Announcement

Collapse
No announcement yet.

(24) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম ( সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (3)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • (24) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম ( সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (3)

    (24) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (3)

    اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡہَا وَ
    الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾

    নিশ্চয় সদাকা হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।

    ****
    ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ (3)
    ****

    3-4)

    চার মাযহাব

    মালেকী মাযহাব ফকীহ আবুল ওয়ালীদ ইবনে রুশদ আলকুরতুবী রাহ. (মৃত্যু ৫২০হি.) বলেনÑ

    وأما قوله: وفي سبيل الله إنه الغازي في سبيل الله، فهو صحيح لا اختلاف فيه، وإنما يختلف هل يعطى منها الغني في الغزو؟ فقال في المدونة: إنه يعطى منها وإن كان غنيا.

    ‘ফী সাবীলিল্লাহ’-এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী। এটিই সহীহ কথা। এতে কোনো মতভিন্নতা নেই। মতভিন্নতা এ নিয়ে যে, ধনী ব্যক্তিকে জিহাদে যাকাত থেকে দেওয়া হবে কি না।

    আর ইমাম মালেক রাহ. হতে আলমুদাওয়ানা গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে যে, মুজাহিদকে দেওয়া হবে, যদিও সে ধনী হয়। [আলবায়ান ওয়াত্তাহসীল ১৮/৫১৭; আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা ১/৩৪৬]

    আরো দেখুন : বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২/৪৩; মাওয়াহিবুল জালীল ৩/২৩৩; আত্তাজ ওয়াল ইকলীল ৩/২৩৩

    শাফেয়ী মাযহাব ইমাম নববী রাহ. ‘আলমাজমু শরহুল মুহাযযাব’ গ্রন্থে বলেন:
    ومذهبنا أن سهم سبيل الله المذكور في الآية الكريمة يصرف إلى الغزاة الذين لا حق لهم في الديوان بل يغزون متطوعين، وبه قال أبو حنيفة ومالك رحمهما الله تعالى.
    আমাদের (শাফেয়ী) মাযহাব হল, আয়াতে কারীমার মধ্যে উল্লিখিত ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ খাতে বরাদ্দকৃত যাকাতের অর্থ ঐ সকল লড়াইকারীর পেছনে ব্যয় করা হবে,
    সরকারি রেজিস্টারে যাদের কোনো ভাতা চালু নেই; যারা স্বেচ্ছায় নিজ উদ্যোগে জিহাদে যোগদান করেছে।
    ইমাম আবু হানীফা এবং ইমাম মালেক রাহ.-ও অনুরূপ বলেছেন। [শরহুল মুহাযযাব ৬/১৯৮] আরো দেখুন : আলহাবিল কাবীর ৮/৫১১; রওযাতুত তালিবীন ২/৩২১

    হাম্বলী মাযহাব শামসুদ্দীন ইবনে কুদামা আলমাকদিসী রাহ. (৬৮২ হি.) ‘আশশারহুল কাবীর’ গ্রন্থে বলেন:
    (السابع في سبيل الله وهم الغزاة الذين لا ديوان لهم) هذا الصنف السابع من أصناف الزكاة ولا خلاف في استحقاقهم وبقاء حكمهم، ولا خلاف في أنهم الغزاة، لأن سبيل الله عند الإطلاق هو الغزو.

    সপ্তম নম্বর হল ‘ফী সাবীলিল্লাহ’। আর তারা হল, ঐসকল মুজাহিদ, যারা সরকারি রেজিস্টারভুক্ত নয়। এটি যাকাত ব্যয়ের খাতসমূহের মধ্যে সপ্তম।
    আর তারা যাকাতের অধিকারী হওয়ার ক্ষেত্রে এবং তাদের সম্পর্কে এ হুকুম বলবৎ থাকার ক্ষেত্রে কোনো দ্বিমত নেই। আর এতেও কোনো মতভিন্নতা নেই যে, এখানে উদ্দেশ্য হল, আল্লাহর পথে জিহাদকারী সৈনিকের দল।
    কেননা ‘সাবীলুল্লাহ’ শব্দ কোনো ব্যাখ্যামুক্তভাবে (مطلق) ব্যবহার হলে তার দ্বারা উদ্দেশ্য জিহাদই হয়ে থাকে।

    অবশ্য ইমাম আহমাদ রাহ. থেকে ‘সাবীলুল্লাহ’-এর আওতায় হজ্বে গমনকারীকে যাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে কি না’ এ ব্যাপারে দুটি মত পাওয়া যায়। একটি মত হল, তাকে যাকাত দেওয়া যাবে না।

    ইবনে কুদামা রাহ. বলেন:

    اختلف الرواية عن أحمد رحمه الله في ذلك، فروي عنه أنه لا يصرف منها في الحج، وبه قال مالك وأبو حنيفة والثوري والشافعي وأبو ثور وابن المنذر، وهي أصح؛ لأن سبيل الله عند الإطلاق إنما ينصرف إلى الجهاد، فإن كل ما في القرآن من ذكر سبيل الله إنما أريد به الجهاد إلا اليسير، فيجب أن يحمل ما في آية الزكاة على ذلك؛ لأن الظاهر إرادته به… وروي عنه أن الفقير يعطى قدر ما يحج به الفرض أو يستعين به فيه.

    ইমাম আহমাদ রাহ. থেকে এ ব্যাপারে দুটি বক্তব্য পাওয়া যায়।
    একটি বক্তব্য হল, যাকাতের অর্থ থেকে হজে¦ ব্যয় করা যাবে না।

    ইমাম মালেক, আবু হানীফা, ছাওরী, শাফেয়ী, আবু ছাওর ও ইবনুল মুনযির রাহ.-ও অনুরূপ বলেছেন। এটি সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত।

    কেননা সাবীলুল্লাহ ‘মুতলাক’ ক্ষেত্রে কেবলমাত্র জিহাদের অর্থেই ব্যবহার হয়।
    কুরআন মাজীদে যেখানেই ‘সাবীলুল্লাহ’-এর আলোচনা এসেছে সবখানেই জিহাদের অর্থে এসেছে; অল্প কয়েকটি জায়গা ছাড়া। অতএব আবশ্যক হল, যাকাতের আয়াতেও ঐ অর্থই গ্রহণ করা। কেননা এ অর্থ উদ্দেশ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক।

    …ইমাম আহমাদ রাহ. থেকে আরেকটি মত হল, দরিদ্র ব্যক্তিকে ঐ পরিমাণ যাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে, যার দ্বারা সে ফরয হজ¦ আদায় করতে পারে অথবা এর দ্বারা হজ আদায়ে সহযোগিতা নিতে পারে। [আশশারহুল কাবীর ১/৭১৪] আরো দেখুন : আলইনসাফ, মারদাবী ৩/২৩৫।

    ********

    4) হানাফী মাযহাব ‘সাবীলুল্লাহ’ দ্বারা যে আল্লাহর রাস্তায় লড়াইকারী মুজাহিদ উদ্দেশ্য তা ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর অন্যতম প্রধান শাগরিদ ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. (মৃত্যু ১৮৯ হি.)-এর নিচের বক্তব্য থেকে সুস্পষ্ট।

    হাদীসের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ মুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ-এ আছে:

    أخبرنا مالك، حدثنا زيد بن أسلم، عن عطاء بن يسار، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: لا تحل الصدقة لغني إلا لخمسة: لغاز في سبيل الله، أو لعامل عليها، أو لغارم، أو لرجل اشتراها بماله، أو لرجل له جار مسكين تصدق على المسكين فأهدى إلى الغني.

    এই হাদীসটি উল্লেখ করার পর ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. বলেন:

    قال محمد: وبهذا نأخذ، والغازي في سبيل الله إذا كان له عنها غنى يقدر بغناه على الغزو لم يستحب له أن يأخذ منها شيئا، وكذلك الغارم إن كان عنده وفاء بدينه وفضل تجب فيه الزكاة لم يستحب له أن يأخذ منها شيئا، وهو قول أبي حنيفة رحمه الله.

    এই হাদীস অনুযায়ী আমাদেরও ফতোয়া। আল্লাহর পথে লড়াইকারীর যদি এ পরিমাণ সম্পদ থাকে, যা দ্বারা সে যুদ্ধে যেতে সক্ষম, তার জন্য শোভনীয় নয় যে, সে যাকাত থেকে গ্রহণ করবে। …আর এটা আবু হানীফা রাহ.-এরও অভিমত। [মুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ, হাদীস ৩৪৩]

    ইমাম মুহাম্মাদ কিতাবুল আছলে বলেন:

    ولا بأس بأن يعين حاجاً منقطعاً مقيماً، وغازياً منقطعاً به، ولا بأس بأن يعين مكاتباً. وبهذا يأخذ أبو حنيفة وأبو يوسف ومحمد.

    এতে কোনো অসুবিধা নেই যে, পাথেয় নেই এমন হজ্জে গমনেচ্ছু ব্যক্তিকে যাকাতের সম্পদ থেকে সহায়তা করা এবং সম্বলহীন মুজাহিদকে সহায়তা করা।
    … আবু হানীফা ও আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মাদও এ মত গ্রহণ করেছেন। [কিতাবুল আছল ২/১০৩]

    ইমাম আবু বকর জাসসাস রাহ. (মৃত্যু ৩৭০ হি.) শরহু মুখতাসারিত তহাবীতে বলেন:
    “وفي سبيل الله” هم أهل الجهاد من الفقراء.
    ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ তারা হলেন অসচ্ছল মুজাহিদগণ। [শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৩৭৩]

    আবু ইয়াকুব আলজুরজানী রাহ. (মৃত্যু ৫২২ হি.) খিযানাতুল আকমাল কিতাবে বলেন:
    و”سبيل الله” فقراء الغزاة عندنا، وعن محمد : الحاج أيضا. ‘সাবীলুল্লাহ’ হচ্ছে আমাদের নিকট দরিদ্র মুজাহিদ।
    আর ইমাম মুহাম্মাদ রাহ.-এর একটি মত এটাও যে, দরিদ্র হাজ্বী। [খিযানাতুল আকমল ১/২৯১]

    আলবিনায়া শরহুল হিদায়া গ্রন্থে আছে: وقال ابن المنذر رحمه الله: قول أبي حنيفة رحمه الله وأبي يوسف ومحمد: “في سبيل الله” هو الغازي غير الغني وحكى أبو ثور عن أبي حنيفة أنه الغازي دون الحاج.
    ইবনুল মুনযির রাহ. বলেন, ইমাম আবু হানীফা, আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ রাহ. বলেন, ‘সাবীলুল্লাহ’ হল দরিদ্র গাজী।
    আর ইমাম আবু সাওর রাহ. ইমাম আবু হানীফা রাহ. থেকে বর্ণনা করেন, ‘সাবীলুল্লাহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল যুদ্ধরত মুজাহিদ; হজে¦ গমনেচ্ছু ব্যক্তি নয়। [আলবিনায়া ৪/১৮৫]
    উল্লিখিত হাদীস-আসার এবং মুজতাহিদ ইমাম ও ফিক্হবিদগণের বক্তব্য থেকে একথা সুস্পষ্টভাবে জানা গেল যে, কুরআন মাজীদে যাকাতের খাত সংক্রান্ত আয়াতে ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, আল্লাহর রাস্তায় কাফেরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত মুজাহিদগণ। এটি সর্বসম্মত মত। দু-একজনের মতে দরিদ্র হাজ্বীগণও এ খাতের হকদার।
    আরো দ্রষ্টব্য : মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ১/৪৮১; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৮; আততাজরীদ, ইমাম কুদুরী, মাসআলা নং ১০১৯

    ****
Working...
X