Announcement

Collapse
No announcement yet.

নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় সৌদিআরব কি পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে সাহায্য করবে?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় সৌদিআরব কি পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে সাহায্য করবে?

    বর্তমানে (ভারত-পাকিস্তানে) কিছু হলেই পাকিস্তান ও কিংডম অব সাঊদি আরাবিয়ার মাঝে Strategic Mutual Defence Agreement (SMDA) এর নমুনা দর্শন করানো হয়। যার মূল ভিত্তি হলো, সাঊদি ও পাকিস্তানের মাঝে কেউ কোনো শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হলে সেটি নাকি তাদের সকলের ওপর হামলার সমান বলে বিবেচিত হবে। সুতরাং, আমাদের মাঝে অনেকে ধারণা করে বসে রয়েছেন যে, বিষয়টি আসলে ইণ্ডিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ভুল!

    সাঊদি আরাবিয়া একদিকে পাকিস্তানের সাথে SMDA স্বাক্ষর করেছে, অপরদিকে তারা মারাত্মক উৎসাহের সাথে ইণ্ডিয়ার সাথে নিয়মিত হারে সামরিক সমঝোতা ও সমন্বয় বাড়িয়ে চলেছে। যার গতিপথ জনসমক্ষে আগমন করে ২০১৯ সালে। সেবার নরেন্দ্র মোদী দেশটির রাজধানী রিয়াদ ভ্রমণের কালে India-Saudi Arabia Strategic Partnership Council (SPC) স্থাপন করে আসে। যার অধীনে বিভিন্ন খাতে সাঊদি ও ইণ্ডিয়ার সম্মিলিতভাবে কাজ করার চুক্তি হয়। যেখানে সাঊদির পক্ষ হতে ইণ্ডিয়ায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

    '১৯ সালের স্বাক্ষরিত SPC এর অধীনে ইণ্ডিয়া ও সাঊদির মাঝে সম্মিলিত সামরিক তৎপরতার ভিত্তিও গড়ে উঠতে আরম্ভ করে। তারপর, আরব উপসাগরের পানিতে ২০২১ সালে Indian Navy ও Royal Saudi Naval Forces (RSNF) এর মাঝে তাদের সর্বপ্রথম নৌ-মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। যা তখন হতে অনেকটা ধারাবাহিকভাবে চলমান রয়েছে।


    ধোঁকার পৃথিবী

    ইণ্ডিয়া ও সাঊদি আরাবিয়ার মাঝে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্মিলিত তৎপরতা তারপর দৃষ্টিকটু আকারে বৃদ্ধি পায় ২০২৪ সাল থেকে। এখান হতে সামনে যাওয়ার আগে বলে রাখা ভালো যে, '১৯ সাল থেকে '২৪ সালের মাঝের তাদের অনেক দ্বিপাক্ষিক সামরিক তৎপরতা এই নিবন্ধে লেখা সংক্ষিপ্ত রাখার স্বার্থে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সামনেও যা চলবে।

    '২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্থানের মহাজন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে সাঊদি ও ইণ্ডিয়ান আর্মির সর্বমোট ৯০ জন পার্সোনেলের একটি ফর্মেশন Military Operations in Urban Terrain (MOUT) বিষয়ক মহড়ায় অংশ নেয়। যা ছিল দ্বিপাক্ষিক ল্যাণ্ড ফোর্সের ইতিহাসে সর্বপ্রথম সামরিক মহড়া। ঠিক একইসময়ে ইণ্ডিয়ার Minister of State, Ministry of Defence হিসাবে নিয়োজিত অজয় ভাঁট রিয়াদে সাঊদি মিলিটারির সাথে ২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করে আসে। যেখানে Munitions Limited India (MLI) কে সাঊদি আর্মির জন্য ২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ১৫৫ মিলিমিটার আর্টিলারি শেল উৎপাদনের ডিল হস্তান্তর করা হয়।

    তার ০৬ মাস পর ০৪/০৯/২০২৪ তারিখে সাঊদি আরাবিয়ার রাজধানীতে পুনরায় আরম্ভ হয় সাঊদি ও ইণ্ডিয়ার মাঝে Joint Committee on Defence Cooperation (JCDC) এর ষষ্ঠ পর্বের মিটিং। মেজর জেনারেল সালমান বিন আওয়াধ আল-হারবি, আণ্ডার-সেক্রেটারি ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স, কিংডম অব সাঊদি আরাবিয়া যেখানে সাঊদি ডেলিগেশনটির দায়িত্বে ছিল। বিপরীতে জয়েন্ট সেক্রেটারি অমিতাভ প্রসাদ, মিনিস্ট্রি অব ডিফেন্স, রিপাবলিক অব ইণ্ডিয়ার ওপরে সেখানে ইণ্ডিয়ান ডেলিগেশনের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়।

    এখান হতে ২০২৫ সালে উপনীত হওয়ার সাথে সাথে আমরা সমস্ত কিছু আরো গতিশীল রূপ ধারণ করতে দেখতে পাব। যার শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখে Indian Army ও Royal Saudi Land Forces (RSLF) এর মাঝে ঐতিহাসিক Army to Army Staff Talk (AAST) এর উদ্বোধনীর মাঝ দিয়ে। আলোচ্য বিষয়টিও সাঊদি আরাবিয়া ও ইণ্ডিয়ান আর্মির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংঘটিত হচ্ছিলো। AAST 'তে হওয়া পারস্পরিক সে আলাপের মাঝে একটি Annual Defence Cooperation Plan যুক্ত করা হয়। যার মাঝে সম্মিলিত মহড়া, প্রশিক্ষণ, নানান ধরণের এক্সচেঞ্জের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে।

    AAST সমাপ্তির মাত্র দু'মাস পর রয়্যাল সাঊদি নেভির ৭৬ জন অফিসারকে ইণ্ডিয়ার সাঊদার্ন নেভাল কমাণ্ডে গড়ে ওঠা First Training Squadron (1TS) থেকে Afloat Training করায় সাঊদি সরকার। যেখান থেকে আমরা জানতে পারি যে, এটি আসলে ইণ্ডিয়ার মাটিতে রয়্যাল সাঊদি নেভির ক্যাডেটদের দ্বিতীয় ব্যাচ। কারণ, তাদের সিনিয়র আরেকটি কোর্সের কিছু স্টুডেন্ট তাদেরও আগে '২৩ সালের জুন মাসে ওখান হতে কোর্স করে সাঊদিতে ফেরত গিয়েছে।

    ওদিকে AAST এর আলোচনার সময়ে সাঊদি আরাবিয়া ও ইণ্ডিয়ার সরকার তাদের SPC এর অধীনে Ministerial Committee on Defence Cooperation গড়ে তুলেছিল। যেখানে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। তা হলো, দিল্লির মাটিতে AAST চলাকালীন সময়ে ইণ্ডিয়ার Prime Minister (PM) এর রিয়াদ ভ্রমণ চলছিল। যার সাথে তাল মিলিয়ে দিল্লি শহরে AAST এর উদ্বোধন হচ্ছিল। এমন সময়ে জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগাম অঞ্চলে কাশ্মিরী গেরিলারা ভয়াবহ হামলা পরিচালনা করে। নরেন্দ্র মোদি যার ফলে তার রিয়াদ সফর সংক্ষিপ্ত করে দিল্লির মাটিতে ফিরে আসার জন্য বাধ্য হয়। তারপর মে মাসের ০৭ তারিখে Indian Air Force এর তত্বাবধানে Operation Sindoor লঞ্চ করা হলে তার আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো সংঘটিত হয় সেখানে। এসব বিষয় সাঊদির মাঝে কোনো দ্বিধা তৈরির সুযোগ পায়নি।

    তারপর, তার মাত্র তিন মাসের মাথায় Joint Committee on Defence Cooperation (JCDC) এর সপ্তম পর্বের উদ্বোধন করে ইণ্ডিয়া। মেজর জেনারেল সাদ মুহাম্মাদ আল-কাসিরি, কিংডম অব সাঊদি আরাবিয়ার দায়িত্বে সাঊদি ডেলিগেশন সম্মেলনে আগমন করে। যেখানে ইণ্ডিয়ান মিলিটারির পক্ষ হতে সাঊদি আরাবিয়ার সরকারকে সরাসরি জানানো হয় যে, তারা সাঊদি সশস্ত্র বাহিনীর সকল শাখার কর্মকর্তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দানের আশা করে। পাশাপাশি ইণ্ডিয়ার মাটিতে উৎপাদিত নানান সামরিক প্রযুক্তির বিষয়ে তাদের অবগত করা হয় সেখানে। Cyber, IT ও Disaster Management বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় নিয়েও ওখানে আলোচনা করা হয়েছে।


    উপসংহার

    তাহলে একদিকে ইণ্ডিয়ার সাথে নিয়মিতভাবে সামরিক বিষয়ে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে থাকা সাঊদি আরাবিয়া কেন আরেকদিকে পাকিস্তানের সাথে এমন কোনো সামরিক চুক্তি করবে, যা সেটিকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে! বিষয়টির উত্তর রয়েছে দিল্লির মাটিতে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের কাছে। দিল্লি শহরে একটি কনফারেন্স বক্তব্য রাখবার সময়ে যার পক্ষ হতে খুব দম্ভের সাথে জানানো হয় যে, সাঊদি আরাবিয়ার সাথে পাকিস্তানের চুক্তি থেকে ইণ্ডিয়ার কোনো ভয়ের কারণ নাই।

    পাকিস্তানের যদি কোনো যুদ্ধ করতে হয়, সেখানে সে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নানান দিক থেকে উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল। সেখান হতে পাকিস্তানের সাথে আলোচ্য পরিস্থিতিতে Strategic Mutual Defence Agreement (SMDA) স্রেফ তখনই স্বাক্ষর করা হতে পারে, যখন তারা বর্তমান পাকিস্তানের সাথে একটি পারমাণবিক শক্তি সম্বলিত ইণ্ডিয়ার কোনো যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখে না। এবং ইণ্ডিয়ার সাথে পাকিস্তান কোনো কারণে আগামী দিনগুলিতে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক, সেটাও তাদের স্বার্থের সাথে খাপ খায় না।

    বর্তমানে পাকিস্তানে যে কারণে Bajwa Doctrine এর বাস্তবায়ন চলছে। যার ফলে একদিকে পাকিস্তান আর্মি ইণ্ডিয়ার ওপর আক্রমণাত্মক চিন্তাধারা হতে সরে আসছে, অপরদিকে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে ও Doctrine এর প্রতিপক্ষদের নির্মূল করতে তারা চলছে আফগানিস্তানের দিকে। সাম্প্রতিক পাকিস্তানে 27th Amendment Bill পাস হওয়ার পর যা নিয়ে কারো সামান্যতম সন্দেহ থাকা উচিত নয়।

    আর, ঠিক এই দৃশ্যপট আমাদের সামনের থাকার কারণেই বাংলাদেশের উচিত নয় পাকিস্তানের ওপর কৌশলগত পর্যায়ে কোনোভাবে নির্ভরশীল হওয়া।


    পাকিস্তান একটি Garrison State। যেখানে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের স্বার্থের পরওয়া করা বহু দশক আগে থেকে পরিত্যাগ করেছে। ফলে, কাশ্মির বা বাংলাদেশের মতো স্থানের স্বার্থে শক্তিশালী ভূমিকা রাখা যদিও পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পদস্থ নীতিনির্ধারকেরা তা করতে অক্ষম। পাকিস্তানের ওপর একক নির্ভরশীল হয়ে যাওয়ার বিরোধিতা তাই '৭১ এর চেতনা অথবা অন্য কোনো চিন্তাধারা থেকে নয়৷ বরঞ্চ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের চিন্তাধারা হতে আগত বিষয়। পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার আর্সেনালটিও বর্তমানে Chief of Defence Forces (CDF) এর নিয়ন্ত্রণাধীন অবস্থায় থাকছে। যার দায়িত্ব হলো কোনোভাবেই আর্সেনালটি ইণ্ডিয়ার দিকে মোতায়েন হতে না দেওয়া।

    সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় হামাস এর বিরুদ্ধে নিজস্ব গুপ্তচর পাঠিয়ে Israel Defense Forces কে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে৷ বুঝার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। বাকিটা যার যার নিজস্ব বিবেচনা। উপসাগরীয় দেশগুলোর সরকার সম্পর্কে এদেশের সাধারণ মানুষ আরো ভালোভাবে অবগত। ওরা কাদের স্বার্থে কাজ করে, কেন করে, তা আর বলে দেওয়ার দরকার নাই।

    (عقل مند کے لیے اشارہ ہی کافی ہے)​

    ~~ফেসবুক থেকে সংগৃহীত ও পরিমার্জিত~~
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

  • #2
    একটি জাতীকে ধ্বংস করতে হলে তার শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে দেওয়াই যথেষ্ট। আরবদের সাথে এমনটাই হয়েছে। প্রাণ প্রিয় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মভূমি। সেখানকার যুবকরা এত ভীতু প্রকৃতির হয় কিভাবে? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এবং সাহাবায়ে কিরামের যুদ্ধের বীরত্বের ইতিহাস পড়ে পড়ে মুসলিমরা বড় বড় হয়েছে। অথচ সেই বীরদের পরবর্তী প্রজন্ম কিভাবে এতো ভীতু জাতিতে পরিনত হয়ে গেলো! খুজলে দেখা যাবে যে, খুব কম যুবকরাই ইসলামের সুমহান আদর্শ অধ্যায়ন করেছে বা লালন করে। দুবিয়া মোহ মানুষকে দ্বীন থেকে অনেক দূরে সরিয়ে দেয়।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment

    Working...
    X