কোরআনের আহবান:- فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ (অতএব যদি তোমাদের জানা না থাকে তোমরা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর {সূরাতুন নাহল, আয়াত নং ৪৩}
الحمد لله وكفى وسلام على عباده الذين اصطفى أما بعد- কোরআন মাজিদে জিহাদ সম্পর্কিত আয়াতগুলো চার ভাগে বিভক্ত:- (১) মাদানী সূরাগুলুতে জিহাদ সম্পর্কিত আয়াত সমুহ। (২) মাদানী সূরাগুলোতে জিহাদের প্রতি ইঙ্গিতবাচঁক আয়াত সমুহ। (৩) মাক্কী সূরাগুলোতে জিহাদের প্রতি ইঙ্গিত বহণকারী আয়াত সমুহ। (৪) জিহাদের প্রতি দূর সম্পর্কে ইঙ্গিত বহণকারী আয়াত সমুহ।
أَعُوْذُ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
سورة البقرة
সূরাতুল বাক্বারাহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ
سورة البقرة
সূরাতুল বাক্বারাহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
(৩) হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (১৫৩)সারমর্ম :-
হে মুসলিম জাতি ! যদি আল্লাহ তায়ালার সাহায্য পেতে চাও, তবে সবর ও ছলাতের ব্যাপারে নিজেকে মজবুত বানাও। সবরের অর্থ হল:- ইসলামী শরীয়তের উপর অটল-অবিচল থাকা [ ,খাহেশ থাকা সত্তেও গুনাহ না করা এবং বালা-মসিবতে ধৈর্য ধারণ করা] । আর জেনে রাখ, ধৈর্যের সর্বোচ্ছ মাকাম হল জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
উদ্ধৃতি:-
(১) استعينوا بالصبر علي الذكر والشكر وسائر الطاعات من الصوم والجهاد وترك المبالات بطعن المعاندين في امر القبلة
ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য অর্জন কর অর্থাৎ যিকির, শোকর এবং সমস্ত ইবাদাত সিয়াম, জিহাদ ইত্যাদী মহৎ কাজের উপর অটল থাক এবং কিবলা পরিবর্তনের ব্যাপারে শত্রুর তিরস্কারকে পরোয়া কর না। (রুহুল মাআনী)
(২) يهان سى اشاره هى كه جهاد مين محنت اتهاؤ، اور مضبوطي اختيار كرو
এ আয়াতে ইঙ্গিত রয়েছে যে, তোমরা জিহাদের ব্যাপারে কষ্ট কর এবং অটল অবিচল থাক। (মূ-দ্বিহুল কোরআন)
(৩) اس آیت مین یه اشاره بهی هى که جهاد مین محنت اتهاؤ ، جس کا ذکر آگی آتاهی که اس مین صبر اعلی درجه کا هی
এ আয়াতে এই ইঙ্গিতও রয়েছে যে, তোমরা জিহাদের ব্যাপারে কষ্ট কর। যার আলোচনা পরবর্তি আয়াতে এসেছে। জিহাদ হল ধৈর্য পরীক্ষার সর্বোচ্চ মাধ্যম। (তাফসীরে উসমানী)
(৪) ومنهم من حمله على الجهاد لأنه تعالى ذكر بعده ولاتقولوا لمن يقتل في سبيل الله أموات
তাফসীরবিদদের কেউ কেউ এ আয়াতে সবরের ব্যাখ্যা করেছেন জিহাদ দিয়ে। কারণ, আল্লাহ তায়ালা তার পরবর্তি আয়াতে উল্লেখ করেছেন, <আল্লাহর রাস্তায় নিহত ব্যক্তিকে তোমরা মৃত বলনা।> (তাফসীরে কাবির)
(৫) إن الله.مع الصابرين ..........
নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। এ আয়াতে مع এর অর্থের মাঝে সাহায্য-সহযোগীতা অন্তরভূক্ত আছে। (তাফসীরে মাজেদি)
হে আমার প্রানপ্রিয় মুজাহিদ ভাইয়েরা ! বিজয় অতি নিকটে। মুজাহিদদের সাথে আল্লাহর সাহায্য রয়েছে। কাফেরদের সাহায্যকারী কেউ নেই। সুতরাং চল দূর্বার....... ।
সম্পর্ক :-
এ আয়াতের সাথে পরবর্তি চারটি আয়াতের সম্পর্ক দুভাবে হতে পারে :-
(১) আল্লাহ তায়ালার মদদ্ , সাহায্য এবং বিষেশ সান্নিধ্য সবর ও নামাজের মাধ্যমে অর্জিত হয়। আর জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ হল সবরের সর্বোচ্চ স্তর। তাই যে ব্যক্তি জিহাদের ময়দানে মারা যায় আল্লাহ তায়ালা তাকে এত উঁচা মাকাম, শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশেষ জিবন দান করেন যার সামনে পুরা দুনিয়ার বাদশাহী এবং নেয়ামতরাজী কোন তুলনা হয় না । কারণ, সে তো সাহাদাত অর্জন করার আগ পর্যন্ত জিহাদের ময়দানে যথেষ্ট পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছে। তাই এ অবস্থায় সফলকাম ঐ ব্যক্তিই হবে যে অটল অবিচল থাকবে। (আল্লাহু আ'লাম)
(২) আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। এ কথার উপর কারও হয়ত প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আল্লাহ তায়ালা যদি ধৈর্য্যশীলদের সাথি হয়ে থাকেন তাহলে মুসলমানরা যুদ্ধের ময়দানে মারা যায় কেন ? এ লোকগুলো তো দুনিয়ার নিয়ামত সমুহ থেকে বঞ্ছিত হয়ে যায়। আর যে মারা না যায় সে তো অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়। ?
পরবর্তি আয়াতে তার জবাব দেওয়া হয়েছে:- শহিদ কে তো এমন শক্তিশালী ও মর্যাদাবান জিবন দান করা হয়েছে যা দুনিয়ার সমস্ত লোক মিলেও বুঝতে সক্ষম না। আর যে কষ্ট করছে তার জন্য প্রতিদান জমা করা হচ্ছে। (আল্লাহু আ'লাম)
ইয়া আল্লাহ তুমি আমাদের কে এমন আমল করার তাওফিক দান করুণ যে আমলে তুমি সন্তুষ্ট ।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:-
وَاسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلاَّ عَلَى الْخَاشِعِينَ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلاَقُو رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব। যারা একথা খেয়াল করে যে, তাদেরকে সম্মুখীন হতে হবে স্বীয় পরওয়ারদেগারের এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে। (৪৫,৪৬)
Comment