Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল হিন্দ । সিমানা ও অপপ্রচার। (গাযওয়াতুল হিন্দ!কড়া নাড়ছে আপনার দুয়ারে!!৬ নং কিস্তি)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল হিন্দ । সিমানা ও অপপ্রচার। (গাযওয়াতুল হিন্দ!কড়া নাড়ছে আপনার দুয়ারে!!৬ নং কিস্তি)

    আল্রামা ইবনে কাসির র. সহ আরো অনেকেই এ স্থানে গুলিয়ে ফেলেছেন। সংশয়বাদীদের সংশয়ের মূল ভিক্তি এই ভূপর্যালোচনার উপর ভিক্তি করে। তাই এটা আলোচনা করা হল।

    তৃতীয় পাঠ
    প্রথম পাঠ আালোচনার মাধ্যমে গাযওয়াতুল হিন্দ এর সত্যতা ও বাস্তবতা আমাদের কাছে ফুটি উঠেছে। তো এবার আমাদের জানা প্রয়োজন আসলে হাদিসে বর্ণিত হিন্দ ও সিন্দ কোনটি। যদি আমরা হিন্দ ও সিন্দ এর ভৌগলিক আলোচনা করার মাধ্যমে তার সিমানা নির্ধারণ করতে পারি তাহলে তাহলে বর্তমান প্রেক্ষাপট ও পট পর্যালোচনা করতে আমাদের তেমন বেগ পেতে হবেনা।
    প্রথম অধ্যায়

    এ অধ্যায়ে আমরা হিন্দ এর সিমানা নির্ধারণ করবো। এ ক্ষেত্রে প্রথমে আমরা প্রচীন ভূগোলবিদগণের কিতাব সমূহ থেকে উদৃতি দেয়ার চেষ্টা করেছি।
    ভৌগলিক বিশ্লেষণঃ
    আমারা হাদিসের ব্যাক্ষা ও আলোচনায় দেখলাম যে, সিন্দ এবং হিন্দ দুটি এক নয়। উভয়টিরই ভৌগলিক সিমানা ভিন্ন। এবং সিন্দু আরব ভূখন্ডের নিকটে। এবার আমরা নিচের আলোচনায় সে স্থান দুটি নিয়ে ভৌগলিক বিশ্লেষন করবো।
    মুজামুল বুলদান
    শুরু থেকে আলোচনা করা যাক। রাসুল সা. এর জন্ম ৫৭০ খ্রিঃ। তিনি নবুওয়াত প্রাপ্ত হন ৪০ বছর বয়সে। অর্থাৎ নবুওয়াত প্রাপ্তির সময় খ্রিষ্ট সন চলছে ৬১০ সুতরাং আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৪০৯ বছর পূর্বে। চলুন আমরা ঘুরে দেখে আসি কেমন ছিল ১৪০৯ বছর আগের পৃথিবি ও তার ভৌগলিক অবস্থা।
    প্রথমে একটু প্রচিন কিতাব সমূহের আলোচনা থেকে শুরু করি। হিজরি ৫৭৯ সন । জন্ম গ্রহন করেন ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ আল-হামাবি আল-রুমি বাগদাদী। যার ডাক নাম ছিল শাহাবুদ্দীন আবু আব্দুল্লাহ। তিনি রচনা করেন শহর পরিচিতি নিয়ে কালের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ মুজামুল বুলদান (معجم البلدان) ।
    এই কিতাবটিতে তিনি প্রাচিন শহর এবং তার ভৌগলিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ভূপৃষ্ঠ কে ৭ ভাগে আল ইকলিম আস-সাবআ‘ হিসেবে আলোচনা করেন। তার এই সাত ভাগে ভাগ করার কারন হল মানুষজন পূর্ব থেকে এভাবেই অন্চল সমূহকে ভাগ করতো।
    ইকলিমের পরিচয় ইমাম মুহাম্মাদ আলি থানভি ( محمد علي التهانوي) আল-কাস্সাফ গ্রন্থে এভাবে দেন,

    قسم أهل الهيئة الأرض أربعة أقسام متساوية —بأن فرضوا على الأرض دائرتين إحداهما المسماة خط الاستواء والأخرى التي تمر بقطبيه— وسموا واحدا من تلك الأقسام بالربع المعمور والربع المسكون؛ ثم قسموا المعمور سبعة قطاع موازرية لخط الاستواء، فيتشابه أحوال البقاع الواقعة في ذلك القسم، وسموا تلك الأقسام بالأقاليم.

    ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ সাত ভাগে ভাগ করার প্রধন কারন হিসেবে উল্লেখ করেন,

    الأول: اصطلاح العامة وجمهور الأمة وهو الجاري على ألسنة الناس دائما وهو أن يسموا كل ناحية مشتملة على عدة مدن وقرى إقليما نحو الصين وخراسان والعراق والشام ومصر وإفريقية ونحو ذلك فالأقاليم على هذا كثيرة لا تحصى.

    এরপর তিনি প্রথম ভূখন্ড হিসেবে বলেন,

    فهو من المشرق يبتدىء من أقصى بلاد الصين ويمر على ما يلي الجنوب من الصين وفيه جزيرة سرنديب وعلى سواحل البحر في جنوب بلاد السند ثم يقطع البحر إلى جزيرة العرب وأرض اليمن.
    ইনশাআল্লাহ আমরা একটু পরেই চিত্রের মাধ্যমে এই স্থানটুকু নির্ণয় করার চেষ্টা করবো। তাই এখানে অনুবাদ তুলে ধরলাম না।
    অপরদিকে মুজামুল বুলদান গ্রন্থের তুলনায় অতি সুনির্দিষ্ট করে বর্ণনা দেন ইমাম আবু বকর অহমাদ বিন আলি বিন সাবেত খতিবে বাগদাদি, তারিখে বাগদাদ গ্রন্থে। তিনি প্রথম ইকলিম হিসেবে বলেন,
    الإقليم الأول منها إقليم بلاد الهند.
    এযাবত আলোচনা মোদ্দাকথা থেকে “আল-হিন্দ” -এর সিমানা নির্ণয় হল।
    অতএব এটা নিশ্চিত যে, প্রথম ইকলিম হল, ইকলিমে বিলাদে হিন্দ । নিচে তা চিত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট করে দেখানো হল।
    প্রথম চিত্র


    চিত্রটি এখানে যুক্ত করা যায়নি। তবে প্রিন্ট হলে ছেবে আসবে ইনশাআল্লাহ।

    দ্বিতীয় চিত্র


    চিত্রটি এখানে যুক্ত করা যায়নি। তবে প্রিন্ট হলে ছেবে আসবে ইনশাআল্লাহ।


    ১. من المشرق يبتدىء من أقصى بلاد الصين, চিনের প্রান্ত থেকে শুরু।

    ২. وفيه جزيرة سرنديب,স্বর্ণ দ্বিপ বা শ্রিলংকা এর অন্তভূক্ত।

    ৩. وعلى سواحل البحر في جنوب بلاد السند, এবং দক্ষিণ সমুদ্রের উপকূলে সিন্ধু দেশ।

    ৪. ثم يقطع البحر إلى جزيرة العرب وأرض اليمن,অতপর সমুদ্র শেষ হয়েছে আরব উপদ্বীপ এর ইয়েমেন অন্চলে।

    গ্রন্থাকার শুরু অর্থাৎ চিনের ভূমির কথা আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ويمر على ما يلي الجنوب من الصين, অর্থাৎ চিনের দক্ষিণে বরাবর নিচে যে আংশটুকু আছে তা। অর্থাৎ বাংলাদেশ,নেপাল,ভূটান এবংকি আরাকান,মায়ানমারের কিছু আংশও বটে।


    দ্বিতীয় অধ্যায়
    এবার আসা যাক “আস-সিন্ধ” -এর আলোচনায়। ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ আল-হামাবি আল-রুমি বাগদাদী আল মুজামুল বুলদান গ্রন্থে বলেন,

    অর্থাৎ সিন্ধুর বর্তমান ভৌগলিক সিমানা হল, হিন্দুস্তান কিরমান ও সিজিস্তোনের মধ্যবর্তী অন্চল। উত্তরে ও পশ্চিমে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ, উত্তরে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ, দক্ষিণ-পূর্বে ও পূর্বে ভারতের গুজরাট ও রাজস্থান অঙ্গরাজ্যদ্বয়, এবং দক্ষিণে আরব সাগর। নিচে চিত্র দ্রষ্টব্য।















    আমাদের এ যাবত আলোচনা থেকে প্রচিন হিন্দ ও সিন্দের সিমানা বুঝে আসলো। এবং এ কথা বুঝে আসলো যে, হিন্দ বলতে বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্থানের কিছু অংশ,নেপাল,ভূটান,শ্রীলংকা এবং আরাকান ও মায়ানমারের কিছু আংশ বুঝায় । আর এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভৌগলিক চিত্র ও সিমানা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ।



    তৃতীয় অধ্যায়
    এ অধ্যায়ে পুণরায় আমরা হিন্দ ও সিন্দ এর সিমানা নির্ধারনের চেষ্টা করবো। তবে মৌলিক ভাবে এ প্রমাণের ভিক্তি হবে অধুনিক ভূগোলবিদগণের তথ্য উপাত্য।
    প্রথম ও দ্বিতীয় অধ্যায়ে হিন্দ ও সিন্দের ভৌগলিক আলাচোনা ছিল ইসলামিক গবেষকগণের। যাদের এ ব্যাপারে বিশ্বাসের কমতি আছে তাদের জন্য নিচে অমুসলিম ভূগোল গবেষকগণের গ্রন্থ ও গবেষনা থেকে কিছু আলোচনা তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।
    আধুনিক ভূগল গবেষকগণ
    আধুনিক ভূগল গবেষকগণ ইসলাম পূর্ব ভারতের ইতিহাসকে ১৬ টি ভাগে ভাগ করেন।
    1. প্রস্তর যুগ- ৭০,০০০-৩৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    2. মেহেরগড়- ৭০০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    3. হরপ্পা ও মহেঞ্জদর সভ্যতা-৩৩০০-১৭০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    4. হরপ্পা সংস্কৃতি-১৭০০-১৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    5. বৈদিক যুগ-১৫০০-৫০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    6. লৌহ যুগ-১২০০-৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    7. ষোড়শ মহাজনপদ-৭০০-৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
    8. মগধ সাম্রাজ্য-৫৪৫ খ্রীষ্টপূর্ব
    9. মৌর্য সাম্রাজ্য-৩২১-১৮৪ খ্রীষ্টপূর্ব
    10. মধ্যকালীন রাজ্যসমূহ-২৫০ খ্রীষ্টপূর্ব
    11. চোল সাম্রাজ্য-২৫০ খ্রীষ্টপূর্ব
    12. সাতবাহন সাম্রাজ্য-২৩০ খ্রীষ্টপূর্ব
    13. কুষাণ সাম্রাজ্য-৬০-২৪০ খ্রীষ্টাব্দ
    14. গুপ্ত সাম্রাজ্য-২৮০-৫৫০ খ্রীষ্টাব্দ
    15. পাল সাম্রাজ্য• ৭৫০-১১৭৪ খ্রীষ্টাব্দ
    16. রাষ্ট্রকুট• ৭৫৩-৯৮২ খ্রীষ্টাব্দ এরপর (ইসলামি আমল শুরু)

    এবার আমরা যদি ১৪ নং গুপ্ত সাম্রাজ্য এর ভৌগলিক স্থান চিহ্নিত করতে পারি তাহলে আমাদের ৫৫০ খ্রীষ্টাব্দ এর ভারতের ভৌগলিক অবস্থান বুঝে আসবে। নিচে ৫৫০ খ্রীষ্টাব্দ এর ভৌগলিক ম্যাপ দেয়া হল।


    চিত্রটি এখানে যুক্ত করা যায়নি। তবে প্রিন্ট হলে ছেবে আসবে ইনশাআল্লাহ।

    গুপ্ত সাম্রাজ্য-২৮০-৫৫০ খ্রীষ্টাব্দ


    চিত্রটি এখানে যুক্ত করা যায়নি। তবে প্রিন্ট হলে ছেবে আসবে ইনশাআল্লাহ।

    নিচের আরেকটি চিত্রের মাধ্যমে ৭৫০-৯০০খ্রিঃ এর ম্যাপ দেয়া হল।
    পাল সাম্রাজ্য• ৭৫০-১১৭৪ খ্রীষ্টাব্দ

    চিত্রটি এখানে যুক্ত করা যায়নি। তবে প্রিন্ট হলে ছেবে আসবে ইনশাআল্লাহ।

    এই চিত্রে স্পষ্ট দেখা যায় যে, হিন্দের মত সিন্দও আলাদা একটি ভূঅংশ বলে পরিচিত।
    থমাস লেসম্যান

    এবার সিন্দ নিয়ে আলোচনা করা যাক। থমাস লেসম্যান (Thomas Lessman)।একজন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ। ২0 বছরেরও বেশি সময় যাবত বিশ্বের ইতিহাসের গবেষণা কাজে নিয়োজিত।তিনি www.worldhistorymaps.info ওয়েব সাইটে সিন্দুর একটি ম্যাপ প্রকাশ করেন। তার তথ্য মতে তিনি এটি ৭০০ খ্রিঃ( Sindh (Chachas) in 700 AD)এর ভৌগলিক অবস্থার উপর ভিক্তি করে তৈরী করেছেন। আমাদের পূর্ব উল্লেখিত ভৌগলিক সিমানাই তিনি সিন্দ এর জন্য নির্ধারণ করেছেন। প্রয়োজন হলে ঘুরে অসতে পারি তার ব্যাক্তিগত ওয়েব সাইট থেকে।

    আমাদের এ অলোচনা থেকে মোদ্দাকথা এটাই প্রতিয়মান হল যে, বর্তমান সীমারেখা অনুযায়ী বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থানের কিছু অংশ,নেপাল,ভূটান,শ্রীলংকা এবং আরাকান ও মায়ানমারের কিছু আংশ হাদিসে বর্ণিত হিন্দের অন্তভূক্ত। অতএব হাদিসে বর্ণিত কাঙ্খিত এবং প্রতিস্রুত গাযওয়ায়ে হিন্দ এই অন্চল সমূহেই অনুষ্ঠিত হবে। আর আলোচ্য দলিলাদির মাধ্যমে তা প্রমান করার পর এ বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।

  • #2
    প্রিয় ভাই,,,!!!
    আমি আপনার ঐ ছবিগুলোর অপেক্ষায় রইলাম,,,,,,

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তা‘আলা আপনার মেহনতকে কবুল করুন এবং তাতে বারাকাহ দান করুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        আপনার অপেক্ষা দ্রুত শেষ হোক। আমিন।
        https://archive.org/details/20190823_20190823_0719 এই লিংকি দেখুন।

        Comment

        Working...
        X