Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল কুরআনের আলোকে মধু এবং তার উপকারিতা।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল কুরআনের আলোকে মধু এবং তার উপকারিতা।

    ثُمَّ كُلِیۡ مِنۡ كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسۡلُكِیۡ سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ؕ یَخۡرُجُ مِنۡۢ بُطُوۡنِهَا شَرَابٌ مُّخۡتَلِفٌ اَلۡوَانُهٗ فِیۡهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِكَ لَاٰیَۃً لِّقَوۡمٍ یَّتَفَكَّرُوۡنَ ﴿۶۹
    এরপর প্রত্যেক ফল হতে আহার কর, অতঃপর তোমার প্রতিপালকের সহজ পথ অনুসরণ কর; ওর উদর হতে নির্গত হয় নানা রঙের পানীয়; যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগমুক্তি। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে।​ নাহল-৬৯ এখানে ওহীর মাধ্যমে প্রদত্ত এই নির্দেশের যথাযথ ফলশ্রুতি বর্ণনা করা হয়েছে, বলা হয়েছে যে, তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় বের হয়। এতে মানুষের জন্য রোগের প্রতিষেধক রয়েছে। খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়। মধু সাধারণতঃ তরল আকারে থাকে, তাই একে পানীয় বলা হয়েছে। এ বাক্যেও আল্লাহর একত্ব ও অপার শক্তির অকাট্য প্রমাণ বিদ্যমান। একটি ছোট্ট প্রাণীর পেট থেকে কেমন উপাদেয় ও সুস্বাদু পানীয় বের হয়। এরপর সর্বশক্তিমানের আশ্চর্যজনক কারিগরি দেখুন, অন্যান্য দুধের জন্তুর দুধ ঋতু ও খাদ্যের পরিবর্তনে লাল ও হলদে হয় না, কিন্তু মৌমাছির মধু সাদা, হলুদ, লাল ইত্যাদি বহু রঙের হয়ে থাকে। [দেখুন, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
    মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ এবং তৃপ্তিদায়ক, তেমনি রোগব্যাধির জন্যও ফলদায়ক ব্যবস্থাপত্র। মধু বিরেচক এবং পেট থেকে দূষিত পদার্থ অপসারক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে কোন এক সাহাবী তার ভাইয়ের অসুখের বিবরণ দিলে তিনি তাকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় দিনও এসে আবার সাহাবী বললেনঃ অসুখ পূর্ববৎ বহাল রয়েছে। তিনি আবারো একই পরামর্শ দিলেন। তৃতীয় দিনও যখন সংবাদ এল যে, অসুখে কোন পার্থক্য হয়নি, তখন তিনি বললেনঃ

    صَدَقَ اللهُ وَكَذَبَ بَطْنُ أخِيْكَ

    অর্থাৎ আল্লাহর উক্তি নিঃসন্দেহে সত্য, তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যাবাদী। যাও তাকে মধু খাইয়ে দাও, তারপর লোকটি গিয়ে মধু খাওয়ানোর পর সে আরোগ্য লাভ করল। [বুখারীঃ ৫৭১৬, মুসলিমঃ ২২১৭]

    এখানে আল্লাহর উক্তি সত্য এবং পেট মিথ্যাবাদী হওয়ার উদ্দেশ্য এই যে, ঔষধের দোষ নাই। রুগীর বিশেষ মেজাযের কারণে ঔষধ দ্রুত কাজ করেনি। এরপর রুগীকে আবার মধু পান করানো হয় এবং সে সুস্থ হয়ে উঠে। তবে সমস্ত রোগের জন্য সরাসরি মধু ব্যবহার করতে হবে তা এ আয়াতে বলা হয়নি। আবার কখনো কখনো বিভিন্ন উপাদানের সাথে মিশে তা আরোগ্য দানকারী প্রতিষেধকে পরিণত হয়। অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “তোমরা দুটি আরোগ্যকে আঁকড়ে ধরবে, কুরআন এবং মধু” [ইবনে মাজাহঃ ৩৪৫২, মুস্তাদরাকে হাকেম ৪/২০০]

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপর হাদীসে বলেনঃ “তিনটি বস্তুতে আরোগ্য রয়েছে, শিঙ্গা, মধু এবং আগুনের ছেক। তবে আমি আমার উম্মাতকে ছেক দিতে নিষেধ করি” [বুখারীঃ ৫৬৮০, মুসলিমঃ ২২০৫] তবে আলোচ্য আয়াতে
    شفاء শব্দটি থেকে মধু যে প্রত্যেক রোগের ঔষধ, তা বোঝা যায় না। কিন্তু شفاء শব্দের تنوين যা تعظيم এর অর্থ দিচ্ছে

    তা থেকে অবশ্যই বোঝা যায় যে, মধুর নিরাময় শক্তি বিরাট ও স্বতন্ত্র ধরণের। যদিও কোন কোন আলেম বলেনঃ মধু সর্বরোগের প্রতিষেধক। তারা মহান পালনকর্তার উক্তির বাহ্যিক অর্থেই এমন প্রবল ও অটল বিশ্বাস রাখেন যে, তারা ফোঁড়া ও চোখের চিকিৎসাও মধুর মাধ্যমে করেন এবং দেহের অন্যান্য রোগেরও। এ কারণেই হয়তঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও মধু পছন্দ করতেন [দেখুনঃ বুখারীঃ ৫৪৩১, ৫৬১৪, মুসলিমঃ ১৪৭৪, আবু দাউদঃ ৩৭৫১, তিরমিযীঃ ১৮৩২, ইবনে মাজাহঃ ৩৩২৩, মুসনাদে আহমাদ ৬/৫৯]

    ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তার শরীরে ফোঁড়া বের হলেও তিনি তাতে মধুর প্রলেপ দিয়ে চিকিৎসা করতেন। এর কারণ জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা কুরআনে কি মধু সম্পর্কে

    (فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ)

    বলেননি? অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “এতে (অর্থাৎ মধুতে) মৃত্যু ছাড়া আর সব রকমের রোগের আরোগ্য রয়েছে।” [ইবনে মাজাহঃ ৩৪৫৭] আয়াতের মর্ম অনুযায়ী আরো জানা গেল যে, ঔষধের মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা করা বৈধ। [কুরতুবী] কারণ, আল্লাহ তা'আলা একে নেয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যত্র বলা হয়েছে-
    (وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ)

    [আল-ইসরাঃ ৮২]। হাদীসে ঔষধ ব্যবহার ও চিকিৎসার প্রতি উৎসাহ দান করা হয়েছে। মোটকথা, চিকিৎসা করা ও ঔষধ ব্যবহার করা যে বৈধ, এ বিষয়ে সকল আলেমই একমত এবং এ সম্পর্কে বহু হাদীস ও রেওয়ায়েত বর্ণিত রয়েছে।
    ​প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে পরিচিত মধু পুষ্টিগুণে অনন্য। প্রয়োজনীয় নানা খনিজ পদার্থের সাথে গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ নামক দুটি শর্করা দিয়ে গঠিত মধু। এক টেবিল চামচ মধুতে রয়েছে ৬১ ক্যালোরি ও ১৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। এতে কোনও ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ নেই। নির্দিষ্ট পরিমাণ মধু খেতে পারেন বিভিন্ন উপকারিতা পেতে। জেনে নিন মধু খেলে মিলবে কোন কোন উপকার।
    • মধুতে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পলিফেনল যৌগ রয়েছে। এগুলোর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এগুলো শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার ও হৃদরোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
    • শরীরের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে মধু।
    • কাশি এবং গলা ব্যথার অস্বস্তি দূর করতে মধু অতুলনীয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স বলছে, প্রাকৃতিক কাশির প্রতিকার হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রয়েছে মধুর।
    • রক্তচাপ এবং রক্তে চর্বির মাত্রা হ্রাসসহ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে মধু।
    • প্রতিদিন মধু খেলে বাড়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মধুতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের ভেতরে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে বাঁচতে দেয় না। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে।
    • এক গ্লাস গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করুন। শরীরের দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে।
    • প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে ক্লান্তি কাছে ঘেঁষতে পারে না।
    • হজমের গণ্ডগোল দূর করতে পারে দুধ ও মধু। এই দুই উপাদানে থাকা প্রিবায়োটিকস শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে দ্রুত খাবার হজম করে।
    You do not have permission to view this gallery.
    This gallery has 1 photos.

  • #2
    আল্লাহ আমাদের সকলকে মধু পান করার তৌফিক দান করুন।আমিন।

    Comment


    • #3
      সুবহানআল্লাহ! আল্লাহ মধুতে কত নেয়ামত রেখেছেন!!
      আল্লাহ আপনার ইলমে বরকত দান করুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment

      Working...
      X