Announcement

Collapse
No announcement yet.

সমাজ সংস্কার - ১ (খন্ড ১)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সমাজ সংস্কার - ১ (খন্ড ১)

    ইসলাম মানুষকে এক সামাজিক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করেছিল, কিন্তু পাশ্চাত্য "ব্যক্তিস্বাধীনতা"র চটকদার স্লোগান দিয়ে মানুষকে আলাদা আলাদা খাঁচায় আটকে ফেলেছে। একজন মানুষের সঙ্গে আরেকজন মানুষের সম্পর্ক কেবল ব্যবসায়িক লেনদেনে রূপ নিয়েছে। কিছু ভ্রমণকারী বলেছেন, ইংল্যান্ডে জায়গায় জায়গায় সাইনবোর্ডে লেখা থাকে: "Mind your own business", অর্থাৎ "আপনার নিজের কাজ নিয়ে থাকুন" বা "অন্যের ব্যাপারে নাক গলাবেন না"। কেউ গোপনে বা প্রকাশ্যে যা খুশি করছে, তাকে কিছু বলার অধিকার নেই—কারণ, এটা নাকি তার ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী।

    কিন্তু এখানেই একটি বড় প্রশ্ন উঠে যায়: কেউ যদি কোন অন্যায় দেখার পর কিছু বলতে চায়, আর তাকে যদি বলা হয় চুপ থাকতে, তবে এটা কি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরোধিতা নয়? বাস্তবতা হচ্ছে, এই সবকিছুই মানব-নির্মিত কিছু স্লোগান—যেগুলোর আড়ালে মানুষকে পশুর মতো জীবন যাপন করতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

    একজন বড় আলেমের কাছে ইউরোপের এক সংগঠনের কিছু প্রতিনিধি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন করতে এসেছিলেন। আলেম বলেন: “আপনারা যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলছেন, তাতে কি কোনো সীমা বা শর্ত আছে?” তারা উত্তর দিল, “না, আমরা কোনো সীমাবদ্ধতা দিতে চাই না।” তখন আলেম জিজ্ঞাসা করলেন: “যদি কেউ এই মত পোষণ করে যে, দুনিয়ার সব ধনীদের সম্পদ কেড়ে নিয়ে গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া উচিত, এবং সে সেই মত অনুযায়ী বাস্তব পদক্ষেপ নিতে শুরু করে, তখন কি তাকে থামানো হবে না?”

    যদি তাকে না থামানো হয়, তাহলে অরাজকতা শুরু হবে। আর যদি তাকে থামানো হয়, তাহলে সেটা তো মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে!

    ইসলামও অবশ্যই স্বাধীনতা দিয়েছে, তবে সেই স্বাধীনতার একটা সুনির্দিষ্ট গণ্ডি নির্ধারণ করে দিয়েছে। একজন মানুষ খেতে পারে, কিন্তু অন্যের থেকে জোর করে ছিনিয়ে খেতে পারে না; সে তার চাহিদা অনুযায়ী খাবে, অতিরিক্ত নয়। একজন মানুষ তার যৌন চাহিদা পূরণ করতে পারে, কিন্তু সেটা সীমার মধ্যে থেকে—ইসলাম সমকামিতাকে অনুমোদন দেয় না। আসলে কোনো সুস্থ ধর্ম বা যুক্তিবাদী দার্শনিক দর্শনই সেটাকে বৈধতা দিতে পারে না। একজন পুরুষ কেবল সেই নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রাখতে পারে যার সঙ্গে সে বৈধভাবে বিয়ে করেছে এবং তার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছে।
    তদ্ব্যতীত, অন্য কারো প্রতি কুদৃষ্টিও ইসলাম অনুযায়ী অপরাধ।

    মূল বাস্তবতা এই যে— আজকের সমাজে যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তা এই সীমাহীন, লাগামছাড়া স্বাধীনতারই ফল, যা মানুষকে পশু বানিয়ে ফেলেছে। এখন অনৈতিকতা আর অসভ্যতা "ফ্যাশন" হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং "স্বাধীনতা"র নামে এসবের ওপর মোটা পর্দা ফেলে দেওয়া হচ্ছে—যেন এগুলো কোনো সমস্যা নয়।

    সমাজ গঠিত হয় ব্যক্তিদের দ্বারা। আর সামষ্টিকতা বা সম্মিলিত সমাজবোধ জন্ম নেয় পরস্পরের ভালোবাসা ও সদাচরণের মাধ্যমে। যতদিন না একজন ব্যক্তি তার ভেতরে অপরের জন্য ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও সহানুভূতির গুণ তৈরি করতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত একটি সত্যিকারের সামষ্টিক সমাজ গড়ে উঠবে না। এর জন্য শুধু নিজের আরাম, স্বার্থ, ভোগবিলাসের জীবনদর্শন ত্যাগ করতে হবে। সমাজের দায়িত্ব, সমাজকে সঠিক পথে আনার প্রয়োজনীয়তা, এবং মানুষকে সত্যিকারের মানুষে রূপান্তরিত করার একটি আন্তরিক ইচ্ছা যখন পর্যন্ত কারো হৃদয়ে জাগ্রত না হবে— আর সেই ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য যদি নিজের আরাম, সুবিধা, এমনকি স্বার্থ বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত না হয়, এবং প্রয়োজনে আত্মত্যাগের মানসিকতা না গড়ে ওঠে— তবে পর্যন্ত সমাজে বাস্তব কোনো পরিবর্তন আসবে না।

    আর যতক্ষণ না এমন কিছু মানুষ উঠে আসে, যারা এই মিশনের জন্য জীবন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, যারা সমাজসংস্কারের এই কাজকে নিজের ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানের ঊর্ধ্বে স্থান দিতে পারে— ততদিন পর্যন্ত কোনো সামাজিক বিপ্লব সম্ভব নয়।

    অতিরিক্ত সম্পদপ্রেম, অপচয় ও বিলাসিতা, খ্যাতির পেছনে অন্ধ দৌড়, বেহায়াপনা, আর সীমাহীন ভোগলালসা— এসবই আজকের দুনিয়াকে গ্রাস করে ফেলেছে। ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, এখন মানুষের অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে, মানুষ আর এসবকে "অপরাধ" বলতেও দ্বিধা করে। আর কেউ যদি সাহস করে সত্য উচ্চারণ করতে চায়, তবে দশ জন এসে তার মনোবল ভেঙে দেয়।


    ইসলাম কী করে?

    ইসলাম ভালোকে উৎসাহ দেয়, কল্যাণ ছড়িয়ে দিতে বলে, কল্যাণ প্রচারকারীদের প্রেরণা জোগায়, আর সমাজে অসৎ ও অশুভ প্রবণতাগুলোর রাশ টেনে ধরে।

    ইসলাম এমন এক সমষ্টিক জীবনব্যবস্থা পেশ করেছে, যেখানে সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষের কল্যাণ নিহিত আছে— অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সামাজিক ও নৈতিক ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত। এতে যেমন কিছু পরিমাণ স্বাধীনতা আছে, তেমনি এমন কিছু সুনির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে মানুষ তার মানবিক মর্যাদা বজায় রাখতে পারে।

    এই মানুষ এমন এক নৈতিক চরিত্র গঠনের আদর্শ উপস্থাপন করে— যা দেখলে বোঝা যায়, তার চিন্তা-পদ্ধতি অন্যরকম। সে কেবল এই দুনিয়ার জীবনের পেছনে ছুটে বেড়ায় না; বরং সে এক অনন্ত জীবনের কথা মাথায় রেখে জীবনযাপন করে। তার জীবন যাত্রার লাগাম নিজের হাতে থাকে— জৈবিক চাহিদা তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় না; বরং সে জানে কীভাবে চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

    সে চাহিদার দাস নয়, সে চাহিদার মালিক। সে নিজের "নফস" (প্রবৃত্তি)–এর গোলাম নয়; বরং তার নফসের লাগাম সে নিজেই ধরে রাখে— এই দুনিয়ায় সে এক চরিত্রবান, দায়িত্বশীল, এবং পরকেন্দ্রিক মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকে।

    সমষ্টিক জীবনের নিয়ম-কানুন যতবারই গঠন করা হবে, ততবারই একটি মৌলিক শর্ত মানতে হবে: প্রত্যেক শ্রেণির, প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তা যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।

    গরিবের অধিকার, ধনীর অধিকার, আত্মীয়ের অধিকার, অচেনা মানুষের অধিকার, প্রতিবেশীর অধিকার, এমনকি অল্প সময় একসঙ্গে থাকা লোকদেরও কিছু অধিকার রয়েছে। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে: প্রত্যেককে তার নিজের স্থান ও মর্যাদায় রাখা, এবং সমাজে ভারসাম্য নষ্ট না হতে দেওয়া।

    এই ভারসাম্য ধরে রাখা সমাজের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। কিন্তু যখন মানুষ নিজে নিজের বুদ্ধিতে এই ভারসাম্যের ব্যবস্থা করতে চায়, তখন তার মধ্যে চরমপন্থা ঢুকে পড়ে— কখনও বাড়াবাড়ি, কখনও ঘাটতি।

    মানবীয় বুদ্ধির একটি নিজস্ব ছাঁচ থাকে, যেটির ভেতর সে বেড়ে ওঠে, গড়ে ওঠে এবং চিন্তা করে। এই ছাঁচ গঠিত হয় পরিবেশ, অভিভাবকদের শিক্ষা, শিক্ষা-ব্যবস্থা এবং চারপাশে প্রচলিত মতাদর্শের দ্বারা। ফলে মানুষ সে-ছাঁচেই চিন্তা করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, এবং সিদ্ধান্তগুলোতে পক্ষপাত ঢুকে পড়ে। তার মধ্যে ভারসাম্য হারিয়ে যায়।

    এইজন্যই, সামাজিক ব্যবস্থা যদি ভারসাম্যের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী করতে হয়, তবে প্রয়োজন, মানুষকে যিনি সৃষ্টি করেছেন—তিনি যে সমষ্টিক জীবনব্যবস্থা মানুষদের জন্য প্রস্তাব করেছেন, যেটি তিনি তাঁর নবীদের মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌঁছিয়েছেন, তাকে খোলা মনে পাঠ করা, বোঝা এবং তার আলোকে গোটা সমাজ-ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

    এই পূর্ণাঙ্গ, ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা কোরআন মাজিদে বর্ণিত হয়েছে— আর শেষ নবী, হযরত মুহাম্মদ ﷺ তা মানবজাতির সামনে বাস্তব উদাহরণ ও বিশদ ব্যাখ্যার মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। তিনি প্রতিটি বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন— যাতে মানুষ জানে কীভাবে একটি ন্যায়ভিত্তিক, ভারসাম্যপূর্ণ ও কল্যাণকর সমাজ গড়ে তোলা যায়।

    সবচেয়ে বড় দায়িত্ব এখন মুসলমানদের উপর। কারণ, তাদের হাতে রয়েছে এক পূর্ণাঙ্গ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা এবং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়— প্রত্যেক যুগে মুসলিম সমাজের ভেতর এমন মানুষ জন্ম নিয়েছেন যারা সমাজকে সংশোধন করেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন।


    কেন?

    কারণ, মুসলমানদের কাছে আছে আল্লাহর কিতাব (কুরআন) আর রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর শরীয়ত— একটি ঐশী ও পূর্ণ জীবনব্যবস্থা।

    অন্য জাতির ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন— পুরো শতাব্দীতে কদাচিৎ একজন সংস্কারক দেখা যায়। আর যাদের পাওয়া যায়, তাদের কথাবার্তা বা নসিহত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়— তারা মূলত দু–একটা নীতিকথার ওপর জোর দিয়েছেন,কিন্তু সমাজব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত, তার মূল ভিত্তি কী— এই প্রশ্নগুলোর জবাব তাদের হাতে নেই।

    আজ বিশ্ব এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।
    বিশ্ব এক ক্রান্তিকালে উপনীত হয়েছে। চারপাশে অস্থিরতা, অশান্তি, অব্যবস্থা। এই দুর্দশা থেকে যদি বাঁচার কোনো রাস্তা থাকে— তবে তা একমাত্র ইসলামের পেশ করা সমাজব্যবস্থাই। এই ব্যবস্থাই একমাত্র পূর্ণ, ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত পন্থা যেটি বেহাল পরিস্থিতিকে সামাল দিতে পারে।

    কিন্তু সমস্যা দুই দিক থেকে।

    প্রথমত, যারা ইসলামের বাইরের লোক— তাদের একটা বড় অংশ প্রস্তুতই না ইসলামকে নিয়ে চিন্তা করার জন্য।

    দ্বিতীয়ত, দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, নিজেরাই মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। তাদের আচরণ, নৈতিকতা, সমাজচিত্র— সব দেখে ইসলাম সম্পর্কে যে ছবি দুনিয়ার সামনে ফুটে ওঠে, তা অত্যন্ত বিকৃত, দুর্বল এবং নিরুৎসাহজনক।

    এই অবস্থায়,মুসলমানদের সামনে এক বিশাল দায়িত্ব হাজির—যদি তারা ইসলামি সমাজব্যবস্থা সঠিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়, যদি তারা ইসলামকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে,এবং নিজেরাও সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়— তবে বিশ্বমানবতার ধ্বংসে তারাও অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড়াবে।

    একইসঙ্গে, দুনিয়ার বুদ্ধিমান, বিবেকবান মানুষদেরও একটি দায়িত্ব আছে। তারা দুনিয়ার নানা জীবনব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখেছে। ইহুদিবাদ তো বহু আগেই দম ফেলে দিয়েছে— মানবতার রক্ষক হওয়ার বদলে তারা মানবতার শত্রুতে পরিণত হয়েছে।

    খ্রিস্টধর্ম–ও দুনিয়াকে কোনো পরিষ্কার, নিরাপদ পথ দেখাতে পারেনি।এমনকি এক খ্রিস্টীয় চিন্তাবিদের বক্তব্য অনুযায়ী: “হযরত ঈসা আ.–এর সব হিদায়াত একত্র করলে তা একটি পত্রিকার দেড় কলামের বেশি হবে না।”

    এই বাস্তবতায়, যদি ডুবতে বসা পৃথিবীকে কেউ টেনে তুলতে পারে— তবে সেটা কেবল ইসলাম। আর দুনিয়া এর স্বাদ একবার পেয়েও গেছে— খুলাফায়ে রাশেদীন–এর যুগে, যখন সমাজে পুরোপুরি ইসলাম প্রতিষ্ঠিত ছিল, তখন দীর্ঘকাল পরে মানুষ শান্তির নিঃশ্বাস নিয়েছিল। সেই সময় এমন শান্তি ছিল যে— একজন নারী এক শহর থেকে আরেক শহরে একা, নিরাপদে চলাফেরা করতে পারত, কেউ তার ক্ষতি করার কথা চিন্তাও করত না।

    কিন্তু যখন মুসলমানরা ইসলামকে ছেড়ে দিল,তখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেল। আজ, বিশ্বকে আবার ফিরে যেতে হবে সেই অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতায়। ইতিহাসে যা একবার সফলভাবে ঘটেছে, তা আবার ঘটানো সম্ভব— শর্ত একটাই: আসমানি হিদায়াতের দিকে ফিরে যেতে হবে।​
    فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَ انۡتَظِرۡ اِنَّهُمۡ مُّنۡتَظِرُوۡنَ

  • #2
    মাশাআল্লাহ, আল্লাহ তাআলা আপনার ইলম ও হায়াতে বারাকাহ দান করুন
    নতুন এই সিরিজেও বারাকাহ দান করুন
    এই উম্মত কে সংশোধনের উদ্দেশ্যে আপনার প্রচেষ্টাগুলো কবুল করুন, আমীন
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

    Comment

    Working...
    X