কঠিনতম ইবাদাত – আব্দুল্লাহ আযযাম (রহ)
পরম করুনাময় মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি……
দ্বীন সম্পর্কে গবেষণার এবং এর পরিচয় ও ইবাদাতের কার্যাবলী বিষয়ে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার পর আমি এটা বুঝতে পেরেছি যে আত্মার উপর সবচেয়ে কঠিন ইবাদাত হল জিহাদ। কাজেই (এর কঠিনতার জন্য) এটি হল ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া এবং আল্লাহ মুজাহিদীনদের জন্য যে অজস্র নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছেন তা চিরস্থায়ী।
সহীহাইনে (বুখারী এবং মুসলিম) আবু যর (রাঃ) এর বরাত দিয়ে উল্লেখ আছে , আমি (আবু যর) একদা জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘‘ও আল্লাহর রাসূল , সর্বোচ্চ ইবাদাত কোনটি?’’ তিনি বলেছিলেন ‘‘আল্লাহর উপর ঈমান এবং তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা।’’
এবং সহীহাইনে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বরাত দিয়ে উল্লেখ আছে ,
তিনি বলেন “ও আল্লাহর রাসূল, কোন কাজটি পুরুষ্কারের দিক থেকে আল্লাহর জন্যে জিহাদ করার সমান?” তিনি বলেছিলেন, “তুমি এটি করতে সক্ষম নও।” তিনি একই প্রশ্ন দুই থেকে তিনবার করলেন, প্রতিবারই রাসূল (সাঃ) বললেন, “তুমি এটি করতে সক্ষম নও।” তারপর রাসূল (সাঃ)বললেন,“আল্লাহর কাছে একজন মুজাহিদ এর সদৃশ হল ওই ব্যাক্তি যে একজন মুজাহিদের জিহাদে যাওয়া থেকে শুরু করে ঘরে ফিরা পর্যন্ত লাগাতার রোযা রাখে, নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর প্রতিটা কথা মনোযোগ দিয়ে মেনে চলে, না রোযা ভাঙ্গে, না নামাজ হতে বিরতি দেয়।”
আহমদ এবং তিরমিজির একটি সহীহ হাদীসে আছে “ষাট বছর নামাজ পড়ার চেয়ে জিহাদের ময়দানে দাঁড়িয়ে একমুহূর্ত জিহাদ করা উত্তম।”
সেইজন্য এরকম একটি ইজমা আছে যে, জিহাদের সমতুল্য এখানে কিছুই নেই এবং কাবাহ এর নিকট থাকার চেয়ে রিবাত এ থাকা উত্তম। সহীহাইনে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বরাত দিয়ে বর্ণীত আছে নবী (সাঃ) বলেন, “লাইলাতুল ক্ক্বাদর এর রাতে কালো পাথরের নিকট দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার চেয়ে আল্লাহর জন্যে একরাত রিবাত করা উত্তম।” [এটি আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সাক্ষ্য হিসেবে বিবৃত হয়েছে]
অনুরুপভাবে কোরআনে বলা হয়েছে—
“তোমরা কি হাজীদের পানি সরবরাহ ও মসজিদুল-হারাম আবাদকরণকে সেই লোকের সমান মনে কর, যে ঈমান রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং যুদ্ধ করেছে আল্লাহর রাহে, এরা আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান নয়, আর আল্লাহ জালিম লোকদের হেদায়াত করেন না। যারা ঈমান এনেছে এবং দেশ ত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জীহাদ করেছে তাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে আর তারাই সফলকাম।”(সূরা তাওবা ; ১৯-২০)
সহী মুসলিমে এই সূরাটি নাজিল হবার কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে যে, পুরুষ্কারের দিক দিয়ে কোনটি সবচেয়ে উত্তম ইবাদাত এই ব্যাপারে সাহাবা (রাঃ) এর মাঝে ইখতিলাফ ছিল। এটি কি হাজীদের পানি সরবরাহ করা নাকি মসজিদুল হারাম আবাদ করা নাকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা?
আমার কাছে জিহাদে সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল অপেক্ষা করা, যুদ্ধের জন্য রিবাত করা আসল যুদ্ধের চেয়ে অনেক কঠিন। রিবাত করতে যত দেরী হতে থাকে, ধীরে ধীরে নির্জীব আত্মায় একঘুয়েমী প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রবল উদ্দীপণা আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকে, যদি না এই ইবাদাতের মাধ্যমে আত্মা খুঁজে পায় সংরক্ষিত সেই কামনা, জ্বলন্ত শিখা এবং ইন্ধন এবং সেই সাথে সে জিনিষ যা উদ্দীপণার আলোকচ্ছটা জাগিয়ে তোলে আর তা যুদ্ধের জন্য সাহসের উজ্জ্বল বাতি জ্বালিয়ে দেয়।
যারা মুজাহীদদের সাথে বসবাস করেছেন তারা এই বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে অবগত, বিশেষভাবে তারা যারা জিহাদে এসেছেন অনেক দূর হতে সাজানো দুনিয়াবি জীবনকে ত্যাগ করে এবং দুনিয়াবি সম্পদ এবং চাকচিক্য এবং অনেক স্বপ্ন ত্যাগ করে। তখন শয়তান তাদেরকে আবার সেই দুনিয়াবি জীবনে ফিরিয়ে নিতে আসে যা তারা ত্যাগ করে এসেছিলেন। কিন্তু শয়তান ‘উপকারী জিনিস’ এবং ‘খুটিনাটি ভারসাম্যপূর্ণ’ জিনিষের সাহায্য ছাড়া তাদের নিকট আসতে পারে না।
শয়তান সরাসরি জিহাদ পরিত্যাগ করাতে আসে না বরং এভাবে আসে যে (এরকম চিন্তা ঢুকিয়ে দেয় যে), তারা (মুজাহীদরা) যে স্থান ত্যাগ করে এসেছে এর ফলসরূপ তাদের সন্তানরা ঘৃনিত হবে, তারা যে মসজিদ ফেলে রেখে এসেছে তা তাদের রক্ষণাবেক্ষণ হতে বঞ্চিত হবে এবং যেই পরিবারের মায়া ত্যাগ করে তারা এসেছে এর ফলে তাদের বন্ধন চিরতরে ছিন্ন হয়ে যাবে।
সংগৃহীত : দাঊদ ইব্রাহিম ভাই এর ব্লগ থেকে.......www.dawudibraheem.wordpress.com
পরম করুনাময় মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি……
দ্বীন সম্পর্কে গবেষণার এবং এর পরিচয় ও ইবাদাতের কার্যাবলী বিষয়ে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার পর আমি এটা বুঝতে পেরেছি যে আত্মার উপর সবচেয়ে কঠিন ইবাদাত হল জিহাদ। কাজেই (এর কঠিনতার জন্য) এটি হল ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া এবং আল্লাহ মুজাহিদীনদের জন্য যে অজস্র নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছেন তা চিরস্থায়ী।
সহীহাইনে (বুখারী এবং মুসলিম) আবু যর (রাঃ) এর বরাত দিয়ে উল্লেখ আছে , আমি (আবু যর) একদা জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘‘ও আল্লাহর রাসূল , সর্বোচ্চ ইবাদাত কোনটি?’’ তিনি বলেছিলেন ‘‘আল্লাহর উপর ঈমান এবং তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা।’’
এবং সহীহাইনে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বরাত দিয়ে উল্লেখ আছে ,
তিনি বলেন “ও আল্লাহর রাসূল, কোন কাজটি পুরুষ্কারের দিক থেকে আল্লাহর জন্যে জিহাদ করার সমান?” তিনি বলেছিলেন, “তুমি এটি করতে সক্ষম নও।” তিনি একই প্রশ্ন দুই থেকে তিনবার করলেন, প্রতিবারই রাসূল (সাঃ) বললেন, “তুমি এটি করতে সক্ষম নও।” তারপর রাসূল (সাঃ)বললেন,“আল্লাহর কাছে একজন মুজাহিদ এর সদৃশ হল ওই ব্যাক্তি যে একজন মুজাহিদের জিহাদে যাওয়া থেকে শুরু করে ঘরে ফিরা পর্যন্ত লাগাতার রোযা রাখে, নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর প্রতিটা কথা মনোযোগ দিয়ে মেনে চলে, না রোযা ভাঙ্গে, না নামাজ হতে বিরতি দেয়।”
আহমদ এবং তিরমিজির একটি সহীহ হাদীসে আছে “ষাট বছর নামাজ পড়ার চেয়ে জিহাদের ময়দানে দাঁড়িয়ে একমুহূর্ত জিহাদ করা উত্তম।”
সেইজন্য এরকম একটি ইজমা আছে যে, জিহাদের সমতুল্য এখানে কিছুই নেই এবং কাবাহ এর নিকট থাকার চেয়ে রিবাত এ থাকা উত্তম। সহীহাইনে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বরাত দিয়ে বর্ণীত আছে নবী (সাঃ) বলেন, “লাইলাতুল ক্ক্বাদর এর রাতে কালো পাথরের নিকট দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার চেয়ে আল্লাহর জন্যে একরাত রিবাত করা উত্তম।” [এটি আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সাক্ষ্য হিসেবে বিবৃত হয়েছে]
অনুরুপভাবে কোরআনে বলা হয়েছে—
“তোমরা কি হাজীদের পানি সরবরাহ ও মসজিদুল-হারাম আবাদকরণকে সেই লোকের সমান মনে কর, যে ঈমান রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং যুদ্ধ করেছে আল্লাহর রাহে, এরা আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান নয়, আর আল্লাহ জালিম লোকদের হেদায়াত করেন না। যারা ঈমান এনেছে এবং দেশ ত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জীহাদ করেছে তাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে আর তারাই সফলকাম।”(সূরা তাওবা ; ১৯-২০)
সহী মুসলিমে এই সূরাটি নাজিল হবার কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে যে, পুরুষ্কারের দিক দিয়ে কোনটি সবচেয়ে উত্তম ইবাদাত এই ব্যাপারে সাহাবা (রাঃ) এর মাঝে ইখতিলাফ ছিল। এটি কি হাজীদের পানি সরবরাহ করা নাকি মসজিদুল হারাম আবাদ করা নাকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা?
আমার কাছে জিহাদে সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল অপেক্ষা করা, যুদ্ধের জন্য রিবাত করা আসল যুদ্ধের চেয়ে অনেক কঠিন। রিবাত করতে যত দেরী হতে থাকে, ধীরে ধীরে নির্জীব আত্মায় একঘুয়েমী প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রবল উদ্দীপণা আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকে, যদি না এই ইবাদাতের মাধ্যমে আত্মা খুঁজে পায় সংরক্ষিত সেই কামনা, জ্বলন্ত শিখা এবং ইন্ধন এবং সেই সাথে সে জিনিষ যা উদ্দীপণার আলোকচ্ছটা জাগিয়ে তোলে আর তা যুদ্ধের জন্য সাহসের উজ্জ্বল বাতি জ্বালিয়ে দেয়।
যারা মুজাহীদদের সাথে বসবাস করেছেন তারা এই বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে অবগত, বিশেষভাবে তারা যারা জিহাদে এসেছেন অনেক দূর হতে সাজানো দুনিয়াবি জীবনকে ত্যাগ করে এবং দুনিয়াবি সম্পদ এবং চাকচিক্য এবং অনেক স্বপ্ন ত্যাগ করে। তখন শয়তান তাদেরকে আবার সেই দুনিয়াবি জীবনে ফিরিয়ে নিতে আসে যা তারা ত্যাগ করে এসেছিলেন। কিন্তু শয়তান ‘উপকারী জিনিস’ এবং ‘খুটিনাটি ভারসাম্যপূর্ণ’ জিনিষের সাহায্য ছাড়া তাদের নিকট আসতে পারে না।
শয়তান সরাসরি জিহাদ পরিত্যাগ করাতে আসে না বরং এভাবে আসে যে (এরকম চিন্তা ঢুকিয়ে দেয় যে), তারা (মুজাহীদরা) যে স্থান ত্যাগ করে এসেছে এর ফলসরূপ তাদের সন্তানরা ঘৃনিত হবে, তারা যে মসজিদ ফেলে রেখে এসেছে তা তাদের রক্ষণাবেক্ষণ হতে বঞ্চিত হবে এবং যেই পরিবারের মায়া ত্যাগ করে তারা এসেছে এর ফলে তাদের বন্ধন চিরতরে ছিন্ন হয়ে যাবে।
সংগৃহীত : দাঊদ ইব্রাহিম ভাই এর ব্লগ থেকে.......www.dawudibraheem.wordpress.com
Comment