ঈমানের ৭৭ শাখা ========পর্ব ৪
( মুলনীতি হল, যে যেই কারনে কাফের তাকে সেই কারন থেকে বের হয়ে আসতে হবে।)কারন মক্কার মুশরিকরা ও তো আল্লাহ তায়ালাকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে মানতো, রাসূলকে রাসূল হিসাবেই জানতো। স্বয়ং রাসূলের চাচাও আল্লাহ তায়ালাকে মানতো ও রাসূলকে রাসূল হিসাবে বিশ্বাস করতো। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ فَأَنَّى يُؤْفَكُونَ (العنكبوت (61)
অর্থ: আপনি যদি ওদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিযুক্ত করেছেন? তবে ওরা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। অতঃএব ওরা (সত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে? (সূরা আনকাবুত, ৬১) وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ الْعَزِيزُ الْعَلِيمُ (الزخرف(9)
অর্থ: আপনি যদি ওদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘আসমানসমুহ ও যমীন কে সৃষ্টি করেছেন? তবে ওরা অবশ্যই বলবে, ‘এগুলি সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ (আল্লাহ) ( সুরা যুখরুফ, ৯) وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ نَزَّلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ مِنْ بَعْدِ مَوْتِهَا لَيَقُولُنَّ اللَّهُ قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ (العنكبوت(63)
অর্থ: আপনি যদি ওদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তার দ্বারা যমিনকে তার মৃত্যুর পর জীবিত করেন?’ তবে ওরা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। আপনি বলুন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর।’ কিন্তু ওদের অধিকাংশই বোঝে না। ( সুরা আল আনকাবুত, ৬৩)এ ছাড়া আরো অনেক আয়াত আছে যেগুলো দ্বারা বুঝে আসে যে তারা আল্লাহ তায়ালাকে রব হিসাবে মানতো। কিন্তু তারপরও তাদেরকে মুমিন হিসাবে গন্য করা হলনা কেন? কারন একটাই তারা আল্লাহ তায়ালাকে রব হিসাবে মানার পরও তারা তাদের মুর্তি পুজা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। যেমন, কোরআনের মধ্যে এসেছে,
إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ (35) وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُو آلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَجْنُونٍ (36) ( الصافات)
অর্থ: ওদের অবস্থা এই ছিলো যে, যখন ওদের বলা হত, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বুদ নেই’, তখন ওরা অহংকার করতো, এবং বলত, ‘আমরা কি এক উম্মাদ কবির কথায় আপন উপাস্যদের পরিত্যাগ করব? (আস-সাফ্ফাত, ৩৬) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইমাদুদ্দীন ইবনে কাসীর বলেছেন, أن أبا هريرة أخبره، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: "أمرت أن أقاتل الناس حتى يقولوا: لا إله إلا الله، فمن قال: لا إله إلا الله، فقد عصم مني ماله ونفسه إلا بحقه، وحسابه على الله"، وأنزل الله في كتابه، وذكر قوما فقال: { إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ } [الصافات : 35] ، وقال الله جل ثناؤه: { وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَى وَكَانُوا أَحَقَّ بِهَا وَأَهْلَهَا } وهي: "لا إله إلا الله، محمد رسول الله"، فاستكبروا عنها واستكبر عنها المشركون. (تفسير ابن كثير)
হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্নিত, রাসূল সা; বলেছেন: যতক্ষন পর্যন্ত মানুষ এ সাক্ষ না দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মা‘বুদ নেই ততক্ষন পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে আদিষ্ট হয়েছি। সুতরাং যে বেক্তি স্বীকার করে নিবে যে আল্লাহ ছাড়া আর কোন মা‘বুদ নেই, সে আমার থেকে তার জান ও মালকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরীয়তসম্মত কোন কারন ঘটলে ভিন্ন কথা। আর তার কৃতকর্মের হিসাব-নিকাস আল্লাহর কাছেই রয়েছে। এবং আল্লাহ তায়ালা তার কিতাবের মধ্যে এ বিষয়ে অবতির্ণ করেছেন, এবং এক সম্প্রদায়ের কথা উল্ল্যেখ করে বলেছেন: (‘নিশ্চয় ওদের অবস্থা এই ছিলো যে, যখন ওদের বলা হত, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বুদ নেই’, তখন ওরা অহংকার করতো।’) এবং আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘ (আর তিনি তদের উপর তাকওয়ার কালিমাকে আবশ্যকীয় করলেন, এবং তারাই এর বেশি হকদার ছিলো।) আর এই কালিমা হল, “লা ইলাহ ইল্লাহল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” কিন্তু তারা অহংকার করল এবং মুশরিকরাও অহংকার করল। (তাফসিরে ইবনে কাসির)এমনিভাকে আহলে কিতাবও আল্লাহ তায়ালাকে প্রভু হিসাবে মানতো, এবং রাসূল সা: কেও রাসূল হিসাবে জানতো। কিন্তু তারা আল্লাহ তায়ালার সাথে শরিক করতো, এবং রাসূল সা: এর রিসালাতের স্বীকিৃত দিতো না।
( বাকি অংশ পরবর্তি পর্বে।)
Comment