কুরআন খতম বা রিভিশন যখন অনিয়মিত হয়ে পড়ে !
সালাফরা কুরআন খতম দেয়ার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী ছিলেন! কারণ তাঁরা কুরআনের এই আয়াতের মর্মার্থ খুব ভালভাবে অবগত ছিলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, خُذُوا مَآ ءَاتَيْنٰكُم بِقُوَّةٍ وَاذْكُرُوا مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ [আল-বাকারাহ: ৬৩] একারণেই মুসলিমরা কুরআন বারবার পঠনের এই ধারাকে অত্যন্ত সম্মানজনক একটি আমল বিবেচনা করে যথাসাধ্য আমল করে থাকেন!
আমরা সাধ্যমত কুরআন খতমের এই ধারাকে আমাদের আমলী জীবনের অংশ বানিয়ে নিব ইনশাআল্লাহ! তবে কুরআন খতম বা রিভিশন যখন অনিয়মিত হয়ে পড়ে অর্থাৎ আমার মতে কোন ভাই-বোন যদি একমাসের বেশীতে কুরআন খতমরত থাকেন এবং কুরআনের প্রথম-একতৃতীয়াংশে থাকেন তাহলে হে সম্মানিত ভাই বা বোন, কুরআন অধ্যয়নের এই ধারাবাহিকতায় আপনি মাঝেমধ্যে কুরআনের শেষের দিককার ১/২টা সূরা পাঠ করে নিন, তা হতে পারে সূরা ফাতহ, সূরা মুহাম্মাদ, সাদ, যুমার, হাজ্জ কিংবা সূরা হাশর অথবা ৩০তম পারা থেকে কয়েকটি সূরা! এরপর, আপনি আবার সেখান থেকে শুরু করুন, খতম দেয়ার উদ্দেশ্যে আপনি যেখানে গিয়ে থেমেছিলেন!
এর লাভ?!-
১. কুরআনের সূরা বিন্যাসে প্রথম দিককার সূরাগুলো এবং শেষের দিকের সূরাগুলো এক নয়! প্রথম দিককার সূরাগুলোকে বলা যায় ইলমে ফিকহের প্রধান ও ইলমে মুখাসিমা সংক্রান্ত! আর শেষের দিকের সূরাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ঈমান, তাওহীদ ও তাহরীদ পাওয়া যায়! অর্থাৎ এই দুই অংশের পঠনপাঠন তিলাওয়াতকারীকে একভাবে প্রভাবিত করে না, বরং ভিন্নভিন্ন ও অনন্যভাবে প্রভাবিত করে! আমরা যখন কুরআন খতম দেই তখন আমরা উদ্দেশ্যশূণ্য থাকি না! আমরা তখন এর দ্বারা আত্মশুদ্ধি খুঁজি ও জীবন চলার পথের সম্বল তাকওয়া খুঁজি! আর সাথেসাথে খুঁজি আল্লাহর পক্ষ থেকে রাহমাহ ও সুসংবাদ! কুরআনে-বর্ণিত ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে।...’ কুরআনের এবং এ দ্বীনেরই পূর্ণাঙ্গতা ঘোষণা করছে! অতএব, আমাদের কুরআন পাঠ-ও হোক এ পূর্ণতাকে সামনে রেখে! অনিয়মিত তিলাওয়াত কুরআনের শেষের অংশের স্মরণকে পিছিয়ে দিবে তা আমাদের জন্য পছন্দসই নয়! অতএব, আমরা তিন দিন বা একমাসেও যদি কুরআন খতম করতে না পারি তবে, এভাবে আশা করা যায় অনিয়মিতভাবে হলেও আমাদের এই সফর ক্লান্তিকর হবে না ও আমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভাটাও পড়বে না!
***
Comment