রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র - স্বার্থ কার?
মুল প্রসঙ্গে যাবার আগে একটু ভুমিকা সেরে নেই। ইকোনমিক হিট ম্যান জন পারকিন্স তার বই "কনফেশন অফ এ ইকোনিক হিটম্যান" এ কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে একটি হচ্ছে কিভাবে শোষক শ্রেণী দরিদ্র বা উন্নয়নশীল দেশ গুলো থেকে সুবিধা নেয়। সংক্ষেপে সেই ফর্মুলা টা হচ্ছে এমন যে,
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বা এমন দাদা টাইপের কেউ কোন দরিদ্র বা উন্নয়নশীল দেশকে (যাদের কে আমরা থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি বলে বেশি চিনি) বিপুল পরিমানে লোন দিবে বিভিন্ন বড় বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার করার জন্য, যেমন পাওয়ার প্লান্ট, এনার্জি সেক্টর, তেল কিংবা গ্যাস, এরকম। এরপরে তারা এই লোনের সাথে এমন সব শর্ত জুড়ে দিবে যে বাস্তবে এই লোনের পুরা কিংবা সিংহভাগ টাকা আবার তাদের কাছেই ফিরে যাবে। এটা হবে এই ভাবে যে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তাদেরই পছন্দ অনুযায়ী কোম্পানি নিয়োগ দিতে হবে, তাদের পছন্দ অনুযায়ী সরবরাহকারী থেকে কাচামাল নিতে হবে। এই ভাবে এই টাকা বাস্তবে আবার ঘুরে বিশ্ব ব্যাংক কিংবা তার স্বার্থ রক্ষা কারীদের হাতে গিয়েই পৌছায়। এখানেই শেষ নয়। বরং এরপরে এই ফ্যাসিলিটি থেকে অধিকাংশ সুবিধা তারাই আগে নিয়ে নেয় এবং তাদের পছন্দ মত দামে এটার কেনা বেচা করতে বাধ্য করে। এভাবে দিন শেষে যখন হিসাবের খাতা খুলে বসা হয় তখন দেখা যায় - বিশ্বব্যাংক এই সব হতভাগা দেশের সামনে বিশাল এক মুলা ঝুলিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়ে সেই দেশের হতভাগা জনগনের উপরে এক বিশাল ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, ফ্রিতে দিয়ে যায় পরিবেশ বিপর্যয় কিংবা স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পন্ন কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
আবারও বলি এটা আমার কথা না, জন পারকিন্স এর কথা। এই পুরা ফর্মুলায় জন পারকিন্স দের মত হিটম্যানদের কাজ কি? তাদের কাজ হচ্ছে সেই হতভাগা দেশকে এটা বিশ্বাস করানো যে - তোমার দেশ এবং জাতির উন্নতির জন্য এর চেয়ে সুন্দর আর কোন অফার হতেই পারেনা। তবে বাস্তবতা আসলে আরেকটু তিক্ত। কারন এই কেনাবেচা টা আসলে এত সরল নয় - বরং এই কেনা বেচা তা হয় মুলত দুই ভাবে।
১। সেই দেশের নেতাকে বা নেতাদেরকে (যারা এই সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে) তাদের কে অর্থের মাধ্যমে কিনে নেয়া হয়।
২। সামরিক, বেসামরিক, কূটনৈতিক হুমকির মাধ্যমে।
জন পারকিন্স এর মতে এমন একটি ম্যাসিভ ইকোনকিম স্যাবোটাজ কে কিভাবে চিনতে পারা যায়? উত্তর হচ্ছে যখন আপনি দেখবেন উন্নয়নশীল বা সল্পন্নোত দেশ গুলোতে এরকম বিশাল আকারের প্রজেক্ট গুলো শুরু হচ্ছে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে পাওয়ার/এনার্জি। যেখানে সেই দেশের জন্য এত বিশাল কলেবরের পাওয়ার বা এনার্জি আপাতত কোন দরকার নাই কিংবা এরক্ম মেগা প্রজেক্ট চালানোর মত সামর্থ্য, দক্ষ জনবল বা অন্যান্য উপাদান সমুহ অনুপস্থিত। এবং এই পুরা নাটকে সাধারন জনগনের সম্পর্কিত থাকার কোন সুযোগ তো অনেক দুরের কথা তাদের সামনে এই ব্যাপারে কোন সঠিক তথ্য বা ধারনাই থাকেনা।
কাকতালীয় ভাবে! আমাদের টপিকটিও পাওয়ার নিয়ে। রুপপুর পারমানবিক প্রকল্প। প্রশ্ন হচ্ছে এটাও কি কাকতালীয় যে, স্যাবোটাজের ২য় লক্ষনও এখানে উপস্থিত। দেশের জনগন এই ব্যাপারে কিছুই জানে না। দেশের জনগণ তো অনেক দুরের কথা এই ব্যাপারে বিজ্ঞজনেরাই অনেক কিছু জানেন না!
দেখা যাক - এটি একটি ইকোনমিক স্যাবোটাজ কিনা? কার স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে এই প্রকল্পে? বাংলাদেশের মাটি ব্যাবহার করে এই দেশের জনগণের সামনে পারমানবিক বিপর্যয়ের মত বিশাল ঝুঁকিকে সামনে রেখে, এই দেশের জনগণের অর্থ দিয়ে বাস্তবে কার সার্থ রক্ষা করার কাজ চলছে?
এই বিশাল চক্রান্তের জটিলতা এমনকি বিজ্ঞজনের কাছেই পরিষ্কার না! তাই আমরা খুব সহজ ভাবে আমাদের মত সাধারন মানুষের জন্য বোধগম্য হয় এমন বিষয় গুলোই শুধু দেখব। আমি নিজে থেকে তেমন কোন কথাই বলবনা, বরং দেশের এক নম্বর দৈনিক নিউজপেপার প্রথম আলোর প্রতিবেদন এবং পরমানু বিশেষজ্ঞদের মতামত গুলোই আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকবল প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ভারতের নিউক্লিয়ার পাওয়ার করপোরেশন অব ইন্ডিয়ায় (এনপিসিআইএল)। গত জুলাই পর্যন্ত তিনটি ব্যাচে মোট ১৪৩ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সর্বশেষ ব্যাচে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন ৫৫ জন। (প্রথম আলো)
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী, আব্দুল মতিন সাহেব বলেন -
আমরা জনবলের বিষয়ে বিশেষ জোর দিলেও সরকার সেটা উপলব্ধি করতে পারেনি। জনবল বলতে আমরা কী বোঝাই, সেটা বোঝা দরকার। জনবল মানে রিঅ্যাক্টর অপারেটর নয়। অনেকে মনে করেন যে এখন তো আমরা প্রশিক্ষণে পাঠাচ্ছি। তার মধ্য দিয়ে জনবল তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এটাই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জনবল নয়। আইএইএর গাইড বইয়ে আছে, আমরা যে সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে চাই তার অন্তত ১০ বছর আগে আমাকে জনবল তৈরি করতে হবে। এই জনবল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলো নেবে। এই সিদ্ধান্ত ভুল হলে তা কিন্তু আর শোধরানোর সুযোগ নেই। আইএইএর গাইড বই অনুসারে, যঁারা এ সিদ্ধান্ত নেবেন তঁাদের মধ্যে এমন কয়েকজন থাকতে হবে, পরমাণু প্রযুক্তি সম্পর্কে যঁাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা চুল্লি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সমপর্যায়ের। যেহেতু জনবলের এই বিষয়টা আমরা বুঝিনি, সেহেতু আমাদের অনেক খেসারত দেওয়ার আশঙ্কা আছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে করা পরমাণু সহযোগিতা চুক্তির আওতায় এখন শুধু লোকবল প্রশিক্ষণের পর্যায় রয়েছে। ভবিষ্যতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে ভারত অংশ নেবে। এর আগে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, লোকবল প্রশিক্ষণ ও কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্ব রাশিয়ার কাছে ছিল। এ বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গেও একটি চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশের। এখন এ প্রকল্পের রাশিয়ার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হচ্ছে ভারত। আগে বলা হয়েছিল, এই প্রকল্পে ভারতের কাছ থেকে পরামর্শ সেবা নেওয়া হবে, প্রকল্পের জনবল প্রশিক্ষণে তারা সহায়তা দেবে। (প্রথম আলো)
অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে -
ভারতের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো রাশিয়ারই প্রযুক্তিগত সহায়তায় তৈরি। নিজ দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রি–অ্যাক্টর থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুর জন্য ভারত রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। নিজের দেশের কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের বাইরে বিশ্বের কোথাও পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে ভারতের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। (প্রথম আলো)
কিন্তু সেই ভারত আমাদের দক্ষ জনবল তৈরির প্রশিক্ষনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাস্টার মশাই!
কূটনৈতিক সূত্র ও পরমাণু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারত মনে করে, প্রতিবেশী কোনো দেশ সামরিকভাবে শক্তিশালী হলে তা হবে তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সে কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যাতে ভবিষ্যতে কোনোভাবেই সামরিক কাজে ব্যবহৃত না হয়, তা নিশ্চিত করতে চায় দেশটি। (প্রথম আলো)
তার মানে - আমার দেশে আমার জনগণের টাকা দিয়ে কি করা হবে আর কি করা হবে না তা দাদা মশাই ঠিক করে দিবেন! খুবই সঙ্গত কথা, যত যাই হোক - স্বাধীন দেশ বলে কথা!
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ভারতের আগ্রহের আরেকটি কারণ, ভারত বহুদিন ধরে নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপের (এনএসজি) সদস্যপদ পেতে চেষ্টা করছে। ৪৯টি দেশের এ জোটে ভারত ঢুকতে পারছে না চীনের বাধার কারণে। ভারত এনএসজিতে ঢুকলে পরমাণু পণ্য ও প্রযুক্তি খাতে লাখো কোটি টাকার বাজারে ঢুকতে পারবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে যুক্ত হতে পারলে তাদের সে পথ সুগম হবে। কারণ, বাংলাদেশের রূপপুরই ভারতের বাইরে তাদের এ ধরনের কোনো প্রকল্পে প্রথম যুক্ত হওয়া (প্রথম আলো)
জন পারকিন্স এর প্রথম শর্ত সুপস্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে - এখানে অন্য কারো স্বার্থ রক্ষা করাই মুল উদ্দেশ্য এবং তা সম্ভাব্য সব দিক দিয়ে। বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক কখনই ভারতের সাথে রাশিয়ার সম্পর্কের চেয়ে বেশি নয়!
রূপপুর আমাদের প্রায় ৫০ বছরের স্বপ্ন। এখন সেই প্রকল্প বাস্তবের মুখোমুখি। আমরা এগিয়ে গেছি। কিন্তু এত বিশাল প্রকল্পের যে ব্যয় তার ৯০ শতাংশই ঋণের টাকা। কাজেই আমাদের ঋণের দায় অনেক বাড়বে। - রেজাউর রহমান : সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
জন পারকিন্সের কথার আরো বিস্তারিত বিবরণ আরো সুস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে! বিশাল ঋণের বোঝা সাধারন জনগণকেই বহন করতে হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক মো. শৌকত আকবরের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়ে একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। খুদে বার্তাও পাঠানো হয়। তবে তিনি সাড়া দেননি। এরপরও গত মার্চ মাস থেকে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি দেখা করেননি। ফলে ভারতের সঙ্গে চুক্তির পর যেসব অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেসব বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের কোনো মতামত জানা সম্ভব হয়নি। (প্রথম আলো)
২০১১ সালে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সব দায়িত্ব রাশিয়ার হাতে থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশ-রাশিয়া-ভারতের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ফলে রূপপুরে নির্দিষ্টভাবে রাশিয়া ও ভারতের ভূমিকা কোথায় কীভাবে থাকবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। (প্রথম আলো)
তবে বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, চুক্তির কোথাও কেন্দ্রে বিপর্যয় হলে কে দায় নেবে, সেটা স্পষ্ট নেই। (প্রথম আলো)
কেন্দ্রের সবকিছুই যখন ভারত করবে, তাহলে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পেন্ট নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি কে নেবে, সে ব্যাপারেও অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। (প্রথম আলো)
এই হিসাব অনুযায়ী, রূপপুরের ব্যয় প্রতি কিলোওয়াটে চার হাজার ডলারের বেশি হতে পারে না। সেখানে সাড়ে পাঁচ হাজার ডলার কেন হলো সেটা আমি বুঝতে পারছি না। - আবদুল মতিন : সাবেক প্রধান প্রকৌশলী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
রূপপুরের পারমাণবিক বর্জ্য রাশিয়ার নিতে হলে তাদের সংসদে আইন সংশোধন করতে হবে। সেটা তারা করবে কি না আমি জানি না - আবদুল মতিন : সাবেক প্রধান প্রকৌশলী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
- ২য় শর্তও পুরন হয়ে যাচ্ছে - বিজ্ঞ ব্যাক্তিরাই জানেন না কি হচ্ছে!
এবার আসি - উপসংহারে -
২০১২ সালের জুলাইয়ে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন একটি অনুরোধপত্র (নোট ভারবাল) পাঠায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এতে ভারত রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এরপর তিন বছর বিষয়টি নিয়ে ঢাকা ও দিল্লিতে তো বটেই, এর বাইরে রাশিয়ায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা হয়। (প্রথম আলো)
এটা খুবই দুঃখজনক যে রাশিয়া ভারতকে কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি সরবরাহের সাব-কন্ট্রাক্টের (উপঠিকাদারি) কাজটি দিয়েছে। অথচ ভারতের ভিভিইআর রি–অ্যাক্টরে যন্ত্রপাতি উৎপাদনের কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। ভারত তার নিজের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কুদানকুলামের জন্য যন্ত্রপাতি রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে। তিনি বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, ভারত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সর্বোচ্চ মুনাফা করতে চায়।’ - আবদুল মতিন : সাবেক প্রধান প্রকৌশলী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
‘ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তিতেই এমনটি রয়েছে’ জানালে ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু, প্রতিবেশী দেশ। আমরা শুধু ভারতের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাটুকু নেব। এর বাইরে কোনো সেবা নেব না।’ তাহলে চুক্তি নিয়ে পরে কোনো সংকট তৈরি হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত তো শত্রুরাষ্ট্র না, আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র।’ - (প্রথম আলো)
- প্রত্যেকটি বিষয় যখন অস্পষ্ট এবং কারও মুখ থেকে কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা নাই, জনগণের উপরে বিশাল দেনার বোঝা এবং পারমানবিক বিপর্যয়ের মত ঝুকির মুখে জনগণ কে জিম্মি করে যখন একথা টি তারা কোন দ্বিধা ছাড়াই স্পস্ট ভাবে উচ্চারন করতে পারেন - ‘ভারত তো শত্রুরাষ্ট্র না, আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র -
তখন আমাদের সামনে একটি প্রশ্নই আসে, তাহলে এই প্রকল্প কার স্বার্থ রক্ষার কাজ করছে? এই প্রকল্পে বাংলাদেশ এবং এই দেশের জনগনের স্বার্থের বিষয় টি কেউই পরিষ্কার করে এখনো দেখাতে পারলেন না, এমন কি বড় বড় পরমানুবিদ গন ও না। এমন অবস্থায় ভারতের সুপস্ট স্বার্থ রক্ষার তাগিদে যখন ভারতকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে এই কথার ব্যাপারে দায়িত্বশীল দের কাছে প্রশ্ন করা হয় তখন তারা ‘ভারত তো শত্রুরাষ্ট্র না, আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র - এই বলে উত্তর সারেন।
তাহলে এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকার অবকাশ নাই যে, রুপপুর পারমানবিক প্রকল্পে বাঙ্গালদেশের জনগণের অর্থে এদেশের মাটি এবং জনগন কে পারমানবিক বিপর্জয়ের মত ঝুকির সামনে ফেলে দিয়ে এ সরকার চরম অনুগত দাসের মত শুধু তথা কথিত দাবি কৃত বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের স্বার্থ রক্ষার করার লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
Comment