নিশ্চয়ই জাহেলিয়াত মানুষকে লাঞ্চিত করবে।
উমার রাঃ ইতিহাসের এক অন্যতম সত্য কথা উচ্চারণ করেছিলেন।তিনি বলেছিলেন
"আমরা ছিলাম এক নিকৃষ্ট জাতি।আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন।সুতরাং যে পুনরায় জাহেলিয়াতে ফিরে যাবে,সে লাঞ্চিত এবং অপমানিত হবে।"
চলুন ইতিহাসের আয়নায় কথাটা পরখ করে দেখি।ইসলাম তখন রোম,পারস্যের উপর বিজিত হয়েছে যখন রোম,পারস্যরা আরবের লোকদেরকে যাযাবর,অশিক্ষিত বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো।তারা আরবদেরকে কোনো গোনায়-ই ধরতো না।এমনকি তারা কখনো আরবে আক্রমণ করেনি এইজন্য যে আরব ছিল শস্যহীন অনুর্বর এক মরুভূমি।যেখানে আক্রমণ করে কোনোভাবেই লাভবান হওয়ার ন্যূনতম সুযোগ ছিল না।আর তাদের এই ভাবনার বহিঃপ্রকাশ অনেকবার দেখা গিয়েছে।যেমন পারস্যের সেনাপতির আমন্ত্রণে শান্তিচুক্তির ব্যাপারে কথা বলতে গেলে তারা খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ কে তাদের উন্নত মানের অস্ত্র,সামরিক পোশাক এবং অল্প কিছু স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে ফিরে যেতে বলে এবং তারা এটাও বলে যে আরবরা খাবার এবং অর্থের অভাবে তাদের ভূমিতে আক্রমণ করেছে।
আবার খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ যখন তাদের জুলুমের সিংহাসনগুলোতে আরোহণ না করে মাদুরে বসেন আলাপের জন্য তখনও তারা তাকে অপমানিত করে যে আরবরা এরকম সুন্দর চেয়ারের যোগ্য না।এমনকি তারা এগুলো কোনোদিন চোখেও দেখেনি।আরবের লোকদের সম্পর্কে এই ছিল রোম,পারস্যের লোকদের অভিমত।আবার যখন পারস্যরাজ সংবাদ শুনলেন আরবরা সীমান্তে আক্রমণ করেছে তখন তিনি ভেবে কোনো কূল কিনারা পেলেন না কিসে আরবদেরকে এমন দুঃসাহসী কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করলো?এর উত্তর হচ্ছে ইসলাম।
ইসলাম পৃথিবীর সর্বনিকৃষ্ট জাতিদের মাঝে অন্যতম যারা ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত এক জাতি।জ্ঞান,বিজ্ঞান,শিক্ষা,সংস্কৃতি,অস্ত্র,যুদ্ধবিদ ্যা সবদিক দিয়েই যারা অনেক পিছিয়ে ছিল।ইসলাম তাদেরকে সেই অবস্থা থেকে টেনে তুলে পৃথিবীর সুপারপাওয়ার,পৃথিবীর শাসকে পরিণত করেছিল।তাদের সামনে পুরো পৃথিবী নত হয়েছিল।রোমান সম্রাট তাদের সামনে থেকে পালিয়ে গিয়েছিল প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে।আবু বকর রাঃ এবং উসমান রাঃ এর শাসনামলের অল্প সময়ে তারা অর্ধেক পৃথিবীকে পদানত করেছিল যাদের নিজেদের বলতে কিছুই ছিল না।
এরপর ইসলামের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত হয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে।হারুন অর রশিদের মত ইসলামের খলিফারা রোমের সম্রাটকে এভাবে চিঠি লিখতো "আমিরুল মুমিনীন হারুন অর রশিদের পক্ষ হতে রোমের কুকুর নাকফুরের প্রতি।"তখন জল,স্থল সবদিকেই ছিল মুসলিমদের আধিপত্য।পৃথিবীর কোনো অংশে এমন কেউ ছিল না যে মুসলিমদের দিকে চোখ তুলে তাঁকানোর সাহস রাখতো।
কিন্তু আমরা ইতিহাসের পটপরিবর্তন দেখেছি যারাই ইসলামকে ত্যাগ করেছে তারাই ধ্বংস হয়েছে।তারা কাফেরদের অধীনস্থ হয়ে গিয়েছে।কাফেররা তাদেরকে শাসন করেছে এবং অবশেষে তারা পৃথিবীর ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে।একই কারণে আব্বাসীয় রাজবংশ পৃথিবী থেকে তাদের শাসনের অবসান ঘটাতে বাধ্য হলো।অবশেষে আরেক বর্বর জাতি(তুর্কি) ইসলামকে গ্রহণ করে নিলো।এরপর ইসলাম তাদেরকে সম্মানিত করলো।তাদেরকে ইসলাম পৃথিবীর শাসকে পরিণত করলো।তুর্কি হয়েও আরবদের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্য প্রতিষ্ঠিত হলো।কিন্তু এই তুর্কিরাই যখন ইসলামকে ত্যাগ করলো তখনি তারা পরাজিত হতে থাকলো এবং অবশেষে তাদের সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলো।আল্লাহ তাদের দিগন্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্যকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিলেন।
অথচ এতসব জ্বলন্ত ইতিহাস থাকার পরেও মুসলিম শাসকেরা নিজেদেরকে সংশোধন করলো না।বরং তুর্কি খিলাফত ধ্বংসের পরে মুসলিম বিশ্বের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো কিছু নীতিহীন,মর্যাদাহীন নপুংসক শাসক।কাফেরদের কাছে যাদের দু-পয়সার মূল্য নেই।যদিও পৃথিবীর সকল সম্পদ আল্লাহ মুসলিম বিশ্বকে দান করেছেন সেইসব সম্পদও মুসলিমদের কোনো কাজে আসলো না।এগুলো কাফেরদের শীতল গণিমতে পরিণত হলো।সাদ্দাম হোসেন,গাদ্দাফির মত জালেম শাসকেরা তাদের কাফের মিত্রদের হাতেই লাঞ্চিত হয়েছে।এমনকি আমেরিকার শাসকেরা তাদেরকে কোনো মর্যাদাই দিতো না।তাদের সাথে দেখা করাকে কাফের শাসকরাও নিজেদের জন্য অপমান বোধ করতো।ফলস্বরূপ অনেকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা তাদের সাথে দেখা দিতো না।
অন্যদিকে আফগানের তালিবান বা বিশ্বের জিহাদি আন্দোলনের নেতাদেরকে তারা যমের মত ভয় করে চলে।বাহ্যিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালালেও অন্তরের দিক থেকে তাদেরকে সমীহ করে।তারা জানে এইসকল লোকেরা তাদের জন্য মারাত্মক হুমকি।তাই তারা তাদেরকে ধ্বংস করতে সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়।
কিন্তু মোহাম্মাদ বিন সালমানের মত নালায়েক যে নবি মুহাম্মাদ সাঃ এর ভূমিকে শয়তানের অনুসারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে তাদেরকে তারা সামান্য সম্মানটুকুও দেয় না।সামান্য একটা কাজ তাদের মনোঃপুত না হলেই তাদেরকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।যদিও বাহ্যিকভাবে তারা সাধারণ মুসলিমদের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করে রাখে বস্তুতঃ তারা কাফেরদের সামান্য গোলাম মাত্র।মুসলিম বিশ্বের সকল সম্পদ ব্যবহার করে তারা তাদের কাফের মনিব এবং কাফের মনিবদের মনিব শয়তানকে খুশি করতে সবসময়ই ব্যতিব্যস্ত থাকে।এরপরেও সামান্য একটু ভুল হলেই তারা তাদের কাফের মনিবদের কাছ থেকে চরম অপমান ও লাঞ্চনার শিকার হয়।
আর এটা হওয়ারই ছিল।কারণ এটাই আল্লাহর নিয়ম।যে তার দ্বীনকে পরিত্যাগ করবে তিনি তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্চনার স্বাদ আস্বাদন করাবেন।শয়তানকে খুশি করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত জাজিরাতুল আরবদের শাসকদের কোনো সম্মান,মর্যাদা নেই।সামান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।নিজেদের নিরাপত্তার জন্য ভাড়াটে সৈনিকদেরকে নিজ দেশে ডেনে আনার ফলে সেই সৈনিক দ্বারাই তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।সাম্প্রতিক সময়ে তেলের বাজার নিয়ে তেল উৎপাদনকারী আরব দেশের বিরুদ্ধে বাইডেনের হুংকারই এগুলো প্রমাণ করে দেয়।তারা তাদের প্রভুদের মন রক্ষার জন্য কতই না প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারপরও তাদের শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উস্তাদ আহমাদ শাকের রহঃ এর একটা উক্তি মনে পড়ে গেলো, তিনি বলেন "ইসলামের স্বর্ণযুগে মিশর ছিল খাদ্যের ভান্ডার।মিশরের গম সারা পৃথিবীতে রপ্তানি হতো।ব্রিটেন তার দুর্ভিক্ষ মোকাবেলার জন্য মিশরের কাছে সাহায্য ভিক্ষা চাইতো।কিন্তু যখনি তারা ইসলামকে
ত্যাগ করলো তখনই তারা কাফেরদের কাছে অপমানিত হওয়া শুরু করলো।এখন মিশর তার খাবারের জন্য আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকে।আমেরিকার কাছে মাথা নত করে অল্প কিছু শস্যের জন্য।"
সুতরাং উমার রাঃ এর সেই কথায় ফিরে আসি তিনি বলেছিলেন ইসলাম তাদেরকে সম্মানিত করেছেন এবং জাহেলিয়াত মানুষকে লাঞ্চিত করে।আপনারা মুসলিম বিশ্বের এবং বিশেষ করে আরব শাসকদেরকে দেখেছেন যারা জাহেলিয়াতের দিকে এগিয়ে যেতে একে,অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতেছে।কাতারের আমির মুরতাদ তামিম বিন হামাদ,মিশরের সিসি,আরবের বিন সালমান সব শাসকেরাই কাফেরদের কাছে সামান্য পুতুল মাত্র।এদের কোনো সম্মান নেই,কোনো মর্যাদ নেই এবং শীঘ্রই উমার রাঃ এর কথার সত্যতা প্রমাণিত হবে এবং তারা চূড়ান্ত লাঞ্চনার স্বাদ আস্বাদন করবে।কারণ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন
"সম্মান,মর্যাদা এবং দুনিয়াতে খেলাফতের সুসংবাদ সবই এই উম্মতের জন্য।"
এমনকি আল্লাহও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন
"আর তিনি তোমাদেরকে দান করবেন আল্লাহর পক্ষ হতে সাহায্য এবং নিকটবর্তী বিজয়।সুতরাং মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও।"
আর পাপাচার এবং দ্বীনত্যাগ শুধু শাসকদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়।সাধারণ মুসলিমদের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য।শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহঃ বলেছিলেন "একসময় ফিলিস্তিনিরা ইসলামকে অভিশাপ দিতো।তারা ইহুদিদেরকে আপন করে গ্রহণ করে নিয়েছিল আল্লাহর অবাধ্য হয়ে।এরপর আল্লাহ তাদের উপর ইহুদিদের উপর থেকে লাঞ্চনা ও অপমান চাপিয়ে দিলেন।"
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও যে মুসলিমরা নির্যাতিত তাদের ক্ষেত্রেও দ্বীনত্যাগ একটা বড় কারণ।এখনো নিজের চারপাশে তাকিয়ে দেখুন কতজন ইসলামের উপর অটল আছে?কতজন মুসলিম সঠিক আকিদার উপরে অবিচল আছে?সুতরাং এইরকম পরিস্থিতিতে কাফেরদের পক্ষ থেকে লাঞ্চনা এবং অপমান চেপে বসলে সেটা আপনি নিজেই অর্জন করেছেন।সুতরাং হে ধ্বংসের কিনারে দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তি,বিপদ আসার আগেই সতর্ক হন।ইসলামের উপর ফিরে আসুন আল্লাহ আপনাদেরকে সম্মানিত করবেন।মুজাহিদদের আহ্বানে সাড়া দিন আল্লাহ আপনাদেরকে কাফেরদের উপর আধিপত্য বিস্তারকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন।আল্লাহ আপনাদেরকে পৃথিবীর শাসকে রূপান্তরিত করবেন।কাফেরদের হুংকারে আপনার সন্ত্রস্ত অবস্থা দূরীভূত হবে।
পরিবেশিত
Presents
শিরোনাম
Titled
নিশ্চয়ই জাহেলিয়াত মানুষকে লাঞ্চিত করবে।
হারিস আল আদনান
উমার রাঃ ইতিহাসের এক অন্যতম সত্য কথা উচ্চারণ করেছিলেন।তিনি বলেছিলেন
"আমরা ছিলাম এক নিকৃষ্ট জাতি।আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন।সুতরাং যে পুনরায় জাহেলিয়াতে ফিরে যাবে,সে লাঞ্চিত এবং অপমানিত হবে।"
চলুন ইতিহাসের আয়নায় কথাটা পরখ করে দেখি।ইসলাম তখন রোম,পারস্যের উপর বিজিত হয়েছে যখন রোম,পারস্যরা আরবের লোকদেরকে যাযাবর,অশিক্ষিত বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো।তারা আরবদেরকে কোনো গোনায়-ই ধরতো না।এমনকি তারা কখনো আরবে আক্রমণ করেনি এইজন্য যে আরব ছিল শস্যহীন অনুর্বর এক মরুভূমি।যেখানে আক্রমণ করে কোনোভাবেই লাভবান হওয়ার ন্যূনতম সুযোগ ছিল না।আর তাদের এই ভাবনার বহিঃপ্রকাশ অনেকবার দেখা গিয়েছে।যেমন পারস্যের সেনাপতির আমন্ত্রণে শান্তিচুক্তির ব্যাপারে কথা বলতে গেলে তারা খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ কে তাদের উন্নত মানের অস্ত্র,সামরিক পোশাক এবং অল্প কিছু স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে ফিরে যেতে বলে এবং তারা এটাও বলে যে আরবরা খাবার এবং অর্থের অভাবে তাদের ভূমিতে আক্রমণ করেছে।
আবার খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ যখন তাদের জুলুমের সিংহাসনগুলোতে আরোহণ না করে মাদুরে বসেন আলাপের জন্য তখনও তারা তাকে অপমানিত করে যে আরবরা এরকম সুন্দর চেয়ারের যোগ্য না।এমনকি তারা এগুলো কোনোদিন চোখেও দেখেনি।আরবের লোকদের সম্পর্কে এই ছিল রোম,পারস্যের লোকদের অভিমত।আবার যখন পারস্যরাজ সংবাদ শুনলেন আরবরা সীমান্তে আক্রমণ করেছে তখন তিনি ভেবে কোনো কূল কিনারা পেলেন না কিসে আরবদেরকে এমন দুঃসাহসী কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করলো?এর উত্তর হচ্ছে ইসলাম।
ইসলাম পৃথিবীর সর্বনিকৃষ্ট জাতিদের মাঝে অন্যতম যারা ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত এক জাতি।জ্ঞান,বিজ্ঞান,শিক্ষা,সংস্কৃতি,অস্ত্র,যুদ্ধবিদ ্যা সবদিক দিয়েই যারা অনেক পিছিয়ে ছিল।ইসলাম তাদেরকে সেই অবস্থা থেকে টেনে তুলে পৃথিবীর সুপারপাওয়ার,পৃথিবীর শাসকে পরিণত করেছিল।তাদের সামনে পুরো পৃথিবী নত হয়েছিল।রোমান সম্রাট তাদের সামনে থেকে পালিয়ে গিয়েছিল প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে।আবু বকর রাঃ এবং উসমান রাঃ এর শাসনামলের অল্প সময়ে তারা অর্ধেক পৃথিবীকে পদানত করেছিল যাদের নিজেদের বলতে কিছুই ছিল না।
এরপর ইসলামের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত হয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে।হারুন অর রশিদের মত ইসলামের খলিফারা রোমের সম্রাটকে এভাবে চিঠি লিখতো "আমিরুল মুমিনীন হারুন অর রশিদের পক্ষ হতে রোমের কুকুর নাকফুরের প্রতি।"তখন জল,স্থল সবদিকেই ছিল মুসলিমদের আধিপত্য।পৃথিবীর কোনো অংশে এমন কেউ ছিল না যে মুসলিমদের দিকে চোখ তুলে তাঁকানোর সাহস রাখতো।
কিন্তু আমরা ইতিহাসের পটপরিবর্তন দেখেছি যারাই ইসলামকে ত্যাগ করেছে তারাই ধ্বংস হয়েছে।তারা কাফেরদের অধীনস্থ হয়ে গিয়েছে।কাফেররা তাদেরকে শাসন করেছে এবং অবশেষে তারা পৃথিবীর ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে।একই কারণে আব্বাসীয় রাজবংশ পৃথিবী থেকে তাদের শাসনের অবসান ঘটাতে বাধ্য হলো।অবশেষে আরেক বর্বর জাতি(তুর্কি) ইসলামকে গ্রহণ করে নিলো।এরপর ইসলাম তাদেরকে সম্মানিত করলো।তাদেরকে ইসলাম পৃথিবীর শাসকে পরিণত করলো।তুর্কি হয়েও আরবদের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্য প্রতিষ্ঠিত হলো।কিন্তু এই তুর্কিরাই যখন ইসলামকে ত্যাগ করলো তখনি তারা পরাজিত হতে থাকলো এবং অবশেষে তাদের সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলো।আল্লাহ তাদের দিগন্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্যকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিলেন।
অথচ এতসব জ্বলন্ত ইতিহাস থাকার পরেও মুসলিম শাসকেরা নিজেদেরকে সংশোধন করলো না।বরং তুর্কি খিলাফত ধ্বংসের পরে মুসলিম বিশ্বের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো কিছু নীতিহীন,মর্যাদাহীন নপুংসক শাসক।কাফেরদের কাছে যাদের দু-পয়সার মূল্য নেই।যদিও পৃথিবীর সকল সম্পদ আল্লাহ মুসলিম বিশ্বকে দান করেছেন সেইসব সম্পদও মুসলিমদের কোনো কাজে আসলো না।এগুলো কাফেরদের শীতল গণিমতে পরিণত হলো।সাদ্দাম হোসেন,গাদ্দাফির মত জালেম শাসকেরা তাদের কাফের মিত্রদের হাতেই লাঞ্চিত হয়েছে।এমনকি আমেরিকার শাসকেরা তাদেরকে কোনো মর্যাদাই দিতো না।তাদের সাথে দেখা করাকে কাফের শাসকরাও নিজেদের জন্য অপমান বোধ করতো।ফলস্বরূপ অনেকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা তাদের সাথে দেখা দিতো না।
অন্যদিকে আফগানের তালিবান বা বিশ্বের জিহাদি আন্দোলনের নেতাদেরকে তারা যমের মত ভয় করে চলে।বাহ্যিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালালেও অন্তরের দিক থেকে তাদেরকে সমীহ করে।তারা জানে এইসকল লোকেরা তাদের জন্য মারাত্মক হুমকি।তাই তারা তাদেরকে ধ্বংস করতে সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়।
কিন্তু মোহাম্মাদ বিন সালমানের মত নালায়েক যে নবি মুহাম্মাদ সাঃ এর ভূমিকে শয়তানের অনুসারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে তাদেরকে তারা সামান্য সম্মানটুকুও দেয় না।সামান্য একটা কাজ তাদের মনোঃপুত না হলেই তাদেরকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।যদিও বাহ্যিকভাবে তারা সাধারণ মুসলিমদের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করে রাখে বস্তুতঃ তারা কাফেরদের সামান্য গোলাম মাত্র।মুসলিম বিশ্বের সকল সম্পদ ব্যবহার করে তারা তাদের কাফের মনিব এবং কাফের মনিবদের মনিব শয়তানকে খুশি করতে সবসময়ই ব্যতিব্যস্ত থাকে।এরপরেও সামান্য একটু ভুল হলেই তারা তাদের কাফের মনিবদের কাছ থেকে চরম অপমান ও লাঞ্চনার শিকার হয়।
আর এটা হওয়ারই ছিল।কারণ এটাই আল্লাহর নিয়ম।যে তার দ্বীনকে পরিত্যাগ করবে তিনি তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্চনার স্বাদ আস্বাদন করাবেন।শয়তানকে খুশি করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত জাজিরাতুল আরবদের শাসকদের কোনো সম্মান,মর্যাদা নেই।সামান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।নিজেদের নিরাপত্তার জন্য ভাড়াটে সৈনিকদেরকে নিজ দেশে ডেনে আনার ফলে সেই সৈনিক দ্বারাই তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।সাম্প্রতিক সময়ে তেলের বাজার নিয়ে তেল উৎপাদনকারী আরব দেশের বিরুদ্ধে বাইডেনের হুংকারই এগুলো প্রমাণ করে দেয়।তারা তাদের প্রভুদের মন রক্ষার জন্য কতই না প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারপরও তাদের শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উস্তাদ আহমাদ শাকের রহঃ এর একটা উক্তি মনে পড়ে গেলো, তিনি বলেন "ইসলামের স্বর্ণযুগে মিশর ছিল খাদ্যের ভান্ডার।মিশরের গম সারা পৃথিবীতে রপ্তানি হতো।ব্রিটেন তার দুর্ভিক্ষ মোকাবেলার জন্য মিশরের কাছে সাহায্য ভিক্ষা চাইতো।কিন্তু যখনি তারা ইসলামকে
ত্যাগ করলো তখনই তারা কাফেরদের কাছে অপমানিত হওয়া শুরু করলো।এখন মিশর তার খাবারের জন্য আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকে।আমেরিকার কাছে মাথা নত করে অল্প কিছু শস্যের জন্য।"
সুতরাং উমার রাঃ এর সেই কথায় ফিরে আসি তিনি বলেছিলেন ইসলাম তাদেরকে সম্মানিত করেছেন এবং জাহেলিয়াত মানুষকে লাঞ্চিত করে।আপনারা মুসলিম বিশ্বের এবং বিশেষ করে আরব শাসকদেরকে দেখেছেন যারা জাহেলিয়াতের দিকে এগিয়ে যেতে একে,অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতেছে।কাতারের আমির মুরতাদ তামিম বিন হামাদ,মিশরের সিসি,আরবের বিন সালমান সব শাসকেরাই কাফেরদের কাছে সামান্য পুতুল মাত্র।এদের কোনো সম্মান নেই,কোনো মর্যাদ নেই এবং শীঘ্রই উমার রাঃ এর কথার সত্যতা প্রমাণিত হবে এবং তারা চূড়ান্ত লাঞ্চনার স্বাদ আস্বাদন করবে।কারণ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন
"সম্মান,মর্যাদা এবং দুনিয়াতে খেলাফতের সুসংবাদ সবই এই উম্মতের জন্য।"
এমনকি আল্লাহও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন
"আর তিনি তোমাদেরকে দান করবেন আল্লাহর পক্ষ হতে সাহায্য এবং নিকটবর্তী বিজয়।সুতরাং মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও।"
আর পাপাচার এবং দ্বীনত্যাগ শুধু শাসকদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়।সাধারণ মুসলিমদের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য।শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহঃ বলেছিলেন "একসময় ফিলিস্তিনিরা ইসলামকে অভিশাপ দিতো।তারা ইহুদিদেরকে আপন করে গ্রহণ করে নিয়েছিল আল্লাহর অবাধ্য হয়ে।এরপর আল্লাহ তাদের উপর ইহুদিদের উপর থেকে লাঞ্চনা ও অপমান চাপিয়ে দিলেন।"
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও যে মুসলিমরা নির্যাতিত তাদের ক্ষেত্রেও দ্বীনত্যাগ একটা বড় কারণ।এখনো নিজের চারপাশে তাকিয়ে দেখুন কতজন ইসলামের উপর অটল আছে?কতজন মুসলিম সঠিক আকিদার উপরে অবিচল আছে?সুতরাং এইরকম পরিস্থিতিতে কাফেরদের পক্ষ থেকে লাঞ্চনা এবং অপমান চেপে বসলে সেটা আপনি নিজেই অর্জন করেছেন।সুতরাং হে ধ্বংসের কিনারে দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তি,বিপদ আসার আগেই সতর্ক হন।ইসলামের উপর ফিরে আসুন আল্লাহ আপনাদেরকে সম্মানিত করবেন।মুজাহিদদের আহ্বানে সাড়া দিন আল্লাহ আপনাদেরকে কাফেরদের উপর আধিপত্য বিস্তারকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন।আল্লাহ আপনাদেরকে পৃথিবীর শাসকে রূপান্তরিত করবেন।কাফেরদের হুংকারে আপনার সন্ত্রস্ত অবস্থা দূরীভূত হবে।
আল হিদায়াহ মিডিয়া
Al HIDAYAH MEDIA
Al HIDAYAH MEDIA
পরিবেশিত
Presents
শিরোনাম
Titled
নিশ্চয়ই জাহেলিয়াত মানুষকে লাঞ্চিত করবে।
হারিস আল আদনান
PDF
Comment