ইদানীং অনেককেই দেখা যায় পবিত্র কোরআন ও হাদিস চর্চা করছেন। বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে অনেকেই কাজটি করতে যেয়ে কিছু ভুল করছেন। ফলে এটা নিয়ে নানা সময় নানা বির্তক সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে যারা কোরআনে কারিমের মাঝে বিজ্ঞানের অনুসন্ধান নিয়ে সদাব্যস্ত; তারা এই ভুলটি বেশি করছেন।
প্রথমতঃ এমন গবেষকদের অনেকেরই ব্যক্তিগত আমল ত্রুটিপূর্ণ। দাঁড়ি-টুপি ইত্যাদি তো দূরের কথা, নামাজ-রোজা-পর্দার ধারেকাছেও নেই অনেকে। অথচ পরকালের মুক্তি নির্ভর করছে খাঁটি মনে শরিয়তের যথাযথ অনুসরণের ওপর। কোরআনে কারিমের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বের করার ওপর নয়।
আল কোরআনে যারা বিজ্ঞানের থিওরি খুঁজে বেড়ায়, তাদের আরও একটি স্বভাব হলো, তারা হাদিস নিয়ে ততোটা মাথা ঘামায় না; যতোটা মাথা ঘামায় কোথায় কোন বৈজ্ঞানিক কি আবিষ্কার করলেন, কোন পাশ্চাত্য দার্শনিক কি বললেন- সে বিষয়ে। আর সাহাবা (রা.) এবং তাবেয়িদের (রহ.) উক্তি তো তারা শুনতেও নারাজ!
এই শ্রেণির লোকেরা আব্বাসীয় শাসনকালকে (৭৫০ খ্রি.-১২৫৮ খ্রি.) ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সময় বলে ধারণা করেন। কারণ মুসলমানরা তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রভূত উন্নতিসাধন করেছিলো। কিন্তু এমন ধারণাও একটি ভুল। এমন ধারণা ইসলামের আকিদা বিরোধী। কারণ, পবিত্র হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে,
‘সর্বোত্তম যুগ হচ্ছে আমার যুগ, অতঃপর আমার পরবর্তীদের যুগ, অতঃপর তাদের পরবর্তীদের যুগ।’
তাদের আরও একটি ভুল মনোভাব হলো, তারা সর্বদা বলে বেড়ায় বর্তমানে বিশ্বের সর্বত্র মুসলমানরা যে হারে লাঞ্ছিত-অপমানিত হচ্ছে- তার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেন আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অনগ্রসরতাকে। অথচ মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন,
এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রয়োজনীয়তাকে কেউ অস্বীকার করে না। কিন্ত এগুলোকে আল্লাহতায়ালা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের সফলতা ও কামিয়াবীর জন্য মূল শর্ত বানাননি। এগুলো উপকরণমাত্র।
আজকাল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এক শ্রেণির লেখকদের দেখা যায়, তারা বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে কোরআনের যোগসূত্র খুঁজে বেড়ায়। আরবি না বুঝলেও তারা রাতদিন পবিত্র কোরআন শরিফের বিভিন্ন অনুবাদ-তাফসির ইত্যাদি নিয়ে বসে থাকে। যখনই খবর আসে বিজ্ঞানের অমুক নতুন আবিষ্কারটি সাধিত হয়েছে, তখনই তারা হয়রান হয়ে খুঁজে বেড়ায় কোরআনে কারিমের কোথাও এই আবিষ্কারের কথা পাওয়া যায় কিনা! অতঃপর নিজের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে বলতে শুরু করে- আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশ’ বছর আগে কোরআনের অমুক আয়াতে এই আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে।
বাজারে কোরআন ও বিজ্ঞান সংক্রান্ত যে কয়টা বই আছে, তার প্রায় সবগুলোতেই কোরআনের আয়াতের অর্থকে ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক কোনো না কোনো আবিষ্কারের সঙ্গে মিল দেখানো হয়েছে। যেন বিজ্ঞানটাই প্রকৃত সত্য এবং কোরআন অবতরণের মূল উদ্দেশ্যে। কোরআনের আয়াত দ্বারা যদি বিজ্ঞানের থিওরিকে ব্যাখ্যা করা না যায়, তাহলে কোরআন অচল হয়ে যাচ্ছে- নাউজুবিল্লাহ।
বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যাকে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু কোরআনের সঙ্গে এসবের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা- এটাই প্রশ্ন। কোরআনে এসব উল্লেখ থাকলেও তা গৌণ। কোরআনে কারিমের প্রধান আলোচ্য বিষয় একটি। তা হলো- আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়।
এ বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেছেন, ‘দুনিয়ার শাসনকর্তাদের আইন বইয়ে তো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুসন্ধান করা হয় না, সেখানে খোদার কালাম কোরআনে তা অনুসন্ধান করা খুবই অবিচারের কথা।’ -মাওয়ায়েজে আশরাফিয়া: ৫ম খণ্ড
হরজত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
আমাদের ভয় করা উচিৎ আল্লাহর সতর্কবাণীকে। যে সতর্কবার্তায় বলা হচ্ছে, ‘রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
প্রথমতঃ এমন গবেষকদের অনেকেরই ব্যক্তিগত আমল ত্রুটিপূর্ণ। দাঁড়ি-টুপি ইত্যাদি তো দূরের কথা, নামাজ-রোজা-পর্দার ধারেকাছেও নেই অনেকে। অথচ পরকালের মুক্তি নির্ভর করছে খাঁটি মনে শরিয়তের যথাযথ অনুসরণের ওপর। কোরআনে কারিমের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বের করার ওপর নয়।
আল কোরআনে যারা বিজ্ঞানের থিওরি খুঁজে বেড়ায়, তাদের আরও একটি স্বভাব হলো, তারা হাদিস নিয়ে ততোটা মাথা ঘামায় না; যতোটা মাথা ঘামায় কোথায় কোন বৈজ্ঞানিক কি আবিষ্কার করলেন, কোন পাশ্চাত্য দার্শনিক কি বললেন- সে বিষয়ে। আর সাহাবা (রা.) এবং তাবেয়িদের (রহ.) উক্তি তো তারা শুনতেও নারাজ!
এই শ্রেণির লোকেরা আব্বাসীয় শাসনকালকে (৭৫০ খ্রি.-১২৫৮ খ্রি.) ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সময় বলে ধারণা করেন। কারণ মুসলমানরা তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রভূত উন্নতিসাধন করেছিলো। কিন্তু এমন ধারণাও একটি ভুল। এমন ধারণা ইসলামের আকিদা বিরোধী। কারণ, পবিত্র হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে,
‘সর্বোত্তম যুগ হচ্ছে আমার যুগ, অতঃপর আমার পরবর্তীদের যুগ, অতঃপর তাদের পরবর্তীদের যুগ।’
তাদের আরও একটি ভুল মনোভাব হলো, তারা সর্বদা বলে বেড়ায় বর্তমানে বিশ্বের সর্বত্র মুসলমানরা যে হারে লাঞ্ছিত-অপমানিত হচ্ছে- তার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেন আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অনগ্রসরতাকে। অথচ মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন,
‘আর তোমরা নিরাশ হয়ো না ও দুঃখ করো না এবং তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও।’
-সূরা আল ইমরান: ১৩৯
-সূরা আল ইমরান: ১৩৯
এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি যা এনেছি তার প্রতি পুরোপুরি অনুগত হবে।’
(শরহে সুন্নাহ)
(শরহে সুন্নাহ)
আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রয়োজনীয়তাকে কেউ অস্বীকার করে না। কিন্ত এগুলোকে আল্লাহতায়ালা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের সফলতা ও কামিয়াবীর জন্য মূল শর্ত বানাননি। এগুলো উপকরণমাত্র।
আজকাল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এক শ্রেণির লেখকদের দেখা যায়, তারা বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে কোরআনের যোগসূত্র খুঁজে বেড়ায়। আরবি না বুঝলেও তারা রাতদিন পবিত্র কোরআন শরিফের বিভিন্ন অনুবাদ-তাফসির ইত্যাদি নিয়ে বসে থাকে। যখনই খবর আসে বিজ্ঞানের অমুক নতুন আবিষ্কারটি সাধিত হয়েছে, তখনই তারা হয়রান হয়ে খুঁজে বেড়ায় কোরআনে কারিমের কোথাও এই আবিষ্কারের কথা পাওয়া যায় কিনা! অতঃপর নিজের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে বলতে শুরু করে- আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশ’ বছর আগে কোরআনের অমুক আয়াতে এই আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে।
বাজারে কোরআন ও বিজ্ঞান সংক্রান্ত যে কয়টা বই আছে, তার প্রায় সবগুলোতেই কোরআনের আয়াতের অর্থকে ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক কোনো না কোনো আবিষ্কারের সঙ্গে মিল দেখানো হয়েছে। যেন বিজ্ঞানটাই প্রকৃত সত্য এবং কোরআন অবতরণের মূল উদ্দেশ্যে। কোরআনের আয়াত দ্বারা যদি বিজ্ঞানের থিওরিকে ব্যাখ্যা করা না যায়, তাহলে কোরআন অচল হয়ে যাচ্ছে- নাউজুবিল্লাহ।
বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যাকে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু কোরআনের সঙ্গে এসবের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা- এটাই প্রশ্ন। কোরআনে এসব উল্লেখ থাকলেও তা গৌণ। কোরআনে কারিমের প্রধান আলোচ্য বিষয় একটি। তা হলো- আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়।
এ বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেছেন, ‘দুনিয়ার শাসনকর্তাদের আইন বইয়ে তো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুসন্ধান করা হয় না, সেখানে খোদার কালাম কোরআনে তা অনুসন্ধান করা খুবই অবিচারের কথা।’ -মাওয়ায়েজে আশরাফিয়া: ৫ম খণ্ড
হরজত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
‘যে ব্যক্তি ইলম ছাড়া কোরআন সম্পর্কে কথা বলবে, সে যেন জাহান্নামে তার আবাস বানিয়ে নেয়।’
(সুনানে তিরমিজি)
(সুনানে তিরমিজি)
আমাদের ভয় করা উচিৎ আল্লাহর সতর্কবাণীকে। যে সতর্কবার্তায় বলা হচ্ছে, ‘রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় এই কোরআনকে প্রলাপ সাব্যস্ত করেছে।’
-সূরা আল ফুরকান: ৩০
(collected)-সূরা আল ফুরকান: ৩০
Comment