ভারতের অযোধ্যায় সেখানে প্রায় পাঁচ শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদ ছিলো, ১৯৯২ সালের ৬ডিসেম্বর পযর্ন্ত। কিন্তু সেই জায়গায় 'জাহান্নামের পোকা' নরেন্দ্র মোদী রামমন্দির নির্মাণের সূচনা করেছেন। তাদের ধর্মীয় উৎসব শেষে ' নরেন্দ মোদী সাম্প্রদায়িক উসকানিমুলক ভাষন শুরু করে রামায়ণের একটি পঙক্তি উদ্ধৃত করে বলেন-
'ভগবান রামের কাজ না করলে আমার শান্তি কিসে হবে?' রামচন্দ্রকে তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির আধার বলে উল্লেখ করেন। সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক ভাষনের আগে নরেন্দ্র মোদী ভূমি পূজা করে, রামমন্দিরের গর্ভগৃহে একটি রূপার ইট রেখে মন্দির নির্মাণের সূচনা করেন। নাউজুবিল্লাহ!
১৯৯২ সালের ৬ডিসেম্বর যখন এই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের ছায়ায়, বিজেপি, শিবসেনা ও অন্যান্য উগ্র হিন্দত্ববাদী অঙ্গসংগঠনের মাধ্যমে বাবরি মসজিদ 'ভেঙে' সাম্প্রদায়িক 'দাঙ্গা' বাধিয়ে হাজার হাজার মুসলিমকে শহীদ করে দেওয়া হয়, এবং শত শত মুসলিম নারীর...। না থাক, কথাটা বড় কষ্ট ও যন্ত্রণার।
একই কৌশলে গুজরাটেও হাজার হাজার মুসলিমকে আগুনে পুড়িয়ে মারারও মূল হোতা ছিলেন নরেন্দ্র মোদী।
নিকট অতীতে কাশ্মীরে যখন মোদীর ইশারায় পুনরায় মুসলিম নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, গুম, সম্ভ্রম লুণ্ঠন এবং বসতবাড়ি উচ্ছেদকরণের ধ্বংসযজ্ঞ দাবানলের মত জ্বলে উঠল। তখন পাকপ্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মীর ইসূতে 'চতুর' খেলোয়াড়ের মত রাজনৈতিক ময়দানে কখনো অগ্নিহুংকার ছাড়ে, আবার কখনো নীরব ভূমিকা পালন করে, ঠিক যেন আনাড়ি-দাবাড়ু। আর বাংলাদেশ পড়শী রাষ্ট্র হওয়ার পরেও তাদের কৃর্তি-কর্মের সাফাই গাইয়ে সমর্থন যুগিয়েছ।
আর মুসলিমবিশ্বের অভিভাবকদের কথা কী বলবো, তারা তো জাগ্রত নিদ্রায় বিভোর! 'ঠিক যেন বধির, তবে কখনো কখনো শুকনো ঠোঁট দুটো নাড়িয়ে বলে, এগুলো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আরো একটু আগে বাড়িয়ে আরব আমিরাত নরেন্দ্র মোদীকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার 'অর্ডার অব যাহেদ মেডেল' প্রদান করে যুবরাজ বিন যায়েদ নিজেই।
আর হারামাইনের খাদেমরা মদের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে স্বপ্নের মত সব কিছু রঙিন দেখছে, আর প্রলাপ বকছে। নিজেদের আত্মপরিচয় ভুলে গিয়ে, পশ্চাত্যের আধুনিক জাহেলিয়াত, ভোগবাদী, বস্তুবাদী, জাতীয়তাবাদী, সাম্যবাদ ও জায়নবাদের বিষাক্ত ছোবলে দ্বীন থেকে দূরে সরে গেছে। আর এই ব্যাধি মূলত দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী ধরে সংক্রমিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক আরো খতরনাক হলো পাচ্য ও সারা মুসলিমবিশ্ব এখন জ্ঞানের সকল শাখায় পাশ্চাত্যের 'সুবোধ' ছাত্র এবং পশ্চিমের দস্তরখানের উচ্ছিষ্টভোজী। একটু ছাড় দিয়ে বলা যায় 'অনাহুত ও অনাদৃত মেহমান'।
জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, প্রযুক্তি, অস্ত্রশস্ত, সমরবিদ্যা, অর্থব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা ও রাজনৈতিক কুশলতা একটি দেশের 'হৃদপিণ্ড' অথচ আরব বা আজম কোনো মুসলিম দেশ (ইল্লা আফগানিস্তান ও মুজাহিদের নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকা ছাড়া, আল্লাহ! তাদেরকে আমান ও হেফজ করুক। আমীন!) পাশ্চাত্যের ধাঁচ বা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে নয়। যতদিন তারা আমাদের বুদ্ধিজীবি এবং সমরনেতাদের 'মগজ ধোলাই' করবে ততোদিন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা দূরের কথা, তাদের চোখে চোখ রাঙিয়ে কথা বলার হিম্মত পাবে না।
তাইতো, আমরা দেখতে পাই এখনো মুসলিম জনপদে খুন ঝরে মুসলিম অস্ত্র দ্বারা, মুসলিম নারী সম্ভ্রম হারায় মুসলিম সেনা দ্বারা, আর শয়তান হাসে হায়েনার হাসি। একটু থামুন! গভীর ভাবে চিন্তা করে হৃদয়দর্পণে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন যে, এইটা মুসলমানদের কত বড় জখম ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। এখন মুসলিম উম্মাহর এর থেকে পরিত্রাণ ও পরিত্রাণের দাওয়াহ্* অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু না, এখনো মুসলিম উম্মাহ্* মদের পেয়ালা, পানশালা, নাচশালা, ঘুমের বড়ি সেবন করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে আর এই দিকে 'লাওয়ারিশ' সম্পদের মতো আমাদের সকল ভূখণ্ডগুলোকে নিয়ে আমাদের জাতি শত্রুরা ভাগ-বাটোয়ারায় মহা ব্যস্ত।
হে মুসলিম জাগো! আর গাফলতির চাদর গায়ে মুড়িয়ো না, তানা হলে খুব সহজ লোকমায় গিলে ফেলবে তোমাদের। এখন চোখে অশ্রু আসে না, আর তখন কাঁদতে কাঁদতে চোখ থেকে খুন ঝরিয়েও কোনো লাভ হবে না। এখনো সময় আছে গাফলত ছেড়ে স্বপ্নের ঘোর থেকে জেগে উঠার, কিন্তু বাস্তবতা এই যে, সময় অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। জাহেলিয়াত এখন এতই মোটাতাজা ও দৈত্যাকার ধারণ করেছে এবং আমাদের দুর্বলতা ও কমজোরি এতই বেড়ে গেছে যে, এখন আর মোকাবিলায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তবে আল্লাহর কুদরতের কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই। আর আল্লাহ! কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন (অপরাধী, কিন্তু অনুতপ্ত) মুমিনকে তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হতে। সুতরাং আল্লাহর অসীম কুদরত ও সীমাহীন রহমতের উপর ভরসা করে বলছি-
এখনো সময় আছে, গাফলত থেকে জেগে ওঠার, নতুন বোধ/উপলব্ধি/চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার এবং দ্বীন ও শরীয়তকে পরিপূর্ণ এবং প্রবল ভাবে আঁকড়ে ধরার।
এখন পাশ্চাত্য ও তাদের দোসরের সময় শেষ। তাদের পাশা উলটে গেছে। মুসলিম বিশ্বের এখন উচিত নয় নিজেকে ধোঁকা দেয়া এবং আত্মপ্রতারনায় ডুবে থাকা। কেননা আত্মপূজা ও আত্মস্বার্থ-চিন্তা এখন শুকনো কাঠ, যার রস শুকিয়ে গেছে, গোড়া উই পোকা খেয়ে ফেলেছে, ভঙ্গুর ধরেছে যেকোনো সময় পরে যাবে 'ধক্কা' আসুক আর না আসুক।
হে মুসলিম আবার জাগো! যে ভাবে পতনের যুগে জেগে উঠেছিলেন সালাউদ্দিন আইয়ূবি রহ. আবারও জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, প্রযুক্তি, অস্তশস্ত ও সমরবিদ্যায় পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। জীবন ও প্রয়োজনের প্রতিটি ক্ষেতে পাশ্চাত্যের নির্ভরতা থেকে সরে আসতে হবে এবং স্বনির্ভতা অর্জন করতে হবে। যেখান থেকে নিজেদের খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্হা করা যায়।
আমাদের কারখানার যন্ত্রপাতি, অস্ত্রশস্ত ও যুদ্ধ সরঞ্জাম আমাদেরকেই তৈয়ার করতে হবে। আমাদের সম্পদ আমরাই যেন আহরণ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করতে পারি। অর্থব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা ও তথ্যব্যবস্থা থেকে শুরু করে জীবনের সর্বব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ যেন নিজেদের হাতে নিতে পারি। সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলভাগে আমাদের নৌবহর, জাহাজ, ও ডুবোজাহাজ যেন প্রধান্য অর্জন করে। নিজেদের সীমান্ত ও জলসীমা যেন নিজেরাই পাহারা দিতে পারি।
আমাদের 'ঈগল' যেন আমাদের আকাশের সীমানায় ডানা ঝাপটাতে পারে। আমাদের রাডার যন্ত্রের চোখ যেন শত্রু বিমান ফাঁকি দিতে না পারে। আমাদের অর্থনীতি যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। আমাদের রপ্তানি যেন আমদানির উপরে থাকে। পশ্চিমের সুদী ঋনের বেড়াজাল থেকে পুরো মুসলিম বিশ্ব যেন বেড়িয়ে আসতে পারে। মুসলিমবিশ্বকে আর কখনো যেন কেনো শিবিরের লেজুড়বৃত্তির কলঙ্ক বহন করতে না হয়।
পরিশেষে, আরও একটা কাজ প্রত্যেক অভিভাবককে অপরিহার্য দায়িত্ব হিসেবে আদায় করতে হবে, আর তা হলো আমাদের নতুন প্রজন্মকে এলেম, আমল, প্রাতিষ্ঠানিক-জ্ঞান, বিজ্ঞান, কষ্ট, মোজাহাদা, আবদীয়াত, বন্দেগীয়াত, নিশিজাগরণ, শাহাদাতের তামান্না এবং সৈনিকের হাওয়ায় গড়ে তুলতে হবে। আর তখনই মুসলিমবিশ্ব পুনরায় বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হবে ইনশাআল্লাহ!
মুহাম্মাদ আলী
১৬ সফর, ১৪৪৩ হিঃ
রাত- ০৯:২২ মি.
'ভগবান রামের কাজ না করলে আমার শান্তি কিসে হবে?' রামচন্দ্রকে তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির আধার বলে উল্লেখ করেন। সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক ভাষনের আগে নরেন্দ্র মোদী ভূমি পূজা করে, রামমন্দিরের গর্ভগৃহে একটি রূপার ইট রেখে মন্দির নির্মাণের সূচনা করেন। নাউজুবিল্লাহ!
১৯৯২ সালের ৬ডিসেম্বর যখন এই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের ছায়ায়, বিজেপি, শিবসেনা ও অন্যান্য উগ্র হিন্দত্ববাদী অঙ্গসংগঠনের মাধ্যমে বাবরি মসজিদ 'ভেঙে' সাম্প্রদায়িক 'দাঙ্গা' বাধিয়ে হাজার হাজার মুসলিমকে শহীদ করে দেওয়া হয়, এবং শত শত মুসলিম নারীর...। না থাক, কথাটা বড় কষ্ট ও যন্ত্রণার।
একই কৌশলে গুজরাটেও হাজার হাজার মুসলিমকে আগুনে পুড়িয়ে মারারও মূল হোতা ছিলেন নরেন্দ্র মোদী।
নিকট অতীতে কাশ্মীরে যখন মোদীর ইশারায় পুনরায় মুসলিম নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, গুম, সম্ভ্রম লুণ্ঠন এবং বসতবাড়ি উচ্ছেদকরণের ধ্বংসযজ্ঞ দাবানলের মত জ্বলে উঠল। তখন পাকপ্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মীর ইসূতে 'চতুর' খেলোয়াড়ের মত রাজনৈতিক ময়দানে কখনো অগ্নিহুংকার ছাড়ে, আবার কখনো নীরব ভূমিকা পালন করে, ঠিক যেন আনাড়ি-দাবাড়ু। আর বাংলাদেশ পড়শী রাষ্ট্র হওয়ার পরেও তাদের কৃর্তি-কর্মের সাফাই গাইয়ে সমর্থন যুগিয়েছ।
আর মুসলিমবিশ্বের অভিভাবকদের কথা কী বলবো, তারা তো জাগ্রত নিদ্রায় বিভোর! 'ঠিক যেন বধির, তবে কখনো কখনো শুকনো ঠোঁট দুটো নাড়িয়ে বলে, এগুলো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আরো একটু আগে বাড়িয়ে আরব আমিরাত নরেন্দ্র মোদীকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার 'অর্ডার অব যাহেদ মেডেল' প্রদান করে যুবরাজ বিন যায়েদ নিজেই।
আর হারামাইনের খাদেমরা মদের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে স্বপ্নের মত সব কিছু রঙিন দেখছে, আর প্রলাপ বকছে। নিজেদের আত্মপরিচয় ভুলে গিয়ে, পশ্চাত্যের আধুনিক জাহেলিয়াত, ভোগবাদী, বস্তুবাদী, জাতীয়তাবাদী, সাম্যবাদ ও জায়নবাদের বিষাক্ত ছোবলে দ্বীন থেকে দূরে সরে গেছে। আর এই ব্যাধি মূলত দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী ধরে সংক্রমিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক আরো খতরনাক হলো পাচ্য ও সারা মুসলিমবিশ্ব এখন জ্ঞানের সকল শাখায় পাশ্চাত্যের 'সুবোধ' ছাত্র এবং পশ্চিমের দস্তরখানের উচ্ছিষ্টভোজী। একটু ছাড় দিয়ে বলা যায় 'অনাহুত ও অনাদৃত মেহমান'।
জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, প্রযুক্তি, অস্ত্রশস্ত, সমরবিদ্যা, অর্থব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা ও রাজনৈতিক কুশলতা একটি দেশের 'হৃদপিণ্ড' অথচ আরব বা আজম কোনো মুসলিম দেশ (ইল্লা আফগানিস্তান ও মুজাহিদের নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকা ছাড়া, আল্লাহ! তাদেরকে আমান ও হেফজ করুক। আমীন!) পাশ্চাত্যের ধাঁচ বা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে নয়। যতদিন তারা আমাদের বুদ্ধিজীবি এবং সমরনেতাদের 'মগজ ধোলাই' করবে ততোদিন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা দূরের কথা, তাদের চোখে চোখ রাঙিয়ে কথা বলার হিম্মত পাবে না।
তাইতো, আমরা দেখতে পাই এখনো মুসলিম জনপদে খুন ঝরে মুসলিম অস্ত্র দ্বারা, মুসলিম নারী সম্ভ্রম হারায় মুসলিম সেনা দ্বারা, আর শয়তান হাসে হায়েনার হাসি। একটু থামুন! গভীর ভাবে চিন্তা করে হৃদয়দর্পণে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন যে, এইটা মুসলমানদের কত বড় জখম ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। এখন মুসলিম উম্মাহর এর থেকে পরিত্রাণ ও পরিত্রাণের দাওয়াহ্* অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু না, এখনো মুসলিম উম্মাহ্* মদের পেয়ালা, পানশালা, নাচশালা, ঘুমের বড়ি সেবন করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে আর এই দিকে 'লাওয়ারিশ' সম্পদের মতো আমাদের সকল ভূখণ্ডগুলোকে নিয়ে আমাদের জাতি শত্রুরা ভাগ-বাটোয়ারায় মহা ব্যস্ত।
হে মুসলিম জাগো! আর গাফলতির চাদর গায়ে মুড়িয়ো না, তানা হলে খুব সহজ লোকমায় গিলে ফেলবে তোমাদের। এখন চোখে অশ্রু আসে না, আর তখন কাঁদতে কাঁদতে চোখ থেকে খুন ঝরিয়েও কোনো লাভ হবে না। এখনো সময় আছে গাফলত ছেড়ে স্বপ্নের ঘোর থেকে জেগে উঠার, কিন্তু বাস্তবতা এই যে, সময় অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। জাহেলিয়াত এখন এতই মোটাতাজা ও দৈত্যাকার ধারণ করেছে এবং আমাদের দুর্বলতা ও কমজোরি এতই বেড়ে গেছে যে, এখন আর মোকাবিলায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তবে আল্লাহর কুদরতের কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই। আর আল্লাহ! কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন (অপরাধী, কিন্তু অনুতপ্ত) মুমিনকে তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হতে। সুতরাং আল্লাহর অসীম কুদরত ও সীমাহীন রহমতের উপর ভরসা করে বলছি-
এখনো সময় আছে, গাফলত থেকে জেগে ওঠার, নতুন বোধ/উপলব্ধি/চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার এবং দ্বীন ও শরীয়তকে পরিপূর্ণ এবং প্রবল ভাবে আঁকড়ে ধরার।
এখন পাশ্চাত্য ও তাদের দোসরের সময় শেষ। তাদের পাশা উলটে গেছে। মুসলিম বিশ্বের এখন উচিত নয় নিজেকে ধোঁকা দেয়া এবং আত্মপ্রতারনায় ডুবে থাকা। কেননা আত্মপূজা ও আত্মস্বার্থ-চিন্তা এখন শুকনো কাঠ, যার রস শুকিয়ে গেছে, গোড়া উই পোকা খেয়ে ফেলেছে, ভঙ্গুর ধরেছে যেকোনো সময় পরে যাবে 'ধক্কা' আসুক আর না আসুক।
হে মুসলিম আবার জাগো! যে ভাবে পতনের যুগে জেগে উঠেছিলেন সালাউদ্দিন আইয়ূবি রহ. আবারও জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, প্রযুক্তি, অস্তশস্ত ও সমরবিদ্যায় পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। জীবন ও প্রয়োজনের প্রতিটি ক্ষেতে পাশ্চাত্যের নির্ভরতা থেকে সরে আসতে হবে এবং স্বনির্ভতা অর্জন করতে হবে। যেখান থেকে নিজেদের খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্হা করা যায়।
আমাদের কারখানার যন্ত্রপাতি, অস্ত্রশস্ত ও যুদ্ধ সরঞ্জাম আমাদেরকেই তৈয়ার করতে হবে। আমাদের সম্পদ আমরাই যেন আহরণ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করতে পারি। অর্থব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা ও তথ্যব্যবস্থা থেকে শুরু করে জীবনের সর্বব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ যেন নিজেদের হাতে নিতে পারি। সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলভাগে আমাদের নৌবহর, জাহাজ, ও ডুবোজাহাজ যেন প্রধান্য অর্জন করে। নিজেদের সীমান্ত ও জলসীমা যেন নিজেরাই পাহারা দিতে পারি।
আমাদের 'ঈগল' যেন আমাদের আকাশের সীমানায় ডানা ঝাপটাতে পারে। আমাদের রাডার যন্ত্রের চোখ যেন শত্রু বিমান ফাঁকি দিতে না পারে। আমাদের অর্থনীতি যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। আমাদের রপ্তানি যেন আমদানির উপরে থাকে। পশ্চিমের সুদী ঋনের বেড়াজাল থেকে পুরো মুসলিম বিশ্ব যেন বেড়িয়ে আসতে পারে। মুসলিমবিশ্বকে আর কখনো যেন কেনো শিবিরের লেজুড়বৃত্তির কলঙ্ক বহন করতে না হয়।
পরিশেষে, আরও একটা কাজ প্রত্যেক অভিভাবককে অপরিহার্য দায়িত্ব হিসেবে আদায় করতে হবে, আর তা হলো আমাদের নতুন প্রজন্মকে এলেম, আমল, প্রাতিষ্ঠানিক-জ্ঞান, বিজ্ঞান, কষ্ট, মোজাহাদা, আবদীয়াত, বন্দেগীয়াত, নিশিজাগরণ, শাহাদাতের তামান্না এবং সৈনিকের হাওয়ায় গড়ে তুলতে হবে। আর তখনই মুসলিমবিশ্ব পুনরায় বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হবে ইনশাআল্লাহ!
মুহাম্মাদ আলী
১৬ সফর, ১৪৪৩ হিঃ
রাত- ০৯:২২ মি.