Announcement

Collapse
No announcement yet.

নব্য জাহিলিয়াত: ব্যক্তি-স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নব্য জাহিলিয়াত: ব্যক্তি-স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা

    নব্যজাহিলিয়াত: ব্যক্তি-স্বাধীনতাওমুক্তচিন্তা
    জাহিলি যামানায় মানুষ হক-বাতিল যাই হোক একটা ধর্ম মেনে চলতো ধর্মের বিধি নিষেধের অধীন থাকতো যদিও তারা ধর্মের বিধি নিষেধ মনমতো নিজেরাই পরিবর্তন করতো, তথাপি নিজেকে একেবারে স্বাধীন ভাবতো না

    পক্ষান্তরে বর্তমান জাহিলিয়াতে মানুষ আরও কুফরিতে এক ধাপ এগিয়ে ধর্ম থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে গেছে ধর্মের বিধিবদ্ধতাকে স্বাধীনতা মুক্তচিন্তার পরিপন্থী মনে করে ইউরোপ আমেরিকা থেকে উদ্ভূত ধর্মহীন ব্যক্তি-স্বাধীনতা নামের জঘন্যকুফরটি সমগ্র দুনিয়াকে গ্রাস করেছে অবচেতনভাবে ধর্মহীনতা কিংবা ধর্মের বিধিনিষেধের আওতামুক্তির ধারণা; যারা প্রকৃত অর্থে নিজেদের মুসলিম মনে করে তাদেরকেও গ্রাস করেছে
    • সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই
    • ধর্ম যার যার উৎসব সবার
    • মানুষের বিবেকই শ্রেষ্ঠ আদালত
    • জীবনটা আমার পছন্দও আমার
    • আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব
    ইত্যাদি বিভিন্ন শ্লোগান কুফরি ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকেই উদ্ভূত ধর্মদ্রোহিরা তো প্রকৃত অর্থেই এগুলোকে ধর্মের আওতামুক্তির অর্থে ব্যবহার করে সাধারণ মুসলিমরা হয়তো সেভাবে চিন্তা করে না, তবে অবলিলায় বলে যায়


    আকল জ্ঞান-বুদ্ধি মানদণ্ড নয়
    আসলে যারা স্বাধীনতার নামে ধর্মের আওতামুক্ত হতে চায় তারা প্রকৃত অর্থে শয়তান নফসের গোলাম হয়ে পড়ে
    প্রথমত আপনাকে বুঝতে হবে, মানুষ তার আকল জ্ঞানবুদ্ধি দিয়ে অনেক কিছু বুঝতে পারলেও আকল সর্বাবস্থায় সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে না কারণ,

    . মানুষের জ্ঞান খুবই সীমিত আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জ্ঞানের সামনে যার কোনো তুলনাই হতে পারে না আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    {وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا (85)} [الإسراء: 85]
    তোমাদেরকে খুব সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে -ইসরা ৮৫

    মূসা আলাইহিস সালাম খাজির আলাইহিস সালামের ঘটনায় এসেছে,
    وجاء عصفور فوقع على حرف السفينة فنقر في البحر نقرة فقال له الخضر: ما علمي وعلمك من علم الله إلا مثل ما نقص هذا العصفور من هذا البحر. صحيح البخاري (4/ 1752)، رقم الحديث 4448، كتاب التفسير، سورة الكهف
    একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকাটির মাথায় বসে সাগরে একটি ঠোকর দিল তখন খাজির আলাইহিস সালাম মূসা আলাইহিস সালামকে লক্ষ করে বললেন, (হে মূসা) এই চড়ুই পাখিটি (ঠোকর দিয়ে) এই সমূদ্রের পানি যতটুকু কমাতে পেরেছে, আল্লাহ তাআলার ইলমের সামনে আমার আর তোমার ইলমের এমনই হাল। -সহীহ বোখারি ৪৪৪৮

    আপনি যদি শুধু বর্তমান বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার নিয়ে চিন্তা করেন, তাহলে দেখুন, আবিষ্কৃত মহাবিশ্বের মাঝে দুনিয়াটা একটা বিন্দুর সমানও না [অথচ সবগুলো প্রথম আকাশের নিচে এভাবে সাত আকাশ সাত আকাশ সাত যমিন আল্লাহর কুরসির সামনে একটা আংটির মতো আর কুরসি আরশের সামনে একটা আংটির মতো আর আল্লাহ তো সীমাহীন] এই সামান্য বিন্দু পরিমাণ দুনিয়ার মাঝে একটা মানুষ কতটুকু আর তার আকলই বা কতটুকু?!


    . মানুষের জ্ঞানবুদ্ধি অভিজ্ঞতা নির্ভর অজানা থেকে জানতে হয় যার যত বেশি গবেষণা তার তত বেশি জানা যার যত বেশি অভিজ্ঞতা তার তত বেশি পরিপক্বতা যেহেতু অজানা থেকে জানতে হয় তাই সব সময় সব কিছুতে ইয়াকিনি শতভাগ নির্ভুল সিদ্ধান্ত সম্ভব হয় না অজানা থেকে যায় এজন্য মানুষের জ্ঞান অনেকটা আন্দাজ নির্ভর বা প্রবল ধারণা[1]
    {وَمَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا (28)} [النجم: 28]
    প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারে তাদের কোনো ইলম নেই শুধু ভিত্তিহীন ধারণা-খেয়ালের উপর চলছে আর কোনো সন্দেহ নেই, ভিত্তিহীন ধারণা-খেয়াল (সত্য প্রমাণ করার ক্ষেত্রে) বিন্দু পরিমাণও ফলদায়ক নয় -নাজম ২৮

    {وَمَا يَتَّبِعُ أَكْثَرُهُمْ إِلَّا ظَنًّا إِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا} [يونس: 36]
    তাদের অধিকাংশ লোক কেবল ভিত্তিহীন ধারণা-খেয়ালের উপর চলে আর কোনো সন্দেহ নেই, ভিত্তিহীন ধারণা-খেয়াল (সত্য প্রমাণ করার ক্ষেত্রে) বিন্দু পরিমাণও ফলদায়ক নয় -ইউনুস ৩৬

    এমনকি বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তগুলোও শতভাগ নিশ্চিত না ফলে তাদের মাঝেও দ্বিমত হয়ে যায় বরং শত বছর ধরে চলা আসা বৈজ্ঞানিক দর্শনও উন্নত গবেষণার পর ভুল প্রমাণ হয়


    . মানুষ সব সময় নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করতে পারে না পথে তার প্রধান দুটি বাধা: . শয়তান; . হাওয়া তথা নফস
    নফস এবং শয়তান তাকে নিরপেক্ষভাবে চলতে দেয় না, বরং উল্টোটাকে শুদ্ধ এবং শুদ্ধটাকে উল্টোরূপে দেখায় এভাবে গবেষণা করতে গিয়ে অনেক সময় সে শয়তান নফসের দাবেদার হয়ে পড়ে অনেক সময় সত্য খোঁজে পেলেও নফসানি খাহেশের বিপরীত হওয়ায় গ্রহণ করে না
    {فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللَّهِ } [القصص: 50]
    তারা যদি আপনার ডাকে সাড়া না দেয়, তাহলে জেনে রাখুন, তারা মূলত নিজেদের নফসানি খাহেশ মতো চলে আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত হিদায়াত অগ্রাহ্য করে নিজের খাহেশ মতো চলে, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে?! –কাসাস ৫০

    পথ শুধু দুটিই
    যারা নবী রাসূলদের আনীত দ্বীন বাদ দিয়ে ভিন্ন কিছু খোঁজে, আল্লাহ তাআলা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তারা আসলে সত্যের অনুসরণ করে না, নিজেদের খাহেশের পূজারিযদি আসলেই সে হকের অনুসন্ধানী হতো তাহলে অবশ্যই হক খোঁজে পেতো আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টিজগতকে এমনভাবেই সৃষ্টি করেছেন, যে কেউ তাতে গবেষণা করবে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে খোঁজে পাবে
    {سَنُرِيهِمْ آيَاتِنَا فِي الْآفَاقِ وَفِي أَنْفُسِهِمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ الْحَقُّ} [فصلت: 53]
    আমি আমার (কুদরতের) নিদর্শনাবলী বিশ্বজগতেও দেখাবো এবং স্বয়ং তাদের নিজেদের মধ্যেও পরিশেষে তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রতিভাত হবে যে, এ(তাওহিদ ও ইসলাম)-ই সত্য -হা মিম সাজদা ৫৩

    অতএব, যে বুঝতে পারেনি যে আল্লাহ সত্য, রাসূল সত্য এবং সত্য তার কিতাব নাযিলকৃত জীবনবিধান- তাহলে বুঝতে হবে তার গবেষণায় কমতি আছে, কিংবা বুঝার পরও সে শুধু দুনিয়ার লোভে গ্রহণ করছে না
    {ذَلِكَ بِأَنَّهُمُ اسْتَحَبُّوا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا عَلَى الْآخِرَةِ} [النحل: 107]
    এটা এজন্য যে, তারা আখেরাতের বিপরীতে দুনিয়ার জীবনকেই অধিক ভালবেসেছে -নাহল ১০৭

    কথায় আছে, ‘চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনি


    আমাদের একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন
    বিশ্বজগত অবশ্যই কেউ না কেউ সৃষ্টি করেছেন যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই আল্লাহ
    {أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ (35)} [الطور: 35]
    তারা কি কোনো সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আপনা আপনিই সৃষ্টি হয়ে গেছে? নাকি তারা নিজেরাই (নিজেদের) স্রষ্টা?! –তুর ৩৫

    যখন তারা আপনা আপনিও হয়নি, নিজেরাও নিজেদের সৃষ্টি করেনি, তাহলে সন্দেহ নেই একজন আছেন, যিনি সকলের সৃষ্টিকর্তা


    নবী রাসূলদের ধারা নতুন কিছু নয়
    আল্লাহ তাআলা মহাবিশ্ব এমন সুনিপুণ, সুনিয়ন্ত্রিত এবং সূত্র নিয়মমাফিক সৃষ্টি করেছেন, যার প্রতিটি বস্তু তার অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে আল্লাহর এই সূত্রে কোনো পরিবর্তন নেই সৃষ্টির আদি থেকে তা এক রকমই আছে আল্লাহর অস্তিত্বের সাক্ষি হয়ে আছে যে কেউ মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা করবে, স্পষ্টরূপে ধরা পড়বে, মহাবিশ্ব আপনা আপনি হয়নি, নিশ্চয় একজন সৃষ্টি করেছেন

    আল্লাহ তাআলা এতটুকুতেই ক্ষান্ত করেননি, হাজারো হাজার নবী রাসূল পাঠিয়ে তার অস্তিত্ব তাওহিদের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়েছেন এবং তার একত্ববাদ ইবাদাতের দাওয়াত দিয়েছেন দুনিয়ার সর্বপ্রথম মানুষ আদম আলাইহিস সালাম আল্লাহর প্রিয় একজন নবী আল্লাহ তাআলা এত অধিক সংখ্যক নবী রাসূল দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন এবং এত অসংখ্য অজস্র ঘটনাপ্রবাহ তাদের সাথে ঘটিয়েছেন, প্রথিবীর ইতিহাস কোনোভাবেই তা অস্বীকার করতে পারবে না এমনকি নাস্তিকতাধর্মী ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রবক্তা পশ্চিমা বিশ্ব নিজেরাও নবী রাসূলদের বিশ্বাস করে তাদের হাতে বিকৃত হলেও এখনও তাওরাত ইঞ্জিল বিদ্যমান কিন্তু কি আশ্চর্য, তারাই নাস্তিকতা আর মুক্তচিন্তার প্রবক্তা

    আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় হাবিবকে বলেন,
    { قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُلِ} [الأحقاف: 9]
    আপনি (তাদের) বলুন, আমি নতুন কোনো রাসূল নই -আহকাফ

    আরও বলেন,
    {وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ } [آل عمران: 144]
    মুহাম্মাদ তো একজন রাসূল মাত্র তার পূর্বেও বহু রাসূল গত হয়েছে -আলে ইমরান ১৪৪

    {مَا الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ} [المائدة: 75]
    মারইয়াম-তনয় (ঈসা) মাসি একজন রাসূল বৈ কিছু নন তার পূর্বেও বহু রাসূল গত হয়েছে -মায়িদা ৭৫


    অতএব, নবী রাসূলদের আগমন অহির শিক্ষা প্রচারের ধারা নতুন কিছু নয়, এটি পুরাতন সেই আদি কাল থেকেই চলে আসছে আর সব নবী একটি শিক্ষাই দিয়ে গেছেন, এক আল্লাহর ইবাদাত আনুগত্য করতে হবে, তার দেয়া জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এর বিপরীতে যারা শয়তানের কথা মনমতো চলবে (যাকে আধুনিক জাহিলিয়াতে ব্যক্তিস্বাধীনতা মুক্তচিন্তা বলা হয়) তারা বেঈমান এবং চিরস্থায়ী জাহান্নামী
    وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ . –النحل 36
    সকল জাতির মধ্যেই আমি এই নির্দেশ দেবার জন্য রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুতকে বর্জন কর -নাহল ৩৬
    শয়তান এবং নফস হলো প্রথম সারির তাগুত।


    আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালামের পৃথিবীতে আগমনের ঘটনা বিবৃত করতে গিয়ে ইরশাদ করেন,
    {قُلْنَا اهْبِطُوا مِنْهَا جَمِيعًا فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ مِنِّي هُدًى فَمَنْ تَبِعَ هُدَايَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ (38) وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (39)} [البقرة: 38، 39]
    আমি হুকুম দিলাম এবার তোমরা সকলে (বেহেশত) থেকে নেমে যাও পরে আমার নিকট থেকে তোমাদের নিকট যদি কোনো হিদায়াত-দিকনির্দেশনা পৌঁছে, তাহলে যারা আমার হিদায়াত অনুসরণ করে চলবে (আখেরাতে) তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা কোনো দুঃখেও পতিত হবে না আর যারা কুফরিতে লিপ্ত হবে এবং আমার আহকামসমূহ প্রত্যাখ্যান করবে, তারা জাহান্নামবাসী তারা সেখানেই থাকবে চিরকাল -বাকারা ৩৮-৩৯


    তাহলে আমি কিভাবে স্বাধীন?!
    যখন আমাদের একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন, তিনি যুগে যুগে নবী রাসূল পাঠিয়ে তার অস্তিত্ব একত্ববাদের কথা জানিয়ে আসছেন, তার নির্দেশনা মেনে চলার আদেশ দিচ্ছেন- তখন আমি কিভাবে স্বাধীন? আমি সৃষ্টিকর্তার বিধিনিষেধের গণ্ডিতে বাঁধা এর বাহিরে যাওয়ার অধিকার আমার নেই

    মুক্তচিন্তকদের নিকট প্রশ্ন
    মুক্তচিন্তা ব্যক্তিস্বাধীনতার উদ্দেশ্য কি?

    *যদি বলেন, ব্যক্তি যেন যা ইচ্ছা তাই করতে পারে;- তাহলে বলবো, আমরা সবাই সৃষ্টিকর্তার গোলাম নিজের ইচ্ছামতো চলার অধিকার তো কারও নেই

    আর যদি আসলেই ব্যক্তিস্বাধীনতার উদ্দেশ্য এটা হয়, তাহলে আমরা মুসলিমরা চাচ্ছি কাফেরদের তখন উল্টিয়ে আল্লাহর দ্বীন বিজয় করতে আমাদের বাধা দেয়া হচ্ছে কেন? এটা কি আমাদের স্বাধীনতা হরণ নয়?


    *আর যদি বলেন, ব্যক্তিস্বাধীনতার উদ্দেশ্য, ব্যক্তি যেন হকটা খোঁজে তা মেনে চলতে পারে;- তাহলে বলবো, হক তো স্পষ্টই, ভিন্ন কিছু খোঁজার তো দরকার নেই

    স্পষ্ট নয় কি যে, আমি মহাবিশ্ব সৃষ্টি করিনি? আমি নিজেও নিজের সৃষ্টিকর্তা নই আমার বরং একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন তার প্রতিটি সৃষ্টি তার অস্তিত্বের প্রমাণ অসংখ্য নবী রাসূল পাঠিয়ে তিনি তার আদেশ মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন সে নির্দেশের বাহিরে যেতে বারণ করেছেন

    তাহলে এরপরও আমি কিভাবে স্বাধীনভাবে নতুন করে ভাবতে পারি? সৃষ্টিকর্তা যা বলেছেন সেটাই হক, যা নিষেধ করেছেন সেটাই বাতিল। সৃষ্টিকর্তা যা বলেছেন, যা সৃষ্টি করেছেন, তার কুদরতের এ বাহারের একাংশ বুঝাও তো আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে সৃষ্টিকর্তার নির্দেশের বাহিরে গিয়ে নতুন করে হক বাতিল আমি কি খোঁজতে যাব? আমার সৃষ্টিকর্তা কি জানেন না? নাকি আমি তার চেয়ে বেশি জানি?
    { أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ} [الملك: 14]
    যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না? –মূলক ১৪
    {قُلْ أَنْزَلَهُ الَّذِي يَعْلَمُ السِّرَّ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ} [الفرقان: 6]
    আপনি বলে দিন, (বাণী) তো সেই সত্তা নাযিল করেছেন, যিনি আকাশমণ্ডলী এবং যমিনের যাবতীয় গুপ্ত রহস্য জানেন -ফুরকান

    অতএব, মুক্তচিন্তা হক সত্যের অনুসন্ধান নয়; মুক্ত চিন্তা অনধিকার চর্চা যদি প্রকৃত অর্থেই কেউ স্বাধীনভাবে চিন্তা করে, তাহলে আল্লাহকেই খোঁজে পাবে যেমনটা আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন,
    {سَنُرِيهِمْ آيَاتِنَا فِي الْآفَاقِ وَفِي أَنْفُسِهِمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ الْحَقُّ} [فصلت: 53]
    আমি আমার (কুদরতের) নিদর্শনাবলী বিশ্বজগতেও দেখাবো এবং স্বয়ং তাদের নিজেদের মধ্যেও পরিশেষে তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রতিভাত হবে যে, এ(তাওহিদ ও ইসলাম)-ই সত্য -হা মিম সাজদা ৫৩
    ***



    [1] {إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنْفُسُ وَلَقَدْ جَاءَهُمْ مِنْ رَبِّهِمُ الْهُدَى (23)} [النجم: 23]




  • #2
    মা শা আল্লাহ, দলীলসমৃদ্ধ উপকারী আলোচনা। আল্লাহ মুহতারাম ভাইয়ের ইলম ও আমল এবং ফিকরে ভরপুর বারাকাহ নসীব করুন।
    --------
    মুহতারাম ভাই- নিচের তিনটি শব্দের বানানগুলো একটু চেক করে দেখলে ভাল হয়।
    এভাবে গবেষণা করতে গিয়ে অনেক সময় সে শয়তান ও নফসের দাবেদার হয়ে পড়ে।
    এখানে সম্ভবত ‘তাবেদার’ হবে।
    প্রথিবীর ইতিহাস কোনোভাবেই তা অস্বীকার করতে পারবে না।
    এখানে সম্ভবত ‘পৃথিবীর’ হবে।
    তাহলে আমরা মুসলিমরা চাচ্ছি কাফেরদের তখন উল্টিয়ে আল্লাহর দ্বীন বিজয় করতে।
    এখানে সম্ভবত ‘তখত’ হবে।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আরও একটি কুফরি বাক্য হলঃ
      সেই সবচে' বড় অপরাধী যে তার বিবেকের কাছে অপরাধী ।
      হে পরাক্রমশালী শক্তিধর! কৃপণতা আর কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই সর্বক্ষণ।

      Comment


      • #4
        মূলত মুক্তচিন্তা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা ও একটি ধর্ম যদিও তা ভ্রান্ত ধর্ম।
        দলিল
        أَفَرَءَيتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلٰهَهُ هَوىٰهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلىٰ عِلمٍ وَخَتَمَ عَلىٰ سَمعِهِ وَقَلبِهِ وَجَعَلَ عَلىٰ بَصَرِهِ غِشٰوَةً فَمَن يَهديهِ مِن بَعدِ اللَّهِ ۚ أَفَلا تَذَكَّرونَ
        [23] আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না?
        --
        মূলত অপরাধীরা নিজেদের চোখেও অপরাধী যদিও তারা বিভিন্ন বাহানায় গোপন করে।
        দলীল
        بَلِ الإِنسٰنُ عَلىٰ نَفسِهِ بَصيرَةٌ
        [14] বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুমান।
        [15] وَلَو أَلقىٰ مَعاذيرَهُ
        [15] যদিও সে তার অজুহাত পেশ করতে চাইবে।
        Last edited by Munshi Abdur Rahman; 01-08-2022, 10:50 AM.

        Comment


        • #5
          Originally posted by ইলম ও জিহাদ View Post
          আবিষ্কৃত মহাবিশ্বের মাঝে দুনিয়াটা একটা বিন্দুর সমানও না [অথচ সবগুলো প্রথম আকাশের নিচে এভাবে সাত আকাশ সাত আকাশ সাত যমিন আল্লাহর কুরসির সামনে একটা আংটির মতো আর কুরসি আরশের সামনে একটা আংটির মতো আর আল্লাহ তো সীমাহীন] এই সামান্য বিন্দু পরিমাণ দুনিয়ার মাঝে একটা মানুষ কতটুকু আর তার আকলই বা কতটুকু?!
          দৃষ্টি-আকর্ষণঃ
          {
          আর আল্লাহ তো সীমাহীন]
          ...এতটুকু সংযুক্তির দ্বারা তুলনা করা ও অনুরূপতা আরোপ করা হল তো!

          Comment


          • #6
            আমি মনে করি এভাবে বলা উচিৎ ছিল যে আল্লাহ তায়ালা তো অসীম এবং অতুলনী

            Comment


            • #7
              Originally posted by tawhidjamil View Post
              আমি মনে করি এভাবে বলা উচিৎ ছিল যে আল্লাহ তায়ালা তো অসীম এবং অতুলনী
              না, তাও হতো না। অধম আমি মুহতারাম ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের লেখার যে অংশটুকু কোট করেছি সেখানের [আবিষ্কৃত মহাবিশ্ব... থেকে ...আংটির মতো] এরপরে আপনার বাক্য বসালেও সঠিক হবে না।
              অবশ্য আলাদাভাবে সাধারণ বাক্যে বললে একদম সঠিক।

              Comment


              • #8
                একজনের বক্তব্যে শুনেছি তিনি আল্লাহু-আকবার (আল্লাহ বড়, মহান) দ্বারা আল্লাহর আকার-আকৃতির(?) বুঝ নিচ্ছেন (নাউযুবিল্লাহ্)! অথচ আকার-নিরাকার বিতর্ক একটি জঘন্য বিদআত এবং গর্হিত কাজ। জান্নাতিরা জান্নাতে আল্লাহকে দেখার নিয়ামত লাভ করবে; কিন্তু দেখার বিস্তারিত ধরণজ্ঞান আমাদের কাছে নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন, ‘‘তোমরা কি এমন বিষয়ে বলছ যা সম্বন্ধে তোমরা কিছুই জান না?!’’। কতই না নিকৃষ্ট কাজ হবে আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যার জ্ঞান আমাদেরকে দেয়া হয় নি। তাই, আমি কি এমনকিছু বলছি, যা আমার রবের ক্রোধের কারণ হয় --- এব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকি।

                Comment


                • #9
                  Originally posted by Sa'd Ibn Abi Waqqas View Post
                  একজনের বক্তব্যে শুনেছি তিনি আল্লাহু-আকবার (আল্লাহ বড়, মহান) দ্বারা আল্লাহর আকার-আকৃতির(?) বুঝ নিচ্ছেন (নাউযুবিল্লাহ্)! অথচ আকার-নিরাকার বিতর্ক একটি জঘন্য বিদআত এবং গর্হিত কাজ। জান্নাতিরা জান্নাতে আল্লাহকে দেখার নিয়ামত লাভ করবে; কিন্তু দেখার বিস্তারিত ধরণজ্ঞান আমাদের কাছে নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন, ‘‘তোমরা কি এমন বিষয়ে বলছ যা সম্বন্ধে তোমরা কিছুই জান না?!’’। কতই না নিকৃষ্ট কাজ হবে আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যার জ্ঞান আমাদেরকে দেয়া হয় নি। তাই, আমি কি এমনকিছু বলছি, যা আমার রবের ক্রোধের কারণ হয় কিংবা অজান্তেই গোপন কুফর-শিরক হয়ে যাচ্ছে কি না--- এব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকি।
                  মানুষ সর্বদা নিজেদের উপর অনুমান করে থাকে। তাই মানুষ নিজেদের উপর অনুমান করে নিজেদের সমজাতীয় বস্তুকে উপলব্ধি করতে পারে । কিন্তু মানুষ হল মাখলূক আর আল্লাহ হলেন খালেক এবং এ দুয়ের মাঝে সম্পূর্ণ প্রার্থক্য রয়েছে তাই আল্লাহ কখনো মাখলূকের সমজাত নয় ফলে কখনো মাখলূক আল্লাহকে পূর্ণ রূপে উপলব্ধি করতে পারবে না তাই মানুষ অনুমান করে আল্লাহকে কখনও সম্পূর্ণ রূপে উপলব্ধি করতে পারবে না এবং মানুষ হল সসীম এবং তুলনীয় ।সসীম এবং তুলনীয় বস্তু কখনো অসীম এবং অতুলনীয়কে পূর্ণ রূপে উপলব্ধি করতে পারবেনা। এবং এই কথা বুঝবেইনা যে অসীম এবং অতুলনীয় জিনিসটা কি? তাহলে আল্লাহর অসীমত্ব এবং অতুলনীয়তা বুঝাতো অনেক দূরের কথা।

                  Comment


                  • #10
                    আল্লাহ তা'আলা ইলম ও জিহাদ ভাই'কে নেক হায়াত দান করুন। আ-মীন

                    Comment


                    • #11
                      চমৎকার কথা , আমার মালিকের কথা । আমার মালিকের সব কথা অবশ্যই অতুলনিয়।

                      Originally posted by tawhidjamil View Post
                      মূলত মুক্তচিন্তা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা ও একটি ধর্ম যদিও তা ভ্রান্ত ধর্ম।
                      দলিল
                      أَفَرَءَيتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلٰهَهُ هَوىٰهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلىٰ عِلمٍ وَخَتَمَ عَلىٰ سَمعِهِ وَقَلبِهِ وَجَعَلَ عَلىٰ بَصَرِهِ غِشٰوَةً فَمَن يَهديهِ مِن بَعدِ اللَّهِ ۚ أَفَلا تَذَكَّرونَ
                      [23] আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না?
                      --
                      মূলত অপরাধীরা নিজেদের চোখেও অপরাধী যদিও তারা বিভিন্ন বাহানায় গোপন করে।
                      দলীল
                      بَلِ الإِنسٰنُ عَلىٰ نَفسِهِ بَصيرَةٌ
                      [14] বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুমান।
                      [15] وَلَو أَلقىٰ مَعاذيرَهُ
                      [15] যদিও সে তার অজুহাত পেশ করতে চাইবে।
                      - যাদের কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। তাদের জন্যেও কি "
                      بَلِ الإِنسٰنُ عَلىٰ نَفسِهِ بَصيرَةٌ
                      [14] বরং মানুষ নিজেই তার নিজের সম্পর্কে চক্ষুমান।" -প্রযোজ্য হবে?
                      দাওয়াত ও জিহাদের সফরে কলব যখন ইনসাফ থেকে সরে যায় তখন বিনয় অহংকারে, ভাষার শালীনতা অশালীনতায় রূপান্তরিত হয় এবং অন্তরের নম্রতা কাঠিন্যের রূপ ধারণ করে। তারপর সে ব্যাক্তি নিজেও গোমরাহির পথে চলে এবং অন্যকেও গোমরাহির পথ প্রদর্শন করে।

                      Comment


                      • #12
                        ব্যাক্তি স্বাধীন একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। অন্য কেউ ব্যাক্তি স্বাধীন নয় । কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন

                        [23] لا يُسـَٔلُ عَمّا يَفعَلُ وَهُم يُسـَٔلونَ

                        [23] তিনি যা করেন, তৎসম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে।
                        পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

                        Comment

                        Working...
                        X