Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইসলাম প্রচারে তরবারীর ভূমিকা (তৃতীয় পর্ব, জিযয়ার বিধানের হিকমত ও তাৎপর্য)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইসলাম প্রচারে তরবারীর ভূমিকা (তৃতীয় পর্ব, জিযয়ার বিধানের হিকমত ও তাৎপর্য)

    কাফেরদের থেকে জিযয়া গ্রহণের হিকমত ও তাৎপর্য

    (আক্রমণাত্মক জিহাদ কিভাবে ইসলামের প্রচার-প্রসারে ভূমিকা রাখে এ সম্পর্কে গত পর্বে (লিংক কমেন্টে) আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এ পর্বে ইসলাম প্রচারে জিযয়ার ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।)

    জিযয়ার বিধানের ব্যাপারে আলেমগণ একমত যে, জিযয়া গ্রহণের উদ্দেশ্য কাফেরদেরকে কুফরীতে বহাল রাখা নয়। বরং জিযয়ার উদ্দেশ্য হলো, কাফেরদের ইসলামী হুকুমতের অধীনে মুসলমানদের সাহচর্যে থাকার সুযোগ করে দেওয়া। যেন তারা ইসলামের সত্যতার দলিল-প্রমাণ এবং ইসলামী বিধিবিধানের সৌন্দর্যের ব্যাপারে অবহিত হতে পারে। এর পাশাপাশি তাদেরকে কিছুটা লাঞ্ছিত-অপদস্থও করতে হবে। যেন লাঞ্ছনা-অপদস্থতা থেকে বাঁচা এবং সত্য ধর্ম গ্রহণের যুগপৎ প্রেরণা তাদেরকে ইসলামগ্রহণে বাধ্য করে।

    জিযয়ার হিকমত ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিখ্যাত মুফাসসির ইমাম রাযী রহ. বলেন,

    ليس المقصود من أخذ الجزية تقريره على الكفر، بل المقصود منها حقن دمه وإمهاله مدة، رجاء أنه ربما وقف في هذه المدة على محاسن الإسلام وقوة دلائله، فينتقل من الكفر إلى الإيمان.
    لا بد معه من إلحاق الذل والصغار للكفر والسبب فيه أن طبع العاقل ينفر عن تحمل الذل والصغار، فإذا أمهل الكافر مدة وهو يشاهد عز الإسلام ويسمع دلائل صحته، ويشاهد الذل والصغار في الكفر، فالظاهر أنه يحمله ذلك على الانتقال إلى الإسلام، فهذا هو المقصود من شرع الجزية. (16/27 ط. دار إحياء التراث العربي)

    “জিযয়া গ্রহণের উদ্দেশ্য কাফেরদের কুফরের উপর বহাল রাখা উদ্দেশ্য নয়। বরং জিযয়া নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো তার জীবন রক্ষা করা এবং কিছু সময়ের জন্য তাকে অবকাশ দেওয়া, যেন সে এই সময়ে ইসলামের সৌন্দর্য ও মযবুত দলিল-প্রমাণের ব্যাপারে অবগতি লাভ করে ইসলাম গ্রহন করতে পারে। …….

    জিযয়া নেওয়ার পাশাপাশি কুফরের কারণে কাফেরকে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করতে হবে, কেননা বুদ্ধিমান মানুষ লাঞ্ছনা-অপমান সহ্য করতে পারে না। যখন কাফেরকে কিছুদিনের জন্য অবকাশ দেওয়া হবে এবং সে ইসলামের সম্মান ও প্রভাব-প্রতিপত্তি লক্ষ্য করবে, দলিল-প্রমাণ শুনবে এবং কুফরের মধ্যে লাঞ্ছনা ও যিল্লতি প্রত্যক্ষ করবে। তখন সে খুব সহজেই ইসলাম গ্রহণ করবে। এটাই জিযয়া গ্রহণের উদ্দেশ্য। -তাফসীরে রাযী: ১৬/২৭

    হাফেয ইবনে হাজার রহ. সহিহ বুখারীর ভাষ্যগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে বলেন,

    قال العلماء: الحكمة في وضع الجزية أن الذل الذي يلحقهم يحملهم على الدخول في الإسلام مع ما في مخالطة المسلمين من الاطلاع على محاسن الإسلام. (فتح الباري: 6 : 259 ط. دار الفكر)

    আলেমগণ বলেন, জিযয়া গ্রহণের হিকমত হলো তাদেরকে এর মাধ্যমে লাঞ্ছিত-অপদস্থ করা, যেন তা তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, পাশাপাশি তারা মুসলমানদের সংস্পর্শে থেকে ইসলামের সৌন্দর্যের ব্যাপারে অবগতি লাভ করবে।” -ফাতহুল বারী, ৬/২৫৯ - আরো উদ্ধৃতির জন্য দেখুন, মাবসুতে সারাখসী, ১০/৭৭ দারুল মারেফা, বৈরুত, ১৪১৪ হি. বাদায়েউস সানায়ে, ৭/১১১ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, তৃতীয় প্রকাশনা, ১৪০৬ হি. রদ্দুল মুহতার, আল্লামা শামী, ৪/২০০ দারুল ফিকর, দ্বিতীয় প্রকাশনা, ১৪১২ হি. আললুবাব ফি ইলমিল কিতাব, ইবনে আদেল হাম্বলী, ১০/৬৮ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, প্রথম প্রকাশনা, ১৪১৯ হি. মওসুয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ, ১৫/১৫৮

    কুরআন কাফেরদের লাঞ্ছিত-অপমানিত করে তাদের থেকে জিযয়া গ্রহণের আদেশ দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

    قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ

    “কিতাবীদের মধ্যে যারা আল্লাহর প্রতি ইমান রাখে না এবং পরকালেও নয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা কিছু হারাম করেছেন তাকে হারাম মনে করে না এবং সত্য দ্বীনকে নিজের দ্বীন বলে স্বীকার করে না, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো, যতক্ষণ না তারা হেয় হয়ে নিজ হাতে জিযয়া প্রদান করে।” -সুরা তাওবা, ২৯

    এ লাঞ্ছনার পদ্ধতি কেমন হবে? কিভাবে যিম্মী কাফেরদের অপমানিত করা হবে?- এর বিস্তারিত বিবরণ হাদিস ও আছারে সাহাবার আলোকে ফুকাহায়ে কেরাম লিপিবদ্ধ করেছেন। প্রবন্ধ দীর্ঘ হয়ে যাওয়ার কারণে এ সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করছি না। ‘অমুসলিমদের সাথে মুসলিমদের আচরণবিধি’ শিরোনামে যিম্মীদের লাঞ্ছিত করার বিস্তারিত পদ্ধতি নিয়ে ইনশাআল্লাহ আমরা আলাদা প্রবন্ধ লিখবো। এখানে উদাহরণস্বরুপ শুধু একটি হাদিস ও একটি আছার উল্লেখ করছি:

    حدثنا قتيبة بن سعيد، حدثنا عبد العزيز يعني الدراوردي، عن سهيل، عن أبيه، عن أبي هريرة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لا تبدءوا اليهود ولا النصارى بالسلام، فإذا لقيتم أحدهم في طريق، فاضطروه إلى أضيقه». (صحيح مسلم : 2167)

    “ইহুদী ও নাসারাদের আগে সালাম দিও না। আর তাদের কাউকে পথে দেখলে তাকে পথের সংকীর্ণতম অংশে চলতে বাধ্য করো।-সহিহ মুসলিম, ২১৬৭ (ইফা, ৫/১৮৪)

    শামের খৃষ্টানদের সাথে সন্ধির সময় উমর রাযি. এর শর্তাবলী, যা ইতিহাসে ‘শুরুতে উমারিয়্যাহ’ নামে প্রসিদ্ধ-

    عن عبد الرحمن بن غنم، قال: «كتبت لعمر بن الخطاب رضي الله عنه حين صالح أهل الشام: بسم الله الرحمن الرحيم، هذا كتاب لعبد الله عمر أمير المؤمنين من نصارى مدينة كذا وكذا، إنكم لما قدمتم علينا سألناكم الأمان لأنفسنا وذرارينا وأموالنا وأهل ملتنا، وشرطنا لكم على أنفسنا أن لا نحدث في مدينتنا ولا فيما حولها ديرا ولا كنيسة ولا قلاية ولا صومعة راهب، ولا نجدد ما خرب منها، ولا نحيي ما كان منها في خطط المسلمين، وأن لا نمنع كنائسنا أن ينزلها أحد من المسلمين في ليل ولا نهار، وأن نوسع أبوابها للمارة وابن السبيل، وأن ننزل من مر بنا من المسلمين ثلاثة أيام ونطعمهم، وأن لا نؤمن في كنائسنا ولا منازلنا جاسوسا، ولا نكتم غشا للمسلمين، ولا نعلم أولادنا القرآن، ولا نظهر شركا ولا ندعو إليه أحدا، ولا نمنع أحدا من قرابتنا الدخول في الإسلام إن أراده، وأن نوقر المسلمين، وأن نقوم لهم من مجالسنا إن أرادوا جلوسا، ولا نتشبه بهم في شيء من لباسهم من قلنسوة ولا عمامة ولا نعلين ولا فرق شعر، ولا نتكلم بكلامهم، ولا نتكنى بكناهم، ولا نركب السروج، ولا نتقلد السيوف، ولا نتخذ شيئا من السلاح، ولا نحمله معنا، ولا ننقش خواتيمنا بالعربية، ولا نبيع الخمور، وأن نجز مقاديم رءوسنا، وأن نلزم زينا حيث ما كنا، وأن نشد الزنانير على أوساطنا، وأن لا نظهر صلبنا وكتبنا في شيء من طريق المسلمين ولا أسواقهم، وأن لا نظهر الصليب على كنائسنا، وأن لا نضرب بناقوس في كنائسنا بين حضرة المسلمين، وأن لا نخرج سعانينا ولا باعونا، ولا نرفع أصواتنا مع أمواتنا، ولا نظهر النيران معهم في شيء من طريق المسلمين، ولا نجاوزهم موتانا، ولا نتخذ من الرقيق ما جرى عليه سهام المسلمين، وأن نرشد المسلمين، ولا نطلع عليهم في منازلهم.
    فلما أتيت عمر رضي الله عنه بالكتاب زاد فيه: وأن لا نضرب أحدا من المسلمين ، شرطنا لهم ذلك على أنفسنا وأهل ملتنا وقبلنا منهم الأمان، فإن نحن خالفنا شيئا مما شرطناه لكم فضمناه على أنفسنا فلا ذمة لنا، وقد حل لكم ما يحل لكم من أهل المعاندة والشقاوة». راجع: معجم ابن المقرى (365) السنن الكبرى للبيهقي، (18717) أحكام أهل الملل والردة من الجامع لمسائل الإمام أحمد بن حنبل للخَلَّال (1000) وتفسير ابن كثير:

    “এ হচ্ছে শাম দেশের অমুক অমুক নগরের অধিবাসীগণের পক্ষ হতে আল্লাহর বান্দা আমীরুল-মুমিনীন উমরকে প্রদত্ত লিখিত প্রতিজ্ঞাসমূহ- “আপনারা যখন আমাদের নিকট আগমন করিলেন, তখন আমরা নিজেদের জন্য, আমাদের সন্তান-সন্ততির জন্য, আমাদের ধন-সম্পত্তির জন্য এবং আমাদের ধর্মাবলম্বী লোকদের জন্য আপনাদের নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করলাম। উক্ত নিরাপত্তার বিনিময়ে আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে: আমরা আমাদের নগরে বা তার চারপাশে কোথাও কোন নতুন গীর্জা ও ইবাদতখানা নির্মান করবো না; কোন পুরাতন গির্জা মেরামত করবো না; ইতিপূর্বে যে গীর্জা ও ইবাদতখানা মুসলমানদের নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে সেগুলোকে পুনরায় গির্জা ও ইবাদতখানায় রূপান্তর করবো না; আমাদের কোন গির্জায় দিনে বা রাতে কোন মুসলমান অবস্থান করতে চাইলে তাকে বাঁধা দিবো না; আমাদের গির্জাগুলোর দ্বারসমূহ পথিক ও মুসাফিরদের জন্য উন্মুক্ত রাখবো; কোন পথিক মুসলমান আমাদের আবাসস্থলের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তিনদিন পর্যন্ত তার মেহমানদারী করবো; আমাদের গির্জায় বা বাসস্থানে কোন গুপ্তচরকে আশ্রয় দিবো না; মুসলমানদের সাথে কোনরূপ প্রতারণমূলক আচরণ করবো না; আমাদের সন্তানদের কুরআন শিখাবো না; প্রকাশ্যে কোন প্রকার শিরক করবো না, কাউকে শিরকের প্রতি আহ্বানও জানাবো না; আমাদের কোন আত্মীয় ইসলামগ্রহণ করতে চাইলে তাকে বাধা দিবো না; মুসলমানদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবো; কোন মুসলমান আমাদের মজলিসে বসতে চাইলে আমরা উঠে গিয়ে তার জন্য জায়গা করে দিবো; মুসলমানদের লেবাস-পোশাকের ন্যায় কোন লেবাস-পোশাক আমরা পরিধান করবো না; টুপি পরবো না; পাগড়ী ব্যবহার করবো না; (দামী) জুতো পরবো না; মাথায় সিঁথি কাটবো না; মুসলমানদের ভাষার ন্যায় ভাষা ব্যবহার করবো না; মুসলমানদের উপনামের ন্যায় উপনাম গ্রহণ করবো না; অশ্বাদি ও বাহনে গদি ব্যবহার করবো না; গলায় তরবারি ঝুলিয়ে চলাফেরা করবো না; কোন প্রকারের অস্ত্র রাখবো না; কোন প্রকারের অস্ত্র বহন করবো না; আংটিতে আরবী ভাষায় কোন কিছু খোদাই করবো না; মদের বেচা-কেনা করবো না; মাথার সম্মুখভাগের চুল ছেটে ফেলবো; যেখানেই থাকি না কেন সর্বত্র ও সর্বদা টিকি রাখবো; দেহে পৈতাধারণ করবো; গির্জায় প্রকাশ্য স্থানে ক্রুশ রাখবো না; মুসলমানদের রাস্তায় বা তাদের বাজারে ক্রুশ বা নিজেদের ধর্মীয় পুস্তক প্রকাশ করবো না; গির্জায় উচ্চ শব্দে ঘন্টা বাজাবো না; মুসলমানদের উপস্থিতিতে গির্জায় উচ্চস্বরে নিজেদের ধর্মীয় পুস্তক পাঠ করবো না; ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কোনরূপ মিছিল বের করবো না; মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে ক্রন্দন করবো না; মুসলমানদের রাস্তা বা বাজারের মধ্য দিয়ে মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাবো না; কোন মুসলমান কর্তৃক ব্যবহৃত দাসকে ব্যবহার করবো না; পথিক মুসলমানদের প্রয়োজনে তাকে পথ দেখিয়ে দিবো এবং কোন মুসলমানের ঘরে উঁকি মারবো না।

    আবদুর রহমান বিন গানাম আশআরী রহ. বলেন, উপরোক্ত চুক্তিপত্র নিয়ে আমি উমর রা. এর নিকট পৌঁছলে তিনি তাতে নিম্নোক্ত শর্তগুলো সংযোজিত করেন: আমরা কোন মুসলমানকে প্রহার করবোন না। উক্ত শর্তসমূহকে মেনে নিয়ে আমরা নিরাপত্তা লাভ করলাম। আমরা উক্ত শর্তসমূহের কোন একটি শর্ত ভঙ্গ করলে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আপনাদের (মুসলমানদের) উপর কোন দায়িত্ব থাকবে না। এমতাবস্থায় আমাদের সাথে শত্রুর ন্যায় আচরণ করা আপনাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে।” –সুনানে বাইহাকী, হাদিস: ১৮৭১৭ তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইফা, ৪/৫৬৬

    বর্তমানে প্রায় সব আলেমের মুখেই শুনা যায়, ইসলাম যিম্মীদের পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়, তাদেরকে মুসলিমদের সমান অধিকার দেয়। তারা বলেন, অমুসলিম থেকে জিযয়া নেয়া হয়, শুধু মাত্র রাষ্ট্রীয় ট্যাক্স হিসেবে, ইসলামী হুকুমত কর্তৃক যিম্মীদের নিরাপত্তা বিধানের বিনিময় হিসেবে, যেমনিভাবে মুসলমানদের থেকেও যাকাত নেয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাহলে কুরআনে তাদেরকে লাঞ্চিত করার আদেশ কেন দেয়া হয়েছে, হাদিসে তাদেরকে পথের সংকীর্ণতম অংশে ঠেলে দেয়ার আদেশ কেন দেয়া হয়েছে, উমর রাযিআল্লাহু আনহুই বা কেন তাদের উপর নানারকম লাঞ্ছনাজনক শর্ত আরোপ করেছিলেন? কোথায় উমর রাযি. এর শর্তাবলী আর কোথায় তাদের দাবীকৃত ‘অমুসলিমদেরকে মুসলিমদের সমঅধিকার প্রদান’।

    তাদের কথাবার্তায় বারবার প্রতিধ্বনিত হয়, “শুধু কুফরের কারণে কাউকে হত্যা করা, বা তার মানহানি করা বৈধ নয়।” যেন কুফর কোন অপরাধই নয়? কাফের জীবনভর কুফরের উপর বহাল থাকলেও কোন সমস্যা নেই! তবে কি কুফরের কারণে আল্লাহ তায়ালা পূর্ববর্তী উম্মতসমূহকে যে শাস্তি প্রদান করেছেন তাও ঠিক হয়নি! নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক! কোন বোকা বলতে পারে, আল্লাহ তায়ালা কুফরের কারণে তাদের শাস্তি দেননি, বরং সমকামিতা ইত্যাদি অপরাধের কারণে তাদের শাস্তি দিয়েছেন। তাহলে কি সমকামিতা ও মাপে কম দেয়া কুফরের চেয়েও বড় অপরাধ? এ অপরাধগুলোর কারণে শাস্তি দেয়া বৈধ হলে, ধর্ষণের কারণে হত্যা করা বৈধ হলে, কেন কুফরের কারণে শাস্তি দেয়া বৈধ হবে না? অথচ কুফর হলো খোদাদ্রোহীতা যা সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। আল্লাহ তায়ালা বলছেন, তাঁর নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব হলো কাফেররা। -সুরা আনফাল, ৫৫।

    আসলে এখন সবকিছুই উল্টে যাচ্ছে, অতীতে জমিয়্যতে উলামায়ে হিন্দ, “হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই” শ্লোগান দিয়েছে। আজ তাদের উত্তরসূরী আরশাদ মাদানী আরেক ধাপ আগে বেড়ে বলছেন, “হিন্দুরা আমাদের বড় ভাই, আমরা তাদের ছোট ভাই!” আগামীকাল হয়তো দেখবো, মুসলমানরা দাওয়াতের স্বার্থে (?) কাফেরদের জুতো সোজা করে দিচ্ছে! এভাবেই আমাদের ইসলামের পরিবর্তে এক নতুন ধর্মে দীক্ষিত করা হচ্ছে। আর আমরা ইহুদীদের মত দরবারী-মন্দ আলেমদের অন্ধ অনুসরণ করে জাহান্নামের পথে ছুটে চলেছি। আর এভাবেই আমাদের উপর রাসূলের ভবিষ্যৎবানী প্রতিফলিত হচ্ছে- “তোমরা পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণকে পূর্ণরূপে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি গুঁইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরা কি ইহুদী ও নাসারা? তিনি বললেন, তবে আর কারা?” –সহিহ বুখারী, ৭৩২০ (ইফা, ১০/৫০৭) সহিহ মুসলিম, ২৬৬৯
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 03-15-2020, 09:16 AM.
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

  • #2

    ইসলাম প্রচারে তরবারীর ভূমিকা (প্রথম পর্ব- ‘তলোয়ারে নয় উদারতায়’ শীর্ষক শ্লোগানের উৎপত্ত ‘ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস)



    ইসলাম প্রচারে তরবারীর ভূমিকা (দ্বিতীয় পর্ব- আক্রমণাত্মক জিহাদের হিকমত ও তাৎপর্য)


    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

    Comment


    • #3
      লাঞ্চনা-লাঞ্চিত
      শুদ্ধ বানান> লাঞ্ছনা-লাঞ্ছিত
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ।
        আনেক(অনেক) সুন্দর আলোচনা করেছেন।
        আল্লাহ কবুল করুন,আমিন।
        ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

        Comment


        • #5
          Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
          শুদ্ধ বানান> লাঞ্ছনা-লাঞ্ছিত
          অনেক অনেক শুকরিয়া আখি, জাযাকাল্লাহ আহসানাল জাযা, বানানগুলো শুদ্ধ করে দিয়েছি।
          الجهاد محك الإيمان

          জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

          Comment


          • #6
            Originally posted by আদনানমারুফ View Post
            হাদিসে তাদেরকে পথের সংকীর্ণতম অংশে ঠেলে দেয়ার আদেশ কেন দেয়া হয়েছে,
            ভাই!বর্তমানে বাংলাদেশের মুশরিক বা হিন্দুদের সাথেও কি এমন আচারণ করতে হবে?এবং তাদের সাথে আচারণের পদ্ধতিটা নিয়ে একটু আলোচনা করলে ভাল হত ৷
            "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

            Comment


            • #7
              Originally posted by আদনানমারুফ View Post
              অনেক অনেক শুকরিয়া আখি, জাযাকাল্লাহ আহসানাল জাযা, বানানগুলো শুদ্ধ করে দিয়েছি।
              আল্লাহুম্মা আমীন
              ওয়া ইয়্যাকা..
              মুহতারাম ভাই- জিযয়া বানানটি কি ঠিক আছে? কারণ বাংলাতে সবসময় জিযিয়া লেখা হয়। অভিধানেও এমনই দেখলাম।
              তবে আরবী উচ্চারণ লিখতে চাইলে জিয্ইয়াহ লেখা উচিত মনে হয়। আল্লাহু আ‘লাম
              বাকি আপনি একটু তাহকীক করে নিলে ভাল হয়।
              “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

              Comment


              • #8
                আলহামদুলিল্লাহ্ সুন্দর আলোচনা করেছেন আখি,, আল্লাহ্ কবুল করুন, আমিন।
                আল্লাহ্ মিডিয়ার ভাইদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন ,আমিন।

                Comment


                • #9
                  Originally posted by আলী ইবনুল মাদীনী View Post
                  ভাই!বর্তমানে বাংলাদেশের মুশরিক বা হিন্দুদের সাথেও কি এমন আচারণ করতে হবে?এবং তাদের সাথে আচরণের পদ্ধতিটা নিয়ে একটু আলোচনা করলে ভাল হত ৷
                  মূল বিধান তো এটাই। তবে এখন যেহেতু আমরা দূর্বল, আমাদের তখাকথিত দারুল ইসলাম আজ হিন্দুদের দখলে, তাই শক্তি না থাকার কারণে ঝামেলা এড়ানোর জন্য এবিধানগুলোর উপর আমল না করাও বৈধ হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

                  لَا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَنْ تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً

                  মুমিনগণ যেন মুমিনদেরকে ছেড়ে কাফিরদেরকে নিজেদের মিত্র ও সাহায্যকারী না বানায়। যে এরুপ করবে আল্লাহর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে তাদের (জুলুম) থেকে বাঁচার জন্য যদি আত্মরক্ষামূলক কোনো পন্থা অবলম্বন করো সেটা ভিন্ন কথা। -সুরা আলে ইমরান, ২৮

                  এ আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বলেছেন-কাফেরদের ক্ষতি হতে বাঁচার জন্য অন্তরে ঘৃণা পোষণ করে বাহ্যিক ভাবে ভালো ব্যবহার করা জায়েয। আর আমরা তো ভালো ব্যবহারও করছি না। বরং শুধু ওদের লাঞ্ছিত করার যে বিধান তা করছি না।
                  الجهاد محك الإيمان

                  জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

                  Comment

                  Working...
                  X