يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
আল্লাহ বলেন "তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর নূর কে (দ্বীন) নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর নূর কে (দ্বীন) পূর্ণরূপে বিকশিত করেই ছাড়বেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে"
সারা দুনিয়ার সমস্ত কাফের এবং মুরতাদ মৌলিক ভাবে এবং আদর্শগত ভাবে এক, যদিও তাদের মধ্যে বাহ্যিক ভিন্নতা থাকুক না কেন। আল্লাহ বলছেন, কাফের রা পরস্পরের আউলিয়া।
দুনিয়ার এমন কোন প্রান্ত নাই যেখান থেকে কাফিররা আল্লাহর দ্বীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। কিন্তু আফসোস আমরা সেটা উপলব্ধি করতে পারিনা!
কাফেরদের এই সম্মিলিত যুদ্ধ যে শুধু সামরিক ভাবে তাই নয়। বরং এই যুদ্ধের অনেক বড় একটা অংশ হচ্ছে ব্যাটল অফ হার্টস অ্যান্ড মাইন্ড বা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। অর্থাৎ মুজাহিদিন দের সাথে তো যুদ্ধ চলছেই আর এর বাইরে যে সব সাধারন মুসলিম রয়ে গেছে তাদেরকেও তারা এই যুদ্ধের বাইরে রাখেনি। আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত না কাফেরদের আদর্শের সামনে নিজেকে বিক্রি করে দিবেন ততখন পর্যন্ত আপনি তাদের শত্রু! আপনি মানেন কিংবা না মানেন। তারা আপনার এবং আমার মধ্যে শেষ বিন্দু ইসলামের অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত আমাদের কে রেহাই দিবে না। আর আল্লাহ এমন ই বলেছেন, "তারা তো চায় তোমরাও যেন তাদের মত কাফের হয়ে যাও"
কাফেরদের আরেকটি যে যুদ্ধ ব্যাটল অফ হার্টস অ্যান্ড মাইন্ড বা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ, এটি সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। কারন এটা আমাদের কে নীরবে হত্যা করে। আসলে একদিক থেকে চিন্তা করলে এই যুদ্ধ সামরিক যুদ্ধের চেয়েও অনেক ভয়ংকর। কারন সামরিক যুদ্ধে আপনি সব কিছু পরিষ্কার দেখতে পান, শত্রু দেখা যায়, ট্যাঙ্ক দেখা যায়, মেশিনগান দেখা যায়, ড্রোন দেখা যায়। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক এই যুদ্ধে আপনি শত্রুর কোন সুস্পষ্ট দেখা পাবেন না, কোথায় তার শুরু কোথায় তার শেষ, কোন দিক থেকে কিভাবে কোন লক্ষ্যবস্তুতে সে আক্রমন করছে তা আপনি বুঝে উঠতে পারবেন না। এই যুদ্ধ অনেক অনেক বিষয়কে জালের মত করে পেচিয়ে আপনাকে আক্রমন করে। এই যুদ্ধে শত্রুকে চিনতে হলে এবং শত্রুর আক্রমন থেকে নিজেকে বাচাতে হলে সবার আগে যা দরকার তা হচ্ছে ইল্ম। শুদ্ধ ইল্ম।
যেমন একটি উদাহরন দেখা যাক। আল্লাহ বলেন -
"হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও"
এখানে আল্লাহ একটা বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক করেছেন, আর তা হচ্ছে মুমিন রা যেন মুমিন ব্যাতিত আর অন্য কাউকেই অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসেবে গ্রহন না করে। কেন করা যাবেনা তার কারন ও আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। বিষয় টা আসলে এখানেই শেষ। এখন আমাদের সবার পক্ষে প্রত্যেক কাফের মুনাফিকদের অন্তরে কি আছে তা জানা সম্ভব না এবং যা আল্লাহ জানেন। তাই আল্লাহ আমাদেরকে এই ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। এখন আপনি এবং আমি যদি এই আয়াতে বিশ্বাস করি এবং এটা ইয়াকিনে নিয়ে আসি তাহলে কাফির মুনাফিকদের আমরা কখনই বিশ্বাস করবনা এবং তাদের সাথে আমাদের কোন অন্তরঙ্গ সম্পর্কও হবেনা। তারা যা প্রচার করবে, তারা যা আমাদেরকে বিশ্বাস করতে বলবে তা বিশ্বাস ও করব না। খুবই সিম্পল। জটিলতার কিছুই নাই। আর যদি আমার এই আয়াত আমল করি তাহলেই তাদের জঘন্য চক্রান্ত গুলো থেকে আমরা আল্লাহর সাহায্যে নিজেদেরকে হেফাজত রাখতে পারি ইনশাআল্লাহ। এখানে আরো একটি বিষয় আমাদের খুব খেয়াল রাখা দরকার - সামরিক যুদ্ধে কোন মুজাহিদ যদি মারা যান তিনি শহিদ ইনশাআল্লাহ। কিন্তু এই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে আমরা কেউ যদি ধরা পড়ে যাই আর এই যুদ্ধে হেরে যাই তাহলে এমনও সম্ভাবনা আছে যে তার ফল হিসবে আমাদের নিজেদের ঈমান পর্যন্ত বিক্রি হয়ে যেতে পারে! (আল্লাহর পানাহ)
এই বিষয় কে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নাই আর এই বিষয়ে উদাসীন থাকার ও কোন সুযোগ নাই।
আল্লাহ বলছেন -
"তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও"
চলবে ইনশাআল্লাহ -
Comment