তৃতীয় অধ্যায়
গাযওয়াতুল হিন্দ এর হাদিস সমূহ থেকে লব্ধ শিক্ষা ও ইশারাসমূহ
উক্ত সাতটি রেওয়ায়েতের মাঝে আমরা ছহিহ্, হাসান, মারফুউ বর্ণনা পেয়েছি। আলহামদুল্লিাহ। এবার আমরা এই সাতটি হদিস থেকে লব্ধ বিভিন্ন ইশারা এবং ইঙ্গিত এবং কিছু সূক্ষ্ম ত্বত্ম নিয়ে আপনাদের সামনে আরোচনা করবো। হাদিসগুলোর মাঝে অতিত এবং ভবিষ্যতের যে সকল রূঢ় রহস্য লুকিয়ে আছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। প্রতিটি মুসলমানের জন্য করনীয় এবং বর্জণীয় যে সকল বিধান এই হাদিস সমূহে নিহিত আছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। শেষ যামানায় আবশ্যক ঘটবে এমন বিষয়ের যে সকল ভবিষ্যতবাণী সুপ্ত রয়েছে তা আপনাদের সামনে মোটাদাগে আনার চেষ্টা করবো। হিন্দুস্থান যুদ্ধের ক্ষেত্রে যে সকল বাসারাত ও সুসংবাদ আপনাদেরকে দেয়া হয়ে তা একটি একটি করে আলোচনা করবো। কিন্তু আফসোস এ সকল সুসংবাদ এবং আনন্দ ঘেরা মুহুর্ত শুধু সেই আন্দাজ ও অনুমান করতে পারবে যাকে আল্লাহ সঠিক হেদায়েতের কর্ণ দান করেছেন। এসকল ননবি ভবিষ্যতবাণী বুঝার জন্য আল্লাহ তাঁদেরকেই পূর্ণ তাওফিক দান করবেন যারা কোননা কোন ভাবে আল্লাহ একান্ত হতে পেরেছে। যারা আল্লাহর সাথে সদাসর্বদা উত্তম ক্রয় বিক্রয় করতে প্রস্তুত এই মোবারকময় হাদিস সমূহ তাদের সঠিক রাহনুমায়ী। চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশের সঠিক দিশা। সরল পথের সহজ পাথেয়। আয় আল্লাহ! যাাদেরকে এই মোবারকময় জামাআ‘হ্ এর অন্তুভূক্ত হওয়ার সৈাভাগ্য দান করেছে আমাদেরকেও তাদের সাথে নিয়ে নিন। আমাদেরকেও তাদের দলভূক্ত করে নিন। গাযওয়ায়ে হিন্দের মোবারকময় যুদ্ধে শরিক হয়ে আমাদেরকে খইরুশ শুহাদা কিংবা চির আজাদ আবু হুরাইরা হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন ইয়া রাব্বিল আলামিন।
১.নবি সা. এর প্রতি ভালবাসা ঈমানের প্রথম শর্ত।
উক্ত হাদিসে নবি সা. এর প্রতি সাহাবায়ে কেরাম রা. এর ভালবাসার নমুনা পূর্ণ রুপে প্রস্ফটিত। হাদিসে আবু হুরাইরা রা বলেন,( حَدَّثَنِي خَلِيلِي الصَّادِقُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،)। রাসুল সা কে ভালোবাসা ইমানের শুরুর শর্ত সমূহের অন্তভূক্ত। আর এই হাদিসটি এরই প্রতি ইঙ্গিতবহ। ইমানের মৈালিক অলামত এবং মৈালিক বৈশিষ্ঠ হচ্ছে রাসুলসা. কে ভালোবাসা। তবে শুধু মুখে দাবিকৃত নিছক মুহাব্বাত বা ভালোবাসা উদ্দেশ্য নয় বরং নিজের সবটুকু বিলিন করে দেয়াই হচ্ছে নববি ভলোবাসার আলামত। নবি সা. কে কেউ কটুক্তি করলো, তার পবিত্র সিরাতের উপর কালি লেপন করলো আর আপনি আমি চুপকরে ঘাপটিমেরে ছবরের নিয়তে বসে থাকলাম এর নাম ইমান নয়। এটি নববি ভালোবাসার আলামত নয়। বরং নববি ভালোবাসাতো সেটাই যা নিজেকে নবি সা. এর জন্য উৎসর্গ করতে শেখায়। দুনিয়ার সব কিছু এমনকি নিজের একমাত্র জিবনের চেয়েও নবি সা. কে ভালোবাসতে হবে।
আর এ কথায় বর্ণনা করছেন হযরত আনাস রা.।
عن أنس، عن النبي صلى الله عليه وسلم ح وحدثنا آدم، قال حدثنا شعبة، عن قتادة، عن أنس، قال قال النبي صلى الله عليه وسلم " لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده وولده والناس أجمعين
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই।
যাহরা বিন মা‘বাদ র. বলেন,আমি আমার দাদা আবদুল্লাহ ইব্*নু হিশাম (রাঃ) কে বলতে শুনেছি,
عن عبد الله بن هشام، قال كنا مع النبي صلى الله عليه وسلم وهو آخذ بيد عمر بن الخطاب فقال له عمر يا رسول الله لأنت أحب إلى من كل شىء إلا من نفسي. فقال النبي صلى الله عليه وسلم " لا والذي نفسي بيده حتى أكون أحب إليك من نفسك ". فقال له عمر فإنه الآن والله لأنت أحب إلى من نفسي. فقال النبي صلى الله عليه وسلم " الآن يا عمر ".
আবদুল্লাহ ইব্*নু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তখন ‘উমার ইব্*নু খাত্তাব (রাঃ)-এর হাত ধরেছিলেন। ‘উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্*র রসূল! আমার জান ছাড়া আপনি আমার কাছে সব কিছু চেয়ে অধিক প্রিয়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, যাঁর হাতে আমার প্রাণ ঐ সত্তার কসম! তোমার কাছে আমি যেন তোমার প্রাণের চেয়েও প্রিয় হই। তখন ‘উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, আল্লাহ্*র কসম! এখন আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও বেশি প্রিয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে উমর! এখন (তুমি সত্যিকার ইমানদার হলে)।
২.নবি সা এর সাথে সাহাবায়গণের অকৃত্তিম ভালবাসা।
এই হাদিসটির মাধ্যমে নবি সা. এর সাথে সাহাবা রা. এর ভালোবাসার এবং মুহাব্বাতের একটি পূর্ণ নমুনা ফুটে ওঠে। এত্থেকে বুঝে আসে রাসুল সা. এর সাথে সাহাবাগণের ভালোবাসার পূর্ণ বন্ধেনের একটি জলন্ত চিত্র। এবং কি সাহাবায়ে কেরাম রাসুল সা. এর ভালোবাসার নমুনা চিত্র মানুষের কাছে বর্ণনা করতেন। নিজেদের কথাবার্তা এমনকি হাদিস বর্ণনার সময়ও তাঁরা মুহাব্বাতের দিকটি উল্লেখ করতে ভুলতেন না। বরং তারা পরস্পর এই ভালোবাসার আলোচনা করতে গর্ভবোধ করতেন। আর তাদের এই ভালোবাসা শুধু মুখের নিছক দাবির নাম ছিল না। বরং তাদের সারা জিবনের প্রতিটি কাজ এবং জিবনের প্রতিটি মূহুর্ত এই ভালোবাসার পূর্ণ নমুনার বহিপ্রকাশ। হুদাইবিয়া সন্ধির সময় উরওয়া বিন মাসউদ সাক্বাফি তাঁদের মুহাব্বাতের এই বহিপ্রকাশদেখতে পেলে, যখন সে সাহাবায়ে কেরামের সম্পর্ক সৌকার্য এর ক্ষেত্রে আন্তরিক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলো তখন সে তৎক্ষণাত বলে ফেলল, আমি দুনিয়ার এমন কোন রাজা-বাদশাকে দেখিনি যে, তাকে তাঁর অনুসারী বা সঙ্গী-সাথীগণ তাঁর এতটুকু সম্মান করে, যেমন মুহাম্মাদ সা. এর সাথি সাহাবি তাকে যত বেশি সম্মান ও মুহাব্বাত করে।
৩.নবি সা এর সত্যতার প্রতি সাহাবা রা. এর অঘাত বিশ্বাস।
এই হাদিসে এ বিষয়টিও দৃষ্টিগোচর হয়, নবি সা. এর প্রতিটি কথা এবং প্রতিটি খবরের উপর সাহাবায়ে কেরামের ছিল পূর্ণ আস্থা ও পূর্ণ বিশ্বাস। চাই তা বায্যিক ভাবে আকল মেনে নিক বা না নিক। চাই তা কোন অতিত সংবাদ হোক বা ভবিষ্যতের অদৃশ্য বিষয়ের কোন সংবাদ। চাই তা অবতার মাধ্যম অকাটা ওহি হোক কিংবা অন্য কোন মাধ্যম। আর এ কারনেই সাহাবা কেরাম সকল প্রকার সংবাদের ও ভবিষ্যতবাণী শুধু বর্ণনা করেই ক্ষান্ত হননি বরং সে সংবাদকে বাস্তব পক্ষেই সুনিশ্চিত জেনে নিজের অন্তরকে সে অঙ্গিকারের প্রতি সদা প্রস্তুত করতেন। এবং সে সকল ভবিষ্যত বাস্তব বিষয়াবলির অপেক্ষায় প্রহর গুনতেন। আবু হুরাইরা রা. দোয়া করতেন যেন আল্লাহ তাঁকে গাযওয়ায়ে হিন্দের মোবারক বাহিনিতে শরিক করে নেন। এবং তাঁকে এই মহা সৈাভাগ্য দান করেন।
৪.সিন্ধু অন্চলের বিদ্যমানতা।
আবু হুরাইরা রা. এর হাদিস থেকে এ বিষয়টি প্রতিয়মান হয় যে, রাসুল সা. এর যামানায় এমন এক ভূখন্ড বিদ্যমান ছিল যাকে সিন্ধু বলা হত।
(ইনশাআল্লাহ আমরা হাদিস সমূহের আলোচনা শেষে সিন্ধু এবং হিন্দ এর ভৌগলিক আলোচনা করবো।)
৫.হিন্দুস্থানে বিদ্যমানতা।
একই ভাবে এ বিষয়টিও সুস্পষ্ট হয় যে , রিসলোতের যামানায় হিন্দ নামেও একটি অন্চল ভূপৃষ্ঠে বিদ্যমান ছিল।
৬.আরবের নিকটবর্তী সিন্ধু প্রদেশ এবং গাযওয়ায়ে হিন্দের পূর্বে সিন্ধু প্রদেশ বিজয়।
যে হাদিসটিতে সিন্ধু বিজয় এবং হিন্দ বিজয়ের কথা আলোচনা করা হয়েছে তা থেকে এ বিষয়ের প্রতিও ঈঙ্গিত পাওয়া যায় যে, সিন্ধু আরবের নিকটবর্তী কোন অন্চল হবে। যেহেতু তার আলোচনা আগে আনা হয়েছে। এবং এ দিকটিও বুঝে আসে যে প্রথমে সিন্ধু অতপর হিন্দ বিজয় হবে।
৭.সিন্ধ ও হিন্দে কাফেরদের কবজায় বিদ্যমান থাকা।
নববি রিসালাতের শুরুর যামানায় এ কথা প্রসিদ্ধ ছিল যে, সিন্ধু ও হিন্দ অন্চল কুফ্ফারদের কব্জায় বিদ্যমান রয়েছে এবং তাতে এক লম্বা সময় কাফের দের আধিপত্য বিদ্যমান থাকবে। আর হিন্দুস্থানে কাফেরদের এ আধিপত্য, এক অজ্ঞাত লম্বা সময় বিদ্যমান থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
৮.রাসুল সা সকল বিষয়ে মৌলিক জ্ঞানের অধিকারি ছিলেন।
এই হাদিস থেকে এ কথাও ফুটে ওঠে যে, রাসুল সা. সকল বিষয়েই সাম্যক অবগত ছিলেন। চাই তা কোন ঐশি ওহির মাধ্যমে হোক বা ব্যাবসায়ী অভিজ্ঞতার মাধ্যমে হোক। এবং এও সম্ভাবনা বিদ্যমান যে, রাসুল সা. গুপ্তচর কিংবা গোপন সংবাদ দাতার মাধ্যমে এসকল সংবাদ সমূহ লাভ করেছেন। তবে প্রথম দিকটিই এখানে প্রাধান্য যোগ্য।
৯. সিন্ধ ও হিন্দে এর ইতিহাস।
উক্ত হাদিসে হিন্দুস্থানের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। এবং ভবিষ্যতে কি ঘটতে যাচ্ছে তাও খুব সংক্ষিপ্তকারে বর্ণিত হয়েছে।
১০.গাইবের খবর ও ভবিষ্যতবাণী।
সিন্ধু ও হিন্দের উদ্দেশ্যে মুসলিম বাহিনির অভিযান এবং জিহাদ পরিচালনা করার বিষয়টি রাসুল সা. এর ভবিষ্যত বানির অন্তভুক্ত। এবং ভবিষ্যতে যে এক মুসলিম বাহিনি তা বিজয় করবে তার সুচারু এক চিত্র ফুঠেছে হাদিসটির মাঝে। সুতরাং হাদিসটি নববি সত্যতা প্রমাণের ক্ষেত্রেও ঈঙ্গিতবহ বটে।
১১.নবি সা. এর নবুওয়াতের সত্যতা প্রমান।
যুগে যুগে মুসলিম বাহিনি হিন্দুস্থানের ভূমিতে জিহাদ পরিচালনা করে আসেছে। এবং ঈসা আ. এর আগমণ পূর্ব পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলতে থাকবে। সুতরাং আজ ইতিহাস অনুযায়ী হিন্দুস্থানে যুগে যুগে মুসলমানদের যুদ্ধ করার মাধ্যমে রাসুল সা. এর সত্যতা সুপ্রমাণিত হয়েছে।
১২.বাইতুল মাকদিস এবং মাসজিদে আকসার বিজয় সুসংবাদ।
গাযওয়াতুল হিন্দও বাইতুল মাকদিস বিজয় একই সাথে অলোচনা করো হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে বাইতুল মকিদিসের এক মুসলিম শাসক একটি জামাআহ্ বা দল পাঠাবেন যাদের হাতে আল্লাহ হিন্দুস্তান বিজয়ের গৌরব দান করবেন। একই সাথে উক্ত হাদিসে বাইতুল মাকদিস –এর ইয়াহুদি কব্জা থেকে মুক্তি এবং মাসজিদুল আকসায় মুসলিম অধিপত্য বিস্তারের মহা সু সংবাদে দেয়া হয়েছে। আরো গৌরবের বিষয় হল, উক্ত গাযওয়াতুল হিন্দ –এর বাহিনি এবং ফিলিস্তিনের মুজাহিদ বাহিনী দুভয়ের মাঝে এক আত্মিক ও যুদ্ধ কেন্দ্রিক এক ভ্রতৃত্ব বন্ধন বিদ্যমান থাকবে। এবং জিহাদ-গাযওয়রে ক্ষেত্রে পরস্পর একে ওপরের সাহায্যকারী হবে। যার একটি প্রেক্ষাপট আজ তো আজ একেবারে দিবালোকের সুষ্পষ্ট যে, হিন্দ এর যুদ্ধ ভূমিতে মালাউন মুশরিক বাহিনি এবং রাসুল সা. এর মেরাজের পবিত্র পূণ্যময় ভূমিতে জায়ানবাদী হয়াহুদিদের পূর্ণ কব্জা বিদ্যমান। এদুভয় পরষ্পর মিত্র চুক্তিতে আবদ্ধ। মহান আললাহ রাব্বুল আলামিন হিন্দ এং ফিলিস্তিন মুসলিম যোদ্ধা বাহিনীর পরষ্পর সহযোগিতা এবং যুদ্ধ অংশ গ্রহনের মাধ্যমে এদের নাপাক কব্জা থেকে হিন্দ আকসার পবিত্র ভূমি পুনপবিত্র করবেন। আর ফিকাক ও ফকিহের এ বিষয়টিও দিবালোকের ন্যয় সুস্পষ্ট যে, সকল মুসলমানের উপর এ দুভূমি পবিত্র করা সমগ্র মুসলিম উম্মাার উপর আবশ্যক।
১৩.জিহাদ কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এই হাদিস সমূহের মাঝে জিহদেকে কোন নির্দিষ্ট যামানা বা সময়ের সাথে বিশিষ্ট করেন নি। যা পরোক্ষ ভাবে একথার ও দলিল যে, জিহাদ শেষ যামানা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এমনকি সায়্যেদুনা ঈসা আ. আসমান থেকে অবতারের পর দাজ্জালকে কতল করবে। আর এক কথা বিভিন্ন সহিহ হাদিসের মাদ্যমে প্রমাণিত যে, দাজ্জালের চাল-চামুন্ড এবং সহচরদের বিশাল অংশ হবে জাযানবাদী ইয়াহুদিদের মধ্য থেকে।
১৪.জিহাদের দুই ধারাই বিদ্যমান থাকবে।
এই সাত হাদিস থেকে কথা সুস্পষ্ট হয়যে, হিন্দ –এর যুদ্ধ শুধু দিফায়ী এর মাঝে সিমাবদ্ধ থাকবে না। বরং তা আগে বেড়ে সম্মুখ জিহাদ হবে। এবং দুরুল কুফুরে অনুপ্রবেশ করে মুশরিক কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা বৃকরা হবে। প্রথম হাদিসের বাআস এবং গাযওয়াত এ দুটি শব্দ থেকে বিষয়টি সুস্পষ্ট বুঝে আসে।কেননা গাযওয়ার এর আভিধানিত অর্থ ঞল একদামি বা আগ্রবেড়ে সম্মুখ জিহাদ।কতকের সুবিধা বদীর মতে জিহাদ দু প্রকার। এক. দাওয়াতী (গাযওয়ায়ে ফিকরী) দুই. আসকারী ও ফউজ বা বাহিনি ও সৈন্য দল প্রেরিত জিহাদ। তবে প্টরথমটি মাজায বা রূপক অর্থে জিহাদ। আর দ্বিতীয় প্রকারটি হল হাকিকি বা আক্ষরিক অর্থে জিহাদ। আর এই দু ধারাই ইসলামের শুরুর যামানা থেকে বিদ্যমান রয়ছে। কিন্তু আলোচনার লক্ষনীয় বিষয় এটা যে, আহাদিস সমূহে হিন্দ এর অন্চলে বিজয়ের জন্য যে জিহাদের কথা বলা হয়েছে তা *আসকারী বা সৈন্যদল অর্থাৎ মুজাহিদগণ দ্বারা পরিচালিত জিহাদ উদ্দেশ্য।
১৫.দুশমনকে চিহ্নিত করন।
উক্ত হাদিসে সমূহে ইসলাম এবং মুসলমানের দুই চির দুশমন কে চিহ্নিত করা হয়েছ। এক হল মূর্তি পূজক হিন্দু আর দ্বিতীয়ত ..... উপাসক ইয়াহুদী। যার বিস্তার বর্ণনা হল, রাসুল সা. হিন্দ ও সিন্দ -এর আলোচনা করেছেন। আর েএটা তো সুস্পষ্ট যে, এ গাযওয়াহ কাফেরদের মোকাবেলাতেই হবে। এ সত্য একবারে স্পষ্ট যে, হিন্দি এর পবিত্র ভূমি আজ হিন্দুদের দখলে। গেড়ুয়া সন্ত্রাস কুফ্ফারদের পূর্ণ দখলে। অপর দিকে সাওবান রা.এর হাদিস থেকে এ বিষয়ও ফুটে ওঠে যে, সায়্যিদুনা ঈসা আ. এবং তার সাথীগণ দাজ্জাল এবং তার সহযোগী হয়াহুদিদের বিরুদ্ধে লড়বে।
১৬.নবি সা এবং সাহাবাগণের মজলিসে হিন্দুস্থান যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা।
এই হাদিস থেকে জানা যায় যে,নবী কারীম সা. ও সাহাবাগণের মজলিসে হিন্দ এর আলোচনা হত। এবং বিভিন্ন বর্ণনা থেকে বুঝা যায় এ পুন্যময় যুদ্ধের আলোচনা বেশ হত।
১৭.গাযওয়াযে হিন্দের ব্যাপারে নবি এর ইচ্ছা এবং দিলের তামান্না।
নবি সা, এর তার সাহাবায়ে কেরাম রা. অনেক সময় হিন্দুস্তান যুদ্ধের আলেঅচনা করতো। এ কারনেই এ বিষয়ের দলিল, রাসুল সা. এর সকল সাহাবী এ যুদ্ধে অংশ গ্রহনের ইচ্ছা রাখতেন। এরটাও ফুটে ওঠে রাসুল সা. সাহাবাগণকে হিন্দ যুদ্ধের জন্য উদ্ভগ্ধ করতেন।
১৮.হিন্দুস্থান বিজয় রাসুল সা এর ওয়াদা।
হাদিসে দু ভাবেই বর্ণনা করা আছে। এক আমাকে ওয়াদা ওয়াদা করা হয়েছে। দুই আমাদের ওয়াদা করা হয়েছে। আর ওয়াদার উদ্দেশ্য কোন কল্যনের ওয়াদা। আর ওয়াদার মাঝে নিয়ত ও ইচ্ছা দুটোই পাওয়া যায়। এ থেকে বুঝা যায় রাসুল সা. এর অন্তরে গাযওয়াতুল হিন্দ এর নিয়ত মও দৃঢ় সংকল্প ছিল। আর তিনি হিন্দ লড়ায়ের আশা রাখতেন। আর রাসুল সা. এ তামান্না কখনো একজন সাহাবা কখনো সাহাবা কেরামের ভরা মজলিশে আলোচন করতেন। যাতে করে কেয়মতহ পর্যন্ত সকল উম্মাতের কাছে এ বার্তা পৈাছে যায়।
১৯.হিন্দুস্থান বিজয় মহান আল্লাহ তা‘আলার অঙ্গিকারও।
আবু আসেম রা. এর বর্ণনায় এই শব্দও এসেছে। আলেএলাহ ও তার রাসুল সা. ... ” আর এই শব্দই প্রমাণবহ গাযওয়াতুল হিন্দ এবং তার বিজয় শুধু মাত্র রাসুল সা. –এর অঙ্গিকারই নয় বরং তা মহান আল্লাহ তা‘আলাকৃত অঙ্গিকারও বটে। আল নিশ্চয় আল্লাহ অঙ্গিকারের বরখেলাফ করেন না। কুরআনে এসেছে,“অল্লআহর ওয়াদা। আল্লঅহ তার ওয়াদা খেলাফ করেন না।বিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।”
২০.যুদ্ধ ও জিহাদের উৎসাহ প্রদান।
আলোচ্য হাদিস সমূহে রাসুল সা. মুসলমানদেরকে যুদ্ধ জিহাদের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ বরেন,“...............................”
২১.সাম্রাজ্যবাদীদের অবাধ আধিপত্যের প্রতিকার।
হাদিস সমূহে উম্মাহের জন্য মুক্তির পথ ও বাতলে দেয়া হয়েছে। আর তা হল, পৃথীবিতে কাফের-মুশরিকদের বিজয় এবং সাম্রাজ্যবাদীদ ও উপনিবেশিক শক্তি ও সৈরাচারী কার্যক্রমের প্রতিরোধ একমাত্র জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ও যুদ্ধ জিহাদের মাঝেই নিহিত। এছাড়া বিলকুল ভিন্ন কোন পথ ও তরিকা নেই। আলোচনা,আন্তর্জাাতিক আদারতে মামলা এবৎ বন্ধু কিংবা নামে মাত্র সালিশের চেষ্টা কিংবা হস্তক্ষেপ সময় ক্ষেপন ছারা আর কিছু নয়।
২২.গাযওয়াযে হিন্দে মাল খরচ করার ফযিলত।
উপরোক্ত হাদিস সমূহে গাজওয়াতুল হিন্দে সম্পদ ব্যয় করার অনেক ফজিলত রর্ণিত হয়েছে। যদিও জিহাদের পথে সম্পদ খরচ করা অনেক উত্তম করচ। কিন্তু গাজওয়াতুল হিন্দে ব্যয় করার ফজিলত সাদারণত আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার চেয়ে অনেক বেশি। এই পজিলতের কারণেই আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু বারবার এই আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন, “আমি যদি গাজওয়া পেয়ে যাই তাহলে আমি আমার জীবন এবং নতুন-পুরাতন সকল সম্পদ তাতে ব্যয় করবো।”
২৩.গাযওয়াযে হিন্দে শাহাদাতের ফযিলত।
উপরোক্ত হাদিসসমূহ থেকে এটাও জানা যায়, এই গাজওয়াতে অংশগ্রহনকারী শহীদদেরও অনেক পজিলত। কেননা তাদের সম্পর্কে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “আফদালুশ-শুহাদা” এবং “খাইরুশ-শুহাদা” শব্দ বর্ণনা করেছেন।
২৪.গাযওয়াযে হিন্দের মুজাহিদগণের জাহান্নাম থেকে মুক্তির ছাড়পত্র।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে ঐ সকল মুজহিদদের জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুসংবাদ এসেছে, যারা এই গাজওয়ায় অংশগ্রহণ করবে এবং গাজী হয়ে ফিরে আসবে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’টি দলের কথা উল্লেখ করেছেন, “আল্লহ তা’আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।” প্রথম দল সম্পর্কে এটাও সুস্পষ্ট করেছেন, “তারা হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।” হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহুর কথায়ও এটা প্রমাণিত হয়, “আমি যদি সেই গাজওয়া থেকে গাজী ফিরে আসি, তাহলে আমি এক মুক্ত আবু হুরাইরা হবো। যাকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে দিয়েছেন।”
২৫.গাযওয়াযে হিন্দের শেষে বিজয়ের সুসংবাদ।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে এই সুসংবাদও বিদ্যমান, শেষ যুগে হজরত মাহাদী আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদিনা হজরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালামও পৃথিবীতে উপস্থিত হবেন। আল্লাহ তা’আলা হিন্দুস্থানের মুজাহিদদেরকে মহা বিজয় দান করবেন এবং তারা কাফিরদের নেতা এবং শামকদেরকে গ্রেপ্তার করে কয়েদী বানাবে।
২৬.গণিমতের মালের সুসংবাদ।
আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে প্রচুর পরিমানে গনীমতের সম্পদ দান করবেন।
২৭.সায়্যেদুনা ঈসা আ. এর সাথে সাক্ষাতের সুসংবাদ।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে একট সুসংবাদ এটাও পাওয়া যায, যে সকল মুজাহিদ এই পবিত্র গাজওয়ার শেষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে, তারা সাইয়্যিদিনা হজরত ঈশা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালামের বরকতময় সাক্ষাতের সৌভাগ্য লাভ করবে।
২৮.হিন্দুস্থান ছোট ছোট খন্ড রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যাবে।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে সর্বশেষ এবং সুসংবাদ হলো, এই গাজওয়ার পরিণামে হিন্দুস্থান টুকরো টুকরো হয়ে ছোট ছোট রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে যাবে। যার উপর একজন শাসকের পরিবর্তে একই সময়ে কয়েকজন শাসকই রাজত্ব করবে।
এছাড়াও আহলে ইলমগন আরও অনেক সুসংবাদ উপরোক্ত হাদিসসমূহ থেকে বের করেছেন। তবে আমরা উপরোক্ত হাদিসসমূহের তাখরিজ ও তার শিক্ষা এবং ইশারা-ঈঙ্গিত নববী দিকনির্দেদনা সামগ্রিক ভাবে বিজ্ঞ পাঠকের ক্ষেদমতে উপস্থা্পন করে দিলাম।
২৯.“গাযওয়াযে হিন্দ ও গাযওয়ায়ে বদর” এক গাভির অন্তমিল।
.
.
.
.
৩০.মুসলমানগণের জিহাদি মারকায হবে খোরাসানে।
.
.
৩১.বাইতুল মাকদিস ইয়াহুদিদের কব্জায় থাকবে।
.
.
.
.
৩২.শামের মুসলমানগণের অবস্থা ন্যাক্কার জনক হবে।
.
.
.
৩৩.একই সময় ঐ বাহিনি ইয়াহুদি এবং হিন্দুদের মোকাবেলা করবে।
.
.
.
৩৪. খোরাসানে কালো পতাকাবাহী একটি দল বিদ্যমান থাকবে।
.
.
.
.
৩৫.গাযওয়াতুল হিন্দএর নেত্রৃত্ব দেবেন হযরত মাহাদি আ.।
.
.
.
.
৩৭.গাযওয়া নামকরেনে প্রেক্ষাপট।
আমরা পূর্বে আলোচনা থেকে এ কথা বুঝতে পেরেছি যে, গাযওয়াহ বলা হয় ঐ সকল যুদ্ধ সমূহকে যে যুদ্ধে সয়ং রাসূল সা. সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। এবং যুদ্ধে মুজাহিদিনে সাহাবাগণের দেখভাল এবং নেত্রৃত্ব দিয়েছেন। তাহলে গাযওয়ায়ে হিন্দকে কেন গাযওয়া বলা হয় অথচ রাসুল সা. তো এই যুদ্ধ-অভিযান পরিচালনা করবেন না ?
প্রশ্নের উত্তরে মুহাদ্দিসে কেরাম কয়েকটি দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেন। প্রথমত নবি সা. গাযওয়ায়ে মুতায় অংশগ্রহন করেননি। তবুও তাকে গাযওয়া নামেই নামকরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, হযরত মাহাদি আ. যেহেতু হুজুর সা. এর নায়েব পাশাপাশি এবং তাঁর উম্মত হবেন, তার উদ্দেশ্য হবে নবি সা. এর আনিত ধর্মকে বিশ্ব ব্যাপি বাস্তবায়ন করা এবং হযরত মাহাদি আ. যেহেতু তার বংশের হবেন, তাঁর হাম ইসমি হবেন ও হযরত মাহাদি আ. এই যুদ্ধ পরিচালনা করবেন তাই এ যুদ্ধকে গাযওয়া বলা হয়েছে। তৃতীয়ত কতক মুদাদ্দিসেনে কেরাম বলেন,
پیارے نبی صلی اللہ علیہ وسلم نے چونکہ اس غزوے کی تمام معلومات دیں اور عہد لیا کہ جو زندہ رہے وہ اس غزوے میں ضرور شریک ہو، تو نبی پاک صلی اللہ علیہ وسلم کی اس بیعت نے ان کو
اس غزوے کا سربراہ بنادیا اور یہ جنگ غزوہ قرار پائی۔
যেহেতু প্রিয় নবী এই গযওয়া সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দিয়েছিলেন এবং এই অঙ্গিকার নিয়েছিলেন যে, ব্যক্তি ঐ সময় বেঁচে থাকা অবশ্যই সে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। সুতরাং মহানবী সা. মূলত এই যুদ্ধের জন্য লোকদের থেকে বাইআত নিয়ে ছিলেন।
তাই তিনিই এই গাযওয়ার প্রধান পরিচালক। ফলে এক গাযওয়াহ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
৩৮.হযরত ইসা আ. এর আগমন গাযওয়াতুল হিন্দ ব্যাতিরেকে সম্ভব নয়।
পাকিস্থানের এক বিজ্ঞ আলেম বলেন,
حضرت عیسیٰ علیہ السلام کا نزول غزوہ ہند کے دوران ممکن نہیں، حضرت عیسیٰ علیہ السلام اُس وقت ظاہر ہوں گے جب حضرت مہدی غزوہ ہند کی فتوحات مکمل کرکے شام کی طرف بڑھیں گے
হযরত ঈসা আ. এর অবতার গযওয়াতুল হিন্দ ব্যাতিরেকে সম্ভব নয়, হযরত মাহদী যখন গাযওয়া বিজয় সম্পন্ন করে সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হবেন তখন ঈসা মসিহ আ. উপস্থিত হবেন।
গাযওয়াতুল হিন্দ এর হাদিস সমূহ থেকে লব্ধ শিক্ষা ও ইশারাসমূহ
উক্ত সাতটি রেওয়ায়েতের মাঝে আমরা ছহিহ্, হাসান, মারফুউ বর্ণনা পেয়েছি। আলহামদুল্লিাহ। এবার আমরা এই সাতটি হদিস থেকে লব্ধ বিভিন্ন ইশারা এবং ইঙ্গিত এবং কিছু সূক্ষ্ম ত্বত্ম নিয়ে আপনাদের সামনে আরোচনা করবো। হাদিসগুলোর মাঝে অতিত এবং ভবিষ্যতের যে সকল রূঢ় রহস্য লুকিয়ে আছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। প্রতিটি মুসলমানের জন্য করনীয় এবং বর্জণীয় যে সকল বিধান এই হাদিস সমূহে নিহিত আছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। শেষ যামানায় আবশ্যক ঘটবে এমন বিষয়ের যে সকল ভবিষ্যতবাণী সুপ্ত রয়েছে তা আপনাদের সামনে মোটাদাগে আনার চেষ্টা করবো। হিন্দুস্থান যুদ্ধের ক্ষেত্রে যে সকল বাসারাত ও সুসংবাদ আপনাদেরকে দেয়া হয়ে তা একটি একটি করে আলোচনা করবো। কিন্তু আফসোস এ সকল সুসংবাদ এবং আনন্দ ঘেরা মুহুর্ত শুধু সেই আন্দাজ ও অনুমান করতে পারবে যাকে আল্লাহ সঠিক হেদায়েতের কর্ণ দান করেছেন। এসকল ননবি ভবিষ্যতবাণী বুঝার জন্য আল্লাহ তাঁদেরকেই পূর্ণ তাওফিক দান করবেন যারা কোননা কোন ভাবে আল্লাহ একান্ত হতে পেরেছে। যারা আল্লাহর সাথে সদাসর্বদা উত্তম ক্রয় বিক্রয় করতে প্রস্তুত এই মোবারকময় হাদিস সমূহ তাদের সঠিক রাহনুমায়ী। চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশের সঠিক দিশা। সরল পথের সহজ পাথেয়। আয় আল্লাহ! যাাদেরকে এই মোবারকময় জামাআ‘হ্ এর অন্তুভূক্ত হওয়ার সৈাভাগ্য দান করেছে আমাদেরকেও তাদের সাথে নিয়ে নিন। আমাদেরকেও তাদের দলভূক্ত করে নিন। গাযওয়ায়ে হিন্দের মোবারকময় যুদ্ধে শরিক হয়ে আমাদেরকে খইরুশ শুহাদা কিংবা চির আজাদ আবু হুরাইরা হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন ইয়া রাব্বিল আলামিন।
১.নবি সা. এর প্রতি ভালবাসা ঈমানের প্রথম শর্ত।
উক্ত হাদিসে নবি সা. এর প্রতি সাহাবায়ে কেরাম রা. এর ভালবাসার নমুনা পূর্ণ রুপে প্রস্ফটিত। হাদিসে আবু হুরাইরা রা বলেন,( حَدَّثَنِي خَلِيلِي الصَّادِقُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،)। রাসুল সা কে ভালোবাসা ইমানের শুরুর শর্ত সমূহের অন্তভূক্ত। আর এই হাদিসটি এরই প্রতি ইঙ্গিতবহ। ইমানের মৈালিক অলামত এবং মৈালিক বৈশিষ্ঠ হচ্ছে রাসুলসা. কে ভালোবাসা। তবে শুধু মুখে দাবিকৃত নিছক মুহাব্বাত বা ভালোবাসা উদ্দেশ্য নয় বরং নিজের সবটুকু বিলিন করে দেয়াই হচ্ছে নববি ভলোবাসার আলামত। নবি সা. কে কেউ কটুক্তি করলো, তার পবিত্র সিরাতের উপর কালি লেপন করলো আর আপনি আমি চুপকরে ঘাপটিমেরে ছবরের নিয়তে বসে থাকলাম এর নাম ইমান নয়। এটি নববি ভালোবাসার আলামত নয়। বরং নববি ভালোবাসাতো সেটাই যা নিজেকে নবি সা. এর জন্য উৎসর্গ করতে শেখায়। দুনিয়ার সব কিছু এমনকি নিজের একমাত্র জিবনের চেয়েও নবি সা. কে ভালোবাসতে হবে।
আর এ কথায় বর্ণনা করছেন হযরত আনাস রা.।
عن أنس، عن النبي صلى الله عليه وسلم ح وحدثنا آدم، قال حدثنا شعبة، عن قتادة، عن أنس، قال قال النبي صلى الله عليه وسلم " لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده وولده والناس أجمعين
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই।
যাহরা বিন মা‘বাদ র. বলেন,আমি আমার দাদা আবদুল্লাহ ইব্*নু হিশাম (রাঃ) কে বলতে শুনেছি,
عن عبد الله بن هشام، قال كنا مع النبي صلى الله عليه وسلم وهو آخذ بيد عمر بن الخطاب فقال له عمر يا رسول الله لأنت أحب إلى من كل شىء إلا من نفسي. فقال النبي صلى الله عليه وسلم " لا والذي نفسي بيده حتى أكون أحب إليك من نفسك ". فقال له عمر فإنه الآن والله لأنت أحب إلى من نفسي. فقال النبي صلى الله عليه وسلم " الآن يا عمر ".
আবদুল্লাহ ইব্*নু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তখন ‘উমার ইব্*নু খাত্তাব (রাঃ)-এর হাত ধরেছিলেন। ‘উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্*র রসূল! আমার জান ছাড়া আপনি আমার কাছে সব কিছু চেয়ে অধিক প্রিয়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, যাঁর হাতে আমার প্রাণ ঐ সত্তার কসম! তোমার কাছে আমি যেন তোমার প্রাণের চেয়েও প্রিয় হই। তখন ‘উমার (রাঃ) তাঁকে বললেন, আল্লাহ্*র কসম! এখন আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও বেশি প্রিয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে উমর! এখন (তুমি সত্যিকার ইমানদার হলে)।
২.নবি সা এর সাথে সাহাবায়গণের অকৃত্তিম ভালবাসা।
এই হাদিসটির মাধ্যমে নবি সা. এর সাথে সাহাবা রা. এর ভালোবাসার এবং মুহাব্বাতের একটি পূর্ণ নমুনা ফুটে ওঠে। এত্থেকে বুঝে আসে রাসুল সা. এর সাথে সাহাবাগণের ভালোবাসার পূর্ণ বন্ধেনের একটি জলন্ত চিত্র। এবং কি সাহাবায়ে কেরাম রাসুল সা. এর ভালোবাসার নমুনা চিত্র মানুষের কাছে বর্ণনা করতেন। নিজেদের কথাবার্তা এমনকি হাদিস বর্ণনার সময়ও তাঁরা মুহাব্বাতের দিকটি উল্লেখ করতে ভুলতেন না। বরং তারা পরস্পর এই ভালোবাসার আলোচনা করতে গর্ভবোধ করতেন। আর তাদের এই ভালোবাসা শুধু মুখের নিছক দাবির নাম ছিল না। বরং তাদের সারা জিবনের প্রতিটি কাজ এবং জিবনের প্রতিটি মূহুর্ত এই ভালোবাসার পূর্ণ নমুনার বহিপ্রকাশ। হুদাইবিয়া সন্ধির সময় উরওয়া বিন মাসউদ সাক্বাফি তাঁদের মুহাব্বাতের এই বহিপ্রকাশদেখতে পেলে, যখন সে সাহাবায়ে কেরামের সম্পর্ক সৌকার্য এর ক্ষেত্রে আন্তরিক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলো তখন সে তৎক্ষণাত বলে ফেলল, আমি দুনিয়ার এমন কোন রাজা-বাদশাকে দেখিনি যে, তাকে তাঁর অনুসারী বা সঙ্গী-সাথীগণ তাঁর এতটুকু সম্মান করে, যেমন মুহাম্মাদ সা. এর সাথি সাহাবি তাকে যত বেশি সম্মান ও মুহাব্বাত করে।
৩.নবি সা এর সত্যতার প্রতি সাহাবা রা. এর অঘাত বিশ্বাস।
এই হাদিসে এ বিষয়টিও দৃষ্টিগোচর হয়, নবি সা. এর প্রতিটি কথা এবং প্রতিটি খবরের উপর সাহাবায়ে কেরামের ছিল পূর্ণ আস্থা ও পূর্ণ বিশ্বাস। চাই তা বায্যিক ভাবে আকল মেনে নিক বা না নিক। চাই তা কোন অতিত সংবাদ হোক বা ভবিষ্যতের অদৃশ্য বিষয়ের কোন সংবাদ। চাই তা অবতার মাধ্যম অকাটা ওহি হোক কিংবা অন্য কোন মাধ্যম। আর এ কারনেই সাহাবা কেরাম সকল প্রকার সংবাদের ও ভবিষ্যতবাণী শুধু বর্ণনা করেই ক্ষান্ত হননি বরং সে সংবাদকে বাস্তব পক্ষেই সুনিশ্চিত জেনে নিজের অন্তরকে সে অঙ্গিকারের প্রতি সদা প্রস্তুত করতেন। এবং সে সকল ভবিষ্যত বাস্তব বিষয়াবলির অপেক্ষায় প্রহর গুনতেন। আবু হুরাইরা রা. দোয়া করতেন যেন আল্লাহ তাঁকে গাযওয়ায়ে হিন্দের মোবারক বাহিনিতে শরিক করে নেন। এবং তাঁকে এই মহা সৈাভাগ্য দান করেন।
৪.সিন্ধু অন্চলের বিদ্যমানতা।
আবু হুরাইরা রা. এর হাদিস থেকে এ বিষয়টি প্রতিয়মান হয় যে, রাসুল সা. এর যামানায় এমন এক ভূখন্ড বিদ্যমান ছিল যাকে সিন্ধু বলা হত।
(ইনশাআল্লাহ আমরা হাদিস সমূহের আলোচনা শেষে সিন্ধু এবং হিন্দ এর ভৌগলিক আলোচনা করবো।)
৫.হিন্দুস্থানে বিদ্যমানতা।
একই ভাবে এ বিষয়টিও সুস্পষ্ট হয় যে , রিসলোতের যামানায় হিন্দ নামেও একটি অন্চল ভূপৃষ্ঠে বিদ্যমান ছিল।
৬.আরবের নিকটবর্তী সিন্ধু প্রদেশ এবং গাযওয়ায়ে হিন্দের পূর্বে সিন্ধু প্রদেশ বিজয়।
যে হাদিসটিতে সিন্ধু বিজয় এবং হিন্দ বিজয়ের কথা আলোচনা করা হয়েছে তা থেকে এ বিষয়ের প্রতিও ঈঙ্গিত পাওয়া যায় যে, সিন্ধু আরবের নিকটবর্তী কোন অন্চল হবে। যেহেতু তার আলোচনা আগে আনা হয়েছে। এবং এ দিকটিও বুঝে আসে যে প্রথমে সিন্ধু অতপর হিন্দ বিজয় হবে।
৭.সিন্ধ ও হিন্দে কাফেরদের কবজায় বিদ্যমান থাকা।
নববি রিসালাতের শুরুর যামানায় এ কথা প্রসিদ্ধ ছিল যে, সিন্ধু ও হিন্দ অন্চল কুফ্ফারদের কব্জায় বিদ্যমান রয়েছে এবং তাতে এক লম্বা সময় কাফের দের আধিপত্য বিদ্যমান থাকবে। আর হিন্দুস্থানে কাফেরদের এ আধিপত্য, এক অজ্ঞাত লম্বা সময় বিদ্যমান থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
৮.রাসুল সা সকল বিষয়ে মৌলিক জ্ঞানের অধিকারি ছিলেন।
এই হাদিস থেকে এ কথাও ফুটে ওঠে যে, রাসুল সা. সকল বিষয়েই সাম্যক অবগত ছিলেন। চাই তা কোন ঐশি ওহির মাধ্যমে হোক বা ব্যাবসায়ী অভিজ্ঞতার মাধ্যমে হোক। এবং এও সম্ভাবনা বিদ্যমান যে, রাসুল সা. গুপ্তচর কিংবা গোপন সংবাদ দাতার মাধ্যমে এসকল সংবাদ সমূহ লাভ করেছেন। তবে প্রথম দিকটিই এখানে প্রাধান্য যোগ্য।
৯. সিন্ধ ও হিন্দে এর ইতিহাস।
উক্ত হাদিসে হিন্দুস্থানের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। এবং ভবিষ্যতে কি ঘটতে যাচ্ছে তাও খুব সংক্ষিপ্তকারে বর্ণিত হয়েছে।
১০.গাইবের খবর ও ভবিষ্যতবাণী।
সিন্ধু ও হিন্দের উদ্দেশ্যে মুসলিম বাহিনির অভিযান এবং জিহাদ পরিচালনা করার বিষয়টি রাসুল সা. এর ভবিষ্যত বানির অন্তভুক্ত। এবং ভবিষ্যতে যে এক মুসলিম বাহিনি তা বিজয় করবে তার সুচারু এক চিত্র ফুঠেছে হাদিসটির মাঝে। সুতরাং হাদিসটি নববি সত্যতা প্রমাণের ক্ষেত্রেও ঈঙ্গিতবহ বটে।
১১.নবি সা. এর নবুওয়াতের সত্যতা প্রমান।
যুগে যুগে মুসলিম বাহিনি হিন্দুস্থানের ভূমিতে জিহাদ পরিচালনা করে আসেছে। এবং ঈসা আ. এর আগমণ পূর্ব পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলতে থাকবে। সুতরাং আজ ইতিহাস অনুযায়ী হিন্দুস্থানে যুগে যুগে মুসলমানদের যুদ্ধ করার মাধ্যমে রাসুল সা. এর সত্যতা সুপ্রমাণিত হয়েছে।
১২.বাইতুল মাকদিস এবং মাসজিদে আকসার বিজয় সুসংবাদ।
গাযওয়াতুল হিন্দও বাইতুল মাকদিস বিজয় একই সাথে অলোচনা করো হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে বাইতুল মকিদিসের এক মুসলিম শাসক একটি জামাআহ্ বা দল পাঠাবেন যাদের হাতে আল্লাহ হিন্দুস্তান বিজয়ের গৌরব দান করবেন। একই সাথে উক্ত হাদিসে বাইতুল মাকদিস –এর ইয়াহুদি কব্জা থেকে মুক্তি এবং মাসজিদুল আকসায় মুসলিম অধিপত্য বিস্তারের মহা সু সংবাদে দেয়া হয়েছে। আরো গৌরবের বিষয় হল, উক্ত গাযওয়াতুল হিন্দ –এর বাহিনি এবং ফিলিস্তিনের মুজাহিদ বাহিনী দুভয়ের মাঝে এক আত্মিক ও যুদ্ধ কেন্দ্রিক এক ভ্রতৃত্ব বন্ধন বিদ্যমান থাকবে। এবং জিহাদ-গাযওয়রে ক্ষেত্রে পরস্পর একে ওপরের সাহায্যকারী হবে। যার একটি প্রেক্ষাপট আজ তো আজ একেবারে দিবালোকের সুষ্পষ্ট যে, হিন্দ এর যুদ্ধ ভূমিতে মালাউন মুশরিক বাহিনি এবং রাসুল সা. এর মেরাজের পবিত্র পূণ্যময় ভূমিতে জায়ানবাদী হয়াহুদিদের পূর্ণ কব্জা বিদ্যমান। এদুভয় পরষ্পর মিত্র চুক্তিতে আবদ্ধ। মহান আললাহ রাব্বুল আলামিন হিন্দ এং ফিলিস্তিন মুসলিম যোদ্ধা বাহিনীর পরষ্পর সহযোগিতা এবং যুদ্ধ অংশ গ্রহনের মাধ্যমে এদের নাপাক কব্জা থেকে হিন্দ আকসার পবিত্র ভূমি পুনপবিত্র করবেন। আর ফিকাক ও ফকিহের এ বিষয়টিও দিবালোকের ন্যয় সুস্পষ্ট যে, সকল মুসলমানের উপর এ দুভূমি পবিত্র করা সমগ্র মুসলিম উম্মাার উপর আবশ্যক।
১৩.জিহাদ কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এই হাদিস সমূহের মাঝে জিহদেকে কোন নির্দিষ্ট যামানা বা সময়ের সাথে বিশিষ্ট করেন নি। যা পরোক্ষ ভাবে একথার ও দলিল যে, জিহাদ শেষ যামানা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এমনকি সায়্যেদুনা ঈসা আ. আসমান থেকে অবতারের পর দাজ্জালকে কতল করবে। আর এক কথা বিভিন্ন সহিহ হাদিসের মাদ্যমে প্রমাণিত যে, দাজ্জালের চাল-চামুন্ড এবং সহচরদের বিশাল অংশ হবে জাযানবাদী ইয়াহুদিদের মধ্য থেকে।
১৪.জিহাদের দুই ধারাই বিদ্যমান থাকবে।
এই সাত হাদিস থেকে কথা সুস্পষ্ট হয়যে, হিন্দ –এর যুদ্ধ শুধু দিফায়ী এর মাঝে সিমাবদ্ধ থাকবে না। বরং তা আগে বেড়ে সম্মুখ জিহাদ হবে। এবং দুরুল কুফুরে অনুপ্রবেশ করে মুশরিক কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা বৃকরা হবে। প্রথম হাদিসের বাআস এবং গাযওয়াত এ দুটি শব্দ থেকে বিষয়টি সুস্পষ্ট বুঝে আসে।কেননা গাযওয়ার এর আভিধানিত অর্থ ঞল একদামি বা আগ্রবেড়ে সম্মুখ জিহাদ।কতকের সুবিধা বদীর মতে জিহাদ দু প্রকার। এক. দাওয়াতী (গাযওয়ায়ে ফিকরী) দুই. আসকারী ও ফউজ বা বাহিনি ও সৈন্য দল প্রেরিত জিহাদ। তবে প্টরথমটি মাজায বা রূপক অর্থে জিহাদ। আর দ্বিতীয় প্রকারটি হল হাকিকি বা আক্ষরিক অর্থে জিহাদ। আর এই দু ধারাই ইসলামের শুরুর যামানা থেকে বিদ্যমান রয়ছে। কিন্তু আলোচনার লক্ষনীয় বিষয় এটা যে, আহাদিস সমূহে হিন্দ এর অন্চলে বিজয়ের জন্য যে জিহাদের কথা বলা হয়েছে তা *আসকারী বা সৈন্যদল অর্থাৎ মুজাহিদগণ দ্বারা পরিচালিত জিহাদ উদ্দেশ্য।
১৫.দুশমনকে চিহ্নিত করন।
উক্ত হাদিসে সমূহে ইসলাম এবং মুসলমানের দুই চির দুশমন কে চিহ্নিত করা হয়েছ। এক হল মূর্তি পূজক হিন্দু আর দ্বিতীয়ত ..... উপাসক ইয়াহুদী। যার বিস্তার বর্ণনা হল, রাসুল সা. হিন্দ ও সিন্দ -এর আলোচনা করেছেন। আর েএটা তো সুস্পষ্ট যে, এ গাযওয়াহ কাফেরদের মোকাবেলাতেই হবে। এ সত্য একবারে স্পষ্ট যে, হিন্দি এর পবিত্র ভূমি আজ হিন্দুদের দখলে। গেড়ুয়া সন্ত্রাস কুফ্ফারদের পূর্ণ দখলে। অপর দিকে সাওবান রা.এর হাদিস থেকে এ বিষয়ও ফুটে ওঠে যে, সায়্যিদুনা ঈসা আ. এবং তার সাথীগণ দাজ্জাল এবং তার সহযোগী হয়াহুদিদের বিরুদ্ধে লড়বে।
১৬.নবি সা এবং সাহাবাগণের মজলিসে হিন্দুস্থান যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা।
এই হাদিস থেকে জানা যায় যে,নবী কারীম সা. ও সাহাবাগণের মজলিসে হিন্দ এর আলোচনা হত। এবং বিভিন্ন বর্ণনা থেকে বুঝা যায় এ পুন্যময় যুদ্ধের আলোচনা বেশ হত।
১৭.গাযওয়াযে হিন্দের ব্যাপারে নবি এর ইচ্ছা এবং দিলের তামান্না।
নবি সা, এর তার সাহাবায়ে কেরাম রা. অনেক সময় হিন্দুস্তান যুদ্ধের আলেঅচনা করতো। এ কারনেই এ বিষয়ের দলিল, রাসুল সা. এর সকল সাহাবী এ যুদ্ধে অংশ গ্রহনের ইচ্ছা রাখতেন। এরটাও ফুটে ওঠে রাসুল সা. সাহাবাগণকে হিন্দ যুদ্ধের জন্য উদ্ভগ্ধ করতেন।
১৮.হিন্দুস্থান বিজয় রাসুল সা এর ওয়াদা।
হাদিসে দু ভাবেই বর্ণনা করা আছে। এক আমাকে ওয়াদা ওয়াদা করা হয়েছে। দুই আমাদের ওয়াদা করা হয়েছে। আর ওয়াদার উদ্দেশ্য কোন কল্যনের ওয়াদা। আর ওয়াদার মাঝে নিয়ত ও ইচ্ছা দুটোই পাওয়া যায়। এ থেকে বুঝা যায় রাসুল সা. এর অন্তরে গাযওয়াতুল হিন্দ এর নিয়ত মও দৃঢ় সংকল্প ছিল। আর তিনি হিন্দ লড়ায়ের আশা রাখতেন। আর রাসুল সা. এ তামান্না কখনো একজন সাহাবা কখনো সাহাবা কেরামের ভরা মজলিশে আলোচন করতেন। যাতে করে কেয়মতহ পর্যন্ত সকল উম্মাতের কাছে এ বার্তা পৈাছে যায়।
১৯.হিন্দুস্থান বিজয় মহান আল্লাহ তা‘আলার অঙ্গিকারও।
আবু আসেম রা. এর বর্ণনায় এই শব্দও এসেছে। আলেএলাহ ও তার রাসুল সা. ... ” আর এই শব্দই প্রমাণবহ গাযওয়াতুল হিন্দ এবং তার বিজয় শুধু মাত্র রাসুল সা. –এর অঙ্গিকারই নয় বরং তা মহান আল্লাহ তা‘আলাকৃত অঙ্গিকারও বটে। আল নিশ্চয় আল্লাহ অঙ্গিকারের বরখেলাফ করেন না। কুরআনে এসেছে,“অল্লআহর ওয়াদা। আল্লঅহ তার ওয়াদা খেলাফ করেন না।বিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।”
২০.যুদ্ধ ও জিহাদের উৎসাহ প্রদান।
আলোচ্য হাদিস সমূহে রাসুল সা. মুসলমানদেরকে যুদ্ধ জিহাদের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ বরেন,“...............................”
২১.সাম্রাজ্যবাদীদের অবাধ আধিপত্যের প্রতিকার।
হাদিস সমূহে উম্মাহের জন্য মুক্তির পথ ও বাতলে দেয়া হয়েছে। আর তা হল, পৃথীবিতে কাফের-মুশরিকদের বিজয় এবং সাম্রাজ্যবাদীদ ও উপনিবেশিক শক্তি ও সৈরাচারী কার্যক্রমের প্রতিরোধ একমাত্র জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ও যুদ্ধ জিহাদের মাঝেই নিহিত। এছাড়া বিলকুল ভিন্ন কোন পথ ও তরিকা নেই। আলোচনা,আন্তর্জাাতিক আদারতে মামলা এবৎ বন্ধু কিংবা নামে মাত্র সালিশের চেষ্টা কিংবা হস্তক্ষেপ সময় ক্ষেপন ছারা আর কিছু নয়।
২২.গাযওয়াযে হিন্দে মাল খরচ করার ফযিলত।
উপরোক্ত হাদিস সমূহে গাজওয়াতুল হিন্দে সম্পদ ব্যয় করার অনেক ফজিলত রর্ণিত হয়েছে। যদিও জিহাদের পথে সম্পদ খরচ করা অনেক উত্তম করচ। কিন্তু গাজওয়াতুল হিন্দে ব্যয় করার ফজিলত সাদারণত আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার চেয়ে অনেক বেশি। এই পজিলতের কারণেই আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু বারবার এই আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন, “আমি যদি গাজওয়া পেয়ে যাই তাহলে আমি আমার জীবন এবং নতুন-পুরাতন সকল সম্পদ তাতে ব্যয় করবো।”
২৩.গাযওয়াযে হিন্দে শাহাদাতের ফযিলত।
উপরোক্ত হাদিসসমূহ থেকে এটাও জানা যায়, এই গাজওয়াতে অংশগ্রহনকারী শহীদদেরও অনেক পজিলত। কেননা তাদের সম্পর্কে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “আফদালুশ-শুহাদা” এবং “খাইরুশ-শুহাদা” শব্দ বর্ণনা করেছেন।
২৪.গাযওয়াযে হিন্দের মুজাহিদগণের জাহান্নাম থেকে মুক্তির ছাড়পত্র।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে ঐ সকল মুজহিদদের জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুসংবাদ এসেছে, যারা এই গাজওয়ায় অংশগ্রহণ করবে এবং গাজী হয়ে ফিরে আসবে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’টি দলের কথা উল্লেখ করেছেন, “আল্লহ তা’আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।” প্রথম দল সম্পর্কে এটাও সুস্পষ্ট করেছেন, “তারা হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।” হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহুর কথায়ও এটা প্রমাণিত হয়, “আমি যদি সেই গাজওয়া থেকে গাজী ফিরে আসি, তাহলে আমি এক মুক্ত আবু হুরাইরা হবো। যাকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে দিয়েছেন।”
২৫.গাযওয়াযে হিন্দের শেষে বিজয়ের সুসংবাদ।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে এই সুসংবাদও বিদ্যমান, শেষ যুগে হজরত মাহাদী আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদিনা হজরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালামও পৃথিবীতে উপস্থিত হবেন। আল্লাহ তা’আলা হিন্দুস্থানের মুজাহিদদেরকে মহা বিজয় দান করবেন এবং তারা কাফিরদের নেতা এবং শামকদেরকে গ্রেপ্তার করে কয়েদী বানাবে।
২৬.গণিমতের মালের সুসংবাদ।
আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে প্রচুর পরিমানে গনীমতের সম্পদ দান করবেন।
২৭.সায়্যেদুনা ঈসা আ. এর সাথে সাক্ষাতের সুসংবাদ।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে একট সুসংবাদ এটাও পাওয়া যায, যে সকল মুজাহিদ এই পবিত্র গাজওয়ার শেষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে, তারা সাইয়্যিদিনা হজরত ঈশা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালামের বরকতময় সাক্ষাতের সৌভাগ্য লাভ করবে।
২৮.হিন্দুস্থান ছোট ছোট খন্ড রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যাবে।
উপরোক্ত হাদিসসমূহে সর্বশেষ এবং সুসংবাদ হলো, এই গাজওয়ার পরিণামে হিন্দুস্থান টুকরো টুকরো হয়ে ছোট ছোট রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে যাবে। যার উপর একজন শাসকের পরিবর্তে একই সময়ে কয়েকজন শাসকই রাজত্ব করবে।
এছাড়াও আহলে ইলমগন আরও অনেক সুসংবাদ উপরোক্ত হাদিসসমূহ থেকে বের করেছেন। তবে আমরা উপরোক্ত হাদিসসমূহের তাখরিজ ও তার শিক্ষা এবং ইশারা-ঈঙ্গিত নববী দিকনির্দেদনা সামগ্রিক ভাবে বিজ্ঞ পাঠকের ক্ষেদমতে উপস্থা্পন করে দিলাম।
২৯.“গাযওয়াযে হিন্দ ও গাযওয়ায়ে বদর” এক গাভির অন্তমিল।
.
.
.
.
৩০.মুসলমানগণের জিহাদি মারকায হবে খোরাসানে।
.
.
৩১.বাইতুল মাকদিস ইয়াহুদিদের কব্জায় থাকবে।
.
.
.
.
৩২.শামের মুসলমানগণের অবস্থা ন্যাক্কার জনক হবে।
.
.
.
৩৩.একই সময় ঐ বাহিনি ইয়াহুদি এবং হিন্দুদের মোকাবেলা করবে।
.
.
.
৩৪. খোরাসানে কালো পতাকাবাহী একটি দল বিদ্যমান থাকবে।
.
.
.
.
৩৫.গাযওয়াতুল হিন্দএর নেত্রৃত্ব দেবেন হযরত মাহাদি আ.।
.
.
.
.
৩৭.গাযওয়া নামকরেনে প্রেক্ষাপট।
আমরা পূর্বে আলোচনা থেকে এ কথা বুঝতে পেরেছি যে, গাযওয়াহ বলা হয় ঐ সকল যুদ্ধ সমূহকে যে যুদ্ধে সয়ং রাসূল সা. সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। এবং যুদ্ধে মুজাহিদিনে সাহাবাগণের দেখভাল এবং নেত্রৃত্ব দিয়েছেন। তাহলে গাযওয়ায়ে হিন্দকে কেন গাযওয়া বলা হয় অথচ রাসুল সা. তো এই যুদ্ধ-অভিযান পরিচালনা করবেন না ?
প্রশ্নের উত্তরে মুহাদ্দিসে কেরাম কয়েকটি দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেন। প্রথমত নবি সা. গাযওয়ায়ে মুতায় অংশগ্রহন করেননি। তবুও তাকে গাযওয়া নামেই নামকরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, হযরত মাহাদি আ. যেহেতু হুজুর সা. এর নায়েব পাশাপাশি এবং তাঁর উম্মত হবেন, তার উদ্দেশ্য হবে নবি সা. এর আনিত ধর্মকে বিশ্ব ব্যাপি বাস্তবায়ন করা এবং হযরত মাহাদি আ. যেহেতু তার বংশের হবেন, তাঁর হাম ইসমি হবেন ও হযরত মাহাদি আ. এই যুদ্ধ পরিচালনা করবেন তাই এ যুদ্ধকে গাযওয়া বলা হয়েছে। তৃতীয়ত কতক মুদাদ্দিসেনে কেরাম বলেন,
پیارے نبی صلی اللہ علیہ وسلم نے چونکہ اس غزوے کی تمام معلومات دیں اور عہد لیا کہ جو زندہ رہے وہ اس غزوے میں ضرور شریک ہو، تو نبی پاک صلی اللہ علیہ وسلم کی اس بیعت نے ان کو
اس غزوے کا سربراہ بنادیا اور یہ جنگ غزوہ قرار پائی۔
যেহেতু প্রিয় নবী এই গযওয়া সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দিয়েছিলেন এবং এই অঙ্গিকার নিয়েছিলেন যে, ব্যক্তি ঐ সময় বেঁচে থাকা অবশ্যই সে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। সুতরাং মহানবী সা. মূলত এই যুদ্ধের জন্য লোকদের থেকে বাইআত নিয়ে ছিলেন।
তাই তিনিই এই গাযওয়ার প্রধান পরিচালক। ফলে এক গাযওয়াহ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
৩৮.হযরত ইসা আ. এর আগমন গাযওয়াতুল হিন্দ ব্যাতিরেকে সম্ভব নয়।
পাকিস্থানের এক বিজ্ঞ আলেম বলেন,
حضرت عیسیٰ علیہ السلام کا نزول غزوہ ہند کے دوران ممکن نہیں، حضرت عیسیٰ علیہ السلام اُس وقت ظاہر ہوں گے جب حضرت مہدی غزوہ ہند کی فتوحات مکمل کرکے شام کی طرف بڑھیں گے
হযরত ঈসা আ. এর অবতার গযওয়াতুল হিন্দ ব্যাতিরেকে সম্ভব নয়, হযরত মাহদী যখন গাযওয়া বিজয় সম্পন্ন করে সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হবেন তখন ঈসা মসিহ আ. উপস্থিত হবেন।
Comment