ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই
পর্ব ১
শয়তানের ওহী: "ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই"
মুফতি আব্দুল ওয়াহহাব (দা বা)
---
PDF ডাউনলোড করে পড়ুন - http://docdro.id/f4s702T
,
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الْإِنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ (১১২) وَلِتَصْغَى إِلَيْهِ أَفْئِدَةُ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ وَلِيَرْضَوْهُ وَلِيَقْتَرِفُوا مَا هُمْ مُقْتَرِفُونَ (১১৩)
(আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু বানিয়েছি জীন ও মানব জাতীর মধ্য থেকে শয়তানদেরকে । তারা ধোঁকা দেয়ার উদ্দেশ্যে একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথার কুমন্ত্রণা দেয়। আপনার রব চাইলে তারা এরূপ করতে পারতো না।
.
সুতরাং আপনি তাদেরকে তাদের মিথ্যা রটনায় পড়ে থাকতে দিন। আর কুমন্ত্রণা এ কারণে দেয় যে, যারা আখেরাতের উপর ঈমান রাখে না তাদের অন্তর যেন সেদিকে আকৃষ্ট হয় এবং তারা তা পছন্দ করে আর তারা যেসব অপকর্ম করার তা করতে থাকে।)
[আনআম:১১২-১১৩]
দরবারী আলেমদের নিকট এই শয়তানরাই ওহী করেছে: ‘ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই।’
.
.
#খণ্ডন:
ইমাম দ্বারা কী উদ্দেশ্য? জিহাদের আমীর না’কি খলিফাতুল মুসলিমীন?
.
যদি জিহাদের আমীর উদ্দেশ্য হয় তাহলে আমরাও আপনাদের কথার একাংশের সাথে একমত। জিহাদের জন্য আমীর বানানো ওয়াজিব আমরাও বলি।
.
জামাআতবদ্ধ হওয়া ওয়াজিব আমরাও বলি। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার দ্বারা সফলতা আসবে না এতে আমরাও একমত। জিহাদের আমীর না থাকলে একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়া ওয়াজিব। এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পূর্বে করে এসেছি।
.
তবে যদি বলা হয়, ‘জিহাদের আমীর না থাকলে জিহাদই ফরয নয়’ তাহলে এ কথা শরীয়ত বহির্ভূত। আমরা এর সাথে একমত নই। মসজিদের ইমাম না থাকলে ইমাম বানিয়ে নেয়া আবশ্যক তা ঠিক। কিন্তু ইমাম না থাকলে নামাযই ফরয নয়, এটা শরীয়ত বহির্ভূত কথা।
.
আর যদি ইমাম দ্বারা খলিফাতুল মুসলিমীন উদ্দেশ্য হয়, তাহলে জিজ্ঞাসা করি, ‘খলিফাতুল মুসলিমীন ছাড়া জিহাদ নেই’ এর দ্বারা কী উদ্দেশ্য?
.
যদি বলা হয়, ‘জিহাদ ফরয, তবে জিহাদ করার জন্য আগে একজনকে খলিফাতুল মুসলিমীন বানিয়ে নিতে হবে’ তবে আমরা আপনাদের কথার একাংশের সাথে একমত যে, খলিফাতুল মুসলিমীন বানানো ওয়াজিব।
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ২
কিন্তু খলিফা বানানো ছাড়া জিহাদ জায়েয হবে না, এ কথার সাথে আমরা একমত নই। কেননা, মুসলমানদের হয়তো খলিফা বানানোর সামর্থ্য থাকবে বা থাকবে না। যদি সামর্থ্য না থাকে, তাহলে খলিফা বানানো ছাড়া জিহাদ করা যাবে না কথাটা অযৌক্তিক।
এতে কেয়ামত পর্যন্ত জিহাদ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। খেলাফত প্রতিষ্টা এবং খলিফা বানানোর পথও বন্ধ হয়ে যাবে। কাজেই এ ধরণের মন্তব্য সুস্পষ্ট বাতিল না হয়ে পারে না। আর যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে খলিফা না বানানোটা মুসলমানদের জন্য গুনাহের কাজ।
কিন্তু এই গুনাহের কারণে জিহাদ ছেড়ে আরেকটা গুনাহে লিপ্ত হতে হবে এটা অযৌক্তিক। তাছাড়া শরীয়তের কোন দলীলে এ কথা বলা হয়নি যে, জিহাদ জায়েয হওয়ার জন্য খলিফা বানানো শর্ত।
আর যদি উদ্দেশ্য হয়, ‘খলিফা না থাকলে জিহাদ ফরযই হয় না’ তাহলে এটা সম্পূর্ণ শরীয়ত বহির্ভূত কথা।
উপরোক্ত সংশয়গুলোর বিস্তারিত খণ্ডনে যাচ্ছি না।
সংক্ষিপ্তাকারে শুধু কয়েকটি কথা বলব:
এক) জিহাদ ফরয হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য আয়াত ও হাদিস এসেছে, কিন্তু কোন আয়াত বা হাদিসে জিহাদ ফরয বা জায়েয হওয়ার জন্য খলিফা থাকা শর্ত করা হয়নি। জিহাদ শুধু ইমামের দায়িত্ব বলা হয়নি। তবে ইমামের দায়িত্ব সমূহের মধ্যে একটা দায়িত্ব হল জিহাদ করা।
যদি ইমাম না থাকে বা থাকা সত্ত্বেও জিহাদ না করে তাহলে মুসলমানদের নিজেদের ফরয নিজেদেরকেই আদায় করতে হবে।
ইবনে কুদামা রহ. বলেন:
فان عدم الامام لم يؤخر الجهاد لان مصلحته تفوت بتأخيره، وان حصلت غنيمة قسموها على موجب الشرع، قال القاضي وتؤخر قسمة الاماء حتى يقوم إمام احتياطا للفروج.اهـ
“যদি ইমাম না থাকে তাহলে এ কারণে জিহাদ পিছিয়ে দেয়া যাবে না। কেননা, পিছিয়ে দেয়ার দ্বারা জিহাদে নিহিত মাসলাহাত ও কল্যাণসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাবে।
গনীমত লাভ হলে হকদারদের মাঝে শরীয়তে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী বণ্টন করে নেবে। তবে কাজী রহ. বলেন, ইমাম নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত সতর্কতাবশত দাসীদের বণ্টন স্থগিত রাখবে। ”
[আল-মুগনী: ১০/৩৭৪]
আর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যাওয়ার পর যদি ইমাম জিহাদে যেতে নিষেধ করে তাহলে তার নিষেধ প্রত্যাখ্যান করে জিহাদে যাওয়া ফরয। কেননা, আল্লাহ তাআলার আদেশের সামনে ইমামের নিষেধের কোন মূল্য নেই।
لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق
“খালেকের নাফরমানীতে মাখলূকের কোন আনুগত্য নেই।”
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ৩
ইমাম মুহাম্মদ রহ. ‘আসসিয়ারুল কাবীর’ এ বলেন:
وإن نهى الإمام الناس عن الغزو والخروج للقتال فليس ينبغي لهم أن يعصوه إلا أن يكون النفير عاما.اهـ
“ইমাম যদি লোকজনকে যুদ্ধ করতে এবং কিতালে বের হতে নিষেধ করে, তাহলে তাদের জন্য তার আদেশ অমান্য করা জায়েয হবে না। তবে যদি নফীরে আম এর হালত তৈরী হয়ে যায় তাহলে ভিন্ন কথা।”
ইমাম সারাখসী রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেন:
لأن طاعة الأمير فيما ليس فيه ارتكاب المعصية واجب كطاعة السيد على عبده فكما أن هناك بعد نهي المولى لا يخرج إلا إذا كان النفير عاما فكذلك ها هنا. اهـ
“যেখানে ইমামের আদেশ পালন করতে গেলে নাফরমানীতে লিপ্ত হতে হয় না, সেখানে ইমামের আনুগত্য ফরয। যেমন, গোলামের জন্য তার মনিবের আনুগত্য ফরয। নফীরে আম না হলে যেমন মনিব নিষেধ করলে জিহাদে যাবে না, ইমামের ক্ষেত্রেও তেমনি।”
[শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ২/৩৭৮]
মালিকী মাযহাবের কিতাব ‘ফাতহুল আলিয়্যিল মালিক’ এ বলা হয়েছে:
قال ابن حبيب سمعت أهل العلم يقولون إن نهى الإمام عن القتال لمصلحة حرمت مخالفته إلا أن يزحمهم العدو وقال ابن رشد طاعة الإمام لازمة , وإن كان غير عدل ما لم يأمر بمعصية ومن المعصية النهي عن الجهاد المتعين.اهـ
“ইবনে হাবীব রহ. বলেন, আমি আহলে ইলমদেরকে বলতে শুনেছি, ইমাম কোন মাসলাহাতের প্রতি লক্ষ্য করে কিতাল করতে নিষেধ করলে তার বিরুদ্ধাচরণ করা হারাম। তবে যদি শত্রু আক্রমণ করে বসে তাহলে ভিন্ন কথা। ইবনে রুশদ রহ.বলেন, ইমাম ন্যায় পরায়ণ না হলেও তার আনুগত্য আবশ্যক, যতক্ষণ না কোন গুনাহের আদেশ দেন। আর ফরযে আইন জিহাদে বাধা দেয়া গুনাহের কাজ।”
[ফাতহুল আলিয়্যিল মালিক: ৩/৩]
আল্লামা ইবনে হাযম রহ. বলেন-
و لا إثم بعد الكفر أعظم من إثم من نهي عن جهاد الكفار و أمر بإسلام حريم المسلمين إليهم ...اهـ
“কুফরের পর কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা থেকে বাধা দেয়া এবং মুসলমানদের ভূমিকে তাদের হাতে সমর্পণ করতে আদেশ করার চেয়ে বড় কোন গুনাহ নেই।”
[আল-মুহাল্লা: ৭/৩০০]
অতএব, ইমাম জিহাদে বাধা দিলে তার নিষেধাজ্ঞা মান্য করা যাবে না। শত্রু আক্রমণ করে বসলে আল্লাহ তাআলার আদেশ হল তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করা। আল্লাহ তাআলার আদেশের সামনে ইমামের নিষেধের কোন মূল্য নেই।
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ৪
দুই) ইমাম যদি মুরতাদ হয়ে যায় এবং কিতাল ব্যতীত তাকে হটানো সম্ভব না হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কিতাল ফরয। যেমনটা হাদিসে এসেছে। এ ব্যাপারে আইম্মায়ে কেরামের ইজমা-ঐক্যমত বিদ্যমান।
এখানে তো মুসলমানদের কোন ইমাম নেই। তাহলে তাদের উপর মুরতাদের বিরুদ্ধে কিতাল করা ফরয হল কিভাবে ??
এই দুই মাসআলা থেকে স্পষ্টই বুঝে আসে, জিহাদ ফরয হওয়া না হওয়ার সাথে ইমাম থাকা না থাকার বা ইমাম আদেশ বা অনুমতি দেয়া না দেয়ার কোন সম্পর্ক নেই। অন্যথায়, প্রথম মাসআলাতে ইমাম নিষেধ করার পরও জিহাদ ফরয থাকার কথা নয়।
দ্বিতীয় মাসআলাতে ইমাম মুরতাদ হয়ে যাওয়ার পর যখন কোন ইমাম নেই, তখন এই মুরতাদের বিরুদ্ধে কিতাল ফরয হওয়ার কথা নয়। এ থেকে স্পষ্টই বুঝে আসে, জিহাদ স্বতন্ত্র একটা বিধান যার সাথে ইমামের কোন সম্পর্ক নেই। শত্রু আক্রমণ করে বসলেই জিহাদ ফরয হয়ে যায়।
এ কারণেই ইমামের বাধা দেয়াটা তখন নাফরমানি বলে ধর্তব্য হবে। মুসলমানদের জন্য তার নিষেধ মান্য করা জায়েয হবে না। তার আদেশ অমান্য করা তখন ফরয। কিন্তু জিহাদ ছাড়ার কোন সুযোগ নেই।
তদ্রূপ ইমাম মুরতাদ হয়ে গেলে তাকে হটানো ফরয। এই ফরযের সাথে ইমাম থাকা না থাকার কোন সম্পর্ক নেই। আর থাকবেই বা কেন? ইমাম তো নিয়োগ দেয়াই হয় মুসলমানদের দায়িত্বসমূহ যেন শংখলাবদ্ধভাবে আদায় করা যায়।
দায়িত্বসমূহ আগেই ফরয হয়ে থাকে, ইমাম নিয়োগ দেয়া হয় ঐ ফরয হয়ে থাকা দায়িত্বসমূহ জামাআতবদ্ধ হয়ে সুশৃংখভাবে আদায় করার জন্য। ইমাম নিয়োগ দিলে তারপর ফরয হয়, এর আগে ফরয নয়- এমন নয়।
তিন) নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাত যেমন ইমামের সাথে খাছ নয় বরং সকল মুসলমানের উপর ফরয, জিহাদও তেমনই। তবে জিহাদ যেহেতু একটি ইজতেমায়ী আমল, একক ব্যক্তির মেহনতের দ্বারা সফলতা সম্ভব নয়, সেজন্য আমীর না থাকলে একজন আমীর বানিয়ে নেয়া ওয়াজিব।
চার) ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই কথাটা ইতিহাস থেকে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
১. তাতারীরা যখন আব্বাসী খলিফাকে শহীদ করে তখন ৬৫৭ হিজরী থেকে নিয়ে ৬৫৯ হিজরী পর্যন্ত তিন বছর মুসলমানদের কোন খলিফা ছিল না। কিন্তু এরপরও ওলামায়ে কেরাম তাতারীদের বিরুদ্ধে কিতাল ফরয ফতোয়া দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন কিতাল হয়েছে। কিন্তু এই প্রশ্ন তখন ওঠেনি, জিহাদ ফরয হবে কেন, খলিফা তো নেই!?
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ৫
২. ভারতবর্ষ ইংরেজরা দখল করে নেয়ার পর হাজি ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহ., কাসিম নানুতাবী রহ., রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রহ. শামেলীর জিহাদ করেছেন। তখন তো এই প্রশ্ন তখন ওঠেনি, জিহাদ ফরয হবে কেন, খলিফা তো নেই!?
.
৩. সায়্যিদ আহমদ শহীদ রহ. দীর্ঘ দিন যাবৎ জিহাদ করেছেন। তখন তো এই প্রশ্ন তখন ওঠেনি, জিহাদ ফরয হবে কেন, খলিফা তো নেই!?
.
৪. আফগানিস্তানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিতাল হয়েছে পনের বছর। তখন তো কোন খলিফা ছিল না। আজ যারা বলছে, ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই, তারাই তো তখন আফগান জিহাদ নিয়ে গৌরব করত। কিন্তু আজ যখন আমেরিকার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তখন যেন শরীয়তের মাসআলা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
.
.
যদি বলা হয়, তখন খলিফা না থাকলেও জিহাদের আমীর ছিল। কিন্তু বর্তমানে জিহাদের কোন আমীর নেই।
.
উত্তরে বলবো: আমীর কি প্রতি ঘরে ঘরে থাকতে হবে? সারা দুনিয়াতে একজন থাকলে হবে না? পুরো বিশ্বে তানজিম আল-কায়েদার অধীনে জিহাদ চলুমান। আর আলকায়েদা তালেবানদের হাতে বাইয়াত। তাদের নেতৃত্বে সারা দুনিয়াতে জিহাদ চলছে। এটা কি যথেষ্ট নয়?
.
না কি প্রত্যেক অঞ্চলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আমীর লাগবে? শরীয়ত কি বলে?
বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন থেকে মুসলমানদের শক্তি নষ্ট করতে না এক আমীরের অধীনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে?
.
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا (তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিভেদ করো না।) এর কি অর্থ?
.
আর যদি তালেবানদের অধীনে জিহাদ পছন্দ না হয় তাহলে কি জিহাদের দায়িত্ব শেষ? অন্য কাউকে আমীর বানিয়ে জিহাদ করা কি ফরয হবে না?
.
তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে একটা হক জিহাদি তানজীম বিদ্যমান থাকার পরও কোন ওযর ব্যতীত তার সাথে মিলিত না হয়ে নতুন তানজীম খোলে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার বৈধতা শরীয়ত দেয় কি’না?
পর্ব ১
শয়তানের ওহী: "ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই"
মুফতি আব্দুল ওয়াহহাব (দা বা)
---
PDF ডাউনলোড করে পড়ুন - http://docdro.id/f4s702T
,
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الْإِنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ (১১২) وَلِتَصْغَى إِلَيْهِ أَفْئِدَةُ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ وَلِيَرْضَوْهُ وَلِيَقْتَرِفُوا مَا هُمْ مُقْتَرِفُونَ (১১৩)
(আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু বানিয়েছি জীন ও মানব জাতীর মধ্য থেকে শয়তানদেরকে । তারা ধোঁকা দেয়ার উদ্দেশ্যে একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথার কুমন্ত্রণা দেয়। আপনার রব চাইলে তারা এরূপ করতে পারতো না।
.
সুতরাং আপনি তাদেরকে তাদের মিথ্যা রটনায় পড়ে থাকতে দিন। আর কুমন্ত্রণা এ কারণে দেয় যে, যারা আখেরাতের উপর ঈমান রাখে না তাদের অন্তর যেন সেদিকে আকৃষ্ট হয় এবং তারা তা পছন্দ করে আর তারা যেসব অপকর্ম করার তা করতে থাকে।)
[আনআম:১১২-১১৩]
দরবারী আলেমদের নিকট এই শয়তানরাই ওহী করেছে: ‘ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই।’
.
.
#খণ্ডন:
ইমাম দ্বারা কী উদ্দেশ্য? জিহাদের আমীর না’কি খলিফাতুল মুসলিমীন?
.
যদি জিহাদের আমীর উদ্দেশ্য হয় তাহলে আমরাও আপনাদের কথার একাংশের সাথে একমত। জিহাদের জন্য আমীর বানানো ওয়াজিব আমরাও বলি।
.
জামাআতবদ্ধ হওয়া ওয়াজিব আমরাও বলি। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার দ্বারা সফলতা আসবে না এতে আমরাও একমত। জিহাদের আমীর না থাকলে একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়া ওয়াজিব। এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পূর্বে করে এসেছি।
.
তবে যদি বলা হয়, ‘জিহাদের আমীর না থাকলে জিহাদই ফরয নয়’ তাহলে এ কথা শরীয়ত বহির্ভূত। আমরা এর সাথে একমত নই। মসজিদের ইমাম না থাকলে ইমাম বানিয়ে নেয়া আবশ্যক তা ঠিক। কিন্তু ইমাম না থাকলে নামাযই ফরয নয়, এটা শরীয়ত বহির্ভূত কথা।
.
আর যদি ইমাম দ্বারা খলিফাতুল মুসলিমীন উদ্দেশ্য হয়, তাহলে জিজ্ঞাসা করি, ‘খলিফাতুল মুসলিমীন ছাড়া জিহাদ নেই’ এর দ্বারা কী উদ্দেশ্য?
.
যদি বলা হয়, ‘জিহাদ ফরয, তবে জিহাদ করার জন্য আগে একজনকে খলিফাতুল মুসলিমীন বানিয়ে নিতে হবে’ তবে আমরা আপনাদের কথার একাংশের সাথে একমত যে, খলিফাতুল মুসলিমীন বানানো ওয়াজিব।
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ২
কিন্তু খলিফা বানানো ছাড়া জিহাদ জায়েয হবে না, এ কথার সাথে আমরা একমত নই। কেননা, মুসলমানদের হয়তো খলিফা বানানোর সামর্থ্য থাকবে বা থাকবে না। যদি সামর্থ্য না থাকে, তাহলে খলিফা বানানো ছাড়া জিহাদ করা যাবে না কথাটা অযৌক্তিক।
এতে কেয়ামত পর্যন্ত জিহাদ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। খেলাফত প্রতিষ্টা এবং খলিফা বানানোর পথও বন্ধ হয়ে যাবে। কাজেই এ ধরণের মন্তব্য সুস্পষ্ট বাতিল না হয়ে পারে না। আর যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে খলিফা না বানানোটা মুসলমানদের জন্য গুনাহের কাজ।
কিন্তু এই গুনাহের কারণে জিহাদ ছেড়ে আরেকটা গুনাহে লিপ্ত হতে হবে এটা অযৌক্তিক। তাছাড়া শরীয়তের কোন দলীলে এ কথা বলা হয়নি যে, জিহাদ জায়েয হওয়ার জন্য খলিফা বানানো শর্ত।
আর যদি উদ্দেশ্য হয়, ‘খলিফা না থাকলে জিহাদ ফরযই হয় না’ তাহলে এটা সম্পূর্ণ শরীয়ত বহির্ভূত কথা।
উপরোক্ত সংশয়গুলোর বিস্তারিত খণ্ডনে যাচ্ছি না।
সংক্ষিপ্তাকারে শুধু কয়েকটি কথা বলব:
এক) জিহাদ ফরয হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য আয়াত ও হাদিস এসেছে, কিন্তু কোন আয়াত বা হাদিসে জিহাদ ফরয বা জায়েয হওয়ার জন্য খলিফা থাকা শর্ত করা হয়নি। জিহাদ শুধু ইমামের দায়িত্ব বলা হয়নি। তবে ইমামের দায়িত্ব সমূহের মধ্যে একটা দায়িত্ব হল জিহাদ করা।
যদি ইমাম না থাকে বা থাকা সত্ত্বেও জিহাদ না করে তাহলে মুসলমানদের নিজেদের ফরয নিজেদেরকেই আদায় করতে হবে।
ইবনে কুদামা রহ. বলেন:
فان عدم الامام لم يؤخر الجهاد لان مصلحته تفوت بتأخيره، وان حصلت غنيمة قسموها على موجب الشرع، قال القاضي وتؤخر قسمة الاماء حتى يقوم إمام احتياطا للفروج.اهـ
“যদি ইমাম না থাকে তাহলে এ কারণে জিহাদ পিছিয়ে দেয়া যাবে না। কেননা, পিছিয়ে দেয়ার দ্বারা জিহাদে নিহিত মাসলাহাত ও কল্যাণসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাবে।
গনীমত লাভ হলে হকদারদের মাঝে শরীয়তে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী বণ্টন করে নেবে। তবে কাজী রহ. বলেন, ইমাম নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত সতর্কতাবশত দাসীদের বণ্টন স্থগিত রাখবে। ”
[আল-মুগনী: ১০/৩৭৪]
আর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যাওয়ার পর যদি ইমাম জিহাদে যেতে নিষেধ করে তাহলে তার নিষেধ প্রত্যাখ্যান করে জিহাদে যাওয়া ফরয। কেননা, আল্লাহ তাআলার আদেশের সামনে ইমামের নিষেধের কোন মূল্য নেই।
لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق
“খালেকের নাফরমানীতে মাখলূকের কোন আনুগত্য নেই।”
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ৩
ইমাম মুহাম্মদ রহ. ‘আসসিয়ারুল কাবীর’ এ বলেন:
وإن نهى الإمام الناس عن الغزو والخروج للقتال فليس ينبغي لهم أن يعصوه إلا أن يكون النفير عاما.اهـ
“ইমাম যদি লোকজনকে যুদ্ধ করতে এবং কিতালে বের হতে নিষেধ করে, তাহলে তাদের জন্য তার আদেশ অমান্য করা জায়েয হবে না। তবে যদি নফীরে আম এর হালত তৈরী হয়ে যায় তাহলে ভিন্ন কথা।”
ইমাম সারাখসী রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেন:
لأن طاعة الأمير فيما ليس فيه ارتكاب المعصية واجب كطاعة السيد على عبده فكما أن هناك بعد نهي المولى لا يخرج إلا إذا كان النفير عاما فكذلك ها هنا. اهـ
“যেখানে ইমামের আদেশ পালন করতে গেলে নাফরমানীতে লিপ্ত হতে হয় না, সেখানে ইমামের আনুগত্য ফরয। যেমন, গোলামের জন্য তার মনিবের আনুগত্য ফরয। নফীরে আম না হলে যেমন মনিব নিষেধ করলে জিহাদে যাবে না, ইমামের ক্ষেত্রেও তেমনি।”
[শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ২/৩৭৮]
মালিকী মাযহাবের কিতাব ‘ফাতহুল আলিয়্যিল মালিক’ এ বলা হয়েছে:
قال ابن حبيب سمعت أهل العلم يقولون إن نهى الإمام عن القتال لمصلحة حرمت مخالفته إلا أن يزحمهم العدو وقال ابن رشد طاعة الإمام لازمة , وإن كان غير عدل ما لم يأمر بمعصية ومن المعصية النهي عن الجهاد المتعين.اهـ
“ইবনে হাবীব রহ. বলেন, আমি আহলে ইলমদেরকে বলতে শুনেছি, ইমাম কোন মাসলাহাতের প্রতি লক্ষ্য করে কিতাল করতে নিষেধ করলে তার বিরুদ্ধাচরণ করা হারাম। তবে যদি শত্রু আক্রমণ করে বসে তাহলে ভিন্ন কথা। ইবনে রুশদ রহ.বলেন, ইমাম ন্যায় পরায়ণ না হলেও তার আনুগত্য আবশ্যক, যতক্ষণ না কোন গুনাহের আদেশ দেন। আর ফরযে আইন জিহাদে বাধা দেয়া গুনাহের কাজ।”
[ফাতহুল আলিয়্যিল মালিক: ৩/৩]
আল্লামা ইবনে হাযম রহ. বলেন-
و لا إثم بعد الكفر أعظم من إثم من نهي عن جهاد الكفار و أمر بإسلام حريم المسلمين إليهم ...اهـ
“কুফরের পর কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা থেকে বাধা দেয়া এবং মুসলমানদের ভূমিকে তাদের হাতে সমর্পণ করতে আদেশ করার চেয়ে বড় কোন গুনাহ নেই।”
[আল-মুহাল্লা: ৭/৩০০]
অতএব, ইমাম জিহাদে বাধা দিলে তার নিষেধাজ্ঞা মান্য করা যাবে না। শত্রু আক্রমণ করে বসলে আল্লাহ তাআলার আদেশ হল তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করা। আল্লাহ তাআলার আদেশের সামনে ইমামের নিষেধের কোন মূল্য নেই।
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ৪
দুই) ইমাম যদি মুরতাদ হয়ে যায় এবং কিতাল ব্যতীত তাকে হটানো সম্ভব না হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কিতাল ফরয। যেমনটা হাদিসে এসেছে। এ ব্যাপারে আইম্মায়ে কেরামের ইজমা-ঐক্যমত বিদ্যমান।
এখানে তো মুসলমানদের কোন ইমাম নেই। তাহলে তাদের উপর মুরতাদের বিরুদ্ধে কিতাল করা ফরয হল কিভাবে ??
এই দুই মাসআলা থেকে স্পষ্টই বুঝে আসে, জিহাদ ফরয হওয়া না হওয়ার সাথে ইমাম থাকা না থাকার বা ইমাম আদেশ বা অনুমতি দেয়া না দেয়ার কোন সম্পর্ক নেই। অন্যথায়, প্রথম মাসআলাতে ইমাম নিষেধ করার পরও জিহাদ ফরয থাকার কথা নয়।
দ্বিতীয় মাসআলাতে ইমাম মুরতাদ হয়ে যাওয়ার পর যখন কোন ইমাম নেই, তখন এই মুরতাদের বিরুদ্ধে কিতাল ফরয হওয়ার কথা নয়। এ থেকে স্পষ্টই বুঝে আসে, জিহাদ স্বতন্ত্র একটা বিধান যার সাথে ইমামের কোন সম্পর্ক নেই। শত্রু আক্রমণ করে বসলেই জিহাদ ফরয হয়ে যায়।
এ কারণেই ইমামের বাধা দেয়াটা তখন নাফরমানি বলে ধর্তব্য হবে। মুসলমানদের জন্য তার নিষেধ মান্য করা জায়েয হবে না। তার আদেশ অমান্য করা তখন ফরয। কিন্তু জিহাদ ছাড়ার কোন সুযোগ নেই।
তদ্রূপ ইমাম মুরতাদ হয়ে গেলে তাকে হটানো ফরয। এই ফরযের সাথে ইমাম থাকা না থাকার কোন সম্পর্ক নেই। আর থাকবেই বা কেন? ইমাম তো নিয়োগ দেয়াই হয় মুসলমানদের দায়িত্বসমূহ যেন শংখলাবদ্ধভাবে আদায় করা যায়।
দায়িত্বসমূহ আগেই ফরয হয়ে থাকে, ইমাম নিয়োগ দেয়া হয় ঐ ফরয হয়ে থাকা দায়িত্বসমূহ জামাআতবদ্ধ হয়ে সুশৃংখভাবে আদায় করার জন্য। ইমাম নিয়োগ দিলে তারপর ফরয হয়, এর আগে ফরয নয়- এমন নয়।
তিন) নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাত যেমন ইমামের সাথে খাছ নয় বরং সকল মুসলমানের উপর ফরয, জিহাদও তেমনই। তবে জিহাদ যেহেতু একটি ইজতেমায়ী আমল, একক ব্যক্তির মেহনতের দ্বারা সফলতা সম্ভব নয়, সেজন্য আমীর না থাকলে একজন আমীর বানিয়ে নেয়া ওয়াজিব।
চার) ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই কথাটা ইতিহাস থেকে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
১. তাতারীরা যখন আব্বাসী খলিফাকে শহীদ করে তখন ৬৫৭ হিজরী থেকে নিয়ে ৬৫৯ হিজরী পর্যন্ত তিন বছর মুসলমানদের কোন খলিফা ছিল না। কিন্তু এরপরও ওলামায়ে কেরাম তাতারীদের বিরুদ্ধে কিতাল ফরয ফতোয়া দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন কিতাল হয়েছে। কিন্তু এই প্রশ্ন তখন ওঠেনি, জিহাদ ফরয হবে কেন, খলিফা তো নেই!?
ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
পর্ব ৫
২. ভারতবর্ষ ইংরেজরা দখল করে নেয়ার পর হাজি ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহ., কাসিম নানুতাবী রহ., রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রহ. শামেলীর জিহাদ করেছেন। তখন তো এই প্রশ্ন তখন ওঠেনি, জিহাদ ফরয হবে কেন, খলিফা তো নেই!?
.
৩. সায়্যিদ আহমদ শহীদ রহ. দীর্ঘ দিন যাবৎ জিহাদ করেছেন। তখন তো এই প্রশ্ন তখন ওঠেনি, জিহাদ ফরয হবে কেন, খলিফা তো নেই!?
.
৪. আফগানিস্তানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিতাল হয়েছে পনের বছর। তখন তো কোন খলিফা ছিল না। আজ যারা বলছে, ইমাম ছাড়া জিহাদ নেই, তারাই তো তখন আফগান জিহাদ নিয়ে গৌরব করত। কিন্তু আজ যখন আমেরিকার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তখন যেন শরীয়তের মাসআলা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
.
.
যদি বলা হয়, তখন খলিফা না থাকলেও জিহাদের আমীর ছিল। কিন্তু বর্তমানে জিহাদের কোন আমীর নেই।
.
উত্তরে বলবো: আমীর কি প্রতি ঘরে ঘরে থাকতে হবে? সারা দুনিয়াতে একজন থাকলে হবে না? পুরো বিশ্বে তানজিম আল-কায়েদার অধীনে জিহাদ চলুমান। আর আলকায়েদা তালেবানদের হাতে বাইয়াত। তাদের নেতৃত্বে সারা দুনিয়াতে জিহাদ চলছে। এটা কি যথেষ্ট নয়?
.
না কি প্রত্যেক অঞ্চলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আমীর লাগবে? শরীয়ত কি বলে?
বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন থেকে মুসলমানদের শক্তি নষ্ট করতে না এক আমীরের অধীনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে?
.
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا (তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিভেদ করো না।) এর কি অর্থ?
.
আর যদি তালেবানদের অধীনে জিহাদ পছন্দ না হয় তাহলে কি জিহাদের দায়িত্ব শেষ? অন্য কাউকে আমীর বানিয়ে জিহাদ করা কি ফরয হবে না?
.
তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে একটা হক জিহাদি তানজীম বিদ্যমান থাকার পরও কোন ওযর ব্যতীত তার সাথে মিলিত না হয়ে নতুন তানজীম খোলে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার বৈধতা শরীয়ত দেয় কি’না?
Comment