আপনি কি সিরাতে মুস্তাকিম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক?
(2)
তাহলে শুনুন:-
আন-নিসা اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ قِیۡلَ لَہُمۡ کُفُّوۡۤا اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ ۚ فَلَمَّا کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقِتَالُ اِذَا فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ وَ قَالُوۡا رَبَّنَا لِمَ کَتَبۡتَ عَلَیۡنَا الۡقِتَالَ ۚ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ؕ قُلۡ مَتَاعُ الدُّنۡیَا قَلِیۡلٌ ۚ وَ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّمَنِ اتَّقٰی ۟ وَ لَا تُظۡلَمُوۡنَ فَتِیۡلًا ﴿۷۷﴾
তুমি কি তাদেরকে দেখনি যাদেরকে বলা হয়েছিল,
তোমরা তোমাদের হাত গুটিয়ে নাও এবং সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর?
অতঃপর তাদের উপর যখন লড়াই ফরয করা হল,
তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করতে লাগল আল্লাহকে ভয় করার অনুরূপ অথবা তার চেয়ে কঠিন ভয়।
আর বলল, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদের উপর লড়াই ফরয করলেন কেন?
আমাদেরকে কেন আরো কিছুকালের অবকাশ দিলেন না’?
বল, ‘দুনিয়ার সুখ সামান্য।
আর যে তাকওয়া অবলম্বন করে তার জন্য আখিরাত উত্তম।
আর তোমাদের প্রতি সূতা পরিমাণ যুলমও করা হবে না’।
প্রশ্ন ঃ- আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তার সাথিরা কি বললেন?
উত্তর ঃ- আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং তার কয়েকজন সাথী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন,
হে আল্লাহর রাসূল, আমরা যখন মুশরিক ছিলাম তখন আমরা সম্মানিত ছিলাম। কিন্তু যখন ঈমান আনলাম তখন আমাদেরকে অসম্মানিত হতে হচ্ছে।
প্রশ্ন ঃ- এদের কথার উত্তরে কি বললেন?
উত্তর ঃ- একথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘আমি ক্ষমা করতে নির্দেশিত হয়েছি, সুতরাং তোমরা যুদ্ধ করো না। [নাসায়ী: ৩০৮৬; মুস্তাদরাকে হাকিমঃ ২/৬৭, ৩০৬]
★ উক্ত আয়াত শুনিয়ে দিলেন
اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ قِیۡلَ لَہُمۡ کُفُّوۡۤا اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ ۚ "তোমরা তোমাদের হাত গুটিয়ে নাও এবং সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর"।
প্রশ্ন ঃ- এতে কোন সমস্যা আছে কি?
উত্তর ঃ- ইহাতে কোন সমস্যা নেই।
প্রশ্ন ঃ- তাহলে সমস্যাটা হলো কোথায়?
উত্তর ঃ- পরবর্তী অংশে।
প্রশ্ন ঃ- পরবর্তী অংশ কি?
উত্তর ঃ- পরবর্তী অংশ এই আল্লাহ তাআলা বলেন
فَلَمَّا کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقِتَالُ اِذَا فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ
অতঃপর তাদের উপর যখন লড়াই ফরয করা হল, তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করতে লাগল আল্লাহকে ভয় করার অনুরূপ অথবা তার চেয়ে কঠিন ভয়।
প্রশ্ন ঃ- মুনাফিকরা ত্বাগুতদেরকে কেমন ভয় করত?
উত্তর ঃ- ত্বাগুতদেরকে আল্লাহকে ভয় করার মতো ভয় করত আল্লাহ তাআলা এভাবে বর্ণনা দেন
یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ
প্রশ্ন ঃ- এতেই কি সিমাবদ্ধ ছিল?
উত্তর ঃ- এতেই কি সিমাবদ্ধ ছিল না। বরং আল্লাহর ভয়ের চেয়েও বেশি ভয় করত।
আল্লাহ তাআলা বলেন اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ
প্রশ্ন ঃ- পরবর্তী অংশ কেন অবতীর্ণ হল?
উত্তর ঃ- মুমিন ও মুনাফিক নির্ণয়ের জন্য।
প্রশ্ন ঃ- মুমিন ও মুনাফিক কিভাবে নির্ণয় হয়?
উত্তর ঃ- মুমিনগণ (تأويل و تحريف ) অপব্যাখ্যা, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ব্যতীত মেনে নেয়। আর মুনাফিকরা ভয় করতে লাগল আল্লাহকে ভয় করার অনুরূপ অথবা তার চেয়ে কঠিন ভয়।
প্রশ্ন ঃ- শুধু এতেই সিমাবদ্ধ ছিল?
উত্তর ঃ- শুধু এতেই সিমাবদ্ধ ছিলনা , বরং বলাবলি করতে লাগল
প্রশ্ন ঃ- কি বলাবলি করতে লাগল?
উত্তর ঃ- وَ قَالُوۡا رَبَّنَا لِمَ کَتَبۡتَ عَلَیۡنَا الۡقِتَالَ ۚ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ؕ ‘
হে আমাদের রব, আপনি আমাদের উপর লড়াই ফরয করলেন কেন? আমাদেরকে কেন আরো কিছুকালের অবকাশ দিলেন না’?
প্রশ্ন ঃ- আমাদেরকে কেন আরো কিছুকালের অবকাশ দিলে না’? কিছুকালের অবকাশের সিমা কি?
উত্তর ঃ- সুদ্দী বলেন, তারা ‘কিছুদিনের অবকাশ’ বলে মৃত্যু পর্যন্ত সময় চাচ্ছিল। অর্থাৎ তারা যেন বলছে যে, তাদের মৃত্যু হয়ে গেলে তারপর এ আয়াত নাযিল হওয়ার দরকার ছিল। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
প্রশ্ন ঃ- যে দুনিয়াকে এ আয়াত অনুযায়ী সঙ্গী বানিয়েছে তার ফলাফল কি?
উত্তর ঃ-
১) হাসান বসরী এ আয়াত পাঠ করে বলেন, ঐ বান্দাকে আল্লাহ রহমত করুন, যে দুনিয়াকে এ আয়াত অনুযায়ী সঙ্গী বানিয়েছে। দুনিয়ার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উদাহরণ হচ্ছে, সে ব্যক্তির ন্যায়, যে একটি ঘুম দিল, ঘুমের মধ্যে সে কিছু ভাল স্বপ্ন দেখল, তারপর তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। ( আত-তাফসীরুস সহীহ)
২) তোমারা জেনে রাখ, নিশ্চয় দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা, ক্রীড়া – কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক গর্ব –অহংকার, ধন-সম্পদ ও সন্তান –সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছু নয় [১]। এর উপমা হলো বৃষ্টি, যার উৎপন্ন শস্য–সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকার করে, তারপর সেগুলো শুকিয়ে যায়, ফলে আপনি ওগুলো পীতবর্ণ দেখতে পান, অবশেষে সেগুলো খড়–কুটোয় পরিণত হয়। আর আখেরাতে রয়েছে কঠিন শাস্তি । ( হাদীদ /২০)
৩) আর দুনিয়ার জীবন প্রতারণার সামগ্রী ছাড়া কিছু নয় [২]। ( হাদীদ /২০) ৪) وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ ﴿ال عمران/۱۸۵﴾ আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া আর কিছু নয় সেজন্যই আয়াতে বলা হয়েছে “দুনিয়ার জীবন তো হলো ধোঁকার উপকরণ।” তার কারণ এই যে, সাধারণতঃ এখানকার ভোগ-বিলাসই হবে আখেরাতের কঠিন যন্ত্রণার কারণ। পক্ষান্তরে এখানকার দুঃখ-কষ্ট হবে আখেরাতের সঞ্চয়
প্রশ্ন ঃ- আল্লাহ তাআলা এদের উওরে কি বলেন?
উত্তর ঃ- আল্লাহ তাআলা এর উত্তরে বলেন
বল,
১)‘দুনিয়ার সুখ সামান্য।
২) আর যে তাকওয়া অবলম্বন করে তার জন্য আখিরাত উত্তম।
৩) আর তোমাদের প্রতি সূতা পরিমাণ যুলমও করা হবে না’।
প্রশ্ন ঃ- উক্ত আয়াতে দুনিয়ার নেয়ামতের তুলনায় আখেরাতের নেয়ামতসমূহকে উত্তম বলে উল্লেখ করা হল কেন?
উত্তর ঃ- তার কয়েকটি কারণ রয়েছে:-
১) দুনিয়ার নেয়ামত অল্প এবং আখেরাতের নেয়ামত অধিক।
২) দুনিয়ার নেয়ামত ক্ষণস্থায়ী এবং আখেরাতের নেয়ামত অনন্ত-অফুরন্ত।
৩)দুনিয়ার নেয়ামতসমূহের সাথে নানা রকম অস্থিরতাও রয়েছে, কিন্তু আখেরাতের নেয়ামত এ সমস্ত জঞ্জালমুক্ত।
৪) দুনিয়ার নেয়ামত লাভ অনিশ্চিত, কিন্তু আখেলাতের নেয়ামত প্রত্যেক মুত্তাকী ব্যক্তির জন্য একান্ত নিশ্চিত।
[তাফসীরে কাবীর]
চলবে ইনশাআল্লাহ....
(2)
তাহলে শুনুন:-
আন-নিসা اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ قِیۡلَ لَہُمۡ کُفُّوۡۤا اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ ۚ فَلَمَّا کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقِتَالُ اِذَا فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ وَ قَالُوۡا رَبَّنَا لِمَ کَتَبۡتَ عَلَیۡنَا الۡقِتَالَ ۚ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ؕ قُلۡ مَتَاعُ الدُّنۡیَا قَلِیۡلٌ ۚ وَ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّمَنِ اتَّقٰی ۟ وَ لَا تُظۡلَمُوۡنَ فَتِیۡلًا ﴿۷۷﴾
তুমি কি তাদেরকে দেখনি যাদেরকে বলা হয়েছিল,
তোমরা তোমাদের হাত গুটিয়ে নাও এবং সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর?
অতঃপর তাদের উপর যখন লড়াই ফরয করা হল,
তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করতে লাগল আল্লাহকে ভয় করার অনুরূপ অথবা তার চেয়ে কঠিন ভয়।
আর বলল, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদের উপর লড়াই ফরয করলেন কেন?
আমাদেরকে কেন আরো কিছুকালের অবকাশ দিলেন না’?
বল, ‘দুনিয়ার সুখ সামান্য।
আর যে তাকওয়া অবলম্বন করে তার জন্য আখিরাত উত্তম।
আর তোমাদের প্রতি সূতা পরিমাণ যুলমও করা হবে না’।
প্রশ্ন ঃ- আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তার সাথিরা কি বললেন?
উত্তর ঃ- আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং তার কয়েকজন সাথী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন,
হে আল্লাহর রাসূল, আমরা যখন মুশরিক ছিলাম তখন আমরা সম্মানিত ছিলাম। কিন্তু যখন ঈমান আনলাম তখন আমাদেরকে অসম্মানিত হতে হচ্ছে।
প্রশ্ন ঃ- এদের কথার উত্তরে কি বললেন?
উত্তর ঃ- একথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘আমি ক্ষমা করতে নির্দেশিত হয়েছি, সুতরাং তোমরা যুদ্ধ করো না। [নাসায়ী: ৩০৮৬; মুস্তাদরাকে হাকিমঃ ২/৬৭, ৩০৬]
★ উক্ত আয়াত শুনিয়ে দিলেন
اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ قِیۡلَ لَہُمۡ کُفُّوۡۤا اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ ۚ "তোমরা তোমাদের হাত গুটিয়ে নাও এবং সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর"।
প্রশ্ন ঃ- এতে কোন সমস্যা আছে কি?
উত্তর ঃ- ইহাতে কোন সমস্যা নেই।
প্রশ্ন ঃ- তাহলে সমস্যাটা হলো কোথায়?
উত্তর ঃ- পরবর্তী অংশে।
প্রশ্ন ঃ- পরবর্তী অংশ কি?
উত্তর ঃ- পরবর্তী অংশ এই আল্লাহ তাআলা বলেন
فَلَمَّا کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقِتَالُ اِذَا فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ
অতঃপর তাদের উপর যখন লড়াই ফরয করা হল, তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করতে লাগল আল্লাহকে ভয় করার অনুরূপ অথবা তার চেয়ে কঠিন ভয়।
প্রশ্ন ঃ- মুনাফিকরা ত্বাগুতদেরকে কেমন ভয় করত?
উত্তর ঃ- ত্বাগুতদেরকে আল্লাহকে ভয় করার মতো ভয় করত আল্লাহ তাআলা এভাবে বর্ণনা দেন
یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ
প্রশ্ন ঃ- এতেই কি সিমাবদ্ধ ছিল?
উত্তর ঃ- এতেই কি সিমাবদ্ধ ছিল না। বরং আল্লাহর ভয়ের চেয়েও বেশি ভয় করত।
আল্লাহ তাআলা বলেন اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ
প্রশ্ন ঃ- পরবর্তী অংশ কেন অবতীর্ণ হল?
উত্তর ঃ- মুমিন ও মুনাফিক নির্ণয়ের জন্য।
প্রশ্ন ঃ- মুমিন ও মুনাফিক কিভাবে নির্ণয় হয়?
উত্তর ঃ- মুমিনগণ (تأويل و تحريف ) অপব্যাখ্যা, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ব্যতীত মেনে নেয়। আর মুনাফিকরা ভয় করতে লাগল আল্লাহকে ভয় করার অনুরূপ অথবা তার চেয়ে কঠিন ভয়।
প্রশ্ন ঃ- শুধু এতেই সিমাবদ্ধ ছিল?
উত্তর ঃ- শুধু এতেই সিমাবদ্ধ ছিলনা , বরং বলাবলি করতে লাগল
প্রশ্ন ঃ- কি বলাবলি করতে লাগল?
উত্তর ঃ- وَ قَالُوۡا رَبَّنَا لِمَ کَتَبۡتَ عَلَیۡنَا الۡقِتَالَ ۚ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ؕ ‘
হে আমাদের রব, আপনি আমাদের উপর লড়াই ফরয করলেন কেন? আমাদেরকে কেন আরো কিছুকালের অবকাশ দিলেন না’?
প্রশ্ন ঃ- আমাদেরকে কেন আরো কিছুকালের অবকাশ দিলে না’? কিছুকালের অবকাশের সিমা কি?
উত্তর ঃ- সুদ্দী বলেন, তারা ‘কিছুদিনের অবকাশ’ বলে মৃত্যু পর্যন্ত সময় চাচ্ছিল। অর্থাৎ তারা যেন বলছে যে, তাদের মৃত্যু হয়ে গেলে তারপর এ আয়াত নাযিল হওয়ার দরকার ছিল। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
প্রশ্ন ঃ- যে দুনিয়াকে এ আয়াত অনুযায়ী সঙ্গী বানিয়েছে তার ফলাফল কি?
উত্তর ঃ-
১) হাসান বসরী এ আয়াত পাঠ করে বলেন, ঐ বান্দাকে আল্লাহ রহমত করুন, যে দুনিয়াকে এ আয়াত অনুযায়ী সঙ্গী বানিয়েছে। দুনিয়ার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উদাহরণ হচ্ছে, সে ব্যক্তির ন্যায়, যে একটি ঘুম দিল, ঘুমের মধ্যে সে কিছু ভাল স্বপ্ন দেখল, তারপর তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। ( আত-তাফসীরুস সহীহ)
২) তোমারা জেনে রাখ, নিশ্চয় দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা, ক্রীড়া – কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক গর্ব –অহংকার, ধন-সম্পদ ও সন্তান –সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছু নয় [১]। এর উপমা হলো বৃষ্টি, যার উৎপন্ন শস্য–সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকার করে, তারপর সেগুলো শুকিয়ে যায়, ফলে আপনি ওগুলো পীতবর্ণ দেখতে পান, অবশেষে সেগুলো খড়–কুটোয় পরিণত হয়। আর আখেরাতে রয়েছে কঠিন শাস্তি । ( হাদীদ /২০)
৩) আর দুনিয়ার জীবন প্রতারণার সামগ্রী ছাড়া কিছু নয় [২]। ( হাদীদ /২০) ৪) وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ ﴿ال عمران/۱۸۵﴾ আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া আর কিছু নয় সেজন্যই আয়াতে বলা হয়েছে “দুনিয়ার জীবন তো হলো ধোঁকার উপকরণ।” তার কারণ এই যে, সাধারণতঃ এখানকার ভোগ-বিলাসই হবে আখেরাতের কঠিন যন্ত্রণার কারণ। পক্ষান্তরে এখানকার দুঃখ-কষ্ট হবে আখেরাতের সঞ্চয়
প্রশ্ন ঃ- আল্লাহ তাআলা এদের উওরে কি বলেন?
উত্তর ঃ- আল্লাহ তাআলা এর উত্তরে বলেন
বল,
১)‘দুনিয়ার সুখ সামান্য।
২) আর যে তাকওয়া অবলম্বন করে তার জন্য আখিরাত উত্তম।
৩) আর তোমাদের প্রতি সূতা পরিমাণ যুলমও করা হবে না’।
প্রশ্ন ঃ- উক্ত আয়াতে দুনিয়ার নেয়ামতের তুলনায় আখেরাতের নেয়ামতসমূহকে উত্তম বলে উল্লেখ করা হল কেন?
উত্তর ঃ- তার কয়েকটি কারণ রয়েছে:-
১) দুনিয়ার নেয়ামত অল্প এবং আখেরাতের নেয়ামত অধিক।
২) দুনিয়ার নেয়ামত ক্ষণস্থায়ী এবং আখেরাতের নেয়ামত অনন্ত-অফুরন্ত।
৩)দুনিয়ার নেয়ামতসমূহের সাথে নানা রকম অস্থিরতাও রয়েছে, কিন্তু আখেরাতের নেয়ামত এ সমস্ত জঞ্জালমুক্ত।
৪) দুনিয়ার নেয়ামত লাভ অনিশ্চিত, কিন্তু আখেলাতের নেয়ামত প্রত্যেক মুত্তাকী ব্যক্তির জন্য একান্ত নিশ্চিত।
[তাফসীরে কাবীর]
চলবে ইনশাআল্লাহ....
Comment