Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমরা কি এই বীর নারী যোদ্ধাকে চিনি?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমরা কি এই বীর নারী যোদ্ধাকে চিনি?

    তিনি ছিলেন একজন আনসারী মহিলা। উম্মু 'উমারা উপনামে তিনি ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। মদিনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রের নাজ্জার শাখার কন্যা। তিনি বিখ্যাত বদরী সাহাবী 'আব্দুল্লাহ ইবন কা'ব আল মাযিনীর বোন।

    রাসুলুল্লাহ ( সঃ ) মদিনায় হিজরতের পূর্বে দাওয়াতের কাজের জন্য মুস'আব ইবন 'উমাইরকে ( রা: ) সেখানে পাঠান। উনার তাবলীগে যে সকল নারী-পুরুষ ইসলাম গ্রহণ করেন উম্মু 'উমারা ( রা: ) তাঁদের একজন। এভাবে তিনি হলেন প্রথম পর্বের একজন মুসলিম আনসারী মহিলা।

    হিজরি দ্বিতীয় সনে উহুদ যুদ্ধে উম্মু 'উমারা ( রা: ) যোগ দেন। মূলত তিনি গিয়েছিলেন একটি পুরানো মশক সঙ্গে নিয়ে যোদ্ধাদের পানি পান করানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এক পর্যায়ে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। চমৎকার রণকৌশলের পরিচয় দেন। শত্রুর বারোটি মতান্তরে তেরটি আঘাতে তাঁর দেহ জর্জরিত হয়। কোন কোন বর্ণনায় এ যুদ্ধে তিনি তীর-বর্শা দ্বারা বারোজন পৌত্তলিক সৈন্যকে আহত করেন!

    উহুদ যুদ্ধের এক পর্যায়ে শত্রু বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে মুসলিম বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে যায়। মুষ্টিমেয় কয়েকজন জানবাজ মুজাহিদ ছাড়া আর সকলে রাসুলুল্লাহকে ( সঃ ) ছেড়ে ময়দান থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। যে কয়জন মুজাহিদ নিজের জীবন বাজি রেখে রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) নিরাপত্তা বিধান করেন তাঁদের মধ্যে উম্মু 'উমারা, তাঁর স্বামী গাযিয়্যা ও দুই ছেলে 'আব্দুল্লাহ ও হাবীবও ছিলেন।

    রণক্ষেত্রের এই নাজুক অবস্থার আগে যখন মুসলিম বাহিনী খুব শক্তভাবে শত্রুবাহিনীর মুকাবেলা করছিল এবং বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল তখনো উম্মু 'উমারা ( রা: ) হাত-পা গুটিয়ে বসে ছিলেন না। মশকে পানি ভরে মুজাহিদদের পান করাচ্ছিলেন। এমন সময় দেখলেন যে সবাই ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছে। রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) পাশে মাত্র গুটিকয়েক মুজাহিদ। তিনিও এগিয়ে রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) পাশে জীবন বাজি রেখে অটল হয়ে দাঁড়ালেন। আর তাঁর পাশে এসে অবস্থান নিলেন স্বামী ও দুই ছেলে। তিনি একদিকে রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) উপর কাফিরদের আক্রমণ প্রতিহত করছিলেন, অপর দিকে তাদের উপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়ে অনেককে ধরাশায়ী করে ফেলছিলেন।

    উহুদ যুদ্ধের সেই মারাত্মক পর্যায়ের বর্ণনা উম্মু 'উমারা ( রা: ) দিয়েছেন এভাবে: "আমি দেখলাম, লোকেরা রাসুলুল্লাহকে ( সঃ ) ছেড়ে পালাচ্ছে। মাত্র মুষ্টিমেয় কয়েকজন যাদের সংখ্যা দশও হবেনা, রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) পাশে আছে। আমি, আমার দুই ছেলে ও স্বামী রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে রক্ষা করেছি। তখন অন্য মুজাহিদরা পরাজিত অবস্থায় রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিল। রাসুলুল্লাহ ( সঃ ) দেখলেন আমার হাতে ঢাল নেই। তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে পালাচ্ছে এবং তার হাতে একটি ঢাল। তিনি তাকে বললেন, ওহে, তুমি তোমার ঢালটি যে লড়ছে এমন কারো দিকে ছুড়ে মার। সে ঢালটি ছুড়ে মারে এবং আমি তা হাতে তুলে নিই। সেই ঢাল দিয়েই আমি রাসুলুল্লাহকে ( সঃ ) আড়াল করতে থাকি। সেদিন অশ্বারোহী যোদ্ধারা আমাদের সাথে খুব বাজে কাজ করেছিল। যদি তারা আমাদের মত পদাতিক হতো তাহলে আমরা শত্রুদের ক্ষতি করতে সক্ষম হতাম।"

    তিনি আরও বলেছেন, কোন অশ্বারোহী আমাদের দিকে এগিয়ে এসে আমাকে তরবারির আঘাত করছিল, আর আমি সে আঘাত ঢাল দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আমার কিছুই করতে সক্ষম হয়নি। তারপর যেই না সে পিছন ফিরে যেতে উদ্যত হচ্ছিল অমনি আমি তার ঘোড়ার পিছন পায়ে তরবারির কোপ বসিয়ে দিলাম। ঘোড়াটি আরোহীসহ মাটিতে পরে গেল। তখনই রাসুল ( সঃ ) আমার ছেলেকে ডেকে বলছিলেন, 'ওহে উম্মু 'উমারার ছেলে! তোমার মাকে সাহায্য কর।' সে ছুটে এসে আমাকে সাহায্য করছিল। এভাবে আমি তাকে মৃত্যুর ঠিকানায় পাঠিয়ে দিলাম।

    এক সময় এক কাফিরের নিক্ষিপ্ত একটি আঘাতে রাসুলে পাকের ( সঃ ) একটি দাঁত ভেঙ্গে যায়। পাষণ্ড ইবন কামিআ রাসুলুল্লাহকে ( সঃ ) তাক করে তরবারির একটি কোপ মারে, কিন্তু তা ফসকে যায়। মুহূর্তে উম্মু 'উমারা ( রাঃ ) ফিরে দাঁড়ান। তিনি নরপশু ইবন কামিআর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু তার সাড়া দেহ বর্মে আচ্ছাদিত থাকায় বিশেষ কার্যকর হল না। তবে সে উম্মু 'উমারাকে ( রা: ) তাক করে এবার একটি কোপ মারে এবং তা উম্মু 'উমারার ( রা: ) কাঁধে লাগে। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। তাঁর সারা দেহ রক্তে ভিজে গেল। একটি বর্ণনায় এসেছে, রাসুল ( সঃ ) তাঁকে আহত হতে দেখে তাঁর ছেলে 'আব্দুল্লাহকে ডেকে বলেন: তোমার মাকে দেখ, তোমার মাকে দেখ। তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ কর। হে আল্লাহ! তাদের সবাইকে জান্নাতে আমার বন্ধু করে দাও। উম্মু 'উমারা ( রা: ) বলেন- ' দুনিয়ায় আমার যে কষ্ট ও বিপদ আপদ এসেছে, তাতে আমার কোন পরোয়া নেই।' সেদিন রাসুল ( সঃ ) কয়েকজন সাহসী সাহাবীর নাম উচ্চারণ করে বলেন, "উম্মু 'উমারার আজকের কর্মকাণ্ড তাদের কর্মকাণ্ড থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে।" এরপর প্রায় একবছর যাবত তাঁর ক্ষতস্থানের চিকিৎসা করা হয়।

    আব্দুল্লাহ বলেন: সেদিন আমি মারাত্মকভাবে আহত হলাম। রক্ত পরা বন্ধ হচ্ছিল না। তা দেখে রাসুল ( সঃ ) বলেন, তোমার আহত স্থানে ব্যান্ডেজ বাধ। কিছুক্ষণ পর আমার মা অনেকগুলো ব্যান্ডেজ হাতে নিয়ে আমার দিকে ছুটে আসেন এবং আমার আহত স্থানে ব্যান্ডেজ বাঁধেন। রাসুল ( সঃ ) তখন পাশেই দাঁড়িয়ে। ব্যান্ডেজ বাঁধা শেষ করে মা আমাকে বলেন: বেটা, ওঠো। শত্রু সৈন্যদের গর্দানে মার। রাসুল ( সঃ ) তখন বলেন: ওহে উম্মু 'উমারা, তুমি যতখানি শক্তি ও সামর্থ্য রাখ, অন্যের মধ্যে তা কোথায়?

    'আব্দুল্লাহ আরও বর্ণনা করেন, এ সময় যে শত্রু সৈন্যটি আমাকে আহত করেছিল, অদূরে তাকে দেখা গেল। রাসুল ( সঃ ) আমার মাকে বললেন: এই সেই ব্যক্তি যে তোমার ছেলেকে যখম করেছে। আমার মা বললেন: আমি তার মুখমুখি হবো এবং তার ঠ্যাঙের নলা ভেঙ্গে দেব। একথা বলে তিনি তাকে আঘাত করে ফেলে দেন। তা দেখে রাসুল ( সঃ ) হেসে দেন এবং আমি তাঁর সামনের দাঁত দেখতে পাই। তারপর তিনি বলেন: উম্মু 'উমারা, তুমি বদলা নিয়েছ। তারপর আমরা দুইজনে মিলে আঘাতের পর আঘাত করে তাকে জাহান্নামের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেই। তখন রাসুল ( সঃ ) বলেন, 'উম্মু 'উমারা, সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি তোমাকে সফলকাম করেছেন।'

    উহুদ যুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) ঘোষক মদিনার মুজাহিদদেরকে 'হামরা আল আসাদ' এর দিকে বেরিয়ে পড়ার ঘোষণা দেন। উম্মু 'উমারা ( রা: ) সেখানে যাওয়ার জন্য মাজায় কাপড় পেঁচিয়ে প্রস্তুত হয়ে যান। কিন্তু ক্ষত থেকে রক্ত ক্ষরণের কারনে সক্ষম হননি। ইবন সা'দের বর্ণনা মতে তিনি উহুদ, হুদাইবিয়া, খায়বার, কাজা 'উমরা আদায়, হুনাইন ও ইয়ামামার যুদ্ধ ও অভিযানে যোগ দেন। তবে একবাত্র ইয়ামামার যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোন যুদ্ধ ও অভিজানের তাঁর অংশগ্রহণের কোন বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। উম্মু 'উমারার ( রা: ) বোনও তাঁর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

    রাসুলুল্লাহর ( সঃ ) ইন্তিকালের পর ইয়ামামার অধিবাসী এবং তথাকার নেতা মুসায়লামা আল-কাজ্জাব মুরতাদ হয়ে যায়। সে ছিল একজন নিষ্ঠুর প্রকৃতির অত্যাচারী মানুষ। তার গোত্রে প্রায় চল্লিশ হাজার যুদ্ধ করার মত লোক ছিল। তারা সবাই তাকে সমর্থন করে। নিজের শক্তি অহমিকায় সে নিজেকে একজন নবী বলে দাবী করে এবং তার সমর্থকদের সবার নিকট থেকে জোর-জবরদস্তিভাবে স্বীকৃতি আদায় করতে থাকে। যারা তার দাবীকে মানতে অস্বীকৃতি জানায় জানায় তাদের উপর নানাভাবে নির্যাতন চালাত। হযরত উম্মু 'উমারার ( রা: ) ছেলে হযরত হাবীব ইবন যায়দ 'উমান থেকে মদিনায় আসার পথে মুসায়লামার হাতে বন্দী হন। মুসায়লামা তাঁকে বলেন: 'তুমি তো সাক্ষ্য দিয়ে থাক যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল। হাবীব বললেন, হ্যাঁ, আমি তাই সাক্ষ্য দিয়ে থাকি। মুসায়লামা তখন বলে : না, তোমাকে একথা বলতে হবে যে, মুসায়লামা আল্লাহর রাসুল।' হযরত হাবীব অত্যন্ত শক্তভাবে তার দাবী প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর মুসায়লামা হাবীবের একটি একটি করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে আর তার মিথ্যা দাবী উপস্থাপন করতে থাকে। হযরত হাবীব ( রা: ) জীবন দেওয়া সহজ মনে করেছেন, কিন্তু বিশ্বাস থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত হওয়া সমীচীন মনে করেননি। এ ঘটনার কথা উম্মু 'উমারার ( রা: ) কানে পৌঁছলে তিনি মনকে শক্ত করেন এবং মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন যদি কখনো মুসলিম বাহিনী এই ভণ্ড নবীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে তখন তিনিও অংশগ্রহণ করবেন এবং আল্লাহ চাইলে নিজের হাতে এই জালিমকে জাহান্নামের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেবেন।

    মুসায়লামার এহেন ঔদ্ধত্য ও বাড়াবাড়ির কথা খলিফা হযরত আবু বকরের ( রা: ) কানে এলো। তিনি এই ধর্মদ্রোহিতার মূল উপড়ে ফেলার লক্ষ্যে চারহাজার সৈন্যসহ হযরত খালিদ ইবন ওয়ালিদকে ( রা: ) পাঠান। উম্মু 'উমারা ( রা: ) তাঁর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য এটাকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করলেন। তিনি খলিফার অনুমতি নিয়ে এ বাহিনীর সাথে ইয়ামামায় গেলেন। প্রচণ্ড যুদ্ধ হলো। বারশো মুজাহিদ শহিদ হলেন। অন্যদিকে ঐতিহাসিকদের বর্ণনা মতে, মুসায়লামার আট-নয় হাজার সৈন্য মারা যায়। প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে। উম্মু 'উমারা ( রা: ) সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য তাঁর ছেলের ঘাতক পাষণ্ড মুসায়লামা আল-কাজ্জাব। এক সময় তিনি একহাতে বর্শা ও অন্য হাতে তরবারি চালাতে চালাতে শত্রু বাহিনীর ব্যূহ ভেদ করে মুসায়লামার কাছে পৌঁছে যান। এ পর্যন্ত পৌঁছাতে তাঁর দেহের এগারটি স্থান নিযা ও তরবারির আঘাতে আহত হয়। শুধু তাই নয় একটি হাত বাহু থেকে বিচ্ছিন্নও হয়ে যায়। এতেও তাঁর সিদ্ধান্ত টলেনি। মোটেও ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। তিনি আরও একটু এগিয়ে গেলেন। মুসায়লামাকে তাক করে তরবারির কোপ মারবেন, ঠিক এসময় হঠাৎ এক সাথে দুইখানি তরবারির কোপ মুসায়লামার উপর এসে পড়ে। আর সে কেটে ঘোড়ার পিঠ থেকে ছিটকে পড়ে। তিনি বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে 'আব্দুল্লাহ পাশে দাঁড়িয়ে। জিজ্ঞেস করলেন তুমিই কি তাকে হত্যা করেছ? আব্দুল্লাহ জবাব দিলেন: একটি কোপ আমার অন্যটি ওয়াহশির। আমি বুঝতে পারছিনে কার কোপে সে নিহিত হয়েছে। উম্মু 'উমারা ( রা: ) দারুণ উৎফুল্ল হলেন এবং তখনই সিজদায়ে শুকর আদায় করলেন।

    উম্মু 'উমারার ( রা: ) যখম ছিল খুবই মারাত্মক। একটি হাতও কাটা গিয়েছিল। একারণে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। বাহিনী প্রধান খালিদ ( রা: ) আপন তত্ত্বাবধানে তাঁর সেবা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তাই তিনি সুস্থ হয়ে সারা জীবন খালিদের ( রা: ) প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন।

    খলিফা 'উমারও ( রা: ) উম্মু 'উমারার ( রা: ) সম্মান ও মর্যাদার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন। একবার গনীমতের মালের মধ্যে কিছু চাদর আসে। তার মধ্যে একটি চাদর ছিল খুবই সুন্দর ও দামী। অনেকে বললেন, এটি খলিফা তনয় 'আব্দুল্লাহর স্ত্রীকে দেওয়া হোক। অনেকে খলীফার স্ত্রী কুলসুম বিনতে 'আলীকে ( রা: ) দেওয়ার কথা বললেন। তিনি বললেন, আমি এ চাদরের সবচেয়ে বেশী হকদার উম্মু 'উমারাকে মনে করি। এটি তাকেই দেব। কারণ, আমি উহুদের দিন তাঁর সম্পর্কে রাসুলুল্লাহকে ( সঃ ) বলতে শুনেছি: 'আমি যে দিকেই দৃষ্টিপাত করছিলাম, শুধু উম্মু 'উমারাকেই লড়তে দেখলাম।'

    হযরত উম্মু 'উমারা ( রা: ) সব সময় রাসুলের ( সঃ ) মজলিসে উপস্থিত থাকতেন এবং মনোযোগ সহকারে তাঁর কথা শুনতেন। এভাবে তাঁর বিশ্বাস প্রতিদিনই দৃঢ় হতো এবং জ্ঞান বৃদ্ধি পেত। একদিন তিনি রাসুলুল্লাহকে ( সঃ ) বলেন: "আমি দেখতে পাচ্ছি সব জিনিসই পুরুষদের জন্য, মহিলাদের জন্য কোন কিছুর উল্লেখ করা হয় না।" অর্থাৎ তাঁর দাবী ছিল কুরআনে পুরুষদের কথা যেমন এসেছে নারীদের কথাও তেমন আসুক। তাঁর এমন দাবীর প্রেক্ষাপটে নাযিল হল সূরা আল-আহযাবের ৩৫তম আয়াতটি।

    হযরত উম্মু 'উমারা ( রা: ) ছিলেন একজন মহিলা বীর যোদ্ধা। তাঁর বীরত্ব ও সাহসিকতার বিস্ময়কর বাস্তবতা আমরা বিভিন্ন রণাঙ্গনে প্রত্যক্ষ করি। তাঁর যে রণমূর্তি আমরা উহুদ ও ইয়ামামার যুদ্ধে দেখি, এর দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কমই দেখা যায়। হযরত রাসুলে কারিম ( সঃ ) ছিলেন তাঁর সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তি। তাঁর ভালবাসার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন উহুদের ময়দানে। হযরত উম্মু 'উমারার ( রা: ) মৃত্যুসন সঠিকভাবে জানা যায় না। মুসায়লামার সাথে যুদ্ধ পর্যন্ত যে জীবিত ছিলেন সেটা নিশ্চিত। তবে তারপরে কতদিন জীবিত ছিলেন তা নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারেননি।

    তথ্যসূত্র : আসহাবে রাসূলের জীবনকথা - ষষ্ঠ খণ্ড
    ইলম আমাদের বুঝতে শিখায় এবং জিহাদ আমাদের মানতে শিখায়

  • #2
    জাঝাকাল্লাহ...
    জিহাদের এই দুর্গম পথে একমাত্র দৃঢ়রাই সফলকাম... আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের সবাই কে দৃঢ়তা দান করুক...

    Comment


    • #3
      বারাকআল্লাহ
      ইলম আমাদের বুঝতে শিখায় এবং জিহাদ আমাদের মানতে শিখায়

      Comment


      • #4
        এই চমৎকার ইতিহাসটা আমার জানা ছিল না। পড়ে খুব অনুপ্রাণিত হলাম।
        পরুষ হয়েও আমরা উম্মে উমারার মত পারব বলে মনে হয় না।

        Comment


        • #5
          ব্যক্তিগত তাহকীক অনুজায়ী উনার নাম ( নাসীবা ) পেয়েছি। অনেকে বলে ( নুসাইবা ) । কারো তাহকীক থাকলে পেশ করতে পারেন।

          Comment


          • #6
            Originally posted by tamim rayhan View Post
            এই চমৎকার ইতিহাসটা আমার জানা ছিল না। পড়ে খুব অনুপ্রাণিত হলাম।
            পরুষ হয়েও আমরা উম্মে উমারার মত পারব বলে মনে হয় না।
            আমারো তাই মনে হয়। তবে আল্লাহ সুবঃ কাছে চাই যেন সেই তাওফিক দেয়।
            ইলম আমাদের বুঝতে শিখায় এবং জিহাদ আমাদের মানতে শিখায়

            Comment


            • #7
              আমিন ইয়া রাব
              ইলম আমাদের বুঝতে শিখায় এবং জিহাদ আমাদের মানতে শিখায়

              Comment


              • #8
                আল্লাহ আকবর! আল্লাহ আকবর ! আল্লাহ আকবর !
                উনি কেমন রাসুল প্রেমিক ছিলেন!
                উনি কেমন বীরাঙ্গনা ছিলেন!
                উনি কেমন মা ছিলেন !
                সত্যের পথে মৃত্যুর এক অদম্য বাসনা আমাদের থামতে দেই না।

                Comment

                Working...
                X