Announcement

Collapse
No announcement yet.

লা মাজহাবি-সালাফি পরিচয়

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • লা মাজহাবি-সালাফি পরিচয়

    আমাদের অনেকেই ‘সালাফি’ আর ‘লা-মাজহাবি’—

    এইদুই পরিচিতিকে ঘুলিয়ে ফেলেন; এই দুটি পরিচয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না।

    তারা মনে করেন, লা-মাজহাবি আর সালাফি—

    দুটোইসমার্থবোধক শব্দ তথা একই গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন দুটো নাম।

    অথচ, ব্যাপারটা মোটেও এরকম নয়। এই শব্দদুটো যেমন ভিন্ন ভিন্ন, তেমনি এগুলোর পরিচিতি ও ক্ষেত্র ভিন্ন ভিন্ন

    প্রথমত জানতে হবে,
    ইসলামি শরিয়ত দুটি ধারায় বিভক্ত।

    এক ‘উসুল’ তথা ‘মূল’।
    দুই ‘ফুরু’ তথা ‘শাখা’।

    উসুলকে ‘আকিদা’ বলা হয়।
    আর ফুরুকে ‘ফিকহ’ বলা হয়।

    শরিয়তের মধ্যে উসুলের গুরুত্ব ফুরুর চেয়ে বেশি।

    কেননা উসুল তথা আকিদার প্রশ্নে কেউ গোমরাহ হতে পারে, কিন্তু ফুরু তথা ফিকহের প্রশ্নে কেউ গোমরাহ হতে পারে না।

    তাই আগে উসুল, পরে ফুরু।

    জেনে রাখা আবশ্যক যে,

    মুসলিম উম্মাহ যেভাবে ফুরু তথা ফিকহের ক্ষেত্রে চারটি মাজহাবে বিভক্ত,

    ঠিক তেমনিভাবে,,
    উসুল তথা আকিদার ক্ষেত্রেও তিনটি ফিরকায় বিভক্ত।

    এই চারটি মাজহাব ও তিনটি ফিরকার সমষ্ঠিকে ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’ বলে।

    যদিও এই চারটি মাজহাব ও তিনটি ফিরকা আকিদা ও ফিকহের ব্যাপারে এক ও অভিন্ন,

    তবুও এরা তাসাউফ, সিয়াসাত ও কিছু বিশেষ আমলের ক্ষেত্রে ভিন্ন ও বিচ্ছিন্ন।


    উদাহরণস্বরূপ ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়, দল ও গোষ্ঠী দেখা যেতে পারে।

    উলেখ্য,
    যদিও একসময় চারটি মাজহাবের বাইরে অসংখ্য মাজহাব ছিল,
    কিন্তু এখন আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ এই চারটি মাজহাবেই একপ্রকার সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

    চার মাজহাবের বাইরে যারাই আছে, তারা মুসলিম উম্মাহর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

    এদের বেশিরভাগ হয়তো গোমরাহ কিংবা হক হবার প্রশ্নে সন্দেহযুক্ত।

    অনুরূপভাবে তিনটি ফিরকার বাইরেও অসংখ্য ফিরকা ছিল, এখনও আছে।

    এরা সকলেই গোমরাহ—এতে কোনো সন্দেহ নেই।

    ফিকহের ক্ষেত্রে হানাফিরা ইমাম আবু হানিফার অনুসারী,

    আর আকিদার ক্ষেত্রে তারা ইমাম আবু মনসুর মাতুরিদির অনুসারী।

    এজন্য ‘হানাফি’ শব্দটা মাজহাবের পরিচয়, আর ‘মাতুরিদি’ শব্দটা ফিরকার পরিচয়।

    অনুরূপভাবে ফিকহের ক্ষেত্রে মালিকি ও শাফিয়িরা ইমাম মালিক ও ইমাম শাফিয়ির অনুসারী, আর আকিদার ক্ষেত্রে তারা একত্রে ইমাম আবুল হাসান আশআরির অনুসারী।

    এজন্য ‘মালিকি’ ও ‘শাফিয়ি’ শব্দদুটো মাজহাবের পরিচয়, আর ‘আশআরি’ শব্দটা ফিরকার পরিচয়।

    অন্যদিকে হাম্বলিরা ফিকহ ও আকিদা—উভয়ের ক্ষেত্রে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের অনুসারী।

    কিন্তু মাজহাবের ক্ষেত্রে তাদেরকে ‘হাম্বলি’ বলা হলেও ফিরকার ক্ষেত্রে তাদেরকে ‘সালাফি’ কিংবা ‘আসারি’ বলা হয়।

    কারণ, আকিদার ক্ষেত্রে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল খালাফদের মতো আকল তথা বুদ্ধিকে দলিল মানতেন না;

    সালাফদের মতো কেবলমাত্র নকল তথা কুরআন-হাদিসের ভাষ্যকেই দলিল মানতেন।

    এখানে জেনে রাখা খুবই জরুরি যে, মুসলিম উম্মাহর মধ্যে যেভাবে যথাক্রমে হানাফি, মালিকি ও শাফিয়ি মাজহাবের অনুসারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ঠিক সেভাবে মাতুরিদি ও আশআরি ফিরকার অনুসারীও সবচেয়ে বেশি।

    যেহেতু একটা আরেকটার জন্য অপরিহার্য।

    হানাফি মানেই মাতুরিদি, আর মালিকি ও শাফিয়ি মানেই আশআরি।

    আর যেহেতু হানাফি, মালিকি ও শাফিয়িদের সংখ্যাবেশি, তাই মাতুরিদি ও আশআরিদের সংখ্যাও বেশি।

    অবশ্য এই রীতির ব্যতিক্রমও আছে। অবশ্য সেটা একেবারে অপ্রতুল।

    পক্ষান্তরে,,
    মুসলিম উম্মাহর মধ্যে যেভাবে হাম্বলি মাজহাবের অনুসারী একেবারে কম, সেভাবে সালাফি/আসারি আকিদার অনুসারীও একেবারে কম।

    যদিও আজকাল মিডিয়ার কল্যাণে সালাফিদের বেশ দহরম-মহরম করতে দেখা যায়।

    বিশ্বাস না হলে সেকাল থেকে নিয়ে একাল পর্যন্ত উম্মাহর বিদগ্ধ আলেমদের ফিরিস্ত দেখে নিতে পারেন।

    তদ্রূপ মুসলিম বিশ্বের মানচিত্রে চার মাজহাবের অনুসারীদের বসবাসের অঞ্চলগুলো জরিপ করতে পারেন।

    সৌদিআরব, ইমারাত, কুয়েত, কাতার ও ওমান ছাড়া মুসলিম বিশ্বের আর কোথাও উল্লেখযোগ্য হারে হাম্বলি মাজহাব এবং সালাফি আকিদা অনুসরণ করা হয় না।

    তাহলে সালাফি আকিদা ও হাম্বলি মাজহাবের ব্যাপারটা বুঝা গেল।

    যারা হাম্বলি মাজহাবালম্বী, তারাই সালাফি।

    কিন্তু রয়ে গেল লা-মাজহাবিদের ব্যাপারটা।

    এদের ব্যাপার সম্পূর্ণ ক্লিয়ার।
    এরা মাজহাব অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে উম্মাহর একেবারে বিচ্ছিন্ন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।


    যেহেতু আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ চারটি মাজহাবের মধ্যে বিভক্ত (সীমাবদ্ধ নয়),

    সেহেতু লা-মাজহাবিরা আহলে সুন্নাতের ভিতরে হওয়াটা সন্দেহমুক্ত নয়।

    আবার এদেরকে অকাট্যভাবে আহলে সুন্নাহর বাইরেও বলা যাবে না

    এরা উম্মাহর বিচ্ছিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ব্যস, এটাই তাদের পরিচয়।

    কিন্তু এরা ফিকহের ক্ষেত্রে কোনো মাজহাব না মানলেও আকিদার ক্ষেত্রে এরা আবার সালাফি/আসারি আকিদা অনুসরিওণ করে।


    এজন্য এদেরকে আকিদার পাঠে ইমাম ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কায়্যিম, বিন বায, ইবনে উসাইমিনসহ বড় বড় হাম্বলি সালাফি আলেমদের রেফারেন্স দিতে দেখা যায়।


    আর এখান থেকেই লা-মাজহাবি আর সালাফি ব্যাপারটা অনেকের আছে ঘুলিয়ে যায়।

    ব্যাপারটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও তাত্ত্বিক। খেয়াল রাখা চাই।

    ✍️ এক মুওয়াহিদ
    বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

  • #2
    জাযাকাল্লাহু খাইরান আঁখি।
    Last edited by tahsin muhammad; 06-09-2022, 06:03 PM.

    Comment


    • #3
      আস ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু ,,
      বারাকাল্লাহ ফিকুম আঁখি
      বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

      Comment

      Working...
      X