Announcement

Collapse
No announcement yet.

জামাআহ্ প্রসঙ্গ: কিছু মৌলিক কথা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জামাআহ্ প্রসঙ্গ: কিছু মৌলিক কথা

    জামাআহ্ প্রসঙ্গে এক ভাই কিছু বিষয় জানতে চাচ্ছিলেন। মুহতারাম ভাইয়ের প্রশ্নগুলো দেখে আসছিলাম। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে জওয়াব দেয়ার সুযোগ হয়নি। ইনশাআল্লাহ জামাআর বিষয়ে মৌলিক কিছু কথা বলছি। বিস্তারিত কিতাবাদিতে খোঁজ করা যেতে পারে। সুযোগ পেলে তানজীমের কোন আলেমের সাথে কথাও বলে নেয়া যেতে পারে।


    প্রথমত: আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চান। ঐক্যবদ্ধ থাকলেই শত্রুর বিরুদ্ধে কামিয়াব হওয়া যাবে। অন্যথায় সম্ভব নয়। এজন্য আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে ঐক্যবদ্ধ থাকতে আদেশ দিয়েছেন। সব ধরণের বিচ্ছিন্নতা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا
    “আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” (আলে ইমরান: ১০৩)

    অন্যত্র ইরশাদ করেন,
    إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيَانٌ مَرْصُوصٌ
    “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন, যারা সারিবদ্ধ হয়ে তার রাস্তায় যুদ্ধ করে যেন তারা সীসাঢালা প্রাচীর।” (সফ: ৪)


    পারস্পরিক বিবাদে লিপ্ত হলে আল্লাহর নুসরত কমে যাবে। শত্রুর সামনে হীনমন্য হয়ে পরাজিত হতে হবে।

    আল্লাহ তাআলার বাণী,
    وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
    “পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা`আলা ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” (আনফাল: ৪৬)



    হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। বিচ্ছিন্ন হতে নিষেধ করেছেন। যে ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন থেকে মারা যাবে, সে জাহিলী যামানার লোকদের মতো মারা যাবে বলে সতর্ক করেছেন।
    এক হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    « من فارق الجماعة شبرا فقد خلع ربقة الإسلام من عنقه »
    “যে ব্যক্তি জামাত থেকে এক বিঘতও সরে গেল, যেন সে নিজের গর্দান থেকে ইসলামের রজ্জু খোলে ফেলল।” (আবু দাউদ: ৪৭৬০)


    অন্য হাদিসে ইরশাদ করেন,
    من كره من أميره شيئا فليصبر فإنه من خرج من السلطان شبرا مات ميتة جاهلية
    “কারো কাছে তার আমীরের কোন কিছু অপছন্দনীয় মনে হলে সে যেন সবর করে। কেননা, যে ব্যক্তি সুলতান থেকে এক বিঘতও সরে গিয়ে মারা গেল, সে জাহিলী মরা মরল।” (বুখারী: ৭০৫৩)


    মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, মুসলমানগণ শরয়ী কোন এক খলিফার অধীনে ঐক্যবদ্ধ থাকাবস্থায় যদি দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি খেলাফতের দাবি করে, তাহলে তাকে হত্যা করে দিতে বলা হয়েছে।
    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    « إذا بويع لخليفتين فاقتلوا الآخر منهما »
    “যদি দুই খলিফার বাইয়াত হয়, তাহলে দ্বিতীয় জনকে হত্যা করে দাও।” (মুসলিম: ৪৯০৫)

    অন্য হাদিসে ইরশাদ করেন,
    « من أتاكم وأمركم جميع على رجل واحد يريد أن يشق عصاكم أو يفرق جماعتكم فاقتلوه »
    “তোমরা এক ব্যক্তির (অর্থাৎ এক খলিফার) উপর ঐক্যবদ্ধ থাকাবস্থায় যদি কোন ব্যক্তি তোমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে আসে বা জামাতে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে আসে, তাহলে তাকে হত্যা করে দাও।” (মুসলিম: ৪৯০৪)



    অতএব, সারা মুসলিম উম্মাহকে এক খলিফার অধীনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এটাই শরীয়তের নির্দেশ।
    তবে এ বিধান হল তখন, যখন খেলাফত কায়েম থাকবে এবং একজন শরয়ী ইমাম বিদ্যমান থাকবেন। তখন তার কাছে বাইয়াত না দিয়ে বিচ্ছিন্ন থাকা গোমরাহি।

    পক্ষান্তরে যদি খেলাফত কায়েম না থাকে, তাহলে খেলাফত কায়েম করতে হবে। এজন্য যুদ্ধ-জিহাদ যা কিছু লাগে করতে হবে। যেমন বর্তমান মুজাহিদ কাফেলাগুলো খেলাফত কায়েমের জন্য জিহাদ করে যাচ্ছেন।
    স্পষ্ট যে, খেলাফত কায়েমের জিহাদে নামতে হলে জামাতবদ্ধ হওয়া আবশ্যক। জামাত ছাড়া জিহাদ সম্ভব না। ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচেষ্টার দ্বারা দ্বীনের কিছু খেদমত হলেও দ্বীন কায়েম সম্ভব না। খেলাফত প্রতিষ্ঠাও সম্ভব না।

    শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. জামাতের গুরুত্বটা এভাবে তুলে ধরেছেন-
    يجب ان يعرف ان ولاية أمر الناس من أعظم واجبات الدين بل لاقيام للدين ولا للدنيا إلا بها فان بنى آدم لا تتم مصلحتهم إلا بالاجتماع لحاجة بعضهم الى بعض ولابد لهم عند الاجتماع من رأس حتى قال النبى إذا خرج ثلاثة فى سفر فليؤمروا أحدهم رواه أبو دواد من حديث أبى سعيد وابى هريرة
    وروى الامام أحمد فى المسند عن عبد الله بن عمرو ان النبى قال لا يحل لثلاثة يكونون بفلاة من الأرض إلا أمروا عليهم أحدهم فأوجب تأمير الواحد فى الاجتماع القليل العارض فى السفر تنبيها بذلك على سائر أنواع الاجتماع ولأن الله تعالى اوجب الأمر بالمعروف والنهى عن المنكر ولا يتم ذلك إلا بقوة وإمارة وكذلك سائر ما أوجبه من الجهاد والعدل وإقامة الحج والجمع والأعياد ونصر المظلوم وإقامة الحدود لا تتم إلا بالقوة والامارة.اهـ
    “জানা আবশ্যক যে, জনগণের নেতৃত্ব দেয়া দ্বীনের অন্যতম সুমহান আবশ্যক দায়িত্ব। শুধু তাই নয়, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব ব্যতীত বরং দ্বীন-দুনিয়া কোনটাই চলতে পারে না। কেননা, পারস্পরিক ঐক্যবদ্ধ হওয়া ব্যতীত মানব জাতির মাসলাহাতসমূহের পরিপূর্ণতা সম্ভব নয়। কারণ, তারা একে অপরের মুখাপেক্ষী। আর ঐক্যবদ্ধ হতে গেলে তাদের একজন নেতা আবশ্যক। রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো এমনটি পর্যন্ত বলেছেন:
    إذا خرج ثلاثة فى سفر فليؤمروا أحدهم
    ‘তিন ব্যক্তি সফরে বের হলে তারা যেন তাদের একজনকে তাদের আমীর বানিয়ে নেয়।’

    ইমাম আবু দাউদ রহ. হাদিসটি হযরত আবু সায়িদ রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন।

    ইমাম আহমদ রহ. মুসনাদে আহমদে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:
    لايحل لثلاثة يكونون بفلاة من الأرض إلا أمروا عليهم أحدهم
    ‘যে কোন তিন ব্যক্তির জন্য কোন মরু ময়দানে অবস্থান করা জায়েয হবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের একজনকে তাদের আমীর বানিয়ে নেয়।’

    সফরের হালতে সৃষ্টি হওয়া ছোট্ট একটি জামাআতের বেলায়ও একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন একথা বুঝানোর জন্য যে, সব ধরণের জামাআতের ক্ষেত্রেই আমীর বানিয়ে নেয়া আবশ্যক।

    তাছাড়া আল্লাহ তাআলা ‘আমর বিল মা’রুফ ও নাহি আনিল মুনকার’ ফরয করেছেন। আর তা প্রভাব প্রতিপত্তি ও নেতৃত্ব ব্যতীত পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

    তদ্রূপ: জিহাদ, ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠা; হজ্ব, জুমআ ও ঈদ কায়েম করা; মাজলুমকে সাহায্য করা, হদসমূহ কায়েম করা ইত্যাদিসহ আল্লাহ তাআলার ফরযকৃত যাবতীয় বিধান প্রভাব প্রতিপত্তি ও নেতৃত্ব ব্যতীত পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।”
    (মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৩৯০)


    জামাতবদ্ধ হওয়ার গুরুত্বের ব্যাপারে হযরত উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর বক্তব্য সর্বদা স্বরণ রাখা চাই।
    তিনি বলেন:
    لا إسلام إلا بجماعة ولا جماعة إلا بإمارة ولا إمارة إلا بطاعة
    “জামাআতবদ্ধ হওয়া ব্যতীত দ্বীনে ইসলামের প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আর জামাআত হয় না নেতৃত্ব (তথা আমীর নির্ধারণ) ব্যতীত। আর (আমীরের) আনুগত্য ব্যতীত নেতৃত্বের কোন ফায়েদা নেই।” (জামিউ বয়ানিল ইলম: ১/২৬৩)


    অতএব, কোন এক জিহাদি কাফেলার সাথে মিলে যেতে হবে। জিহাদি কাফেলা না থাকলে কাফেলা গঠন আবশ্যক। আর আগে থেকেই থেকে থাকলে তার সাথে মিলে যাওয়া আবশ্যক।



    তবে যেকোন কাফেলার ক্ষেত্রেই এটা অত্যাবশ্যক যে, তা শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। শরীয়তমতে পরিচালিত হতে হবে। কুরআন হাদিসে যত জায়গায় জামাতের সাথে মিলে থাকার কথা এসেছে, সবখানে জামাত দ্বারা এমন জামাতই উদ্দেশ্য। আল্লাহর রাসূল ও তার সাহাবায়ে কেরামের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত জামাত উদ্দেশ্য। পক্ষান্তরে কাফেলা যদি জাতিয়তাবাদি বা ধর্ম নিরপেক্ষ হয় বা অন্য কোন গোমরাহির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে তার সাথে যোগ দেয়া যাবে না। তদ্রূপ যদি পরিষ্কার জানা না থাকে যে, তা শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত কি’না- তাহলেও তার সাথে যোগ দেয়া যাবে না। এমন গোলক ধাঁধায় যুক্ত হওয়া নিষেধ।
    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    ومن قاتل تحت راية عمية يغضب لعصبة أو يدعو إلى عصبة أو ينصر عصبة فقتل فقتلة جاهلية
    “যে ব্যক্তি এমন ঝাণ্ডা তলে যুদ্ধ করে যা হক না বাতিল জানা নেই, যে তার আপন গোত্রের স্বার্থে ক্রোধান্বিত হয় কিংবা গোত্রের দিকে আহবান করে বা অন্যায়ভাবে গোত্রের সহায়তা করে আর এভাবেই মারা যায়, তাহলে সে জাহিলী মরা মরল।” (মুসলিম: ৪৮৯২)



    সারকথা দাঁড়াল: আপনি যে জামাতের সাথে যুক্ত হবেন, তাতে আবশ্যকীয়ভাবেই দু’টি বৈশিষ্ট থাকতে হবে,
    ক. সঠিক আকীদা মানহাজ বিশিষ্ট জিহাদি জামাত হতে হবে।

    খ. শরীয়ত অনুযায়ী পরিচালিত হতে হবে।


    এ দুই বৈশিষ্ট পাওয়া গেলে আপনি ইনশাআল্লাহ তাতে যুক্ত হতে পারেন।



    প্রশ্ন: যদি একাধিক জামাত থাকে তাহলে কি করবো?
    উত্তর: সকল জিহাদি কাফেলার উচিৎ সকলে মিলে এক কাফেলা গঠন করা। বিচ্ছিন্নতা আল্লাহ তাআলার পছন্দ নয়। তবে যদি বিশেষ পরিস্থিতি ও ওজরের কারণে এক হওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে আলাদা আলাদা থেকেই কাজ করে যাবে। এমতাবস্থায় যার জন্য যে জামাতে যুক্ত হওয়া সহজ এবং উম্মাহ ও জিহাদের জন্য অধিক উপকারী- সেটাতে যুক্ত হয়ে যাবে।



    আলেম সমাজ প্রসঙ্গ:
    আমাদের বর্তমান আলেম সমাজ মূলত কোন জামাতের উপর প্রতিষ্ঠিত নেই যাতে যোগ দেয়া যাবে। ব্যক্তি পর্যায়ে যে যেভাবে পারছেন দ্বীনের খেদমত করার চেষ্টা করছেন। অবশ্য ছোটখাট কিছু সংগঠন-ঐক্য আছে। তবে সেগুলো জিহাদি নয়। আর রাজনৈতিক দলগুলো স্পষ্টই গোমরাহিতে লিপ্ত। অতএব, বর্তমান আলেম সমাজ যেভাবে আছেন, এমতাবস্থায় তাদের গণ্ডির মাঝে সীমাবদ্ধ থেকে জিহাদের দায়িত্ব আদায় সম্ভব না। জিহাদের জন্য জিহাদি কাফেলায় যোগ দিতে হবে। তবে আলেম উলামাদের দ্বীনি খেদমতমূলক শরীয়তসম্মত যেসব জামাত বা সংগঠন আছে, জিহাদের কাজের ক্ষতি না হয় এমনভাবে তাতে মিলে কাজ করতেও সমস্যা নেই। বরং সামর্থ্যানুযায়ী তাদের সহযোগিতার চেষ্টা করা উচিৎ। কেননা, আলেম উলামারাই জাতির রাহবার। যদি আলেম উলামারা নেতৃত্বে না থাকেন, তাহলে আমাদের জিহাদি কাফেলাগুলোও হক পথে চলতে পারবে না।


    উল্লেখ্য, আলেম উলামারা জামাতবদ্ধ না থাকার কারণে ঢালাওভাবে তারা গোমরাহিতে লিপ্ত আছেন- এমনটা নয়। কারণ, এখন খেলাফত প্রতিষ্ঠিত নেই। খেলাফত প্রতিষ্ঠিত থাকলে খলিফার হাতে বাইয়াত না দিয়ে বিচ্ছিন্ন থাকলে সেটা গোমরাহি হতো। হাদিসে যেখানে বলা হয়েছে যে, বাইয়াত ছাড়া মারা গেলে জাহিলী মরা মরবে- সেখানে এটাই উদ্দেশ্য। তবে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদে যোগ দেয়া, জিহাদি কাফেলা গড়ে তোলা বা থেকে থাকলে তার সাথে মিলে যাওয়া এবং তাকে শরীয়ত অনুযায়ী পরিচালিত করা আলেম সমাজের দায়িত্ব। সামর্থ্যানুযায়ী প্রত্যেককে তার দায়িত্ব আদায় করা জরুরী। যার জন্য তানজীমে যুক্ত হওয়া সম্ভব, তাকে তানজীমে যুক্ত হতে হবে। আর যার জন্য সম্ভব নয় বা অতিশয় কষ্টসাধ্য, তিনি সামর্থ্যানুযায়ী দ্বীনের খেদমত করে যাবেন। যতদূর পারেন, জিহাদ ও মুজাহিদদের নুসরত করবেন। এতেই তিনি মাফ পাবেন ইনশাআল্লাহ।


    দ্বিতীয়ত: সাধারণ জনগণকে হকপন্থী আলেম উলামার কথামতো চলতে হবে- চাই তারা বাহ্যত তানজীমে যুক্ত থাকুন না থাকুন। বর্তমান পরিস্থিতি বড়ই কঠিন। আলেম উলামা সকলের জন্য প্রকাশ্যে তানজীমে যুক্ত হওয়া কঠিন। কাজেই তানজীমে যুক্ত থাকা না থাকাকে আনুগত্যের মানদণ্ড বানানো যাবে না। তবে অবশ্যই হকপন্থী হতে হবে। জিহাদ বিরোধী না হতে হবে। সামর্থ্যানুযায়ী হকপন্থী মুজাহিদদের সমর্থন ও নুসরত করেন এমন হতে হবে।


    এ হল সাধারণ মাসআলা মাসায়েলের ক্ষেত্রে। আর যেসব বিষয় তানজীমি কাজের সাথে জড়িত, সেগুলো তানজীমের উলামায়ে কেরাম ও উমারাদের থেকেই নিতে হবে। একান্ত তানজীমি বিষয়ে বাহিরের উলামাদের কথা ধর্তব্য নয়। তানজীমের উলামা ও উমারাগণ যারা এ ময়দানে অভিজ্ঞ, তাদের কথাই মেনে চলতে হবে।


    তৃতীয়ত: আলেম যদি জিহাদ বিরোধী হয়, তাহলে তার থেকে দূরে থাকা উচিৎ। তবে শরীয়তের যেসব বিষয় তারা ছাড়া অন্যদের কাছে পাবো না, সেগুলো তাদের কাছ থেকে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। সেগুলো তাদের কাছ থেকে নিতে হবে। আর জিহাদ সংক্রান্ত বিষয়াশয় সরাসরি মুজাহিদ বা হকপন্থী আলেম উলামা থেকে নিতে হবে।

    শায়েখ আবু মুহাম্মদ আলমাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ বলেন,
    وأوصي إخواني دوما بأن لا يحرموا أنفسنهم من خير يستفيدونه من كائن من كان، ولا يمنعنا انحراف بعض العلماء في أبواب من الدين: أن نستفيد منهم في أبواب لم ينحرفوا فيها؛ خصوصا في زمن شح العلماء الربانيين وندرتهم، وحاجة طالب العلم إلى تلقي بعض أنواع العلوم من أفواه العلماء؛ ولو كان في الأمر سعة وتوفر لنا العلماء الربانيون الذين نرتضي دينهم ونهجهم؛ لما لجأنا لمثل هذا ولما اضطررنا إليه؛ ولَحَرِصنا على تطبيق مقالة السلف: ( إن هذا العلم دين فانظروا عمن تأخذون دينكم ) ولكن هيهات ذاك في مثل زماننا ... فالحمد لله أولا وآخرا أن علّمنا ويسر التعلم لنا؛ فهدانا إلى تعلم ما نحتاجه لنصرة التوحيد ومحاربة الشرك وإبطال التنديد، فذلك هو المقصود وهو الهدف المنشود؛ ولأجله درسنا وتعلمنا وصبرنا على أخطاء كثير ممن أخذنا عنهم مفاتيح العلوم. اهـ
    “আমি সর্বদা ভাইদের অসিয়্যত করি, তারা যেন ইলম অর্জন করা থেকে নিজেদের বঞ্চিত না করে- তা যার কাছ থেকেই হোক। ইলমের কিছু অধ্যায়ে কিছু আলেমের বিচ্যুতি অন্যান্য বিষয় তাদের কাছ থেকে শিখার প্রতিবন্ধক নয়। বিশেষ করে প্রকৃত আলেমদের সল্পতার এ সময়ে। কেননা কিছু কিছু বিষয় আলেমদের থেকে সরাসরিই শিখতে হয়।

    যদি সঠিক আকীদা-মানহাজের আলেমদের কাছ থেকে ইলম শিক্ষা করা সম্ভব হতো তাহলে আমরা এধরণের আলেমদের থেকে ইলম অর্জন করতে বাধ্য হতাম না। তখন আমরা সালাফের এই বাণী: إن هذا العلم دين، فانظر عمن تأخذ دينك (এই ইলম দ্বীনের অংশ। সুতরাং তুমি কার থেকে তোমার দ্বীন শিখছো তা লক্ষ্য রেখ) -র উপর আমল করতে আগ্রহী হতাম। কিন্তু এ যমানায় তা কি করে সম্ভব?

    আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া যে, তিনি আমাদেরকে ঐ সকল বিষয় শিখার তাওফিক দিয়েছেন, যা দ্বারা আমরা তাওহিদের সাহায্য ও শিরকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণেই আমরা যাদের কাছ থেকে ইলমের চাবিকাঠি বা মাধ্যমগুলো শিখেছি তাদের অনেক ভুলের উপর আমরা ধের্য ধারণ করেছি”। (ইরশাদুল মুবতাদী ইলা কাওয়ায়িদিস সা’দী; পৃ: ৪)



    তালেবান প্রসঙ্গ:
    মুহতারাম ভাই তালেবান প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন,

    “অনেকেই বলে থাকেন যে, তালেবান হক না। কারণ তারা শিশুদেরকেও হত্যা করে। দলিল হিসেবে পেশ করে পেশওয়ারের ঘটনাকে। এখন প্রশ্ন হলো, তালেবান যদি এরকম আক্রমণ করেই থাকে তাহলে কেন করেছে?”


    উত্তর: তালেবানদের বিষয়টা দুনিয়া অবধি সুস্পষ্ট যে, তারা হক জামাত। আর তারা শিশু হত্যা করেন কথাটা নির্জলা মিথ্যা। তবে কোন কোন অপারেশনে অনাকাঙ্খিতভাবে কিছু শিশু নিহত হয়ে থাকলে সেটা ভিন্ন কথা। তালেবানরা যেহেতু এমন ভূমিতে জিহাদরত, যেখানকার অধিকাংশ জনগণ মুসলমান- তাই মুরতাদদের উপর হামলা হলে অনাকাঙ্খিতভাবে কিছু মুসলমান নিহত হতেই পারে। সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পরও যদি কিছু মুসলমান নিহত হয়ে যায়, তাহলে এটা সমালোচনার কিছু নয়। এ ধরণের হামলা সম্পূর্ণ শরীয়তসম্মত। মুজাহিদিনে কেরাম সর্বাত্মক চেষ্টা করেন, যেন কোন মুসলমানের বা কোন শিশুর প্রাণ না ঝরে। এরপরও অনাকাঙ্খিতভাবে হয়ে গেলে এর জন্য মুজাহিদিনে কেরাম দায়ী থাকবেন না। এই আশঙ্কায় যদি হামলা বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলে কোনো দিন জিহাদ করা সম্ভব হবে না। হাদিস ও ফিকহের কিতাবাদিতে এসব বিষয় সুস্পষ্ট বিধৃত আছে। একটু কষ্ট করে চোখ বুলালেই পাওয়া যাবে। কিন্তু দ্বীনের দুশমনেরা এ ধরণের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে ফলাও করে অপপ্রচার করে মুজাহিদিনে কেরামের মুড নষ্ট করার চেষ্টায় থাকে। অনেক সময় তারা নিজেরাই হত্যা করে মুজাহিদদের নামে চালিয় দেয়।

    অধিকন্তু মুজাহিদগণ তো আর মাছুম নন যে, তাদের কোন ভুল-ভ্রান্তি বা কোন গুনাহ হতে পারে না। অন্য দশজন মানুষের মতো তাদেরও গুনাহ হতে পারে। কিছু মুজাহিদের ভুল বা গুনাহের কারণে তো আর গোটা জামাত বাতিল হয়ে যায় না। যে গুনাহ করেছে, তার গুনাহের বুঝা তাকে বইতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে মাফও করতে পারেন। এ কারণে গোটা জামাত বাতিল হয়ে যাবে না। এ ধরণের বাহানা খুঁজে জিহাদ থেকে সরে দাঁড়ানোরও কোন অবকাশ নেই। ওয়াল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআলা আ’লাম।


  • #2
    জাঝাকাল্লাহ আখি, অনেক গুরুত্তপুর্ন পোস্ট, আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন আমিন।
    আমি হতে চাই খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা এর মত রণকৌশল ও ওমর (রা এর মত কাফেরদের প্রতি কঠোর।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ আখি......
      আমাদের এ সকল বিষয়ে অবগত করার জন্য ।আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে এবং আমাদের সকল সাথি ভাইদের উভয় জাহানে কবুল করুক।আমীন.....ছুম্মা আমীন...

      Comment


      • #4
        আখি,আপনাকে অনুরোধ করছি ফোরামে ভাইদের করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য।
        والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

        Comment


        • #5
          10. ভাই আল্লাহ্* তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি এত সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য ,তার পরে ও প্রশ্ন থেকে যায় কোরআন ও সুন্নায় দল সম্পর্কে যত আয়াত এবং সহীহ হাদিস বর্নিত হয়েছে সব খলিফার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য , আর আয়াত ও হাদিস কি কোন দল করার নির্দেশ দেয় কি? এই ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাঃ এর বানী, সাহাবাদের ব্যাখ্যা, পুর্বের সালাফদের বক্তব্য দল সম্পর্কে জানতে চাই তাদের উক্তি থেকে দল করার নির্দেশ পাওয়া যায় কি? খিলাফা প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে কোন আমিরের দিকে আহবান করা জায়েজ আছে কি? বিস্তারিত জানাবেন?

          Comment


          • #6
            জাঝাকাল্লাহ আখি, অনেক গুরুত্তপুর্ন পোস্ট, আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন আমিন।

            Comment


            • #7
              জাযাকাল্লাহ আখি , আপনার লেখা সুন্দর হয়েছে লেখা উপস্থাপন করতে হলে দলিল প্রয়োজন ভাই,
              তালেবানরা যেহেতু এমন ভূমিতে জিহাদরত, যেখানকার অধিকাংশ জনগণ মুসলমান- তাই মুরতাদদের উপর হামলা হলে অনাকাঙ্খিতভাবে কিছু মুসলমান নিহত হতেই পারে। সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পরও যদি কিছু মুসলমান নিহত হয়ে যায়, তাহলে এটা সমালোচনার কিছু নয়। এ ধরণের হামলা সম্পূর্ণ শরীয়তসম্মত।

              এই কথা বলতে হলে কুরান ও সুন্নাহ এবং সাহাবা ,তাবেয়ী, আকাবীরদের বক্তব্য প্রয়োজন , আল্লাহ্* তায়ালা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন ।

              Comment


              • #8
                Originally posted by উওর জানার জন্য View Post
                10. ভাই আল্লাহ্* তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি এত সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য ,তার পরে ও প্রশ্ন থেকে যায় কোরআন ও সুন্নায় দল সম্পর্কে যত আয়াত এবং সহীহ হাদিস বর্নিত হয়েছে সব খলিফার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য , আর আয়াত ও হাদিস কি কোন দল করার নির্দেশ দেয় কি? এই ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাঃ এর বানী, সাহাবাদের ব্যাখ্যা, পুর্বের সালাফদের বক্তব্য দল সম্পর্কে জানতে চাই তাদের উক্তি থেকে দল করার নির্দেশ পাওয়া যায় কি? খিলাফা প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে কোন আমিরের দিকে আহবান করা জায়েজ আছে কি? বিস্তারিত জানাবেন?
                মুহতারাম ভাই, আপনার প্রশ্ন আমি সম্পূর্ণ বুঝতে পারছি না। একটু পরিষ্কার করে বললে জওয়াব দিতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

                Comment


                • #9
                  Originally posted by ইলম ও জিহাদ View Post
                  মুহতারাম ভাই, আপনার প্রশ্ন আমি সম্পূর্ণ বুঝতে পারছি না। একটু পরিষ্কার করে বললে জওয়াব দিতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
                  ,তার পরে ও প্রশ্ন থেকে যায় কোরআন ও সুন্নায় দল সম্পর্কে যত আয়াত এবং সহীহ হাদিস বর্নিত হয়েছে সব খলিফার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য , আর আয়াত ও হাদিস কি কোন দল করার নির্দেশ দেয় কি? এই ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাঃ এর বানী, সাহাবাদের ব্যাখ্যা, পুর্বের সালাফদের বক্তব্য দল সম্পর্কে জানতে চাই তাদের উক্তি থেকে দল করার নির্দেশ পাওয়া যায় কি? খিলাফা প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে কোন আমিরের দিকে আহবান করা জায়েজ আছে কি? বিস্তারিত জানাবেন?
                  ভাই আপনি এই কথা গুলো বুঝতেছেন না । না বুঝলে আর কি করার আছে।

                  আল্লাহ্* আমাদের ক্ষমা করুণ ও দয়া করুণ ।

                  Comment


                  • #10
                    Originally posted by উওর জানার জন্য View Post
                    ,তার পরে ও প্রশ্ন থেকে যায় কোরআন ও সুন্নায় দল সম্পর্কে যত আয়াত এবং সহীহ হাদিস বর্নিত হয়েছে সব খলিফার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য , আর আয়াত ও হাদিস কি কোন দল করার নির্দেশ দেয় কি? এই ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাঃ এর বানী, সাহাবাদের ব্যাখ্যা, পুর্বের সালাফদের বক্তব্য দল সম্পর্কে জানতে চাই তাদের উক্তি থেকে দল করার নির্দেশ পাওয়া যায় কি? খিলাফা প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে কোন আমিরের দিকে আহবান করা জায়েজ আছে কি? বিস্তারিত জানাবেন?
                    ভাই আপনি এই কথা গুলো বুঝতেছেন না । না বুঝলে আর কি করার আছে।

                    আল্লাহ্* আমাদের ক্ষমা করুণ ও দয়া করুণ ।

                    الحمد لله، نحمده ونستعينه ونستغفره ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن يضلله فلا هادي له

                    ভাই! আপনার প্রশ্নগুলো দেখে মনে হয়, যেন আপনি নতুন মুসলমান হয়েছেন? তাই এই পরিস্থিতিতে এগুলো বুঝা আসলেই কঠিন। আপনি যদি এখন হঠাৎ করে প্রশ্ন করে বসেন, আমরা যে আল্লাহকে মানি, শরীয়তে এটা জায়েয আছে কি না? তাহলে আমরা এটা কি সহজে বুঝতে পারবো এই পরিবেশে?

                    Comment


                    • #11
                      দল মানে কি??
                      অভিন্ন লক্ষে গুটিকয়েক এক হওয়া।
                      والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

                      Comment


                      • #12
                        Originally posted by উওর জানার জন্য View Post
                        10. ভাই আল্লাহ্* তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি এত সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য ,তার পরে ও প্রশ্ন থেকে যায় কোরআন ও সুন্নায় দল সম্পর্কে যত আয়াত এবং সহীহ হাদিস বর্নিত হয়েছে সব খলিফার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য , আর আয়াত ও হাদিস কি কোন দল করার নির্দেশ দেয় কি? এই ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাঃ এর বানী, সাহাবাদের ব্যাখ্যা, পুর্বের সালাফদের বক্তব্য দল সম্পর্কে জানতে চাই তাদের উক্তি থেকে দল করার নির্দেশ পাওয়া যায় কি? খিলাফা প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে কোন আমিরের দিকে আহবান করা জায়েজ আছে কি? বিস্তারিত জানাবেন?

                        মনে হচ্ছে, আপনার কাছে পুরো দ্বীনটাই অস্পষ্ট হয়ে গেছে। সব চোখের সামনে থাকা সত্ত্বেও কিছুই দেখেন না।
                        যারা ওহাবী আন্দোলন করেছিল, তারা দল গঠন করেছিল মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহ্বা নজদীর নেতৃত্বে। সৈয় আহমাদ রহ. জিহাদী দল গঠন করেছিলেন। শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। তারপর ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিপ্লবে দল গঠন করা হয়েছিল। হাজী শরীয়তুল্লাহ দল গঠন করেছিলেন। শহীদ তিতুমীল দল গঠন করেছিলেন।

                        এছাড়া যখন ইসলামে খেলাফত ও খলীফা থাকা সত্বেও সে ফাসেক হয়ে যাওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে দল গঠন করা যায়, সেখানে যখন পুরো বিশ্বে কোন খলীফা বা খেলাফতই না থাকে, তখন খেলাফত প্রতিষ্ঠা করার জন্য দল গঠন করা যাবে না? তা না হলে আপনি কি চান, মুসলমানরা এভাবেই বিচ্ছিন্ন থেকে মার খাক, ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জমায়েত না হোক? তাহলে ইসলাম চলবে কিভাবে বলেন?

                        যেমন হুসাইন রাযি. ইয়াযিদের বিরুদ্ধে দল গঠন করেছেন, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের বিরুদ্ধে দল গঠন করেছেন। ইমাম আবু হানিফার মদদপুষ্ট উমাইয়া রজবংশের এক আল্লাহওয়ালা লোক উমাইয়া শাসক হিশাম ইবনে আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে দল গঠন করেছেন।
                        আব্বাসী খলীফা মানসুরের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ নফসে যাকিয়্যা ও ইবরাহিম ওরফে মাহদি ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মালিকের পৃষ্ঠপোষকতায় দল গঠন করেছেন।
                        মিশরে মামলুক রাজবংশ, ইসলামের ইতিহাসে যাদের অনেক অবদান আছে, তাদের প্রতিষ্ঠা হয়েছে দল গঠন করে। উসামানীয়া সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দল গঠন করে।
                        এগুলো তো ছিল মুসলিম ফাসেক শাসকদের বিরুদ্ধে দল গঠন করা, তাহলে কি কাফেরদের বিরুদ্ধে মুসলমানরা দল গঠন করতে পারবে না? তাহলে জিহাদ করবে কিভাবে?
                        আপনার কথামত, রাসূলুল্লাহ সা. যে সর্বপ্রথম ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে একজন/দুইজন করে দাওয়াত দিয়ে দল গঠন করেছেন, এবং অবশেষে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গেছেন,....দল গঠন করার ইতিহাস এখানেই শেষ। পরবর্তীতে যদি ইসলামী খেলাফত ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে আর খেলাফত প্রতিষ্ঠা করার জন্য দল গঠন করা যাবে না। খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দল গঠন করার বৈধতা রাসূলুল্লাহ সা. পর্যন্তই শেষ। এখন শুধু ইমাম মাহদি এসেই কেবল খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দল গঠন করবেন। অন্য কারো অধিকার নেই, বৈধতা নেই।
                        ইসলামী খেলাফতের খলিফা ফাসেক হয়ে যাক, তবুও তার বিরুদ্ধে দল গঠন করা যাবে না। খলিফা মুরতাদ হয়ে যাক, তবু তার বিরুদ্ধে দল গঠন করা যাবে না। খলিফা বা খেলাফত না থাকুক, তবু খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দল গঠন করা যাবে না।

                        এখন মুসলমানদের একটাই কাজ, ব্যক্তিগতভাবে আমল করবে, আর কাফেরদের মার খেয়ে সবর করে যাবে। কুরাআন, আল্লাহ, রাসূল ও দ্বীনের নাম নিশানা মুছে ফেলুক, আমাদের সামনে তাদেরকে চরম অসম্মান করুক, তবু দল গঠন করা যা না।

                        বড় আশ্চর্যের বিষয়! আপনি যেন এগুলো কিছুই বুঝেন না।

                        আপনার জন্য একটা দলিল: আপনি যে বলেছেন আকাবিররা আমিরুল মুমিনীন এমন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছিলেন কি না, তার উত্তর: আপনি ইতিহাস দেখুন, সৈয়দ আহমাদ রাহ.কে সাধারণ ও ব্যাপকভাবে আমিরুল মুমিনীন শব্দ বরে উল্লখ করা হত। আপনি আবুল ফাতাহ সাহেবের লেখা “দেওবন্দ আন্দোলন” বইটা দেখুন।

                        Comment


                        • #13
                          কাউকে কিছু বলার আগে চিন্তা করুণ ।

                          Originally posted by salahuddin aiubi View Post

                          الحمد لله، نحمده ونستعينه ونستغفره ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن يضلله فلا هادي له

                          ভাই! আপনার প্রশ্নগুলো দেখে মনে হয়, যেন আপনি নতুন মুসলমান হয়েছেন? তাই এই পরিস্থিতিতে এগুলো বুঝা আসলেই কঠিন। আপনি যদি এখন হঠাৎ করে প্রশ্ন করে বসেন, আমরা যে আল্লাহকে মানি, শরীয়তে এটা জায়েয আছে কি না? তাহলে আমরা এটা কি সহজে বুঝতে পারবো এই পরিবেশে?

                          ভাই কাকে কি বলছেন চিন্তা করে বলুন আপনি একজনকে নওমুসলিম বানিয়ে দিচ্ছেন! এই আপনার দ্বীনের হালত , আস্তাগফিরুল্লাহ আল্লাহ্* তায়ালা আমাদের রক্ষা করুন তার করুণা দ্বারা ।

                          Comment


                          • #14

                            ধর্মযোদ্ধা


                            'তোমরা যখন আমাদের ভূখণ্ডে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করো, তখন তোমাদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে তোলা আমাদের আইনত কর্তব্য এবং এই কর্তব্য পূরণে আমরা নৈতিকভাবেও বাধ্য... দখলিকৃত পবিত্র ভূখণ্ডগুলো মুক্ত করা এবং উম্মাহর মহিমাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে... আমাদের যুবকরা তোমাদের সেনাদের থেকে ভিন্ন। যেখানে তোমাদের সমস্যা হলো কীভাবে তাদের লড়াইয়ের জন্য রাজি করানো যায়, সেখানে আমাদের সমস্যা হলো কীভাবে তাদের নিবৃত্ত করা যায়...'
                            ——'ডিক্লেয়ারেশন অফ জিহাদ অ্যাগেইনস্ট দ্য আমেরিকানস অকুপাইয়িং দ্য ল্যান্ড অফ টু স্যাক্রেড প্লেসেস', ওসামা বিন লাদেন, ১৯৯৬।

                            Comment

                            Working...
                            X