Announcement

Collapse
No announcement yet.

নেক কাজের তাউফিক একটি অমুল্য নিয়ামত!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নেক কাজের তাউফিক একটি অমুল্য নিয়ামত!

    বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু আস সালাম আলা রাসুলিল্লাহ।

    বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ সমূহের মধ্যে একটি হচ্ছে নেক কাজের তাওফিক। নেক কাজের তাওফিক অনেক বড় একটি নিয়ামত। আমরা মনে করি, চাইলেই আমরা হয়ত কোন নেক কাজ করতে পারি। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়, আর এ বিষয়টি বুঝতে না পারার কারণে আমরা তাউফিকের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারিনা, নিয়ামত হিসেবে তাউফিক চিহ্নিত করতে পারিনা। আর যখন তা পারিনা তখন স্বাভাবিক নিয়মে আমি, আমরা নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় থেকেও গাফেল থেকে যাই। কারণ নিয়ামত যদি না চিনতে পারি তাহলে শুকরিয়া আদায়ের প্রসঙ্গ কিভাবে আসবে! এর ফলে দেখা যায় আমাদের জীবনে নিয়ামতের পরিমাণ কমতে থাকে, কারণ রাসুল (সাঃ) বলেছেন, (ভাবার্থে) আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করার কারণে আল্লাহ্* তা উঠিয়ে নেন এবং অন্য কাউকে দান করেন।

    এক ভাইয়ের ঘটনা জানি - উনি একবার নিয়াত করলেন আল্লাহ্* চান তো আজ আমি কোন একটা ভালো কাজ করব। কি করা যায় এমন চিন্তা করতে থাকলেন। উনি এক আনসার ভাইয়ের বাসায় ছিলেন। তখন মাসের প্রায় শেষ এবং যে কোন কারণে উনার আনসার ভাইয়ের হাতের টাকাও প্রায় শেষ। তখন তিনি ভাবলেন আচ্ছা, আমি আমার আনসার ভাইয়ের মানিব্যাগে ৫০০০ টাকা রেখে দেই। আনসার ভাই জানবেন না টাকা কিভাবে আসলো বা হয়ত উনি বুঝতেই পারবেন না। আর কাজটি গোপন আমল হিসেবে কবুল হলে আল্লাহ ও খুশি হবেন! কিন্তু দুর্বলতার কারণে শেষ পর্যন্ত উনি তা করতে পারলেন না। ৫০০০ টাকা উনার কাছে বেশ ভারী মনে হচ্ছিলো।

    এরপরে তিনি মসজিদে গেলেন যোহরের নামাজ পড়তে। নামাজ শেষে দেখলেন আল্লাহর এক বান্দা সাহায্যের জন্য দাঁড়িয়েছেন। সেই ভাই ভাবলেন, আমি তো আমার আনসার ভাইকে ৫০০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করতে পারিনি সত্য, কিন্তু আল্লাহ্* চাইলে আমি এই ভাইকে তো কিছু সাহায্য করতেই পারি। এরপরে তিনি সেই ভাইকে ১০০০ টাকা সাদাকাহ করলেন।

    ভাইয়ের ভাষ্যমতে, - প্রথমে যখন আমি ৫০০০ টাকার নিয়াত করেছিলাম তখন আমার দুর্বলতার জন্য আমি তা করতে পারিনি। কিন্তু আল্লাহ্* আমার দুর্বলতার কথা আমার চেয়েও সবচেয়ে উত্তম জানতেন। তাই তিনি ঐ একই দিনে যোহরের সময়ে আমার সামনে আরেকটি সুযোগ দিলেন - যা আমার জন্য সহজ হয়। আমার তো মনে হয়েছিলো, যদি আমি ঐ ১০০০ টাকার ব্যাপারেও পাশ না করতে পারতাম তাহলে আল্লাহ্* হয়ত আমাকে ৫০০ টাকার কোন সুযোগ দান করতেন, আল্লাহ্* না করুন যদি আমি তাও পাশ না করতাম হয়ত তিনি আমাকে ৫০ টাকা সাদাকার কোন সুযোগ দিতেন। আসলে আল্লাহ্* এভাবে তাঁর বান্দাদের সামনে সুযোগ দান করতেই থাকেন যেন বান্দা তা গ্রহন করে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তাউফিক প্রাপ্ত হয় আল্লাহর আরো নিকটবর্তী হবার ব্যাপারে।

    তবে হ্যা, আল্লাহ্* না করুন এমনও কখনো হয় - আমরা এমন উদাসীন থাকি যে, আমাদের সামনে আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন নেক কাজের সুযোগ আসতেই থাকে একের পর এক কিন্তু আমরা সে ব্যাপারে কোন খেয়ালই রাখিনা। আর এমন ভাবে আমাদের অনবরত উদাসীনতার কারণে কোন একদিন আমরা হয়ত এসব নিয়ামত থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়ে যাই যা আমাদের চেতনাতেও থাকেনা! অর্থাৎ আমরা নেক কাজের কোন তাউফিক পাইনা, নেক কাজের কোন আকাঙ্খা আমাদের অন্তরে আসেনা! যদি চিন্তা করে দেখতাম তাহলে হয়ত আমরা খুঁজে পেতাম এর জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী আর তা এভাবে যে, আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের সামনে নিয়ামত হিসেবে হাজির হওয়া অনেক (আমদের দৃষ্টিতে মনে হওয়া ছোট) নেক কাজের তাউফিক কে আমরা পরিত্যাগ করেছি, পাশ কাটিয়ে গেছি অথবা আরো খারাপ যে, কখনো বুঝতেই পারিনি সেগুলো ছিলো নিজেদের গুনাহ সমূহ ঝরিয়ে নেয়ার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সুবর্ন সুযোগ!

    প্রতিটি নেক কাজের সুযোগ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ামত। কখনো এমন চিন্তা করা উচিৎ নয় যে, কাজ টি "কত বড়" বা "কত ছোট"। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কিছু সরিয়ে দেয়ার কাজকেও ঈমানের শাখা হিসেবে বলা হয়েছে। আমাদের জানা আছে, সাদ ইবনে মুয়াজ (রাঃ) এর মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিলো! সেই মহান সাহাবীর ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি কেমন ছিল? সাদ (রাঃ) যখন মুসয়াব ইবনে উমায়ের (রাঃ) কে দেখলেন ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছেন তখন তিনি বর্শা হাতে নিয়ে এগিয়ে আসলেন মুসয়াব (রাঃ) কে এক হাত দেখে নিতে! মুসয়াব (রাঃ) বললেন, আপনি বরং আমার কিছু কথা শুনুন, যদি ভালো লাগে শুনবেন আর যদি ভালো না লাগে তবে আপনার যা ভালো লাগবেনা তা আমি আপনাকে বলবোনা। সাদ (রাঃ) ভাবলেন বেশ, উত্তম প্রস্তাব। তিনি বর্শা মাটিতে গেঁড়ে বসে গেলেন মুসয়াব (রাঃ) এর কথা শুনতে। লক্ষ্য করেন, সাদ (রাঃ) এর জন্য এটি ছিলো একটি ভালো কাজের জন্য প্রথম এবং ছোট পদক্ষেপ। কাজটি ছিলো কিছু ভালো কথা শোনার দাওয়াত কবুল করা। আর এই কাজের মধ্য দিয়েই আল্লাহ্* উনাকে ইসলামের নূর দান করলেন! সাদ (রাঃ) মৃত্যুতে জিবরীল (আঃ) উত্তম পোশাক এবং পাগড়ী পরিধান করে আসমান থেকে নেমে এসেছিলেন, আর রাসুল (সাঃ) কে সংবাদ দিয়েছেন আজ আপনার এক সাহাবী মারা গেছেন! আর এই সমস্ত নেয়ামতের প্রথম কদমটি ছিলো খুব ছোট, সাধারণ একটি কাজ, - কিছু ভালো কথা শোনার দাওয়াত কবুল করা।

    এমন অনেক ছোট ছোট নেক আমল থাকে যা অহরহই আমাদের চোখের আড়ালে থেকে যায় কারণ সেগুলো হয়ত "ছোট নেক আমল" তাই। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখা দরকার হয়ত আমরা এমনই যে, আমাদের জন্য "বড় আমল" গুলো ভারী হয়ে যেত তাই আল্লাহ্* আমার জন্য ছোট এবং সহজ করে দিয়েছেন। যেন আমি অন্তত বঞ্চিত না থেকে যাই। একই সাথে এও মনে রাখা দরকার ছোট নেক কাজ গুলো সাধারনত মারাত্মক এক কবিরা গুনাহ থেকে নিরাপদ থাকে তা হচ্ছে "রিয়া"। কারণ আমল হিসেবে সেগুলো এমন ছোট যে, সেগুলোর মধ্যে দেখানোর তেমন কিছু নাই। তাই আমল হিসেবে ছোট হলেও পরিপুর্ন ইখলাস এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুস্টির জন্য এসব আমল সহজ হয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ। একই সাথে এই ছোট নেক আমল গুলো হচ্ছে রিয়া মুক্ত হয়ে ইখলাসের সাথে বড় আমল করার জন্য প্র্যাকটিস ও বটে!

    ছোট বাচ্চা যখন রঙ পেন্সিল নিয়ে খুব মনোযোগের সাথে ছবি আঁকে এবং তার বাবাকে খুব আগ্রহ নিয়ে দেখায় আর বলে, বাবা বলো তো এই ছবি টা কেমন হয়েছে? বাবা তাকিয়ে দেখে মেয়ে আসলে রঙ বেরঙের কিছু এলোমেলো লাইন এঁকেছে! বাবা কি বলবে আরে এটা তো কিচ্ছু হয়নি! বরং বাবা বলবে - কি এঁকেছ বাবা, বেশ চমৎকার হয়েছে! বাবা কেন এ কথা বলবে?

    প্রথম কারণ - তিনি বাবা আর ছবি একেছে তার অবুঝ সন্তান তাই। দ্বিতীয় কারন - এই অবুঝ সন্তানের একান্ত আগ্রহ নিয়ে আকা ঐ হাবি জাবিই বাবার কাছে অনেক প্রিয়। তাহলে এবার ভেবে দেখেন আমাদের এমন খুব ছোট ছোট কাজ গুলো যদি আন্তরিকতার সাথে শুধু আল্লাহর জন্য হয়ে যায় তবে আল্লাহ তা কত পছন্দ করবেন! কারণ নিশ্চিত ভাবেই আল্লাহ আমাদের নিজেদের বাবা মা অপেক্ষা অধিক ভালোবাসেন!

    কোন নেক কাজের সুযোগকেই এই বলে পাশ কাটানো উচিৎ নয় যে, "এ আর এমন কি!" কারণ আপনি নিশ্চিতই জানেন না যে, এই কাজের মধ্যে আল্লাহ্* কি পরিমাণ বারাকাহ লুকিয়ে রেখেছেন। কারণ আল্লাহ্* বৃদ্ধির ওয়াদা করেছেন। প্রত্যেকটি নেক কাজের তাউফিক আমার এবং আপনার প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে আল্লাহর দিকে আরো একটু এগিয়ে যাবার দাওয়াত,

    খুব ক্ষতি হয়ে যাবে যদি আমরা আল্লাহর অনুগ্রহকে "ছোট" বলে প্রত্যাখান করি!

    আর হ্যা, নিশ্চয়ই সকল তাউফিক শুধু মাত্র মহান আল্লাহর পক্ষ থেকেই


    Last edited by s_forayeji; 02-06-2020, 12:44 AM.
    মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

  • #2
    মাশাআল্লাহ..!! অসাধারণ শিক্ষণীয় আলোচনা.. যার ব্যাপারে আজ অনেক দ্বীনদার ভাইদেরও গাফেল হতে দেখা যায়..!
    আল্লাহ তা'য়লা আমাদের বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন এবং আমাদের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করুন..আমিন....।।
    বারাকাল্লাহু ফী ইলমিকা ওয়া আমালিকা...।।।
    যদি তোমরা জিহাদে বের না হও তবে তিনি তোমাদের কঠিন শাস্তি দিবেন এবং অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন। আর তোমরা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (সূরা তাওবা, আয়াত: ৩৯)

    Comment


    • #3
      Originally posted by s_forayeji View Post
      আসলে আল্লাহ্* এভাবে তাঁর বান্দাদের সামনে সুযোগ দান করতেই থাকেন যেন বান্দা তা গ্রহন করে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তাউফিক প্রাপ্ত হয় আল্লাহর আরো নিকটবর্তী হবার ব্যাপারে।
      চমৎকার আলোচনা করেছেন ৷ আল্লাহ আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন ৷ আমিন
      ভাই!কথাগুলো কেমন যেন এলোমেলো লাগছে ৷ কুরআন হাদিসের দলিল দ্বারা আরো বিস্তারিত আলোচনা করলে হয়ত অন্তরে খুব ভালভাবে বসত ৷

      কিছু মনে করে থাকলে আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ৷
      "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

      Comment


      • #4
        স্বরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য শুকরিয়া। আল্লাহ কবুল করুন আমীন
        Last edited by Munshi Abdur Rahman; 02-06-2020, 07:25 AM.
        والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

        Comment


        • #5
          Originally posted by আলী ইবনুল মাদীনী View Post
          চমৎকার আলোচনা করেছেন ৷ আল্লাহ আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন ৷ আমিন
          ভাই!কথাগুলো কেমন যেন এলোমেলো লাগছে ৷ কুরআন হাদিসের দলিল দ্বারা আরো বিস্তারিত আলোচনা করলে হয়ত অন্তরে খুব ভালভাবে বসত ৷

          কিছু মনে করে থাকলে আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ৷
          এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন- সূরা আনফাল। । আয়াত ২৪।। তাফসীরসহ।
          আশা করি অন্তরে গভীরভাবে বসবে ইনশাআল্লাহ ।
          মুমিনদেরকে ক্বিতালের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন।

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ ভাই খুব সুন্দর অভিব্যাক্তি
            আল্লাহ তায়ালা আপনার কলমকে আরো ক্ষুরধার করে দিন আমীন।
            জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
            পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ্ খুব সুন্দর পোস্ট করেছেন ভাই আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বুঝার এবং আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহ! খুব সুন্দর আলোচনা ৷
                আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে আমল করার তৌফিক দান করুন ৷ আমিন
                গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

                Comment


                • #9
                  মাশাআল্লাহ।
                  খুব সুন্দর পোষ্ট করেছেন।
                  আল্লাহ কবুল করুন,আমিন।
                  ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

                  Comment


                  • #10
                    মাশাআল্লাহ, উপকারী আলোচনা করেছেন, জাযাকাল্লাহু খাইরান।
                    দ্বীনকে আপন করে ভালোবেসেছে যারা,
                    জীবনের বিনিময়ে জান্নাত কিনেছে তারা।

                    Comment

                    Working...
                    X