বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি দিনদিন উত্তপ্ত থেকে উত্তপ্ততর হয়ে উঠছে।
বিশ্ব-রাজনীতিতে মধ্যপ্রাচ্যর পরে ভারতীয় উপমহাদেশ হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান বিশ্বে ইসরাইলের (আমেরিকা) জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের মিসাইল রেন্জের মধ্যে ইসরাইলের অবস্থান আছে। পাকিস্তান একমাত্র মুসলিম পারমানবিক ক্ষমতাশীল দেশ যারা চাইলেই যেকোনো মুহূর্তেই ইসরাইল কে ধ্বংস করে দিতে পারে, এটা ইসরাইল ভালো করেই জানে। কৌশলগত কারণে তারা সেটা প্রকাশ করে না এবং সবার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য এরা কখনো বলে ইরান তাদের জন্য হুমকি আবার কখনো বলে আমেরিকা তাদের জন্য হুমকি।
পাকিস্তানকে অনেক কৌশলে মোকাবেলা করা হচ্ছে। তাই আমার মনে হয়না এই মুহূর্তে এই ভাবে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে।ইন্ডিয়া কখনো সাহস করবে না পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। ইন্ডিয়া চাইবে ইসরাইল অথবা অন্য কোন শক্তি ব্যবহার করে পাকিস্তানের পারমানবিক ক্ষমতাকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে তারপর যেন সর্বাত্মক হামলা চালানো যায়।
ভারতীয় উপমহাদেশঃ-
ভারতীয় উপমহাদেশ এশিয়া তথা ইউরেশিয়া মহাদেশের একটি অঞ্চল, যা হিমালয়ের দক্ষিণে ভারতীয় টেকটনিক পাতের উপর অবস্থিত এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত প্রসারিত এক সুবিশাল ভূখণ্ডের উপর বিদ্যমান। এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলি হল বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী এক দশকে বিশ্ব অর্থনীতির মূল কেন্দ্রস্থল হবে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়া। এর সঙ্গে রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিরও পরিবর্তন ঘটবে। বিশ্ব নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায়।
স্বভাবতই সকল বিশ্বশক্তিই এই এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে। এরজন্য তাদেরকে হয় ইন্ডিয়া অথবা চিনকে (পাকিস্তান) সমর্থন করতে হবে। এতদিন আমেরিকা বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে পাকিস্তান কে নিভির পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছিলো কিন্তু পাকিস্তান তাদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে এখন চীনের সাথে যোগ দিয়েছে। রাশিয়াও মুরব্বিদের মত আচরণ করছে, সরাসরি কাউকে সমর্থন দিচ্ছে না।
পাক-ভারত যুদ্ধে হলে তা সমস্ত উপমহাদেশে ছড়িয়ে পরবে। পাকিস্তান হয়তো চীন, তুর্কি, সৌদি, রাশিয়া থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। ইন্ডিয়া হয়তো ইসরাইল, আমেরিকা, জাপান, ইরান থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। আর বাংলাদেশ হয়তো চীন ছাড়া কারো কাছ থেকেই সহযোগিতা পাবে না। চীন থেকে সহযোগিতা পাওয়ার আশাও খুব কম কারণ বাংলাদেশ তিনদিক থেকেই ইন্ডিয়া পরিবেষ্টিত।
★★★বাংলাদেশের ভূমিকাঃ-
বাংলাদেশ ভৌগলিক ও সামুদ্রিক কারণে ভারতের কাছে যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটা গুরুত্বপূর্ণ চীনের কাছেও। পাক-ভারত যুদ্ধ হলে চীন ভারত উভয়ই চাইবে বাংলাদেশে গ্রাউন্ড ফোর্স পাঠাতে। কৌশলগত দিক থেকে বাংলাদেশ যাদের নিয়ন্ত্রনে থাকবে তারা অনেক সুবিধা পাবে। যদি ইন্ডিয়া বাংলা দখল করে তাহলে চীন চাইবে শিলিগুরি করিডর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে।
ইন্ডিয়া তাই চীনকে (+বাংলাদেশ) ঠেকানোর জন্য আসামে গোপনে নিউক্লিয়ার ব্যাস তৈরি করছে এবং এই অঞ্চলে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বহর সহ সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে।
ইন্ডিয়ানরা বলে থাকে যে তাদের শুধু বাংলাদেশ দরকার বাংলাদেশের জনগণকে নয়। কেউ যদি মনে করে তাদের সাথে আপোষ করে থাকবে তাহলে ভুল মনে করবে। কারণ তারা কাউকে ছাড়বে না, প্রথমে তারা ইসলামিস্টদের মারবে তারপর মোডারেটদের তারপর দালালদের। তারা সকল মুসলিমদের শেষ করে দিবে। তাই বাংলাদেশীদের উচিৎ হবে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গরে তোলা।
★★★অখণ্ড ভারতঃ-
অখণ্ড ভারত হচ্ছে ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদশ, নেপাল, ভুটান ও শ্রিলংকা নিয়া একটি একক ও বৃহৎ রাষ্ট্র স্থাপনের মহাপরিকল্পনা।
অখন্ড ভারতের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু। অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করা হিন্দুস্থানীয়দের আদর্শিক স্বপ্ন, আর সেটা বাস্তবায়ন করতে তারা সেই ১৯৪৬ সাল থেকেই গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস), বজরং, শিব সেনা এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মতো মূলস্রোতের ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলো ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সমন্বয়ে একটি অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের দাবি উত্থাপন করছে।
অখন্ড ভারতের ধারণা হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত আবেগময় এবং তাদের অস্তিত্বের অংশ।
★★★গাজওয়াতুল হিন্দঃ-
গাজওয়াতুল হিন্দ হল রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক ভবিষ্যদ্বাণীতে বর্ণীত ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম ও মুশিরকদের মধ্যে ভবিতব্য চূড়ান্ত যুদ্ধ।
“গাযওয়া” অর্থ যুদ্ধ, আর “হিন্দ” বলতে এই উপমহাদেশ তথা পাক-ভারত-বাংলাদেশসহ মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটানকে বুঝায়। এবং বর্তমানে এই অঞ্চলের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আমাদেরকে সেই গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
মুসলিমরা গাযওয়া ই হিন্দ নিয়ে চিন্তা ভাবনা না করলেও ইহুদি মুসরিকরা কিন্তু বিস্তর গবেষণা করছে। গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কিত কিছু হাদিস নিচে দেওয়া হল, উল্লেখ্য যে হাদিসগুলোকে সহিহ(বিশুদ্ধ) হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
***
হযরত সা্ওবান (রাঃ) এর হাদিস-
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আজাদকৃত গোলাম হযরত সা্ওবান (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে’। (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
***
আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,
তিনি বলেনঃ “আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”। (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
***
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/ বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে । এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন)। এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ) কে শাম দেশে (বর্তমান সিরিয়ায়) পাবে”।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,
“আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আঃ) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সাঃ)! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আঃ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন সাহাবী”।
বর্ণনাকারী বলেন যে, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’। (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯) – [মুসনাদে আহমাদ, আস সুনান আল মুজতাবা ,আস সুনান আল কুবরা, আল মজাম আল অস্ত, আল জাম্য আল কাবীর]
+++++
রাসুলুল্লাহ(সঃ) এর কথা অনুযায়ী খোরাসান (বর্তমান আফগানিস্তান) থেকে কালিমাখচিত কালোপতাকাধারীদের উত্থান এবং তাদের কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া, পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ভারতের কাশ্মীর সীমান্তে ৭ লক্ষ সেনা মোতায়েন, পাক-ভারত-বাংলাদেশের হকপন্থী ইসলামী দলগুলোর আলোচনায় উঠে আসা, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুসলিমদের নির্যাতন নিয়ে ভারতের ভেতরে মুসলিমদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, সেভেন সিস্টারস তথা ভারতের ৭ টি অঙ্গরাজ্যের স্বাধীনতার দাবি নিঃসন্দেহে গাজওয়াতুল হিন্দ এর ইঙ্গিত বহন করে।
এই সময় হইত পাক-ভারত-বাংলাদেশের মুসলিম নামধারী মুনাফিকরা আলাদা হয়ে যাবে। তারা হয়তো কাফিরদের পক্ষে যোগ দিবে অথবা পালিয়ে বেড়াবে। এবং এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে মুসলিমরা জয়ী হবে এবং তারা বায়তুল মুকাদ্দাস (বর্তমান ফিলিস্তিন) এ গিয়ে ঈসা (আঃ) এর সাথে মিলিত হবে এবং খিলাফাত প্রতিষ্ঠা করবে।
আল্লাহ-সুবহান ওয়া তা’লা বলেন, হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন। (Al- Anfaal: 65)
:
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (Al-Baqara: 190)
:
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করছে আল্লাহ্ তাদের ওয়াদা করছেন যে, তিনি নিশ্চয়ই তাদের পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের যারা ছিল এদের পূর্ববর্তী, আর অবশ্যই তিনি তাদের জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের ধর্ম যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন, আর নিশ্চয়ই তাদের ভয়-ভীতির পরে তাদের জন্যে বদলে আনবেন নিরাপত্তা। তারা আমারই এবাদত করবে, আমার সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করবে না। আর যে কেউ এর পরে অকৃতজ্ঞতা দেখাবে — তাহলে তারা নিজেরাই হচ্ছে সীমা-লংঘনকারী। (An-Noor: 55)
(COLLECTED)
বিশ্ব-রাজনীতিতে মধ্যপ্রাচ্যর পরে ভারতীয় উপমহাদেশ হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান বিশ্বে ইসরাইলের (আমেরিকা) জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের মিসাইল রেন্জের মধ্যে ইসরাইলের অবস্থান আছে। পাকিস্তান একমাত্র মুসলিম পারমানবিক ক্ষমতাশীল দেশ যারা চাইলেই যেকোনো মুহূর্তেই ইসরাইল কে ধ্বংস করে দিতে পারে, এটা ইসরাইল ভালো করেই জানে। কৌশলগত কারণে তারা সেটা প্রকাশ করে না এবং সবার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য এরা কখনো বলে ইরান তাদের জন্য হুমকি আবার কখনো বলে আমেরিকা তাদের জন্য হুমকি।
পাকিস্তানকে অনেক কৌশলে মোকাবেলা করা হচ্ছে। তাই আমার মনে হয়না এই মুহূর্তে এই ভাবে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে।ইন্ডিয়া কখনো সাহস করবে না পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। ইন্ডিয়া চাইবে ইসরাইল অথবা অন্য কোন শক্তি ব্যবহার করে পাকিস্তানের পারমানবিক ক্ষমতাকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে তারপর যেন সর্বাত্মক হামলা চালানো যায়।
ভারতীয় উপমহাদেশঃ-
ভারতীয় উপমহাদেশ এশিয়া তথা ইউরেশিয়া মহাদেশের একটি অঞ্চল, যা হিমালয়ের দক্ষিণে ভারতীয় টেকটনিক পাতের উপর অবস্থিত এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত প্রসারিত এক সুবিশাল ভূখণ্ডের উপর বিদ্যমান। এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলি হল বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী এক দশকে বিশ্ব অর্থনীতির মূল কেন্দ্রস্থল হবে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়া। এর সঙ্গে রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিরও পরিবর্তন ঘটবে। বিশ্ব নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায়।
স্বভাবতই সকল বিশ্বশক্তিই এই এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে। এরজন্য তাদেরকে হয় ইন্ডিয়া অথবা চিনকে (পাকিস্তান) সমর্থন করতে হবে। এতদিন আমেরিকা বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে পাকিস্তান কে নিভির পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছিলো কিন্তু পাকিস্তান তাদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে এখন চীনের সাথে যোগ দিয়েছে। রাশিয়াও মুরব্বিদের মত আচরণ করছে, সরাসরি কাউকে সমর্থন দিচ্ছে না।
পাক-ভারত যুদ্ধে হলে তা সমস্ত উপমহাদেশে ছড়িয়ে পরবে। পাকিস্তান হয়তো চীন, তুর্কি, সৌদি, রাশিয়া থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। ইন্ডিয়া হয়তো ইসরাইল, আমেরিকা, জাপান, ইরান থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। আর বাংলাদেশ হয়তো চীন ছাড়া কারো কাছ থেকেই সহযোগিতা পাবে না। চীন থেকে সহযোগিতা পাওয়ার আশাও খুব কম কারণ বাংলাদেশ তিনদিক থেকেই ইন্ডিয়া পরিবেষ্টিত।
★★★বাংলাদেশের ভূমিকাঃ-
বাংলাদেশ ভৌগলিক ও সামুদ্রিক কারণে ভারতের কাছে যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটা গুরুত্বপূর্ণ চীনের কাছেও। পাক-ভারত যুদ্ধ হলে চীন ভারত উভয়ই চাইবে বাংলাদেশে গ্রাউন্ড ফোর্স পাঠাতে। কৌশলগত দিক থেকে বাংলাদেশ যাদের নিয়ন্ত্রনে থাকবে তারা অনেক সুবিধা পাবে। যদি ইন্ডিয়া বাংলা দখল করে তাহলে চীন চাইবে শিলিগুরি করিডর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে।
ইন্ডিয়া তাই চীনকে (+বাংলাদেশ) ঠেকানোর জন্য আসামে গোপনে নিউক্লিয়ার ব্যাস তৈরি করছে এবং এই অঞ্চলে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বহর সহ সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে।
ইন্ডিয়ানরা বলে থাকে যে তাদের শুধু বাংলাদেশ দরকার বাংলাদেশের জনগণকে নয়। কেউ যদি মনে করে তাদের সাথে আপোষ করে থাকবে তাহলে ভুল মনে করবে। কারণ তারা কাউকে ছাড়বে না, প্রথমে তারা ইসলামিস্টদের মারবে তারপর মোডারেটদের তারপর দালালদের। তারা সকল মুসলিমদের শেষ করে দিবে। তাই বাংলাদেশীদের উচিৎ হবে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গরে তোলা।
★★★অখণ্ড ভারতঃ-
অখণ্ড ভারত হচ্ছে ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদশ, নেপাল, ভুটান ও শ্রিলংকা নিয়া একটি একক ও বৃহৎ রাষ্ট্র স্থাপনের মহাপরিকল্পনা।
অখন্ড ভারতের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু। অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করা হিন্দুস্থানীয়দের আদর্শিক স্বপ্ন, আর সেটা বাস্তবায়ন করতে তারা সেই ১৯৪৬ সাল থেকেই গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস), বজরং, শিব সেনা এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মতো মূলস্রোতের ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলো ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সমন্বয়ে একটি অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের দাবি উত্থাপন করছে।
অখন্ড ভারতের ধারণা হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত আবেগময় এবং তাদের অস্তিত্বের অংশ।
★★★গাজওয়াতুল হিন্দঃ-
গাজওয়াতুল হিন্দ হল রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক ভবিষ্যদ্বাণীতে বর্ণীত ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম ও মুশিরকদের মধ্যে ভবিতব্য চূড়ান্ত যুদ্ধ।
“গাযওয়া” অর্থ যুদ্ধ, আর “হিন্দ” বলতে এই উপমহাদেশ তথা পাক-ভারত-বাংলাদেশসহ মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটানকে বুঝায়। এবং বর্তমানে এই অঞ্চলের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আমাদেরকে সেই গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
মুসলিমরা গাযওয়া ই হিন্দ নিয়ে চিন্তা ভাবনা না করলেও ইহুদি মুসরিকরা কিন্তু বিস্তর গবেষণা করছে। গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কিত কিছু হাদিস নিচে দেওয়া হল, উল্লেখ্য যে হাদিসগুলোকে সহিহ(বিশুদ্ধ) হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
***
হযরত সা্ওবান (রাঃ) এর হাদিস-
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আজাদকৃত গোলাম হযরত সা্ওবান (রাঃ) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে’। (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
***
আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,
তিনি বলেনঃ “আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”। (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
***
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/ বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে । এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন)। এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ) কে শাম দেশে (বর্তমান সিরিয়ায়) পাবে”।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,
“আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আঃ) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সাঃ)! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আঃ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন সাহাবী”।
বর্ণনাকারী বলেন যে, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’। (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯) – [মুসনাদে আহমাদ, আস সুনান আল মুজতাবা ,আস সুনান আল কুবরা, আল মজাম আল অস্ত, আল জাম্য আল কাবীর]
+++++
রাসুলুল্লাহ(সঃ) এর কথা অনুযায়ী খোরাসান (বর্তমান আফগানিস্তান) থেকে কালিমাখচিত কালোপতাকাধারীদের উত্থান এবং তাদের কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া, পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ভারতের কাশ্মীর সীমান্তে ৭ লক্ষ সেনা মোতায়েন, পাক-ভারত-বাংলাদেশের হকপন্থী ইসলামী দলগুলোর আলোচনায় উঠে আসা, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুসলিমদের নির্যাতন নিয়ে ভারতের ভেতরে মুসলিমদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, সেভেন সিস্টারস তথা ভারতের ৭ টি অঙ্গরাজ্যের স্বাধীনতার দাবি নিঃসন্দেহে গাজওয়াতুল হিন্দ এর ইঙ্গিত বহন করে।
এই সময় হইত পাক-ভারত-বাংলাদেশের মুসলিম নামধারী মুনাফিকরা আলাদা হয়ে যাবে। তারা হয়তো কাফিরদের পক্ষে যোগ দিবে অথবা পালিয়ে বেড়াবে। এবং এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে মুসলিমরা জয়ী হবে এবং তারা বায়তুল মুকাদ্দাস (বর্তমান ফিলিস্তিন) এ গিয়ে ঈসা (আঃ) এর সাথে মিলিত হবে এবং খিলাফাত প্রতিষ্ঠা করবে।
আল্লাহ-সুবহান ওয়া তা’লা বলেন, হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন। (Al- Anfaal: 65)
:
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (Al-Baqara: 190)
:
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করছে আল্লাহ্ তাদের ওয়াদা করছেন যে, তিনি নিশ্চয়ই তাদের পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের যারা ছিল এদের পূর্ববর্তী, আর অবশ্যই তিনি তাদের জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের ধর্ম যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন, আর নিশ্চয়ই তাদের ভয়-ভীতির পরে তাদের জন্যে বদলে আনবেন নিরাপত্তা। তারা আমারই এবাদত করবে, আমার সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করবে না। আর যে কেউ এর পরে অকৃতজ্ঞতা দেখাবে — তাহলে তারা নিজেরাই হচ্ছে সীমা-লংঘনকারী। (An-Noor: 55)
(COLLECTED)
Comment