আকস্মিকভাবে সুরাহ আনকাবুতের ১০ নাম্বার আয়াতটি সামনে পড়লো। গাঁ-টা কেমন যেন শিউরে ওঠলো। আসলেই কথাগুলো যেনো আমাকেই লক্ষ্য করে বলা হচ্ছিল।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ وَلَئِنْ جَاءَ نَصْرٌ مِنْ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ ۚ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ
কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে। যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?
[Surah Al-Ankabut, Ayat 10]
কেমন যেনো নিজেকে এই টাইপের বলে মনে হলো। কারণ যখনই মনে হয় আমার জামাআতে যোগ দেয়ার সময় এসেছে তখন আমার নফস আমাকে পিছুটান দেয় এই বলে, "জামাআতে যোগ দেয়াাটা কি রিস্কি না?"
আমার অন্তর আমাকে যুক্তি দেখায়, "তুমি এখন ছাত্র মানুষ। একটা ক্যারিয়ার আছে তোমার। ইন কেইস, জামাআতে যোগ দিয়ে যোগ দিয়ে যদি ধরা পড়ে যাও তাহলে ক্যারিয়ার তো যাবেই, লাইফ তামা তামা করে দেবে।"
এই ধরা পড়ার ভয়টাই কেমন যেনো জামাআতের খোঁজ নিতে ও তাতে শরীক হওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দিয়ে রাখে। উদ্ভট যুক্তি দেখায়, "এর চেয়ে বরং অনলাইনে সেফটির সঙ্গে দাওয়াহের কাজ করো, ফেসবুকে লেখালেখি কর---- এটাও জিহাদ!!!"
কিন্তু আমি জানতাম না আমার রব আমার এসব উদ্ভট যুক্তির জবাব দিয়ে রেখেছেন, আমাকে একদল কাপুরুষ লোকের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে রেখেছেন।
-----------
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ
"কতিপয় লোক মনে করে আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি।"
- হ্যাঁ, আমিও আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি। আমি মনে করি জিহাদের সঠিক পথের দিশাই আমার রব আমাকে দিয়েছেন। এখন আমার উপর জিহাদ ফরযে আইন তাও বিশ্বাস করি। কিন্তু জিহাদ করার জন্য জামাআতে যোগ দিতে ভয় পাই, কারণ কদিন পরপরই পেপারে আসে, "অমুক জায়গা থেকে অমুক জঙ্গি গ্রেফতার (!)"
আর গ্রেফতার হলে চলবে অবর্ণনীয় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। এই ভয়টাই মুখ্য।
এই কারণে আল্লাহ পাক আয়াতের অপর অংশে বলছেন,
فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ
"কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে।"
-আরেহ, আমাকে তো ধরেনি বা নির্যাতনও করা হয়নি। আমি তো আরো নিচু লেভেলের!
আমি মনে করছি, যাই হোক, অনলাইনেই দাওয়াহ কার্যক্রম চালিয়ে যাই। অফলাইনে পরে যোগ দেবো নে, যখন জামাআহ শক্তিশালী হবে।
কিন্তু জীবন তো আর বসে থাকে না। জামাআত ছাড়া এভাবে একটা পর্যায়ে হতোদ্যম হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। কারণ জামাআহ ছাড়া জীবন কম্পাস ছাড়া জাহাজের ন্যায়। আর অনলাইন বা ফেসবুক--- এ তো মায়াজাল!
এরপর শুরু করবো রিজিকের তালাশ। রিজিকের তালাশে জিহাদী স্পিরিট যা তারুণ্যের উচ্ছ্বল ও আবেগময় সময়ে সৃষ্টি হয়েছিলো তা ধীরে ধীরে প্রশমিত হয়ে পড়বে। বরকতময় পথ যা আল্লাহ পাক সন্ধান দিয়েছিলেন তা থেকে পা পিছলে গড়িয়ে যাবো বহু দূরে।
- কিন্তু একদল ভাই ঠিকই রবের পথে জিহাদ চালিয়ে যাবে। সংখ্যায় যতই কম হোক। আল্লাহর সাহায্য তাদের সহযোগী হবে। তারা সংখ্যায় যতই কম হোক। আমি যখন দেখবো তাদের প্রতি আল্লাহর নুসরাহ আসছে তখন বলতে থাকবো, "আমিও তো তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমিও তো একটা সময়ে ফেসবুকে লেখালেখি করতাম। সাথী-সঙ্গীদের জিহাদের কথা বলতাম।"
কিন্তু আমার এসব যুক্তি কি আল্লাহর কাছে খাটবে? আয়াতের শেষে আল্লাহ বলছেন:
أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ
"বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?"
- নিঃসন্দেহে আমার রব আমার মনের আবস্থা সম্পর্কে অবহিত। আমি আমার ভাইদের ফাঁকি দিতে পারবো, কিন্তু রবকে তো ফাঁকি দেয়া যাবে না! তিনি কি আমাকে আখেরি বিচারে ছেড়ে দেবেন নাকি পাকড়াও করবেন?
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ وَلَئِنْ جَاءَ نَصْرٌ مِنْ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ ۚ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ
কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে। যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?
[Surah Al-Ankabut, Ayat 10]
কেমন যেনো নিজেকে এই টাইপের বলে মনে হলো। কারণ যখনই মনে হয় আমার জামাআতে যোগ দেয়ার সময় এসেছে তখন আমার নফস আমাকে পিছুটান দেয় এই বলে, "জামাআতে যোগ দেয়াাটা কি রিস্কি না?"
আমার অন্তর আমাকে যুক্তি দেখায়, "তুমি এখন ছাত্র মানুষ। একটা ক্যারিয়ার আছে তোমার। ইন কেইস, জামাআতে যোগ দিয়ে যোগ দিয়ে যদি ধরা পড়ে যাও তাহলে ক্যারিয়ার তো যাবেই, লাইফ তামা তামা করে দেবে।"
এই ধরা পড়ার ভয়টাই কেমন যেনো জামাআতের খোঁজ নিতে ও তাতে শরীক হওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দিয়ে রাখে। উদ্ভট যুক্তি দেখায়, "এর চেয়ে বরং অনলাইনে সেফটির সঙ্গে দাওয়াহের কাজ করো, ফেসবুকে লেখালেখি কর---- এটাও জিহাদ!!!"
কিন্তু আমি জানতাম না আমার রব আমার এসব উদ্ভট যুক্তির জবাব দিয়ে রেখেছেন, আমাকে একদল কাপুরুষ লোকের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে রেখেছেন।
-----------
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ
"কতিপয় লোক মনে করে আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি।"
- হ্যাঁ, আমিও আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি। আমি মনে করি জিহাদের সঠিক পথের দিশাই আমার রব আমাকে দিয়েছেন। এখন আমার উপর জিহাদ ফরযে আইন তাও বিশ্বাস করি। কিন্তু জিহাদ করার জন্য জামাআতে যোগ দিতে ভয় পাই, কারণ কদিন পরপরই পেপারে আসে, "অমুক জায়গা থেকে অমুক জঙ্গি গ্রেফতার (!)"
আর গ্রেফতার হলে চলবে অবর্ণনীয় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। এই ভয়টাই মুখ্য।
এই কারণে আল্লাহ পাক আয়াতের অপর অংশে বলছেন,
فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ
"কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে।"
-আরেহ, আমাকে তো ধরেনি বা নির্যাতনও করা হয়নি। আমি তো আরো নিচু লেভেলের!
আমি মনে করছি, যাই হোক, অনলাইনেই দাওয়াহ কার্যক্রম চালিয়ে যাই। অফলাইনে পরে যোগ দেবো নে, যখন জামাআহ শক্তিশালী হবে।
কিন্তু জীবন তো আর বসে থাকে না। জামাআত ছাড়া এভাবে একটা পর্যায়ে হতোদ্যম হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। কারণ জামাআহ ছাড়া জীবন কম্পাস ছাড়া জাহাজের ন্যায়। আর অনলাইন বা ফেসবুক--- এ তো মায়াজাল!
এরপর শুরু করবো রিজিকের তালাশ। রিজিকের তালাশে জিহাদী স্পিরিট যা তারুণ্যের উচ্ছ্বল ও আবেগময় সময়ে সৃষ্টি হয়েছিলো তা ধীরে ধীরে প্রশমিত হয়ে পড়বে। বরকতময় পথ যা আল্লাহ পাক সন্ধান দিয়েছিলেন তা থেকে পা পিছলে গড়িয়ে যাবো বহু দূরে।
- কিন্তু একদল ভাই ঠিকই রবের পথে জিহাদ চালিয়ে যাবে। সংখ্যায় যতই কম হোক। আল্লাহর সাহায্য তাদের সহযোগী হবে। তারা সংখ্যায় যতই কম হোক। আমি যখন দেখবো তাদের প্রতি আল্লাহর নুসরাহ আসছে তখন বলতে থাকবো, "আমিও তো তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমিও তো একটা সময়ে ফেসবুকে লেখালেখি করতাম। সাথী-সঙ্গীদের জিহাদের কথা বলতাম।"
وَلَئِنْ جَاءَ نَصْرٌ مِنْ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ
"যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম।"
"যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম।"
কিন্তু আমার এসব যুক্তি কি আল্লাহর কাছে খাটবে? আয়াতের শেষে আল্লাহ বলছেন:
أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ الْعَالَمِينَ
"বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?"
- নিঃসন্দেহে আমার রব আমার মনের আবস্থা সম্পর্কে অবহিত। আমি আমার ভাইদের ফাঁকি দিতে পারবো, কিন্তু রবকে তো ফাঁকি দেয়া যাবে না! তিনি কি আমাকে আখেরি বিচারে ছেড়ে দেবেন নাকি পাকড়াও করবেন?
Comment