(14) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (14)
النساء আন-নিসা
فَمَا لَکُمۡ فِی الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِئَتَیۡنِ وَ اللّٰہُ اَرۡکَسَہُمۡ بِمَا کَسَبُوۡا ؕ اَتُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَہۡدُوۡا مَنۡ اَضَلَّ اللّٰہُ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ سَبِیۡلًا ﴿۸۸﴾
সুতরাং মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমাদের কী হল যে, তোমরা দু’ দল হয়ে গেলে?
অথচ আল্লাহ তারা যা কামাই করেছে তার জন্য তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন তোমরা কি তাকে হিদায়াত করতে চাও?
আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ পাবে না।
***
প্রশ্নঃ- মুনাফিকদের শাস্তির ব্যাপারে কিছু বলবেন কি?
উত্তরঃ- 4:138
(1) بَشِّرِ الۡمُنٰفِقِیۡنَ بِاَنَّ لَہُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمَۨا ﴿۱۳۸﴾ۙ
মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, নিশ্চয় তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
প্রশ্নঃ- আল্লাহ তায়ালা মুনাফিকদের শাস্তির ক্ষেত্রে "সুসংবাদ" শব্দটি ব্যবহার করেছেন কেন?
উত্তরঃ- কাঁটা ঘায়ে নুনের (লবণের) ছিটা অর্থাৎ তার শাস্তি আরো বৃদ্ধি করার জন্য।
2) আল্লাহ তায়ালা বলেন
সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১৪০
ْ إِنَّ ٱللَّهَ جَامِعُ ٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱلْكَٰفِرِينَ فِى جَهَنَّمَ جَمِيعًا
আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।
3) আল্লাহ তাআলা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৬৩
أَلَمْ يَعْلَمُوٓا۟ أَنَّهُۥ مَن يُحَادِدِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَأَنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدًا فِيهَا ذَٰلِكَ ٱلْخِزْىُ ٱلْعَظِيمُ
অর্থঃ তারা কি একথা জেনে নেয়নি যে, আল্লাহর সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে যে মোকাবেলা করে তার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে দোযখ; তাতে সব সময় থাকবে। এটিই হল মহা-অপমান।
4) আল্লাহ তাআলা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৭৩
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ جَٰهِدِ ٱلْكُفَّارَ وَٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
অর্থঃ হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে , তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।
5) আল্লাহ তাআলা বলেন
সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১৪৫
إِنَّ ٱلْمُنَٰفِقِينَ فِى ٱلدَّرْكِ ٱلْأَسْفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
অর্থঃ নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না।
** [১] এ আয়াতে মুনাফিকদের স্থান নির্দেশ করে বলা হয়েছে যে, তারা জাহান্নামের সর্বনিম স্তরে থাকবে।
অন্য স্থানে ফিরআউন ও তার অনুসারীদের জন্য কঠিন শাস্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। “আগুন, তাদেরকে তাতে উপস্থিত করা হয় সকাল ও সন্ধ্যায় এবং যেদিন কিয়ামত ঘটবে সেদিন বলা হবে, ফিরআউন গোষ্ঠীকে নিক্ষেপ কর কঠোর শাস্তিতে” [সূরা গাফির: ৪৬]
এ আয়াতে বর্ণিত ‘দারকুল আসফাল’ বা নিম্নতম স্তর কি?
এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সেটা হবে বদ্ধ সিন্ধুক। [মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবাহঃ ১৩/১৫৪, নং ১৫৯৭২]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, দারকুল আসফাল হচ্ছে, এমন কিছু ঘর যেগুলোর দরজা বন্ধ করা আছে। আর সেগুলোকে উপর ও নিচ থেকে প্রজ্জলিত করা হবে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
ইবন আব্বাস বলেন, এর অর্থ, জাহান্নামের নীচে থাকবে। [তাবারী]
****
প্রশ্নঃ- একাধিক ভাইয়ের মাঝে একজন মুমিন অপরজন মুনাফিক হতে পারে কি?
উত্তরঃ- হ্যাঁ! অবশ্যই হতে পারে। এমনকি বাবা,মা সন্তান এর মাঝে ও মুমিন, মুনাফিক ও কাফের উভয় হতে পারে।
যথা:-
মুসআব ইবনে উমাইর রাঃ ছিল মুমিন , তার ভাই ও মা ছিল কাফির। আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ছিল মুনাফিকদের সরদার অর্থাৎ খাঁটি মুনাফিক, আবদুল্লাহ ছিল খাঁটি মুমিন।
প্রশ্নঃ- কাফের কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ- কাফের সাত প্রকার:-
১) মুনাফিক
২) মুরতাদ
৩) মুশরিক
৪) কিতাবী
৫) দাহরিয়া
৬) মুআত্তিল/নাস্তিক
৭) যিন্দিক
পরিচয়
১) যদি কোন কাফের জবানে ইসলাম প্রকাশ করে, ভিতরগতভাবে কাফের, তাহলে সে মুনাফিক।
২) যদি কুফর অবলম্বন করে তাহলে সে মুরতাদ।
৩) আর যদি একাধিক উপাস্যের প্রবক্তা হয়, তাহলে সে মুশরিক।
৪) যদি আসমানী কিতাবের অনুসারী হয়, তাহলে সে কিতাবী ।
৫) কেউ যদি দুনিয়ার বিবর্তনকে যুগের দিকে সম্মন্ধ করে, এবং একে অবিনশ্বর মনে করে, তাহলে তার নাম দাহরিয়া।
৬) যদি কেউ দুনিয়ার স্রষ্টা থাকার কথা একেবারেই অস্বীকার করে , তাহলে এমন লোককে মুআত্তিল (নাস্তিক) বলে।
৭) আর যদি মুসলমান দাবী করার পর ও এসব আকিদা পোষণ করে, তাহলে তাকে যিন্দিক বলে ।
(দেখুন:- ওরা কাফের কেন?)
******
প্রশ্নঃ- মুনাফিকদের ক্ষেত্রে মুমিনদের মাঝে একাধিক গ্রুপ হতে পারে কি?
উত্তরঃ- হ্যাঁ! হতে পারে।
যথা:-
আল্লাহ তাআলা বলেন
فَمَا لَکُمۡ فِی الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِئَتَیۡنِ সুতরাং মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমাদের কী হল যে, তোমরা দু’ দল হয়ে গেলে?
প্রশ্নঃ- ঈমান আনার পর পথভ্রষ্ট হতে পারে কি?
উত্তরঃ- হ্যাঁ! হতে পারে।
যথা:- আল্লাহ তাআলা বলেন
وَ اللّٰہُ اَرۡکَسَہُمۡ بِمَا کَسَبُوۡا ؕ
আল্লাহ তারা যা কামাই করেছে তার জন্য তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন।
প্রশ্নঃ- মদীনা নগরীর ব্যপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন?
উত্তরঃ- [১] যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ওহুদের যুদ্ধে বের হলেন তখন তার সাথীদের মধ্য থেকে কিছু লোক ফিরে চলে আসলেন।
তাদের ব্যাপারে সাহাবাগণ দ্বিমত পোষণ করলেন । কেউ বললেন হত্যা করব, কেউ বললেন হত্যা করব না। তখন এ আয়াত নাযিল হয় এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এই মদীনা নগরী কিছু মানুষকে দেশান্তর করে যেমনিভাবে আগুন দূর করে লোহার ময়লাকে। [বুখারীঃ ১৮৮৪, ৪০৫০, ৪৫৮৯, মুসলিমঃ ১৩৮৪, ২৭৭৬]
প্রশ্নঃ- আল্লাহ তাআলা কাওকে পথভ্রষ্ট করলে অন্য কেও তাকে হেদায়েত দিতে পারবে কি?
উত্তরঃ- না। কখনো না।
আল্লাহ তাআলা এভাবে ব্যক্ত করেছেন
যথা:-
আল্লাহ তাআলা বলেন
اَتُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَہۡدُوۡا مَنۡ اَضَلَّ اللّٰہُ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ سَبِیۡلًا ﴿۸۸﴾
এ আয়াতে যেভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা পথভ্রষ্ট করেছেন, তাদের জন্য পথের দিশা পাওয়ার কোন উপায়ই অবশিষ্ট নেই।
অন্য আয়াতেও আল্লাহ্ তা’আলা তা স্পষ্ট বলেছেন।
وَ مَنۡ یُّرِدِ اللّٰہُ فِتۡنَتَہٗ فَلَنۡ تَمۡلِکَ لَہٗ مِنَ اللّٰہِ شَیۡئًا ؕ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ لَمۡ یُرِدِ اللّٰہُ اَنۡ یُّطَہِّرَ قُلُوۡبَہُمۡ ؕ لَہُمۡ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ ۚۖ وَّ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۴۱﴾
“আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই। এরাই হচ্ছে তারা যাদের হৃদয়কে আল্লাহ বিশুদ্ধ করতে চান না; তাদের জন্য আছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা আর আখেরাতে রয়েছে তাদের জন্য মহাশাস্তি” [সূরা আল-মায়িদাহ ৪১]
অন্য আয়াতে এসেছে, مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَا ہَادِیَ لَہٗ ؕ
“আল্লাহ যাদেরকে বিপথগামী করেন তাদের কোন পথপ্রদর্শক নেই" সূরা আল-আরাফ: ১৮৬]
*******
النساء আন-নিসা
فَمَا لَکُمۡ فِی الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِئَتَیۡنِ وَ اللّٰہُ اَرۡکَسَہُمۡ بِمَا کَسَبُوۡا ؕ اَتُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَہۡدُوۡا مَنۡ اَضَلَّ اللّٰہُ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ سَبِیۡلًا ﴿۸۸﴾
সুতরাং মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমাদের কী হল যে, তোমরা দু’ দল হয়ে গেলে?
অথচ আল্লাহ তারা যা কামাই করেছে তার জন্য তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন তোমরা কি তাকে হিদায়াত করতে চাও?
আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ পাবে না।
***
প্রশ্নঃ- মুনাফিকদের শাস্তির ব্যাপারে কিছু বলবেন কি?
উত্তরঃ- 4:138
(1) بَشِّرِ الۡمُنٰفِقِیۡنَ بِاَنَّ لَہُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمَۨا ﴿۱۳۸﴾ۙ
মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, নিশ্চয় তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
প্রশ্নঃ- আল্লাহ তায়ালা মুনাফিকদের শাস্তির ক্ষেত্রে "সুসংবাদ" শব্দটি ব্যবহার করেছেন কেন?
উত্তরঃ- কাঁটা ঘায়ে নুনের (লবণের) ছিটা অর্থাৎ তার শাস্তি আরো বৃদ্ধি করার জন্য।
2) আল্লাহ তায়ালা বলেন
সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১৪০
ْ إِنَّ ٱللَّهَ جَامِعُ ٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱلْكَٰفِرِينَ فِى جَهَنَّمَ جَمِيعًا
আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।
3) আল্লাহ তাআলা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৬৩
أَلَمْ يَعْلَمُوٓا۟ أَنَّهُۥ مَن يُحَادِدِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَأَنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدًا فِيهَا ذَٰلِكَ ٱلْخِزْىُ ٱلْعَظِيمُ
অর্থঃ তারা কি একথা জেনে নেয়নি যে, আল্লাহর সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে যে মোকাবেলা করে তার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে দোযখ; তাতে সব সময় থাকবে। এটিই হল মহা-অপমান।
4) আল্লাহ তাআলা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৭৩
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ جَٰهِدِ ٱلْكُفَّارَ وَٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
অর্থঃ হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে , তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।
5) আল্লাহ তাআলা বলেন
সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১৪৫
إِنَّ ٱلْمُنَٰفِقِينَ فِى ٱلدَّرْكِ ٱلْأَسْفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
অর্থঃ নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না।
** [১] এ আয়াতে মুনাফিকদের স্থান নির্দেশ করে বলা হয়েছে যে, তারা জাহান্নামের সর্বনিম স্তরে থাকবে।
অন্য স্থানে ফিরআউন ও তার অনুসারীদের জন্য কঠিন শাস্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। “আগুন, তাদেরকে তাতে উপস্থিত করা হয় সকাল ও সন্ধ্যায় এবং যেদিন কিয়ামত ঘটবে সেদিন বলা হবে, ফিরআউন গোষ্ঠীকে নিক্ষেপ কর কঠোর শাস্তিতে” [সূরা গাফির: ৪৬]
এ আয়াতে বর্ণিত ‘দারকুল আসফাল’ বা নিম্নতম স্তর কি?
এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সেটা হবে বদ্ধ সিন্ধুক। [মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবাহঃ ১৩/১৫৪, নং ১৫৯৭২]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, দারকুল আসফাল হচ্ছে, এমন কিছু ঘর যেগুলোর দরজা বন্ধ করা আছে। আর সেগুলোকে উপর ও নিচ থেকে প্রজ্জলিত করা হবে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
ইবন আব্বাস বলেন, এর অর্থ, জাহান্নামের নীচে থাকবে। [তাবারী]
****
প্রশ্নঃ- একাধিক ভাইয়ের মাঝে একজন মুমিন অপরজন মুনাফিক হতে পারে কি?
উত্তরঃ- হ্যাঁ! অবশ্যই হতে পারে। এমনকি বাবা,মা সন্তান এর মাঝে ও মুমিন, মুনাফিক ও কাফের উভয় হতে পারে।
যথা:-
মুসআব ইবনে উমাইর রাঃ ছিল মুমিন , তার ভাই ও মা ছিল কাফির। আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ছিল মুনাফিকদের সরদার অর্থাৎ খাঁটি মুনাফিক, আবদুল্লাহ ছিল খাঁটি মুমিন।
প্রশ্নঃ- কাফের কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ- কাফের সাত প্রকার:-
১) মুনাফিক
২) মুরতাদ
৩) মুশরিক
৪) কিতাবী
৫) দাহরিয়া
৬) মুআত্তিল/নাস্তিক
৭) যিন্দিক
পরিচয়
১) যদি কোন কাফের জবানে ইসলাম প্রকাশ করে, ভিতরগতভাবে কাফের, তাহলে সে মুনাফিক।
২) যদি কুফর অবলম্বন করে তাহলে সে মুরতাদ।
৩) আর যদি একাধিক উপাস্যের প্রবক্তা হয়, তাহলে সে মুশরিক।
৪) যদি আসমানী কিতাবের অনুসারী হয়, তাহলে সে কিতাবী ।
৫) কেউ যদি দুনিয়ার বিবর্তনকে যুগের দিকে সম্মন্ধ করে, এবং একে অবিনশ্বর মনে করে, তাহলে তার নাম দাহরিয়া।
৬) যদি কেউ দুনিয়ার স্রষ্টা থাকার কথা একেবারেই অস্বীকার করে , তাহলে এমন লোককে মুআত্তিল (নাস্তিক) বলে।
৭) আর যদি মুসলমান দাবী করার পর ও এসব আকিদা পোষণ করে, তাহলে তাকে যিন্দিক বলে ।
(দেখুন:- ওরা কাফের কেন?)
******
প্রশ্নঃ- মুনাফিকদের ক্ষেত্রে মুমিনদের মাঝে একাধিক গ্রুপ হতে পারে কি?
উত্তরঃ- হ্যাঁ! হতে পারে।
যথা:-
আল্লাহ তাআলা বলেন
فَمَا لَکُمۡ فِی الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِئَتَیۡنِ সুতরাং মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমাদের কী হল যে, তোমরা দু’ দল হয়ে গেলে?
প্রশ্নঃ- ঈমান আনার পর পথভ্রষ্ট হতে পারে কি?
উত্তরঃ- হ্যাঁ! হতে পারে।
যথা:- আল্লাহ তাআলা বলেন
وَ اللّٰہُ اَرۡکَسَہُمۡ بِمَا کَسَبُوۡا ؕ
আল্লাহ তারা যা কামাই করেছে তার জন্য তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন।
প্রশ্নঃ- মদীনা নগরীর ব্যপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন?
উত্তরঃ- [১] যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ওহুদের যুদ্ধে বের হলেন তখন তার সাথীদের মধ্য থেকে কিছু লোক ফিরে চলে আসলেন।
তাদের ব্যাপারে সাহাবাগণ দ্বিমত পোষণ করলেন । কেউ বললেন হত্যা করব, কেউ বললেন হত্যা করব না। তখন এ আয়াত নাযিল হয় এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এই মদীনা নগরী কিছু মানুষকে দেশান্তর করে যেমনিভাবে আগুন দূর করে লোহার ময়লাকে। [বুখারীঃ ১৮৮৪, ৪০৫০, ৪৫৮৯, মুসলিমঃ ১৩৮৪, ২৭৭৬]
প্রশ্নঃ- আল্লাহ তাআলা কাওকে পথভ্রষ্ট করলে অন্য কেও তাকে হেদায়েত দিতে পারবে কি?
উত্তরঃ- না। কখনো না।
আল্লাহ তাআলা এভাবে ব্যক্ত করেছেন
যথা:-
আল্লাহ তাআলা বলেন
اَتُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَہۡدُوۡا مَنۡ اَضَلَّ اللّٰہُ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ سَبِیۡلًا ﴿۸۸﴾
এ আয়াতে যেভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা পথভ্রষ্ট করেছেন, তাদের জন্য পথের দিশা পাওয়ার কোন উপায়ই অবশিষ্ট নেই।
অন্য আয়াতেও আল্লাহ্ তা’আলা তা স্পষ্ট বলেছেন।
وَ مَنۡ یُّرِدِ اللّٰہُ فِتۡنَتَہٗ فَلَنۡ تَمۡلِکَ لَہٗ مِنَ اللّٰہِ شَیۡئًا ؕ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ لَمۡ یُرِدِ اللّٰہُ اَنۡ یُّطَہِّرَ قُلُوۡبَہُمۡ ؕ لَہُمۡ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ ۚۖ وَّ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۴۱﴾
“আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই। এরাই হচ্ছে তারা যাদের হৃদয়কে আল্লাহ বিশুদ্ধ করতে চান না; তাদের জন্য আছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা আর আখেরাতে রয়েছে তাদের জন্য মহাশাস্তি” [সূরা আল-মায়িদাহ ৪১]
অন্য আয়াতে এসেছে, مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَا ہَادِیَ لَہٗ ؕ
“আল্লাহ যাদেরকে বিপথগামী করেন তাদের কোন পথপ্রদর্শক নেই" সূরা আল-আরাফ: ১৮৬]
*******