এক ভাইয়ের চিঠি শেয়ার করা হল -
====
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু
দ্বীনের প্রিয় ভাইয়েরা আমার, আপনারা কেমন আছেন? আল্লাহ আমাকে এবং আপনাদের সবাইকে ঈমান এবং আমলের উত্তম হালতের উপরে অটল রাখুন এবং সফলতা দান করুন, এই দুনিয়া এবং পরের দুনিয়ায় - আমিন। আমার অনেক দিন থেকে মনে হচ্ছিলো ভাইদের সাথে যদি কথা বলতে পারতাম মন খুলে। কিন্তু তেমন সুযোগ আপাতত হয়ত নাই। কিন্তু আমি তো চিঠি লিখতে পারি ইনশাআল্লাহ। আমি আশা রাখি, আল্লাহ আমার এই চিঠিকে আপনাদের পর্যন্ত পৌঁছে দিবেন ইনশা আল্লাহ।
আজকের এই চিঠি সবার আগে আমার নিজের জন্য এবং এরপরে আমাদের জন্য কিছু নাসিহা; এই উদ্দেশ্যে লেখা। এই কাজের ব্যাপারে আমি আল্লাহর সাহায্য চাই। সমস্ত প্রশংসা শুধুই আল্লাহর।
১। জিহাদকে আকড়ে ধরেনঃ ভাই আমি আপনাদের বলে বুঝাতে পারবোনা এই জিহাদের মাধ্যেমে আল্লাহ আমাকে কত নিয়ামত দান করেছেন! জিহাদ এক অমুল্য রত্ন! একে আঁকড়ে ধরেন প্রিয় ভাই আমার। হাল যাই হোক, জিহাদ যেন আমার থেকে ছুটে না যায়। আল্লাহ যখন থেকে আমাকে এই জিহাদের সাথে থাকার অনুমতি এবং তাউফিক দিয়েছেন তখন থেকে আমার জীবনের নিয়ামত গুলো আমি বলে শেষ করতে পারবোনা, এবং আমি শুধু দুনিয়াবি নিয়ামতের কথা বলছি, কারণ আমি আশা করি আল্লাহ আখিরাতে এই নগন্যকে আরো অনেক দিবেন। জিহাদ আমাকে এমন কিছু শিখিয়েছে যা আগে আমাকে কেউ শেখাতে পারেনি। এই জিহাদ আমাকে সম্মানিত করেছে। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আমি ভালোবাসতে শিখেছি, আর আরো অনেক বেশি ভালোবাসা পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আমি সম্মান করতে শিখেছি এবং আরো অনেক বেশি সম্মান পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আমার রিজিককে আল্লাহ পরিপূর্নতার উপরে পরিপূর্নতা দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ! এই জিহাদী জীবনের সময়কালে খাবারের অভাবে আমাকে একটা বেলা, মাত্র একটা বেলা না খেয়ে থাকতে হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আল্লাহ আমাকে রিজিকের চিন্তা এবং পেরেশানী থেকে মুক্তি দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত অনিরাপত্তার মধ্যে আল্লাহ আমাকে নিরাপত্তা দিয়েছেন, আর সমস্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে আল্লাহ আমার জন্য নিশ্চয়তার ফায়সালা করেদ দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি কেন এগুলোই উল্লেখ করলাম? কারণ - এগুলোই আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি পেরেশান করে তুলে জিহাদের ব্যাপারে। আর আমি যদি মিথ্যা বলি তাহলে আমি তো আল্লাহর সামনে মিথ্যাবাদীই হয়ে যাবো! কিছু মাত্র বাড়িয়ে বলিনি ভাই আমার বরং নিশ্চিত ভাবেই আমি আল্লাহর নিয়ামতকে প্রকাশ করতে সক্ষম নই! তাই - ভাই আমার, জিহাদকে আঁকড়ে ধরেন, পেরেশানীর নাম যাই হোক, সেই নামের ওয়াসিলায় জিহাদ যেন ছুটে না যায়!
২। নিজেকে সমর্পণ করে দেনঃ আল্লাহ বলছেন, "বল তবে কি তোমরা সমর্পনকারী হবে?" দ্বীনের নামই ইসলাম, পরিপূর্ণ সমর্পণ। এই দ্বীনের চলার পথে, কাজের ক্ষেত্রে আপনার সামনে এমন পরিস্থিতি আসবে যা হয়ত কঠিন। এমন হতে পারে যা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে, এমন হতে পারে যে, কেউ আপনাকে বুঝতে চাইছেনা, আপনি বুঝানোর চেস্টা করছেন, তারপরেও হয়ত ফায়সালা গুলো আপনার জন্য কস্টকর কিংবা কঠিন মনে হচ্ছে। এমন সময়ে কি করবেন? নিজেকে সমর্পণ করে দেন। আপনার উপরে যা আসবে তা আল্লাহর হুকুম ব্যাতিত আসা সম্ভব না। তাই আপনি বিদ্রোহী না হয়ে নিজেকে সেই হুকুমের সামনে সমর্পণ করে দেন। শয়তান আমাকে আপনাকে বলবে, এটা মানার দরকার নাই। আপনি তা করেন না, শয়তানের কথা শুনেন না, বরং আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রাখেন এবং ফায়সালার সামনে নিজেকে দাখিল করে দেন। আপনি বঞ্চিত হবেন না, আপনার ক্ষতি হবেনা, আপনার তাকলিফ হবেনা ইনশাআল্লাহ। বিশ্বাস করেন, হতে পারে - আল্লাহ শুধু এটুকুই দেখে নিতে চান আমি এবং আপনি আল্লাহর হুকুমের সামনে কেমন আচরণ করি! হতে পারে, তাতে নিজের স্বার্থ কিছু নষ্ট হয়। বিশ্বাস করেন, আপনি যখন সমর্পণ করে দিবেন, উক্ত ফায়সালা যদি আপনার জন্য আল্লাহর হুকুম না হয়ে থাকে এই ফায়সালা ঘুরে যাবে, আল্লাহই ঘুরিয়ে দিবেন। তাই নিজেকে সমর্পণ করে দেন এবং আল্লাহর উপরে পূর্ন ভরসা রাখেন। বিদ্রোহী হয়েন না কিংবা জিদের বশে নিজেকে বিদ্রোহী করে তুলেন না! আমার এবং আপনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আমি যতবার আল্লাহর অনুমতি এবং তাউফিকে নিজেকে সমর্পণ করেছি আমার উপরে কোন জুলুম হয়নি, কোন ক্ষতি হয়নি বরং আল্লাহর কসম আমি আরো অনেক অনেক নিয়ামত নিয়ে ফিরে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। কোন কাজের কি উদ্দেশ্য তা আপনি আমি জানিনা, হতে পারে আমি এবং আপনি সেখানে ক্ষতি দেখছি কিন্তু আল্লাহ সেখানেই কল্যান রেখেছেন যা আমার জ্ঞানের বাইরে। তাই যখন প্রশ্ন আসে সমর্পণ করার তখন সমর্পণ করেন, মেনে নিতে কষ্ট হলেও। অতি শীঘ্রই আল্লাহ আপনার এই কষ্ট দূর করে দিবেন কিংবা এই ফায়সালাকে পরিবর্তন করে দিবেন। আমি এক ভাইয়ের ব্যাপারে জানি, উনার একটা ল্যাপটপ খুব দরকার ছিলো। কয়েকবার বলার পরেও ল্যাপটপের অনুমতি আসছিলোনা। উনার জিম্মাদার ভাই, উনাকে বললেন - ভাই আমিও স্বীকার করি, আপনার একটা ল্য্যাপটপ দরকার। আপনি আল্লাহর কাছে দুয়া করেন, আল্লাহ আপনার জন্য ভালো কিছুর ফায়সালা করে দিবেন ইনশা আল্লাহ। এর কয়েকদিন পরে সেই ভাই খবর দিলেন উনার জিম্মাদার ভাইকে - যে, উনার জন্য একটা পিসি জোগাড় হয়ে গেছে এবং সেই পিসির টাকাও এক ভাই সাদাকাহ করেছেন।
৩। নিজেকে ছোট রাখেনঃ আপনি যেই হোন না কেন, নিজেকে ছোট রাখেন। যতটা সম্ভব। আল্লাহর রাসুল সাঃ যখন মক্কা বিজয়ের সময়কালে মক্কায় প্রবেশ করছিলেন তখন তাঁর পবিত্র মস্তক অবনত ছিলো! আমি দেখেছি আল্লাহর যে বান্দা নিজেকে যত ছোট রাখেন আল্লাহ সেই বান্দাকে তত সম্মানিত করে দেন। মূলত সম্মানিত হবার জন্য ছোট রাখবেন বিষয়টা এমন না। নিজেকে নামিয়ে রাখা দরকার কিছু বড় গুনাহ থেকে হেফাযত থাকার জন্য। যেমন, নিজের ব্যাপারে উচ্চ ধারণা, জবানের সীমলঙ্ঘন, অন্য ভাইকে হেয় করা, নিজের ব্যাপারে সন্তুষ্টি, রাগ ইত্যাদি। আপনি হয়ত জানেন না, আপনার সামান্য একটু উঁচু গলা কিংবা কোন ভাইয়ের সাথে একটা কঠিন শব্দের ব্যাবহার, তা আল্লাহ পছন্দ করেন নি! কেউ আপনার কথা শুনলোনা, ব্যাস চিন্তা কিসের? আল্লাহ শুনেছেন। আপনার মাশোয়ারা গ্রহন হলোনা, কি দরকার? তা লেখা হয়ে গেছে। আপনি নিজের ব্যাপারে ছোট আশা রাখেন, তাহলে শয়তান আপনাকে নিয়ে খেলার সুযোগ কম পাবে ইনশাআল্লাহ। আপনি মনে করেন আপনি সবার চেয়ে অযোগ্য বরং অন্য সবাই আপনার চেয়ে অনেক যোগ্য। হতে পারে এমন কোন বিষয়ে যা আপনি জানেন না। হতে পারে তারা প্রত্যেকে আমার কিংবা আপনার চেয়ে অনেক বেশি ইস্তেগফার করেছেন। আল্লাহ এমন বান্দাদের পছন্দ করেন যারা আল্লাহকে ভয় করে নিজেদেরকে ছোট রাখে। তবে নিজেকে ছোট রাখার মানে এই নয় যে, আপনার যা জিম্মাদারি তাকেও ছোট করে ফেলবেন। নিজেকে ছোট রাখার আরেকটি সুবিধা - অন্তর আল্লাহকে বেশি বেশি চাওয়ার সুযোগ পায়। আপনাকে নিয়ে যদি অন্য অনেকে ব্যাস্ত না হয় তখন আপনার অন্তর সুযোগ পায় আল্লাহর দিকে তাকানোর। তাই আপনি যদি ছোট থাকতে পারেন তবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন।
৪। দুয়াকে পাথেয় করে নেনঃ দুয়ার কথা বলে শেষ করা সম্ভব না প্রিয় ভাই! উস্তাদ আহমেদ ফারুক রহঃ একবার বলছিলেন, খুব সম্ভব এরকম কিছু যে, "আমার কাছে ভাইরা মুজাহিদদের কারামত এর কথা জানতে চায়, আমি তো দুয়া আর ইস্তেখারারর মত উমুমি কারামত আর দেখিনা" দুয়াই আমাদের প্রথম এবং শেষ সম্বল। যে সুরা ফাতিহা ছাড়া নামাজ হয়না তা দুয়াই! আল্লাহই শিখিয়ে দিয়েছেন। খুব সম্ভব উমার রাঃ বলেছিলেন, আমি এই ভয় করিনা যে আমার দুয়া কবুল হবে কি, হবেনা, বরং আমি এই চিন্তা করি যে আমি দুয়া করার তাউফিক পাবো কিনা! দুয়া ছাড়া বাস্তবিক ভাবেই আমাদের আর কিছু নাই। এই দুনিয়াতেও এবং আখিরাতেও। আমাকে একজন নাসিহা দিয়েছিলেন, "আপনি যদি আল্লাহর কাছে চাইতে লজ্জা পান কিংবা অলসতা করেন তাহলে আর কার কাছে চাইবেন? এবং আর কে আপনাকে তা দিতে পারে? যদি কোন কিছু আপনার দরকার হয় তবে তা আপনাকে আল্লাহর থেকেই নিতে হবে"। এক ভাইয়ের একটা ঘটনা আমি জানি, - উনার বাসার বাথরুমের পাইপে সমস্যা হল। এমন যে, বাথরুম ব্যাবহার করা জটিল হয়ে গেলো। এমন হালাতে উনি সফরে গেলেন। সফর থেকে ফেরার পথে উনার মনে পড়লো বাসার এই সমস্যার কথা। উনি ভাবলেন, আচ্ছা সফরে তো দুয়া কবুল হয়, আমি এই ব্যাপারে দুয়া করি না কেন! আবার ভাবলেন বাথরুমের সমস্যা নিয়ে আল্লাহর কাছে বলবো! পরক্ষনেই আবার ভাবলেন, প্রথম কথা এটা আমার জন্য সমস্যা এবং এটার সমধান হওয়া জরুরী। আর আল্লাহ ব্যাতিত এই সমস্যার সমাধান কেউ দিতে পারেনা। আল্লাহর হুকুম না হলে এই সমস্যা সমাধান হবেনা। বলে রাখা ভালো সেই ভাইয়ের বাড়িওয়ালা অত্যন্ত কৃপণ এবং ভাইয়ের অন্যতম দুশ্চিন্তা ছিলো যে এই কথা জানার সাথে সাথে বাড়িওয়ালা এই খরচ ভাইয়ের উপরে চাপিয়ে দিবেন। যাই হোক, ভাই দুয়া করলেন - "আল্লাহ আপনি আমার বাথরুমের এই সমস্যার ব্যাপারে একটা সমাধান করে দেন" ভাই বাসায় আসার ২/৩ দিন পরে বাড়িওয়ালা নিজের খরচে সমাধান করে দিলেন, এবং শেষে ভাইকে এটাও জিজ্ঞেস করেছিলো - আপনার বাথরুম এখন ঠিক আছে তো?
আমি আরেক ভাই এর ব্যাপারে জানি - উনি একবার একটা ভিডিও দেখছিলেন। যেটার মধ্যে ফিদায়ী হামলা চালাবেন এমন কিছু ভাই, আসমানে আল্লাহু লেখা নিশান দেখেছিলেন। এটা দেখার সময় ঐ ভাই ভাবছিলেন, ইশ আমিও যদি এমন দেখতে পেতাম। এরপরে আবার ভাবলেন - আরে কোথায় উনাদের মত ফিদায়ী মুজাহিদ আর কোথায় আমি! যাই হোক ভাই বিষয় টা ভুলে গেলেন। এরও অনেক অনেক দিন পরে ভাই একদিন আসমানের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। হঠাত দেখলেন আল্লাহু লেখা একটুকরা মেঘের নিশান! ভাই ভাবলেন আরে এটা আমার মনের ভুল। এমন ভাবতেই ভাই দেখলেন আল্লাহু লেখা "হা" এর মধ্যের কিছু মেঘ সরে গিয়ে "হা" টা সম্পূর্ণ গোল হয়ে গেলো এবং ডান দিক থেকে আলিফের মত এক টুকরা মেঘ লামলাম একদম পাশে চলে আসলো। ভাই এর ভাষ্যমতে, "ভাই এটা দেখার ঠিক পরেই আমার দিলে এই কথাটা আসলো, "তুমি নিশান দেখতে চেয়েছিলে, আজ আল্লাহ দেখিয়ে দিলেন"।
আমি দুইটা উদাহরন দিলাম সম্পূর্ণ দুই ধরনের, একটা খুব তুচ্ছ, আরেকটা আল্লাহর কুদরত বা নিশান দেখার মত!
যা বলতে চাচ্ছি - প্রিয় ভাই আমার, আমি দেখেছি আল্লাহ বান্দার দুয়া কবুল করেন। তবে আল্লাহ গাফেল অন্তরের দুয়া কবুল করেন না। আপনি যা চান তা আল্লাহর থেকেই নিতে হবে আর তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে আল্লাহ দিতেই ভালোবাসেন। তাই বেশি বেশি দুয়া করেন, যখনই সম্ভব।
৫। তাহাজ্জুদ এবং কুরআনঃ একজন মুজাহিদের জন্য তাহাজ্জুদ এবং কুরআন হচ্ছে অন্তরের সাকিনা! আল্লাহ আমাকে মাফ করুন এই কথা বলার জন্য কারণ আমার নিজের হাল অনেক করুণ! আমি আশা রাখি আল্লাহ আমার জন্য সহজ করে দিবেন। শাইখ আহমেদ মুসা জিব্রিল বলছিলেন, "তাহাজ্জুদ সবাই পড়তে পারেনা, সবার তাউফিক্ক হয়না, এটা শুধু মাত্র তাদেরই নসিব হয় আল্লাহর ভালোবাসা যাদের নসিব হয়" তাহাজ্জুদ এবং কুরআন হচ্ছে আল্লাহর সাথে সম্পর্কের রাস্তা। এক ভাই বলতেন - ভাই আমি যখন কুরআন পড়ি তখন আমার সমস্ত কষ্ট দূর হয়ে যায়! আমি আরেক ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভাই কি করলে আপনি অন্তরে শান্তি পান? উনি বলেছিলেন - "কুরআন তিলাওয়াত করলে"
৬। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাঃ আমি শায়েখদের যত নাসিহা দেখেছি, একটি বিষয় সবচেয়ে বেশি উল্লেখ থাকে, তা হচ্ছে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। এক ভাই বলতেন - গুনাহ এর কারণে আমাদেরে উপরে মুসিবত নেমে আসে। গুনাহ নিয়ে আলাদা করে তো কিছু বলার নাই, তবুও আমাদের জন্য খাস ভাবে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা অনেক জরুরী। কারণ গুনাহ আমাদের নিরাপত্তা বর্ম কে নষ্ট করে দেয়। গুনাহ এর মাধ্যমে ঈমান দুর্বল হতে থাকে এবং ইবাদতের শান্তি নষ্ট হয়ে যায়। গুনাহ এর সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে এক গুনাহ আরেক গুনাহ এর রাস্তা খুলে দেয়। আমি এক ভাইয়ের ব্যাপারে জানি, উনি বলতেন, "ভাই যতবার আমার চোখ কোন বেগানা বেপর্দা নারীর দিকে পড়ে ততবার আমার মনে হয়, আমার ঈমান আগের চেয়ে একটু কমে গেলো, আমার মনে হয় এই নারী আমার ঈমানকে জোরে একটা ঘুষি মেরেছে!"
প্রিয় ভাই, আমার এই কথা গুলো বলার একটা উদ্দেশ্য এই যে, আল্লাহ যেন এর থেকে সবার আগে আমার জন্য কল্যান নসিব করেন এবং আমাদের সবাইকে কল্যান নসিব করেন। আল্লাহ যেন সবার আগে আমাকে এই আমলগুলো করার তাউফিক দান করেন এবং আমাদের সবাইকে। এই কথা গুলো বলার আরেকটি কারণ, আমি আপনাদের নিকট দুয়ার দরখাস্ত করছি, খাস ভাবে এই অধম ভাইয়ের জন্য দুয়া করবেন। এই কথা গুলো বলার আরেকটি কারণ "আদ দ্বীনু নাসিহাহ"
আল্লাহ আপনি আমার কথার ভুল গুলো মাফ করে দেন এবং ভালো যা কিছু তার জন্য শুধু মাত্র আপনারই প্রশংসা,আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। আল্লাহূম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লাম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।
আজ এখানেই শেষ করছি,
আপনাদের ভাই -
ওয়াস সালাম
=====
আমিন
====
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু
দ্বীনের প্রিয় ভাইয়েরা আমার, আপনারা কেমন আছেন? আল্লাহ আমাকে এবং আপনাদের সবাইকে ঈমান এবং আমলের উত্তম হালতের উপরে অটল রাখুন এবং সফলতা দান করুন, এই দুনিয়া এবং পরের দুনিয়ায় - আমিন। আমার অনেক দিন থেকে মনে হচ্ছিলো ভাইদের সাথে যদি কথা বলতে পারতাম মন খুলে। কিন্তু তেমন সুযোগ আপাতত হয়ত নাই। কিন্তু আমি তো চিঠি লিখতে পারি ইনশাআল্লাহ। আমি আশা রাখি, আল্লাহ আমার এই চিঠিকে আপনাদের পর্যন্ত পৌঁছে দিবেন ইনশা আল্লাহ।
আজকের এই চিঠি সবার আগে আমার নিজের জন্য এবং এরপরে আমাদের জন্য কিছু নাসিহা; এই উদ্দেশ্যে লেখা। এই কাজের ব্যাপারে আমি আল্লাহর সাহায্য চাই। সমস্ত প্রশংসা শুধুই আল্লাহর।
১। জিহাদকে আকড়ে ধরেনঃ ভাই আমি আপনাদের বলে বুঝাতে পারবোনা এই জিহাদের মাধ্যেমে আল্লাহ আমাকে কত নিয়ামত দান করেছেন! জিহাদ এক অমুল্য রত্ন! একে আঁকড়ে ধরেন প্রিয় ভাই আমার। হাল যাই হোক, জিহাদ যেন আমার থেকে ছুটে না যায়। আল্লাহ যখন থেকে আমাকে এই জিহাদের সাথে থাকার অনুমতি এবং তাউফিক দিয়েছেন তখন থেকে আমার জীবনের নিয়ামত গুলো আমি বলে শেষ করতে পারবোনা, এবং আমি শুধু দুনিয়াবি নিয়ামতের কথা বলছি, কারণ আমি আশা করি আল্লাহ আখিরাতে এই নগন্যকে আরো অনেক দিবেন। জিহাদ আমাকে এমন কিছু শিখিয়েছে যা আগে আমাকে কেউ শেখাতে পারেনি। এই জিহাদ আমাকে সম্মানিত করেছে। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আমি ভালোবাসতে শিখেছি, আর আরো অনেক বেশি ভালোবাসা পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আমি সম্মান করতে শিখেছি এবং আরো অনেক বেশি সম্মান পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আমার রিজিককে আল্লাহ পরিপূর্নতার উপরে পরিপূর্নতা দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ! এই জিহাদী জীবনের সময়কালে খাবারের অভাবে আমাকে একটা বেলা, মাত্র একটা বেলা না খেয়ে থাকতে হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। এই জিহাদী জীবনের সময়কালে আল্লাহ আমাকে রিজিকের চিন্তা এবং পেরেশানী থেকে মুক্তি দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত অনিরাপত্তার মধ্যে আল্লাহ আমাকে নিরাপত্তা দিয়েছেন, আর সমস্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে আল্লাহ আমার জন্য নিশ্চয়তার ফায়সালা করেদ দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি কেন এগুলোই উল্লেখ করলাম? কারণ - এগুলোই আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি পেরেশান করে তুলে জিহাদের ব্যাপারে। আর আমি যদি মিথ্যা বলি তাহলে আমি তো আল্লাহর সামনে মিথ্যাবাদীই হয়ে যাবো! কিছু মাত্র বাড়িয়ে বলিনি ভাই আমার বরং নিশ্চিত ভাবেই আমি আল্লাহর নিয়ামতকে প্রকাশ করতে সক্ষম নই! তাই - ভাই আমার, জিহাদকে আঁকড়ে ধরেন, পেরেশানীর নাম যাই হোক, সেই নামের ওয়াসিলায় জিহাদ যেন ছুটে না যায়!
২। নিজেকে সমর্পণ করে দেনঃ আল্লাহ বলছেন, "বল তবে কি তোমরা সমর্পনকারী হবে?" দ্বীনের নামই ইসলাম, পরিপূর্ণ সমর্পণ। এই দ্বীনের চলার পথে, কাজের ক্ষেত্রে আপনার সামনে এমন পরিস্থিতি আসবে যা হয়ত কঠিন। এমন হতে পারে যা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে, এমন হতে পারে যে, কেউ আপনাকে বুঝতে চাইছেনা, আপনি বুঝানোর চেস্টা করছেন, তারপরেও হয়ত ফায়সালা গুলো আপনার জন্য কস্টকর কিংবা কঠিন মনে হচ্ছে। এমন সময়ে কি করবেন? নিজেকে সমর্পণ করে দেন। আপনার উপরে যা আসবে তা আল্লাহর হুকুম ব্যাতিত আসা সম্ভব না। তাই আপনি বিদ্রোহী না হয়ে নিজেকে সেই হুকুমের সামনে সমর্পণ করে দেন। শয়তান আমাকে আপনাকে বলবে, এটা মানার দরকার নাই। আপনি তা করেন না, শয়তানের কথা শুনেন না, বরং আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রাখেন এবং ফায়সালার সামনে নিজেকে দাখিল করে দেন। আপনি বঞ্চিত হবেন না, আপনার ক্ষতি হবেনা, আপনার তাকলিফ হবেনা ইনশাআল্লাহ। বিশ্বাস করেন, হতে পারে - আল্লাহ শুধু এটুকুই দেখে নিতে চান আমি এবং আপনি আল্লাহর হুকুমের সামনে কেমন আচরণ করি! হতে পারে, তাতে নিজের স্বার্থ কিছু নষ্ট হয়। বিশ্বাস করেন, আপনি যখন সমর্পণ করে দিবেন, উক্ত ফায়সালা যদি আপনার জন্য আল্লাহর হুকুম না হয়ে থাকে এই ফায়সালা ঘুরে যাবে, আল্লাহই ঘুরিয়ে দিবেন। তাই নিজেকে সমর্পণ করে দেন এবং আল্লাহর উপরে পূর্ন ভরসা রাখেন। বিদ্রোহী হয়েন না কিংবা জিদের বশে নিজেকে বিদ্রোহী করে তুলেন না! আমার এবং আপনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আমি যতবার আল্লাহর অনুমতি এবং তাউফিকে নিজেকে সমর্পণ করেছি আমার উপরে কোন জুলুম হয়নি, কোন ক্ষতি হয়নি বরং আল্লাহর কসম আমি আরো অনেক অনেক নিয়ামত নিয়ে ফিরে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। কোন কাজের কি উদ্দেশ্য তা আপনি আমি জানিনা, হতে পারে আমি এবং আপনি সেখানে ক্ষতি দেখছি কিন্তু আল্লাহ সেখানেই কল্যান রেখেছেন যা আমার জ্ঞানের বাইরে। তাই যখন প্রশ্ন আসে সমর্পণ করার তখন সমর্পণ করেন, মেনে নিতে কষ্ট হলেও। অতি শীঘ্রই আল্লাহ আপনার এই কষ্ট দূর করে দিবেন কিংবা এই ফায়সালাকে পরিবর্তন করে দিবেন। আমি এক ভাইয়ের ব্যাপারে জানি, উনার একটা ল্যাপটপ খুব দরকার ছিলো। কয়েকবার বলার পরেও ল্যাপটপের অনুমতি আসছিলোনা। উনার জিম্মাদার ভাই, উনাকে বললেন - ভাই আমিও স্বীকার করি, আপনার একটা ল্য্যাপটপ দরকার। আপনি আল্লাহর কাছে দুয়া করেন, আল্লাহ আপনার জন্য ভালো কিছুর ফায়সালা করে দিবেন ইনশা আল্লাহ। এর কয়েকদিন পরে সেই ভাই খবর দিলেন উনার জিম্মাদার ভাইকে - যে, উনার জন্য একটা পিসি জোগাড় হয়ে গেছে এবং সেই পিসির টাকাও এক ভাই সাদাকাহ করেছেন।
৩। নিজেকে ছোট রাখেনঃ আপনি যেই হোন না কেন, নিজেকে ছোট রাখেন। যতটা সম্ভব। আল্লাহর রাসুল সাঃ যখন মক্কা বিজয়ের সময়কালে মক্কায় প্রবেশ করছিলেন তখন তাঁর পবিত্র মস্তক অবনত ছিলো! আমি দেখেছি আল্লাহর যে বান্দা নিজেকে যত ছোট রাখেন আল্লাহ সেই বান্দাকে তত সম্মানিত করে দেন। মূলত সম্মানিত হবার জন্য ছোট রাখবেন বিষয়টা এমন না। নিজেকে নামিয়ে রাখা দরকার কিছু বড় গুনাহ থেকে হেফাযত থাকার জন্য। যেমন, নিজের ব্যাপারে উচ্চ ধারণা, জবানের সীমলঙ্ঘন, অন্য ভাইকে হেয় করা, নিজের ব্যাপারে সন্তুষ্টি, রাগ ইত্যাদি। আপনি হয়ত জানেন না, আপনার সামান্য একটু উঁচু গলা কিংবা কোন ভাইয়ের সাথে একটা কঠিন শব্দের ব্যাবহার, তা আল্লাহ পছন্দ করেন নি! কেউ আপনার কথা শুনলোনা, ব্যাস চিন্তা কিসের? আল্লাহ শুনেছেন। আপনার মাশোয়ারা গ্রহন হলোনা, কি দরকার? তা লেখা হয়ে গেছে। আপনি নিজের ব্যাপারে ছোট আশা রাখেন, তাহলে শয়তান আপনাকে নিয়ে খেলার সুযোগ কম পাবে ইনশাআল্লাহ। আপনি মনে করেন আপনি সবার চেয়ে অযোগ্য বরং অন্য সবাই আপনার চেয়ে অনেক যোগ্য। হতে পারে এমন কোন বিষয়ে যা আপনি জানেন না। হতে পারে তারা প্রত্যেকে আমার কিংবা আপনার চেয়ে অনেক বেশি ইস্তেগফার করেছেন। আল্লাহ এমন বান্দাদের পছন্দ করেন যারা আল্লাহকে ভয় করে নিজেদেরকে ছোট রাখে। তবে নিজেকে ছোট রাখার মানে এই নয় যে, আপনার যা জিম্মাদারি তাকেও ছোট করে ফেলবেন। নিজেকে ছোট রাখার আরেকটি সুবিধা - অন্তর আল্লাহকে বেশি বেশি চাওয়ার সুযোগ পায়। আপনাকে নিয়ে যদি অন্য অনেকে ব্যাস্ত না হয় তখন আপনার অন্তর সুযোগ পায় আল্লাহর দিকে তাকানোর। তাই আপনি যদি ছোট থাকতে পারেন তবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন।
৪। দুয়াকে পাথেয় করে নেনঃ দুয়ার কথা বলে শেষ করা সম্ভব না প্রিয় ভাই! উস্তাদ আহমেদ ফারুক রহঃ একবার বলছিলেন, খুব সম্ভব এরকম কিছু যে, "আমার কাছে ভাইরা মুজাহিদদের কারামত এর কথা জানতে চায়, আমি তো দুয়া আর ইস্তেখারারর মত উমুমি কারামত আর দেখিনা" দুয়াই আমাদের প্রথম এবং শেষ সম্বল। যে সুরা ফাতিহা ছাড়া নামাজ হয়না তা দুয়াই! আল্লাহই শিখিয়ে দিয়েছেন। খুব সম্ভব উমার রাঃ বলেছিলেন, আমি এই ভয় করিনা যে আমার দুয়া কবুল হবে কি, হবেনা, বরং আমি এই চিন্তা করি যে আমি দুয়া করার তাউফিক পাবো কিনা! দুয়া ছাড়া বাস্তবিক ভাবেই আমাদের আর কিছু নাই। এই দুনিয়াতেও এবং আখিরাতেও। আমাকে একজন নাসিহা দিয়েছিলেন, "আপনি যদি আল্লাহর কাছে চাইতে লজ্জা পান কিংবা অলসতা করেন তাহলে আর কার কাছে চাইবেন? এবং আর কে আপনাকে তা দিতে পারে? যদি কোন কিছু আপনার দরকার হয় তবে তা আপনাকে আল্লাহর থেকেই নিতে হবে"। এক ভাইয়ের একটা ঘটনা আমি জানি, - উনার বাসার বাথরুমের পাইপে সমস্যা হল। এমন যে, বাথরুম ব্যাবহার করা জটিল হয়ে গেলো। এমন হালাতে উনি সফরে গেলেন। সফর থেকে ফেরার পথে উনার মনে পড়লো বাসার এই সমস্যার কথা। উনি ভাবলেন, আচ্ছা সফরে তো দুয়া কবুল হয়, আমি এই ব্যাপারে দুয়া করি না কেন! আবার ভাবলেন বাথরুমের সমস্যা নিয়ে আল্লাহর কাছে বলবো! পরক্ষনেই আবার ভাবলেন, প্রথম কথা এটা আমার জন্য সমস্যা এবং এটার সমধান হওয়া জরুরী। আর আল্লাহ ব্যাতিত এই সমস্যার সমাধান কেউ দিতে পারেনা। আল্লাহর হুকুম না হলে এই সমস্যা সমাধান হবেনা। বলে রাখা ভালো সেই ভাইয়ের বাড়িওয়ালা অত্যন্ত কৃপণ এবং ভাইয়ের অন্যতম দুশ্চিন্তা ছিলো যে এই কথা জানার সাথে সাথে বাড়িওয়ালা এই খরচ ভাইয়ের উপরে চাপিয়ে দিবেন। যাই হোক, ভাই দুয়া করলেন - "আল্লাহ আপনি আমার বাথরুমের এই সমস্যার ব্যাপারে একটা সমাধান করে দেন" ভাই বাসায় আসার ২/৩ দিন পরে বাড়িওয়ালা নিজের খরচে সমাধান করে দিলেন, এবং শেষে ভাইকে এটাও জিজ্ঞেস করেছিলো - আপনার বাথরুম এখন ঠিক আছে তো?
আমি আরেক ভাই এর ব্যাপারে জানি - উনি একবার একটা ভিডিও দেখছিলেন। যেটার মধ্যে ফিদায়ী হামলা চালাবেন এমন কিছু ভাই, আসমানে আল্লাহু লেখা নিশান দেখেছিলেন। এটা দেখার সময় ঐ ভাই ভাবছিলেন, ইশ আমিও যদি এমন দেখতে পেতাম। এরপরে আবার ভাবলেন - আরে কোথায় উনাদের মত ফিদায়ী মুজাহিদ আর কোথায় আমি! যাই হোক ভাই বিষয় টা ভুলে গেলেন। এরও অনেক অনেক দিন পরে ভাই একদিন আসমানের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। হঠাত দেখলেন আল্লাহু লেখা একটুকরা মেঘের নিশান! ভাই ভাবলেন আরে এটা আমার মনের ভুল। এমন ভাবতেই ভাই দেখলেন আল্লাহু লেখা "হা" এর মধ্যের কিছু মেঘ সরে গিয়ে "হা" টা সম্পূর্ণ গোল হয়ে গেলো এবং ডান দিক থেকে আলিফের মত এক টুকরা মেঘ লামলাম একদম পাশে চলে আসলো। ভাই এর ভাষ্যমতে, "ভাই এটা দেখার ঠিক পরেই আমার দিলে এই কথাটা আসলো, "তুমি নিশান দেখতে চেয়েছিলে, আজ আল্লাহ দেখিয়ে দিলেন"।
আমি দুইটা উদাহরন দিলাম সম্পূর্ণ দুই ধরনের, একটা খুব তুচ্ছ, আরেকটা আল্লাহর কুদরত বা নিশান দেখার মত!
যা বলতে চাচ্ছি - প্রিয় ভাই আমার, আমি দেখেছি আল্লাহ বান্দার দুয়া কবুল করেন। তবে আল্লাহ গাফেল অন্তরের দুয়া কবুল করেন না। আপনি যা চান তা আল্লাহর থেকেই নিতে হবে আর তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে আল্লাহ দিতেই ভালোবাসেন। তাই বেশি বেশি দুয়া করেন, যখনই সম্ভব।
৫। তাহাজ্জুদ এবং কুরআনঃ একজন মুজাহিদের জন্য তাহাজ্জুদ এবং কুরআন হচ্ছে অন্তরের সাকিনা! আল্লাহ আমাকে মাফ করুন এই কথা বলার জন্য কারণ আমার নিজের হাল অনেক করুণ! আমি আশা রাখি আল্লাহ আমার জন্য সহজ করে দিবেন। শাইখ আহমেদ মুসা জিব্রিল বলছিলেন, "তাহাজ্জুদ সবাই পড়তে পারেনা, সবার তাউফিক্ক হয়না, এটা শুধু মাত্র তাদেরই নসিব হয় আল্লাহর ভালোবাসা যাদের নসিব হয়" তাহাজ্জুদ এবং কুরআন হচ্ছে আল্লাহর সাথে সম্পর্কের রাস্তা। এক ভাই বলতেন - ভাই আমি যখন কুরআন পড়ি তখন আমার সমস্ত কষ্ট দূর হয়ে যায়! আমি আরেক ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভাই কি করলে আপনি অন্তরে শান্তি পান? উনি বলেছিলেন - "কুরআন তিলাওয়াত করলে"
৬। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাঃ আমি শায়েখদের যত নাসিহা দেখেছি, একটি বিষয় সবচেয়ে বেশি উল্লেখ থাকে, তা হচ্ছে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। এক ভাই বলতেন - গুনাহ এর কারণে আমাদেরে উপরে মুসিবত নেমে আসে। গুনাহ নিয়ে আলাদা করে তো কিছু বলার নাই, তবুও আমাদের জন্য খাস ভাবে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা অনেক জরুরী। কারণ গুনাহ আমাদের নিরাপত্তা বর্ম কে নষ্ট করে দেয়। গুনাহ এর মাধ্যমে ঈমান দুর্বল হতে থাকে এবং ইবাদতের শান্তি নষ্ট হয়ে যায়। গুনাহ এর সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে এক গুনাহ আরেক গুনাহ এর রাস্তা খুলে দেয়। আমি এক ভাইয়ের ব্যাপারে জানি, উনি বলতেন, "ভাই যতবার আমার চোখ কোন বেগানা বেপর্দা নারীর দিকে পড়ে ততবার আমার মনে হয়, আমার ঈমান আগের চেয়ে একটু কমে গেলো, আমার মনে হয় এই নারী আমার ঈমানকে জোরে একটা ঘুষি মেরেছে!"
প্রিয় ভাই, আমার এই কথা গুলো বলার একটা উদ্দেশ্য এই যে, আল্লাহ যেন এর থেকে সবার আগে আমার জন্য কল্যান নসিব করেন এবং আমাদের সবাইকে কল্যান নসিব করেন। আল্লাহ যেন সবার আগে আমাকে এই আমলগুলো করার তাউফিক দান করেন এবং আমাদের সবাইকে। এই কথা গুলো বলার আরেকটি কারণ, আমি আপনাদের নিকট দুয়ার দরখাস্ত করছি, খাস ভাবে এই অধম ভাইয়ের জন্য দুয়া করবেন। এই কথা গুলো বলার আরেকটি কারণ "আদ দ্বীনু নাসিহাহ"
আল্লাহ আপনি আমার কথার ভুল গুলো মাফ করে দেন এবং ভালো যা কিছু তার জন্য শুধু মাত্র আপনারই প্রশংসা,আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। আল্লাহূম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লাম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।
আজ এখানেই শেষ করছি,
আপনাদের ভাই -
ওয়াস সালাম
=====
আমিন
Comment