তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতিঃ
গত কয়েকদিন আগে আপনারা জেনেছেন রাশিয়া তার দেশের প্রায় ৪ কোটি নাগরিকদের ট্রেনিং করিয়েছে ৩য় বিশ্ব যুদ্ধে কিভাবে নিজেকে সেফ করে রাখবে, এবং তাদের জন্য মাথা পিছু খাদ্য ও বরাদ্দ করা আছে। তলে তলে পরাশক্তি গুলো ঠিকই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, তাহলে আমরা অজ্ঞ থাকবো কোন ভরসায়। আমার বিশ্বাস '৭১ সালে যদি আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি থাকতো, তবে আমাদের ক্ষয় ক্ষতি এত ব্যপক হতো না। তাই আরেকটি ভুল আমরা করতে চাই না।
এই পোষ্ট তাদের জন্য নয়, যারা মনে করেন
# আসহাবে কাহাফগন কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই কেবল মাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে নগর থেকে বের হয়ে গিয়ে ছিলেন, অত:পর আল্লাহই তাদের রক্ষা করেছেন।
# মূসা (আ) কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই তার অনুসারীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন, অত:পর আল্লাহই তাদেরকে রক্ষা করেছেন।
সুতরাং ৩য় বিশ্ব যুদ্ধের জন্য এত চিন্তা গবেষনা বা পেরেশান, প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তাহলে আপনারা বাকি টুকু পড়ে সময় নষ্ট করবেন না pls
এই পোষ্ট তাদের জন্য, যারা মনে করেন
# ইউসুফ (আ) দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করার জন্য ৭ বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। খাদ্য গুদামজাত করার ব্যবস্থা করেছেন।
# নূহ(আ) বিপর্যয়ের আগেই নৌকা তৈরী করে রেখেছেন।
# রাসূল (সা) সাধ্যমত প্রস্তুতি নিয়েই বদরের ময়দানে হাজির হয়েছেন।
সুতরাং আমাকেও সাধ্যমতো প্রস্তুতি নিতে হবে।
এক দিকে সিরিয়ায় শুরু হতে যাওয়া ৩য় বিশ্ব যুদ্ধ যা ক্রমান্বয়ে সারা পৃথিবীতে দূত ছড়িয়ে পড়বে, আবার ভৌগলিক ভাবে আমরা এমন একটি এলাকায় বসবাস করি যারা মোকাবেলা করবো গাজওয়ায়ে হিন্দ। সুতরা আমাদের প্রস্তুতিটাও হতে হবে এই উভয় সংকট মাথায় রেখে। প্রস্তুতিটাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিলে বুঝতে ও পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে।
ক, আধ্যাত্নিক প্রস্তুতি
খ, শারীরিক প্রস্তুতি
গ, মানসিক প্রস্তুতি
ঘ, অর্থনৈতিক ও খাদ্য প্রস্তুতি
## ক, আধ্যাত্নিক প্রস্তুতিঃ-
এ যুদ্ধে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ মানে অর্ধেকেরও বেশী বিলুপ্ত হবার আশংকা রয়েছে, তাই ধরে নিবেন আপনিও তাদের মধ্যে একজন। আর যদি বেঁচেও যান তবুও নিচের প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। আশা করি কল্যানের পথে ধাবিত হবেন।
১, মুসলিম হওয়ার জন্য কোরআন হাদীসে যে সব শর্ত বা বৈশিষ্টের কথা বলা হয়েছে তা পুরপুরি মেনে চলার চেষ্টা করুন।
২, সকল ফরজ গুলোর ব্যপারে কঠোর যত্নবান হোন।
৩, যতটুকু সম্ভব কোরআন মুখস্থ করুন।
(ন্যূনতম নামাজের জন্য যতটুকু প্রয়োজনীয়, সাথে সূরা কাহাফ এর ১ম ও শেষ ১০ আয়াত। এবং জরুরী দোয়া সমূহ।)
৪, সকলের সাথে পাওনা,দেনা মিটিয়ে ফেলুন।
৫, ভূল ত্রুটি বা কারো সাথে ঝগড়া মনোমালিন্য থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিন। বেশী করে তাওবা, এস্তেগফার করুন।
৬, প্রতিদিন কোরআন হাদীস অধ্যায়ন করুন, যতটুকু সম্ভব।
৭, কোরআন, হাদীস, তাফছির সহ গুরুত্বপূর্ন কিছু বই এর হার্ড কপি নিজের কাছে, বাড়ির সবচেয়ে নিরাপদ এবং গোপন জায়গায় সংরক্ষন করুন।
৮, সিনেমা, গান, নাটক, অসৎ সঙ্গ পরিহার করুন।
৯, আপনার পরিবার, নিকট আত্নিয়দের এসব ব্যপারে সতর্ক করুন।
## ( খ)শারীরিক প্রস্তুতিঃ-
১, সব রকমের GMO food পরিত্যাগ করুন।
২, এলোপ্যাথি ঔষধ বর্জন করুন।
৩, ভেষজ ঔষধ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন।
৪, নিয়মিত শরীরচর্চা, বিশেষ করে দৌড়ানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি করুন।
৫, কমন রোগ যেমন গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস, জ্বর, মাথা-ব্যথা, সর্দি এসবের জন্য ভেসজ ঔষধগুলো বাড়িতে সংরক্ষন করুন।
৬, বাড়িতে টিউবওয়েল বা চাপ কল বসান, সাপ্লাই পানির উপর নির্ভরতা ১০০% কমিয়ে ফেলুন।
৭, কমপক্ষে ২ বছরের জন্য সাবান, ব্যান্ডেজ, সেভলন, ব্লেড, সুই, সুতা, দিয়াশলাই, মোমবাতি, ব্যাটারি চালিত টর্চ লাইট ও ব্যাটারি ক্রয় করে রাখুন।
৮, জ্বালানী বিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদন করার চেষ্টা করুন।
৯, পরিবারের সবার জন্য কমপক্ষে ২ টি করে রেইন কোট, পর্যাপ্ত শীতের ভারি জামা, ও জরুরী জামা কাপড় ক্রয় করে রাখুন। শূন্য ডিগ্রি বা মাইনাস তাপমাত্রার উপযোগী পোশাক সংগ্রহ করুন।
১০, পরিবারের সকলের জন্য ফিউম মাক্স বা গ্যাস মাক্স ১ টি করে এবং ডাষ্ট মাক্স পর্যাপ্ত পরিমানের সংগ্রহ করে রাখুন।
১১, বসবাস করার জন্য যে কোন শহর, বন্দর ত্যাগ করুন। যত অজো পাড়া গাঁ হবে ততই ভালো। উত্তম হবে পাহাড়ী এলাকা ও প্রাকৃতিক ঝর্না বা অধিক বৃষ্টি হয় এমন এলাকা। বেশী জনবসতি এলাকা পরিহার করুন। (ঢাকা-চিটাগং সহ বিভাগীয় সিটির ভাই বোনদের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইলো)
১২, যারা একত্রে বসবাস করবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন ও হাতের কাছেই কোথাও লুকিয়ে রাখুন।
১৩, সকল পুরুষ সদস্য একত্রে ঘুমাতে বা কোথাও সফরে যাবেন না। গ্রুপ করে পালাক্রমে পাহারা দিন।
১৪, আশে পাশের জনপদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বাইসাইকেল সংগ্রহ করুন। দ্রুত যোগাযোগ করার পদ্বতি আবিস্কার করার চেষ্টা করুন।
১৫, ক্ষুধা তৃষ্ণা সহ্য করার অভ্যাস করুন।
১৬, মাটির নিচে ঘর তৈরী করুন, বাড়ি থেকে সহজে বের হওয়ার পথ তৈরী করে রাখুন।
১৭, তাবু তৈরী করার সরন্জাম ব্যবস্থা করুন।
১৮, আপনার এলাকার অবসর প্রাপ্ত বা কর্তব্যরত ডিফেন্স বাহিনীর সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষন গ্রহন করুন।
১৯, পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করার চেষ্টা করুন।
২০, যদি সমস্যা না হয় স্থানীয় আইন প্রশাসন বা জন প্রতিনিধিদের কাছে বিষয়টি বুঝিয়ে অনুমতি নিয়ে নিন।
## (গ)মানসিক প্রস্তুতিঃ-
১, এ যুদ্ধের শুরুতেই সারা পৃথিবীর ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হতে পারে । ফলে, দেশে-বিদেশে থাকা আত্নিয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এমন কি পরিবারের কেউ যদি প্রবাসে থাকে তার সাথে চিরদিনের মতো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে তার জন্য প্রস্তুুত হোন।
২, বৈদেশিক বানিজ্য ও লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকৃত পন্য, বিদেশে উৎপাদিত জরুরী ঔষধ, ও যন্ত্রপাতি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে, আপনার কাছের মানুষজন যারা ঐ সব ঔষধের উপর ডিপেন্ডেন্ডেট তারা চিকিৎসাহীনতায় ভূগবে। এবং ইমারজেন্সি রোগীরা এক পর্যায়ে মারা যাবে, তার জন্যও প্রস্তুুত হোন।
৩, চারিদিকে মৃত্যু, লাশ আর নানান ধরনের অঘটন শুনতে পাবেন, যা এখন কল্পনাতেও আসে না, এমন পরিস্থিতি জন্য মনকে শক্ত করুন।
৪, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিশপত্রের তীব্র সংকট শুরু হবে..... চাল, ডাল, তেল, লবন ইত্যাদি। আপনার কাছে টাকা থাকবে হাজার হাজার কিন্তুু ঐ টাকার বিনিময়েও আপনি জিনিস পত্র কিনতে পারবেন না। ফলে পারিবারিক খাদ্য সংকট কিভাবে সামাল দিবেন সে চিন্তা করুন, মনকে শক্ত রাখুন, কারন এ সময় ভেঙ্গে পরলে বাকিরাও টিকতে পারবে না।
৫, হয়তো নিজ পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য মারা যাবে, আহত হবে, অসুস্থ হয়ে পড়বে, নিখোঁজ হয়ে যাবে এসবের জন্যও মনকে প্রস্তুুত রাখুন।
৬, এ জাতীয় যে কোন সমস্যাই আসুক না কেন আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফেল হওয়া যাবে না, মনে রাখতে হবে এই দুনিয়াটাই পরীক্ষা ক্ষেত্র, এ ধরনের বিপদাপদ দিয়ে, আল্লাহ আসলে আমাদের যাচাই করছেন। আমরা জান্নাতের যোগ্য কি না।
৭, প্রচন্ড অভাবের তাড়নায় আপনার বাড়িতে লুটপাট হতে পারে, হিংস্র হয়ে উঠতে পারে আশোপাশের মানুষ গুলো। তাই আসন্ন পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে আপনার প্রতিবেশীদের এখনি বোঝান। তাদের নিয়েই পরিকল্পনা করুন। যতটা সফল হবেন, পরবর্তীতে ততটাই নিরাপদ থাকতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আত্নিয়-স্বজনরাও গ্রুপ ভাবে বসবাস শুরু করতে পারেন।
৮, ভৌগলিক ভাবে আমরা বসবাস করছি গাজওয়ায়ে হিন্দের মাঝামাঝি এলাকায়, সুতরাং শত্রু পক্ষ থেকে আক্রান্ত হওয়া প্রায় নিশ্চিত, আক্রান্ত হলে প্রতিরোধ করা সকল দেশে সকল ধর্মে সকল আইনেই বৈধ। সুতরাং প্রতিরোধ করার মতো মানসিক প্রস্তুতি নিন।
৯, জরুরী প্রয়োজনে তাতক্ষনিক ভাবে বাসস্থান পরিবর্তন করতে হতে পারে, হিজরত করার দরকার পড়তে পারে, আবার এমনও হতে পারে অন্য এলাকা থেকে আপনার এলাকায় লোকজন নিরাপত্তা বা আশ্রয়ের জন্য ছুটে আসতে পারে। সুতরাং মুহাজির বা আনসার দুটোর জন্যই আবু বকর (রা) এর মতো প্রস্তুত থাকুন।
## (ঘ) অর্থনৈতিক ও খাদ্যের প্রস্তুতিঃ-
১, নিজের খাদ্য নিজেই উৎপাদন করুন। ধান, গম, আলু, শাক সবজি ইত্যাদি। কৃষিকাজের মাধ্যমে।
২, মাছ চাষ করুন।
৩, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণঃ- গবাদী পশু পালন করুন (গরু, ছাগল, ভেড়া) ইত্যাদি। (হাদীসে এর নির্দেশ রয়েছে)
৪, চাপ কল বা টিউবওয়েল মাটির অনেক গভীরে স্থাপন করুন। সাধারনত যতটুকু নীচ থেকে পানি উঠে তার চাইতে ৫০-১০০ ফুট নীচে। এছাড়াও নদী, পুকুর, ঝর্নার পানি বিশুদ্ধ করে ব্যবহার করার পদ্ধতি জেনে নিন।
৫, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার সংগ্রহে রাখুন যেমন, চিড়া, মুড়ি, সীম বা কুমড়ার বীচি, বাদাম, ছোলা, কিসমিস ইত্যাদি।
৬, আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ডিপোজিট বা এ জাতীয় খাতে যতটাকা আছে তা এক মুহূর্ত ও নিরাপদ নয়। দ্রুত তুলে ফেলুন। তা দিয়ে স্বর্ন ক্রয় করুন বা গবাদী পশুতে পরিনত করুন।
৭, বাসস্থানের আশেপাশে পর্যাপ্ত ফল গাছ রোপন করুন।
৮, বাচ্চাদের কে এখন থেকেই চীপস, চকোলেট, আইসক্রীম জাতীয় খাবার থেকে বিরত রাখার অভ্যাস করুন।
৯, শুকনো লাকড়ির ব্যবস্থা করে রাখুন।
এতক্ষন যেসব প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে তা কেবল বেসিক ধারনা দেয়া হলো।এলাকা ভেদে তার থেকে কম-বেশী প্রস্তুতি নিতে হতে পারে। তা নিজেই চিন্তা গবেষনা করে বের করুন। সব শেষে যে কথাটি বলে রাখতে চাই, তা এখনি বলে রাখি, প্রযুক্তি ধ্বংস হবার ফলে হয়তো উপযুক্ত সময়ে জানাতে পারবো না।
মনে রাখবেন মহা যুদ্বের পরপরই দাজ্জাল বের হবে, বের হবার ২-৩ বছর আগে পৃথিবীতে অনাবৃষ্টির ফলে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে, শেষ বছর একেবারেই খাদ্য উৎপাদন হবে না, আর সে তখন রুটির পাহাড় বা ত্রান নিয়ে হাজির হবে, ঘরে ক্ষুধার্ত স্ত্রী সন্তান রেখে সে ত্রান থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা বড়ই কঠিন পরীক্ষা, বড়ই কঠিন। আর এ মুহূর্তে যদি ধৈর্য ধরতে পারেন, সুবহানআল্লাহ আপনাকে খাদ্য দেবে, আলহামদুলিল্লাহ্* আপনাকে খাদ্য দেবে, আল্লাহু আকবার আপনাকে খাদ্য দেবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে তার রহমত এবং বরকতে ঢেকে রাখুন। আমাদেরকে পৌছে দিন চির স্থায়ী জান্নাতে।
আমিন
হয়তো জানা অজানা অারো বহু ভীতিকর পরিবেশ তৈরী হতে পারে। তাই ধৈর্য হারাবেন না, অচিরেই সুদিন আসছে।
" যখনই কোন বিপদ আসে(মুমিনরা) বলেঃ “আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে,"(বাকারাহ ১৫৬)
যদি এই পোষ্টটি শেয়ার করতে না পারেন, অন্ততঃ কপি করে ব্যাক্তিগত ভাবে ছড়িয়ে দিন আপনার প্রিয়জনদের কাছে। হয়তো উপকৃত হতে পারে।
[ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]
গত কয়েকদিন আগে আপনারা জেনেছেন রাশিয়া তার দেশের প্রায় ৪ কোটি নাগরিকদের ট্রেনিং করিয়েছে ৩য় বিশ্ব যুদ্ধে কিভাবে নিজেকে সেফ করে রাখবে, এবং তাদের জন্য মাথা পিছু খাদ্য ও বরাদ্দ করা আছে। তলে তলে পরাশক্তি গুলো ঠিকই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, তাহলে আমরা অজ্ঞ থাকবো কোন ভরসায়। আমার বিশ্বাস '৭১ সালে যদি আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি থাকতো, তবে আমাদের ক্ষয় ক্ষতি এত ব্যপক হতো না। তাই আরেকটি ভুল আমরা করতে চাই না।
এই পোষ্ট তাদের জন্য নয়, যারা মনে করেন
# আসহাবে কাহাফগন কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই কেবল মাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে নগর থেকে বের হয়ে গিয়ে ছিলেন, অত:পর আল্লাহই তাদের রক্ষা করেছেন।
# মূসা (আ) কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই তার অনুসারীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন, অত:পর আল্লাহই তাদেরকে রক্ষা করেছেন।
সুতরাং ৩য় বিশ্ব যুদ্ধের জন্য এত চিন্তা গবেষনা বা পেরেশান, প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তাহলে আপনারা বাকি টুকু পড়ে সময় নষ্ট করবেন না pls
এই পোষ্ট তাদের জন্য, যারা মনে করেন
# ইউসুফ (আ) দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করার জন্য ৭ বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। খাদ্য গুদামজাত করার ব্যবস্থা করেছেন।
# নূহ(আ) বিপর্যয়ের আগেই নৌকা তৈরী করে রেখেছেন।
# রাসূল (সা) সাধ্যমত প্রস্তুতি নিয়েই বদরের ময়দানে হাজির হয়েছেন।
সুতরাং আমাকেও সাধ্যমতো প্রস্তুতি নিতে হবে।
এক দিকে সিরিয়ায় শুরু হতে যাওয়া ৩য় বিশ্ব যুদ্ধ যা ক্রমান্বয়ে সারা পৃথিবীতে দূত ছড়িয়ে পড়বে, আবার ভৌগলিক ভাবে আমরা এমন একটি এলাকায় বসবাস করি যারা মোকাবেলা করবো গাজওয়ায়ে হিন্দ। সুতরা আমাদের প্রস্তুতিটাও হতে হবে এই উভয় সংকট মাথায় রেখে। প্রস্তুতিটাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিলে বুঝতে ও পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে।
ক, আধ্যাত্নিক প্রস্তুতি
খ, শারীরিক প্রস্তুতি
গ, মানসিক প্রস্তুতি
ঘ, অর্থনৈতিক ও খাদ্য প্রস্তুতি
## ক, আধ্যাত্নিক প্রস্তুতিঃ-
এ যুদ্ধে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ মানে অর্ধেকেরও বেশী বিলুপ্ত হবার আশংকা রয়েছে, তাই ধরে নিবেন আপনিও তাদের মধ্যে একজন। আর যদি বেঁচেও যান তবুও নিচের প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। আশা করি কল্যানের পথে ধাবিত হবেন।
১, মুসলিম হওয়ার জন্য কোরআন হাদীসে যে সব শর্ত বা বৈশিষ্টের কথা বলা হয়েছে তা পুরপুরি মেনে চলার চেষ্টা করুন।
২, সকল ফরজ গুলোর ব্যপারে কঠোর যত্নবান হোন।
৩, যতটুকু সম্ভব কোরআন মুখস্থ করুন।
(ন্যূনতম নামাজের জন্য যতটুকু প্রয়োজনীয়, সাথে সূরা কাহাফ এর ১ম ও শেষ ১০ আয়াত। এবং জরুরী দোয়া সমূহ।)
৪, সকলের সাথে পাওনা,দেনা মিটিয়ে ফেলুন।
৫, ভূল ত্রুটি বা কারো সাথে ঝগড়া মনোমালিন্য থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিন। বেশী করে তাওবা, এস্তেগফার করুন।
৬, প্রতিদিন কোরআন হাদীস অধ্যায়ন করুন, যতটুকু সম্ভব।
৭, কোরআন, হাদীস, তাফছির সহ গুরুত্বপূর্ন কিছু বই এর হার্ড কপি নিজের কাছে, বাড়ির সবচেয়ে নিরাপদ এবং গোপন জায়গায় সংরক্ষন করুন।
৮, সিনেমা, গান, নাটক, অসৎ সঙ্গ পরিহার করুন।
৯, আপনার পরিবার, নিকট আত্নিয়দের এসব ব্যপারে সতর্ক করুন।
## ( খ)শারীরিক প্রস্তুতিঃ-
১, সব রকমের GMO food পরিত্যাগ করুন।
২, এলোপ্যাথি ঔষধ বর্জন করুন।
৩, ভেষজ ঔষধ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন।
৪, নিয়মিত শরীরচর্চা, বিশেষ করে দৌড়ানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি করুন।
৫, কমন রোগ যেমন গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস, জ্বর, মাথা-ব্যথা, সর্দি এসবের জন্য ভেসজ ঔষধগুলো বাড়িতে সংরক্ষন করুন।
৬, বাড়িতে টিউবওয়েল বা চাপ কল বসান, সাপ্লাই পানির উপর নির্ভরতা ১০০% কমিয়ে ফেলুন।
৭, কমপক্ষে ২ বছরের জন্য সাবান, ব্যান্ডেজ, সেভলন, ব্লেড, সুই, সুতা, দিয়াশলাই, মোমবাতি, ব্যাটারি চালিত টর্চ লাইট ও ব্যাটারি ক্রয় করে রাখুন।
৮, জ্বালানী বিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদন করার চেষ্টা করুন।
৯, পরিবারের সবার জন্য কমপক্ষে ২ টি করে রেইন কোট, পর্যাপ্ত শীতের ভারি জামা, ও জরুরী জামা কাপড় ক্রয় করে রাখুন। শূন্য ডিগ্রি বা মাইনাস তাপমাত্রার উপযোগী পোশাক সংগ্রহ করুন।
১০, পরিবারের সকলের জন্য ফিউম মাক্স বা গ্যাস মাক্স ১ টি করে এবং ডাষ্ট মাক্স পর্যাপ্ত পরিমানের সংগ্রহ করে রাখুন।
১১, বসবাস করার জন্য যে কোন শহর, বন্দর ত্যাগ করুন। যত অজো পাড়া গাঁ হবে ততই ভালো। উত্তম হবে পাহাড়ী এলাকা ও প্রাকৃতিক ঝর্না বা অধিক বৃষ্টি হয় এমন এলাকা। বেশী জনবসতি এলাকা পরিহার করুন। (ঢাকা-চিটাগং সহ বিভাগীয় সিটির ভাই বোনদের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইলো)
১২, যারা একত্রে বসবাস করবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন ও হাতের কাছেই কোথাও লুকিয়ে রাখুন।
১৩, সকল পুরুষ সদস্য একত্রে ঘুমাতে বা কোথাও সফরে যাবেন না। গ্রুপ করে পালাক্রমে পাহারা দিন।
১৪, আশে পাশের জনপদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বাইসাইকেল সংগ্রহ করুন। দ্রুত যোগাযোগ করার পদ্বতি আবিস্কার করার চেষ্টা করুন।
১৫, ক্ষুধা তৃষ্ণা সহ্য করার অভ্যাস করুন।
১৬, মাটির নিচে ঘর তৈরী করুন, বাড়ি থেকে সহজে বের হওয়ার পথ তৈরী করে রাখুন।
১৭, তাবু তৈরী করার সরন্জাম ব্যবস্থা করুন।
১৮, আপনার এলাকার অবসর প্রাপ্ত বা কর্তব্যরত ডিফেন্স বাহিনীর সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষন গ্রহন করুন।
১৯, পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করার চেষ্টা করুন।
২০, যদি সমস্যা না হয় স্থানীয় আইন প্রশাসন বা জন প্রতিনিধিদের কাছে বিষয়টি বুঝিয়ে অনুমতি নিয়ে নিন।
## (গ)মানসিক প্রস্তুতিঃ-
১, এ যুদ্ধের শুরুতেই সারা পৃথিবীর ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হতে পারে । ফলে, দেশে-বিদেশে থাকা আত্নিয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এমন কি পরিবারের কেউ যদি প্রবাসে থাকে তার সাথে চিরদিনের মতো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে তার জন্য প্রস্তুুত হোন।
২, বৈদেশিক বানিজ্য ও লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকৃত পন্য, বিদেশে উৎপাদিত জরুরী ঔষধ, ও যন্ত্রপাতি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে, আপনার কাছের মানুষজন যারা ঐ সব ঔষধের উপর ডিপেন্ডেন্ডেট তারা চিকিৎসাহীনতায় ভূগবে। এবং ইমারজেন্সি রোগীরা এক পর্যায়ে মারা যাবে, তার জন্যও প্রস্তুুত হোন।
৩, চারিদিকে মৃত্যু, লাশ আর নানান ধরনের অঘটন শুনতে পাবেন, যা এখন কল্পনাতেও আসে না, এমন পরিস্থিতি জন্য মনকে শক্ত করুন।
৪, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিশপত্রের তীব্র সংকট শুরু হবে..... চাল, ডাল, তেল, লবন ইত্যাদি। আপনার কাছে টাকা থাকবে হাজার হাজার কিন্তুু ঐ টাকার বিনিময়েও আপনি জিনিস পত্র কিনতে পারবেন না। ফলে পারিবারিক খাদ্য সংকট কিভাবে সামাল দিবেন সে চিন্তা করুন, মনকে শক্ত রাখুন, কারন এ সময় ভেঙ্গে পরলে বাকিরাও টিকতে পারবে না।
৫, হয়তো নিজ পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য মারা যাবে, আহত হবে, অসুস্থ হয়ে পড়বে, নিখোঁজ হয়ে যাবে এসবের জন্যও মনকে প্রস্তুুত রাখুন।
৬, এ জাতীয় যে কোন সমস্যাই আসুক না কেন আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফেল হওয়া যাবে না, মনে রাখতে হবে এই দুনিয়াটাই পরীক্ষা ক্ষেত্র, এ ধরনের বিপদাপদ দিয়ে, আল্লাহ আসলে আমাদের যাচাই করছেন। আমরা জান্নাতের যোগ্য কি না।
৭, প্রচন্ড অভাবের তাড়নায় আপনার বাড়িতে লুটপাট হতে পারে, হিংস্র হয়ে উঠতে পারে আশোপাশের মানুষ গুলো। তাই আসন্ন পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে আপনার প্রতিবেশীদের এখনি বোঝান। তাদের নিয়েই পরিকল্পনা করুন। যতটা সফল হবেন, পরবর্তীতে ততটাই নিরাপদ থাকতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আত্নিয়-স্বজনরাও গ্রুপ ভাবে বসবাস শুরু করতে পারেন।
৮, ভৌগলিক ভাবে আমরা বসবাস করছি গাজওয়ায়ে হিন্দের মাঝামাঝি এলাকায়, সুতরাং শত্রু পক্ষ থেকে আক্রান্ত হওয়া প্রায় নিশ্চিত, আক্রান্ত হলে প্রতিরোধ করা সকল দেশে সকল ধর্মে সকল আইনেই বৈধ। সুতরাং প্রতিরোধ করার মতো মানসিক প্রস্তুতি নিন।
৯, জরুরী প্রয়োজনে তাতক্ষনিক ভাবে বাসস্থান পরিবর্তন করতে হতে পারে, হিজরত করার দরকার পড়তে পারে, আবার এমনও হতে পারে অন্য এলাকা থেকে আপনার এলাকায় লোকজন নিরাপত্তা বা আশ্রয়ের জন্য ছুটে আসতে পারে। সুতরাং মুহাজির বা আনসার দুটোর জন্যই আবু বকর (রা) এর মতো প্রস্তুত থাকুন।
## (ঘ) অর্থনৈতিক ও খাদ্যের প্রস্তুতিঃ-
১, নিজের খাদ্য নিজেই উৎপাদন করুন। ধান, গম, আলু, শাক সবজি ইত্যাদি। কৃষিকাজের মাধ্যমে।
২, মাছ চাষ করুন।
৩, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণঃ- গবাদী পশু পালন করুন (গরু, ছাগল, ভেড়া) ইত্যাদি। (হাদীসে এর নির্দেশ রয়েছে)
৪, চাপ কল বা টিউবওয়েল মাটির অনেক গভীরে স্থাপন করুন। সাধারনত যতটুকু নীচ থেকে পানি উঠে তার চাইতে ৫০-১০০ ফুট নীচে। এছাড়াও নদী, পুকুর, ঝর্নার পানি বিশুদ্ধ করে ব্যবহার করার পদ্ধতি জেনে নিন।
৫, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার সংগ্রহে রাখুন যেমন, চিড়া, মুড়ি, সীম বা কুমড়ার বীচি, বাদাম, ছোলা, কিসমিস ইত্যাদি।
৬, আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ডিপোজিট বা এ জাতীয় খাতে যতটাকা আছে তা এক মুহূর্ত ও নিরাপদ নয়। দ্রুত তুলে ফেলুন। তা দিয়ে স্বর্ন ক্রয় করুন বা গবাদী পশুতে পরিনত করুন।
৭, বাসস্থানের আশেপাশে পর্যাপ্ত ফল গাছ রোপন করুন।
৮, বাচ্চাদের কে এখন থেকেই চীপস, চকোলেট, আইসক্রীম জাতীয় খাবার থেকে বিরত রাখার অভ্যাস করুন।
৯, শুকনো লাকড়ির ব্যবস্থা করে রাখুন।
এতক্ষন যেসব প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে তা কেবল বেসিক ধারনা দেয়া হলো।এলাকা ভেদে তার থেকে কম-বেশী প্রস্তুতি নিতে হতে পারে। তা নিজেই চিন্তা গবেষনা করে বের করুন। সব শেষে যে কথাটি বলে রাখতে চাই, তা এখনি বলে রাখি, প্রযুক্তি ধ্বংস হবার ফলে হয়তো উপযুক্ত সময়ে জানাতে পারবো না।
মনে রাখবেন মহা যুদ্বের পরপরই দাজ্জাল বের হবে, বের হবার ২-৩ বছর আগে পৃথিবীতে অনাবৃষ্টির ফলে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে, শেষ বছর একেবারেই খাদ্য উৎপাদন হবে না, আর সে তখন রুটির পাহাড় বা ত্রান নিয়ে হাজির হবে, ঘরে ক্ষুধার্ত স্ত্রী সন্তান রেখে সে ত্রান থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা বড়ই কঠিন পরীক্ষা, বড়ই কঠিন। আর এ মুহূর্তে যদি ধৈর্য ধরতে পারেন, সুবহানআল্লাহ আপনাকে খাদ্য দেবে, আলহামদুলিল্লাহ্* আপনাকে খাদ্য দেবে, আল্লাহু আকবার আপনাকে খাদ্য দেবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে তার রহমত এবং বরকতে ঢেকে রাখুন। আমাদেরকে পৌছে দিন চির স্থায়ী জান্নাতে।
আমিন
হয়তো জানা অজানা অারো বহু ভীতিকর পরিবেশ তৈরী হতে পারে। তাই ধৈর্য হারাবেন না, অচিরেই সুদিন আসছে।
" যখনই কোন বিপদ আসে(মুমিনরা) বলেঃ “আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে,"(বাকারাহ ১৫৬)
যদি এই পোষ্টটি শেয়ার করতে না পারেন, অন্ততঃ কপি করে ব্যাক্তিগত ভাবে ছড়িয়ে দিন আপনার প্রিয়জনদের কাছে। হয়তো উপকৃত হতে পারে।
[ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]
Comment