محمدالفاتح:
শাইখ আনোয়ার আলআওলাক্বি (রহ)
খিলাফাহ্ প্রদানের পূর্বে মুসলিম উম্মাহকে
বিভিন্ন স্তর বা ধাপ অতিক্রম করতে হবে,
ব্যাপারটি ট্রেনে ভ্রমণের মত যেখানে
পর্যায়ক্রমে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়…স্টেশন অতিক্রম
করতে হয়, উম্মতকেও ধাপে ধাপে কয়েকটি স্টেশন
পার হতে হবে যার একটি হল – ‘আল-
ইবতিলা’ (ঈমানের পরীক্ষা)। আল্লাহ্ তা‘আলা
বলেন,
“তোমরা কি মনে কর যে, তোমাদের ছেড়ে দেয়া
হবে এমনি, যতক্ষণ না আল্লাহ জেনে নেবেন
তোমাদের মাঝে কে (আল্লাহর পথে) যুদ্ধ করেছে
এবং কে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুসলমানদের ব্যতীত
অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করা থেকে বিরত
রয়েছে।” [সূরা তাওবাহ্ঃ ১৬]
সুতরাং জান্নাতে যাওয়ার এবং দুনিয়ার বুকে
প্রতিষ্ঠা লাভের পূর্বে যে দু’টি স্টেশন বা ঘাঁটি
অতিক্রম করতে হবে তা হলঃ জিহাদ ফী
সাবীলিল্লাহ্এবং আল-ওয়ালা ওয়াল বারা [আল-
ওয়ালামানে আল্লাহর জন্য ভালবাসা ও আনুগত্য।
আর আল-বারা মানে আল্লাহর জন্য ঘৃণা ও পরিহার
করা। অধিকাংশ মুসলিম এ সম্বন্ধে ভীষণ অজ্ঞ।
তাদের অনেককেই বলতে শোনা যায় যে,
‘আমাদের একে অপরকে (সব বিশ্বাস ও ধর্মের
লোকদের) ভালবাসা উচিত, তাদের প্রতি সহনশীল
হওয়া উচিত’। নিঃসন্দেহে এটি একটি কুফরি
ধারণা, যেহেতু আমাদের আনুগত্য কেবল আল্লাহর
প্রতি; আল্লাহ্ যা ঘৃণা করেন তার প্রতি বিদ্বেষ
পোষণ করতে আমরা আদিষ্ট হয়েছি। শাইখ আবু
মুহাম্মাদ আসীম আল-মাকদিসী (আল্লাহ্ তাঁর মুক্তি
ত্বরান্বিত করুন) সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চমৎকার একটি বই
লিখেছেন। বইটির বাংলা অনুবাদের শিরোনাম
“মিল্লাতে ইব্রাহিম” গুরুত্বপূর্ণ বইটি পড়ে দেখার
জন্য পাঠকদের প্রতি অনুরোধ রইল। মূল বইটি আরবী
ভাষায় হলেও ইংরেজী ও বাংলা উভয় ভাষাতেই
এর অনুবাদ রয়েছে।]। এই দু’টি বিষয়ে সঠিক বোঝ না
থাকলে দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করা সম্ভব নয়।
উম্মতকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে হবে আর
স্পষ্টরূপে ফুটিয়ে তুলেতে হবে যে, তাদের ওয়ালা
তথা ভালবাসা ও আনুগত্য আল্লাহ্, তাঁর রাসূল (সা)
ও মু’মিনগণের প্রতি আর শয়তান ও অবিশ্বাসীদের
সাথে সংশ্লিষ্ট না থাকা ও তাদের হতে দূরত্ব
বজায় রাখা। কতিপয় আলেম, কিছু ইসলামী সংগঠন ও
সাধারণ মুসলিমদের মধ্য হতেও অনেকে উক্ত দু’টি
বিষয়কে বিচ্যুত করতে চায়, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত
‘তামকীন’ বা শক্তি অর্জন করতে হলে এ দু’টি বিষয়
কারণভাবে উপেক্ষা করার নয়, আল্লাহ্ তা‘আলা
এই উম্মতকে এখন পরীক্ষা করছেন। আমাদের এমন
পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে যেখানে
আমাদের ঈমান অথবা কুফরীর মাঝে একটিকে
বেছে নিতে হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত মূলত সেই পরীক্ষার
একটি অংশ যা সমাজের উচ্চস্তর হতে নিম্নস্তর
পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রথমে রাজা-বাদশাহ্, প্রেসিডেন্ট
ও আলেম উলামা হতে শুরু করে সাধারণ জনগণ সকলের
উপরই পরীক্ষা চলছে। রাজা-বাদশাহ্ ও
প্রেসিডেন্টদের পরীক্ষা প্রায় শেষ, ওরা
কুফরীকেই বাছাই করে নিয়েছে; আল্লাহ্ই ভাল
জানেন, আমার মনে হয় তাদের পরীক্ষার ফলাফল
বা সম্ভব্য পরিণতি সর্বজনবিদিত। এখন আলেমগণের
কঠিন পরীক্ষা চলছে- ‘হয় তোমরা আমাদের পক্ষে,
না হয় আমাদের বিপক্ষে’- এমন মন্তব্য দ্বারা বুশ
তাদের মহা ফিৎনায় ফেলেছে। এবং সে বিভিন্ন
দেশের রাজা-বাদশাহ্ ও প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত
করছে যারা পুলিশ অফিসার সদৃশ ওর প্রতিনিধিত্ব
করছে। বুশের স্বার্থে ও সেবায় ওরা সূচারু রূপে
দায়িত্ব পালন করে যায়। ‘হয় তুমি আমাদের পক্ষে,
নাহয় বিপক্ষে’; এখন যে কোন একটি সিদ্ধান্ত
নিতে হবে। একই সাথে দু’পক্ষে সহাবস্থান করা
সম্ভব নয়। আজ থেকে দশ বছর পূর্বে কেউ চাইলে
জিহাদের উপর খুৎবা দেয়ার পর বাদশাহর ভোজ
সভায় শরীক হতে পারত; কিন্তু এখন দ্বৈত ভূমিকা
পালন করা অসম্ভব। কার কোন পক্ষে অবস্থান তা
পরিষ্কার হতে হবে। মাঝের ভেদ রেখা সুস্পষ্ট হয়ে
দু’পক্ষ ক্রমশ পরস্পর হতে পৃথক হয়ে যাবে। এ কারণে
রাসূল (সা) বলেন, এই পরীক্ষা ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে,
যতক্ষণ না মানুষ দুই শিবিরে সম্পূর্ণ বিভক্ত হয়ে
পড়বে। একটি শিবির হবে পূর্ণাঙ্গ মু’মিনদের
যেখানে কোন মুনাফিক থাকবে না আর অপর
শিবিরটি কুফরীপূর্ণ, ঈমান নিশ্চিহ্ন। বর্তমানে
ঈমান-কুফর একত্রে মিশে রয়েছে; যতক্ষণ না এই
মিশ্রণ বিদূরিত হয়ে স্বাতন্ত্র্য আসবে, ততক্ষণ
উম্মতের বিজয় অর্জন হবে না। সাইয়্যিদ কুতুব (রহঃ)
তার তাফসীর ফী যিলালিল কুর’আনে বলেন,
“আল্লাহ্ তা‘আলা ততক্ষণ দুনিয়ার বুকে কাউকে
প্রতিষ্ঠা দান করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত স্পষ্টভাবে
জেনে নেন যে, কে তাঁর পক্ষে আর কে তাঁর
বিপক্ষে।” এটা সম্ভব হবে না যতক্ষণ না উম্মাহ্
মিশ্রিত অবস্থায় থাকবে। এখন এই উম্মাহ্ প্রয়োজন,
মু’মিন এবং মুনাফিক- এ দু’টি শিবিরকে বিভক্ত
করে দেয়া। [সুবহানাল্লাহ্! ধর্মত্যাগী ও প্রকাশ্য
মুনাফিক হওয়া সত্ত্বেও এখনও বহু অজ্ঞ মুসলিম
পাওয়া যায়, যারা বলে যে তাদের সাথে
আমাদের সহনশীল হওয়া উচিত। এমনও কিছু আছে
যারা বলে, বিধর্মীদের মধ্যে যারা ইসলাম ও
মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় আছে তাদের
সাথেও আমাদের সহনশীল হওয়া উচিত। আমাদের
প্রশ্ন, এই সহনশীলতার পরিধি কতদূর। তাদের এমন মন্তব্য
শুনে মনে হয় যে, আল্লাহর শত্রুদের ঘৃণা ও তাদের
বিরুদ্ধা
শাইখ আনোয়ার আলআওলাক্বি (রহ)
খিলাফাহ্ প্রদানের পূর্বে মুসলিম উম্মাহকে
বিভিন্ন স্তর বা ধাপ অতিক্রম করতে হবে,
ব্যাপারটি ট্রেনে ভ্রমণের মত যেখানে
পর্যায়ক্রমে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়…স্টেশন অতিক্রম
করতে হয়, উম্মতকেও ধাপে ধাপে কয়েকটি স্টেশন
পার হতে হবে যার একটি হল – ‘আল-
ইবতিলা’ (ঈমানের পরীক্ষা)। আল্লাহ্ তা‘আলা
বলেন,
“তোমরা কি মনে কর যে, তোমাদের ছেড়ে দেয়া
হবে এমনি, যতক্ষণ না আল্লাহ জেনে নেবেন
তোমাদের মাঝে কে (আল্লাহর পথে) যুদ্ধ করেছে
এবং কে আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুসলমানদের ব্যতীত
অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করা থেকে বিরত
রয়েছে।” [সূরা তাওবাহ্ঃ ১৬]
সুতরাং জান্নাতে যাওয়ার এবং দুনিয়ার বুকে
প্রতিষ্ঠা লাভের পূর্বে যে দু’টি স্টেশন বা ঘাঁটি
অতিক্রম করতে হবে তা হলঃ জিহাদ ফী
সাবীলিল্লাহ্এবং আল-ওয়ালা ওয়াল বারা [আল-
ওয়ালামানে আল্লাহর জন্য ভালবাসা ও আনুগত্য।
আর আল-বারা মানে আল্লাহর জন্য ঘৃণা ও পরিহার
করা। অধিকাংশ মুসলিম এ সম্বন্ধে ভীষণ অজ্ঞ।
তাদের অনেককেই বলতে শোনা যায় যে,
‘আমাদের একে অপরকে (সব বিশ্বাস ও ধর্মের
লোকদের) ভালবাসা উচিত, তাদের প্রতি সহনশীল
হওয়া উচিত’। নিঃসন্দেহে এটি একটি কুফরি
ধারণা, যেহেতু আমাদের আনুগত্য কেবল আল্লাহর
প্রতি; আল্লাহ্ যা ঘৃণা করেন তার প্রতি বিদ্বেষ
পোষণ করতে আমরা আদিষ্ট হয়েছি। শাইখ আবু
মুহাম্মাদ আসীম আল-মাকদিসী (আল্লাহ্ তাঁর মুক্তি
ত্বরান্বিত করুন) সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চমৎকার একটি বই
লিখেছেন। বইটির বাংলা অনুবাদের শিরোনাম
“মিল্লাতে ইব্রাহিম” গুরুত্বপূর্ণ বইটি পড়ে দেখার
জন্য পাঠকদের প্রতি অনুরোধ রইল। মূল বইটি আরবী
ভাষায় হলেও ইংরেজী ও বাংলা উভয় ভাষাতেই
এর অনুবাদ রয়েছে।]। এই দু’টি বিষয়ে সঠিক বোঝ না
থাকলে দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করা সম্ভব নয়।
উম্মতকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে হবে আর
স্পষ্টরূপে ফুটিয়ে তুলেতে হবে যে, তাদের ওয়ালা
তথা ভালবাসা ও আনুগত্য আল্লাহ্, তাঁর রাসূল (সা)
ও মু’মিনগণের প্রতি আর শয়তান ও অবিশ্বাসীদের
সাথে সংশ্লিষ্ট না থাকা ও তাদের হতে দূরত্ব
বজায় রাখা। কতিপয় আলেম, কিছু ইসলামী সংগঠন ও
সাধারণ মুসলিমদের মধ্য হতেও অনেকে উক্ত দু’টি
বিষয়কে বিচ্যুত করতে চায়, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত
‘তামকীন’ বা শক্তি অর্জন করতে হলে এ দু’টি বিষয়
কারণভাবে উপেক্ষা করার নয়, আল্লাহ্ তা‘আলা
এই উম্মতকে এখন পরীক্ষা করছেন। আমাদের এমন
পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে যেখানে
আমাদের ঈমান অথবা কুফরীর মাঝে একটিকে
বেছে নিতে হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত মূলত সেই পরীক্ষার
একটি অংশ যা সমাজের উচ্চস্তর হতে নিম্নস্তর
পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রথমে রাজা-বাদশাহ্, প্রেসিডেন্ট
ও আলেম উলামা হতে শুরু করে সাধারণ জনগণ সকলের
উপরই পরীক্ষা চলছে। রাজা-বাদশাহ্ ও
প্রেসিডেন্টদের পরীক্ষা প্রায় শেষ, ওরা
কুফরীকেই বাছাই করে নিয়েছে; আল্লাহ্ই ভাল
জানেন, আমার মনে হয় তাদের পরীক্ষার ফলাফল
বা সম্ভব্য পরিণতি সর্বজনবিদিত। এখন আলেমগণের
কঠিন পরীক্ষা চলছে- ‘হয় তোমরা আমাদের পক্ষে,
না হয় আমাদের বিপক্ষে’- এমন মন্তব্য দ্বারা বুশ
তাদের মহা ফিৎনায় ফেলেছে। এবং সে বিভিন্ন
দেশের রাজা-বাদশাহ্ ও প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত
করছে যারা পুলিশ অফিসার সদৃশ ওর প্রতিনিধিত্ব
করছে। বুশের স্বার্থে ও সেবায় ওরা সূচারু রূপে
দায়িত্ব পালন করে যায়। ‘হয় তুমি আমাদের পক্ষে,
নাহয় বিপক্ষে’; এখন যে কোন একটি সিদ্ধান্ত
নিতে হবে। একই সাথে দু’পক্ষে সহাবস্থান করা
সম্ভব নয়। আজ থেকে দশ বছর পূর্বে কেউ চাইলে
জিহাদের উপর খুৎবা দেয়ার পর বাদশাহর ভোজ
সভায় শরীক হতে পারত; কিন্তু এখন দ্বৈত ভূমিকা
পালন করা অসম্ভব। কার কোন পক্ষে অবস্থান তা
পরিষ্কার হতে হবে। মাঝের ভেদ রেখা সুস্পষ্ট হয়ে
দু’পক্ষ ক্রমশ পরস্পর হতে পৃথক হয়ে যাবে। এ কারণে
রাসূল (সা) বলেন, এই পরীক্ষা ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে,
যতক্ষণ না মানুষ দুই শিবিরে সম্পূর্ণ বিভক্ত হয়ে
পড়বে। একটি শিবির হবে পূর্ণাঙ্গ মু’মিনদের
যেখানে কোন মুনাফিক থাকবে না আর অপর
শিবিরটি কুফরীপূর্ণ, ঈমান নিশ্চিহ্ন। বর্তমানে
ঈমান-কুফর একত্রে মিশে রয়েছে; যতক্ষণ না এই
মিশ্রণ বিদূরিত হয়ে স্বাতন্ত্র্য আসবে, ততক্ষণ
উম্মতের বিজয় অর্জন হবে না। সাইয়্যিদ কুতুব (রহঃ)
তার তাফসীর ফী যিলালিল কুর’আনে বলেন,
“আল্লাহ্ তা‘আলা ততক্ষণ দুনিয়ার বুকে কাউকে
প্রতিষ্ঠা দান করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত স্পষ্টভাবে
জেনে নেন যে, কে তাঁর পক্ষে আর কে তাঁর
বিপক্ষে।” এটা সম্ভব হবে না যতক্ষণ না উম্মাহ্
মিশ্রিত অবস্থায় থাকবে। এখন এই উম্মাহ্ প্রয়োজন,
মু’মিন এবং মুনাফিক- এ দু’টি শিবিরকে বিভক্ত
করে দেয়া। [সুবহানাল্লাহ্! ধর্মত্যাগী ও প্রকাশ্য
মুনাফিক হওয়া সত্ত্বেও এখনও বহু অজ্ঞ মুসলিম
পাওয়া যায়, যারা বলে যে তাদের সাথে
আমাদের সহনশীল হওয়া উচিত। এমনও কিছু আছে
যারা বলে, বিধর্মীদের মধ্যে যারা ইসলাম ও
মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় আছে তাদের
সাথেও আমাদের সহনশীল হওয়া উচিত। আমাদের
প্রশ্ন, এই সহনশীলতার পরিধি কতদূর। তাদের এমন মন্তব্য
শুনে মনে হয় যে, আল্লাহর শত্রুদের ঘৃণা ও তাদের
বিরুদ্ধা
Comment