আজ একটা ভূতের গল্প বলতে ইচ্ছে হচ্ছে! তবে, যে গল্পটা বলতে চাচ্ছি তা স্বাভাবিক কোন ভূতের কাহিনী নয়, এ এক বিস্ময়কর ও দুঃখ-আশার ভৌতিক রূপকথা! যেন কাল্পনিকতার ঘোর আঁধারে হারিয়ে যাওয়া কোন জাতির মাঝে বাস্তবতার খোশবু মেখে বঞ্চিত ভূতের আগমন! যেন নিকষ অন্ধকারে আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে কোন এক ভৌতিক পরিবেশ!
যাইহোক, মূল গল্পে যাওয়ার আগে গল্পের মূলভাবটা আঁচ করতে পারার জন্যই উপরোক্ত কিছু কথা! অতঃপর-
চারদিকে ঘোর অন্ধকার! প্রচণ্ড বৃষ্টিও হচ্ছে অবিরাম! আশ্রয় নেওয়ার মত কিছু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! কেননা, ইতিপূর্বে পশ্চিম দিক থেকে আসা এক ঝঞ্ঝাবায়ু সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে! প্রায় কারোর মাথার উপরই ছাদ নেই! যাইহোক, এ হিসেবে প্রায় সকলেই খোলা আকাশের নিচে শিলাবৃষ্টির কবলে জীবন অতিবাহিত করছে! কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো- ঘোর আঁধার যেন মানুষগুলোর জন্য আনন্দের! শিলাবৃষ্টি যেন তাদের জীবনের চাওয়া-পাওয়া! আর এগুলো অতি সহজলভ্যও! তাই, কাঙ্খিত জিনিসগুলো পেয়ে বাহ্যিকভাবে তাদের জীবনটা কেমন যেন আনন্দেই কাটছে! কিন্তু, বাস্তবতা হলো ঘর-বাড়িহীন জীবনে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, সবলেরা হিংস্র পশুর রূপ ধারণ করে দুর্বলদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে! এগুলো বাস্তবতা হলেও অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে! খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারীদের বাহ্যিকতা দেখে পশ্চিমা ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া কিছু ঘর-বাড়ির বাসিন্দারাও চাহিদা মেটানোর লোভে পশুত্বভিত্তিক অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে বাস করা শুরু করেছে! ফলস্রুতিতে, অনিরাপত্তা, হিংস্রতা, পশুত্ব ইত্যাদি তাদেরকেও গ্রাস করে ফেলেছে! কিন্তু, রাতের অন্ধকারাচ্ছন্নতার প্রভাবে বিষয়টি উপলব্ধি করার সক্ষমতা বেশিরভাগেরই হয়নি! বরং, অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, একটু আলো দেখতে পেলেই তাদের হৃদয় শংকিত হয়ে পড়ছে! না জানি কোন ভূতের আগমন ঘটলো! অর্থাৎ, আলো জ্বালানোটা তাদের কাছে ভৌতিক মনে হয়! তাদের অনেকে আবার প্রভাতের আলো ফোটার প্রত্যাশাও করে না, যদিও প্রতিভাত আলোর আশায় কেউ কেউ নিভৃতে প্রহর গুণছে! যাইহোক, রাতের গভীরতা কেবলই বৃদ্ধি পাচ্ছে! তবে, প্রভাতের আলো প্রত্যাশীদের জন্য এটা খুশির খবরই বটে! কেননা, বাস্তবতা বলে- ‘রাত যত গভীর হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে!’
এদিকে, ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্নতা সত্ত্বেও কেউ কেউ মাথা গোঁজার আশ্রয় তৈরি করতে চাচ্ছে! নিভু নিভু আলোকে তারা প্রজ্বলিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে, যেন অন্ধকারে নিমজ্জিত জাতি আলোয় পথ চলে শিলাবৃষ্টি আর ঝড়-তুফানের কবল থেকে উদ্ধার পেতে কোন ঘরের ছাদের নিচে আশ্রয় নিতে পারে! কিন্তু, দুঃখের বিষয় হলো- অনেকে তাদের এই আলো জ্বালানোকে ভৌতিক কাজ মনে করছে! অন্ধকারে নিমজ্জিত লোকদের মধ্য থেকে বিশাল আকারের একটি দল তাদেরকে বাধা দেওয়ার সবরকমের চেষ্টা চালাচ্ছে! তবুও নিভু নিভু আলোকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টায় লিপ্ত ক্ষুদ্র এই বাহিনীটি তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে।
[বি.দ্র: এটি একটি রূপক গল্প! বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি এখানে সংক্ষেপে রূপকভাবে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করা হয়েছে! গল্পে ফেতনাকে ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন শিলাবৃষ্টির রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ]
Comment