(7) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (7)
غَیۡرِ الۡمَغۡضُوۡبِ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا الضَّآلِّیۡنَ ٪﴿۷﴾
যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়।
কিন্তু সে অভিশপ্ত কারা, কারা কোন পথে চলে আল্লাহ্র নিকট হতে অভিশপ্ত হয়েছে, তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া আবশ্যক। কুরআন মাজীদ ঐতিহাসিক জাতিদের সম্পর্কে উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়েছেঃ
*****
প্রশ্নঃ- ইয়াহুদ সম্প্রদায় الۡمَغۡضُوۡبِ عَلَیۡہِمۡ (যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত) কেন?
উত্তরঃ-
(1) 2:61 وَ اِذۡ قُلۡتُمۡ یٰمُوۡسٰی لَنۡ نَّصۡبِرَ عَلٰی طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادۡعُ لَنَا رَبَّکَ
یُخۡرِجۡ لَنَا مِمَّا تُنۡۢبِتُ الۡاَرۡضُ مِنۡۢ بَقۡلِہَا وَ قِثَّآئِہَا وَ فُوۡمِہَا وَ عَدَسِہَا وَ بَصَلِہَا ؕ قَالَ اَتَسۡتَبۡدِلُوۡنَ الَّذِیۡ ہُوَ اَدۡنٰی بِالَّذِیۡ ہُوَ خَیۡرٌ ؕ اِہۡبِطُوۡا مِصۡرًا فَاِنَّ لَکُمۡ مَّا سَاَلۡتُمۡ ؕ
আর যখন তোমরা বললে, ‘হে মূসা, আমরা এক খাবারের উপর কখনো ধৈর্য ধরব না।
সুতরাং তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দো‘আ কর, যেন তিনি আমাদের জন্য বের করেন, ভূমি যে সব্জি, কাঁকড়, রসুন, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করে, তা’।
সে বলল, ‘তোমরা কি যা উত্তম তার পরিবর্তে এমন জিনিস গ্রহণ করছ যা নিম্নমানের? তোমরা কোন এক নগরীতে অবতরণ কর। তবে নিশ্চয় তোমাদের জন্য (সেখানে) থাকবে, যা তোমরা চেয়েছ’।
وَ ضُرِبَتۡ عَلَیۡہِمُ الذِّلَّۃُ وَ الۡمَسۡکَنَۃُ ٭ وَ بَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ ذٰلِکَ بِمَا عَصَوۡا وَّ کَانُوۡا یَعۡتَدُوۡنَ ﴿٪۶۱﴾
আর তাদের উপর আরোপ করা হয়েছে লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য এবং তারা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হল।
তা এই কারণে যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করত।
তা এই কারণে যে, তারা নাফরমানী করেছিল এবং তারা সীমালঙ্ঘন করত।
প্রশ্নঃ- তীহ্ উপত্যকায় ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’র আয়োজন কেন ছিল?
উত্তরঃ- এটা ছিল বনী ইসরাইলের প্রতি দয়াপরবশত ছিল।
প্রশ্নঃ- পরিবর্তনের কারণ কি ছিল?
উত্তরঃ- [১] তীহ্ উপত্যকায় ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’র প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই তারা ওসব শব্জী ও শস্যের জন্য আবেদন করলো।
প্রশ্নঃ- আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ কী আসল?
উত্তরঃ- এ প্রান্তরের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি শহর আছে। সেখানে গিয়ে চাষাবাদ করে উৎপন্ন ফসলাদি ভোগের নির্দেশ দেয়া হলো।
প্রশ্নঃ- আল্লাহ তাআলা ইহুদীদের প্রতি এত রাগান্নীত হলেন কেন?
উত্তরঃ- আল্লাহ্ তাআলা মূসা ‘আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে পূর্বেই তাদেরকে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, যদি নির্দেশ অমান্য কর, তবে চিরকাল তোমরা অন্য জাতির দ্বারা শাসিত হতে থাকবে।
যেমন, বলা হয়েছে
(وَاِذْ تَاَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ اِلٰي يَوْمِ الْقِيٰمَةِ مَنْ يَّسُوْمُهُمْ سُوْءَ الْعَذَابِ) ‘
আর সে সময়টি স্মরণ করুন, যখন আপনার রব জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, নিশ্চয় তিনি ইয়াহুদিদের উপর কেয়ামত পর্যন্ত এমন শাসক প্রেরণ করতে থাকবেন, যারা তাদের প্রতি কঠোর শাস্তি পৌছাতে থাকবে। [সূরা আল-আরাফ: ১৬৭]
প্রশ্নঃ- আল্লাহর পক্ষ থেকে বনী ইসরাইলের প্রতি কী নির্দেশ ছিল?
উত্তরঃ-
یٰقَوۡمِ ادۡخُلُوا الۡاَرۡضَ الۡمُقَدَّسَۃَ الَّتِیۡ کَتَبَ اللّٰہُ لَکُمۡ وَ لَا تَرۡتَدُّوۡا
عَلٰۤی اَدۡبَارِکُمۡ فَتَنۡقَلِبُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۲۱﴾
প্রশ্নঃ- আপনি কি জানেন কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী আযাব কাদের হবে ?
উত্তরঃ- ৪ শ্রেণীর লোকের উপর।
হাদীসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী আযাব হবে
(১) সে লোকের যাকে কোন নবী হত্যা করেছে,
(২) অথবা কোন নবীকে হত্যা করেছে।
(৩) আর ভ্রষ্ট ইমাম বা নেতা
(৪) এবং ভাস্কর্য নির্মাণকারী। ” [lll0 আহমাদ: ৬/৪১৩,৪১৫]
প্রশ্নঃ- ধ্বংস হতে বাঁচার উপায় কি?
উত্তরঃ-
কাতাদাই এ আয়াতের তাফসীরে বলেন,
তোমরা আল্লাহ্র অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন হতে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখ; কেননা পূর্বেকার লোকেরা এ দু'টির কারণেই ধ্বংস হয়েছিল। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
******
প্রশ্নঃ- ‘মাগদুব আলাইহি' কে বা কারা?
উত্তরঃ- পূর্বাপর আলোচনা করলে নিঃসন্দেহে এটা বুঝতে পারা যায় যে, এ কথাটি ইয়াহুদীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।
তাই ‘মাগদুব’ বলতে যে এখানে ইয়াহুদীদের বুঝানো হয়েছে,
সে বিষয়ে সমস্ত মুফাসসিরই একমত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসেও অনুরূপ স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে [দেখুন, মুসনাদে আহমাদ ৫/৩২,৩৩]
প্রশ্নঃ- ضالين কারা?
উত্তরঃ-
[৩] এটি ‘সিরাতুল মুস্তাকীম'-এর তৃতীয় ও সর্বশেষ পরিচয়। অর্থাৎ যারা সিরাতুল মুস্তাকীম এ চলে আল্লাহ্র নিয়ামত লাভ করতে পেরেছেন তারা পথভ্রষ্ট নন-কোন গোমরাহীর পথে তারা চলেন না। পূর্বোল্লেখিত আয়াতের ন্যায় এ আয়াতেরও অন্য অনুবাদ হচ্ছে, ‘তাদের পথে নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, যারা গোমরাহ হয়ে আল্লাহ্র উপস্থাপিত পথ হতে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস থেকে এ পথ-ভ্ৰষ্ট লোকদের পরিচয় জানতে পারা যায় যে, দুনিয়ার ইতিহাসে নাসারাগণ হচ্ছে কুরআনে উল্লেখিত এ গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি। [মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩২,৩৩, ৭৭]
★ মূলতঃ যারা সূরা আল-ফাতিহার অর্থ বুঝে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ শেষ করার পর তাদের মন থেকে দো’আ করবে, আল্লাহ্ তা'আলা তাদের দো’আ কবুল করবেন।
প্রশ্নঃ- নামাজে দুআ কবুলের সময় কোনটি?
উত্তরঃ- হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
(اِذا قَالَ الْاِمَامُ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ، فَقُوْلُوْ اٰمِيْنَ، فَمَنْ وَافَقَ قَوْلُهٗ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه)
“যখন ইমাম ‘গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বল্লীন’ বলে তখন তোমরা ‘আমীন’ বা ‘হে আল্লাহ্ কবুল কর’ একথাটি বল; কেননা যার কথাটি ফেরেশতাদের কথা অনুযায়ী হবে তার পূর্বেরগুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে "[বুখারী ৭৮২,মুসলিম: ৪০৯l
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
(وَاِذا قَالَ: غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ، فَقُوْلُوْ اٰمِيْنَ، يُجِيْبُكمُ اللّٰهُ)
“যখন ‘ইমাম গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বল্লীন’ বলে তখন তোমরা ‘আমীন’ বা ‘হে আল্লাহ্ কবুল কর’ একথাটি বল; এতে আল্লাহ্ তোমাদের আহবানে সাড়া দিবেন (দো’আ কবুল করবেন) "[মুসলিম: ৪০৪]
প্রশ্নঃ- ইয়াহুদীরা কোন কোন বিষয়ে মুসলমানদের উপর বেশি হিংসা করে?
উত্তরঃ- হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
(مَا حَسَدَتْكُمْ اليَهُوْدُ عَلَى شَيئٍ مَا حَسَدَ تْكُمُ عَلَى السَّلَامِ وَالتَّأْمِيْنِ)
“ইয়াহুদীরা তোমাদেরকে তোমাদের ‘সালাম’ ও ‘আমীন' বলার চেয়ে বেশী কোন বিষয়ের উপর হিংসা করে না।” [ইবনে মাজাহঃ ৮৫৬]
*****
এক নজরে
প্রশ্ন ঃ- মুনআম আলাইহি কারা?
উত্তর ঃ- তারা হচ্ছেন
১)আম্বিয়া,
২)সিদ্দীক,
৩)শহীদ
৪)ও সালেহীন। [ইবন কাসীর]
প্রশ্ন ঃ- মাগদুব’ কে?
উত্তর ঃ- মাগদুব’ হল ইয়াহুদ ।
এ বিষয়ে সমস্ত মুফাসসিরই একমত।
★ তাদের শাস্তি
وَ ضُرِبَتۡ عَلَیۡہِمُ الذِّلَّۃُ وَ الۡمَسۡکَنَۃُ ٭ وَ بَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ
اللّٰہِ ؕ ؕ
“আর তাদের উপর অপমান লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্যের কষাঘাত হানা হয়েছে এবং তারা আল্লাহ্র অভিশাপ প্রাপ্ত হয়েছে। " [সূরা আল-বাকারাহ: ৬১]
প্রশ্নঃ- তারা লাঞ্ছিত , অপমানিত, , অভিশপ্ত কেন? দারিদ্র্যের কষাঘাতের কারণ কী?
উত্তরঃ- (1) কারন ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ النَّبِیّٖنَ
بِغَیۡرِ الۡحَقِّ তা এই কারণে যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করত।
(2) কারন ذٰلِکَ بِمَا عَصَوۡا وَّ کَانُوۡا یَعۡتَدُوۡنَ ﴿٪۶۱﴾
তা এই কারণে যে, তারা নাফরমানী করেছিল এবং তারা সীমালঙ্ঘন করত।
প্রশ্ন ঃ- 'গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি' কারা?
উত্তর ঃ- 'গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি' হল নাসারাগণ দুনিয়ার ইতিহাসে নাসারাগণ হচ্ছে কুরআনে উল্লেখিত এ গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি। [মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩২,৩৩, ৭৭]
غَیۡرِ الۡمَغۡضُوۡبِ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا الضَّآلِّیۡنَ ٪﴿۷﴾
যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়।
কিন্তু সে অভিশপ্ত কারা, কারা কোন পথে চলে আল্লাহ্র নিকট হতে অভিশপ্ত হয়েছে, তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া আবশ্যক। কুরআন মাজীদ ঐতিহাসিক জাতিদের সম্পর্কে উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়েছেঃ
*****
প্রশ্নঃ- ইয়াহুদ সম্প্রদায় الۡمَغۡضُوۡبِ عَلَیۡہِمۡ (যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত) কেন?
উত্তরঃ-
(1) 2:61 وَ اِذۡ قُلۡتُمۡ یٰمُوۡسٰی لَنۡ نَّصۡبِرَ عَلٰی طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادۡعُ لَنَا رَبَّکَ
یُخۡرِجۡ لَنَا مِمَّا تُنۡۢبِتُ الۡاَرۡضُ مِنۡۢ بَقۡلِہَا وَ قِثَّآئِہَا وَ فُوۡمِہَا وَ عَدَسِہَا وَ بَصَلِہَا ؕ قَالَ اَتَسۡتَبۡدِلُوۡنَ الَّذِیۡ ہُوَ اَدۡنٰی بِالَّذِیۡ ہُوَ خَیۡرٌ ؕ اِہۡبِطُوۡا مِصۡرًا فَاِنَّ لَکُمۡ مَّا سَاَلۡتُمۡ ؕ
আর যখন তোমরা বললে, ‘হে মূসা, আমরা এক খাবারের উপর কখনো ধৈর্য ধরব না।
সুতরাং তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দো‘আ কর, যেন তিনি আমাদের জন্য বের করেন, ভূমি যে সব্জি, কাঁকড়, রসুন, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করে, তা’।
সে বলল, ‘তোমরা কি যা উত্তম তার পরিবর্তে এমন জিনিস গ্রহণ করছ যা নিম্নমানের? তোমরা কোন এক নগরীতে অবতরণ কর। তবে নিশ্চয় তোমাদের জন্য (সেখানে) থাকবে, যা তোমরা চেয়েছ’।
وَ ضُرِبَتۡ عَلَیۡہِمُ الذِّلَّۃُ وَ الۡمَسۡکَنَۃُ ٭ وَ بَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ ذٰلِکَ بِمَا عَصَوۡا وَّ کَانُوۡا یَعۡتَدُوۡنَ ﴿٪۶۱﴾
আর তাদের উপর আরোপ করা হয়েছে লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য এবং তারা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হল।
তা এই কারণে যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করত।
তা এই কারণে যে, তারা নাফরমানী করেছিল এবং তারা সীমালঙ্ঘন করত।
প্রশ্নঃ- তীহ্ উপত্যকায় ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’র আয়োজন কেন ছিল?
উত্তরঃ- এটা ছিল বনী ইসরাইলের প্রতি দয়াপরবশত ছিল।
প্রশ্নঃ- পরিবর্তনের কারণ কি ছিল?
উত্তরঃ- [১] তীহ্ উপত্যকায় ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’র প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই তারা ওসব শব্জী ও শস্যের জন্য আবেদন করলো।
প্রশ্নঃ- আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ কী আসল?
উত্তরঃ- এ প্রান্তরের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি শহর আছে। সেখানে গিয়ে চাষাবাদ করে উৎপন্ন ফসলাদি ভোগের নির্দেশ দেয়া হলো।
প্রশ্নঃ- আল্লাহ তাআলা ইহুদীদের প্রতি এত রাগান্নীত হলেন কেন?
উত্তরঃ- আল্লাহ্ তাআলা মূসা ‘আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে পূর্বেই তাদেরকে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, যদি নির্দেশ অমান্য কর, তবে চিরকাল তোমরা অন্য জাতির দ্বারা শাসিত হতে থাকবে।
যেমন, বলা হয়েছে
(وَاِذْ تَاَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ اِلٰي يَوْمِ الْقِيٰمَةِ مَنْ يَّسُوْمُهُمْ سُوْءَ الْعَذَابِ) ‘
আর সে সময়টি স্মরণ করুন, যখন আপনার রব জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, নিশ্চয় তিনি ইয়াহুদিদের উপর কেয়ামত পর্যন্ত এমন শাসক প্রেরণ করতে থাকবেন, যারা তাদের প্রতি কঠোর শাস্তি পৌছাতে থাকবে। [সূরা আল-আরাফ: ১৬৭]
প্রশ্নঃ- আল্লাহর পক্ষ থেকে বনী ইসরাইলের প্রতি কী নির্দেশ ছিল?
উত্তরঃ-
یٰقَوۡمِ ادۡخُلُوا الۡاَرۡضَ الۡمُقَدَّسَۃَ الَّتِیۡ کَتَبَ اللّٰہُ لَکُمۡ وَ لَا تَرۡتَدُّوۡا
عَلٰۤی اَدۡبَارِکُمۡ فَتَنۡقَلِبُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۲۱﴾
প্রশ্নঃ- আপনি কি জানেন কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী আযাব কাদের হবে ?
উত্তরঃ- ৪ শ্রেণীর লোকের উপর।
হাদীসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী আযাব হবে
(১) সে লোকের যাকে কোন নবী হত্যা করেছে,
(২) অথবা কোন নবীকে হত্যা করেছে।
(৩) আর ভ্রষ্ট ইমাম বা নেতা
(৪) এবং ভাস্কর্য নির্মাণকারী। ” [lll0 আহমাদ: ৬/৪১৩,৪১৫]
প্রশ্নঃ- ধ্বংস হতে বাঁচার উপায় কি?
উত্তরঃ-
কাতাদাই এ আয়াতের তাফসীরে বলেন,
তোমরা আল্লাহ্র অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন হতে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখ; কেননা পূর্বেকার লোকেরা এ দু'টির কারণেই ধ্বংস হয়েছিল। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
******
প্রশ্নঃ- ‘মাগদুব আলাইহি' কে বা কারা?
উত্তরঃ- পূর্বাপর আলোচনা করলে নিঃসন্দেহে এটা বুঝতে পারা যায় যে, এ কথাটি ইয়াহুদীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।
তাই ‘মাগদুব’ বলতে যে এখানে ইয়াহুদীদের বুঝানো হয়েছে,
সে বিষয়ে সমস্ত মুফাসসিরই একমত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসেও অনুরূপ স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে [দেখুন, মুসনাদে আহমাদ ৫/৩২,৩৩]
প্রশ্নঃ- ضالين কারা?
উত্তরঃ-
[৩] এটি ‘সিরাতুল মুস্তাকীম'-এর তৃতীয় ও সর্বশেষ পরিচয়। অর্থাৎ যারা সিরাতুল মুস্তাকীম এ চলে আল্লাহ্র নিয়ামত লাভ করতে পেরেছেন তারা পথভ্রষ্ট নন-কোন গোমরাহীর পথে তারা চলেন না। পূর্বোল্লেখিত আয়াতের ন্যায় এ আয়াতেরও অন্য অনুবাদ হচ্ছে, ‘তাদের পথে নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, যারা গোমরাহ হয়ে আল্লাহ্র উপস্থাপিত পথ হতে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস থেকে এ পথ-ভ্ৰষ্ট লোকদের পরিচয় জানতে পারা যায় যে, দুনিয়ার ইতিহাসে নাসারাগণ হচ্ছে কুরআনে উল্লেখিত এ গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি। [মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩২,৩৩, ৭৭]
★ মূলতঃ যারা সূরা আল-ফাতিহার অর্থ বুঝে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ শেষ করার পর তাদের মন থেকে দো’আ করবে, আল্লাহ্ তা'আলা তাদের দো’আ কবুল করবেন।
প্রশ্নঃ- নামাজে দুআ কবুলের সময় কোনটি?
উত্তরঃ- হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
(اِذا قَالَ الْاِمَامُ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ، فَقُوْلُوْ اٰمِيْنَ، فَمَنْ وَافَقَ قَوْلُهٗ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه)
“যখন ইমাম ‘গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বল্লীন’ বলে তখন তোমরা ‘আমীন’ বা ‘হে আল্লাহ্ কবুল কর’ একথাটি বল; কেননা যার কথাটি ফেরেশতাদের কথা অনুযায়ী হবে তার পূর্বেরগুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে "[বুখারী ৭৮২,মুসলিম: ৪০৯l
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
(وَاِذا قَالَ: غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ، فَقُوْلُوْ اٰمِيْنَ، يُجِيْبُكمُ اللّٰهُ)
“যখন ‘ইমাম গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বল্লীন’ বলে তখন তোমরা ‘আমীন’ বা ‘হে আল্লাহ্ কবুল কর’ একথাটি বল; এতে আল্লাহ্ তোমাদের আহবানে সাড়া দিবেন (দো’আ কবুল করবেন) "[মুসলিম: ৪০৪]
প্রশ্নঃ- ইয়াহুদীরা কোন কোন বিষয়ে মুসলমানদের উপর বেশি হিংসা করে?
উত্তরঃ- হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
(مَا حَسَدَتْكُمْ اليَهُوْدُ عَلَى شَيئٍ مَا حَسَدَ تْكُمُ عَلَى السَّلَامِ وَالتَّأْمِيْنِ)
“ইয়াহুদীরা তোমাদেরকে তোমাদের ‘সালাম’ ও ‘আমীন' বলার চেয়ে বেশী কোন বিষয়ের উপর হিংসা করে না।” [ইবনে মাজাহঃ ৮৫৬]
*****
এক নজরে
প্রশ্ন ঃ- মুনআম আলাইহি কারা?
উত্তর ঃ- তারা হচ্ছেন
১)আম্বিয়া,
২)সিদ্দীক,
৩)শহীদ
৪)ও সালেহীন। [ইবন কাসীর]
প্রশ্ন ঃ- মাগদুব’ কে?
উত্তর ঃ- মাগদুব’ হল ইয়াহুদ ।
এ বিষয়ে সমস্ত মুফাসসিরই একমত।
★ তাদের শাস্তি
وَ ضُرِبَتۡ عَلَیۡہِمُ الذِّلَّۃُ وَ الۡمَسۡکَنَۃُ ٭ وَ بَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ
اللّٰہِ ؕ ؕ
“আর তাদের উপর অপমান লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্যের কষাঘাত হানা হয়েছে এবং তারা আল্লাহ্র অভিশাপ প্রাপ্ত হয়েছে। " [সূরা আল-বাকারাহ: ৬১]
প্রশ্নঃ- তারা লাঞ্ছিত , অপমানিত, , অভিশপ্ত কেন? দারিদ্র্যের কষাঘাতের কারণ কী?
উত্তরঃ- (1) কারন ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ النَّبِیّٖنَ
بِغَیۡرِ الۡحَقِّ তা এই কারণে যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করত।
(2) কারন ذٰلِکَ بِمَا عَصَوۡا وَّ کَانُوۡا یَعۡتَدُوۡنَ ﴿٪۶۱﴾
তা এই কারণে যে, তারা নাফরমানী করেছিল এবং তারা সীমালঙ্ঘন করত।
প্রশ্ন ঃ- 'গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি' কারা?
উত্তর ঃ- 'গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি' হল নাসারাগণ দুনিয়ার ইতিহাসে নাসারাগণ হচ্ছে কুরআনে উল্লেখিত এ গোমরাহ ও পথ-ভ্ৰষ্ট জাতি। [মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩২,৩৩, ৭৭]
Comment