বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু আস সালাম আলা রাসুলিল্লাহ
প্রিয় ভাইয়েরা আমার, আপনারা জানেন যে আমরা একটা যুদ্ধের ময়দানে আছি। আপনি ঘরে থাকেন বা বাইরে থাকেন যেখানেই থাকেন না কেন আমি এবং আপনি আমরা সবাই যারা অন্তত ঈমানের শেষ আলো টুকু নিভিয়ে দেয়নি বা নিভে যেতে দেয়নি তারাই আল্লাহর দুশমনদের সাথে যুদ্ধে আছি।
আপনি বিশ্বাস করেন, আপনি নিরাপদ না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না আমি বা আপনি তাদের মত হয়ে যাবো। এটা আল্লাহর কথা, আল্লাহ বলেছেন, তারা চায় তোমরাও তাদের মত কাফের হয়ে যাও। এটাই বাস্তবতা। আপনাদের স্মরন আছে কিনা জানিনা অনেক দিন আগে একবার নিউজে এসেছিলো দেশের উঠতি বয়সী ছেলে মেয়ে রা জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। কিসের ভিত্তিতে তাদের এই কথা? তাদের ভিত্তি হচ্ছে, এখন ছেলে মেয়েদের কথায় আরবি শব্দ অর্থাৎ সালাম, আলহামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ, এগুলো বেড়ে গেছে। মেয়েরা এখন হিজাব, নিকাব করছে, ছেলেদের প্যান্ট গোড়ালির উপরে হয়ে গেছে - এবং এগুলোই হচ্ছে তাদের মতে উগ্রবাদের নিদর্শন। একই সাথে এই যুবক শ্রেণী মঙ্গল শোভা যাত্রা কিংবা পহেলা বৈশাখের মত শিরক, বিদয়াত কে প্রত্যাখ্যান করছে এটাও উগ্রবাদ! অর্থাৎ আপনাকে তাদের মত হতেই হবে - এর আগ পর্যন্ত কোন নিস্তার নাই।
আপনি জাতির পিতা হিসেবে ইবরাহিম আঃ মানেন কিংবা না মানেন কোন সমস্যা নাই, কিন্তু আপনি জাতির পিতা হিসেবে শেখ মুজিব মানেন না, এতে সমস্যা আছে। শুধু সমস্যা না অনেক বড় সমস্যা আছে!
আমি শুরুতে বলেছিলাম যে তারা আপনাকে, আমাকে, আমার ঈমান নিয়ে থাকতে দিবেনা, দিবেনা দিবেনা। এখানে আর কথা পেচায়ে কোন লাভ নাই, যত বড় মুফতি ফুলান কিংবা শায়েখ ব্র্যাডলি অন্য রকম বলুক না কেন। আসলে বাস্তবতা এত করুন যে এখন এই সব কথা বলাটাও এক রকম বিলাসিতা! সারা দুনিয়াতে যখন উম্মাতে মুহাম্মাদী সাঃ শুধু মাত্র তার নিজের ঈমানের জন্য রক্তাক্ত হচ্ছে তখন যদি এই কথাকে প্রমান করার চেষ্টা করতে হয় তাহলে তা বিলাসিতাই বটে।
আজ আপনাদের সাথে কথা বলার মাকসাদ ভিন্ন। আগেই বলেছি যে আমরা যুদ্ধের ময়দানেই আছি। এটা আমরা যত দ্রুত উপলব্ধি করতে পারবো ততই মঙ্গল।
আমরা বসে থাকি, কিন্তু আমাদের শত্রু রা বসে থাকেনা। তাদের কোন ক্লান্তি নাই। তাদের চোখের পাতা বন্ধ হয়না। ইউটিবের একটা বিখ্যাত দাওয়াহ চ্যানেল Merciful Servant - আপনারা অনেকেই নাম শুনেছেন, ভিডিও দেখেছেন। কিছু দিন আগে ইউটিউব কোন কারন ছাড়াই তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়, এমনকি পেপ্যাল তাদের সমস্ত লেনদেন আটকায়ে দেয়। এর কারন হিসেবে তারা একটি কথাই বলে - এটা উপরের নির্দেশ এর বেশি আর কিছু আমরা বলতে পারবোনা।
তো এই যে যুদ্ধের কথা বললাম - এই যুদ্ধের অনেক বড় একটা ময়দান হচ্ছে মিডিয়া। সত্য কথা হচ্ছে এটা বুঝানো প্রায় অসাধ্য যে এটা আসলে কত বড় ময়দান। জিহাদ, মিডিয়ার অর্ধেক কিংবা তারও বেশি। বর্তমানে মিডিয়া ব্যাতিত কোন যুদ্ধ সফল হতে পারবেনা, আপনি লিখে নিতে পারেন। যত সামরিক শক্তিই থাকুক না কেন মিডিয়া যদি পক্ষে না থাকে কোন শক্তির পক্ষে যুদ্ধে জেতা প্রায় অসম্ভব। ফিল্ডে যদি জিতেও যায় মোরালের দিক থেকে তারা পরাজিত হবেই, হতেই হবে। এই কথার জন্য অ্যামেরিকার চেয়ে বড় আর বাস্তব উদাহরন কে হতে পারে!
কথা হচ্ছিলো মিডিয়া নিয়ে। এই মিডিয়া এবং যুদ্ধের সাথে মিডিয়ার সম্পর্ক নিয়ে আমি সামান্য কথা বলব এর পরেই মূল কথায় চলে যাবো ইনশা আল্লাহ।
মিডিয়া এবং যুদ্ধ একটি আরেকটির সাথে মুদ্রার মত, অন্তত মডার্ন ওয়ারফেয়ারে। মিডিয়া যুদ্ধ ছাড়া টিকে থাকবে, তবে মিডিয়া ব্যাতিত যুদ্ধ টিকতে পারবেনা। যুদ্ধের অন্যান্য সব এলিমেন্টস এবং লজিস্টিকস এর মত মিডিয়াও এখন যুদ্ধের উপাদান। এবং কখনো তা ডিসাইসিভ এলিমেন্ট অফ দা ওয়ার।
মিডিয়া নিজে একটি স্বতন্ত্র ওয়ার মেশিন এবং কনভেনশনাল ওয়ার থেকে এই ওয়ার মেশিনের সুপিরিওরিটি অনেক দিক থেকে বেশি। আমাদের মিডিয়ার স্বরূপ খুব পরিষ্কার ভাবে জানা দরকার, কারন মিডিয়া এখন শুধু বিনোদনের জন্য নয়। একটা কনভেনশনাল ওয়ার এর জন্য দরকার বিলিওন বিলিওন ডলার, ম্যানপাওয়ার, মেশিনারিজ, হিউজ লাইন অফ কমিউনিকেশন্স, লজিসটিক্স, অনেক কিছু। শুধু তাই নয় একটি যুদ্ধ কে প্রস্তুত করার জন্য এর আগে পিছে অনেক স্টোরি তৈরি করতে হয়। কনভেনশনাল ওয়ারে – ফিজিক্যাল গ্রাউন্ড দরকার হয় এবং সেটার লিমিটেশন আছে। শুধু তাই নয় – সব সময়ে এখানে রিস্ক থাকে ফিজিক্যাল এবং ইডিওলজিক্যাল। অপর দিকে মিডিয়া কে যদি আমরা এরকম একটা ওয়ার মেশিন হিসেবে চিন্তা করি তাহলে মিডিয়ার নিজস্ব ওয়ার মেকানিজম আছে। একটি কমন মেকানিজম হচ্ছে প্রোপাগান্ডা বা সাইকোলোজিক্যাল ওয়ার। মজার ব্যাপার হচ্ছে – এটি এমন এক যুদ্ধ, যে যুদ্ধতে কোন যুদ্ধ না করেই জেতা যায়! এর জন্য কোন বিলিওন ডলার ইনভেস্টমেন্ট লাগেনা, লাগেনা হাজার হাজার ট্রুপ্স। শুধু তাই নয় এই যুদ্ধ সারা দুনিয়াব্যাপী এক সাথে চালানো যায়। দরকার শুধু এমন কিছু মানুষ যারা এই কাজে এক্সপার্ট। এবং হয়ত তুলনামুলক ভাবে খুবই কম ফাইন্যান্স। একই সাথে এই যুদ্ধে আপাত কোন রিস্ক ও নাই।
মডার্ন ওয়ারফেয়ারে মিডিয়া একটি আর্মড উইং। যদিও অন্যান্য আর্মড উইং এর মত এর কোন ফিজিক্যাল আর্সেনাল নাই, অন্তত যা চোখে দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এটিই মিডিয়ার অন্যতম আর্সেনাল যে সে আপনাকে এবং আমাকে সব সময়েই এই ধোঁকা দিতে পারে যে সে তো শুধুই মিডিয়া! আপনি বা আমি এফ১৬ থেকে বোম্ব আশা করি কিন্তু মিডিয়াও যে এফ১৬ এর চেয়ে কম ভয়ংকর কিছু না তা আমরা বুঝতেই পারিনা! আর এই লাইন গুলো বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে মিডিয়াও আঘাত করতে সক্ষম এবং তাও মারাত্মক ভাবে এটি পরিষ্কার করা।
এতকথা বলার উদ্দেশ্য ছিলো ওয়ার মেশিন হিসেবে মিডিয়ার সুপিরিওরিটি কতটুকু তার একটা হালকা আভাস তুলে ধরা।
মূল কথাঃ
এই মিডিয়া যুদ্ধের জন্য আমাদের প্রস্তুতি কি? অনেক ভাই আছেন জিহাদের জন্য উদগ্রীব আলহামদুলিল্লাহ। আমি আপনাদের বিনীত ভাবে বলব, আপনি জিহাদ করতে চান? মিডিয়াও জিহাদের অংশ, শুধু তাই নয় মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা এর ও বেশি। এটি আমার কথা নয়, এটি বড় বড় মুজাহিদিন কমান্ডারদের কথা যারা তাদের জিন্দেগী পার করেছেন জিহাদের ময়দানে! আপনি অবাক হবেন এমন নির্দেশনা পর্যন্ত আছে কোন ভাই যদি মিডিয়ার কাজে পারদর্শী হোন তবে তাকে ময়দানের এমন কাজে যেতে দেয়া যাবেনা যে কাজ অন্য যে কোন মুজাহদিন ভাই পারেন। আমি বার বার তাই বলছি - যা শায়েখরা বলেছেন - যিনি মিডিয়ার জন্য নিজেকে ব্যাস্ত রাখলেন আর যিনি রিবাতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেন এই দুইয়ের আমলের পুরস্কারে কোন তারতম্য হবেনা, এটি আমার কথা নয় বরং এটি মুজাহিদিন শায়েখদের মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত ফাতওয়া।
তারা "হাসিনা এ ডটার্স টেল" মুভি বানায়, বাংলালিঙ্ক নেক্সট টিউবারস আয়োজন করে তরুনদের মধ্য থেকে ঘৃণ্য জাতীয়তা বোধ কিংবা খুব সস্তা কোন দুনিয়াবি চেতনা নিয়ে ভিডিও বানানোর জন্য তরুনদের খুজে খুজে বের করে, কিন্তু হায় আফসোস আমার রাসুল সাঃ এর সিরাত নিয়ে কিংবা আল্লাহর দ্বীন কিংবা মিল্লাতে ইবরাহিমের চেতনা নিয়ে ভিডিও বানানোর জন্য আমরা কাউকে খুজে পাইনা! নোংরা অশ্লীল গানের প্রচার আর প্রসারে বাজার সয়লাব হয়ে যায় কিন্তু বিশুদ্ধ আকিদাহ আর মানহাজের কথা প্রচার করার জন্য কাউকে খুজে পাওয়া যায়না। সালমান মুক্তাদিরের মত বেজন্মারা যুবকদের রোল মডেল হয়ে যায় অথচ দ্বীনের ব্যাপারে কথা বলার জন্য এক জন মুসয়াব ইবনে উমাইর খুজে পাওয়া যায়না!
এমন কেউ নাই তা আমি বিশ্বাস করিনা! করা উচিত না। আমি বিশ্বাস করি তারা আছে - কিন্তু আমাদের দরকার তারা এই ময়দানের ফ্রন্ট লাইনে আসুক। সত্যিই কি এমন যুবক নাই যে রাসুল সাঃ সিরাহ নিয়ে কিংবা আল্লাহির দ্বীন কিংবা আকিদাহ মানহাজের প্রেজেন্টেশন নিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে পারে! আরে আপনি কি ভয় পাচ্ছেন? কাকে ভয় পাচ্ছেন? জানেন আল্লাহ কি বলেছেন? - আল্লাহ বলছেন - (ভাবার্থে) আমি এ কথা লিখে দিয়েছি আমি এবং আমার রাসুলগন ই (এবং তাদের অনুসারী মুমিন বান্দা গন) বিজয়ী হবে।
মিডিয়া জিহাদের জন্য আপনাকে খুব কঠিন কিছু করতে হবেনা। অনেক কিছু ব্যায় করতে হবেনা, আপনার জিন্দেগীর সমস্ত সময়ও এখানে দিতে হবেনা। বিশ্বাস করেন আপনি শুধু মাত্র আপনার অবসর বা হেলায় ফেলায় কাটিয়ে দেয়া সময় গুলো দিয়েই এই মিডিয়া জিহাদে শরিক হতে পারেন ইনশা আল্লাহ। শায়েখ তামিম কিংবা বাবরি মাসজিদের ডকুমেন্টারি কিংবা জিহাদি ময়দানের ভিডিও গুলো কি আপনাকে উৎসাহিত করে? কেমন হবে যদি এমন ভিডিও আপনি নিজে তৈরি করলেন আর আল্লাহর রহমতে হাজার হাজার আল্লাহর বান্দা এই ভিডিও থেকে উপকৃত হল! আপনার ভিডিও দেখে উৎসাহি হয়ে কেউ একজন হিজরত করে ফেললো, কেউ একজন ১ লাখ টাকা খরচ করে একটা হাই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ সাদাকাহ করলো, কেউ হয়ত গাফেল ছিলো দ্বীনের পথে ফিরে আসলো! কেমন হবে আপনার পুরষ্কার! দ্বীনের পথে ফিরে আসা সেই ব্যাক্তির সমস্ত আমল তো বতেই বরং আপনি তার বেচে থাকা প্রতিটি মুহূর্তের জন্য সাওয়াব পাবেন ইনশা আল্লাহ। কেন জানেন? কারন সে আগে ছিলো কুফরের উপরে, তার প্রতিটি নিঃশ্বাস ছিলো কুফরের ভিতরে, কিন্তু এখন তার বেচে থাকা এবং প্রতিটি নিঃশ্বাস ঈমানের সাথে! তার ঈমানের প্রতিটি মুহূর্ত আপনার জন্য সাদাকাহ! জি আর এটাও সম্ভব আপনার মিডিয়া কাজের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ দিতে পারেন এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ তো নাই ই, বরং আল্লাহ নিশ্চিত করেছেন, আল্লাহ দিবেন এবং আরো বেশি দিবেন। এখন দেখা দরকার আমি বা আপনি নিতে রাজি আছি কিনা।
কি এমন লাগে এই মিডিয়া জিহাদের জন্য?
১। একটা ল্যাপটপ বা পিসি কম বেশি সবার ই থাকে। না থাকলে কিনে নেয়া যায় যাদের সামর্থ্য আছে (খুব বেশি হলে ২৫ হাজার টাকা সেকেন্ড হ্যান্ড। অনেকে লাখ টাকা দিয়ে গেমিং ল্যাপটপ কিনে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিও গেম খেলার জন্য)
২। ডেইলি ২/৩ ঘন্টা সময়
৩। ইন্টারনেট (মাসে খুব বেশি হলে ১০০০ টাকা)
৪। কিছু দক্ষতা (না থাকলে শিখে নিবেন তাও ফ্রি ইউটিউব থেকে)
খুব বেশি কিছু কি? বসে বসে টিউটোরিয়াল দেখে কাজ শিখবেন এর জন্য আপনি জিহাদের কাজের পুরস্কার পাবেন, কারন যখন জিহাদ ফরজ তখন জিহাদের প্রস্তুতিও ফরজ! আপনি চিন্তা করে দেখেন সারা দুনিয়া ব্যাপী আপনার মুসলিম ভাই বোনেরা, আর তাদের সন্তান রা কি পরিমান জুলুমের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, আর আমি আপনি ঘরে বসে এই সামান্য কাজ টুকু আঞ্জাম দিতে পারবোনা! যদি না পারি তাহলে আসলে বলতে হয় আমাদের আর কিছু অবশিষ্ট নাই!
প্রিয় ভাই আমার - আপনি কি নিয়ে এত ব্যাস্ত? আপনার মোবাইলের দাম হয়ত ২৫ হাজার টাকা, আপনার বাইকের দাম ২ লাখ টাকা, আপনি আড্ডা, গুলতানি, খেলা দেখার পিছনে ব্যায় করেন ঘন্টার পর ঘন্টা কিন্তু যখন আমার মা বোনদের শেষ করে দেয়া হচ্ছে, তাদের নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে নির্বিচারে তখন কি আপনাকে উদাসীন করে রাখলো? আমি আপনাকেই বলছি? আপনি কি আল্লাহ আর তাঁর কিতাব বিশ্বাস করেন? যদি করেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানেন আল্লাহ কি বলেছেন? আল্লাহ বলেছেন - "তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে এবং অসহায় নারী পুরুষ আর শিশুদের রক্ষার জন্য লড়াই করবে না ... আয়াতের শেষ পর্যন্ত (নিসা ৭৫)
জি, ঠিক তাই। এটাই আল্লাহ বলেছেন। এর মাঝে আর অন্য কিছু নাই। যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই দেখতে পারেন এটা কুরআন - কোন মুফতি ফুলানের কথা নয় যে - সরকার বদলের সাথে সাথে ফুলানের ফাতওয়া ও বদল হয়ে যাবে।
তাহলে এবার বলেন - আসেন আমরা সিরিয়াস হই, নিজেকে প্রশ্ন করি আর কি আমাকে আটকে রেখেছে? আমরা আল্লাহর কাছে কি জবাব দিব ভাই? আমাদের ভাই বোনেরা আর্তনাদ করে বলে - ওহে মুসলিম উম্মাহ, তোমরা কি আমাদের ভুলে গেলে? আমাদের অন্তত ভুলে যেওনা, অন্তত তোমাদের কথার মাঝে আমাদের শরীক রাখো। আমাদের জবান তো অনেক দুরের কথা, আমাদের জিন্দেগীই তো আজ এখানে অবরুদ্ধ - তোমরা অন্তত আমাদের কে ভুলে যেওনা, আমাদের ব্যাপারে তোমরা কথা বল। সবাই কে জানিয়ে দাও আজ আমাদের সাথে কি হচ্ছে!
কি জবাব দিব ভাই সেদিন, যেদিন আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে! মুসলিম উম্মাহর রক্তের চেয়েও কি আমার ঐ দুই ঘন্টার বিনোদন বেশি মুল্যবান হয়ে গেল? আমার বোনের ইজ্জতের চেয়ে কি আমার বাইকের মুল্য বেশি হয়ে গেল?
আমরা ছিলাম এক উম্মাহ। আমরা এখনো এক উম্মাহ। এটাই আমাদের শক্তি। এক হোন। আপনি নিজে এবং আপনার মত যারা, তাদের নিয়ে এক হোন। আপনার সামর্থ্য আছে কিন্তু সময় নাই, আপনি যার সময় আছে তাকে সাহায্য করেন। আপনার গেমিং ল্যাপটপ আছে কিন্তু আপনি কাজ পারেন না আবার আরেকজন আছে কাজ পারে কন্তু ল্যাপটপ নাই। আপনার ল্যাপটপ আপনার ভাইকে দিয়ে দেন, আর বলেন ভাই তুমি ভিডিও বানাও -ভিডিও বানায়ে এই ল্যাপটপের মাদারবোর্ড গরম করে পুড়ায়ে ফেল আমি আরেক টা ল্যাপটপ কিনে দিবো।
প্রিয় ভাই, আপনি একা না। আপনি নিজেকে একা ভাবছেন কারন এটাই কাফের রা আপনাকে ভাবতে শিখিয়েছে তাই। আমি, আপনি ঐ বিশ্বাসের মানুষ না। আপনি পারছেন না ভালো কথা অন্য কে নিয়ে পারার চেষ্টা করেন। কেউ না কেউ পারবেই, পারতেই হবে। কারন এটাই এই উম্মাহর সফলতার অনেক বড় চাবি। এই উম্মাহ এক।
আজ, এখুনি নিয়াত করেন - শুরু করেন আল্লাহ রাস্তা করে দিবেন, ব্যাবস্থা করে দিবেন সহজ করে দিবেন। আপনাকে শুধু শুরু টা করতে হবে।
আপনারা একটা টার্গেট নেন আমি নেক্সট এক মাসের মধ্যে রাসুল সাঃ সিরাত নিয়ে একটা ১০ মিনিট এর ভিডিও ক্লিপ বানাবো ইনশাআল্লাহ, এটা হতে পারে আপনার শুরু। এর পরে সেই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দেন। সাথে অন্যকে আপনার উৎসাহী করার জন্য আপনার এই পথচলার কিছু সংক্ষিপ্ত বিবরন দিয়ে দেন, যেন অন্য কেউ ও আপনার মত উৎসাহী হতে পারে। এরপরে আপনি যখন সাহস পেয়ে গেলেন তখন আর কোন পিছনে ফিরে দেখা নাই ইনশাআল্লাহ।
* আপনার পরিচিত কাউকে লেখাটি পড়তে দেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন হয়ত তারা উৎসাহী হবেন ইনশাআল্লাহ
আমার সামর্থ্য তো শুধু এতটুকুই যে যা আমি জানি তা বলে যাওয়া। আশা রাখি আমার রব্ব আমাকে নিরাশ করবেন না।
প্রিয় ভাইয়েরা আমার, আপনারা জানেন যে আমরা একটা যুদ্ধের ময়দানে আছি। আপনি ঘরে থাকেন বা বাইরে থাকেন যেখানেই থাকেন না কেন আমি এবং আপনি আমরা সবাই যারা অন্তত ঈমানের শেষ আলো টুকু নিভিয়ে দেয়নি বা নিভে যেতে দেয়নি তারাই আল্লাহর দুশমনদের সাথে যুদ্ধে আছি।
আপনি বিশ্বাস করেন, আপনি নিরাপদ না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না আমি বা আপনি তাদের মত হয়ে যাবো। এটা আল্লাহর কথা, আল্লাহ বলেছেন, তারা চায় তোমরাও তাদের মত কাফের হয়ে যাও। এটাই বাস্তবতা। আপনাদের স্মরন আছে কিনা জানিনা অনেক দিন আগে একবার নিউজে এসেছিলো দেশের উঠতি বয়সী ছেলে মেয়ে রা জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। কিসের ভিত্তিতে তাদের এই কথা? তাদের ভিত্তি হচ্ছে, এখন ছেলে মেয়েদের কথায় আরবি শব্দ অর্থাৎ সালাম, আলহামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ, এগুলো বেড়ে গেছে। মেয়েরা এখন হিজাব, নিকাব করছে, ছেলেদের প্যান্ট গোড়ালির উপরে হয়ে গেছে - এবং এগুলোই হচ্ছে তাদের মতে উগ্রবাদের নিদর্শন। একই সাথে এই যুবক শ্রেণী মঙ্গল শোভা যাত্রা কিংবা পহেলা বৈশাখের মত শিরক, বিদয়াত কে প্রত্যাখ্যান করছে এটাও উগ্রবাদ! অর্থাৎ আপনাকে তাদের মত হতেই হবে - এর আগ পর্যন্ত কোন নিস্তার নাই।
আপনি জাতির পিতা হিসেবে ইবরাহিম আঃ মানেন কিংবা না মানেন কোন সমস্যা নাই, কিন্তু আপনি জাতির পিতা হিসেবে শেখ মুজিব মানেন না, এতে সমস্যা আছে। শুধু সমস্যা না অনেক বড় সমস্যা আছে!
আমি শুরুতে বলেছিলাম যে তারা আপনাকে, আমাকে, আমার ঈমান নিয়ে থাকতে দিবেনা, দিবেনা দিবেনা। এখানে আর কথা পেচায়ে কোন লাভ নাই, যত বড় মুফতি ফুলান কিংবা শায়েখ ব্র্যাডলি অন্য রকম বলুক না কেন। আসলে বাস্তবতা এত করুন যে এখন এই সব কথা বলাটাও এক রকম বিলাসিতা! সারা দুনিয়াতে যখন উম্মাতে মুহাম্মাদী সাঃ শুধু মাত্র তার নিজের ঈমানের জন্য রক্তাক্ত হচ্ছে তখন যদি এই কথাকে প্রমান করার চেষ্টা করতে হয় তাহলে তা বিলাসিতাই বটে।
আজ আপনাদের সাথে কথা বলার মাকসাদ ভিন্ন। আগেই বলেছি যে আমরা যুদ্ধের ময়দানেই আছি। এটা আমরা যত দ্রুত উপলব্ধি করতে পারবো ততই মঙ্গল।
আমরা বসে থাকি, কিন্তু আমাদের শত্রু রা বসে থাকেনা। তাদের কোন ক্লান্তি নাই। তাদের চোখের পাতা বন্ধ হয়না। ইউটিবের একটা বিখ্যাত দাওয়াহ চ্যানেল Merciful Servant - আপনারা অনেকেই নাম শুনেছেন, ভিডিও দেখেছেন। কিছু দিন আগে ইউটিউব কোন কারন ছাড়াই তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়, এমনকি পেপ্যাল তাদের সমস্ত লেনদেন আটকায়ে দেয়। এর কারন হিসেবে তারা একটি কথাই বলে - এটা উপরের নির্দেশ এর বেশি আর কিছু আমরা বলতে পারবোনা।
তো এই যে যুদ্ধের কথা বললাম - এই যুদ্ধের অনেক বড় একটা ময়দান হচ্ছে মিডিয়া। সত্য কথা হচ্ছে এটা বুঝানো প্রায় অসাধ্য যে এটা আসলে কত বড় ময়দান। জিহাদ, মিডিয়ার অর্ধেক কিংবা তারও বেশি। বর্তমানে মিডিয়া ব্যাতিত কোন যুদ্ধ সফল হতে পারবেনা, আপনি লিখে নিতে পারেন। যত সামরিক শক্তিই থাকুক না কেন মিডিয়া যদি পক্ষে না থাকে কোন শক্তির পক্ষে যুদ্ধে জেতা প্রায় অসম্ভব। ফিল্ডে যদি জিতেও যায় মোরালের দিক থেকে তারা পরাজিত হবেই, হতেই হবে। এই কথার জন্য অ্যামেরিকার চেয়ে বড় আর বাস্তব উদাহরন কে হতে পারে!
কথা হচ্ছিলো মিডিয়া নিয়ে। এই মিডিয়া এবং যুদ্ধের সাথে মিডিয়ার সম্পর্ক নিয়ে আমি সামান্য কথা বলব এর পরেই মূল কথায় চলে যাবো ইনশা আল্লাহ।
মিডিয়া এবং যুদ্ধ একটি আরেকটির সাথে মুদ্রার মত, অন্তত মডার্ন ওয়ারফেয়ারে। মিডিয়া যুদ্ধ ছাড়া টিকে থাকবে, তবে মিডিয়া ব্যাতিত যুদ্ধ টিকতে পারবেনা। যুদ্ধের অন্যান্য সব এলিমেন্টস এবং লজিস্টিকস এর মত মিডিয়াও এখন যুদ্ধের উপাদান। এবং কখনো তা ডিসাইসিভ এলিমেন্ট অফ দা ওয়ার।
মিডিয়া নিজে একটি স্বতন্ত্র ওয়ার মেশিন এবং কনভেনশনাল ওয়ার থেকে এই ওয়ার মেশিনের সুপিরিওরিটি অনেক দিক থেকে বেশি। আমাদের মিডিয়ার স্বরূপ খুব পরিষ্কার ভাবে জানা দরকার, কারন মিডিয়া এখন শুধু বিনোদনের জন্য নয়। একটা কনভেনশনাল ওয়ার এর জন্য দরকার বিলিওন বিলিওন ডলার, ম্যানপাওয়ার, মেশিনারিজ, হিউজ লাইন অফ কমিউনিকেশন্স, লজিসটিক্স, অনেক কিছু। শুধু তাই নয় একটি যুদ্ধ কে প্রস্তুত করার জন্য এর আগে পিছে অনেক স্টোরি তৈরি করতে হয়। কনভেনশনাল ওয়ারে – ফিজিক্যাল গ্রাউন্ড দরকার হয় এবং সেটার লিমিটেশন আছে। শুধু তাই নয় – সব সময়ে এখানে রিস্ক থাকে ফিজিক্যাল এবং ইডিওলজিক্যাল। অপর দিকে মিডিয়া কে যদি আমরা এরকম একটা ওয়ার মেশিন হিসেবে চিন্তা করি তাহলে মিডিয়ার নিজস্ব ওয়ার মেকানিজম আছে। একটি কমন মেকানিজম হচ্ছে প্রোপাগান্ডা বা সাইকোলোজিক্যাল ওয়ার। মজার ব্যাপার হচ্ছে – এটি এমন এক যুদ্ধ, যে যুদ্ধতে কোন যুদ্ধ না করেই জেতা যায়! এর জন্য কোন বিলিওন ডলার ইনভেস্টমেন্ট লাগেনা, লাগেনা হাজার হাজার ট্রুপ্স। শুধু তাই নয় এই যুদ্ধ সারা দুনিয়াব্যাপী এক সাথে চালানো যায়। দরকার শুধু এমন কিছু মানুষ যারা এই কাজে এক্সপার্ট। এবং হয়ত তুলনামুলক ভাবে খুবই কম ফাইন্যান্স। একই সাথে এই যুদ্ধে আপাত কোন রিস্ক ও নাই।
মডার্ন ওয়ারফেয়ারে মিডিয়া একটি আর্মড উইং। যদিও অন্যান্য আর্মড উইং এর মত এর কোন ফিজিক্যাল আর্সেনাল নাই, অন্তত যা চোখে দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এটিই মিডিয়ার অন্যতম আর্সেনাল যে সে আপনাকে এবং আমাকে সব সময়েই এই ধোঁকা দিতে পারে যে সে তো শুধুই মিডিয়া! আপনি বা আমি এফ১৬ থেকে বোম্ব আশা করি কিন্তু মিডিয়াও যে এফ১৬ এর চেয়ে কম ভয়ংকর কিছু না তা আমরা বুঝতেই পারিনা! আর এই লাইন গুলো বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে মিডিয়াও আঘাত করতে সক্ষম এবং তাও মারাত্মক ভাবে এটি পরিষ্কার করা।
এতকথা বলার উদ্দেশ্য ছিলো ওয়ার মেশিন হিসেবে মিডিয়ার সুপিরিওরিটি কতটুকু তার একটা হালকা আভাস তুলে ধরা।
মূল কথাঃ
এই মিডিয়া যুদ্ধের জন্য আমাদের প্রস্তুতি কি? অনেক ভাই আছেন জিহাদের জন্য উদগ্রীব আলহামদুলিল্লাহ। আমি আপনাদের বিনীত ভাবে বলব, আপনি জিহাদ করতে চান? মিডিয়াও জিহাদের অংশ, শুধু তাই নয় মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা এর ও বেশি। এটি আমার কথা নয়, এটি বড় বড় মুজাহিদিন কমান্ডারদের কথা যারা তাদের জিন্দেগী পার করেছেন জিহাদের ময়দানে! আপনি অবাক হবেন এমন নির্দেশনা পর্যন্ত আছে কোন ভাই যদি মিডিয়ার কাজে পারদর্শী হোন তবে তাকে ময়দানের এমন কাজে যেতে দেয়া যাবেনা যে কাজ অন্য যে কোন মুজাহদিন ভাই পারেন। আমি বার বার তাই বলছি - যা শায়েখরা বলেছেন - যিনি মিডিয়ার জন্য নিজেকে ব্যাস্ত রাখলেন আর যিনি রিবাতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেন এই দুইয়ের আমলের পুরস্কারে কোন তারতম্য হবেনা, এটি আমার কথা নয় বরং এটি মুজাহিদিন শায়েখদের মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত ফাতওয়া।
তারা "হাসিনা এ ডটার্স টেল" মুভি বানায়, বাংলালিঙ্ক নেক্সট টিউবারস আয়োজন করে তরুনদের মধ্য থেকে ঘৃণ্য জাতীয়তা বোধ কিংবা খুব সস্তা কোন দুনিয়াবি চেতনা নিয়ে ভিডিও বানানোর জন্য তরুনদের খুজে খুজে বের করে, কিন্তু হায় আফসোস আমার রাসুল সাঃ এর সিরাত নিয়ে কিংবা আল্লাহর দ্বীন কিংবা মিল্লাতে ইবরাহিমের চেতনা নিয়ে ভিডিও বানানোর জন্য আমরা কাউকে খুজে পাইনা! নোংরা অশ্লীল গানের প্রচার আর প্রসারে বাজার সয়লাব হয়ে যায় কিন্তু বিশুদ্ধ আকিদাহ আর মানহাজের কথা প্রচার করার জন্য কাউকে খুজে পাওয়া যায়না। সালমান মুক্তাদিরের মত বেজন্মারা যুবকদের রোল মডেল হয়ে যায় অথচ দ্বীনের ব্যাপারে কথা বলার জন্য এক জন মুসয়াব ইবনে উমাইর খুজে পাওয়া যায়না!
এমন কেউ নাই তা আমি বিশ্বাস করিনা! করা উচিত না। আমি বিশ্বাস করি তারা আছে - কিন্তু আমাদের দরকার তারা এই ময়দানের ফ্রন্ট লাইনে আসুক। সত্যিই কি এমন যুবক নাই যে রাসুল সাঃ সিরাহ নিয়ে কিংবা আল্লাহির দ্বীন কিংবা আকিদাহ মানহাজের প্রেজেন্টেশন নিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে পারে! আরে আপনি কি ভয় পাচ্ছেন? কাকে ভয় পাচ্ছেন? জানেন আল্লাহ কি বলেছেন? - আল্লাহ বলছেন - (ভাবার্থে) আমি এ কথা লিখে দিয়েছি আমি এবং আমার রাসুলগন ই (এবং তাদের অনুসারী মুমিন বান্দা গন) বিজয়ী হবে।
মিডিয়া জিহাদের জন্য আপনাকে খুব কঠিন কিছু করতে হবেনা। অনেক কিছু ব্যায় করতে হবেনা, আপনার জিন্দেগীর সমস্ত সময়ও এখানে দিতে হবেনা। বিশ্বাস করেন আপনি শুধু মাত্র আপনার অবসর বা হেলায় ফেলায় কাটিয়ে দেয়া সময় গুলো দিয়েই এই মিডিয়া জিহাদে শরিক হতে পারেন ইনশা আল্লাহ। শায়েখ তামিম কিংবা বাবরি মাসজিদের ডকুমেন্টারি কিংবা জিহাদি ময়দানের ভিডিও গুলো কি আপনাকে উৎসাহিত করে? কেমন হবে যদি এমন ভিডিও আপনি নিজে তৈরি করলেন আর আল্লাহর রহমতে হাজার হাজার আল্লাহর বান্দা এই ভিডিও থেকে উপকৃত হল! আপনার ভিডিও দেখে উৎসাহি হয়ে কেউ একজন হিজরত করে ফেললো, কেউ একজন ১ লাখ টাকা খরচ করে একটা হাই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ সাদাকাহ করলো, কেউ হয়ত গাফেল ছিলো দ্বীনের পথে ফিরে আসলো! কেমন হবে আপনার পুরষ্কার! দ্বীনের পথে ফিরে আসা সেই ব্যাক্তির সমস্ত আমল তো বতেই বরং আপনি তার বেচে থাকা প্রতিটি মুহূর্তের জন্য সাওয়াব পাবেন ইনশা আল্লাহ। কেন জানেন? কারন সে আগে ছিলো কুফরের উপরে, তার প্রতিটি নিঃশ্বাস ছিলো কুফরের ভিতরে, কিন্তু এখন তার বেচে থাকা এবং প্রতিটি নিঃশ্বাস ঈমানের সাথে! তার ঈমানের প্রতিটি মুহূর্ত আপনার জন্য সাদাকাহ! জি আর এটাও সম্ভব আপনার মিডিয়া কাজের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ দিতে পারেন এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ তো নাই ই, বরং আল্লাহ নিশ্চিত করেছেন, আল্লাহ দিবেন এবং আরো বেশি দিবেন। এখন দেখা দরকার আমি বা আপনি নিতে রাজি আছি কিনা।
কি এমন লাগে এই মিডিয়া জিহাদের জন্য?
১। একটা ল্যাপটপ বা পিসি কম বেশি সবার ই থাকে। না থাকলে কিনে নেয়া যায় যাদের সামর্থ্য আছে (খুব বেশি হলে ২৫ হাজার টাকা সেকেন্ড হ্যান্ড। অনেকে লাখ টাকা দিয়ে গেমিং ল্যাপটপ কিনে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিও গেম খেলার জন্য)
২। ডেইলি ২/৩ ঘন্টা সময়
৩। ইন্টারনেট (মাসে খুব বেশি হলে ১০০০ টাকা)
৪। কিছু দক্ষতা (না থাকলে শিখে নিবেন তাও ফ্রি ইউটিউব থেকে)
খুব বেশি কিছু কি? বসে বসে টিউটোরিয়াল দেখে কাজ শিখবেন এর জন্য আপনি জিহাদের কাজের পুরস্কার পাবেন, কারন যখন জিহাদ ফরজ তখন জিহাদের প্রস্তুতিও ফরজ! আপনি চিন্তা করে দেখেন সারা দুনিয়া ব্যাপী আপনার মুসলিম ভাই বোনেরা, আর তাদের সন্তান রা কি পরিমান জুলুমের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, আর আমি আপনি ঘরে বসে এই সামান্য কাজ টুকু আঞ্জাম দিতে পারবোনা! যদি না পারি তাহলে আসলে বলতে হয় আমাদের আর কিছু অবশিষ্ট নাই!
প্রিয় ভাই আমার - আপনি কি নিয়ে এত ব্যাস্ত? আপনার মোবাইলের দাম হয়ত ২৫ হাজার টাকা, আপনার বাইকের দাম ২ লাখ টাকা, আপনি আড্ডা, গুলতানি, খেলা দেখার পিছনে ব্যায় করেন ঘন্টার পর ঘন্টা কিন্তু যখন আমার মা বোনদের শেষ করে দেয়া হচ্ছে, তাদের নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে নির্বিচারে তখন কি আপনাকে উদাসীন করে রাখলো? আমি আপনাকেই বলছি? আপনি কি আল্লাহ আর তাঁর কিতাব বিশ্বাস করেন? যদি করেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানেন আল্লাহ কি বলেছেন? আল্লাহ বলেছেন - "তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে এবং অসহায় নারী পুরুষ আর শিশুদের রক্ষার জন্য লড়াই করবে না ... আয়াতের শেষ পর্যন্ত (নিসা ৭৫)
জি, ঠিক তাই। এটাই আল্লাহ বলেছেন। এর মাঝে আর অন্য কিছু নাই। যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই দেখতে পারেন এটা কুরআন - কোন মুফতি ফুলানের কথা নয় যে - সরকার বদলের সাথে সাথে ফুলানের ফাতওয়া ও বদল হয়ে যাবে।
তাহলে এবার বলেন - আসেন আমরা সিরিয়াস হই, নিজেকে প্রশ্ন করি আর কি আমাকে আটকে রেখেছে? আমরা আল্লাহর কাছে কি জবাব দিব ভাই? আমাদের ভাই বোনেরা আর্তনাদ করে বলে - ওহে মুসলিম উম্মাহ, তোমরা কি আমাদের ভুলে গেলে? আমাদের অন্তত ভুলে যেওনা, অন্তত তোমাদের কথার মাঝে আমাদের শরীক রাখো। আমাদের জবান তো অনেক দুরের কথা, আমাদের জিন্দেগীই তো আজ এখানে অবরুদ্ধ - তোমরা অন্তত আমাদের কে ভুলে যেওনা, আমাদের ব্যাপারে তোমরা কথা বল। সবাই কে জানিয়ে দাও আজ আমাদের সাথে কি হচ্ছে!
কি জবাব দিব ভাই সেদিন, যেদিন আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে! মুসলিম উম্মাহর রক্তের চেয়েও কি আমার ঐ দুই ঘন্টার বিনোদন বেশি মুল্যবান হয়ে গেল? আমার বোনের ইজ্জতের চেয়ে কি আমার বাইকের মুল্য বেশি হয়ে গেল?
আমরা ছিলাম এক উম্মাহ। আমরা এখনো এক উম্মাহ। এটাই আমাদের শক্তি। এক হোন। আপনি নিজে এবং আপনার মত যারা, তাদের নিয়ে এক হোন। আপনার সামর্থ্য আছে কিন্তু সময় নাই, আপনি যার সময় আছে তাকে সাহায্য করেন। আপনার গেমিং ল্যাপটপ আছে কিন্তু আপনি কাজ পারেন না আবার আরেকজন আছে কাজ পারে কন্তু ল্যাপটপ নাই। আপনার ল্যাপটপ আপনার ভাইকে দিয়ে দেন, আর বলেন ভাই তুমি ভিডিও বানাও -ভিডিও বানায়ে এই ল্যাপটপের মাদারবোর্ড গরম করে পুড়ায়ে ফেল আমি আরেক টা ল্যাপটপ কিনে দিবো।
প্রিয় ভাই, আপনি একা না। আপনি নিজেকে একা ভাবছেন কারন এটাই কাফের রা আপনাকে ভাবতে শিখিয়েছে তাই। আমি, আপনি ঐ বিশ্বাসের মানুষ না। আপনি পারছেন না ভালো কথা অন্য কে নিয়ে পারার চেষ্টা করেন। কেউ না কেউ পারবেই, পারতেই হবে। কারন এটাই এই উম্মাহর সফলতার অনেক বড় চাবি। এই উম্মাহ এক।
আজ, এখুনি নিয়াত করেন - শুরু করেন আল্লাহ রাস্তা করে দিবেন, ব্যাবস্থা করে দিবেন সহজ করে দিবেন। আপনাকে শুধু শুরু টা করতে হবে।
আপনারা একটা টার্গেট নেন আমি নেক্সট এক মাসের মধ্যে রাসুল সাঃ সিরাত নিয়ে একটা ১০ মিনিট এর ভিডিও ক্লিপ বানাবো ইনশাআল্লাহ, এটা হতে পারে আপনার শুরু। এর পরে সেই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দেন। সাথে অন্যকে আপনার উৎসাহী করার জন্য আপনার এই পথচলার কিছু সংক্ষিপ্ত বিবরন দিয়ে দেন, যেন অন্য কেউ ও আপনার মত উৎসাহী হতে পারে। এরপরে আপনি যখন সাহস পেয়ে গেলেন তখন আর কোন পিছনে ফিরে দেখা নাই ইনশাআল্লাহ।
* আপনার পরিচিত কাউকে লেখাটি পড়তে দেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন হয়ত তারা উৎসাহী হবেন ইনশাআল্লাহ
আমার সামর্থ্য তো শুধু এতটুকুই যে যা আমি জানি তা বলে যাওয়া। আশা রাখি আমার রব্ব আমাকে নিরাশ করবেন না।
Comment