ঈমানের ৭৭ শাখা====== পর্ব ৩
তাওহিদুল উলুহিয়্যাত
আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা, পালনকর্তা, রিযিকদাতা, বিধানদাতা, ইত্যাদি শুধু মুখে বলা এবং অন্তরে বিশ্বাস করলেই একজন মানুষ মুমিন হতে পানে না। বরং এগুলো বিশ্বাস করার সাথে সাথে আল্লাহ তায়ালাকে “ঈলাহ” হিসাবে মেনে নিতে হবে। এবং অন্য যত বাতিল উপাস্য আছে সেগুলোকে বর্জন করতে হবে।তাওহিদুল উলুহিয়্যাত
ঈলাহ অর্থ, মা‘বুদ, ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য একমাত্র সত্ত্বা। সুতরাং ইবাদাত সংশ্লিষ্ট যত বিষয় আছে সব একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য খাছ করতে হবে। যেমন:
১: সিজদা, সিজদা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকেই করতে হবে। অন্য কোন কিছুকে সিজদা করা যাবে না।
২: দুয়া, তথা প্রার্থনা। যেহেতু আমি মেনে নিয়েছে যে সমস্ত কিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, রিযিকদাতা আল্লাহ তাযালা, সেহেতু আমার সমস্ত প্রার্থনা হবে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছেই। আমি অনেক গুনাহ করেছি তো গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে। আমর সন্তান হচ্ছে না, সন্তান প্রয়োজন, তো সন্তানের জন্য আল্লাহ তায়ালান কাছে প্রর্থনা করতে হবে। বাবার দরবারে, মাজারে, পীরের দরবারে গিয়ে প্রর্থনা করা যাবে না। মুর্তির কাছে প্রর্থনা করা যাবে না।
তেমনিভাবে, ‘ভরসা’ একমাত্র আল্লাহর উপর, ‘ভয়’ একমাত্র আল্লাহকেই, ‘মহাব্বাত’ একমাত্র আল্লাহকেই করতে হবে। ‘আইন’ একমাত্র আল্লাহ তায়ালার আইনই মানতে হবে। অন্য কারো বানানো আইন মানা যাবে না।
কেননা, মানুষ আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত করবে, আল্লাহ তায়ালার দাসত্ত্ব করবে, আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করবে, তারই কাছে প্রর্থনা করবে, তাকেই ভয় করবে, তাকেই বালোবাসবে, এ জন্যই তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন। আর মানুষকে এই দাসত্যের উপর উঠনোর জন্যই আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন:
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ فَمِنْهُمْ مَنْ هَدَى اللَّهُ وَمِنْهُمْ مَنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلَالَةُ فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ. (النحل (36)
অর্থ: নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসুল প্রেরন করেছি (এই মর্মে যে) তোমরা আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত কর, এবং সমস্ত তাগুত (তথা মিথ্যা উপাস্যকে) বর্জন কর। অতঃপর কতক এমন, যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা হিদাযাত দান করেছেন এবং কতক এমন, যাদের জন্য পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। অতএব তোমরা যমীনের বুকে সফর কর,তারপর দেখ, কেমন হয়েছে অস্বীকারকারীদের পরিণাম। (সুরা আন- নাহল ৩৬) 1:{ وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُولٍ إِلا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلا أَنَا فَاعْبُدُونِ } [الأنبياء: 25]
অর্থ: আমি আপনার পুর্বে যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাঁর প্রতি অবশ্যই এ ওহী পাঠিয়েছি যে, আমি ছাড়া কোন মা‘বুদ নেই। অতএব আমার ইবাদাত কর। (আল- আম্বিয়া, ২৫)অতএব, কেউ আগে মুশরিক ছিলো, মুর্তি পুজা করতো, পরবর্তিতে সে মুসলমান হয়েছে, আল্লাহ তায়ালাকে প্রভু হিসাবে মেনে নিয়েছে, মা‘বুদ রূপে মেনে নিয়েছে, ইসলামের সমস্ত বিধানাবলী মেনে নিয়েছে, কিন্তু সে মুর্তি পুজা ছাড়তে পারে নাই, তাহলে সে মুমিন বলে গন্য হবে না।
কারন, মূলনীতি হল, যে যেই কারনে কাফের। তার মুমিন হতে হলে সে কারন থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
(বিস্তারিত পরবর্তি পর্বে আসবে ইনশাইল্লাহ)
Comment