Announcement

Collapse
No announcement yet.

আসুন শহিদদের কারামত পড়ে নিজেরাও শাহাদাতের পথে এগিয়ে চলি !!! পর্ব-৩

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আসুন শহিদদের কারামত পড়ে নিজেরাও শাহাদাতের পথে এগিয়ে চলি !!! পর্ব-৩

    অস্ত্র ভাণ্ডারের শেষ নেই
    একবার জালালুদ্দীন হক্কানি আমাকে বলেন, আমি একজন মুজাহিদকে সামান্য কিছু অস্ত্র দিলাম । সে এগুলো নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে গেল । যুদ্ধের ময়দানে সেই অস্ত্র দিয়ে প্রচুর পরিমাণ গোলা-বারুঁদ নিক্ষেপ করেছে; কিন্তু অস্ত্রের মধ্যে মজুদ গোলা-বারুদ কিছুই হ্রাস পায়নি । সে যেরূপ নিয়ে গিয়েছিল সেরূপই যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে ।
    শরীরের ওপর দিয়ে ট্যাংক অতিক্রম করার পরও জীবিত থাকা
    আবদুল জব্বর নিয়াজি আমাকে বলেন, একসময় আমি একজন মুজাহিদকে দেখলাম, যার শরীরের ওপর দিয়ে ট্যাংক অতিক্রম করেছে, অথচ সে জীবিত । সেই মুজাহিদের নাম ছিল গোলাম মহিউদ্দিন । আলহাজ মুহাম্মদ ইউসুফ (লোগার শহরের সহকারী আমির) আমাকে বর্ণনা করেন, একটি ট্যাংক মুজাহিদ মুজাহিদ বদর মুহাম্মদ জালের ওপর দিয়ে অতিবাহিত হয়, অথচ সে অক্ষত ছিল । আমরা ঠিক জানি না সে ট্যাংকের চাকার নিচে পিষ্ট হয়েছিল নাকি উভয় চাকার মধ্যস্থানে চাপা পড়েছিল ।

    কাঁকরা-বিছারা দ্বারা মুজহিদদের সুরক্ষা
    আল্লাহ তায়ালার বাণী
    তোমাদের পালনকর্তার বাহিনী সম্পরর্কে একমাত্র তিনিই জানেন । এটা তো মানুষের জন্য উপদেশ ছাড়া কিছু নয় । [সূরা মুদ্দাসসির ৭৪:৩১]

    আবদুস সামাদ ও মাহবুবুল্লাহ উভয় আমাকে বলেন, শত্রুবাহিনী কুন্দুজ শহরের মাঝামাঝি এক স্থানে তাঁবু স্থাপন করে । বিভিন্ন প্রজাতির কাঁকরা-বিচ্ছু তাদের আক্রমন করে এবং দংশন করে । ছয়জন স্ব-স্থানেই মারা যায়, আর অন্যরা পলায়ন করে ।

    একটি শিশু ও দিয়াশলাই
    আবদুল মান্নান আমাকে বলেন, মুজাহিদ আমির জান শহীদ হওয়ার কিছুদিন পর রাশিয়ান বাহিনী ট্যাংকের বহর নিয়ে তার এলাকায় প্রবেশ করে । এ সময় আমির জানের তিন বছরের শিশু সন্তান বাড়ি থেকে একটি ম্যাচ নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসে । রাশিয়ান সেনাপতি জিজ্ঞোস করল, বাচ্চাটি কী চায় ? তারা বলল, সে আপনাদের (শত্রুবাহিনীর) ট্যাংক ধ্বংস করতে চায় ।

    সাপ-বিচ্ছু মুজাহিদদের আক্রমণ করে না
    উমর হানিফ আমাকে বললেন,অনেক সাপ-বিচ্ছু মুজাহিদদের সঙ্গে রাত যাপন করেছেন। দীর্ঘ চার বছরের মধ্যেও কোনো মুজাহিদকে সাপ-বিচ্ছু দংশন করতে দেখিনি । আফগান পাহাড়ি অঞ্চলে অসংখ্য বিষধর সাপ থাকে, যেগুলো সোভিয়েত কমিউনিস্ট সৈন্যদের দংশন করলেও মুজাহিদদের কোনো ক্ষতি করে না; বরং পাহারা দেয় । এভাবেই দীর্ঘ প্রায় দশ বছর ধরে চলছে সাপ ও কমিউনিস্টদের লড়াই । বিষধর পাহাড়ি সাপগুলো যেন মুজাহিদদের কতই না আত্মীয়, পুরনো বন্ধু ।

    হাতের মেহেদি মোছার আগেই শহীদি নারী
    ওমর হানিফ আমকে বলেন, একদা শত্রুবাহিনীর ট্যাংক লরি একটি মসজিদে আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ঘিরে ফেলল, যেখানে মুজাহিদরা অবস্থান করছেলেন । একজন *যুবতী নারী, মাত্র দুই দিন আগে যার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে, বিনয়াবনত হয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করছেন-
    ‘হে আল্লাহ, যদি শত্রুরা মুজাহিদদের হত্যার জন্য ট্যাংকের সাহায্যে আক্রমণ করে তবে আমাকে তাদের জন্য প্রতিবন্ধক বানিয়ে দাও ।’
    এতে সেই যুবতী নারী শাহাদাতবরণ করল এবং মুজাহিদরা রক্ষা পেল । মুয়াজিন আমকে বলেছেন, যখন আনজির জাল শহীদ হন, তার মা হাস্যেজ্জ্বল মুখ নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসেন । শাহাদাতকে উদ্যাপনের জন্য মানুষ আকাশে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করছিল । দুর্বলচিত্তের ঈমানদার ব্যক্তিরা আমাদের উদ্দেশ্যে বলছিল, এই লোকগুলো পাগল হয়ে গেছে । বাস্তবিকপক্ষে দুনিয়ার প্রতি তীব্র ভালোবাসায় আমরা জড়িয়ে আছি বিধায় পরকালীন বিষয়াবলি বুঝে আসতে চায় না ।

    বোমা অবিস্ফোরিত রয়ে গেছে
    জালালুদ্দীন হক্কানি আমাকে বলেছেন, একবার আমরা ৩০ জন মুজাহিদ এক জায়গায় ছিলাম । হঠাৎ আমাদের উপর বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করা শুরু হয় । বোমাগুলো আমাদের চারদিকে তীব্র আওয়াজে বিস্ফোরিত হচ্ছিল । হঠাৎ একটি বোমা সজোরে আমাদের আঘাত করল; কিন্তু আল্লাহর রহমতে বোমাটি বিস্ফোরিত হলো না । বোমাটির ওজন প্রায় ৪৫ কেজি । এটি বিস্ফোরিত হলে সবাই শহীদ হয়ে যেতাম ।
    আব্দুল মান্নান আমকে বলেন, একটি স্থানে আমরা তিন হাজার মুজাহিদ ছিলাম । শত্রুবাহিনী আমাদের ওপর প্রায় ৩০০টি ভারী বোমাবরষন করে । কিন্তু আল্লাহর রহমতে একটি বোমাও বিস্ফোরিত হয়নি । বোমাগুলো কুড়িয়ে এনে অতিদ্রুত আমরা সেই স্থান ত্যাগ করি । পরবর্তিতে সেই ৩০০ বোমা পাকিস্তানের কোয়েটা শহরের মুজাহিদ সেন্টারে জমা দেই ।

    এক গর্বিত মায়ের শহীদি সন্তান
    ভাই মুয়াজ্জিন আমাকে বললেন, আমাদের এক সঙ্গী শাহাদাতবরণ করল । নাম তার আনজির গুল । খবর পেয়ে শহীদের মা সুন্দর কাপড়চোপড় পরে হাসিখুশি চলাফেরা করতে লাগলেন । আর পাড়ার অন্যান্য লোক তাদের পড়শীর শাহাদাতে বন্দকের ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ প্রকাশ করল । পুত্র শহীদ হলে আফগান মায়েরা খুশি হন । কারণ, এর চেয়ে বড় কোনো সম্মান তাঁদের দৃষ্টিতে নেই ।

    বুলেট তাদের শরীরকে ছিদ্র করেনি

    জালালুদ্দীন হক্কানি আমাকে বলেন, আমি অনেক মুজাহিদকে যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরে আসতে দেখেছি, যাদের জামাগুলো ছিল অসংখ্য গুলির ছিদ্রযুক্ত; কিন্তু তাদের শরীরে একটি গুলিও পবেশ করেনি । শায়েখ আহমাদ শরিফ আমাকে বলেন, আমার সন্তান যুদ্ধের ময়দান থেকে একসময় ফিরে আসে, যার কাপড়ে ছিল অসংখ্য ছিদ্র; কিন্তু শরীরে কোন ক্ষতচিন্হ নেই । শায়খ নাসরুল্লাহ মানসুর আমাকে বলেন, ১৯৮২ সালের ১ এপ্রিল আমি একজন মুজাহিদকে দেখলাম, যার মাথায় ১০ টি বুলেটের চিহ্ন আর কনুই থিকে হাতের তালু পর্যন্ত প্রায় ১৫ টি আঘাতের চিন্হ । অথচ সে সম্পূর্ণ সুস্থ ।
    মাওলান পীর মুহাম্মদ আমাকে বলেন, আমরা ১২ জন মুজাহিদ ‘বাকতিসা’ নামাক স্থানে পাহারা দিচ্ছিলাম । আমরা এমন একটি শত্রুবাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হলাম, যাদের ছিল প্রায় ১৮০টি যুদ্ধবিমান । একপর্যায়ে তারা আমাদের ঘিরে ফেলল এবং অনর্গল বোমা নিক্ষেপ করছিল । আমরা যুদ্ধের ময়দান থেকে যখন প্রত্যাবর্তন করি, তখন কাপড়গুলোতে ছিল অসংখ্য ছিদ্র, অথচ আমাদের কেউ হতাহত হয়নি । শত্রুবাহিনীর ১৬০ জন সদস্য মারা যায় ও তিনটি ট্যাংক ধ্বংস হয় । আমাদের মাত্র দুজন মুজাহিদ শহীদ হন ।
    আমি নিজের চোখে দেখেছি, জালালুদ্দীন হক্কানির বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, কিন্তু তাঁর বুকে কোনো আঘাতের চিন্হ নেই ।
    জাললুদ্দীন হক্কানি আমাকে বলেন, ভূমিতে লোকানো একটি মাইন আমার পায়ের নিচে বিস্ফোরিত হয়েছে, কিন্তু আমি কোনো আঘাত পাইনি ।

    শহীদের শরীর থেকে আলো বিচ্ছুরণ

    মুজাহিদ আবদুল মান্নান (পশ্চিম কেনদারের হেলমান প্রদেশের একজন নেতা ) আমাকে বলেন, একবার এক লড়াইয়ে আমরা ছিলাম সংখ্যায় ৬০০ জন, আর রাশিয়ান বাহিনীতে ছিল ৬০০০-এর অধিক । শত্রুবাহিনীর ছিল ৬০০ টি ট্যাংক ও ৪৫ টি বিমান বহর । তারা আমাদের তীব্রভাবে আক্রমন করে । প্রায় ১৮ দিন ধরে যুদ্ধ চলতে থাকে । এতে ৩৩ জন মুজাহিদ শহীদ হন । শত্রুবাহিনীর ৪৫০ জন সদস্য মারা যায়, আর ৩৬ জন বন্দি হয়, ৩০টি ট্যাংক ধ্বংস হয় এবং দুুটি বিমান ভূপতিত হয় । তখন ছিল গ্রীস্মকাল । ১৮ দিন ধরে চলমান এই যুদ্ধের মধ্যে কোনো শহীদের শরীর বিকৃতও হয়নি বা কোনোরূপ দুর্গন্ধযুক্ত হয়নি । এদের মধ্যে একজন শহীদ আবদুল গাফফার, যিনি দীন মুহাম্মদের সন্তান , প্রতিদিন রাতে তাঁর মৃত শরীর থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয়ে আকাশের দিকে উঠে যেত এবং এই আলোর আভা প্রায় ৩ মিনিট ধরে স্থায়ী থাকত । উপস্থিত সব মুজাহিদ এই অভূতপূর্ব দৃশ্য অবলোকন করেছে ।
    ওমর হানিফ আমাকে বলেন , ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস । এশার পর প্রতি রাতে আমাদের বাড়ির পাশে একজন মুজাহিদের বাড়ির আঙিনা থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয়ে আকাশে উঠে যেতে দেখা যায় । ওই আলোর আভা চারপাশকে আলোকিত করে দেয় । কিছুক্ষণ পর তাও অদৃশ্য হয়ে যায়।

    আগুন থেকে অস্ত্রগার নিরাপদ
    জালালুদ্দীন হক্কানি আমাকে বলেন, প্রায় চার বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে শত্রুবাহিনী আমাদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করে । এতে অনেক বাড়িঘর বা মুজাহিদের তাঁবু আগুনে জলে যায় ; কিন্তু যেখানে অস্ত্র সংরক্ষণ করা হতো, আগুন কখনো সেখানে স্পর্শ করেনি ।

    ছোট একটি দল বৃহৎ দলের ওপর জয়লাভ করা
    শায়েখ জালালুদ্দীন হক্কানি তার অনেক যুদ্ধের স্মৃতি থেকে দুটি বিশেষে ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন- প্রথমটি হলো ১৯৮৭ সালের ঘটনা । এমন এক কঠিন মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে সময় অতিবাহিত হচ্ছিল যে আমরা ট্যাংক ধ্বংসকারী পি-২ ও পি-৭ রকেট সংগ্রহ করতে পারছিলাম না । আমরা মুজাহিদরা মিলে কিছু অর্থ জমা করলাম । একদিন হঠাৎ শত্রুবাহিনীর একটি অগ্রবর্তী দল আমাদের আক্রমণ করল, যাদের ছিল কয়েক হাজার সৈন্য। দুই দিনের অধিক সময় ধরে তীব্র লড়াই চলল।
    একপর্যায়ে তারা পরাজিত হলো । আমরা ২৫ টি পি-২ ও পি-৭ রকেট, কিছু বন্দুক, মেশিনগান ও আটটি ট্যাংক আয়ত্ত করলাম । একটি একে-৪৭ সহ হাজারের অধিক সৈন্যকে আমরা বন্দি করলাম ।
    দ্বিতীয়টি হলো ১৯৮২ সালের ঘটনা । আমরা ছিলাম ৫৯ জন মুজাহিদ । শত্রুবাহিনীর ছিল ২২০টি ট্যাংক ও মালামালবাহী গাড়ি । সৈন্যসংখ্যাও ছিল হাজারের অধিক । আকাশের ওপর বিমানের সাহায্যে আমাদের ওপর অবিরাম বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছিল । এ যুদ্ধে শত্রুবাহিনীর প্রায় ৪৫টি ট্যাংক ও মালামাল সরবরাহকারী অনেক বাহন ধ্বংস হলো । ১৫০ জন সৈন্য নিহত হল এবং শতের অধিক আহত হলো । আমরা শত্রুবাহিনী থেকে বিমান ধ্বংসকারী মেশিন, সাতটি একে-৪৭, ৬৬টি বন্দুক, ২৮০টি বোমা এবং ৩৬ হাজার রাউন্ড গুলি জব্দ করেছিলাম ।
    আনসারকে ভালোবাসা ঈমানের অংশ।
    নিজে আনসার হব, অন্যকে আনসার বানানোর চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

  • #2
    আলহামদুলিল্লাহ,
    জিহাদের ময়দানে আল্লাহর নির্দেশন।

    Comment

    Working...
    X