্কে বলেন,
ﻭﺳﻘﻂ ﺗﺎﺑﻌﻴﻪ ﻭﺍﻟﻈﺎﻫﺮ ﺃﻧﻪ ﺭﺍﺷﺪ ﺑﻦ ﺳﻌﺪ ، ﻭﺑﻘﻴﺔ ﺭﺟﺎﻟﻪ ﺛﻘﺎﺕ
📖৫★‘‘সহীহ আন নাসায়ী’’তে মুহাদ্দিস ইমাম শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন (হাদীসঃ ৩১৭৫)।
📖৬★‘‘সহীহ আল জামে’’তে মুহাদ্দিস ইমাম শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন (হাদীসঃ ৪০১২)
📖৭★‘‘সিলসিলাতু আহাদিসিস সাহীহা’’তে মুহাদ্দিস ইমাম শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ. হাদীসটি উল্লেখ করে লিখেন, হাদীসটি নাসায়ী, আহমাদ ও أبو عروبه الحراني তার হাদীসে
عن بقية بن الوليد: ثنا عبدالله بن سالم و أبو بكر بن الوليد الزبيدي عن محمد بن الوليد الزبيدي عن لقمان بن عامر الوصابي عن عبد الأعلى بن عدي البهراني عن ثوبان مولى رسول الله ﷺ عن النبي ﷺ
সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
শায়খ আলবানী বলেন,
قلت: وهذا إسناد جيد، رجاله ثقات غير أبي بكر الزبيدي فهو مجهول الحال، لكنه مقرون هنا مع عبدالله بن سالم وهو الأشعري الحمصي، ثقة من رجال البخاري .
بقية بن الوليد مدلس، ولكنه قد صرح بالتحديث، فأمنا به شر تدليسه على أنه قد توبع، فقال هشام بن عمار: حدثنا الجراح بن مليح البهراني: ثنا محمد بن الوليد الزبيدي به.
📖৮★‘‘যখিরাতুল হুফ্ফায’’ গ্রন্থে ইবনুল কায়সারানী রহ.
ﻋِﺼَﺎﺑﺘﺎﻥِ ﻣﻦ ﺃُﻣَّﺘﻲ ﺣَﺮَﺯَﻫُﻤَﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺭِ : ﻋِﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻐﺰُﻭ ﺍﻟﻬﻨﺪَ ﻭﻋِﺼﺎﺑﺔٌ ﺗﻜﻮﻥُ ﻣﻊ ﻋﻴﺴﻰ ﺑﻦِ ﻣﺮﻳﻢَ
হদীসটি উল্লেখের পর তার সনদ উল্লেখ করেন
رواه الجراح بن مليح البهراني الحمصي: عن محمد بن الوليد الزبيدي عن لقمان بن عامر الوصابي عن عبد الأعلى بن عدي البهراني عن ثوبان مولى رسول الله ﷺ عن النبي ﷺ
এবং বলেন,
وهذا حديث الجراح، وهو صالح.
মুহাদ্দিসিনের উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা হাদীসটি সহীহ প্রমাণিত হয়। এবং মনজুরে এলাহীর বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে আরেকটি হাদীস
হাদীসঃ
ﻭﻋَﺪَﻧﺎ ﺭﺳﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠَّﻢ ﻏﺰﻭﺓَ ﺍﻟﻬﻨﺪِ، ﻓﺈﻥِ ﺍﺳﺘُﺸﻬِﺪْﺕُ ﻛﻨﺖُ ﻣِﻦ ﺧﻴﺮِ ﺍﻟﺸُّﻬﺪﺍﺀِ، ﻭﺇﻥْ ﺭﺟَﻌْﺖُ ﻓﺄﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻫُﺮﻳﺮﺓَ ﺍﻟﻤُﺤﺮَّﺭُ .
[হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বলেন, রাসুলূল্লাহ ﷺ আমাদের থেকে গাযওয়াতুল হিন্দের ওয়াদা নিয়েছেন, সুতরাং যদি আমি তাতে শহীদ হই আমি হবো উত্তম শহীদদের অন্তর্ভুক্ত, আর যদি (যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে) ফিরে আসি, তাহলে আমি হবো (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত আবু হুরায়রা।]
📖★সূত্রঃ মুসনাদে আহমাদ, ১২/৯৭
হাদীসের মানঃ সহীহ
মুহাদ্দিস ও মুহাক্কিক আহমাদ শাকের রহ. হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন।
গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে আরেকটি হাদীস
হাদীসঃ
ﻭﻋﺪﻧﺎ ﺭﺳﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻠﻴْﻪِ ﻭﺳﻠَّﻢَ ﻏﺰﻭﺓَ ﺍﻟْﻬﻨﺪِ ﻓﺈﻥ ﺃﺩﺭَﻛﺘُﻬﺎ ﺃُﻧﻔِﻖُ ﻓﻴﻬﺎ ﻣﺎﻟﻲ ﻭﻧﻔﺴﻲ ﻓﺈﻥِ ﺍﺳﺘﺸْﻬﺪﺕُ ﻛﻨﺖُ ﻣﻦ ﺃﻓﻀﻞِ ﺍﻟﺸُّﻬﺪﺍﺀِ ﻭﺇﻥ ﺭﺟﻌﺖُ ﻓﺄﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻫﺮﻳﺮﺓَ ﺍﻟﻤُﺤﺮِّﺭُ
[ রাসুলূল্লাহ আমাদের থেকে হিন্দুস্তানেরর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতিশ্রুতি নেন। যদি আমি তা পেয়ে যাই, আমি আমার জান-মাল তাতে উৎসর্গ করবো। অতএব যদি আমি তাতে শহীদ হই, তাহলে আমি হবো শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত। আর যদি (যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে) ফিরে আসি, তাহলে আমি হবো (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত আবু হুরায়রা।]
📖★ ‘‘তারিখুল ইসলাম’’ (যাহাবী রহ.)১/৩৭৯
হাদিসের মানঃ গরীব
#ড. মনজুরে এলাহীর দ্বিতীয় দাবী ‘‘এ প্রসঙ্গে বর্তমান যুগের বড় বড় আলেমরা কোন ইতিবাচক রিসার্চ পেশ করেন নি।’’
আসুন একটু ভাবিঃ
কোন যুগের বড় আলেমরা কোন বিশুদ্ধ হাদীস সম্পর্কে নিজের ব্যাক্তিগত মত ও চিন্তা দ্বারা গবেষণা করেন নি অথবা গবেষণা করে উম্মাহর কাছে পেশ করেনি এই কারনে তার উপর আমল করা যাবে না, অথবা তা বাস্তবায়িত হবেনা, এমন কোন উসুল আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি।
ইন্নালিল্লাহ... ! আমার কানকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছে।
#ড. মনজুরে এলাহীর তৃতীয় দাবী ‘‘তাদের(বড়দের) বক্তব্য হচ্ছে, গাযওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে এইযে ধারনাটা পেশ করা হয়েছে দুর্বল হাদীসের আলোকে, এটাকে বিশুদ্ধ কোন তথ্য হিসেবে পরিবেশন করা উচিৎ নয়।’’
জবাবঃ আমরা প্রথমেই গাযওয়াতুল হিন্দের হাদীসকে সহিহ প্রমাণ করে এসেছি। তাই তার এই দাবীটা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবে আমাদের জানার বিষয় হলো, এই বড়রা কারা(?) যারা একটি সহিহ হাদীসকে দুর্বল বানিয়ে তা প্রচার করা থেকে নিষেধ করেছেন। নাকি বড় বলতে তাদের মতো মুস্তাশরিকীন শায়খরা উদ্দেশ্য? যারা কিনা রাসুলূল্লাহ সা. এর হাদীস গুলোকে মিথ্যা প্রমানে রাতদিন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
#ড. মনজুরে এলাহীর চতুর্থ মত হলো ‘‘অতএব এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই।’’
আসুন সাহাবা জীবন দ্বারা একটু চিন্তা করিঃ
দ্বিতীয় নাম্বারে আমরা যে হাদীসটি উল্লেখ করেছি, হাদীসে আবু হরায়রা রাযি. আকাংখা প্রকাশ করছিলেন, ‘‘আমি যদি তাতে শহীদ হই তাহলে শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হবো’’ আর তৃতীয় হাদীসে আছে তিনি বলছেন ‘‘যদি আমি এই যুদ্ধ পেয়ে যাই, আমি আমার জান ও মাল তাতে ব্যায় করবো.....।’’ চিন্তা করুন, ১৪০০ বছর আগে হযরত আবু হুরায়রা রাযি. এর মতো একজন সাহাবী গাযওয়াতুল হিন্দের জন্য আকাংখা প্রকাশ করেছে অথচ আজ ১৪০০ বছর পরে এসে সৌদি তাগুতের পদলেহনকারী দরবারী আলেমরা মানুষকে বুঝাচ্ছে ‘‘এটা নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই।’’
মাআযাল্লাহ! আমরা আল্লাহর কাছে এইসব ধোকাবাজ, প্রতারক, মিথ্যুক, দাজ্জালদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। আল্লাহ এই উম্মাহকে এইসব পবৃত্তিপূজারী, পথভ্রষ্ট আলেমদের অনিষ্টতা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।।
উল্লেখ্যঃ নামধারী আহলে হাদীসের পবৃত্তিপূজারী শায়খরা ইতিপুর্বে বহু সহিহ হাদীসকে যয়িফ প্রমাণের চেষ্টা করে মানুষকে ধোকা দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ! আমাদের আলেমরা বরাবরের মতই প্রতিবার তাদেরকে মিথ্যুক প্রমান করে দিয়েছেন।
Comment