বাংলাদেশে স্যাভেজারির রূপরেখা এবং ম্যানেজমেন্ট অফ স্যাভেজারি বাই এ কিউ আই এস (AQIS)
শাইখ আবু বকর নাজী বিরচিত কিংবদন্তি গ্রন্থ - إ دارة التوحش অর্থাৎ' নৈরাজ্য ব্যবস্থাপনা' বা The Management of Savagery (দ্য ম্যানেজমেন্ট অফ স্যাভেজারী) বেশ উচ্চ মার্গীয় আরবিতে লিখিত ১১২ পৃষ্ঠার একটি গ্রন্থকর্ম। একবিংশ শতাব্দীর গ্লোবাল জিহাদের ত্বাত্তীক এবং অপারেশনাল কাঠামোটির প্রায় ৯০ শতাংশের পিছনে এযাবৎ প্রকাশিত যে দুইটি বইয়ের ব্যপক অবদান অনস্বীকার্য, তার একটি - শাইখ আবু মুস'আব আস সুরী (রাহি.) রচিত ১৬০০ পৃষ্ঠার ‘দাওয়াতুল মুকাওয়ামা বা (The Golobal Islamic Resistance Call)’ এবং অপরটি হল শাইখ নাজী (রাহি.) এর উপরেল্লিখিত বইটি - যা বিশ্ব কুফফার মিডিয়াও বে’শাক বিশ্বাস করে। বলাই বাহুল্য বইদুটি চাক্ষুস জিহাদের ময়দান থেকে উঠে আসা হীরকতুল্য সব অভিজ্ঞতার আলোকে গ্লোবাল জিহাদের স্ট্রাটেজি (strategy) ও দিকনির্দেশনা (Directives) সম্বলিত অনবদ্য দুটি অবশ্য পাঠ্য।
' নৈরাজ্য ব্যবস্থাপনা' বা The Management of Savagery (MOS) বইতে বলা সেই নৈরাজ্য ব্যাবস্থাপনা আসলে কি?
কিছুটা নিজের ভাষায় এভাবে বলা যায় যেঃ
কোন অঞ্চলে বা লোকালয়ে যেখানে কৌশলগত দিক থেকে সুবিধা পাওয়া সম্ভব (Strategically and Tactically viable) সেখানে একটি রাজনৈতিক শুন্যতা ও পরে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে নিয়ন্ত্রণহীন করে ফেলা , যেখানে স্বীকৃত কোন রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোর কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকে বা সেটি নিয়ন্ত্রণহীন করে ফেলা যায় ও চরম বিশৃংখলাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে বা করানো যায় এবং উক্ত দূর্বল অবস্থাকে যদি সক্ষমতা অনুযায়ী নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, নিজ দলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, টেকসই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও পূনর্গঠনের মাধ্যমে, ভবিষ্যতে নিজস্ব মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার অনুকূলে ব্যবহার করা হয় তাহলে এই পুরো কার্যক্রমকে ‘নৈরাজ্য ব্যবস্থাপনা’ বলা হয়। অর্থাৎ, প্রথমে নৈরাজ্য তৈরি করে একটি দেশ বা অঞ্চল কে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত ভাবে ভেঙ্গে চুরমার করে ( collapse করে) তাকে নিজের মত করে গুছিয়ে নেওয়া (ম্যানেজ করা)।
স্যাভেজারি বা নৈরাজ্য জনজীবনের জন্য চরম এক অচলাবস্থার অপর নাম যেখানে ঐ এলাকার মানুষজন অতি কষ্ট ও যন্ত্রণায় বলে উঠতে বাধ্য হয় - ভাই কেউ একজন এসে হাল ধর - আর পারছি না এত কষ্ট সহ্য করতে। উদাহরণ স্বরূপ- আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামাত, যদু মধু যেই হোক - কেউ একজন বাঁচাও ভাই আমাদেরকে।
ঠিক এমনই এক অচলাবস্থার দিকে দেশ কে সুকৌশলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আর সেটাই 'বাংলাদেশের স্যাভেজারির রূপ'। যৌথ প্রয়াসে যার চালকের সিটে রয়েছে দিল্লীর চাণক্য চাল ও নীতি আর হেল্পারের দ্বায়িত্বে বাধ্য ভৃত্য আওয়ামীলীগ ও এর সরকার, যাত্রীর আসনে আমরা সব।
আর নীল নকশাটি হলঃ প্রথমে একটি অনুকূল রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আনা এবং লম্বা সময় রাখা, এরপর তাদেরকে দিয়ে ২ টি কাজ করা। এক- দেশের রাজনৈতিক সাম্যতা নষ্ট করা অর্থাৎ বিরোধী দল গুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া - এটা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। দুই - দেশের প্রতিরক্ষা সেক্টর কে লুলা বানিয়ে দেওয়া - মানসিক ও বাহ্যিক উভয় দিক দিয়েই। যেটা ২০০৯ এ পিলখানায় হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে এবং পরে বাড়ি-গাড়ি-লোণ সুবিধা-রেশন স্কেল বৃদ্ধি ও জলসিড়িতে জমির পিছনে লেলিয়ে দিয়ে সহজেই হাসিল হয়েছে। এরপর ঐ অনুকূল রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সংখ্যা লঘু অধিকারের মোড়কে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভাবে একটি হিন্দু দল দাঁড় করিয়ে আনা। জনগণের চোখের সামনে হবে সব। সবাই ভাববে আরে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার তো খুবই যৌক্তিক হতেই হবে- হউক হউক, বি এন পি তো চোর - ওদেরকে দমনই করা ভাল - করা হউক করা হউক, কিংবা আওয়ামীলিগ কে তাড়ালে তো ঐ বি এন পি ই এসে দেশ চালাবে তার থেকে বাবা আওয়ামীলীগই তো বেশ সুশীল সুশীল লাগে, একটু জ্ঞানী লোকজন আছে এটাতে অতএব বিকল্প যেহেতু নেই তাহলে থাক আওমীলীগই থাক। আর আমি সাধারণ সিটিজেন, আদার ব্যাপারি জাহাজে খবর নিয়ে কি করব। দেশ কোথায় গেল সেটা নিয়ে আমি ভেবে কি আর বদলাতে বা ঠেকাতে পারব, বরং আমার তো সংসার চালাতে কাজ করতে হবে সেটাই করি। ব্যাস হয়ে গেল। এই সুবাদে হিন্দু সেই দলটি বেশ দুধ কলা খেয়ে খেয়ে ফণা জাগিয়ে উঠবে, আর খানিক বাড়ন্ত হলেই নির্বাচনে দাড় করিয়ে দেওয়া। বাকি রেজাল্ট তো জানাই আছে। অতঃপর সেই ফণা ধরা সাপ সংসদে, সংসদ থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। কেল্লা ফতে। ভারত মাতার রাজ্য তালিকায় মিসিং নামটি পুনরুদ্ধার তবে হয়েই গেল।
এই প্রসেস পুরা হতে কতদিন লাগবে বলে মনে করেন? এইতো কেবল ১৮ তে নির্বাচন হয়ে গেল। ৫ বছর পর আগামী ২৩ এ- ই এই কাহিনী হয়ত হতে চলেছে - আল্লাহু আলাম! এখনকার মত আর কিছুদিন আওয়ামীলিগ ও হিন্দু মহাজোট এরকম হাত ধরাধরি করে হাঁটলে মাশাআল্লাহ বাংলাদেশের বিরোধী দল হিসাবে হিন্দু মহাজোট এর আবির্ভাব আর কয়েক কদম মাত্র! বাকি বিরোধী দল গুলোকে তো নিকেশ করাই গেছে। কেউ এখন গৃহপালিত, কেউ বা আই সি ইউ তে... আর কেউ বা জেল জুলম ফাঁসি-কাষ্ঠের দুঃস্বপ্নে পলায়নপর যেটা আমরা আগের লেখাতে পড়েছি।
এখন এমনই যদি হয় ভবিষ্যৎ অবস্থা, তাহলে দেখুন মাঠে থাকবে হিন্দু মহাজোট তথা হিন্দু শক্তি, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে কে? আওয়মীলিগ? উঁহুঃ। সেও ততদিনে ভিতরে ভিতরে সম্রাট বা সঞ্জীবদের তাণ্ডবে ভংগুর অন্তঃসার শূন্য মাকাল। রাজনীতি তো তার ব্যাবসা বা টাকা করার মাধ্যম, সে এই নেশায় বুঁদ হয়ে আছে, তাই টাকা বা চাঁদা আসা ঠিক আছে তো সব ঠিক আছে। বাকি কঠিন চাণক্য চাল তার মাতাল মাথায় তেমন খেলে না, ভোঁ ভোঁ ব্যাথা করা ছাড়া।
ঠিক এমনই এক অবস্থায় যে দল টেক ওভার করতে পারবে, লিড নিতে পারবে তারাই জয়ী হবে, এলাকা, সম্পদ এবং জানগণ তাদেরই তাবেদারে যাবে। তা সে যেই ধর্মেরই হোক। এমনকি মেজরিটি জনগণের ধর্ম ঐ লিড নেওয়া দলের ধর্ম হতে ভিন্ন হলেও নেতা, নেতৃত্ব ও সঠিক ন্যারেটিভ এর অভাবে অনিচ্ছা স্বত্বেও জনগণ ঐ দলেরই নেতৃত্ব মেনে নিতে বাধ্য থাকবে, বাধ্য করা হবে। চানক্য নীতিই এমন। আর বাংলাদেশের জন্য সেই দলটি হতে চলেছে 'হিন্দু মহাজোট'। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস হবে সেটি! দেশের ৮০ ভাগ জনগণ মুসলিম হয়েও হিন্দু শাসন মেনে নেওয়ার দরকষাকষিতে গিয়ে ঠেকবে অবশেষে! করণ তা নাহলে খাদ্য পণ্যের দাম আকাশ চুম্বী করা হবে কৃত্রিম ভাবে বা হবে অটোমেটক্যালি কারণ দেশে মনোযোগ দিয়ে প্রোডাকশন থাকবে না দীর্ঘ সময় ধরে, দেশ ভারত থেকে আমদানি নির্ভর আছে এবং থাকবে। ক্ষুধার জালায় ছেলে মেয়ে মা বাবা মরে যেতে বসবে। রাতারাতি দেশের উৎপাদনও তো বাড়ানো যাবে না। তাই সবাই ট্রেড অফ করবে, অর্থাৎ বিচার করতে বসবে। ভাববে আপাততঃ ঐ হিন্দু মহাজোট ক্ষমতায় থাকলে ভারত থেকে কিছু চাল-ডাল আমদানি সহজ হবে সেটাই হয়ত ভালো, তা নাহলে না খেয়েই মৃত্যু! ঠিক একই চিপায় পড়বে দেশের প্রতিরক্ষা দল। তাদের পেপার টাইগাররা আজকের মতই হিসাব কষতে থাকবে - প্রতিবাদ করব না করব না। করলে কোটি কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। হা হা... কি ভয়ানক এক পরিস্থিতি ও পরীক্ষাই না হবে সেটি! আর সবার চোখের সামনে দেশ ঐ দিকেই আগাচ্ছে ...
মজার ব্যাপার হল - বিশ্বাস করুন আর নাই করুন এসময় ঐ ফণা ধরা বিষধরের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ও আশার আলো হবে আমাদের 'আনসার আল ইসলাম' তথা বর্তমানে এ কিউ আই এস (AQIS) এর বাংলাদেশ শাখা ইনশাআল্লাহু তা'আলা। এটাই ইসলামের পক্ষে সেই ভবিষ্যৎ প্লাটফর্ম যার পতাকা তলে এই দেশের ওলামায়ে-কেরাম ও তাদের বিদগ্ধ অনুসারীগণ দলে দলে যোগদান করতে চাইবেন বা করতে থাকবেন ইনশাআল্লাহ। তাওহীদবাদী বিশুদ্ধতম এই দলটি আজও যেমন মানেনা সেদিনও সেই কুফরের তাবেদারি তো মানবেই না বরং তাকে রুখে দিতে দাড়িয়ে যাবে পাহাড়ের মত। নতুন করে নয়, আজও সে যেমন দাঁড়িয়ে আছে সেদিনও থাকবে বরং আরও তেজোদীপ্ত আরও যৌক্তিক মনে হবে তাকে। অতএব 'ম্যানেজমেন্ট অফ সেভেজারি' টাও আমরাই করব ইনশাআল্লাহ। এই একিউআইএস এর কমান্ডের নিচেই সেনা, নৌ ও বিমান থেকে, ওদিকে পুলিশ সহ অন্যান্য বাহিনী থেকে আত্নসম্মান বোধ সম্পন্ন হেদায়েতপ্রাপ্ত ভাইয়েরা এসে যোগ দান করবেন ইনশাআল্লাহু তা'আলা। তারা নিজেদের ক্যান্টনমেন্ট ও ব্যারাক গুলো থেকে অস্ত্র গোলাবারুদের গুদাম গুলো উন্মুক্ত করে নেবেন, তথা কথিত চেইন অফ কমান্ড এর ধারও ধারবেন না এবং ঐ হিন্দু শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য একতাবদ্ধ হবেন - এই প্লাটফর্ম - তথা 'আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট' কে ঘিরে ইনশাআল্লাহ ইনশাআল্লাহ। তারা এটিকে বাংলাদেশ থেকে হিন্দের মাটি পর্যন্ত ছড়িয়ে দিবেন। ততদিনে আমাদের সাথে যোগদান করবেন আমাদের হিন্দের ২০ কোটি মুসলিম ভাই বোন। সকলে না হলেও সাধারণ এই মুসলিম জনগণ এর মধ্য হতে যুবকদের একটি দল এসে বায়াহ দিবেন ইনশাআল্লাহ। ওদিক থেকে আল্লাহ চাইলে খুরাসানের বিজয়ী শক্তি এসে আমাদের সাথে যোগদান করবে - অতঃপর আমরা বিপুল বিক্রমে ওদেরকে ধাওয়া দিব। ওরা যদি প্রতিরোধ গড়ে তোলে তো শুরু হবে সেই কাংখিত যুদ্ধ, আর যদি বা নাও করে তাহলেও বিশুদ্ধ ইসলাম তার স্বমহিমায় সমাসীন হবে এই বাংলা সহ উপমহাদেশের মাটিতে ইনশাআল্লাহু তা'আলা। আমীন ইয়া রাব্বিল আলামিন।
তাই প্রিয় সশস্ত্র বাহিনীর ভাইয়েরা আপনারা যে যেখানে আছেন এই মালহামা বা যুদ্ধের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিন এবং দেখুন কিভাবে আপনি আপনার ইউনিট এর অস্ত্র ভাণ্ডার সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে পারেন এবং যুবকদের কে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন তথা আপনার সর্বোচ্চটি দিতে পারেন। অপরদিকে আমাদের যুবক ভাইয়েরা আপনারা সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন। দরকার হলে নিজে নিজেই করুন, আমাদের লোণ উলফ ম্যাগাজিন আপনার হাতের নাগালেই আছে। আর আমাদের জন্য দুয়া করুন যেন মহান আল্লাহ তা আলা আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যে ইস্তেকবাল রাখেন এবং বিজয়ী করেন ইনশাআল্লাহ। না আমরা কোন সরকারকে বলি না - এই অপশক্তি কে রুখে দাও, আর না আমরা মনে করি তাদের সেই মোরাল স্ট্রেংথ রয়েছে। বরং আমরা এসকল কুলাঙ্গার সরকার কে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেই। আমরা আল্লাহ'র পক্ষ থেকে সত্যান্বেষী গণ-জোয়ারের প্রত্যাশী। আমরা জানি এই দেশের যুব সমাজের মধ্যে লুকিয়ে আছে আমাদের রিজার্ভ যাদের অন্তর ফিতরাতি ভাবেই ন্যায়ের পক্ষে দাড়িয়ে যায়, যে রিজার্ভ এর কথা শাইখ নাজি (রাহি) তার ম্যানেজমেন্ট অফ স্যাভেজারি বইতে উল্লেখ করেছেন (পড়ে নিতে অনুরোধ রইল ইনশাআল্লাহ)। ফি আমানিল্লাহ।
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْراً وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى القَوْمِ الكَافِرِينَ
হে আমাদের রব, আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন, আমাদের পা স্থির রাখুন এবং আমাদেরকে কাফের জাতির বিরুদ্ধে সাহায্য করুন।(সূরা আল বাকারাহ - ২:২৫০)
শাইখ আবু বকর নাজী বিরচিত কিংবদন্তি গ্রন্থ - إ دارة التوحش অর্থাৎ' নৈরাজ্য ব্যবস্থাপনা' বা The Management of Savagery (দ্য ম্যানেজমেন্ট অফ স্যাভেজারী) বেশ উচ্চ মার্গীয় আরবিতে লিখিত ১১২ পৃষ্ঠার একটি গ্রন্থকর্ম। একবিংশ শতাব্দীর গ্লোবাল জিহাদের ত্বাত্তীক এবং অপারেশনাল কাঠামোটির প্রায় ৯০ শতাংশের পিছনে এযাবৎ প্রকাশিত যে দুইটি বইয়ের ব্যপক অবদান অনস্বীকার্য, তার একটি - শাইখ আবু মুস'আব আস সুরী (রাহি.) রচিত ১৬০০ পৃষ্ঠার ‘দাওয়াতুল মুকাওয়ামা বা (The Golobal Islamic Resistance Call)’ এবং অপরটি হল শাইখ নাজী (রাহি.) এর উপরেল্লিখিত বইটি - যা বিশ্ব কুফফার মিডিয়াও বে’শাক বিশ্বাস করে। বলাই বাহুল্য বইদুটি চাক্ষুস জিহাদের ময়দান থেকে উঠে আসা হীরকতুল্য সব অভিজ্ঞতার আলোকে গ্লোবাল জিহাদের স্ট্রাটেজি (strategy) ও দিকনির্দেশনা (Directives) সম্বলিত অনবদ্য দুটি অবশ্য পাঠ্য।
' নৈরাজ্য ব্যবস্থাপনা' বা The Management of Savagery (MOS) বইতে বলা সেই নৈরাজ্য ব্যাবস্থাপনা আসলে কি?
কিছুটা নিজের ভাষায় এভাবে বলা যায় যেঃ
কোন অঞ্চলে বা লোকালয়ে যেখানে কৌশলগত দিক থেকে সুবিধা পাওয়া সম্ভব (Strategically and Tactically viable) সেখানে একটি রাজনৈতিক শুন্যতা ও পরে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে নিয়ন্ত্রণহীন করে ফেলা , যেখানে স্বীকৃত কোন রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোর কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকে বা সেটি নিয়ন্ত্রণহীন করে ফেলা যায় ও চরম বিশৃংখলাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে বা করানো যায় এবং উক্ত দূর্বল অবস্থাকে যদি সক্ষমতা অনুযায়ী নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, নিজ দলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, টেকসই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও পূনর্গঠনের মাধ্যমে, ভবিষ্যতে নিজস্ব মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার অনুকূলে ব্যবহার করা হয় তাহলে এই পুরো কার্যক্রমকে ‘নৈরাজ্য ব্যবস্থাপনা’ বলা হয়। অর্থাৎ, প্রথমে নৈরাজ্য তৈরি করে একটি দেশ বা অঞ্চল কে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত ভাবে ভেঙ্গে চুরমার করে ( collapse করে) তাকে নিজের মত করে গুছিয়ে নেওয়া (ম্যানেজ করা)।
স্যাভেজারি বা নৈরাজ্য জনজীবনের জন্য চরম এক অচলাবস্থার অপর নাম যেখানে ঐ এলাকার মানুষজন অতি কষ্ট ও যন্ত্রণায় বলে উঠতে বাধ্য হয় - ভাই কেউ একজন এসে হাল ধর - আর পারছি না এত কষ্ট সহ্য করতে। উদাহরণ স্বরূপ- আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামাত, যদু মধু যেই হোক - কেউ একজন বাঁচাও ভাই আমাদেরকে।
ঠিক এমনই এক অচলাবস্থার দিকে দেশ কে সুকৌশলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আর সেটাই 'বাংলাদেশের স্যাভেজারির রূপ'। যৌথ প্রয়াসে যার চালকের সিটে রয়েছে দিল্লীর চাণক্য চাল ও নীতি আর হেল্পারের দ্বায়িত্বে বাধ্য ভৃত্য আওয়ামীলীগ ও এর সরকার, যাত্রীর আসনে আমরা সব।
আর নীল নকশাটি হলঃ প্রথমে একটি অনুকূল রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আনা এবং লম্বা সময় রাখা, এরপর তাদেরকে দিয়ে ২ টি কাজ করা। এক- দেশের রাজনৈতিক সাম্যতা নষ্ট করা অর্থাৎ বিরোধী দল গুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া - এটা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। দুই - দেশের প্রতিরক্ষা সেক্টর কে লুলা বানিয়ে দেওয়া - মানসিক ও বাহ্যিক উভয় দিক দিয়েই। যেটা ২০০৯ এ পিলখানায় হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে এবং পরে বাড়ি-গাড়ি-লোণ সুবিধা-রেশন স্কেল বৃদ্ধি ও জলসিড়িতে জমির পিছনে লেলিয়ে দিয়ে সহজেই হাসিল হয়েছে। এরপর ঐ অনুকূল রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সংখ্যা লঘু অধিকারের মোড়কে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভাবে একটি হিন্দু দল দাঁড় করিয়ে আনা। জনগণের চোখের সামনে হবে সব। সবাই ভাববে আরে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার তো খুবই যৌক্তিক হতেই হবে- হউক হউক, বি এন পি তো চোর - ওদেরকে দমনই করা ভাল - করা হউক করা হউক, কিংবা আওয়ামীলিগ কে তাড়ালে তো ঐ বি এন পি ই এসে দেশ চালাবে তার থেকে বাবা আওয়ামীলীগই তো বেশ সুশীল সুশীল লাগে, একটু জ্ঞানী লোকজন আছে এটাতে অতএব বিকল্প যেহেতু নেই তাহলে থাক আওমীলীগই থাক। আর আমি সাধারণ সিটিজেন, আদার ব্যাপারি জাহাজে খবর নিয়ে কি করব। দেশ কোথায় গেল সেটা নিয়ে আমি ভেবে কি আর বদলাতে বা ঠেকাতে পারব, বরং আমার তো সংসার চালাতে কাজ করতে হবে সেটাই করি। ব্যাস হয়ে গেল। এই সুবাদে হিন্দু সেই দলটি বেশ দুধ কলা খেয়ে খেয়ে ফণা জাগিয়ে উঠবে, আর খানিক বাড়ন্ত হলেই নির্বাচনে দাড় করিয়ে দেওয়া। বাকি রেজাল্ট তো জানাই আছে। অতঃপর সেই ফণা ধরা সাপ সংসদে, সংসদ থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। কেল্লা ফতে। ভারত মাতার রাজ্য তালিকায় মিসিং নামটি পুনরুদ্ধার তবে হয়েই গেল।
এই প্রসেস পুরা হতে কতদিন লাগবে বলে মনে করেন? এইতো কেবল ১৮ তে নির্বাচন হয়ে গেল। ৫ বছর পর আগামী ২৩ এ- ই এই কাহিনী হয়ত হতে চলেছে - আল্লাহু আলাম! এখনকার মত আর কিছুদিন আওয়ামীলিগ ও হিন্দু মহাজোট এরকম হাত ধরাধরি করে হাঁটলে মাশাআল্লাহ বাংলাদেশের বিরোধী দল হিসাবে হিন্দু মহাজোট এর আবির্ভাব আর কয়েক কদম মাত্র! বাকি বিরোধী দল গুলোকে তো নিকেশ করাই গেছে। কেউ এখন গৃহপালিত, কেউ বা আই সি ইউ তে... আর কেউ বা জেল জুলম ফাঁসি-কাষ্ঠের দুঃস্বপ্নে পলায়নপর যেটা আমরা আগের লেখাতে পড়েছি।
এখন এমনই যদি হয় ভবিষ্যৎ অবস্থা, তাহলে দেখুন মাঠে থাকবে হিন্দু মহাজোট তথা হিন্দু শক্তি, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে কে? আওয়মীলিগ? উঁহুঃ। সেও ততদিনে ভিতরে ভিতরে সম্রাট বা সঞ্জীবদের তাণ্ডবে ভংগুর অন্তঃসার শূন্য মাকাল। রাজনীতি তো তার ব্যাবসা বা টাকা করার মাধ্যম, সে এই নেশায় বুঁদ হয়ে আছে, তাই টাকা বা চাঁদা আসা ঠিক আছে তো সব ঠিক আছে। বাকি কঠিন চাণক্য চাল তার মাতাল মাথায় তেমন খেলে না, ভোঁ ভোঁ ব্যাথা করা ছাড়া।
ঠিক এমনই এক অবস্থায় যে দল টেক ওভার করতে পারবে, লিড নিতে পারবে তারাই জয়ী হবে, এলাকা, সম্পদ এবং জানগণ তাদেরই তাবেদারে যাবে। তা সে যেই ধর্মেরই হোক। এমনকি মেজরিটি জনগণের ধর্ম ঐ লিড নেওয়া দলের ধর্ম হতে ভিন্ন হলেও নেতা, নেতৃত্ব ও সঠিক ন্যারেটিভ এর অভাবে অনিচ্ছা স্বত্বেও জনগণ ঐ দলেরই নেতৃত্ব মেনে নিতে বাধ্য থাকবে, বাধ্য করা হবে। চানক্য নীতিই এমন। আর বাংলাদেশের জন্য সেই দলটি হতে চলেছে 'হিন্দু মহাজোট'। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস হবে সেটি! দেশের ৮০ ভাগ জনগণ মুসলিম হয়েও হিন্দু শাসন মেনে নেওয়ার দরকষাকষিতে গিয়ে ঠেকবে অবশেষে! করণ তা নাহলে খাদ্য পণ্যের দাম আকাশ চুম্বী করা হবে কৃত্রিম ভাবে বা হবে অটোমেটক্যালি কারণ দেশে মনোযোগ দিয়ে প্রোডাকশন থাকবে না দীর্ঘ সময় ধরে, দেশ ভারত থেকে আমদানি নির্ভর আছে এবং থাকবে। ক্ষুধার জালায় ছেলে মেয়ে মা বাবা মরে যেতে বসবে। রাতারাতি দেশের উৎপাদনও তো বাড়ানো যাবে না। তাই সবাই ট্রেড অফ করবে, অর্থাৎ বিচার করতে বসবে। ভাববে আপাততঃ ঐ হিন্দু মহাজোট ক্ষমতায় থাকলে ভারত থেকে কিছু চাল-ডাল আমদানি সহজ হবে সেটাই হয়ত ভালো, তা নাহলে না খেয়েই মৃত্যু! ঠিক একই চিপায় পড়বে দেশের প্রতিরক্ষা দল। তাদের পেপার টাইগাররা আজকের মতই হিসাব কষতে থাকবে - প্রতিবাদ করব না করব না। করলে কোটি কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। হা হা... কি ভয়ানক এক পরিস্থিতি ও পরীক্ষাই না হবে সেটি! আর সবার চোখের সামনে দেশ ঐ দিকেই আগাচ্ছে ...
মজার ব্যাপার হল - বিশ্বাস করুন আর নাই করুন এসময় ঐ ফণা ধরা বিষধরের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ও আশার আলো হবে আমাদের 'আনসার আল ইসলাম' তথা বর্তমানে এ কিউ আই এস (AQIS) এর বাংলাদেশ শাখা ইনশাআল্লাহু তা'আলা। এটাই ইসলামের পক্ষে সেই ভবিষ্যৎ প্লাটফর্ম যার পতাকা তলে এই দেশের ওলামায়ে-কেরাম ও তাদের বিদগ্ধ অনুসারীগণ দলে দলে যোগদান করতে চাইবেন বা করতে থাকবেন ইনশাআল্লাহ। তাওহীদবাদী বিশুদ্ধতম এই দলটি আজও যেমন মানেনা সেদিনও সেই কুফরের তাবেদারি তো মানবেই না বরং তাকে রুখে দিতে দাড়িয়ে যাবে পাহাড়ের মত। নতুন করে নয়, আজও সে যেমন দাঁড়িয়ে আছে সেদিনও থাকবে বরং আরও তেজোদীপ্ত আরও যৌক্তিক মনে হবে তাকে। অতএব 'ম্যানেজমেন্ট অফ সেভেজারি' টাও আমরাই করব ইনশাআল্লাহ। এই একিউআইএস এর কমান্ডের নিচেই সেনা, নৌ ও বিমান থেকে, ওদিকে পুলিশ সহ অন্যান্য বাহিনী থেকে আত্নসম্মান বোধ সম্পন্ন হেদায়েতপ্রাপ্ত ভাইয়েরা এসে যোগ দান করবেন ইনশাআল্লাহু তা'আলা। তারা নিজেদের ক্যান্টনমেন্ট ও ব্যারাক গুলো থেকে অস্ত্র গোলাবারুদের গুদাম গুলো উন্মুক্ত করে নেবেন, তথা কথিত চেইন অফ কমান্ড এর ধারও ধারবেন না এবং ঐ হিন্দু শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য একতাবদ্ধ হবেন - এই প্লাটফর্ম - তথা 'আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট' কে ঘিরে ইনশাআল্লাহ ইনশাআল্লাহ। তারা এটিকে বাংলাদেশ থেকে হিন্দের মাটি পর্যন্ত ছড়িয়ে দিবেন। ততদিনে আমাদের সাথে যোগদান করবেন আমাদের হিন্দের ২০ কোটি মুসলিম ভাই বোন। সকলে না হলেও সাধারণ এই মুসলিম জনগণ এর মধ্য হতে যুবকদের একটি দল এসে বায়াহ দিবেন ইনশাআল্লাহ। ওদিক থেকে আল্লাহ চাইলে খুরাসানের বিজয়ী শক্তি এসে আমাদের সাথে যোগদান করবে - অতঃপর আমরা বিপুল বিক্রমে ওদেরকে ধাওয়া দিব। ওরা যদি প্রতিরোধ গড়ে তোলে তো শুরু হবে সেই কাংখিত যুদ্ধ, আর যদি বা নাও করে তাহলেও বিশুদ্ধ ইসলাম তার স্বমহিমায় সমাসীন হবে এই বাংলা সহ উপমহাদেশের মাটিতে ইনশাআল্লাহু তা'আলা। আমীন ইয়া রাব্বিল আলামিন।
তাই প্রিয় সশস্ত্র বাহিনীর ভাইয়েরা আপনারা যে যেখানে আছেন এই মালহামা বা যুদ্ধের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিন এবং দেখুন কিভাবে আপনি আপনার ইউনিট এর অস্ত্র ভাণ্ডার সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে পারেন এবং যুবকদের কে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন তথা আপনার সর্বোচ্চটি দিতে পারেন। অপরদিকে আমাদের যুবক ভাইয়েরা আপনারা সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন। দরকার হলে নিজে নিজেই করুন, আমাদের লোণ উলফ ম্যাগাজিন আপনার হাতের নাগালেই আছে। আর আমাদের জন্য দুয়া করুন যেন মহান আল্লাহ তা আলা আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যে ইস্তেকবাল রাখেন এবং বিজয়ী করেন ইনশাআল্লাহ। না আমরা কোন সরকারকে বলি না - এই অপশক্তি কে রুখে দাও, আর না আমরা মনে করি তাদের সেই মোরাল স্ট্রেংথ রয়েছে। বরং আমরা এসকল কুলাঙ্গার সরকার কে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেই। আমরা আল্লাহ'র পক্ষ থেকে সত্যান্বেষী গণ-জোয়ারের প্রত্যাশী। আমরা জানি এই দেশের যুব সমাজের মধ্যে লুকিয়ে আছে আমাদের রিজার্ভ যাদের অন্তর ফিতরাতি ভাবেই ন্যায়ের পক্ষে দাড়িয়ে যায়, যে রিজার্ভ এর কথা শাইখ নাজি (রাহি) তার ম্যানেজমেন্ট অফ স্যাভেজারি বইতে উল্লেখ করেছেন (পড়ে নিতে অনুরোধ রইল ইনশাআল্লাহ)। ফি আমানিল্লাহ।
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْراً وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى القَوْمِ الكَافِرِينَ
হে আমাদের রব, আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন, আমাদের পা স্থির রাখুন এবং আমাদেরকে কাফের জাতির বিরুদ্ধে সাহায্য করুন।(সূরা আল বাকারাহ - ২:২৫০)
Comment