দিল্লির মুসলিমদের উপরে মালাউনদের জুলুম এবং নির্যাতন যখন সারা দুনিয়ার নিউজে প্রতিফলিত হচ্ছে তখন দেখে নেয়া যাক মালাউনদের পা চাটা দালাল এবং লেজ নাড়া কুকুরের মত আনুগত্যের চূড়ান্ত নমুনা প্রদর্শনকারী এদেশের হলুদ মিডিয়ার কি অবস্থা!
বাজারে প্রচলিত একটি নিউজ পোর্টাল হচ্ছে বাংলা ট্রিবিউন। ষড়যন্ত্রের দিক থেকে এরাও প্রথম আলোর চেয়ে কোন অংশে কম যায়না। তারা দিল্লির ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন ছেপেছে যার শিরোনাম দিয়েছে "দিল্লিতে বিক্ষোভ অব্যাহত, সংঘর্ষে নিহত ৭"
শিরোনামের পরেই খবর হিসেবে প্রথম যে লাইন ক'টি আছে তা হচ্ছে -
"ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে সোমবারের সংঘাতের পর মঙ্গলবার সকালে নতুন করে বিক্ষোভ জোরালো হয়েছে। এদিন সকালে মৌজপুর এবং ব্রহ্মপুরীতে ফের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একে অপরকে লক্ষ্য করে শুরু হয় পাথরবৃষ্টি। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও। এদিকে সোমবারের সংঘর্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ এ পর্যন্ত ৭ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে"
লক্ষ্য করুন, একজন পুলিশকর্মকর্তা সহ ৭ জন। সবার আগে রয়েছে একজন পুলিশের উল্লেখ! এ ব্যাপারে আলাদা কোন উল্লেখ না করলেও আমরা জানি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে পুলিশের অবস্থান কেমন হতে পারে!
এই লাইন ক'টির পরেই রয়েছে একটি ছবি, যে ব্যাপারে আজ আমি আপনাদের দৃস্টি আকর্ষণ করছি। [ছবিটির লিঙ্ক কমেন্টে]
আপনি যখন কোন একটি বিক্ষোভ এর ছবি নিতে চাইবেন তখন শ'য়ে শ'য়ে তা নেয়া সম্ভব । কিন্তু তারা খুব সুনির্দিষ্ট একটি ছবি বেছে নিয়েছে। যেখানে সবার আগে দুজন দাড়ি ওয়ালা যুবক দেখা যাচ্ছে, যাদের একজন পাঞ্জাবি পায়জামা পরা। এর পিছনে এমন কিছু তরুন যাদের মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা।
আপনি যখনই এ দাঙ্গা, বিক্ষোভ এর খবরটি পড়বেন তখন একটি স্বাভাবিক প্রশ্ন আসবে - কারা দায়ী এই দাঙ্গার জন্য? নিউজে কোথাও তা স্পস্ট করে বলে দেয়া নাই। বরং নীরবে তারা ইঙ্গিত করেছে ছবির দিকে। অর্থাৎ এই যে ছবি টা দেখো, তারপর পাঠক নিজেই সিদ্ধান্ত নাও!
এটি হচ্ছে অনেক পুরনো মনস্তাত্ত্বিক খেলা! এভাবে তারা অজান্তে মানুষের মনে একটি ধারনা, একটি ছবি তৈরি করে, যেমন ছবি তারা জনগনের সামনে উপস্থাপন করতে চায়। আর তা করার জন্য, তারা নীরবে এমন হাজার হাজার ছবি আমার আপনার সামনে ফেলতে থাকে। আমরা কোনদিন ভাবতেও পারিনা প্রতিদিনের দেখে যাওয়া এই ছবিগুলো আস্তে আস্তে আমাদের অজান্তেই আমাদের মনের ভিতরে স্থান করে নেয়। যখন উপযুক্ত কোন পরিবেশ আসে তখন আমরা ঠিক ঐ ছবিটাই দেখি যেটা তারা এতদিন আমাদের দেখাতে চেয়েছে! সে সময়ে আমাদের চেতনায় তাদের ছেপে দেয়া ছবির বাইরে আর কোন ছবি ধারনায় আসতে পারেনা।
এতখন আমি যা বললাম, তা হচ্ছে আজ আমাদের চারপাশে চলতে থাকা বিশাল এক নীরব যুদ্ধের সামান্য অনুকণা মাত্র। এই যুদ্ধ যে আমাকে আপনাকে ঘায়েল করছে তার একটি বাস্তব উদাহরন আপনাদের দেখাই। নিচে আমি একটি শব্দ/নাম উচ্চারন করব, এই নাম/শব্দ টি শোনার পর কোন আলাদা চিন্তা ছাড়াই সর্বপ্রথম কোন চিন্তা বা কোন ছবিটি আপনার মাথায় আসে তা লক্ষ্য করুন।
শব্দটি হচ্ছে - "ভাড়াটিয়া ফর্ম" - কি চিন্তা আসে মাথায়? জঙ্গি ঠেকানোর জন্য প্রত্যেক ভাড়াটিয়ার সামনে দেয়া এক বিশেষ ফর্ম, তাই কিনা? এই ছবিটি তারা আমাদের মন মগজে তৈরি করেছে। একই ভাবে "জঙ্গি" শব্দটি। এটা শুনার পরে আপনার মাথায় নিউজিল্যান্ড এর ক্রাইস্ট চার্চের সেই নরাধম শুটার এর কথা কখনই মনে আসবেনা, বরং মনে আসবে তাদের কথা যারা নিজেদের জীবন বাজি রাখে দ্বীনের জন্য। একই ভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি - মনে আসে পহেলা বৈশাখ কিংবা মঙ্গল শোভা যাত্রা! ভাবতে পারেন!!!
আসেন প্রশ্ন করি, এটা কিভাবে হল? এটিই হচ্ছে সেই মেকানিজম যা উপরে আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে বলার চেস্টা করেছি। এটাই তাদের দীর্ঘদিনের যুদ্ধের ফল! এভাবেই তারা আমাদের সামনে দাড়ি টুপিকে উগ্রতার লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করে, পর্দাকে দাসত্ব হিসেবে দেখায় আর কুরআন কে শুধু ঘরে বসে পড়ার বই হিসেবে! একই ভাবে ধর্ম যার যার ব্যাক্তিগত জীবনে কিন্তু মঙ্গল শোভা যাত্রা সবার জীবনে! - হায়!
তাহলে আমাদের করনীয় কি? করনীয় হচ্ছে যথাসম্ভব এ ব্যাপারে সচেতন করা এবং সচেতন হওয়া। তাদের এই প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। তাদেরকে ছেড়ে না দেয়া।
আর সাহায্য তো শধুমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই।
Comment