Announcement

Collapse
No announcement yet.

মুরাগামাহ্: একটি ভুলে যাওয়া আমল!!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মুরাগামাহ্: একটি ভুলে যাওয়া আমল!!

    মুরাগামাহ্: একটি ভুলে যাওয়া আমল!!
    - শাইখ আবদুল্লাহ্ আযযাম,
    শাইখুল ইসলাম ইবনু কাইয়িম আল-জাওজিয়্যাহ রহিমাহুমাল্লাহ্
    .
    ইবনু আল-কাইয়িম তাঁর 'মাদারিজ আস-সালিকিন' (১/২২২-২২৩) গ্রন্থে বলেন,
    'দাওয়াহ্ ইল্লাল্লাহ্ ও আল্লাহর নির্দেশ পালনে যে যত বেশি দৃঢ়তা অবলম্বনকারী, শত্রুরা মূর্খদের সহায়তায় তাকে উত্তেজিত করতে তত বেশি তৎপর হয়। সুতরাং, সে অপরিহার্যভাবে নিজেকে বর্মে আচ্ছাদিত করে এবং সকল বাধাবিপত্তির মোকাবেলা করে। এভাবে সে আল্লাহর জন্য ও আল্লাহর নামে শত্রুর মুখোমুখি হয়। একে বলে মুরাগামাহ এবং এটি আল্লাহর আরিফ বান্দাদের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদাত। পরিপূর্ণ ও তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া কেউ এব্যাপারে সতর্ক থাকে না।
    .
    আল্লাহর কাছে এর চেয়ে প্রিয় আর কিছুই নেই যে, তার এক আওলিয়া মুরাগামাহয় লিপ্ত এবং এর মাধ্যমে সে আল্লাহর শত্রুদের ক্রোধে নিপতিত করে। আল্লাহ্ কুরআনের বহু জায়গায় এধরনের ইবাদাতের ইংগিত প্রদান করেছেন।
    যেমন, 'যে আল্লাহর পথে হিজরত করে সে পৃথিবীতে বহু আশ্রয়স্থল (মুরাগামাহ্) ও প্রাচুর্য লাভ করবে...' [আন নিসা, আয়াত ১০০]

    সুতরাং যে আল্লাহর ইবাদাতের উদ্দেশ্যে হিজরত করে সে একজন মুরাগিম। এর ফলে সে আল্লাহর ও তার শত্রুদের অন্তরে ক্রোধের উদ্রেক করে। আল্লাহ্ তার আওলিয়াদের মধ্য হতে এমন ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, যে মুরাগামাহয় লিপ্ত হয় এবং তাঁর শত্রুদের রাগান্বিত করে। যেমনটা আল্লাহ্ বলেছেন, 'এটা এ কারণে যে, আল্লাহর পথে তারা যে তৃষ্ণা, ক্লান্তি ও ক্ষুধা সহ্য করে এবং তাদের এমন সব পদক্ষেপ যা কাফিরদের ক্রোধ উদ্রেক করে এবং শত্রুদেরকে তারা যা-ই ক্ষতিসাধন করে, তার বিনিময়ে তাদের জন্য সৎকর্ম লিপিবদ্ধ করা হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিফল নষ্ট করেন না।' [আত-তাওবাহ্, আয়াত ১২০]
    .
    আল্লাহ্ তাঁর রাসুল ও তার অনুসারীদের উদাহরণ বর্ণনা করেছেন এভাবে, 'আর ইনজীলে তাদের বর্ণনা এরূপ যেমন একটি বীজ, যা (বপন করার পর) তার অংকুর উদ্*গত করে, অতঃপর আল্লাহ তাকে শক্ত করেন এবং অংকুরটি ক্রমে মোটা হয় ও নিজের কাণ্ডের ওপর সোজা হয়ে দাঁড়ায়, যা চাষীদেরকে মুগ্ধ করে। (একইভাবে, আল্লাহ্ মুমিনদেরকে ক্রমে শক্তিশালী করেন) যাতে তিনি তাদের দ্বারা কাফিরদেরকে ক্রোধান্বিত করতে পারেন।' [আল-ফাতহ্, ২৯]

    সুতরাং কাফিরদের ক্রোধান্বিত করা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় ও অবশ্য করণীয়। আল্লাহর একান্ত অনুগত বান্দারাই কেবল এর বাস্তবায়ন ঘটাতে সমর্থ হয়।
    .
    সালাত আদায়কালে রাকায়াত সংখ্যা বা ক্রম ভুলে যাওয়া কিংবা এনিয়ে সন্দেহে পতিত ব্যক্তির জন্য নবি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিধান বর্ণনা করেন যে, সে দুইটি ভুলে যাওয়ার সিজদাহ (সাহু সিজদাহ) দিবে এবং তিনি বলেন, 'যদি প্রথম অবস্থাতেই তার সালাত বিশুদ্ধ হয়, তবে সে শয়তানকে রাগান্বিত করে।', এবং তিনি তাদেরকে 'আল-মুরগিমাতাইন' নামে অভিহিত করেছেন।
    .
    সুতরাং যে আল্লাহর শত্রুকে ক্রুদ্ধ করার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত করে সে পুরোপুরি হকের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং একজন বান্দা তার রবকে যত বেশি ভালোবাসে, যত বেশি তার রবের সাহায্যকারী হয় এবং তাঁর শত্রুদের বিরোধিতা করে, সে তত বেশি মুরাগামাহর আমলে লিপ্ত থাকে। মুরাগামাহর ফলেই কেউ সদর্পে চলার যোগ্যতা লাভ করে, যুদ্ধে সৈন্যসারিতে দাঁড়ানো অবস্থায় রিয়া প্রদর্শন করে এবং যখন সে গোপনে দান সাদাকাহ করে ও আল্লাহ ব্যতীত কেউই তাকে দেখতে পায় না, তখনও সে মুরাগামাহয় লিপ্ত থাকে। কারণ এভাবে তার নিজেকে ও তার সম্পদ ত্যাগের কারণে শত্রুরা ক্রুদ্ধ হয়।
    অতি অল্পসংখ্যকরাই এ প্রকার ইবাদাত সম্পর্কে জ্ঞাত এবং যে কেউই এর স্বাদ ও মিষ্টতা উপভোগ করে, সে তার অতিক্রান্ত দিনগুলোর জন্য (আফসোসে) কেঁদে ওঠবে।'
    ___
    পরিশেষে, শাইখ আবদুল্লাহ আযযাম তাঁর 'ফি যিলাল সুরাত আত-তাওবাহ' (পৃ. ২২) এ বলেন,

    'কখন তারা তোমাকে গ্রহণ করবে? হয় তুমি তোমার ইমান পরিত্যাগ করবে কিংবা তারা তাদের পাপ থেকে বিরত হবে, আর তা কখনোই হবে না। যদি তারা তাদের পাপ থেকে বিরত হয়, এর মানে সবাই মুসলিম হয়ে যাবে এবং সব দ্বন্দের অবসান ঘটবে। আর যদি তোমরা তোমাদের ইসলামকে পরিত্যাগ করো, তার মানে তোমরা সবাই দুনিয়াতে শির্কে লিপ্ত হবে। সুতরাং, দ্বন্দ্ব চলতেই থাকে..

    '...হে কিতাবধারীরা, কেবল এ কারণে কি তোমরা আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ কর যে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে এবং পূর্বে নাযিল হয়েছে তার প্রতি? আর নিশ্চয়ই তোমাদের অধিকাংশ ফাসিক।' [আল-মায়িদাহ, আয়াত ৫৯]
    সুতরাং, তাদের পাপ ও আমাদের ইমান এদুটিই মূল কারণ।
    .
    তাই, তুমি যদি আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন কিংবা মুসলিম বিশ্বের অত্যাচারী ও অপরাধীদের প্রতি তাকাও – যদি তুমি তাদেরকে কারো প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত দেখো, তাহলে সেই ব্যক্তির ইসলাম ও ইমানের ব্যাপারে তোমাদের সংশয় থাকা উচিত। আশা করি, তোমরা বুঝতে পেরেছো। এটা এজন্য যে, আল্লাহ্ একটি অকাট্য ও অপরিবর্তনীয় বিধান নাযিল করেছেন এবং সেখানে বলা হয়েছে, 'ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা কখনোই তোমার ওপর সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মের অনুসরণ করো...।' [আল বাকারাহ, আয়াত ১২০]
    .
    [সোর্স: muwahhidmedia.wordpress.com]

  • #2
    মাশাআল্লাহ। খুবই চমৎকার আলোচনা। আল্লাহপাক আমাদের কবুল করুন... আমিন।
    হে মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও।

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ বেশ ভালো একটি পোস্ট
      জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
      পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

      Comment

      Working...
      X