Announcement

Collapse
No announcement yet.

জামাআতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে বন্দীত্বের ভয় ও সুরাহ আনকাবুত আয়াত-১০ এর ব্যাপারে আত্মোপলব্ধি!!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জামাআতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে বন্দীত্বের ভয় ও সুরাহ আনকাবুত আয়াত-১০ এর ব্যাপারে আত্মোপলব্ধি!!

    কস্মিকভাবে সুরাহ আনকাবুতের ১০ নাম্বার আয়াতটি সামনে পড়লো। গাঁ-টা কেমন যেন শিউরে ওঠলো। আসলেই কথাগুলো যেনো আমাকেই লক্ষ্য করে বলা হচ্ছিল।

    وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ وَلَئِنْ جَاءَ نَصْرٌ مِنْ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ ۚ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ


    কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে। যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?
    [Surah Al-Ankabut, Ayat 10]






    কেমন যেনো নিজেকে এই টাইপের বলে মনে হলো। কারণ যখনই মনে হয় আমার জামাআতে যোগ দেয়ার সময় এসেছে তখন আমার নফস আমাকে পিছুটান দেয় এই বলে, "জামাআতে যোগ দেয়াাটা কি রিস্কি না?"

    আমার অন্তর আমাকে যুক্তি দেখায়, "তুমি এখন ছাত্র মানুষ। একটা ক্যারিয়ার আছে তোমার। ইন কেইস, জামাআতে যোগ দিয়ে যোগ দিয়ে যদি ধরা পড়ে যাও তাহলে ক্যারিয়ার তো যাবেই, লাইফ তামা তামা করে দেবে।"


    এই ধরা পড়ার ভয়টাই কেমন যেনো জামাআতের খোঁজ নিতে ও তাতে শরীক হওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দিয়ে রাখে। উদ্ভট যুক্তি দেখায়, "এর চেয়ে বরং অনলাইনে সেফটির সঙ্গে দাওয়াহের কাজ করো, ফেসবুকে লেখালেখি কর---- এটাও জিহাদ!!!"

    কিন্তু আমি জানতাম না আমার রব আমার এসব উদ্ভট যুক্তির জবাব দিয়ে রেখেছেন, আমাকে একদল কাপুরুষ লোকের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে রেখেছেন।
    -----------

    وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ
    "কতিপয় লোক মনে করে আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি।"





    - হ্যাঁ, আমিও আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি। আমি মনে করি জিহাদের সঠিক পথের দিশাই আমার রব আমাকে দিয়েছেন। এখন আমার উপর জিহাদ ফরযে আইন তাও বিশ্বাস করি। কিন্তু জিহাদ করার জন্য জামাআতে যোগ দিতে ভয় পাই, কারণ কদিন পরপরই পেপারে আসে, "অমুক জায়গা থেকে অমুক জঙ্গি গ্রেফতার (!)"

    আর গ্রেফতার হলে চলবে অবর্ণনীয় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। এই ভয়টাই মুখ্য।

    এই কারণে আল্লাহ পাক আয়াতের অপর অংশে বলছেন,

    فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ

    "কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে।"





    -আরেহ, আমাকে তো ধরেনি বা নির্যাতনও করা হয়নি। আমি তো আরো নিচু লেভেলের!

    আমি মনে করছি, যাই হোক, অনলাইনেই দাওয়াহ কার্যক্রম চালিয়ে যাই। অফলাইনে পরে যোগ দেবো নে, যখন জামাআহ শক্তিশালী হবে।


    কিন্তু জীবন তো আর বসে থাকে না। জামাআত ছাড়া এভাবে একটা পর্যায়ে হতোদ্যম হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। কারণ জামাআহ ছাড়া জীবন কম্পাস ছাড়া জাহাজের ন্যায়। আর অনলাইন বা ফেসবুক--- এ তো মায়াজাল!


    এরপর শুরু করবো রিজিকের তালাশ। রিজিকের তালাশে জিহাদী স্পিরিট যা তারুণ্যের উচ্ছ্বল ও আবেগময় সময়ে সৃষ্টি হয়েছিলো তা ধীরে ধীরে প্রশমিত হয়ে পড়বে। বরকতময় পথ যা আল্লাহ পাক সন্ধান দিয়েছিলেন তা থেকে পা পিছলে গড়িয়ে যাবো বহু দূরে।



    - কিন্তু একদল ভাই ঠিকই রবের পথে জিহাদ চালিয়ে যাবে। সংখ্যায় যতই কম হোক। আল্লাহর সাহায্য তাদের সহযোগী হবে। তারা সংখ্যায় যতই কম হোক। আমি যখন দেখবো তাদের প্রতি আল্লাহর নুসরাহ আসছে তখন বলতে থাকবো, "আমিও তো তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমিও তো একটা সময়ে ফেসবুকে লেখালেখি করতাম। সাথী-সঙ্গীদের জিহাদের কথা বলতাম।"
    وَلَئِنْ جَاءَ نَصْرٌ مِنْ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ

    "যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম।"









    কিন্তু আমার এসব যুক্তি কি আল্লাহর কাছে খাটবে? আয়াতের শেষে আল্লাহ বলছেন:

    أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ

    "বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?"





    - নিঃসন্দেহে আমার রব আমার মনের আবস্থা সম্পর্কে অবহিত। আমি আমার ভাইদের ফাঁকি দিতে পারবো, কিন্তু রবকে তো ফাঁকি দেয়া যাবে না! তিনি কি আমাকে আখেরি বিচারে ছেড়ে দেবেন নাকি পাকড়াও করবেন?
    Last edited by Omayer Binyameen; 06-10-2023, 11:24 AM.

  • #2
    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

    Comment


    • #3
      Originally posted by Mosafir313 View Post
      জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
      Wa Yakum Muhtaram

      Comment


      • #4
        অসাধারণ বিষয় শেয়ার করেছেন মুহতারাম!
        এটা আমাদের সবারই ভাবা দরকার। সকলেই নিজেকে জিজ্ঞেস করা দরকার আমিও এ দলের নইতো?!

        অনেক জাযা-কুমুল্ল-হু খইরন আহসানাল জাযা মুহতারাম!
        Last edited by Rakibul Hassan; 06-09-2023, 05:53 PM.
        হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

        Comment


        • #5
          যখনই মনে হয় আমার জামাআতে যোগ দেয়ার সময় এসেছে তখন আমার নফস আমাকে পিছুটান দেয় এই বলে, "জামাআতে যোগ দেয়াাটা কি রিস্কি না?"

          আমার অন্তর আমাকে যুক্তি দেখায়, "তুমি এখন ছাত্র মানুষ। একটা ক্যারিয়ার আছে তোমার। ইন কেইস, জামাআতে যোগ দিয়ে যোগ দিয়ে যদি ধরা পড়ে যাও তাহলে ক্যারিয়ার তো যাবেই, লাইফ তামা তামা করে দেবে।"


          এই ধরা পড়ার ভয়টাই কেমন যেনো জামাআতের খোঁজ নিতে ও তাতে শরীক হওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দিয়ে রাখে। উদ্ভট যুক্তি দেখায়, "এর চেয়ে বরং অনলাইনে সেফটির সঙ্গে দাওয়াহের কাজ করো, ফেসবুকে লেখালেখি কর---- এটাও জিহাদ!!!"
          আমাদের বেশিরভাগ ভাইদেরই হালত এরকম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তৌফিক দান করুন। আমিন। শুধুমাত্র নিউজফিড স্ক্রলিং আর অনলাইন তর্ক বিতর্কে লিপ্ত হয়ে থাকাটা কল্যাণ বয়ে আনবে না।
          হে আল্লাহর পথের সৈনিক! ধৈর্যধারণ করুন ও হকের উপর অবিচল থাকুন। নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা সত্য।

          Comment


          • #6
            আল্লাহুম্মা জা'আলানা মিন ইবাদিকাল ক্বলীল। আমিন

            Comment


            • #7
              আমাদের বেশিরভাগ ভাইদের এরকমই অবস্থা। শুধুমাত্র ধরা পরার ভয়ে জিহাদের কাজ থেকে বিরত থাকলে হবেনা। ফেইসবুক ও অনলাইনের মায়াজাল থেকে নিজেদের দুরে রেখে জিহাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে জিহাদের পথে অটল থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন

              Comment


              • #8
                নক্ষত্ররা ভোর হলেই হারিয়ে যায়। সূর্যের প্রখরতায় লোকেরা তাদের ভুলে যায়। তাদের প্রয়োজন কেবল রাতের আধারে দিক খুঁজতে৷ লোকেরা তাদের মুগ্ধ চোখে দেখে, কিন্তু কখনো ছুঁতে পায় না। নক্ষত্ররা ধুমকেতুর মতো কখনো ঝরে যায়। হারিয়ে যায় অসীমের শূন্যতায়। মানুষের মাঝে তাদের স্মৃতিটুকুও অবশিষ্ট থাকে না৷

                নিজের এই লেখায় আমি নিজেকে খুঁজে বেড়াই। আমিও নক্ষত্র হতে চাই। জুলুমের আধার রাতের সংগ্রাম শেষে যখন দিগন্তে ভোরের আলোর রেখা ফুঁটবে, তখন আমিও হারিয়ে যেতে চাই, এক চির বিশ্রামের মাঝে। আধার রাতের গহীনে লোকেরা দিক ভ্রান্তের মতো এদিক ওদিক ছুটছে। কে বন্ধু কে শত্রু- গুলিয়ে ফেলে নিমজ্জিত এক তামাশার রাজ্যে। এদিকে বেলা ফুরিয়ে আসে, সকাল যে আসবেই। হিসাবের দেনা পাওনার শূন্য খাতা নিয়ে রবের সামনে পরিতাপের সাথে দাঁড়াবে।
                আমি যে এক উত্তম আদর্শের অনুসরণ করি৷ লোকেরা তাদের তামাশার খোরাক আমার কাছে না পেয়ে আমার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিবে৷ আমি যে আমারই মতো, এক নক্ষত্র হতে চাই। লোকেদের মুখাপেক্ষীতা কখনো আশাও করি না। আমার প্রতিদান তো কেবল রবের থেকেই নিবো। আমিও হারিয়ে যেতে চাই, কালের আবর্তে, মানুষের মন থেকে ধীরে ধীরে। দুনিয়াতে গুরাবাদের মতো, জান্নাতেও হয়তো একাকী কোনো এক পাহাড়ের কোলে অপেক্ষা করবো, কখন সময় হবে রবের দিদারের।

                Comment


                • #9


                  [168] الَّذينَ قالوا لِإِخوٰنِهِم وَقَعَدوا لَو أَطاعونا ما قُتِلوا ۗ قُل فَادرَءوا عَن أَنفُسِكُمُ المَوتَ إِن كُنتُم صٰدِقينَ
                  [168] ওরা হলো যে সব লোক, যারা বসে থেকে নিজেদের ভাইদের সম্বদ্ধে বলে, যদি তারা আমাদের কথা শুনত, তবে নিহত হত না। তাদেরকে বলে দিন, এবার তোমাদের নিজেদের উপর থেকে মৃত্যুকে সরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।


                  [22] ما أَصابَ مِن مُصيبَةٍ فِى الأَرضِ وَلا فى أَنفُسِكُم إِلّا فى كِتٰبٍ مِن قَبلِ أَن نَبرَأَها ۚ إِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسيرٌ
                  [22] পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।۞ قَد يَعلَمُ اللَّهُ المُعَوِّقينَ مِنكُم وَالقائِلينَ لِإِخوٰنِهِم هَلُمَّ إِلَينا ۖ وَلا يَأتونَ البَأسَ إِلّا قَليلًا
                  [18] আল্লাহ খুব জানেন তোমাদের মধ্যে কারা তোমাদেরকে বাধা দেয় এবং কারা তাদের ভাইদেরকে বলে, আমাদের কাছে এস। তারা কমই যুদ্ধ করে।19] أَشِحَّةً عَلَيكُم ۖ فَإِذا جاءَ الخَوفُ رَأَيتَهُم يَنظُرونَ إِلَيكَ تَدورُ أَعيُنُهُم كَالَّذى يُغشىٰ عَلَيهِ مِنَ المَوتِ ۖ فَإِذا ذَهَبَ الخَوفُ سَلَقوكُم بِأَلسِنَةٍ حِدادٍ أَشِحَّةً عَلَى الخَيرِ ۚ أُولٰئِكَ لَم يُؤمِنوا فَأَحبَطَ اللَّهُ أَعمٰلَهُم ۚ وَكانَ ذٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسيرًا
                  [19] তারা তোমাদের প্রতি কুন্ঠাবোধ করে। যখন বিপদ আসে, তখন আপনি দেখবেন মৃত্যুভয়ে অচেতন ব্যক্তির মত চোখ উল্টিয়ে তারা আপনার প্রতি তাকায়। অতঃপর যখন বিপদ টলে যায় তখন তারা ধন-সম্পদ লাভের আশায় তোমাদের সাথে বাকচাতুরীতে অবতীর্ণ হয়। তারা মুমিন নয়। তাই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন। এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।
                  পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

                  Comment


                  • #10
                    আল্লাহ,, আপনাকে ভয় বেশি করার তাওফিক দান করুন আমিন। আল্লাহ, আমাদেরকে মুজাহিদ মুত্তাকি হিসেবে কবুল করে নিন আমিন।
                    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدة ولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القاعدة
                    سورة توبة ٤٦

                    Comment


                    • #11
                      ভাইয়ের অনুভুতিগুলো আয়াতের মর্মের সাথে মিলে গেছে। মাশাআল্লাহ! আল্লাহ আপনাকে কবূল করেন। আমীন!

                      Comment

                      Working...
                      X