আল্লাহতা’আলা কুরআনে সুরা আলে ইমরানের ১৮৬ নং আয়াতে বলছেন,
কিছু লোকের জন্য এই পরীক্ষা হতে পারে দারিদ্র। কারো জন্য হতে পারে মারাত্মক কোন শারীরিক কিংবা মানসিক অসুস্থতা। আবার কিছু মানুষের জন্য ভালবাসার মানুষকে হারানো। কারও জন্য তা বন্দীদশা। তবে আমাদের প্রত্যেকের জন্যই, আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’আলার পক্ষ থেকে এটা একটা প্রতিশ্রুতি যে, তিনি আমাদের মধ্যে সবাইকেই জীবনের কোন না কোন সময়ে, কোন একধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি অবশ্যই করবেন। আপনি নবীতুল্য এক সৎকর্মশীল ব্যক্তিত্ব হোন কিংবা একজন খুনীর মতন ঘৃণ্য কিছু, আল্লাহ তা’আলা আপনার জন্য নির্দিষ্ট পরিমান দুঃখ-কষ্ট নির্ধারন করে রেখেছেন। আল্লাহতা’আলার প্রেরিত নবীগণ যে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে তা ভালো করে খেয়াল করলে আপনার কাছে মনে হবে যেন আল্লাহতা’আলা আগে থেকেই আপনার আমার জন্য এই জিনিসগুলোকে উদাহরণ হিসেবে রেখে দিয়েছেন যাতে আমরা আজকের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারিঃ
তাই বলা চলে এখনকার দিনে আমরা যে সমস্যা গুলোর মুখোমুখি হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে এমন একটি সমস্যাও নেই যেগুলো পূর্ববর্তী কোন নবী-রাসুল মোকাবিলা করেন নি। এর অনেক্গুলো ফাযায়েল আছে, যেমনঃ
কাজেই এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার যে ওয়াদা করেছেন তা আমাদের কাছে অপছন্দনীয় ঠেকতে পারে, কিন্তু এর থেকে অনেক বেশি লাভ করার আছে এই অনিবার্য পরীক্ষা থেকে, যদি আমরা আমাদের অবস্থাকে নবীদের অবস্থার সাথে মিলিয়ে দেখতে পারি।
طارق مهنا
তারিক মেহান্না
প্লাইমাউথ কারেকশনাল ফ্যাসিলিটি
আইসোলেশন ইউনিট - সেল #১০৮
“নিশ্চয়ই তোমাদেরকে পরীক্ষা করা হবে তোমাদের সম্পদ ও জীবনের দ্বারা ...”
কিছু লোকের জন্য এই পরীক্ষা হতে পারে দারিদ্র। কারো জন্য হতে পারে মারাত্মক কোন শারীরিক কিংবা মানসিক অসুস্থতা। আবার কিছু মানুষের জন্য ভালবাসার মানুষকে হারানো। কারও জন্য তা বন্দীদশা। তবে আমাদের প্রত্যেকের জন্যই, আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’আলার পক্ষ থেকে এটা একটা প্রতিশ্রুতি যে, তিনি আমাদের মধ্যে সবাইকেই জীবনের কোন না কোন সময়ে, কোন একধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি অবশ্যই করবেন। আপনি নবীতুল্য এক সৎকর্মশীল ব্যক্তিত্ব হোন কিংবা একজন খুনীর মতন ঘৃণ্য কিছু, আল্লাহ তা’আলা আপনার জন্য নির্দিষ্ট পরিমান দুঃখ-কষ্ট নির্ধারন করে রেখেছেন। আল্লাহতা’আলার প্রেরিত নবীগণ যে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে তা ভালো করে খেয়াল করলে আপনার কাছে মনে হবে যেন আল্লাহতা’আলা আগে থেকেই আপনার আমার জন্য এই জিনিসগুলোকে উদাহরণ হিসেবে রেখে দিয়েছেন যাতে আমরা আজকের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারিঃ
- আদম (আঃ) এর এক পুত্র আরেক পুত্রকে হত্যা করেছিল।
- নূহ (আঃ) এর এক পুত্র ছিল কাফির, পানিতে ডুবে যার মৃত্যু হয়েছিল।
- ইব্রাহিম (আঃ) এর বাবা ছিল এক অত্যাচারী মুশরিক।
- ইউসুফ (আঃ) কে অন্যায়ভাবে দীর্ঘ দিন কাটাতে হয়েছিল কারাগারে।
- আইয়্যুব (আঃ) কে সম্মুখীন হতে হয়েছিল মারাত্নক ধরনের সব অসুখের।
- ইয়াকুব (আঃ) দুইবার সাময়িকভাবে পুত্রহারা হয়েছিলেন (একবার ইউসুফ(আঃ), আরেকবার বিন ইয়ামিন)।
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছিলেন, জীবনের উপর নেমে এসেছিল ঝুঁকি, অল্প বয়সী সন্তানদেরকে হারিয়েছিলেন, প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজাকে হারিয়েছিলেন, প্রাণপ্রিয় চাচা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল পরপারে, তার নিজের জন্মভূমি থেকে হয়েছিলেন বিতাড়িত।
তাই বলা চলে এখনকার দিনে আমরা যে সমস্যা গুলোর মুখোমুখি হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে এমন একটি সমস্যাও নেই যেগুলো পূর্ববর্তী কোন নবী-রাসুল মোকাবিলা করেন নি। এর অনেক্গুলো ফাযায়েল আছে, যেমনঃ
- আমাদের কাছে প্রত্যেকটি কষ্টকর পরীক্ষার নমুনা রয়েছে এবং সেই সাথে রয়েছে সেগুলো ধৈর্য্যের সাথে মোকাবিলা করার পর্যাপ্ত দিক নির্দেশনা।
- আল্লাহতা’আলার সবচাইতে প্রিয় বান্দাদেরকে এই ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতিগুলোর মুখোমুখি হবার ঘটনা থেকে আমরা সিদ্ধান্তে পৌছতে পারি যে এই সকল বিপদময় পরিস্থিতির মোকাবিলা মানুষকে পূর্ণতা দান করে।
- আল্লাহ যেখানে প্রিয় বান্দা অর্থাৎ নবী-রাসূলদেরকেই সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি করেন, তাই আপনিও যদি তেমন কঠিন কোন পরীক্ষায় পতিত হন তাহলে একথা বলার অবকাশ নেই, “আমি কেন?”, কেননা আপনার থেকেও অধিক প্রিয় বান্দাদেরকেই আল্লাহ পরীক্ষা করেন।
- নবীদের সাথে আমাদের অন্তত একটা দিকে সাদৃশ্য থাকার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
- যখন আমরা নিজেরা কোন সমস্যার সম্মুখীন হবো তখন নবীদের কষ্ট-ত্যাগ ইত্যাদি যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হব, ফলে আল্লাহতা’আলার নবী -রাসুলদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।
- আল্লাহতা’আলার উপর আপনার ভরসা বেড়ে আকাশচুম্বী হবে যখন আপননি জানবেন নবীদের কঠিন বিপদের সময় আল্লাহ তা’আলা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং তিনি আপনাকেও সাহায্য করবেন যদি আপনি তাক্বওয়া অবলম্বন করেন।
- এমনকি নবীরাও আল্লাহতালার পক্ষ থেকে পরীক্ষার উর্ধ্বে নন-এই সত্যটি সমগ্র সৃষ্টির উপর আল্লাহতা’আলার একচ্ছত্র আধিপত্যের বিষয়টিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তোলে।
কাজেই এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার যে ওয়াদা করেছেন তা আমাদের কাছে অপছন্দনীয় ঠেকতে পারে, কিন্তু এর থেকে অনেক বেশি লাভ করার আছে এই অনিবার্য পরীক্ষা থেকে, যদি আমরা আমাদের অবস্থাকে নবীদের অবস্থার সাথে মিলিয়ে দেখতে পারি।
طارق مهنا
তারিক মেহান্না
প্লাইমাউথ কারেকশনাল ফ্যাসিলিটি
আইসোলেশন ইউনিট - সেল #১০৮
Comment